#শুধু তুই ২
#পর্বঃ২১
#Tanisha Sultana (Writer)
“উনি এখানে কি করছে? উনার তো কাল আসার কথা তাহলে আজ কেনো এলো? আসছে আসুক আমার কি? আমার যেমন ড্রেস পড়তে ইচ্ছে হয়েছে আমি তেমন ড্রেস পড়েছি তাতে ওনার কি? কিছু বলতে আসলে আমিও অনেক কথা শুনিয়ে দেবো। এখন আর আমি গাঁধা নেই। এই পাঁচ দিনে চালাক নিধি হয়ে গেছি
নিধি মনে মনে কথা গুলো ভাবে।
রোহন হেসে এগিয়ে যায় আদির দিকে
” আরে আদি তুমি এসেছো ভালোই হয়েছে। এবার তুমিই তোমার বাবাকে বলে দাও। আমার কিন্তু নিধিকে প্রচুর না মারাত্মক ভালো লেগেছে।
“এইরকম একটা ইডিয়েট কে তোমার ভালো লাগলো?
আদি চোখ মুখ শক্ত করে নিধির দিকে তাকিয়ে বলে
” একদম আমার ফিউচারকে ইডিয়েট বলবা না। এতো মিষ্টি একটা মেয়ে
“দরদ উতলে পড়ছে। আর স্টুপিটটাকে দেখো কেমন ইনজয় করছে
আদি মনে মনে বলে
“হুমম আমি মাএ আসলাম ফ্রেশ হই রেস্ট নেই তারপর তোমার বেপারটা দেখছি
আদি নিধিকে পাশ কাটিয়ে ভেতরে চলে যায়। সবার সাথে কথা বলে রুমে যায়। আদি যখন এসে গেছে তখন আদি ফ্রেশ হয়ে আসবে তারপর আংটি পড়ানো হবে। নিধি রোহন আর ইমনের সাথে হাসাহাসি করে কথা বলছে
” নিধি
শাশুড়ীর ডাকে নিধি শাশুড়ীর কাছে যায়
“কিছু বলবেন
” যাও দেখো আদির কিছু লাগবে না কি
“ওনার কিছু লাগলে তো উনি ডাকতোই তাই না
” আমি যেতে বলছি
নিধি অসহায় ফেস করে যায়। রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে ঢোকার সাহস নেই নিধির।
“ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?
আদির কন্ঠে নিধি চমকে ওঠে। উনি কি করে জানলো আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি
” ওখানে দাঁড়িয়ে গবেষণা না করে ভেতরে এসো
নিধি গুটিগুটি পায়ে ভেতরে যায়। মাথা নিচু করে আদির সামনে দাঁড়ায়। আদি হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে নিধির দিকে তাকিয়ে আছে
“আপনি জানলেন কি করে আমি ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম
” তোমার নিশ্বাসের শব্দ আমি শুনতে পায়। বলেছিলাম তো
“এ আবার কেমন মানুষ? নিশ্বাসের শব্দ এতোদুর থেকে কি করে শুনতে পায়? নিশ্চয় কোনোভাবে টের পেয়েছিলো এখন হেয়ালি করে মিথ্যা বলছে
নিধি মনে মনে বলে
” কাকে ইমপ্রেস করার জন্য এমন সেজেছো?
“হবু বরকে
নিধি লাজুক হেসে বলে
” হবু বর আবার কে?
আদি ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে
“রোহন
” রোহনকে একটু বেশিই পছন্দ দেখছি। দাঁতে দাঁত চেপে বলে আদি
“হুমমম। ওর চাপ দাঁড়ি গুলো আমাকে প্রতিনিয়ত ওর দিকে টানে। ইচ্ছে করছে এখনই বিয়ে করে ফেলি
আদি নিধির হাত মুচড়ে ধরে।
” আহহ ব্যাথা পাচ্ছি তো
“আমি তোমার বিয়ে করা বর। আর আমাদের ডিভোর্স না হওয়া পর্যন্ত অন্য ছেলের নাম মুখে আনলে মুখ ভেঙে দেবো
শক্ত কন্ঠে বলে আদি
” কোথাও পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি
আদি হাতটা আরও শক্ত করে মুচড়ে ধরে
“পবলেম কি তোমার? ফেসবুকে পিক আপলোড কেনো দিছিলা? এমন ড্রেস কেনো পড়ছো? ঠোঁটে লিপস্টিক কেনো লাগাইছো? ছেলেদের দেখলে নিকনিক বেরে যা
নিধি আদির মুখের দিকে তাকিয়ে বলে
” তাতে আপনার কি?
