শুধু তুই ২ পর্ব-১১+১২

0
1708

#শুধু তুই ২
#পর্বঃ১১
#Tanisha Sultana (Writer)

“আপনি
নিধি চোখ বড়বড় করে বলে। নিধির কন্ঠ শুনে সামনে থাকা লোকটা নিধির দিকে তাকায়।

” নিধিরা

সৌরভ একটু হেসে বলে।

“এডমিশন নিতে এসেছো? গুড। ওপর ওয়ালাও চায় সৌরভ নিধিরা সব সময় এক সাথে থাকুক

নিধি সন্দেহের সুরে বলে

” আপনাকে ফোন করেছিলো না কি?

“কে আদি না ওপরওয়ালা?

তখন নিধির মাথায় আসে আদি কই? নিধি আশেপাশে তাকায়। নাহহ কোথাও তো আদিকে দেখা যাচ্ছে না

” হেলো। কি হলো?

নিধি সৌরভের কথার উওর না দিয়ে হাঁটা শুরু করে। সৌরভ নিধির হাত ধরে

“আপনি আমার হাত কেনো ধরলেন? ছাড়ুন

নিধি হাত ছুটানোর চেষ্টা করে বলে।

” আমি তোমার হাত ছাড়ার জন্য ধরি নি

“সৌরভ আমার বিয়ে হয়ে গেছে। অন্য একটা ছেলের বউ আমি।

সৌরভ নিধির হাত ধরে টান দিয়ে কাছে নি আসে নিধিকে। তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বলে

” কেনো করলে আমার সাথে এমনটা? কি নেই আমার?

নিধি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে আর বলে

“প্লিজ ছেড়ে দিন

” এখন আমার ছোঁয়াও তোমার ভালো লাগে না তাই না

“সৌরভ ছেড়ে দে ওকে

আদির কন্ঠ শুনে নিধি আর সৌরভ আদির দিকে তাকায়। সৌরভ নিধিকে ছেড়ে দেয়। নিধি এক দৌড়ে আদির কাছে চলে যায়

” সৌরভ এটা ঠিক না

সৌরভ কিছু বলতে যায় আদি থামিয়ে বলে

“টই স্টুপিট টার সাথে তোর আগে কি সম্পর্ক ছিলো না ছিলো সেটা অতিত হয়ে গেছে। বর্তমানে নিধি তোর বেষ্টফ্রেন্ডের বউ। মানে তোর ভাবি। সম্পর্কে বউ সো সম্মান দিয়ে কথা বলতে হবে তো না কি। সম্মান দিলেই কিন্তু সম্মান পাওয়া যায়।

আদি নিধির হাত ধরে হাঁটতে শুরু করে আবার থেমে যায়। পেছন ঘুরে বলে

” আর হ্যাঁ সৌরভ এমন কিছু করিস না যাতে তোর সাথে আমার রিলেশনটা নষ্ট হয়ে যায়। কেমন

আদি একটু হেসে চলে যায়।

নিধি হা করে আদিকে দেখছে। এই মানুষটা নিধিকে সম্মান দিতে বললো

“এমন চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছো কেনো? জীবনে স্মার্ট ছেলে দেখো নাই

আদির কথা শুনে নিধি অন্য দিকে তাকায়। বিরবির করে বলে

” দুই সেকেন্ড ও হয় নাই ওনাকে নিয়ে একটু প্রশংসা করছিলাম মনে মনে এর মধ্যেই আসল চেহারাটা দেখিয়ে দিলো। লাটসাহেব একটা

“বিরবির করে কারা কথা বলে জানো?

নিধি উৎসাহিত হয়ে বলে

” নাহহহ তো

“চোর রা

বলেই আদি অফিস রুমে ঢুকে যায়। নিধি মনে মনে আরও কিছু গালি দিয়ে আদির পেছন পেছন ঢুকে।

মোটামুটি নিধিকে ভর্তি করানো শেষ। টিচাররা জিজ্ঞেস করে নিধি আদির কে হয়। নিধিও দাঁত কেলিয়ে আদির দিকে তাকিয়ে আছে। আদি কি বললে শোনার জন্য। আদি পড়েছে ঝামেলায়। কি বলবে বুঝতে পারছে না

” বলুন আমি আপনার কে হই?

নিধি আদিকে খোঁচা মেরে বলে। আদি অগ্নি দৃষ্টিতে নিধির দিকে তাকিয়ে বলে

“বউ হয় আমার

বলেই আদি হনহনিয়ে বেরিয়ে যায়। নিধি এখনো বিশ্বাসই করতে পারছে না আদি এটা বললো। নিধি ও আদির পেছনে দৌড় দেয়।

আদিন কোনো দিকে না তাকিয়ে হাঁটছে। নিধি দৌড়ে আদির সমান সমান হয়

” আপনি এটা কি বললেন?

