#শুধু তুই ২
#পর্বঃ১৫
#Tanisha Sultana (Writer)
“অনেক নেচেছিস আর নাচতে হবে না
সৌরভ মুচকি হেসে বলে
” ডান্স শুরু করার আগেই তো তুই এসে হাজির হলি। তোর বউয়ের সাথে একটু নাচলে কি তোর বউকে উঠিয়ে নিয়ে যাবো না কি?
নিয়ে যাবো না কি কথাটা শুনে আদির বুকের ভেতর হাতুড়ি পেটানো শুরু হয়ে যায়। যদি সত্যিই সৌরভ নিধিকে নিয়ে যায়। নিধি তো ওকে ভালোবাসে। যেতেই পারে ওর সাথে।
আদি নিধির হাত ধরে টান দিয়ে খুব কাছে নিয়ে আসে। এক হাত দিয়ে কোমর জড়িয়ে ধরে বলে
“আদি নিজের জিনিস যত্ন করে রাখতে জানে
বলেই নিধির হাত ধরে টেনে একটা ফাঁকা রুমে নিয়ে যায়। মনিও দৌড়ে আসে ওদের কাছে
” ওকে এখানে কেনো নিয়ে আসলি?
আদি দেয়ালের দিকে মুখ করে কর্কশ গলায় বলে।
“ভাবলাম ও বাসায়,একা একা থাকব
মনির কথা শেষ হওয়ার আগেই আদি চেচিয়ে বলে
” ফ্যাশন শো করতে এসেছে ও এখানে? নায়িকা হতে চায়?
আদির চেচানোতে মনি আর নিধি ভয় পেয়ে যায়।
“মনি তুই এখান থেকে যা
শান্ত গলায় বলে আদি।
” আদি ওর কোনো দোষ নেই আমিও
“যেতে বলছি তোকে এখান থেকে কথা কানে যায় না
মনি যেতে নেয় নিধি মনির হাত টেনে ধরে
” আমাকে নিয়ে যাও
“তুমি কোথাও যাবে না
মনি বেরিয়ে যায়। আদি ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দেয়। নিধির দিকে তাকিয়ে এগোতে থাকে
” ভুল হয়ে গেছে। আর কখনো পাতলা
শাড়ি পড়বো না
আদি এগোচ্ছে নিধি পিছচ্ছে। নিধি দেয়ালে গিয়ে হালকা বাড়ি খায় পড়ে যেতে নেয় আদি ধরে।
“সৌরভ তোমার কোথায় কোথায় ছুঁয়েছে?
নিধি ভরকে যায়। আমতাআমতা করে বলে
” আআআআমি তো
“সাট আপ। খুব শক না ছেলেদের শরীর দেখানোর
আদি একটান দিয়ে নিধির শাড়ি খুলে দেয়। নিধি হাত দিয়ে শরীর আড়াল করে। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে
” যাও এবার ঠিক আছে। যাও
আদি ধমক দিয়ে বলে। নিধি কেঁদেই যাচ্ছে। রাগে আদির শরীর কাঁপছে। আদি নিধির দুই গালে হাত দিয়ে বলে
“একদম কাঁদবে না। তুমি যেটা চেয়েছিলে সেটাই তো করলাম। এবার যাও
” সরি আমি ইচ্ছে করে পড়ি নি
নিধি কান্না করতে করতে বলে। আদি নিধিকে ছেড়ে দিয়ে দুরে গিয়ে দাঁড়ায়। নিধি কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়ে। আদি চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে রাগ কমানোর চেষ্টা করছে।
“ওই উঠো
আদি নিধির হাত ধরে টেনে উঠায়। তারপর শাড়ি পাড়িয়ে দেয়। চোখের পানি মুচিয়ে দেয় রুমাল দিয়ে।
” নেক্সট টাইম এরকম শাড়ি পড়লে শাড়িসহ তোমাকে পুরিয়ে ফেলবো
নিধি মাথা নিচু করে ফুঁপিয়ে যাচ্ছে। আদি মাথায় গাট্টি মারে বলে
“মাথায় ঢুকেছে
” হুমমম
“চলো
আদি নিধির হাত ধরে বাইরে যায়। দেখে মনি পায়চারি করছে। আদিকে দেখে আদির দিকে এগিয়ে আসে
” আমরা চলে যাচ্ছি তুই যাবি তো আয়
বলেই আদি হনহনিয়ে চলে যায়। আদি ডাইভ করছে আর নিধি আদির দিকে তাকিয়ে আছে
“আল্লাহ একটা মানুষের এতোগুলো রুপ থাকে। জাস্ট পাতলা শাড়ি পড়েছি বলে এতো কাহিনি। ভালোটালো বেসে ফেলেছে না কি আমাকে? আর বাসলেও কি আমি থাকবো না এই লাটসাহেবের সাথে। কথায় কথায় ধমক খাওয়ার ইচ্ছে আমার নেই।
” পবলেম কি?