আদি থমথমে খেয়ে যায়। সত্যিই তো ও এসব কেনো বলছে।
“আমার যা ইচ্ছে করবো। আপনি তো আর আমার লাইফে পারমানেন্টলি থাকছেন না। তো আমি এখন থেকেই নিজেকে তৈরি করে নিচ্ছি। এখন এতেও যদি আপনার পবলেম থাকে তাহলে আমার কিচ্ছু করার নাই।
নিধি যেতে নেয় আদি নিধির হাত ধরে। রুমাল দিয়ে নিধির ঠোঁটের লিপস্টিক হালকা করে দেয় চুল গুলো ছেড়ে দেয়। ওড়নায় পিন দিয়ে ভালো করে পেট ঢেকে দেয়। তারপর নিধিকে আয়নার দিকে ঘুরিয়ে নিধির কাঁধে থুতনি রেখে বলে
” আমি থাকবো কি থাকবো না সেটা পরের বেপার। এখন যদি তোমার খুব সাজতে মন চায় তো আমার সামনে সাজুগুজু করে পেট বের করে থাকবা। ওকে
নিধি কি বলবে বুঝতে পারছে না। লোকটার হলো কি? পাঁচদিনে এতো পরিবর্তন। আদির নিশ্বাস নিধির কাঁধে পড়ছে। কেমন কেমন লাগছে। নিধি চোখ বন্ধ করে বলে
“আমি রোহ
আদি নিধিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিধির মুখ চেপে ধরে
” ওই নামটা আর একবারও মুখে আনবা না। আর যদি আনো তো হাত পা বেঁধে এখানেই রেখে দেবো
শান্ত গলায় বলে আদি। নিধি তো অবাক। এটা সেই আদি তো? এতো ভালো বিহেব হলোটা কি?
“কি হলো হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?
নিধি চোখ বন্ধ করে ফেলে।
” চলো
“না মানে এইভাবে আমি যাবো না
” কেনো?
“এভাবে গেলে সবাই বলবে আমার এতো লিপস্টিক কোথায় গেলো। চুলের এই অবস্থা কেনো? তো আমি কি বলবো?
” যা সত্যি তাই বলবা
“আমি এটা বলতে পারবো না
” এতোখন ভালো করে কথা বলেছি বলে এটা না যে এখন ধমক দেবো না
নিধি কপাল কুচকে তাকায় আদির দিকে। এই মুহূর্তে আদিকে নিধির গিলে খেতে ইচ্ছে করছে।
“চলো
আদি নিধির হাত ধরে নিয়ে যায়। নিচে নামতেই দাদিমা আদির কান টেনে ধরে।
” আহহ দাদিমা লাগছে
“লাগুক বেশি করে লাগুক। সারাদিন বউকে বকো একটুও ভালোবাসোস না। এখনও তোদের ফুলসজ্জাও হয় নাই অপদার্থ কোথাকার
আদি কান ছাড়িয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলে
” এসব কে বলেছে?
নিধি হাত ইশারায় না করছে বলতে কিন্তু কে শোনে কার কথা
“তোর বউ বলেছে। আমি কিচ্ছু শুনতে চায় না এক মাসের মধ্যেই আমার নাতির ঘরে পুতি দেখতে চায়
আদি কটমট চোখে নিধির দিকে তাকায়। নিধি এক দৌড়ে পালায়
” কথা কানে গেলো? বউকে আদর সোহাগে রাখতে হয়।
“হুমমম
আদি কোনোরকমে ওখান থেকে কেটে পড়ে।
রাফিন পৃতিকে আংটি পড়াবে। তো পৃতির একা নার্ভাস লাগছ। তাই পৃতি গিয়ে নিধিকে নিয়ে আসে। পৃতির পাশে নিধি আর রাফিনের পাশে রোহন। আদি একটু দুরে দাঁড়িয়ে আছে। আদির ইচ্ছে করছে নিধিকে এখান থেকে টেনে নিয়ে যেতে কিন্তু পারছে না। হাত মুঠ করে দাঁড়িয়ে সবটা দেখছে।
আংটি পড়ানো শেষ। সবাই খেতে বসেছে। নিধি নিরার জন্য জায়গা রেখে বসে। ওই জায়গায় কোথা থেকে রোহন এসে বসে পড়ে। আদি খাওয়ানোর দায়িত্বে আছে। একপাশে রোহন আরেক পাশে ইমন। দুইজনের কথার জন্য নিধি খেতেও পারছে না। আবার কিছু বলতেও পারছে না। আদি খাবার দিচ্ছে সবাইকে আর আড়চোখে দেখছে নিধিকে।
খাওয়া শেষে উঠতে গিয়ে নিধি রোহনের সাথে ধাক্কা খায়। রোহনকে সরি বলে চলে যায়। রোহনের মনে তো লাড্ডু ফুটছে।
নিধি একটা ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে রোহন চলে না যাওয়া পর্যন্ত এখান থেকে এক পা নড়বে না। সারাক্ষণ চুইংগামের মতো লেগে আছে। ভাল্লাগে না।
” এখানে কি করছো?
