#শুধু তুই ২
#পর্বঃ৩
#Tanisha Sultana (Writer)
আজ নিধির বিয়ের দিন। লালটুকটুকে বউ সেজে নিধি নিজের রুমে বসে আছে। নিধির সাথে নিরা পৃতি (আদির বোন) ইমন (আদির কাকাতো ভাই) আরও অনেকেই আছে। নিধির বিরক্ত লাগছে। এতো কষ্ট হয় বিয়েতে জানলে আগেই পালিয়ে যেতো নিধি। এক ঘন্টা ধরে বসে আছে।
কাজিসহ কয়েকজন মুরিব্বি ঢুকে নিধির রুমে
“বলো মা কবুল
নিধি একবার সবার দিকে তাকায়। নিধির বাবা ইশারায় কবুল বলতে বলে। নিধি এবার বলে ওঠে
” আগে লাটসাহেব কে কবুল বলতে বলেন। আমি আগে কবুল বললে বলবে
ননসেন্স তুমি আগে আগে পাকনামি করে কবুল বললা কেন? ইডেয়েট একটা। গাঁধা তুমি। আমি বাপু এতো বকা খেতে পারবো না
নিধির কথা শুনে কাজিসহ উপস্থিত সবাই হা হয়ে যায়। এই মেয়ে বলছে কি?
নিধি সবার দৃষ্টি বুঝতে পেরে বলে
“সবাই এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো আমার দিকে? আমাকে কি জোকার মনে হচ্ছে?
” গাঁধা তুই এতো পাকনামি করছিস কেনো? ইমন নিধির মাথা গাট্টা মেরে বলে।
“লাটসাহেব আগে কবুল বলেছে এখন তুমি বলো
কাজি মুচকি হেসে বলে। নিধি একটু ভেবে কাজির কানে ফিসফিস করে বলে
” বলছিলাম কি আমি যদি কবুল না বলি তাহলে কি বিয়েটা হবে না
কাজিও ফিসফিস করে বলে
“বিয়েটা হয়েই গেছে কবুল তো জাস্ট সবাইকে শোনানোর জন
নিধি মুখটা কালো করে বলে ” ওহহ”
কাজি নিধির বাবাকে চোখ মারে।কাজিকে নিধির বাবাই এসব বলতে বলেছে। আসলে নিধি যে এমন কিছু বলবে সেটা নিধির বাবা আগেই আন্দাজ করেছিলো।
অবশেষে নিধি কবুল বলে দেয়। সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে।
সবাই চলে যায় শুধু নিরা পৃতি সাগর নিধির মা থাকে।
নিধি এবার ভ্যাঁ ভ্যা করে কেঁদে ফেলে। সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়
“একি রে কবুল বলার সময় মেয়েরা কাঁদে আর তুই কবুল বলার পরে কেনো?
ইমন অবাক হয়ে প্রশ্ন করে।
নিধি কাঁদতে কাঁদতে বলে
” বাসর ঘরে লাটসাহেব আমাকে বকবে এটা ভেবে কাঁদছি। না জানি কি করবে আমার সাথে। এটা ভেবেই কান্না পাচ্ছে
“পরে কাঁদিস। এখন কাঁদলে তোকে পেতনির মতো লাগবে তখন তুই সেলফি তুলবি কি করে? আর লাটসাহেব অনেক কিছু করবে এটা ঠিক কিন্তু বকবে না
নিধি কান্না অফ করে নিরার দিকে তাকায়
“এটা আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?