আদি সামনের দিকে তাকিয়ে বলে। নিধি চোখ সরিয়ে বলে
“কিছু না
” সব সময় আমার দিকে তাকিয়ে হাসো কেনো? একদিন বলছি না আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করবা না। তোমার প্রতি আমার কেনো ইন্টারেস্ট নাই
“তাই তো দেখলাম
” কি দেখলে
“ইন্টারেস্ট নাই
” সত্যিই কোনো ইন্টারেস্ট নাই। ভালোই লাগে না আমার তোমাকে
“আমারও আপনাকে ভালো লাগে না। আমি তো সৌরভকে ভালোবাসি
কথাটা শেষ হওয়ার আগেই আদি গাড়ি ব্রেক করে। নিধি কি বলেছে বুঝতে পেরে দাঁত দিয়ে জীভ কাটে। আদি ছোট ছোট চোখ করে নিধির দিকে তাকায়
” সৌরভকে ভালোবাসো?
“বাসলেই আপনার কি না বাসলেও আপনার কি?
” আমার কিছুই না। এতোই ভালোবাসলে বিয়ে কেনো করলে?
“আপনি আর আব্বু প্ল্যান করে বিচ্ছেদ ঘটালেন তাই
” আর ইউ শিওর আমি আর আংকেল প্ল্যান করে তোমাদের ব্রেকআপ করিয়েছি
“১০০% শিওর।
” গুড
আদি আবার ডাইভ শুরু করে দেয়।
“আজও বলবেন না কারণ টা
” গাজর কিনবে তো
নিধি আদির দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে
“হুমম
” একটা কথা কি জানো “সত্যি সেটা না যেটা আমরা বলি সত্যি সেটাই যেটা আমরা আড়াল করি”
নিধি আদির কথার আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারলো না। আর বোঝার চেষ্টাও করছে না। কারণ এই মানুষটা খুব জটিল। তাকে বোঝার মতো সাধ্য নিধির নেই।
সৌরভের সাথে ব্রেকআপের পরে কয়েকদিন নিধি খুব কারণ জানতে চাইতো ইচ্ছে করতো কিন্তু কোনো উপায়ে কারণ জানতে পারে নি। এখন নিধিরও কারণ জানার ইচ্ছে মরে গেছে। হয়েছে হয়ত কোনো কারণ এ ব্রেকআপ। তাছাড়া একটা কথা নিধি খুব বিশ্বাস করে আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে।
আদি গাড়ি থেকে নেমে গাজর কিনে নিয়ে এসেছে কখন এটা নিধি বলতেই পারবে না। কারণ ও ভাবনার জগৎে ছিলো। আদি গাড়ি স্ট্রাট দেওয়ার পরে নিধির হুশ ফেরে
“গাজর এনেছেন
” হুমম
বাসায় ফিরে নিধি সোফা রুমে ঢুকে যায়। নিধিকে দেখে ছাড়া এক লাফে নিধির কাছে চলে আসে। নিধি ছানাকে কোলে তুলে নেয়। তারপর গাজর খাওয়াতে থাকে।
আদি রুমে এসে ধাম করে দরজা বন্ধ করে দেয়। ফোনটা খাটে ছুড়ে মারে। এখনো আদির রাগ করছে না। পার্টির কথা মনে পড়লেই সৌরভের ওই নিধিকে ছোঁয়ার দৃশ্যটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আদি চোখ বন্ধ করে ফ্লোরে বসে পড়ে। দুইহাতে মাথা চেপে ধরে আছে