আদি থেমে যায়। নিধিকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে রেগে বলে

“কালা তুমি? শুনতে পাও না? কান কি পার্সে রেখে দিছো?

নিধি ঘাবড়ে যায়। থেমে থেমে বলে

” আআআমি
আদি নিধির আর একটু কাছে এসে বলে

“কি তুমি? এতো কথা কেনো বলো তুমি? পাগল করে দেবে আমায়। আমি পাগল হয়ে বেরিয়ে যাবো

নিধি ভেবাচেকা খেয়ে যায়। কি এমন বললো যাতে এতোটা রেগে গেলো আদি

” সবাই দেখছে
নিধি আশেপাশে তাকিয়ে বলে।

“দেখছে দেখুক। বউ তো তুমি আমার তাই না

” আমি বলি নি আপনি বলেছেন
নিধি মুখটা নিচু করে বলে

“তুমি বলতে বাধ্য করেছো। লিসেন স্টুপিট আই হেট ইউ। আমি তোমাকে ভালোবাসি না। বুঝতে পেরেছো তুমি

নিধি আদিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। তারপর দৌড়ে গাড়ির কাছে যায়। গাড়িতে বসে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নেয়

আদি দেয়ালে ঘুসি মারে। বউ শব্দটা আদি বলতে চায় না। এই শব্দে বিষ আছে এটা আদির ধারণা। তবুও আজ বউ শব্দটা বলতে হলো। আদি ভীষণ রাগ হচ্ছে। নিধির ওপর না নিজের ওপর এটাই বুঝতে পারছে না আদি।

আদিও গিয়ে গাড়িতে বসে। নিধি জোরে একটা শ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করে

” ভালো আমিও আপনাকে বাসি না। কিন্তু কখনো আপনার সাথে বাজে বিহেব করি নি। আপনাকে আঘাত দিয়ে কথা বলি নি। ভাবতে পারেন আমার হয়ত রাগ নেই তাই। কিন্তু তা না। রাগ সব মানুষেরই আছে। আম্মু বলে যখন কোনো সমস্যার সমাধান ঠান্ডা মাথায় করা যায় তখন রাগারাগি করে সেই মানুষটাকে অপমান করার কোনো মানে হয় না। আমি কিন্তু আপনাকে কখনোই বলি নি যে আপনাকে ডিভোর্স দেবো না। যদি এটা বলতাম তো আপনার আমার সাথে বাজে বিহেব করার রিজন থাকতো।

নিধি একটা শ্বাস নেয়। তারপর একটু হেসে বলে

“মিস্টার আদিল চৌধুরী আমি ফেলনা না। আমার পরিবার বা আপনার পরিবার ভাবতো আমার আর আপনার বিয়ে হলে আমরা সুখী হবো। কিন্তু তারা তো জানে না আমাদের দুজনেরই আলাদা আলাদা ভালো থাকার পথ আছে।
আমি জানি সৌরভের সাথে আমার ব্রেকআপ টা আমার বা সৌরভের ইচ্ছেয় হয় নি। এটা আপনার আর আব্বুর ইচ্ছে ছিলো

আদি নিধির দিকে চোখ বড়বড় করে তাকায়।

” রিলাক্স। আমি কারণ জানতে চাইবো না। কখনো আব্বুর কাছেই জানতে চায় নি। তো আপনার কাছেও জানতে চাইবো না। আমি বিশ্বাস করি একদিন আপনি বা আব্বু আমাকে সত্যিটা বলবেন। কেনো সৌরভের থেকে আমাকে আলাদা করা হলো?

“তুমি

নিধি হাত উঁচু করে আদিকে থামিয়ে দেয়

” এক্সকিউজ নিধিরা নিধি পছন্দ করে না। আর হ্যাঁ আপনার কাছ থেকে বউয়ের পরিচয় পেতে আমার বয়েই গেছে। এখন চুপচাপ আমাকে একটা ভালো দামী ফোন কিনে দেবেন। যদি টাকা না থাকে তো আমার আব্বুর কাছ থেকে নিয়ে নিয়েন

নিধি জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকায়। আদি মুচকি হেসে গাড়ি স্টাট দেয়।

