#শুধু তুই ২
#পর্বঃ২৩
#Tanisha Sultana (Writer)
“আমার ওড়না দিন
আদি নিধির ওড়না গলায় পেচিয়ে পকেটে হাত ঢুকিয়ে আবার নিধির দিকে এগোতে থাকে
” আআপনি এগোচ্ছেন কেনো?
“তুমি পিছচ্ছ কেনো?
” দেখুন
“দেখাও
” আমি অন্য জনের হবু বউ
“তো
” তো আমার সাথে এমন অসভ্যতামি করতে পারেন না
নিধি দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। পেছনে যাওয়ার আর জায়গা নেই। আদি দেয়ালের দুই পাশে হাত রেখে নিধির দিকে ঝুকে বলে
“টার্চ করছি আমি তোমাকে?
নিধি মাথা নিচু করে বলে
” নাহহ
“কিন্তু এখন করবো
নিধি ফট করে আদির দিকে তাকায়।
” দাদিমার খুশির খবর লাগবো। তোমার আফসোস আমি নিরামিষ। তাই ভাবলাম আজ একটু আমিষ হই
“আমাদের কিন্তু ডিভোর্স হবে
” হয় নি তো
নিধি একটু সাহস সঞ্চয় করে বলে
“আমি জানি আপনি আমাকে কিছুই করবেন না। জাস্ট এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন। কিন্তু বুঝতে পারছেন না কেনো আমার হার্ট বিট পাঁচশো তিপ্পান্ন হয়ে গেছে। যে কোনো মূহুর্তে বেরিয়ে আসবে
” তোমার হার্ট কি চাইছে আমি তোমাকে টার্চ করি
নিধি বোকা হয়ে যায়। দ্রুত মাথা নারে মানে না
“আমার হার্ট চায় রোহন আমাকে
আদি নিধির ঠোঁটের ওপর আঙুল রাখে
” এখানে আমি আর তুমি আছি রোহন কোথাও নেই।
নিধি আদির চোখের দিকে তাকায়। আজ আদির চোখে নিধি কোনো রাগ বা বিরক্ত দেখতে পাচ্ছে না। ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছে। নিধি আদির চোখে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। অদ্ভুত সুন্দর আদির চোখ দুটো।
আদি নিধির ঠোঁট থেকে হাত সরিয়ে নিধির এলোমেলো চুল গুলো ঠিক করে দেয়
“আমি তোমার কপালে একটা কিস করতে চায়
নিধির বিরক্ত লাগছে। কপালে কিস করবে তার পারমিশন চাইছে। নেকা
” করবো কি?
নিধি বিরক্তি নিয়ে বলে
“ইচ্ছা
আদি গভীর ভাবে নিধির কপালে একটা চুমু দেয়। তারপর নিধির কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেয়।
নিধির আজ আদিকে অদ্ভুত লাগছে। এই আদিকে অচেনা লাগছে। এই কি সেই আদি যে সারাক্ষণ স্টুপিট গাঁধা ইডিয়েট ননসেন্স এগুলো বলতো
” বন্ধু হবে আমার? যার কাছে আমি আমার সব কিছু শেয়ার করতে পারবো। যার সাথে প্রাণ খুলে হাসতে পারবো। যার কাছে আমি আমার ভয়ংকর অতীত টা নির্ভয়ে বলতে পারবো। আমাকে বুঝবে। কখনো ঠকাবে না। যাই হয়ে যাক অলওয়েজ আমাকে বিলিভ করবে। হবে এরকম বন্ধু?