“সৌরভের এই জঘন্য খেলাটা আমি খুব তাড়াতাড়ি শেষ করবো। ওই গাঁধাটা বেছে বেছে আর একটা বলদকেই ভালোবাসলো। ইডিয়েট একটা
নিধি চেঞ্জ করে দুই মগ কফি বানায়। এক মগ বানাতো কিন্তু আদিকে দেখেই নিধির কেমন কেমন লাগলো। মনে হলো ওনর মনটাও কফি কফি করছে।
নিধি কফির মগ হাতে নিয়ে আদির দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। দরজা ভেতর থেকে লক করা। নাহলে ঠুস করে গিয়ে কফি রুমে রেখে আসতো। এবার নিধি গলা ঝেড়ে চেচিয়ে বলে
” কারো যদি কফি খেতে ইচ্ছে করে তো খেতে পারে আমি বেশি করে কফি বানিয়েছি
বলেই নিধি দৌড় দিতে নেয় আর আদি দরজা খুলে। নিধি ঢোক গিলে
“ডিরেকলি বললেই তো হয় কফি বানিয়েছি খেয়ে নিন
” এটা বললে তে আবার আপনি বলতেন হেই স্টুপিট আমাকে একদম কফি খাইয়ে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করবে না। আমার তোমার প্রতি কোনো ইন্টারেস্ট নেই।
আদি নিধির হাত থেকে কফির মগটা নেয়
“ইডিয়েট একটা
বলেই আবার দরজা আটকে দেয়। নিধি বুকে থু থু নেয়
” আল্লাহ বাঁচছি
পরেরদিন নিধি খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে করলা আর ভাত রান্না করে। আর নিজের জন্য নুডলস। ভার্সিটির জন্য তৈরি হয়ে নুডলস খেয়ে আদির রুমের দিকে উঁকি দেয়।
আদি বিছানায় নেই। তাহলে গেলো কোথায়? নিধি এক পা এক পা রুমে ঢুকে খুব সাবধানে। আর যাই হোক ধরা পড়া যাবে না। ধরা পড়লেই বকা খেতে হবে। পুরো রুমের সব জায়গায় খুঁজে কিন্তু আদি নেই।
“গেলো কোথায়? বেরোতেও তো দেখি নি। তাহলে? হাওয়া হয়ে গেলো না কি?
নিধি আদির রুম থেকে বেরিয়ে পুরো বাড়ি খুঁজে কিন্তু কোথাও আদি নেই। নিধির এবার খুব ভয় করছে।
কেনো জানি মনে হচ্ছে ওখানেই আছে আদি। নিধি নিজের রুমের বেলকনিতে গিয়ে দেখে সত্যিই আদি করবটাকে পরিষ্কার করছে। তাজা ফুলের মালা কিনে এনেছে। নিধি এক দৃষ্টিতে আদিকে দেখছে।
” আজ ওনাকে আমার সব প্রশ্নের উওর দিতে হবে।
নিধিও কবরের কাছে যায়। আদির চোখে পানি দেখে নিধি থমকে যায়। বুকের বা পাশে ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে নিধির।
চলবে
#শুধু তুই ২
#পর্বঃ১৬
#Tanisha Sultana (Writer)
নিধি কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদি বলে
“তুমি এখানে কি করছো?
নিধি হা হয়ে যায়। কারণ নিধি আদির পেছনে আর পা টিপে টিপে এসেছে একটুও শব্দ হয় নি তাহলে আদি বুঝলো কি করে?
