#শুধু তুই ২
#পর্বঃ৫
#Tanisha Sultana (Writer)
“উমমমমমমমমমমমম
” সাট আপ। কিসের উমম করছো? গাঁধা একটা
দাঁত কটমট করে বলে আদি।
নিধি হাতের দিকে ইশারা করে
“উমমম
” আবার
ইচ্ছে করছে পুকুরে চুবিয়ে রাখি
নিধি এবার নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে আদির হাত মুখ থেকে সরায়। বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেয়।
“বললেই হতো হাত সরান। এতো নাটক করার কি আছে? ড্রামা কুইন একটা
আদির কথা শুনে নিধি দাঁত কটমট করে আদির দিকে তাকায়
” গাঁধা আমি না আপনি। এইটুকু সেন্স নেই যে মুখে হাত দিয়ে রাখলে কি করে কথা বলবো। ইচ্ছে করছে বলি কিন্তু
না নিধি না কোনো কিন্তু না। এই লাটসাহেবকে তুই একটুও ভয় পাবি না। বি পজিটিভ নিধি। বলে দে। নিজেকে প্রমাণ কর যে তুই গাঁধা না
নিধি মনে মনে নিজেকে নিজে বাহবা দিচ্ছে।
“টমেটোর মতো গাল ফুলিয়ে নিজেকে ছাগল প্রমাণ করছো
আদির কথায় নিধি যতটুকু সাহস সঞ্চয় করেছিলো সেটুকু ফুস করে বেরিয়ে যায়।
নিধি দুই কানে দুই দিয়ে ধরে
” বিশ্বাস করুন আমি তখন ইচ্ছে করে পড়ি নি। আপনার মুখে লিপস্টিক থাকার জন্য প্লিজ আমাকে দায়ী করবেন না। আমি ইনোসেন্ট
“ইডিয়েট
নিধির কান্না পাচ্ছে। সারাক্ষণ গাঁধা ইডিয়েট ননসেন্স এগুলো শুনতে কার ভালো লাগে। কতো সুন্দর নাম আমার নিধিরা নিধি। নাম ধরেও তো ডাকতে পারে। নাম ধরে ডাকলে তো আবার সম্মান ফুরিয়ে যাবে। এরকম পাগলের সাথে থাকলে আমিও পাগল হয়ে যাবো
নিধি মনে মনে ভাবছে।
” কান খুলে শুনো
“বলেন
” আমার থেকে সব সময় দুরে দুরে থাকবে। একদম আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করবা না। তার ফল ভালো হবে না। তোমার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই আর ফিউচারেও থাকবে না
“সেম টু ইউ
” কিছু বললে
“নাহহহ শুনলাম কান খুলে। মনে থাকবে। ওইদিকে দরজা
নিধি বিরক্তির একটা হাসি দিয়ে বলে।
” লাইফটাকে সার্কাস বানিয়ে ছাড়বে ডিজগাস্টিং
আদি বেরিয়ে যায়। নিধি হাঁপ ছেড়ে বাঁচে
“ইহহহহ ডিজগাস্টিং। লাটসাহেব কোথাকার। আমাকে যে হার্টের রুগী বানিয়ে দিলো তার বেলায় কিছু না। ইহহহহ আমার প্রতি ইন্টারেস্ট নাই। আমারও আপনার প্রতি কোনো ইন্টারেস্ট নেই। দুনিয়ায় কি ছেলের অভাব না কি। ডিভোর্স দিয়ে দেবো আপনাকে
এবার সাওয়ার অন করে আর নিধির মনে পড়ে ড্রেস রুমে রেখে এসেছে। ঠাস করে সাওয়াব বন্ধ করে দৌড়ে বেরতে যায় ড্রেস আনতে। তারপর যা হওয়ার তাই। শাড়িতে বেঁধে ঠাস করে পড়ে যায়।
আদি চুল ঝাড়ছিলো কিছু পড়ার শব্দে পেছনে তাকায়। দেখে শাড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে নিধিরা নিধি বসে আছে
” কমনসেন্স নাই তোমার? প্রতিবন্ধী তুমি? হাঁটতে শিখো নাই? যেখানে সেখানে ধাপ ধাপ উষ্টা খাও।
নিধি কাঁদো কাঁদো গলায় বলে
“আমি তো
” আমি তো কি? দুই মিনিটও আমাকে শান্তিতে থাকতে দিবা না তাই তো?
