#শুধু তুই ২
#পর্বঃ২৭
#Tanisha Sultana (Writer)
সূর্যের আলো চোখে পড়তেই আদির ঘুম ভেঙে যায়। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সোফায় গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে নিধি। সূর্যের হালকা আলো চোখে মুখে পড়েছে নিধির। খুব মায়াবী লাগছে। আদি উঠে নিধির কাছে যায়। ফ্লোরে হাটু মুরে বসে। নিধির মুখের ওপর পড়ে থাকা ছোট চুল গুলো সরিয়ে কানের পিছনে গুঁজে দেয়।
“প্রেম তো জীবনে একবারই আসে। মনও তো একটাই। তাহলে মন কেনো ওর কথা ভাবে। পরিকে এখন আর মনেই পরে না। তাহলে কি আমি নিধিকে ভালোবেসে ফেলেছি?
মনে মনে ভাবছে আদি।
এবার থেকে আমার মন যা চায় তাই করবো। কাউকে ভয় পাবো না। বলে দেবো সব কিছু নিধিকে। সব শোনার পরে যদি নিধির মনে হয় আমার সাথে থাকা যায় না তাহলে আমি ওকে আটকাবো না
আদি নিধির কপালে একটা গভীর চুমু দেয়। তারপর নিধিকে কোলে নিয়ে খাটে খাটে শুয়িয়ে দেয়।
কাবাট থেকে ড্রেস নিয়ে গোছল করে নেয়।
গোছল সেরে বেরিয়ে দেখে নিধি এখনও পাশবালিশ জড়িয়ে বাচ্চাদের মতো ঘুমচ্ছে। আদি মুচকি হাসে। চুলগুলো হাত দিয়ে ঠিক করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। পৃতি আর ইমনকে ডাকে।
” বলো ভাইয়া কি বলবে?
“পৃতি স্টুপিট মানে ননিধিকে একটু শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে দিস প্লিজ
ইমন আর পৃতি হা করে তাকিয়ে আছে আদির দিকে।
” এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো? আদি কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বলে
“না মানে কি বললে বুঝলাম না। পৃতি অবাক হয়েই বলে
” না বোঝার কি আছে? ও তো শাড়ি পড়তে পারে না।আর সাজতেও পারে না। আর তুই তো সাজুগুজুতে এক্সপার্ট। তাই তোকে বললাম।
“কিন্তু হঠাৎ নিধিকে সাজাবো কেনো?
” এতো প্রশ্ন করিস না প্লিজ। পরে সব বলবো
পৃতি চুপ করে যায়।
“আর আমি কি করবো? ইমন জিজ্ঞেস করে।
” তুই একটু বল তো আমাদের এইদিকে ভালো কোনো জায়গা আছে যেখানে যাওয়া যাবে
“অনেক জায়গা আছে। সব জায়গায়ই যাওয়া যায়। নিষিদ্ধ তো কোনো জায়গা নেই।
আদি ইমনের মাথায় একটা গাট্টি মেরে বলে
” আমি নিধিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলছি
“এ্যাঁ
পৃতি ইমন একসাথে বলে। আদি রাগী দৃষ্টিতে তাকায় ওদের দিকে। ইমন কাশি দিয়ে বলে
“আছে
” বল কোথায়?
ইমন আদিকে বলে। আদি ওদের ধন্যবাদ দিয়ে বেরিয়ে যায়। নীল শাড়ি চুড়ি কিনে নিয়ে আসে। রুমে এসে দেখে নিধি রুমে নেই। বাথরুম থেকে পানি পড়ার শব্দ আসছে। নিশ্চয় নিধি গোছল করছে। আদি খাটের ওপর রাখে প্যাকেটটা তারপর আবার বেরিয়ে যায়।
নিধি গোছল সেরে বেরিয়ে দেখে পৃতি খাটের মধ্যে গোল হয়ে বসে একটা প্যাকেট খুলছে। নিধি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছতে মুছতে বলে
“তুই এখানে? আর কিসের প্যাকেট তোর হাতে
” তোর না জানলেও চলবে
নিধি ভ্রু কুচকে তাকায় পৃতির দিকে
“এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
” তোর হবুবর গিফট দিছে তাই তুই আমাকে দেখাবি না?