আদি লাস্ট ফুলের মালাটা কবরের ওপর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে দেখে নিধি হা করে তাকিয়ে আছে
” মানে যখন তখন যেখানে সেখানে এমন পেঁচার মতো হা করে তাকিয়ে থাকো কেনো বলো তো? অবশ্য তুমি তো গাঁধা থাকতেও পারো। বাট আমার দিকে কেনো?
“না মানে আমি ভাবছি আমি আপনার পেছনে কোনো শব্দ না করে চুপিচুপি এসে দাঁড়ালাম তাও আপনি কি করে বুঝলেন
আদি নাক চুলকে বলে
” তোমার নিশ্বাসের শব্দে বুঝছি
“নিশ্বাসের তো কোনো শব্দ নেই
” তুমি জানো নিশ্বাসের শব্দ নেই? নিশ্বাসের শব্দ আছে।
নিধি ভাবছে আর নিশ্বাস ছেড়ে চেক করছে। কিন্তু কোনো শব্দ বুঝতে পারছে না।
আদি ওখান থেকে চলে যায়। নিধি ভাবা শেষ করে তাকিয়ে দেখে আদি নেই
“যাহহ বাবা চলে গেলো। আমি কোনো প্রশ্নই করতে পারলাম না। এখন বাসায় গিয়ে জিজ্ঞেস করলে বলবে
কোন কবর? কোথাকার কবর? আমি কবে গেছিলাম?
ডিজগাস্টিং
নিধি রুমে চলে যায়। সোজা আদির রুমে যায়। আদি শুয়ে আছে উপুড় হয়ে
” এই যে শুনছেন
আদি নিধির দিকে তাকাতেই নিধি বলে
“থুক্কু শুনছেন না যাই হোক কথা ছিলো
আদি আবার আগের মতো শুয়ে বলে
” আই নিড রেস্ট
“নাহহ আমি এখনই কথা বলবো। শুনছেন? প্রশ্ন করছি আমি? ধুর
আদির কোনো সাড়াশব্দ নেই। এতো তাড়াতাড়ি কেউ ঘুমতে পারে। আল্লাহ নিধি রাগে ঠুসঠাস করে চলে যায়
কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে ভার্সিটির জন্য বেরিয়ে পড়ে। বাড়ির সামনে থেকে রিকশা নেয়। চারপাশ ভালো করে দেখতে দেখতে যায় নিধি। আর মনে মনে ঠিক করে বাসায় ফেরার সময় সমুদ্র দেখে যাবে।
” মামা এখান থেকে সমুদ্র কতো দুর? নিধি রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করে
“বেশি দুরে না। ওই যে বড়বড় বিল্ডিং দেখা যাচ্ছে তার সামনেই
” ওহহ
ভার্সিটি পৌঁছে ভাড়া মিটিয়ে নিধি ক্লাস রুম খুঁজছে। এতো বড় ভার্সিটিতে নিধিদের ডিপার্টমেন্ট কোনটা নিধি বুঝতে পারছে না। ভার্সিটির মাঝখানে দাঁড়িয়ে শুধু ঘুরে ঘুরে দেখছে।
“হেই মিছ
নিধি তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে
” বলুন
“আপনি কি কিছু খুঁজছেন?
” আপনাকে কেনো বলবো?