নিধি একা একা উঠার চেষ্টা করে আবার পড়ে যায়
“ড্রামা করা শেষ?
আদি নিধি এক হাত ধরে টান দিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়।
” এবার পড়ে গেলে আম গাছে ঝুলিয়ে রাখবো
নিধি খাটের দিকে এগোতে নেয়
“ওদিকে কোথায় যাচ্ছো? পড়ে গিয়ে কি মাথা উল্টো হয়ে গেছে না কি?
” ড্রেস আনতে
“যাও আমি দিচ্ছি
নিধি মেপে মেপে পা ফেলে যায়
” আস্ত একটা লাটসাহেব
“লাটসাহেব কে?
নিধি চমকে পেছনে তাকায়। নিধির ড্রেস হাতে আদি ভ্রু কুচকে দাঁড়িয়ে আছে। নিধি থেমে থেমে বলে
“ইয়ে মানে আমি
” তোমার ড্রেস। দয়া করে এখান থেকে চেঞ্জ করে বেরিয়ো ননসেন্স
ড্রেস দিয়ে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে আদি চলে যায়।
আদি বের হয়ে দেখে মনি দাঁড়িয়ে আছে
“তুই
” দেখতে আসলাম তোর বউয়ের হইয়েছে না কি
“আস্ত একটা গাঁধা। পাগল করে দেবে আমায়
মনি আদির কাছে এসে আদির গালে হাত দিয়ে বলে
” কতোটা বদলে গেছিস তুই। নিধিই পারবে তোকে মানুষ করতে। আমি তো
আদি মনির হাত সরিয়ে দেয়
“ও তো নিজেই মানুষ না। আমাকে কি করে মানুষ করবে?
নিধি চেন্জ করে বের হয়। দেখে আদি আর মনি কথা বলছে। নিধিকে দেখে মনি হাসি মুখে এগিয়ে আসে নিধির দিকে
“ভালোই তো আঁচলে বেঁধেছো আমার নিরামিষ বেষ্টুকে।
নিধি মাথা নিচু করে হাত কচলাচ্ছে। আসলে কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না
” মনি তোর বরাবরের স্বভাব চার লাইন বেশি বোঝা। সেরকম কোনো বেপার না। প্রতিবন্ধী তো তাই সব সময় পড়ে যায় আর তুই অন্য কিছু মিন করিস। যেটা আমার বিরক্ত লাগে
আদির কথায় মনি সামান্য রাগ করার ভান করে বলে
“আজিব তো। আমি সব সময় ঠিকটা দেখি আর ঠিক তাই মিন করি। তুই আমাকে ভুলটা বোঝাতে চাস। বাট মনি তো আর বোকা না। নিধি তোমাকে তোমার বরের বেপারে একটা সিক্রেট বলবো
নিধি ভ্রু কুচকে আগ্রহের সাথে জিজ্ঞেস করে
” কি বলো?