ফোনের দোকানের সামনে গাড়ি থামায়। নিধি এক দৌড়ে দোকানোর ভেতরে ঢুকে যায় আর ফোন চুজ করা শুরু করে। একটা ফোন নিধির খুব ভালো লাগে তো ফোনটা নিয়ে আবার দৌড়।

“এই ইডিয়েট আস্তে

কে শোনে কার কথা। আদি বিল দিতে যায়। নিধি ইচ্ছে মতো সেলফি তুলছে। সেই ফুলসজ্জার রাতে সেলফি তুলেছিলো। আর তোলা হয় নাই। আট এখানে আসার সময় তো ভুলে মোবাইল টা ফেলে এসেছে। এবার নিধির মাথায় আসে একটা সিমও তো কিনতে হবে। আদি গাড়িতে উঠছিলো নিধি আটকে দেয়। আদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে

” আবার কি?

“সিম

আদি আবার দোকানে গিয়ে একটা সিম কিনে দেয়।

আদি ডাইভ করছে আর নিধি ফেসবুকে ঢোকার চেষ্টা করছে।

” ধুর

“কি হলো

” এমবি তো ভরলাম না।

“বাসায় WiFi আছে

নিধি খুশি হয়ে বলে

” সত্যি

“হুম

আদি নিধির হাসি মুখের দিকে এক পলক তাকায়।
মেয়েদের হাসিতেই না কি ছেলেদের সর্বনাশ। কথাটা আদি বিশ্বাস করে। কারণ এই কথাটার প্রমাণ আদি পেয়েছে। তাই এখন আর নিধির হাসি মুখটা আদির ভালো লাগে না। আদি মনে হয় নিধি সব সময় গুমড়ো মুখো হয়ে থাকুক।

” তোমার হাসিটা জঘন্য। প্লিজ আমার সামনে হাসবে না। আমার ভালো লাগে না

আদির কথা শুনে নিধির মুখের হাসি উড়ে যায়।

চলবে

#শুধু তুই ২
#পর্বঃ১২
#Tanisha Sultana (Writer)

“এই লোকটা মানুষ হবে না। লাটসাহেব একটা। আমার হাসি বাজে? তুই জানিস কতো ছেলে আমার এই হাসির জন্য আমার পেছনে ঘুরতো। সৌরভও এই হাসি দেখেই প্রপোজ করেছিলো

নিধি আদিকে ভেংচি কেটে অন্য দিকে তাকায়। আদি দেখে ফেলে

” তুমি আমাকে কিস করলে কেনো?

নিধি যেনো আকাশ থেকে পড়লো। বলে কি লোকটা? পাগল হলো না কি?

“তোমার মতলবটা কি বলো তো? এই কিস করলে এখন আবার হা করে তাকিয়ে আছো। আমি জানি আমি খুব সুন্দর দেখতে তাই বলে সব সময় এমন চোখ দিয়ে গিলে খাবে

নিধি আরও বেশি অবাক হলো।

” আমি আপনাকে কখন কিস করলাম?

আদি গাড়ি থামায়।

“তুমি সত্যিই প্রতিবন্ধী। এইমাএ কিস করলে আর এখনি ভুলে গেলে।

” এক্সকিউজ মি আমি আপনাকে কিস করি নি। আমি নিধিরা নিধি কিস করবো তাও আবার আপনার মতো লাটসাহেবকে ভাবা যায়

“তাহলে কি করছো?

আদি ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে। নিধি মাথা নিচু করে বলে

” ভেংচি দিছি

“ভেংচি এভাবে দেয়?
আদি গালে হাত দিয়ে বলে

” হুমমম

“কিন্তু আমি তো দেখলাম কিস করলে

” আমি আপনাকে ভেংচি দিছি। ঠোঁট বাঁকিয়ে ভেংচি দেয়

“কিসও তো ঠোঁট বাঁকিয়ে দেয়
আদি একটু বাঁকা হেসে বলে

” ভেংচি আর কিসের মধ্যে পার্থক্য আছে

“কি রকম

নিধি এবার ভরকে যায়। জাস্ট একটা ভেংচির জন্য এতো কথা।

” ভেংচি আর কিস তো আলাদা জিনিস। আমি রেগে গেছিলাম তাই ভেংচি দিছিলাম। আর কিস তো ভালোবাসলে দেয়