পৃতি হালকা হেসে বলে
“তোকে পড়াবো
” মানে
“একটু পড়ে দেখ তো কেমন লাগে।
” তোর জিনিস আমি পড়বো কেনো?
“আমি বলছি তাই
নিধি হাজার বার বারণ করার পরেও পৃতি জোর করে নিধিকে শাড়ি পাড়িয়ে সাজিয়ে দেয়। সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়
” তোর মতলবটা কি বলবি? নিধি সন্দেহ করে বলে
পৃতি নিধিকে আয়নার দিকে ঘুরিয়ে বলে
“হয়ত তোর ভাগ্য খুলছে
” মানে?
তখন ইমন আসে।
“কি রে হলো তোর?
নিধির দিকে ভালো করে তাকিয়ে বলে
” কি লাগছে রে তোকে পুরাই মাখন। আদি ভাই তোকে দেখলে বলবে ইউআর লুকিং সো বিউটিফুল
“নিরামিষরা এগুলো বলে না রে। উনি আমাকে দেখে বলবে তোমাকে না কতোবার বলেছি এরকম পেট বের করে শাড়ি পড়বা না। ইডিয়েট একটা। একদম আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করবা না। তোমার প্রতি আমার কেনো ইন্টারেস্ট নাই
তিন মিলে হেসে ওঠে।
ইমন আর পৃতি নিধিকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। নিধি বিরক্ত নিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখে আদি বসে আছে। নীল শার্ট পড়া।
” বিশ্বাস করেন আমি এটা পড়তে চায় নি। পৃতি জোর করে পড়িয়েছে।
নিধি ভয় প্লাস নার্ভাস হয়ে বলে।
“ঠিক আছে। আমিই পড়াতে বলেছি।
আদি ফোন দেখতে দেখতে বলে
” এ্যাঁ
নিধি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে।
আদি ফোন রেখে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
“কোথায় যাচ্ছি আমরা?
“গেলেই দেখতে পাবে
” ওহহ
নিধি আর কিছু বলে না।৷ কিছুখন দুজনই চুপ
“আচ্ছা নিধি একটা বলি
” হুমম বলেন
“আমি পরিকে ভীষণ ভালোবাসতাম। মারাক্তক। পরি সব সময় ভুল করতো আর আমি ওর ভুল গুলোর পরোয়া না করে শুধু ওকে নিয়ে ভাবতাম। ও মারা যাওয়ার পরেও কখনো আমি ওকে দুই সেকেন্ডের জন্য মনের আড়াল করতে পারতাম না।
নিধির মন খারাপ হয়ে যায়। নিজের স্বামীর মুখে অন্য মেয়ের কথা শুনলে যে কারোর খারাপ লাগবে।
” ওহ
নিধি মুখটা ছোট করে বলে।
“তুমি সৌরভকে কতোটা ভালোবাসতে?
” ভালোবাসা তো পরিমাপ করা যায় না। ফ্রেন্ডরা সবাই প্রেম করতো বলেই আমি সৌরভের প্রপোজাল এক্সেপ্ট করেছিলাম। মারাক্তক বা প্রচন্ড ভালো বাসতাম না। জাস্ট আমি আমার ফ্রেন্ডদের যতটা ভালোবাসতাম ততোটাই সৌরভকেও বাসতাম
“ওহহহ
” সৌরভের সাথে তোমার রিলেশন ব্রেকআপ হওয়ার পেছনে আমার কোনো হাত নেই। কোনো একটা ঝামেলায় মারামারি হয়েছিলো সেখানে সৌরভ একটা ছেলেকে ভীষণ মেরেছিলো সেটা তোমার বাবা দেখেনিয়েছিলো। আর সৌরভও তখন পালিয়ে ছিলো পুলিশের ভয়ে। তাই তোমাদের ব্রেকআপ হয়েছে
আদির কথা শুনে নিধি চমকায় না। কারণ নিধিও এই কথা জানতো। সেই ছেলেটি যে মারা গেছে এটাও নিধি জানতো।
একটা ফাঁকা জায়গায় আদি গাড়ি থামায়।
“এখানে কেনো নিয়ে আসলেন?