মনি আদির দিকে তাকায়
“বলবো
আদি বিছানায় বসে বলে “এজ ইউআর উইশ”
মনি মুচকি হাসে। নিধি এখনো অধিক আগ্রহে মনির দিকে তাকিয়ে আছে।
“বলেই দেই
” হুম আপু বলো
“গাঁধাকে বলে কোনো লাভ নেই। এতো বোঝেই কম।
নিধির রাগ হয়। এমনিতে যা খুশি বলুক কিন্তু অন্য মানুষের সামনে এরকম বললে কেমন লাগে। এর কিছু একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।
নিধি মন খারাপ করে ” হুম” বলে। মনি নিধির কাঁধে হাত রেখে বলে
“যাওয়া যাক
মনি নিধিকে নিয়ে যায়।
সন্ধায় বউভাতের রিসেশন শেষ। নিধির প্রচুর গরম লাগছে। একেতে ভারি লেহেঙ্গা তারপর গহনাগাঁটি আবার পাশেই আদি বসে ফোন দেখছে। ভালো করে নড়াচড়াও করতে পারছে না নিধি। মেহমান গিজগিজ করছে। নিধির ওর মা বাবাকে সেই কখন একবার দেখেছিলো আর তাদের পাত্তা নেই। পৃতি ইমন নিরা মনি কেউ এদিকে আসছে না।
মনে মনে দোয়া করছে কখন এখান থেকে উঠতে পারবে।
আদি একবার নিধির দিকে তাকিয়ে আবার ফোনে মনোযোগ দেয়।
” বলছিলাম কি
“না শুনলে জানবো কি করে কি বলছিলে। তাছাড়া আমি কারো মনের কথা বুঝতে পারি না। চেষ্টাও করি না।
আদি ফোনে চোখ রেখই বলে
” আমি রুমে যাবো
নিধি অসহায় ফেস করে বলে। আদি ফোন থেকে চোখ সরিয়ে নিধির দিকে তাকায়
“তো আমি এবার তোমায় কোলে নেবো কি?
আদি বিরক্তি নিয়ে বলে।
নিধির খুব রাগ হয়।
” মানলাম বিয়ে তে ওনার মন নেই। আমারও তো মত নেই। আমিও থাকতে চায় না ওনার সাথে। কিন্তু তাই বলে সব সময় বাঁকা কথা বলবে?৷ মনে হয় উনি পেটে থাকতে ওনার মা বাঁকা কথা বলতো
নিধি বিরবির করে বলছে। নিধি এবার উঠে দাঁড়ায়
“শোনো
নিধি আদির দিকে তাকায়। আদি ফোন পকেটে রেখে পকেটে হাত গুঁজে বলে
” আজকে বিছানায় পানি ঢাললে তোমাকে ছাঁদে রেখে আসবো। আর না হলে হাত পা বেঁধে বস্তায় ভরে পানিতে ভাসিয়ে দেবো মাইড ইট
বলে আদি চলে যায়।
“এতো ভয় দেখানোর কিছু নেই। আজ আমি এমনিতেও পানি ঢালতাম না। আজ তো অন্য প্লান আছে।
নিধি রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় তখন নিরা আসে
” কোথায় যাচ্ছিস
“চেঞ্জ করতে
“পরে চেঞ্জ করিস। এখন যা আদির ফ্রেন্ডরা এসেছে ওদের সাথে পরিচিত হ। মেহমান কমলে চেঞ্জ করবি। চল
” ধুর। লাটসাহেব তো ওনার বন্ধুদের সামনে আমাকে গাঁধা ইডিয়েট ননসেন্স বলবে
“গাঁধার মতো কাজ করলে তো বলবেই
” তুই আমার বোন তো
“নাহহ তোকে কুড়িয়ে এনেছিলাম
” তাই মনে হয়
“যা খুশি মনে কর। এবার চল
নিরা নিধিকে টেনে নিয়ে যায়। আদি দুটো ছেলের আর একটা মেয়ের সাথে কথা বলছে। দুটো ছেলের মধ্যে একজন বলে
“ব্রো আমাদের ভাবিকে দেখাবি না?