কপালে কপাল ঠেকিয়েই বলে আদি।
“আমি কখনোই তোমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবো না। সারাজীবন তোমার হাজবেন্ড হয়ে থাকতে পারবো না। আমাদের আলাদা হওয়াটা খুব দরকার। কিন্তু হ্যাঁ আমি তোমার জন্য কিছু ফিল করি। কিছুটা মায়া কাজ করে তোমার প্রতি। কিন্তু সেটা ভালোবাসা না। ভালোবাসা সম্ভব নয় তোমাকে। আর আমিও জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো না। তুমি খুব ভালো মেয়ে। অনেক ভালো ছেলে ডিজার্ভ করো তুমি। সৌরভ বা আমি তোমার যোগ্য না।
তবে হ্যাঁ আমি যতদিন বেঁচে থাকবো তোমার সাথে যোগাযোগ রাখতে যায়। আমার কষ্ট তোমার সাথে ভাগ করে নিতে চায় বন্ধু হয়ে। ইউ নো হোয়াট ভালোবাসার থেকে কিন্তু বন্ধুত্বের সম্পর্ক বেশি গভীর আর পবিত্র হয়।
আদির কথা গুলো মন দিয়ে শুনছে নিধি। কিরকম রিয়াকশন দেওয়া উচিৎ নিধির জানা নেই। তোমাকে ভালোবাসি না কথাটা বারবার কানে বাঁজছে নিধির।
” আমিও তো ওকে ভালোবাসি না। তাহলে ওর মুখ থেকে ভালোবাসি না কথাটা শুনে আমার ভেতরটা এমন জ্বলে যাচ্ছে কেনো?
নিধির চোখের কোনো পানি চিকচিক করছে৷
আদি নিধিকে ছেড়ে দিয়ে খাটে
গোল হয়ে বসে। নিধি আদির আড়ালে চোখের পানি মুছে ফেলে।
“এখানে বসো না
নিধি আদির পাশে বসে। আদি নিধির কোলে মাথা রেখে শয়। নিধি প্রথমে চমকালেও পরে স্বাভাবিক হয়
আদি চোখ বন্ধ করে বলে
” মাথায় হাত বুলিয়ে দাও না প্লিজ
নিধি বাধ্য মেয়ের মতো চুলে বিলি কেটে দিতে থাকে।
“আমার কথায় কি তোমার খারাপ লেগেছে? বা কোনো কথায় হার্ট হয়েছো?
নিধি একটু হেসে বলে
” না
“তোমাকে আমি কেনো আটকে রাখলাম জানি না। তুমি আমার লাইফে আসার পরে থেকেই আমি হুটহাট অনেক কাজ করে ফেলি যেগুলো আমি করতে চায় না। পরে রিয়েলাইজ করি এটা করা আমার ঠিক হয় নি।
” হুমমম
“জানো তোমাকে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি কারণে অকারণে তোমাকে বকি কিন্তু তুমি গাঁধার মতো কেনো বকলাম কারণ খুঁজতে থাকো। প্রতিবাদ করতে পারো না। বেপারটা ভালো লাগে। এরকমকি থাকবা শুরু আমার সামনে অন্য দের সামনে না ওকে
” আপনার সামনেই ওরকম থাকবো না। প্রতিবাদ করবো
“আমিও চাপকে গাল লাল করে দেবো
” আর আমি বিছানায় পানি ঢেকে দেবো
“সেখানে তোমাকেই বেঁধে রাখবো আমি
” লাটসাহেব একটা
“গাঁধা
” কথাই বলবো না
“আমি মাঝেমধ্যে চিন্তা করি। তোমার মুখের মধ্যে কি বেলুন আছে না কি? কথায় কথায় ফুলে যায়
” হুমম আছে তো
“সেটাই
” আমি এখন বাইরে যাবো
“নাহহহহ
” প্লিজ
“বললাম তো
” আপনার জন্য করলা নিয়ে আসবো প্লিজ
“যা খুশি করো
নিধি দরজা খুলে বাইরে যায়।
“আমি এই পিচ্চিটাকে ভালোবেসে ফেলছি। কিন্তু এই কথাটা কাউকে বুঝতে দেওয়া যাবে না। আমার জীবনটা স্বাভাবিক হলে সৌরভ পরি এই দুটো মানুষ না থাকলে আমিও ভালো থাকতে পারতাম।
আদি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
নিধি কিচেনে যায়। নিরা আর শাশুড়ী লুচি বানাচ্ছে। পৃতি পা ঝুলিয়ে আচার খাচ্ছে আর ইমনের সাথে ঝগড়া করছে।
” তুমি এখানে?