“যদি আমি হেল্প করতে পারি তো কেনো বলবেন না
” আপনি হেল্প করতে পারবেন তার কোনো গেরান্টি আছে
“আমি এই কলেজে প্রায় তিন বছর যাবৎ আছি। তো অলিগলি আমার চেনা
” আমি মেনেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট খুঁজছি
“ফাস্ট ইয়ার
” হুমম। আমিও
“তাহলে তো ভালোই হলো
” হুমম চলো সামনেই আমাদের ক্লাস রুম
নিধি ছেলেটার সাথে যায়।
একটু ঘুমিয়ে আদির মনে পড়ে আজ নিধির ভার্সিটিতে যাবে। ওকে দিয়ে আসতে হবে। তড়িঘড়ি করে উঠে ঝটপট ফ্রেশ হয়ে নিধির রুমে যায়। নিধি নেই। ছানা ঘাস খাচ্ছে। আদিকে দেখে এক লাফে আদির পায়ের কাছে আসে। কাল আদি নিধির জন্য বই ব্যাগ কিনে এনেছিলো। আদি খুঁজে দেখে ব্যাগটাও নেই। তারমানে নিধি ভার্সিটিতে চলে গেছে। কিন্তু ও তো এখানকার রাস্তা ঘাট কিছুই চেনে না। তারওপর ওর কাছে টাকাও নেই।
আদি নিজের রুমে গিয়ে একটা শার্ট নিয়ে বেরিয়ে যায়। আস্তে আস্তে গাড়ি চালাচ্ছে আর নিধিকে খুঁজছে। নিশ্চয় হেঁটে হেঁটে কলেজে যাচ্ছে। এই মেয়েটা সত্যিই গাঁধা।
যত রাস্তা যাচ্ছে আদির রাগ ততো বাড়ছে। এই মেয়েটা এমন কেনো? আজ একবার পায় পা ভেঙে রেখে দেবো।
নিধি দিব্যি ক্লাস করছে। ওই ছেলেটার পাশে বসেছে নিধি। ছেলেটার নাম রোদ। ছেলেটাও রোদের মতো।
ক্লাস থেকে স্যার বেরিয়ে যাওয়ার পরে নিধি রোদকে বলে
“আচ্ছা তুমি কখনো সমুদ্রে গেছো
” আবার বাসায়ই তো সমুদ্রের পাশে
“তাই? তাহলে তো তুমি সব সময় ই সমুদ্র দেখো
” হুমম দারুণ লাগে। পড়ন্ত বিকেলে সূর্য ডোবা ডোবা হলে সূর্যের লাল রংএ সমুদ্র দেখতে যা লাগে না
“কাল তুমি ছবি তুলে নিয়ে আসবে
নিধি উৎসাহিত হয়ে বলে।
রোদ মুখটা কালো করে বলে
” লাইভ আর পিক কি এক হলো?
“এক না
নিধি মুখটা কালো করে বলে।
” না তো। পিক দেখে তুমি সেই দৃশ্য দেখার ইচ্ছে পূরণ করতে পারবে বাট মজাটা উপভোগ করতে পারবে না। এক কাজ করলে হয় না একদিন তুমি আমার সাথে গিয়ে দেখে আসলে। পরে আমি তোমাকে বাড়ি দিয়ে আসবো
“আচ্ছা কিন্তু আজ না। কাল যাবো। তুমি কিন্তু আবার আমাকে বাড়ি দিয়ে আসবে
” ওকে
আদি আসতে আসতে নিধির ভার্সিটিতে চলে আসে। গাড়ি থেকে মানতেই দেখতে পায় নিধি একটা ছেলের সাথে হাসতে হাসতে আসছে।
“এই মেয়েটা না সত্যিই ইডিয়েট। এখানে এসেও নিকনিক শুরু করে দিছে।জীবনেও মানুষ হবে না।
আদি গিয়ে ওদের সামনে গিয়ে হাত ভাজ করে দাঁড়ায়। নিধি আর রোদও থেমে যায়
” আপনি
“তুমি ওনাকে চেনো? কে হয় উনি তোমার?
রোদ প্রশ্ন করে নিধিকে। আদি এবার ভ্রু কুচকে তাকায় নিধির দিকে। নিধি কি উওর দেয় তাই শোনার অপেক্ষা
” নিধি বলো। চুপ করে আছো কেনো? কে উনি? চিনো ওকে?
“উউনি আমার ভাই হয়
নিধি থেমে থেমে বলে। আদির মাথা গরম হয়ে যায়। বউ বলছে যে ভাই হয়। এটা মানা যায়।
রোদ হেসে বলে
” ওহহ তোমার ভাই তো আমারও ভাই। হেলো ভাইয়া আমি রোদ। নিধির ফ্রেন্ড
“গুড
বলেই আদি চলে যায়। নিধি রোদকে বিদায় দিয়ে আদির পেছন পেছন যায়। নিধি গাড়িতে গিয়ে বসে। আদিও বসে
” এভাবে কতোখন বসে থাকবো?