নিাদি চমকে তাকিয়ে দেখে আদি। বুকে থু থু দেয়
“না মানে এমনি
” এরকম ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে নিশ্চয় রোহনকে ইশারা করেছিলে এখানে আসতে। নিরিবিলে প্রেম আলাপ করতে
“বাহহহ আপনি তো ভালোই বুঝেন। সত্যিই তাই
এবার প্রস্থান করুন
” আমার বাড়ি এটা
“তো কি মাথা কিনে নিয়েছেন না কি? কদিন পরেই তো চলে যাবো। এবার গেস্ট মনে করে একটু সম্মান করুন
চলে যাবো কথাটা বারবার আদির কানে বাড়ি খাচ্ছে। কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। যাকে ছাড়া পাঁচদিন থাকতে পারলো না চলে এলো তাকে ছাড়া বাকি জীবনটা কি করে থাকবে?
” দাদিমাকে কি বলেছো?
“যা সত্যি তাই
” ফুলসজ্জা করার খুব শক
“হুমম বাট আপনার সাথে না
” ওহহহ রোহন বা সৌরভের সাথে
“ওরা আপনার থেকে ১০০% ভালো
” রুমে চলো একবার। তারপর রোহন আর সৌরভের নাম মুখে আনার পরিণাম দেখাবো
“ভয় পায় না
” দেখা যাবে
ইমন দৌড়ে আসে
” ভাই নিধি রোহনের বাবা নিধি আর রোহনের কথা বাবাকে বলেছে
ইমনের কথা শুনে আদি নিধি ঢোক গিলে
“তারপর
” বাবা তোদের এখনি যেতে বলে
“আজ একটা ছোটমট না না বড়সড়ো ঘুর্ণিঝড় হবে। আল্লাহ জানে কপালে কি আছে
চলবে
#শুধু তুই ২
#পর্বঃ২২
#Tanisha Sultana (Writer)
“একদম সব আমার দোষ দিবা না। বলবা মজা করে বলছিলাম। আমি তোমার খুব যত্ন করছি বলবা। বেশি কিছু বললে তোমার খবর আছে।
” ইহহহহহহ আইছে। মিথ্যা কথা আমি বলতে পারি না
নিধি হাত ভাজ করে বলে
“মিথ্যা বলতে বলছি না কি? শুনো আমি এখনো তোমার বিয়ে করা স্বামী সো পতির পূর্নেই সতির পূর্ণ বুঝলে। কি কি বলবা আমি বলে দিচ্ছি
নিধি ভ্রু কুচকে তাকায় আদির দিকে
” এভাবে না তাকিয়ে আমার কথা মন দিয়ে শুনো। বলবা আদি আমাকে রান্না করে খাইয়েছে
“কবে?
” বলবা তুমি। কটামানি করবা না। তারপর বলবা প্রতিদিন আমি তোমাকে ভার্সিটিতে দিয়ে আসছি।
“ঠাটা পড়া মিথ্যা কথা।
” দিয়ে আসি নি তোমায়?
“মাএ একদিন।
” তাও তো দিছি
“একদিনের কথা বলবো।
” তারপর তোমায় সব জায়গা ঘুরিয়ে দেখিয়েছি
“মানুষ এতো ভালো গুছিয়ে মিথ্যা বলতে পারে আল্লাহ। আপনার মুখে তো ঘা হবে। আর আমার কাছে যা জিজ্ঞেস করবে সত্যি বলবো পারলে এক অহ্মর বানিয়ে বলবো
“তোমাকে আমি
” কিচ্ছু করতে পারবেন না
নিধি ভেংচি কেটে চলে যায়। নিধির বাবা মা নিরা আশিক পৃতি ইমন আদির বাবা মা দাঁড়িয়ে আছে। নিধি আর আদিও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে
“নিধি তোমার বোন?
শান্ত গলায় বলে আদির বাবা
” বাবা হয়েছে কি। আমি ইডিয়েট কে নিয়ে অফিসে গেছিলাম তো বসকে মজা করে
“যেটা জিজ্ঞেস করা হচ্ছে সেটা বলো শুধু।
ধমক দিয়ে বলে আদির মা
আদি মাথা নিচু করে বলে
” না
“তাহলে বোনের পরিচয়ে কেনো থেকেছো? বউয়ের জন্য পাএ খুঁজছো? বিয়ে দিতে চাও তুমি তোমার বউকে?