শাশুড়ী গম্ভীর মুখে প্রশ্ন করে নিধিকে।
“না মানে সাহায্য করতে আসলাম
” না না তোকে কিছু করতে হবে না। তুই আদির কাছে গিয়ে বসে থাক
ইয়ারকি মেরে বলে নিরা। নিধি কটমট চোখে তাকায় নিরার দিকে।
“এখানে তোমার কোনো কাজ নেই। তুমি বরং পৃতি আর ইমনের সাথে গিয়ে পৃতির বিয়ের কেনাকাটা করে আসো
” আমি
“তোমাকেই তো বলছি
” হুমমম
“আর শোনো
” হুম আন্টি বলো
আদির মা আটা মাখা বাদ রেখে নিধির দিকে তাকিয়ে বলে
“মেয়েদের জীবন একটা বিয়েও একটা। নিজের স্বামীকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করো। ভালোবাসা দাও তবেই ভালোবাসা পাবে। গাঁধার মতো না থেকে একটু চালাক হওয়ার চেষ্টা করো। স্বামীকে ইমপ্রেস করো
নিধি শাশুড়ীর কথা মন দিয়ে শুনছে। আজ শাশুড়ীও গাঁধা বলবো
” আমি তোমার সাথে আছি। তোমাকে হেল্প করবো
নিধি মুচকি হাসে
নিধি রুমে এসে দেখে আদি ঘুমচ্ছে। তাই কোনো শব্দ না করে নীল একটা থ্রি পিছ পড়ে বেরিয়ে পড়ে শপিংএর জন্য।
ইমন ডাইভ করছে পৃতি আর নিধি নানারকমের গল্প করছে। নিধির ফোন বাজচ্ছে। নিধি ফোন রিসিভ করে
“কেমন আছো নিধিরা?
” সৌরভ আপনি
“হুমম আমি
” বিজি আছি
“জাস্ট পাঁচ মিনিট
” বলুন
“নিধিরা লাভ ইউ
” আর
“আদি তোমাকে আমার সম্পর্কে যা বলেছে মিথ্যা। আমি কাউকে খুন করতে পারিই না
” আদি ও আমায় কিছু বলে নি
“বলবে
” ওহহহ
“বললে তুমি বিশ্বাস করবা না।
নিধি ফোন কেটে দেয়। সৌরভ কি বলছে নিধির মাথায় ঢুকছে না। খুন করেছে কে? আর কাকে? নিধি ফোন বন্ধ করে দেয়।
” কি রে তোর প্রাক্তন কি বললো
ইমন জিজ্ঞেস করে
“কি যেনো খুন খুন বললো। বাদ দে তাড়াতাড়ি চল
আদি ঘুম থেকে উঠে ইডিয়েট বলে ডাকে। কিন্তু নিধির খবর নেই।
রান্নাঘরে যায়
” মা স্টুপিটটা কই?
“শপিংমলে গেছে
” ওহহহ
আদি রুমে এসে পাঁচ মিনিটে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ে।
শপিংমলে গিয়ে দেখে রাফিন আর রোহন দাঁড়িয়ে আছে। নিধির মুখটা কালো হয়ে যায়। রোহন একগাল হেসে এগিয়ে আসে
“হাই নিধি
” হেলো
সবাই মিলে দোকানে যায়। রোহন একটার,পর একটা ড্রেস দেখিয়ে যাচ্ছে নিধিকে। নিধির বিরক্ত লাগছে তবুও কিছু বলতে পারছে না।
“নিধি এই ড্রেসটা একবার পড়ে আসো তো
রোহন ড্রেসটা নিধির হাতে ধরিয়ে ঠেলেঠুলে নিধিকে চেঞ্জিং রুমে পাঠিয়ে দেয়।
” ধুর কপাল আমার। কোথা থেকে সব সময় উড়ে উড়ে চলে আসে। জামাই পাত্তা দেয় না বন্ধু হতে চায় আর অন্য ছেলে হয়ে আসে প্রেম করতে। আজব
কেউ নিধির হাত ধরে টান দিয়ে অন্যদিকে নিয়ে যায়। নিধি ভয় পেয়ে যায়। চিৎকার দিতে যায় কিন্তু লোকটা মুখ চেপে ধরে
চলবে
#শুধু তুই ২
#পর্বঃ২৪
#Tanisha Sultana (Writer)
“একদম শব্দ করবা না
আদি নিধির মুখের ওপর থেকে হাত সরায়। নিধি জোরে জোরে কয়েকটা শ্বাস নিয়ে বলে
” আপনি
“তো কি রোহন থাকবে?