নিধি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে।
“যতখন আমি চাইবো
আদি শক্ত গলায় বলে।
” ধ্যাত
“ভাই হই আমি তোমার?
” তো কি হন? বউ হিসেবে তো আপনি মানেন না আমিও মানি না। কিছু দিন পরেই আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। ডিভোর্স মানেই ব্রেকআপ। আর ব্রেকআপের পরে তো সবাই ভাইবোন। তাই না
আদি জোরে গাড়ির ব্রেকে ঘুসি মারে।
“আপনার কান্ডকারখানা আমি ইদানীং বুঝতে পারি না। পেট দেখা গেলে রিয়েক্ট করেন। আমার সাথে কাউকে ডান্স করতে দেখলে জ্বলেন আবার ভাই বললেও ঝাড়ি মারেন। ব্যাপারটা কি বলবেন? ভালো টালো বাসেন না কি?
নিধি ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে। আদি ভরকে যায়। সত্যিই তো এই মেয়েটার ছোট ছোট জিনিসে আমি এতো রিয়েক্ট কেনো করি? আদি এটাই ভাবতে থাকে।
নিধি আদির মুখের সামনে চুটকি বাজায়
” ওই হেলো কি হলো
“কিছু না
বলেই আদি গাড়ি চালানো শুরু করে।
” আপনি সব কথা এমব এড়িয়ে যান কেনো বলেন তো? জানেন এরকম কারা করে?
“কারা?
” চোর রা। চুরি করে মিথ্যা বলে
“তাহলে আমি চোর
আদি স্বাভাবিক ভাবে বলে।
” এটা কি হলো? চোর বললাম তাও রিয়াক্ট করলো না।
নিধি মনে মনে ভাবছে।
“যতদিন তুমি আমার সাথে আছো ততদিন তুমি আমার বউ। ডিভোর্সের পরে কি হবে না হবে সেটা পরে ভাববে। এখন কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবে আমি তোমার হাজবেন্ড। বুঝলে
” আর আপনি?
“আমারটা তোমার ভাবতে হবে না সেটা আমি বুঝে নেবো
” হুম সেটা জানি। বাট আমি সবাইকে বলে বেড়ালাম আমি আদিল চৌধুরীর বউ। আর আপনি বললেন এই ইডিয়েটটাকে আমি চিনি না তখন তো আমাকে গনোধলাই খেতে হবে
“আর একটা কথা বললে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেবো
আদি চোখ মুখ শক্ত করে বলে
নিধি মুচকি হেসে বলে
” আমার কাছে টাকা আছে। আপনি নামিয়ে দিলে নিধিরা নিধি ঠিক বাসায় পৌঁছাতে পারবে। এই রাস্তাটা আমার একদম চেনা হয়ে গেছে। তাই এখন আর আমি ভয় পায় না। আর আমি তো ডিসাইড করে ফেলেছি
আদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে
“কিহহ
” কাল রোদের সাথে সমুদ্র দেখতে যাবো। সূর্য ডোবা দেখবো। রাতের বেলা চাঁদের আলোতে সমুদ্র দেখবো। সমুদ্রের মাছ খাবো সেলফি তুলবো উফফ কি মজা হবে
নিধির কথা শুনে আদি গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়
“এমা গাড়ি ঘুড়ালেন কেন? কোথায় যাচ্ছেন?
” তোমাকে রোদের কাছে দিয়ে আসবো
“আমি তো রোদের কাছে যাবো না। আমি আর একটাও কথা বলবো না। প্লিজ ভুল হয়ে গেছে সরি
আদি কানে হেডফোন দেয়। নিধি দাঁত দিয়ে নখ কাঁটছে।
” এবার কি হবে? ধুর আমিও না এতো কথা কেনো যেনো বলি। ধুর নিজের গালে নিজেরই চড় দিতে ইচ্ছে করছে। এবার সমুদ্রের পানিতেই চুবিয়ে মারবে আমায়
চলবে