“নিরা এই গাঁধার সাথে কথা বলিস না। হতে পারে এটা আমার মেয়ে কিন্তু দিন দিন একটা বলদ হয়েছে
এটা নতুন কিছু না। নিধির মা সব সময় ওকে গাঁধা বলে।
বিদায়ের সময় নিধি কারো সাথে কথা বলে নি কাঁদেও নি। কেনো কথা বলবে? মা ওই ভাবে বলদ বললো। নিধির বাবা মা খুব কেঁদেছে। বলদ হোক ছোট মেয়ে তো।
আদির পাশে গাড়িতে বসে আছে নিধি। একেতে ভারি লেহেঙ্গার তারপর পাশে একটা লাটসাহেব সব মিলিয়ে নিধির বিরক্ত লাগছে। আদি এক মনে ফোন দেখে যাচ্ছে। না জানি ফোনে কি আছে।
নিধি একটু উঁকিঝুঁকি মারছে দেখার জন্য আদি ফোনে কি করছে। বিষয়টা আদি খেয়াল করে
” হোয়াট
আদির কন্ঠে নিধি চমকে সোজা হয়ে বসে। আদি ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে
“তুমি এভাবে উঁকি মারছিলে কেনো?
” কবে? কোথায়? কখন?
“একটা থাপ্পড় মারলে সব মনে পড়ে যাবে। তুমি জানো এভাবে কারো পারসোনাল জিনিস দেখতে নেই
” কিন্তু আমি তো
“তুমি তো কি? কোনো এক্সকিউজ দেবে না। আর তোমাকে বিয়ে করেছি বলে একদম মাথায় চড়ে বসবে না। বউ বউয়ের মতো থাকবে।
” সেম টু ইউ
নিধি বিরবির করে বলে।৷ নিধির কথা আদি শুনে ফেলে।
“একদম ভুলে যাবে না তুমি আমার বাড়িতে থাকবে। সো আমার কথা শুনে চলবে
” আমার বয়েই গেছে। ইচ্ছে তো করছে লাথি মেরে গাড়ি থেকে ফেলে দেই কিন্তু আফসোস ওতো সাহস নিধিরার নেই।৷ ধুর
নিধি মনে মনে বলে
“এই তুমি ভেংচি দিলে কেনো?
আদির কথায় নিধি আকাশ থেকে পড়ে।
” কখন ভেংচি দিলাম
“এখন
” ঝগড়া করতে একটা রিজন লাগে তো আপনি রিজন পেলেন না তাই পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করতে এসেছেন
“কি বললে তুমি আমি ঝগড়া করছি
আদির কথা শুনলে নিধিরও কথার উওর দিতে ইচ্ছে করবে। আর উওর দিলেই চড় খেতে হবে। কথায় কথা বাড়ে তাই নিধি কানে হেডফোন গুঁজে নেয়। এখন লাটসাহেবের যত ইচ্ছা কথা বলুক।
নিধি কানে হেডফোন নেওয়ায় আদি বেশ বিরক্ত হয়। একেতে এই মেয়েকে সয্য হয় না তার ওপর চ্যাটাং চ্যাটাং কথা। জাস্ট বিরক্তিকর।
চল্লিশ মিনিট জার্নির পরে নিধি শশুড় বাড়ি পৌঁছায়। শাশুড়ী বরণ করে ঘড়ে তুলে নিধিকে। আদি হন হন করে নিজের রুমে যেতে নেয় আদির মা আটকে দেয়
” কি মা এখন রুমেও যেতে পারবো না
বিরক্তি নিয়ে বলে আদি
“পারবে জাস্ট পাঁচ মিনিট
” কেনো?
“আমি বলছি তাই। আশিক ওকে নিয়ে যাও
আশিক আদিকে নিয়ে যায়। পৃতি আর নিরা নিধিকে আদির রুমে দিয়ে আসে।
” তোমরা যাচ্ছো কেনো?
“তো আমরা কি করবো?