” কিছু কথা বলতে চায় তোমায়। আমার কথা গুলো শোনার পরে যদি তোমার মনে হয় আমার সাথে তুমি থাকবা তো মিটে গেলো আর যদি তোমার মনে হয় নাহহ আমার মতো ছেলের সাথে থাকা যায় না তাহলে চলে যেতে পারো।
“আগে বলুন তো কি কথা।
আদি চোখ বন্ধ করে জোরে একটা শ্বাস নিয়ে বলে
” নিধি আই লাভ ইউ
নিধির মুখ আপনাআপনি হা হয়ে যায়। কি বলছে উনি? আদি নিধির হাত ধরে বলে
“আমি জানি তোমার মনে হচ্ছে এই ছেলেটা মনে হয় পাগল। একটু আগে বললো একটা মেয়েকে মারাক্তক ভালো বাসতো এখন আবার আমাকে বলছে। কিন্তু বিশ্বাস করো এমনটাই হয়েছে। তুমি আমার লাইফে আসার পরে পরির কথা তেমন মনে পড়ে না। মাঝেমধ্যে মনে পড়ে। ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়। আমার চিন্তা ভাবনা, মনে বাইরে সব জায়গায় #শুধু তুই।
নিধি এখনো হা করে আছে।
” আপনি আমাকে নিধি বলে ডাকলেন?
নিধির কথায় আদি চোখ ছোটছোট করে তাকায় নিধির দিকে
“আমি এতোকিছু বললাম আর তুমি শুধু এটুকু শুনলে?
” আর কি বলছেন? নিধি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে
“তুমি শুনো নাই
” নাহহহ তো
আদি হাসবে না,কি কাঁদবে বুঝতে পারছে না
“কালা তুমি? কানে শুনো না? মন কই থাকে? এতোকিছু বললাম কানে ঢুকলো না?
রেগে বলে আদি।
“আবার বলেন?
আদির ইচ্ছে করছে নিধির গলা টিপে ধরতে। কিন্তু এই মুহূর্তে সবটা নিধিকে বলা প্রয়োজন তাই এরকম কিছু করবে না।
” এখন যা যা বলবো মন দিয়ে শুনবে ওকে
“ওকে বলেন
” আই লাভ ইউ। ডু ইউ লাভ মি
নিধি ভ্রু কুচকে তাকায় আদির দিকে
“দেখুন মজা করার মুড নাই
নিধি গাড়ি থেকে মানতে যায় আদি হাত টেনে ধরে
” সত্যি বলছি।
ইনোসেন্ট ফেস করে বলে আদি। নিধির মায়া হয় আদির এমন ফেস দেখে।
“পরি সৌরভ ওদের ব্যপারটা ক্লিয়ার করুন তারপর আমি বলবো।
আদি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলতে শুরু করে
চলবে
#শুধু তুই ২
#পর্বঃ২৮
#Tanisha Sultana (Writer)
“আমার যখন আট বছর বয়স তখন আমার বাবার ওপর মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। বাবা না কি একটা মহিলাকে খুন করেছিলো। সেই মহিলাটি না কি বাবার প্রেমিকা ছিলো। পুলিশ বাবাকে ধরে নিয়ে গেছিলো। পৃতির তখন সবে পনেরো দিন বয়স। আকাশ ভাইয়া একটু বড়। খুব বাজে ভাবে আমাদের দিন কাটে। দাদু কাকা সরকারি চাকরি করতো। তাদেরকেও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এমনও অনেক দিন গেছে যে দিন আমরা খেতে পায় নি। পৃতিকে একটু দুধ খাওয়ানোর টাকাও ছিলো না। এভাবে এক বেলা খেয়ে আবার কতোদিন না খেয়ে আমাদের দিন কাটতো। চার বছর পরে বাবা জেল থেকে ছাড়া পায়। আর আমাদের দিন ঘুরতে থাকে।