“ওহহহ। তো তুমি তো ভালোবেসেও দিতে পারো। রেগে গেছিলে তার কি প্রুভ আছে

আদি আবার ভ্রু কুচকে বলে

“আপনি কি জাবেন না কি আমি একাই চলে যাবো

নিধি গাড়ি থেকে নামতে যায় আদি হাত ধরে আটকে দেয়।

” তুমি ঠিক যে পরিমাণ গাঁধা তাতে তুমি গাড়ি থেকে নামলে হয় হারিয়ে যাবে নয়ত সৌরভের সাথে ধাক্কা খাবে হয়ত আবার গাড়িতে ফিরে আসবে। বাসায় পৌঁছাতে পারবে না। শুধু শুধু তোমার একটু কষ্ট হবে আর আমার তোমার পেছনে দৌড়াতে হবে। তো একটা কাজ করো আগে কক্সবাজারটা ভালো করে চেনো জানো তারপর একদিন রাগ করে গাড়ি থেকে নেমে চলে যেয়ো। আমি আর খুঁজতে যাবো না

নিধির রাগের পরিমাণ বেরে যায়

“আপনি আমাকে লেগ পুল করছেন

” লেগ পুল মানে টা জানো তুমি? আমি কিন্তু জানি না। আসলে ইংরেজিটা অনেকটা কম পারি তো

নিধি রেগে ফুসফুস করছে। আদি হো হো করে হেসে ওঠে। নিধি এবার ভ্রু কুচকে তাকায় আদির দিকে

“এখানে কি কোনো জোকার এসেছে

আদি হাসি থামিয়ে বলে

” সব সময় এরকম রেগে থাকবে। তোমায় খুব সুট করে। কেমন

“আপনি সব সময় হাসিখুশি থাকবেন। এই হাসিটা আপনাকে খুব সুট করে

” তোমার রাগের মধ্যেই আছে আমার ভালো থাকার মেডিসিন

আদি হাসতে হাসতে গাড়ি চালানো শুরু করে। নিধি অবাক হয়ে আদিকে দেখছে

“আমার রাগের মধ্যেই আছে এই লাটসাহেবের ভালো থাকার মেডিসিন। আমার হাসি কি এতোটাই বাজে? তবে হ্যাঁ ফাস্ট টাইম লাটসাহেবকে খিলখিল করে হাসতে দেখলাম।

” আবার তাকিয়ে আছো আমার দিকে

“আপনার চেহারায় মধু মধু একটা ফেবার আছে। খাইতে মন চায়। তাই তাকিয়ে থাকি

আদি গাড়ি জোরে ব্রেক করে। নিধি ভরকে যায়

” ইসস কি বলে ফেললাম

গাড়ি থামতেই নিধি দৌড়ে গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে দৌড় দেয়। আর যা হওয়ার তাই। নিধি ঠাস করে পড়ে যায়। তবে এইবার পায়ে প্রচুর ব্যাথা পায়। ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে ওঠে। কবরটার সামনেই পড়ে যায় নিধি। আদি দৌড়ে আসে

“কমনসেন্স নাই তোমার? তুমি যে প্রতিবন্ধী সেটা তুমি ভুলে যাও কেনো? যেখানে দৌড় দিলেই তুমি উস্টা খাবে সেখানে দৌড়াতে যাও কেনো? ইডিয়েট।

নিধির চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। পা ধরে আছে আদি এবার খেয়াল করে। নিধির কাছে হাঁটু মুরে বসে

” কি হয়েছে?

“ব্যাথা পেয়েছি

বলেই নিধি কেঁদে দেয়

” কিচ্ছু হবে না। আমি আছি তো

আদির কথায় নিধির কান্না বন্ধ হয়ে যায়।

“আমাকে ধরে উঠার চেষ্টা করো

আদির কথায় নিধি গাল ফুলিয়ে আদির দিকে তাকায়। কেমন নিরামিষ হলে এমন একটা কথা বলতে পারে। কোথায় বলবে নিধি আমি তোমাকে কোলে নেই তা না

” আবার তাকিয়ে আছো কেনো? তোমার পবলেম কি? সব সময় তাকিয়ে থাকো কেনো? বাই এনি চান্স তুমি কি আমার প্রেমে পড়ে গেছো

নিধি চমকে ওঠে। নিজে নিজেই উঠার চেষ্টা করে আবার পড়ে যায়। আদি কোলে তুলে নেয়। নিধি আদির গলা জড়িয়ে ধরে

“একদম অন্য ভাবে ধরবে না। নরমাল ভাবে ধরবে ওকে

নিধি ঠাস করে আদির গালে ঠোঁট ছোঁয়ায়। নিধি এটা কি করলো নিজেই জানে না। আদি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আদি নিধির দিকে তাকায়। নিধি আদির চোখের দিকে তাকিয়ে বলে

” আর কিছু বললে এর থেকেও বেশি কিছু হয়ে যাবে

আদি একবার কবরটার দিকে তাকায় তারপর নিধির দিকে।

“এটা ঠিক হলো

নিধি আদির ঠোঁট আঙুল দেয়

” এতো কথা বলেন কেন আপনি? একটু চুপ থাকতে পারেন না

আদি এক পা বাঁড়ায় আর আদির কানে ফেসে ওঠে কেউ বলছে

“তুমি বদলে গেছো আদি। এতোটা বদলে গেলে কি করে

আদি দাঁড়িয়ে যায়। আশেপাশে তাকায়

” কি হলো?