নিরা জিজ্ঞেস করে
” বসো না গল্প করি
“ভাইয়া আসছে ওর সাথে গল্প করিস
পৃতি চোখ মেরে চলে যায়
” সব পাগল
নিধি ঘুরে ঘুরে রুম দেখছে। অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে রুমটা।
“কয়েকটা ছবি তুললে মন্দ হয় না
নিধি আরামসে ছবি তুলতে থাকে।
এখন কথা হলো এই রুমে কোনো সোফা নেই। তো নিধি ঘুমাবে কোথায়? ওই লাটসাহেবের বেডে ঘুমতে গেছে হাজারখানিক ঝাড়ি খেতে হবে। এবার নিধি রুমে রুমে ঘুমানোর মতো একটা জায়গা খুঁজে। অবশেষে পেয়ে যায়। বেলকনিতে একটা দোলনা আছে। নিধি একটা বালিশ আর চাদর নিয়ে বেলকনির দোলনায় শুয়ে পড়ে।
নিধির মাথায় সয়তানির বুদ্ধি আসে
” একটা কাজ করলে কেমন হয়? যদি লাটসাহেব ঘুমতে না পারে
নিধি চট করে উঠে এক জগ পানি নিয়ে আদির বিছানার সামনে যায়। শয়তানির একটা হাসি দিয়ে পানি ঢেলে দেয়
“আমাকে বকা দেওয়ার মজা বুঝো মিস্টার লাটসাহেব। এবার তুমি শান্তিতে ঘুমাও আমার নিরামিষ জামাই
নিধি বেলকানিতে গিয়ে শুয়ে পড়ে। দরজা বন্ধ করতে ভুলে যায়।
আদি রুমে এসে দেখে নিধি নেই
” গাঁধা টা আবার কোথায় গেলো? যেখানেই যাক আমার কি? আমি শান্তিতে ঘুমাবো এখন।
আদি চেন্জ করে বিছানায় শুয়ে পড়ে আর অনুভব করে বিছানা ভেজা৷ লাফ দিয়ে উঠে
“স্টুপিট একটা। বিছানায় পানি ঢেলেছে। একে তো আজ আমি পানিতে চুবিয়ে মারবো
আদি হনহনিয়ে বেলকনিতে চলে যায়। নিধি ঘুমিয়ে পড়েছিলো। আদি নিধিকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দেয় আর নিধির ওড়না দিয়েই নিধিকে বাঁধে খাটের সাথে
” এবার থাকো তুমি এখানে। আমার পেছনে লাগার শাস্তি এটা
আদি বেলকনিতে গিয়ে শুয়ে পড়ে।
ভেজা ভেজা অনুভবে নিধি চোখ খুলে। দেখে হাত বাঁধা খাটের সাথে। নিধির লেহেঙ্গার ভিজে গেছে
“আমি এখানে কেনো? লাটসাহেবের জন্য আমি তো এসব করেছিলাম। আবার আমি ফেসে গেলাম। এবার এই ভেজা খাটে আমাকেই থাকতো হবে। সত্যিই আমি একটা গাঁধা
নিধির এবার কান্না পাচ্ছে। ওই লোকটা এতো বাজে কেনো? সব সময় কোনো না কোনো ভাবে কষ্ট দেবেই।
নিধির ঠান্ডা লাগছে
” শুনছেনন লাটসাহেব থুক্কু আদিদদদদ শুনছেন
নিধির ডাক আদি শুনতে পাচ্ছে তবুও সাড়া দিচ্ছে না। এই মেয়েটার বোঝা উচিৎ বাঁদরামি করার ফল এমনটাই হওয়া উচিৎ।
“বিশ্বাস করুন আর এমনটা করবো না
আদি এবার বলে
” সত্যি তো
“পাক্কা প্রমিজ
এবার থেকে সাবধানে কাজ করবো। তোকে তো আমি জব্দ করবোই আদি হনুমান
আস্তে করে বলে নিধি
আদি বেলকনির দরজা খুলে আসে। নিধির হাত খুলে দেয়।
” নেক্সট টাইম এমন করলে পুকুরে চুবিয়ে রাখবো
নিধি খাট থেকে নামে।
“আমি ঘুমাবো কোথায়?
মাথা নিচু করে জিজ্ঞেস করে
” আমার মাথায়। গাঁধা একটা। বিছানায় পানি না ফেললে শান্তিতে ঘুমতে পারতাম। এবার থাকো তুমি বসে। আমি তো দোলনায় ঘুমবো
“আমি কিন্তু আগে দোলনায় ঘুমিয়েছিলাম
” কোনো প্রমাণ আছে
“না তো
” তাহলে এখন আমি ঘুমবো। যদি প্রমাণ করতে পারো তো তোমাকে ঘুমতে দেবো
আদি হাই তুলতে তুলতে বেলকনিতে চলে যায়। নিধি এবার কপালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে
“এই ছিলো আমার কপালে। একটা আস্ত হনুমানকে বিয়ে করেছি। পালিয়ে গেলেও ভালো হতো। এবার করবো কি?