ধমকে বলে আদির বাবা।
” আংকেল আমি কিছু বলবো
সবাই নিধির দিকে তাকায়। আদিও তাকিয়ে আছে। কি বলবে নিধি?
নিধি একটা জোরে শ্বাস নিয়ে বলে
“আমাদের এই বিয়েটা আপনার ছেলে মানে না। থাকতে চায় না আমার সাথে। আর আমিও। ডিভোর্স চায় আমরা দুজনই। যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে জোর করে থাকা যায় না। আমাকে বউ বলতে আপনার ছেলের ইগোতে বাঁধে তাই বোন বলে পরিচয় দিয়েছে। প্রথম প্রথম আমার সাথে ঠিক করে কথা বলতো না কুকুরের মতো বিহেব করতে। কারণ উনি ভেবেছিলেন আমি হয়ত অধিকার খাটাবো ডিভোর্স দেবো না। কিন্তু পরে যখন আমি ডিভোর্সে রাজি হয়েছি তখন একটু স্বাভাবিক হয়েছে।
এক নাগারে কথা গুলো বলে দম নেয় নিধি। সবাই তাকিয়ে আছে নিধির দিকে। আদি অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে আছে।
” উনি পরি আপুকে ভালেবাসে।
“পরি
আদির মা বলে
” হুমম পটি নামের একটা মেয়কে ভালোবাসে
পরি নামটা শুনে আদি চমকে ওঠে।
“আংকেল আমি আর এই সম্পর্কে থাকতে চায় না। পৃতির বিয়ের পরে আমাদের ডিভোর্সের ব্যবস্থা করে দেবেন।
” ঠিক আছে। আমারই ভুল হয়েছে তোমাদের বিয়েটা দিয়ে। আমি এবার আমার ভুল শুধরে নেবো। রোহন তোমার জন্য পারফেক্ট। পৃতির বিয়ের পরে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তোমার আর রোহনের বিয়ে দেবো।
আদির বাবা নিধির মাথায় হাত রেখে বলে।
“আর একটা কথা আন্টি আমি আমার বাবা মায়ের সাথে থাকতে চায়। যেখানে আমাদের সম্পর্কের কোনো মুল্য নেই সেখানে আমার থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসে। পৃতির বিয়ের দিন না হয় আসবো
আদির মা গম্ভীর মুখে বলে
” আমার ছেলের সাথে তোমার ডিভোর্স এখনও হয় নি। তবে তুমি যদি এখানে থাকতে না চাও তো যেতে পারো
“থ্যাংক্স আন্টি
আম্মু আব্বু চলো। বলেছিলে না আব্বু তুমি আমাকে বেস্ট ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছো। যে আমাকে ভীষণ ভালো রাখবে। সী
নিধির বাবা মাথা নিচু করে বলে
” সরি সোনা। আমি বুঝতে পারি নি
“এখন বুঝে নাও। সবাই আমাদের যেটা বলে সেটা সত্যি না যেটা বলে না সেটাই সত্যি।
নিধির বাবা নিধির হাত ধরে বলে
” আমার ভুল হয়েছে তোমার মতের বিরুদ্ধে তোমার বিয়ে দিয়ে। আমি ভেবেছিলাম মানিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু এবার যাওয়ার হয়ে গেছে। আমি নিজে তোমার ডিভোর্স দেওয়াবো
নিধি আদির দিকে তাকিয়ে বিজয়ের হাসি দেয়।
বাবা মায়ের হাত ধরে যেনে নেয়
” তুমি কোথাও যাবে না
আদি চেচিয়ে বলে। নিধি দাঁড়িয়ে যায়। আদি নিধির হাত ধরে
“তুমি এখানে থাকবে আমার সাথে
” আদি ওর হাতটা ছেড়ে দাও
আদির বাবা শক্ত কন্ঠে বলে
“ডিভোর্স না হওয়া পর্যন্ত ও আমার কাছে থাকবে। ডিভোর্সের পরে চলে যাবে। আর আমি আমার অধিকারে আটকাচ্ছি ওকে।
” আমি থাকতে চায় না। যখন আপনার যেটা মনে হবে তখন সেটাই করবেন। আমার কেনো ইচ্ছে নেই
নিধি আদির হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে
“তুমি এখানে থাকবে মানে থাকবে। আর একটা কথা বললে হাত পা বেঁধে রেখে দেবো
আদি নিধির হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে যায়। রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেয়। নিধির হাতটা ছেড়ে মাথা চেপে ধরে বসে পড়ে
” এমনটা কেনো করলেন? কতো ইমোশনাল ড্রামা করে ডিভোর্সের কথাটা বললাম। আজ আমি চলে গেলে দুইদিন পরে ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিতাম ঝামেলা শেষ হতো।
আদি চুপ করে আছে
“কথা কেনো বলছেন না? পবলেম কি আপনার? চান টা কি?