তখন নিরা নিধিকে নিয়ে আসে
” এই তো তোমাদের ভাবিকে নিয়ে এসেছি।
নিধি ওদের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়। কারণ নিধির এক্স বফ এখানে।
“তুমি
নিধির এক্স সৌরভ বলে। আদি একবার সৌরভের দিকে তাকাচ্ছে তো একবার নিধির দিকে। নিরা প্লাস বাকি দুজনও ওদের দিকে তাকিয়ে আছে
নিধির গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। এবার যা হবে তা থেকে আমাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। লাটসাহেব ডিভোর্স দিয়ে দেবে। আব্বু বাড়ি থেকে বের করে দেবে। আম্মু চুল ছিড়বে। আল্লাহ বাঁচাও। লাস্ট বারের মতো
চলবে
#শুধু তুই ২
#পর্বঃ৬
#Tanisha Sultana (Writer)
“” তুই ওকে কি করে চিনিস? না মানে আমরা তো অলওয়েজ একসাথে থাকতাম ইভেন এখনও থাকি। তো তুই ওকে চিনিস আর আমরা জানি না। এটা কি করে পসিবল
আদি চোখ ছোট ছোট করে সৌরভকে জিজ্ঞেস করে
” হুম সেটাই। আমাদের তো কখনো বলিস নি।
মুন্নি (আদির ফ্রেন্ড) বলে
“আমরা এক দুনিয়ায় এক দেশের এক জেলার মানুষ। তো চিনতে পারিই। অবশ্য তোদের বলতেই যাচ্ছিলাম তার আগেই
নিধি বড়বড় চোখ করে সৌরভের দিকে তাকায়। সৌরভ চুপ হয়ে যায়
“হুমমম চিনতেই পারে। বাট কি করে চিনে?
নিরা বলে।
” বল নিধি ওকে কি করে চিনিস?
নিধি হাত কচলাচ্ছে। কি বলবে বুঝতে পারছে না। সবার সামনে বলে দেবে সৌরভ আমার এক্স? এটা শুনে সবার রিয়াকশন কেমন হবে? আদি কি আমাকে তাড়িয়ে দেবে? দিলেই বা আমার পবলেম কি? আমি তো এই লাটসাহেবের সাথে থাকতেও চায় না।
“ও সৌরভকে কিভাবে চিনে এটা জানার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নেই। একটা মানুষ আর একটা মানুষকে চিনতেই না। বিষয়টা নরমাল। এটাকে তুমি এতো ইস্যু কেনো করছো ভাবি আমি তো এটাই বুঝতে পারছি না।
আদির কথা শুনে নিধি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।
সৌরভ চোখ ছোটছোট করে নিধিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। একটুও পাল্টায় নি নিধি। আগের মতোই ভয় পায়। লাস্ট সৌরভের সাথে নিধির কথা হয়েছিলো তিন মাস পনেরো দিন পরে।
” কেমন আছো নিধিরা?
সৌরভের প্রশ্নে নিধি চমকে ওঠে।
“ভভভালো
” আরে তুতলাচ্ছো কেনো? ভয় পাও
“ও একটু না পুরোটাই ভীতু
আদি নিধির দিকে তাকিয়ে বলে
” কিছু মেয়েদের এইরকম ভয় পাওয়াটা আমার দারুণ লাগে। প্রেমে পড়ার মতো
“আমি আসছি
বলেই নিধি ওই স্থান থেকে চলে যায়। আদির কিছুটা খটকা লাগলেও আদি এই মুহুর্তে এসব নিয়ে ভাবতে চায় না। যা ইচ্ছে করুক এই মেয়েটা আমার কি? এটা বলেই আদি একটা শ্বাস নেয়।
নিরা নিধির পেছন পেছন চলে যায়। সৌরভ নিধির চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। এক্সকিউজমি বলে আদিও ওখান থেকে চলে যায়।
রুমে গিয়ে ধপাস করে বসে পড়ে নিধি
” হায় খোদা এ আবার কোথা থেকে উদয় হলো। এতো সবাইকে বলে দেবে এখন কি করবো? আর বলে দিলে দিক। আমার কি? প্রেম করছি ওর সাথে। এটা লুকোনোর কি আছে?