নিধি ড্রেস জন্য করে দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে বসে।
চলবে
#শুধু তুই ২
#পর্বঃ৪
#Tanisha Sultana (Writer)
সূর্যের আলো চোখে পড়তেই আদির ঘুম ভেঙে যায়। দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ পেয়ে তরিঘরি করে ওঠে।
“শান্তিতে একটু ঘুমতেও দেবে না
চাদর বালিশ নিয়ে আদি রুমে আসে। দেখে নিধি ফ্লোরে দিব্বি ঘুমিয়ে আছে। নিধিকে দেখে মনে হচ্ছে কতো শান্তিতে ঘুমচ্ছে। ফ্লোরে মানুষ কি করে ঘুমতে পারে ভেবে পাচ্ছে না আদি।
” এই মেয়েটা এলিয়েনের থেকে কম কিছু না। আস্ত একটা গাঁধা।
আদি ঠাস করে বিছানায় বালিশ আর চাদর রেখে নিধির কাছে যায়
“হেই গাঁধা ওঠো
নিধি একটু নড়েচড়ে ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে
” প্লিজ আম্মু আর পাঁচ মিনিট ঘুমতে দাও
আম্মু শুনে আদি চোখ বড়বড় করে। বিয়ের পরের দিন বউ আম্মু বলছে।
“স্টুপিড ওঠো আমি তোমার আম্মু না
নিধি হুরমুর করে ওঠে। চোখ ডলে তাকায় আদির দিকে। আদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। নিধি হদই তুলতে তুলতে ওয়াশরুমে চলে যায়। আদি ফোনটা নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়।
নিধি ফ্রেশ হয়ে জিন্স টপ পড়ে রুম থেকে বের হয়। কিচেনে আদির মা নিরা পৃতি রান্না করছে
” গুড মর্নিং
সবাই নিধির দিকে তাকায়। বাড়ি ভর্তি মানুষ। নতুন বউয়ের এমন ড্রেসআপ দেখে আদির মা নিধির ওপর কিছুটা অসন্তুষ্ট হয়। নিরা নিধির কাছে গিয়ে বলে
“এটা কি পড়েছিস তুই?
নিধি একবার নিজের দিকে তাকিয়ে বলে
” আমি তো এসবই পড়ি। তবে আমি জানি আজ এসব পড়া একদম ঠিক হয় নাই। কিন্তু কি করবো? আমি তো শাড়ি পড়ে এক পাও হাঁটতে পারি না। আর থ্রি পিছ তো আমার নেই। তাই বাধ্য হয়ে এটা পড়েছি
শাশুড়ী নিধির দিকে তাকিয়ে আছে। নিধি শাশুড়ীর কাছে গিয়ে মাথা নিচু করে বলে
“আন্টি আপনি মেবি আমার ওপর রাগ করেছেন
শাশুড়ী কাজে মন দিয়ে বলে
” আমার জা শাশুড়ী ওনারা এইভাবে তোমাকে দেখলে অনেক কথা শোনাবো তো পৃতির একটা ড্রেস পড়ে আসো
নিধি কিছুটা বিরক্ত নিয়ে পৃতির সাথে যায়। আম্মু বারবার করে বলে দিয়েছে শাশুড়ীর মুখের ওপর কথা না বলতে। তাই নিধি সব মেনে নিচ্ছে।
পৃতির কাছ থেকে নীল রং এর একটা থ্রি পিছ নিয়ে নিজের রুমে আই মিন আদির রুমে যায় চেঞ্জ করতে। আদি শাওয়ার নিয়ে বের হয় আর নিধি রুমে ঢুকে। আদির নিধির দিকে চোখ পড়তেই
“এই তুমি কি বাচ্চা?