বিশ বছর পরে আবার আমার সাথে সেই সেম ঘটনা ঘটে। পরি আমি মনি সৌরভ আমরা কক্সবাজারে এক অফিসেই জব করতাম। সৌরভ খুব রিকোয়েস্ট করে বলে পরিকে আমার বাড়িতেই রাখতে। তো আমি রেখেদেই। ভালোই কাটছিলো আমাদের দিন। একদিন হঠাৎ করে এসে পরি বলে ও প্রেগন্যান্ট। খুব বড় ধাক্কা খেয়েছিলাম আমি। পরি শুধু বলতো তুমি আমাকে সত্যিই ভালোবাসলে কখনো কোনো প্রশ্ন করো না। তবুও আমি প্রথম প্রথম জিজ্ঞেস করতাম কিন্তু পরে আর করি নি। মেনে নিয়েছিলাম পরিকে। বাড়িতে যোগাযোগ করা বন্ধ করে দেই। সিদ্ধান্ত নেই বাকি জীবনটা কক্সবাজারে পরির সাথেই কটাবো।
পরির তখন নয় মাস চলে। আমি অফিসে গেছিলাম। সৌরভ ফোন করে বললো বাড়ি আসতে। আমি ছুটে বাড়ি ফিরে দেখি পরির পেটে ছুড়ি বিধে আছে। ছটফট করছে পরি। আমি ছুড়িটা ছাড়িয়ে পরিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ায় তখন সৌরভ আমাকে বলে আমি না কি পরিকে খুন করেছি। ফোনে ভিডিও করে রাখে। আমাকে হাসপাতালে যেতে দেয় না।
আদির চোখ ছলছল করছে। নিধি তো কেঁদেই ফেলেছে। আদি চোখ মুছে বলে
“আমি থানা পুলিশ খুব ভয় পায়। তুমি আমাকে হেংলা বলতে পারো। আমার পরিবার যদি এই কথাটা জানতে পারে ভেঙে পড়বে। আর সৌরভ সব সময় আমাকে হুমকি দেয়। একটা বছর ধরে এইরকম একটা অভিযোগ মাথায় নিয়ে ঘুরছি। না পারছি কাউকে বলতে আর না পারছি কাউকে বলতে।
নিধি আদির হাতের ওপর হাত রাখে। আদি নিধির দিকে তাকায়
” তুমি আমার সাথে থাকতে না চাইলে আমি তোমাকে জোর করবো না
নিধি ভেংচি কেটে বলে
“আপনি জোর করতে পারেন না কি?
” যে থাকতে চায় না তাকে তো আর জোর করে রাখা যায় না।
“বউ আমি আপনার। আমার ওপর আমার থেকেও বেশি অধিকার আপনার। ছিনেমাতে দেখেন না। অবশ্য আপনি ছিনেমা দেখবেন কি করে আপনি তো নিরামিষ।
” আমি নিরামিষ?
কিছুটা রেগে বলে আদি
“অবশ্যই। নিরামিষ না হলে কেউ এইভাবে প্রপোজ করে।
” তাহলে কিভাবে প্রপোজ করে?
“জানেন না?
” নাহহ
“আপনার ফোনটা দেন?
হাত বাড়িয়ে বলে নিধি।
” কেনো?
“দিতে বলছি দেন না
আদি ফোন বের করে দেয়। নিধি প্রপোজ করার ভিডিও বের করে আদির সামনে ধরে। আদি দেখে
” এভাবে প্রপোজ করতে হয়।
“কোথায় লিখা আছে?