“ঠিকি তো প্রেম করলে লুকোনোর কি আছে? ঢাকঢোল পিটিয়ে বলে বেড়াও সবাই কে
আদি দাঁতে দাঁত চেপে বলে। আদির কন্ঠে নিধি ঘাবড়ে যায়।
” যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধা হয়”
“আসলে
” আই ডোন্ট মাইন্ড। তোমার প্রতিই আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই। তো তোমার এই পারসোনাল লাইফের প্রতি আমার কেনো ইন্টারেস্ট থাকবে। যা ইচ্ছে করো। তাছাড়া আমারও গার্লফ্রেন্ড ছিলো।
“আপনার মতো লাটসাহেবের সাথে আবার কোন মেয়ে প্রেম করছিলো
নিধি বিরবির করে বলে
” কিছু বললে
“নাহহহ
আদির ফোন বেজে ওঠে।
” মনে হয় আপনার এক্স ফোন দিছে
“এক্স না পেজেন্ট। আমাদের এখনো ব্রেকআপ হয় নি
বলে আদি ফোন রিসিভ করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
” এখনো ব্রেকআপ হয় নি।
রুমে এসে নিধি চেঞ্জ করে। এখন বেশ ফুরফুরে লাগছে। একগাট্টি গহনা পড়ে থাকা যায় না কি? বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায় নিধি
” এখন এক কাপ কফি হলে মন্দ হতো না
ভেবে মুচকি হাসে নিধি। আবার মনে পড়ে এখন কফি পাবো কই। আবার নিধির মুড অফ হয়ে যায়। নিধি ভাবতে থাকে আদির সাথে প্রথম দেখা হওয়ার দিনের কথা।
নিরার গায়ে হলুদের দিন। প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিলো। নিধি হলুদ শাড়ি আর কাঁচা ফুলের গহনা পড়ে ছিলো। আদিদের বাড়িতে এসেছিলো আশিককে হলুদ দিতে। বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ায় নিধি আদিদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ভিজছিলো আর লাফাচ্ছিলো। তখন আদি গাড়ি নিয়ে বাড়িতে আসতে যায় আর নিধি আদির গাড়ির সামনে গিয়ে পড়ে ঘুড়তে ঘুড়তে।
“ইডিয়েট দেখে চলতে পারো না? ব্যেঙের মতো লাফাচ্ছো কেনো?
নিধি শুধু আদির দিকে তাকিয়ে ছিলো।
” অচেনা অজানা মেয়ের সাথে কেমন বিহেব করছে।
আদি ভেবেছিলো নিধি হয়ত খুব ব্যাথা পাইছে তাই নিধিকে কোলে তুলে ভেতরে নিয়ে যায়। ভয়ে নিধি ঙ্গান হারিয়ে ফেলে।
হুশ ফিরতে নিধি দেখে নিধি আদির রুমে সুয়ে আছে। পাশে আদির মা বাবা আশিক পৃতি। নিধি চোখ খুলছে দেখে আদি বলে
“গাঁধা তুমি? রাস্তার মধ্যে ধেইধেই করে লাফাচ্ছিলে কেনো? কমনসেন্স নেই তোমার?
আদির মা আদিকে চুপ থাকতে বলছিলো।
সেই দিন থেকেই নিধি ভেবে রেখেছিলো আর কখনো আদির সামনে যাবে না।
এসব ভেবে নিধি দীর্ঘ শাশ্ব ফেলে।
“এই মেয়ে
নিধি পেছনে তাকিয়ে দেখে শাশুড়ী।
” জ্বী বলুন
“ছয়টার ট্রেনে আদি কক্সবাজার যাচ্ছে তুমি জানো?
নিধি মাথা চুলকে বলে
” না
“কেমন বউ তুমি
” আসলে আপনার ছেলে বলে নি।
“লাগেজ গুছিয়ে নাও
” ওনারটা?
“নাহহহ তোমারটা
বলেই শাশুড়ী চলে যায়।
” আমি কক্সবাজার? তাও আবার ওই লাটসাহেবটার সাথে। কি করে থাকবো? উনি তো আমাকে মেরে গুম করে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেবে। আম্মু আব্বু কেউ আমাকে খুঁজে পাবে না। নিধিরা নিধি নিখোঁজ।
এসব ভেবে নিধি ধপাস করে খাটে বসে পড়ে। নিরা আসে
“তুই বসে আছিস কেনো?