নিধি চমকে ওঠে। কারণ নিধি ভেবেছিলো রুমে আদি নেই
“বাচ্চাদের মতো ড্রেসআপ কেনো তোমার? তুমি কি হ্যাঁ
নিধি কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে যায়। এই লাটসাহেবের সাথে তর্ক করার চেয়ে নিরব থাকাটাই শ্রেয়। এটা নিধির মনে হয়।
” দিন দিন মেয়েটার সাহস বেড়ে যাচ্ছে। আমার কথার উওর দেয় না। স্টুপিট ইডিয়েট ননসেন্স।
আদি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে ড্রেসিং টেবিলের কাছে যায়। ড্রেসিং টেবিল টা ওয়াশরুমের পাশে। নিধি ড্রেস চেঞ্জ করে ওড়না ঠিক করতে করতে বের হয় আর আদি পেছতে যায় দুইজনে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। আদি নিচে নিধি ওপরে। আদির ঠোঁটের সাথে নিধির ঠোঁটটা হালকা ছোঁয়া লাগে। এটাকে ঠিক কি নাম দেওয়া যায়? কিস না হয় এক্সিডেন্ট। দুজনই একটা ঘোরের মধ্যে আছে।
পৃতি নিধিকে ডাকতে এসে দেখে এই অবস্থা।
“নিধি
পৃতির ডাকে আদি ঠাস করে নিধিকে সরিয়ে উঠে দাঁড়ায়।
” স্টুপিট দেখে চলতে পারো না? সারাক্ষণ স্প্রিডে ছুটে কেনো? গাঁধা একটা
আদি চলে যায়। নিধি হা করে তাকিয়ে ছিলো আদির দিকে। পৃতি হাত বাড়িয়ে দেয়। নিধি হাত ধরে ওঠে। পৃতি মুচকি হাসছে
“তুই হাসছিস কেনো?
” এরকম রোমান্টিক ছিন দেখে কে না হাসবে
“এটাকে রোমান্টিক বলে?
নিধি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে
” হুমমৃ। এবার চল
পৃতি নিধিকে নিয়ে যায়।
খাবার টেবিলে বসে সবাই হাসছে মিটমিট করে। নিধিরও হাসি পাচ্ছে কিন্তু হাসছে না। আদি বেপারটা খেয়াল করছে।
“আমাকে কি তোমাদের জোকার মনে হচ্ছে?
আদির কথায় সবাই হাসি থামায়। আর এক সাথে মাথা নারায় মানে না
” তাহলে হাসছো কেনো?
“দাভাই তোর ঠোঁটে
আশিক ইমনের হাত চেপে ধরে আর ইমন চুপ হয়ে যায়
” আমার ঠোঁটে কি?
ইমন সাথে সাথে বলে
“কিছু না।
” আজিব তো
“আদিদদদদদ
সবাই ডাক অনুসরণ করে ওই দিকে তাকায়। নিধি মেয়েটার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছে। হাতা কাটা হাঁটু ওবদি ড্রেস। উঁচু জুতো প্রচন্ড ফর্সা।
মেয়েটাকে দেখে সবার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। আদি মেয়েটার কাছে যায়
” মনি তুই
“সারপ্রাইজ
মেয়েটা হেসে বলে। তারপর হো হো করে হাসে
” কি হলো
“বউকে ভালোবেসেছিস ঠিক আছে তাই বলে
” মানে
“তোর ঠোঁটে লিপস্টিক
আদি ঠোঁটে হাত দেয়। নিধির দিকে কটমট চোখে তাকিয়ে রুমে চলে যায়
মনি সবার সাথে কথা বলছে।
নিধি মনিকে দেখেছে
” এই আপুটা কতো কিউট, স্মার্ট, কতো সুন্দর করে কথা বলে। একদম পারফেক্ট। ইস যদি ওনার মতো হতাম। ওনার কাছ থেকে টিপস নেবো।