” কোথাও লেখা নাই বাট এটাই নিয়ম
“ভালোবাসার কথা গুছিয়ে বলাটা ইমপটেন্ট। ফুল দিয়ে রিং দিয়ে এগুলো তো পোলাপান ইমপ্রেস করার জন্য করে।
” আপনিও আমাকে ইমপ্রেস করুন না হলে প্রপোজ এক্সেপ্ট হবে না
নিধি একটু ভাব দেখিয়ে বলে
“শিওর
” হুমম পাক্কা শিওর
“ওকে
আদি গাড়ি থেকে নেমে নিধির পাশে গিয়ে দরজা খুলে হাত বারিয়ে দেয়। নিধি আদির হাত ধরে বের হয়। পায়ের ওপর নরম কিছু অনুভব করে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে ফুলের পাপড়ি। নিধি আদির দিকে তাকায়
” কেমন?
“এখনই বলবো না
” ওকে
নিধি আদির হাত ধরে হাঁটতে থাকে। পেছন থেকে গান বেজে ওঠে
“ভাল্লাগে হাঁটতে তোর হাত ধরে
ভাবনা তোর আসছে দিন রাত ভরে
এলোমেলো মনটাকে কি করে যে আর রাখে
কেনো আমি এতো করে তোকে চায়
পারবো না আমি ছাড়তে তোকে
পারবো না ছেড়ে বাঁচতে তোকে
হয়ে যা না রাজি এক বার”
হাঁটতে হাঁটতে নদীর পারে চলে যায়। গাঁধা ফুল দিয়ে সাজানো একটা নৌকা। চারপাশে বেলুন দিয়ে সাজানো।
নিধি আর আদি নৌকায় ওঠে।
“এবার এন্সার দাও
” কিসের?
নিধি না জানার ভাব করে বলে।
“প্রপোজ করলাম তার।
” তার আগে আপনি আমাকে বলেন আমাকে কেমন লাগছে?
আদি নিধির দিকে ভালো করে তাকায়। পেটের কাছে গিয়ে আদির চোখ আটকে যায়। ধবধবে ফর্সা পেট। বাতাসে নীল শাড়িটা পেট থেকে সরে গেছে। সম্পূর্ণ পেটটা বেরিয়ে গেছে।
নিধি আদির মুখের সামনে তুরি বাজায়
“হেলো বলেন
আদি নিধির পেটের দিকে চোখ রেখেই বলে
” হট
নিধি হালকা লজ্জা পায়।
“সত্যি বলতে তোমার ঠোঁট আর পেট বারবার আমাকে ঘায়েল করে দেয়।
” তাহলে বলতেন কেনো আমার প্রতি আপনার কোনো ইন্টারেস্ট নেই
ঠোঁট উল্টে বলে নিধি
আদি নিধিকে টান নিয়ে কোলে বসায়।
“তোমার প্রতি দুর্বল হতে চাইতাম না তাই বলতাম। কিন্তু তুমি তো ছাড়লে না। আসক্ত করেই ছাড়লে।
নিধি মুচকি হাসে।
” তো এবার বলো
“কি বলবো?
” আমি যা জিজ্ঞেস করেছি?
“আপনি আবার কি জিজ্ঞেস করলেন?