আদি কিছুটা রেগে বলে
” তা বলি নি
“না বললে ভালো। রোহন ড্রেস দিলো আর তুমি নাচতে নাচতে সেটা পড়তে যাচ্ছ
” পাড়বো না কেনো? এতো সুন্দর ড্রেস
“তুমি পড়বা না
চোখ মুখ শক্ত করে বলে আদি।
নিধি একটু মজা নেওয়ার জন্য বলে
” পড়বো
“এখান থেকে এক পা নড়লে পা ভেঙে দেবো
” ভালো তো আর বাসেন না তাহলে এতো অধিকার দেখান কেনো?
নিধি কিছুটা সিরিয়াস হয়ে বলে।
আদি নিধির মুখের দিকে একবার তাকায়
“ভালোবাসি আর না বাসি তুমি এখনো আমার বউ। ডিভোর্সের পড়ে যা খুশি কইরো কিচ্ছু বলবো না।
” তখন আপনি বললেও শুনবো না।
“কেনো?
” তখন আপনার অধিকার থাকবে না।
আদি নিধির হাত থেকে জামাটা নেয়। আর এক হাতে নিধির হাত ধরে রোহনের সামনে যায়
“নিধি ড্রেসটা পড়োনি যে
হাসিমুখে বলে রোহন
” এই ড্রেসটা ও পড়বে না
আদির কথায় সবাই আদির দিকে তাকায়। নিধি তো চোখ বড়বড় করে তাকায়। ইশারায় আদিকে চুপ থাকতে বলছে
রোহন সবার দিকে একবার তাকিয়ে। নিধির দিকে দুপা এগিয়ে গিয়ে বলে
“কেনো? ড্রেসটা কি তোমার পছন্দ হয় নি?
নিধি সাথে সাথে বলে
” না না ড্রেসটা খুব পছন্দ হয়েছে। ভীষণ ভালো লেগেছে। আমি পড়বো তো ড্রেস
আদি নিধির দিকে তাকায়। নিধি কথা ঘুরিয়ে ফেলে
“আআসলে ড্রেসটা আমি পড়বো না। খুব টাইট হয়। পড়া যায় না
রোহন হেসে বলে
” ওহহ এই বেপার। আমি ভাবলাম কি না কি। জানো আদি আমি এই প্রথম কোনো ভাইকে এতো কেয়ারিং দেখলাম। সারাক্ষণ বোনের সাথে সাথে ঘুরে। বোনের হাত ধরে রাখে। বোনের কোনটা ভালো লাগে না লাগে মুখ দেখেই বুঝতে পারে। আমার তো মন চায় তোমার আর নিঊির একটা পিক তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে একেই বলে ভাই-বোনের ভালোবাসা।
রোহনের কথা শুনে আদি নিধির হাত শক্ত করে ধরে। নিধি ব্যাথা পায়। আদি শক্ত কন্ঠে বলে
“ও আমার বোন নঅ
তখন নিধি বলে
” রোহন ওই ড্রেসটা কেমন দেখেন তো
রোহন ড্রেস দেখতে যায়। আদি আগুন দৃষ্টিতে নিধির দিকে তাকায়
“এভাবে তাকিয়েন না আমি ভষ্য হয়ে যাবো
” রোহনকে বলতে দিলা না কেন?