তারপর আবার আদির কথা মনে পড়ে।
“আজ তো লাটসাহেব আমাকে কাঁচা গিলে খাবে
” তুমি নিধিরা নিধি রাইট
মেয়েটা নিধির কাছে এসে বলে।
নিধি হাসিমুখে বলে
“হুমম
” আমি আদির বেস্টফ্রেন্ড মনি রহমান। কাল আসার কথা ছিলো আমার কিন্তু আসতে পারি নি। তাই আজকে চলে এলাম
“খুব ভালো করেছো
” তোমার বরের অনেক সিক্রেট আছে যা তোমাকে বলবো আমি। যদিও তোমার বর শুনলে আমাকে ভীষণ বকবে। জানো আমি একটা কথা ভাবছি। নিরামিষ আদি হঠাৎ আমিষ হলো কি করে? আমি তো ভেবেছিলাম বউয়ের থেকে দুরে থাকবে তাতো দেখি
“নিরামিষ নিরামিষই আছে। এরপখে আমিষ হওয়া ইম্পসিবল।
নিধি মনে মনে বলে
” বড় মা খেতে দাও খুব খিদে পেয়েছে
মনি টেবিলে বসতে বসতে আদির মা কে বলে। আদির মা খেতে দেয়।
এবার তো নিধির রুমে যেতে হবে। কিন্তু রুমে গেলেই হাজার খানি বকা খেতে হবে।
“আমি কেনো ভয় পাবো? আমার তো কোনো দোষ নেই। আমি কি ইচ্ছে করে পড়েছি না কি? আমাকে যদি লাটসাহেব কথা শোনাতে আসে তাহলে আমিও চুপ করে থাকবো না।
নিধি নিজেই নিজেকে বাহবা দিয়ে দু পা এগিয়ে যায়। আবার পিছিয়ে আসে
” যদি থাপ্পড় দেয় তখন? আমার তো হাত পা কাঁপছে করবো কি?
“নিধিরা এনি পবলেম?
মনি জিজ্ঞেস করে। নিধি বেখালে উওর দেয়
” খালি কি পবলেম? ওই লাটসাহেব তো আমাকে মরিচ লবন দিয়ে গিলে খাবে
“লাটসাহেব কে?
শাশুড়ীর কথায় নিধি ঘোর কাটে। পেছনে তাকিয়ে দেখে সবাই অধিক আগ্রহে নিধির দিকে তাকিয়ে আছে। নিধি আমতাআমতা করে বলে
” না মানে আমি রুমে যাবো
বলেই নিধি দৌড়ে চলে যায়। একটু পরেই নিধিকে পার্লারে নিয়ে যাবে। তাই এখনি নিধিকে গোছল করে নিতে হবে। দরজা পর্যন্ত এসে নিধি দাঁড়িয়ে যায়।
“আল্লাহ এবারের মতো বাঁচিয়ে দাও প্লিজ। লাটসাহেব না মানুক তুমি তো জানো আমার কোনো দোষ নেই। আমি ইনোসেন্ট। মিঠাইয়ের মতো এইবার একটু হেলেপ করো।
পা টিপে টিপে নিধি রুমে ঢুকে। চারপাশে তাকিয়ে দেখে কোথাও আদি নেই। বিছানার ওপর আদির শার্ট রাখা।
” নিশ্চয় বেলকনিতে আছে। এই তো সুযোগ। এই ফাঁকে গোছল করে আমি বেরিয়ে যাবো। কিন্তু গোছল করে পড়বো কি?
একটা শাড়ি নেয় নিধি। গোছল শেষে কোনোরকমে পেচিয়ে বের হবে তারপর অন্য ব্যবস্থা। আবার ভাবে এই ড্রেসটা তো একটু আগেই পড়েছি। এটা খুলে শাড়ি পড়ে গোছল করি তারপর এটা পড়বো। যেই ভাবা সেই কাজ। কোনো রকম পেচিয়ে শাড়ি পড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।
ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে পেছন ফিরে দেখে আদি গালি গায়ে শাওয়ারের নিচে। আদিকে এই অবস্থায় দেখে নিধি চিৎকার দেয়। আদি মুখ চেপে ধরে
“একদম চেঁচাবে না
চলবে