ভ্রু কুচকে বলে নিধি।
” এখানে এসে থেকে তো একটাই কথা জিজ্ঞেস করছি। কিছুটা রেগে বলে আদি।
“মনে নাই। মুখ বাঁকিয়ে বলে নিধি।
আদি এবার নিধির দুই গালের দুপাশে হাত দিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে চিৎকার করে বলে
” আই লাভ ইউ। ডু ইউ লাভ মি
নিধি ছিটকে দুরে সরে যায়। কানে হাত দিয়ে রেগে বলে
“কালা মনে হয় আমাকে আপনার। আস্তে বললেও তো শুনতাম। কানটা গেলো আমার।
” এতোখন ধরে বলছিলাম শুনলে না।
নিধির ইচ্ছে করছে আদিকে কাঁচা গিলে খেতে।
“বলো
” বলছি
“হুমম তারাতাড়ি
” আই
“তারপর
নিধি চোখ বন্ধ করে বলে
” লাভ
আদি এক্সসাইটেড হয়ে বলে
“নেক্সট
” মি
আদির মুখটা কালো হয়ে যায়। নিধি খিলখিল করে হাসে৷ আদি রেগে নৌকা থেকে নেমে যায়।
“আই লাভ ইউ আদি
চিৎকার করে বলে নিধি। আদি থেমে যায়। নিধিও নৌকা থেকে নেমে যায়। আদির সামনে দাঁড়ায়।
” ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি খুব
আদি নিধিকে জড়িয়ে ধরে বলে
“হইছে আর বলতে হবে না।
” কেনো ভালোবাসি শোনার শক মিটে গেলো না কি?
“ভালোবাসি শুনতে ভালো লাগে না ভালোবাসতে ভালো লাগে
নিধির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে আদি। নিধি লজ্জা পায়।
সূর্য মাথার ঠিক ওপরে এসেছে। চারদিকে এতোখন মিষ্টি সকালের বাতাস বইছিলো এখন রোদের আলো পোখর হয়ে আসছে। পার্ক বা নদীর পার সাধারণত বিকেল বেলাতে ভালো লাগে।
আদি আর নিধি এতোখন নৌকায় পা ডুবিয়ে বসেছিলো। এখন রোদের তাপে এখানে বসা যাচ্ছে না।
” আদি এবার বাড়ি যাওয়া উচিৎ
“হুম চলো
গাড়িতে গিয়ে বসে দুজন। আদি এক হাতে ডাইভ করছে অন্য হাত দিয়ে নিধির হাত ধরে আছে।
” নিধি আমার ওপর তোমার কোনো অভিযোগ নেই?
“ছিলো তো অনেক অভিযোগ ছিলো। কিন্তু যখন আপনি আমাকে নিধি বলে ডাকেন সব অভিযোগ অভিমান ভালোবাসাতে পরিণত হয়।
” তাহলে তোমাকে আর নিধি বলে ডাকবো না
“কেনো?
” নামটা তোমার সাথে যায় না। গাঁধায় ঠিক আছে। আর নাহলে স্টুপিট ননসেন্স ইডিয়েট
“আপনি তাহলে গাঁধার বর
নিধির কথায় আদি থমথমে খেয়ে যায়।
” নাহহহ মানে
“আপনি আমাকে গাঁধা বললে আমিও আপনাকে গাঁধার বর বলবো
” প্রচন্ড কথা বলতে শিখে গেছো
“আপনার থেকেই
এরকম টুকটাক ঝগড়া করতে করতে বাড়িতে এসে পৌছায়।
” তুমি ভেতরে যাও আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি
নিধি ভেতরে যায়। দরজার সামনে যেতেই মাথার ওপরে গোলাপের পাপড়ি পড়ে। নিধিতো অবাক। নিধির সামনে রোহন হাঁটু মুরে বসে বলে
“কিভাবে মনের কথা বলে মানুষ জানি না। কাউকপ কপি করা আমার ক্যারেকটার না। তাই আমি আমার মতো করে তোমাকে মনের কথা বলতে চায়। তোমাকে প্রথম দেখাতেই আমার ভালো লেগে যায়। সেই ভালো লাগা আস্তে আস্তে ভালোবাসাতে পরিণত হয়েছে। এখন তোমাকে ছাড়া আমার নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। অনেক ভালোবাসি তোমায়। ইউল ইউ ম্যারি মি
নিধির সামনে একটা রিং বাড়িয়ে দিয়ে বলে।
নিধি পেছনে তাকিয়ে দেখে আদি রক্ত চোখে তাকিয়ে আছে।
” আল্লাহ বাঁচাও
নিধি মনে মনে আল্লাহকে ডাকছে।
চলবে