“আমার বিয়েটা ভাঙা কি খুব জরুরি? আপনিও থাকবেন না আবার ওকেও ডিসকোয়ালিফাই করে দিচ্ছেন। আপনি কি চান আমি চিরকুমারী থাকি।
আদি দাঁত কটমট করে বলে
” কয়ডা লাগে তোমার
“বাজারে যত ভালো আছে
আদি বড়বড় চোখ করে নিধির দিকে তাকায়। নিধি দাঁত কেলিয়ে বলে
” ড্রেস
বলেই পৃতির কাছে চলে যায়।
ইচ্ছে মতো ড্রের কিনেছে পৃতি আর নিধি। আদি তাড়া না দিলে আরও কিনতো। কিন্তু আদির বকা খাওয়ার ভয়ে তাড়াহুড়ো করেছে। গাড়িতে ড্রাইভিং ছিটে বসে আছে আদি। নিধি আর পৃতি সব জামাকাপড়ের ব্যাগ রোহন আর ইমনকে দিয়েছে। গাড়িতে সব কিছগ ওঠানোর পরে। নিধি গিয়ে আদির পাশে বসে। পৃতি রাফিনের সাথে কথা বলছে দুরে দাঁড়িয়ে। ইমন গাড়ির পেছনের ছিটে বসে চোখ বন্ধ করে আছে। আসলে ওদের শপিং বয়াগ টানতে টানতে ও ক্লান্ত।
“আমার লাইফকে সাবধানে নিয়ে যেয়ো
বলেই রোহন চলে যায়। আদি তো এমনিতেই বম হয়ে আছে। তারপর রোহনের মুখে লাইফ শুনে বম ফাটার যোগ্য হয়ে গেছে।
ঠাস করে গাড়িতে লাথি মারে। নিধি ভয়ে কেঁপে ওঠে। ইমন সবে একটু ঘুমের মতো আসছিলো ও ধরফরিয়ে ওঠে
” ধুর দিলি তো ঘুমের বারোটা বাজিয়ে
ইমন মনে মনে আদিকে একটু বকে আবার চোখ বন্ধ করে। পৃতি গাড়িতে ওঠে। আদি ডাইভ করা শুরু করে
“নিধি ভীষণ টায়ার্ড হয়ে গেছি কোনো একটা কফিশপে বসে কোল্ড কফি খেলে মন্দ হয় না বল
” ঠিক বলেছিস তুই
“ভাইয়া ভালো একটা কফিশপ দেখে গাড়ি থামাও
আদি কিছু বলে না। এখানে তো রোহন নেই কফি খাওয়া যেতেই পারে।
” পৃতি তোর বিয়ের কোনো রিচুয়েলসে স্টুপিট টাকে ইনভলভ করবি না
“কিন্তু কেনো? আমার বিয়ে আর নিধি এনজয় করবে না
” না করবে না। বিয়েটা তোর ওর না। তাছাড়া ছেলে দেখলেই তো বিরিং শুরু হয়ে যায়। মা আছে কাকিমা দাদিমা সবাই আছে। ওর কোনো প্রয়োজন নেই।
পৃতি মন খারাপ করে বলে ওকে
একটা কফিশপে আদি গাড়ি থামায়। ইমন এতোখন ঘুমিয়েছে। এতো কোলাহলের মধ্যেও আর একটু সময়ের জন্য মানুষ ঘুমতে পড়ে এটা ইমনকে না দেখলে কেউ বিশ্বাস ই করতো না। নিধি গাল ফুলিয়ে আছে। পৃতি মনের আনন্দে সেলফি তুলছে।
ইমন আর পৃতি এক পাশে বসে। নিধি বাধ্য হয়ে আদির পাশে বসে। এমনিতেও আদিকে এখন নিধির সয্য হচ্ছে না
কফি অর্ডার দেয়। ইমন আর পৃতি বিয়ে নিয়ে অনেক প্লান করছে। আদি ফোন দেখছে। নিধির একা একা বরিং লাগছে। এদিকে কফিও আসছে না। নিধি পার্স থেকে ফোন বের করে চালু করে। আর সাথে সাথে এতোগুলো মেসেজ আসে।
“তোমাকে এতো মেসেজ কে দেয়? নিশ্চয় রোহন
বলেই আদি নিধির হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নেয়। মেসেজ চেক করে দেখে সৌরভের মেসেজ। আদি এক এক করে সব মেসেজ পড়ে। আদি মোটামুটি ঘামতে শুরু করে দিয়েছে।
” কে মেসেজ দিছে ভাইয়া
পৃতি জিজ্ঞেস করে।
আদি পৃতির কথার উওর না দিয়ে তারাহুরো করে মেসেজ ডিলিট করে। নিধির ফোন থেকে ছিম খুলে নেয়। নিধি হা করে দেখছে লোকটা করতে চাইছে টা কি?