” আপি প্লিজ আমি যাবো না
অনুনয়ের সুরে বলে নিধি। নিরা নিধির দুই গালে হাত দিয়ে বলে
“বিয়ের পরে স্বামীই মেয়েদের সব হয়। আদি খুব ভালো ছেলে একটু বুঝ ওকে।
নিধি নিরার হাত ছাড়িয়ে বেলকনিতে চলে যায়। খুব কান্না পাচ্ছে নিধির।আম্মু আব্বু বোন সবাই নিধির বিরুদ্ধে চেলে গেছে। নিধিকে কেউ আর পাত্তা দেয় না। কেউ নিধির কথাও বুঝতে চায় না। নিধিরও যে একটা মন আছে এটা কেউ ভাবে না। সবাই কেনো এটা ভাবে আমি আদির সাথে থাকলে ভালো থাকবো?
চোখের পানি আটকাতে পারে না নিধি। টপটপ করে পানি পড়ছে।
কখন যে বেলকানিতেই নিধি ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতেই পারে নি।
রাত তিনটার সময় শাশুড়ীর ডাকে নিধির ঘুম ভাঙে। বেলকনি থেকে রুমে এসে দেখে আদি হাত পা ছড়িয়ে নিশ্চিতে ঘুমচ্ছে। নিধি দরজা খুলে
” এতোখনে ঘুম ভাঙলো? কটা বাজে খেয়াল আছে? আদিকে ডাকো।
বলেই শাশুড়ী চলে যায়।
“আমি ডাকবো লাটসাহেবকে? আমাকে তো এক ধমকে বসিয়ে দেবে। নাহহ বাবা পারবো না। কিন্তু না ডাকলে শাশুড়ী তো বকা দেবে
” ভোর তিনটা বেজে গেছে। কারো ওঠার তাড়া থাকলে উঠতে পারে
চিল্লিয়ে বলেই নিধি দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। আদি হুরমুর করে উঠে বসে
“ডাকার স্টাইল ই বলে দেয় এই মেয়েটা কতো বড় ইডিয়েট প্লাস গাঁধা।
নিধি ওয়াশরুমে গিয়ে বুকে থু থু নেয়
” একটুর জন্য বেঁচে গেছি। নাহলে আজকে লাটসাহেব আমাকে বৃন্দাবন পাঠিয়ে দিতো
“হেই ইডিয়েট ওপেন দা ডোর
আদি দরজায় নক করে বলে। নিধি চমকে ওঠে
” কথা কানে যাচ্ছে না।
“পপপপাঁচ মিনিট
” ধুর
আদি বিরক্ত হয়ে বেলকনিতে চলে যায়।
নিধি কান পেতে দেখে আদির কোনো সাড়াশব্দ নেই। একটু একটু করে দরজা খুলে উঁকি দেয়। নাহহ আদি নেই। এবার নিধি পা টিপে টিপে বেরিয়ে লাগেজটা নিয়ে এক দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
ঠিক পাঁচ মিনিট পরে আদি এসে দেখে ওয়াশরুমের দরজা খোলা। কাবার্ড থেকে ড্রেস নিয়ে আদি ওয়াশরুমে যায়।
এবার নিধি রুমের বাইরে গিয়েও বিপদে পড়েছে। কোথায় যাবে? কার রুমে যাবে? এসব ভেবে আবার রুমে ফেরত আসে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে নেয়।
তারপর আবার তাড়াহুড়ো করে বেরোতে যায় আর লাগেজে বাড়ি খেয়ে ধপাস করে পড়ে যায়
“ওহহ আল্লাহ গো
কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দে আদি বেরিয়ে আসে। দেখে ওর গুনোধর বউ পড়ে আছে। আদি চোখ মুখ শক্ত করে তাকায় নিধির দিকে
“এইবার যে কি বলবে আল্লাহ জানে? আল্লাহ বাঁচাও
চলবে