” আমার একটা প্রশ্নের উওর দিতে পারবা
আদি শান্ত গলায় বলে
“এইরকম একটা সময়ে আপনি আমাকে প্রশ্ন করবেন? মানে আপনি ঠিক আছেন তো? আমি টেনশনে শেষ হয়ে যাচ্ছি আবার কিভাবে ডিভোর্সের বেপারটা মেনেজ করবো।
” ওটা আমি মেনেজ করে দেবো
“সত্যি কবে?
নিধি খুশি হয়ে আদির পাশে বসে।
” তুমি পরি নামটা কোনে বললে? আর আমি পরিকে ভালোবাসি এটা তুমি কি করে জানলে?
“তারমানে আপনি সত্যিই পরি নামের কাউকে ভালোবাসেন? আমি তো আন্দাজে ঢিল মেরেছিলাম।
” তুমি সত্যিই একটা ইডিয়েট
“আই নো। পারলে নতুন কোনো নাম দেন
” রোহনের সাথে বিয়ে করার জন্য দেখি উঠে পড়ে লেগেছো
“লাগবো না? ওরকম একটা হট ছেলেকে হাত ছাড়া করা যায় না কি?
” আমি হট না
নিধি আদির দিকে তাকিয়ে বলে
“আপনি তো গরম
গরম আর হটের মধ্যে ডিফারেন্স কি?
” গরম হলো গ্রীষ্মকালে পড়ে। মানুষ ঘেমেনেয়ে একাকার হয়ে যায়। সাধারণত মানুষ গরমকে পছন্দ করে না। আর হট হলো কিউটের বিপরীতে শব্দ। কিউট বলে অনস্মার্টরা আর হট বলে আমার মতো কিউটিপাই রা।
“কটা কাকে বলে জানো
” না তো
“তোমাকে বলে
” ডিজগাস্টিং কাকে বলে জানেন
“না
” আপনাকে বলে। ইসস আজ আম্মু আব্বুর সারা চলে যেতাম কতো ভালো হতো। আটকে রেখে দিলেন। তারপর রুমে এনে দরজাটাও বন্ধ করে দিলেন। যদিপ আমি জানি আপনি ভীষণ না মারাত্মক নিরামিষ একটা কিসও করবেন না। কিন্তু পাবলিক তো বিশ্বাস করবে না। সবাই বলবে না জানি আদি নিধির মধ্যে কি হয়েছে। নিধির প্রায় প্রেগন্যান্ট হয়ে গেছে। ভাবুন যদি এই কথাটা আমার রোহন সোনা জানতে পারে কতো হার্ট হবে। আমার বেবিটা তো কষ্ট পাবে
“আমি নিরামিষ
” সন্দেহ আছে?
“একদম আমি নিরামিষ না
” পরির কাছে নিরামিষ না হলেও আমার কাছে
“পরি টা কে?
” আপনার কি যেনো হয়?
“কি হয়?
” এখনো শিওর না শিওর হয়ে বলবো।
“তুমি সত্যি ননসেন্স
” ছোট বেলা থেকে
“তুমি তো আগে চুপচাপ থাকতে ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে পারতে না এমন ভাব ধরে থাকতা। তাহলে হঠাৎ এমন কটা হয়ে গেলা কেমনে?
” ভাজা মাছ সত্যিই আমি উল্টে খেতে পারি না। তবে প্রচুর কথা বলতে পারি। ভাবলাম কদিন পরে তো চলেই যাবো তাই
নিধির কথা শেষ হওয়ার আগেই আদি নিধিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। নিধি তো হা।
“রোহন জানলে কিন্তু আমার বিয়ে ভেঙে যাবে
নিধি শান্ত গলায় বলে। আদি নিধিকে ছেড়ে দেয়
” তাহলে আমিষ হয়ে গেলে রোহন তোমার দিকে তাকাবেও না
আদি বাঁকা হেসে বলে
“দেখুন
” হুম দেখবো তো
আদি টান দিয়ে নিধির ওড়না নিয়ে নেয়।
“এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না
নিধি পিছতে পিছতে বলে
চলবে