ফোনটা নিধির হাতে দেয় আদি
“এএতো ছেলেদের সাথে কিসের কথা?
” আপনি ছিমটা খুলে নিলেন কেনো? আর এভাবে ঘামছেন কেনো? এতো নার্ভাসই বা কেনো? কাহিনি কি?
নিধি ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে।
নিধির এরকম প্রশ্নে আদি আরও বেশি ঘামতে শুরু করে। মাথা চেপে ধরে বসে। নিধি বিচলিত হয়ে বলে
“আর ইউ ওকে
আদি মাথা নারায় মানে ঠিক আছে। ইমন ওয়েটারকে তারা দিয়ে কফি আনায় সাথে আদির জন্য ঠান্ডা পানি। আদি ঠকঠক করে এক নিশ্বাসে পুরো পানিটা খেয়ে ফেলে।
” সবাই আমার দিকে এরকম হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?
ইমন পৃতি নিধি তাকিয়ে ছিলো আদির দিকে।
নিধি এখনো সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে আদির দিকে। আদিকে নার্ভাস হতে দেখে নিধি নিশ্চিত যে কিছু একটা হয়েছে।
আদি কয়েক চুমুকেই কফি শেষ করে ফেলে। উঠে দাঁড়িয়ে বলে
“আমি গাড়িতে আছি তোমরা শেষ করে এসো।
কাউকে কিছু না বলার সুযোগ দিয়ে আদি চলে যায়। নিধি এক চুমুকে সবটা শেষ করে আদির পেছনে দৌড় দেয়। ইমন আর পৃতি খাচ্ছে ধীরেসুস্থে। নিধি ওদের বলে গেছে ওরা যেনো তাড়াতাড়ি না যায়।
” সৌরভ আমি তোকে বলেছি আমি নিধিকে ডিভোর্স দিয়ে দেবো তারপরও তুই এইসব কেনো শুরু করছিস।
“দিচ্ছিস না তো তুই ডিভোর্স।
” পৃতির বিয়েটা হয়ে যাক তারপর আমি ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দেবো। তুই বরং ডিভোর্স পেপার রেডি কর।
“আমি আপনাকে ডিভোর্স দেবো না
আদি চমকে পেছনে তাকায়। নিধি হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে।
” ততুমি
“হ্যাঁ আমি। কি মনে করেন আপনি আমাকে খেলার পুতুল। যখন খুশি খেললেন তো খেলা শেষ ফেলে দিলেন। কখনো আপনার মনে হলো সৌরভ আমার জন্য পারফেক না তো বাবার সাথে মিলে ব্রেকআপ করিয়ে দিলেন। এখন আপনার মনে হচ্ছে আমি আপনার পারফেক্ট না তাই আপনি সৌরভের সাথে মিলে ডিভোর্সের ব্যবস্থা করছেন আর সৌরভের সাথে মিলে প্লানিংও করে ফেলেছেন আমাকে এখন সৌরভের সাথে বিয়ে দেবেন। এবার আমি আপনাকে ছাড়ছি না। আমি কখনোই আপনাকে ডিভোর্স দেবো না। বলে দেবেন সৌরভকে আর নিজের মাথায়ও ঢুকিয়ে নেন।
” তুমি বুঝতে পারছো
“আমার লাইফ রিক্স আছে। আপনার অনেক শক্রু। তাই তো। আই ডোন্ট কেয়ার। আপনার সৌরভের আর পরির কি রহস্য আছে সেটা তো আমি খুঁজে বের করবোই। আর আপনাকেও ছাড়ছি না।
চলবে