“তুমি খুব ভাড়ি তাই হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে

নিধি গাল ফুলিয়ে ফেলে। আদি নিধিকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে। নিধিকে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসিয়ে বরফ নিয়ে আসে

” এটা পায়ে লাগাও ব্যাথা করবে

বলেই আদি চলে যায়

“এটা কি হলো? উনি এভাবে চলে গেলো কেনো?

নিধি পায়ে বরফ লাগায়। আদি রুমে গিয়ে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়।

” আমি কি করছি এটা? আমি নিধির প্রতি দুর্বল হতে পারবো না। এতে নিধিরও হ্মতি। কি করবো আমি

নিধি রেলিং এ ঘুসি মারে। কবরটার দিকে তাকায়।

🌹🌹

সকালে
নিধি সোফায়ই ঘুমিয়ে পড়েছে। পায়ের ব্যাথাটা অনেকটা বেরেছে। আদি ঘুম থেকে উঠে দারজা খুলে দেখে নিধি ওখানেই ঘুমিয়ে আছে। আদি নিধির কাছে যায়

“এই স্টুপিট উঠো

নিধির কোনো সাড়াশব্দ নেই। আদি পানির বোতল এনে নিধির মুখের ওপর পানি দেয়। নিধি হুরমুর করে উঠে। আবার পায়ে ব্যাথা পায়।

” আহহহহহ

আদি নিধির পা ধরে

“গাঁধা কেনো তুমি? সব সময় এমন স্প্রিডে চলো কেনো? নিজের স্প্রিড কন্ট্রোল করতে পারো না

” বলদের মতো মুখে পানি দিলে তো এমন হবেই

“কিহহহহ আমি বলদ

” আমি গাঁধা

“হুমমম তুমি গাঁধা ইডিয়েট ননসেন্স স্টুপিট

” কথা বলবেন না আমার সাথে

“তোমার সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছে নেই আমার

” যান এখান থেকে

“আমার বাড়ি থেকে আমাকেই যেতে বলছো

নিধি কষ্টমষ্ট করে উঠে দাঁড়ায়। আদি হাত ধরে। নিধি হাত ছাড়িয়ে নেয়। তারপর হাঁটার চেষ্টা করতেই আদির গাঁয়ের ওপর পড়ে যায়

” যেটা পারো না সেটা কেনো করতে যাও

আদির সাহায্যে নিধি রুমে আসে। খাটে বসে

“মনি আপুকে একটু ডেকে দেবেন

” কেনো?

“দরকার আছে

” আমাকে বলা যায় না

“নাহহ

” মনি অফিস গেছে

“ওহহহ

” আমাকে বলতে পারো

“চেঞ্জ করবো গোছল করবো

” হেল্প করছি

আদি নিধিকে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়।

“আমি দরজার বাইরে আছি

” হুমম

নিধি দরজা আটকে সাওয়ার অন করে

“এই লাটসাহেবের মতিগতি আমি কিছুই বুঝতে পারি না। চায় টা কি উনি? এই ভালো তো এই খারাপ। তবে যাই হোক ক্রাশ খাওয়ার মতো জিনিস একটা। সৌরভের থেকে দেখতে ভালো বাট বিহেব করলার মতো।

আদি দরজায় নক করে

” তোমার ড্রেস। এবার ড্রেসটা নিয়ে আমাকে উদ্ধার করে।

নিধি দরজা খুলে ড্রেস নিতে যায়। আদি নিধির দিকে চোখ বড়বড় করে তাকায়। নিধিও বুঝতে পেরে চিৎকার দিয়ে ওঠে। নিধির চিৎকার শুনে আদি দুপা পিছিয়ে কানে হাত দেয়

“আমার কান শেষ।

আদি অগ্নি দৃষ্টিতে নিধির দিকে তাকায়। নিধির এবার কান্না পাচ্ছে। পায়ে ব্যাথার জন্য দৌড় ও দিতে পারছে না। এবার নিধি ভ্যাভ্যা করে কেঁদে ফেলে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে