শুকনো ঘাস ফুল part: 9

0
1444

#শুকনো_ঘাস_ফুল?
#natasa_islam_muntaha
#part::9

আহাদ আহিবাকে তার সম্পূর্ন অধিকার দিয়েই রাখতে চেয়েছিল কিন্তু তাদের তিন জন এর জীবনই “#শুকনো_ঘাস_ফুলের”মতো শুকিয়ে রয়েছে …

অন্যদিকে এনি ঐ বাসার রুমের বারান্দার গিরিল ধরে দারিয়ে আছে |তার দৃষ্টি সামনের একটা জামরুল গাছে| সেখানে একজোরা পাখি বসে আসে পাশাপাশি |

এনি :এই যে জোরা পাখি যানো আমার না এমন একটা জোরা ছিল …কিন্তু দেখো না …এখন সাথে নেই …ছোট বেলায় বাবাকে হাড়ালাম …তার পর মা ও চলে গেল ..আর স্বামী তাকে কি আমার স্বামী বলা সাঝে …কিন্তু তার আর আমার বিয়েটা সেভাবে হোক হয়েছে তো ….কিন্তু বিয়ে হলেই কি স্বামী স্ত্রী হয়ে যায় …আগে তো আমাদের মধ্যে কত মিল ছিল কিন্তু আহিবার সাথে তার বিয়ে হওয়ার পরই সে দূরে সরে যেতে থাকে …হয়তো এটা আহিবার কবুলের জোর ….আমার বিয়েটা না হয় থাক ঐ পাহাড় এর নিচে চাপা পরে কি দরকার আর এর কথা ভেবে কষ্ট পাওয়া …নিজের জীবন টাকে থামিয়ে রাখার কি আদো কোনো মানে হয় …কিন্তু মেয়েদের জীবনে বিয়ে তো একবারই হয় …এর পর তখনই ২য় বিয়ে হয় যখন সে পরিস্থীতির ফাদে পরে …স্বামী অত্যাচার করলে কিংবা শশুড় শাশুরী জালাতন করলে কিন্তু আমার বেলায় তো এমন কিছুই হয়নি ….আমি একাই আমার জীবনের পথটা পারি দিতে পারবো ..হুম পারতে যে আমায় হবেই

এনি কথা গুলো এক ধ্যানে বাহিরের দিকে তাকিয়ে বলছিল ওর পিছনে যে কেউ দাড়িয়ে আছে সেটা এনি গুনাক্ষরেও টের ও পায়নি

এনির কাধে হাত দেয় সে এনি এক লাফে পিছনে থাকা মানুষটার দিকে ঘুরে তাকায়

এনি:আন্টি তুমি ….তুমি কখন এলে
আন্টি(রাহুল এর মা ):তুই যখন একা একা কথা বলেছিলি তখন ?
এনি;আসলে আন্টি
আন্টি:থাক বলতে হবে না আমি সবটাই শুনেছি চল ঐ সোফাটায় গিয়ে বসি তারওর না হয় কথা বল্লাম
এনি:হুম

এনি আর রাহুল এর মা গিয়ে সোফায় বসে এনি তার পাশেই

আন্টি:মা …একা কখনও জীবন চলে না আার তোর বয়স টাই বা কত বল …কি করে পারবি তুই একা জীবন কাটাতে …কি তোর পরিচয় হবে …কার পরিচয়ে তুই বাচবি …নিজের পরিচয়ে …?আদো কি সম্ভব ….সে যাক গে …আতীতকে কখনও সামনে আসতে দিবি না ..সে আতীত তাকে আতীতের খাতায়ই পরে থাকতে দে …শুধু শুধু তাকে কেন ভবিষ্যতের সাথে জড়াবি..তুই ভুল কিছু করিসনি…. সে বিবাহিত তার বউ আছে সংসার আছে সেখানে তুই কেন গিয়ে পরে থাকবি …তুই চাইলেই নতুন করে সব কিছু শুরু করতে পারবি …তাকে বুঝিয়ে দে তুই দূর্বল নস …বরং তুই ও তার মতো সংসার করছিস…
এনি :কিন্তু আন্টি আতীত ভুলে যাওয়া এতোটাই সহজ
আন্টি:জানি সহজ না …কিন্তু মানুষের চেষ্টার কাছে কোনো কিছুই কঠিন না …নিজেকে ব্যাস্ত রাখ সারা দিন ..দেখবি ব্যাস্ততাটাই তোকে তার কথা ভাবা থেকে বিরত রাখবে ভালো থাকবি ..আর শোন কাল আমি রাহুল কে বলে ওর অফিসে তোকে জয়েন করানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি তারপর নিজেকে সারাদিন কাজে ডুবিয়ে রাখ
এনি:হুম

আহিবা সকাল ঘুম ভাগতেই আহাদ এর দিকে চোখ যায় …..আহাদ ঘুমের মধ্যেও তার কপালে স্পষ্ট ভাজ বিরাজমান …হয়তো ঘুমের মধ্যেও চিন্তার এক রাস নিয়ে বসে আছে

আহিবা : আপনি হয়তো আমায় নিয়ে চিন্তা করছেন তাইনা …আমি যানি আপনি আপুকে প্রচন্ড ভালোবাসেন …কিন্তু কি করে আমি জানবো কার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে যদি কবুল বলার এক মুহূর্ত আগেও জানতাম তাহলে ঐখানেই বিয়েটা ভেগে দিতাম …কিন্তু কপাল যে আমার সহায় ছিলনা ..তাই হয়তো এমন হয়েছে …কি করবো বলুন বাবার বাড়ি যাবো সেখানে যাওয়া যে সম্ভব না …মাফ করবেন …
আহাদ হঠাৎ নরে ওঠে আহিবা সাথে সাথে এক লাফে খাট থেকে নিচে নামে কিন্তু কপাল খারাপ হয়ে আর যা হয় চাদরের কোনায় পা বেজে সোজা ধপাস …
আহিবা :ওরেহহহহহহ
আহাদ হঠাৎ এমন চিৎকারে লাফিয়ে উঠে বসে চারিদিকে তাকায় কিন্তু কিছুই দেখতে পায় না তারপর যখন আহিবার আবার শব্দ শোনে তখন খাটের কোনায় গিয়ে উকি দিয়ে দেখে আহিবা নিচে পরে আছে
আহাদ:আরে এভাবে পরলে কি করে
আহিবা :চাদরে পেচিয়ে
আহাদ:তো উঠছো না কেন
আহিবা :চোর খুজছিলাম (মুখ ব্যকিয়ে বলে উঠে দাড়িয়ে জামা ঝারতে ঝারতে রুম থেকে বেরিয়ে যায় )
আহাদ :কি বলে গেল খাটের নিচে চোর খুজছিল …স্টের্জ খাটের নিচে চোর আসবে কোথা দিয়ে ..ধুর আমি ঘুমাই
বলেই আহাদ আবার সুয়ে পরে

দরজার আড়াল থেকে
রাফি: যা শান্তি করার করে নাও কারন এটা আর বেশী দিন পারবে না…..আমি হতে দিবো না ….কখনই না …
বলেই ওখান থেকে নিজের রুমে চলে যায়

আহিবা রান্না ঘরে সবার জন্য সকালের নাস্তা বানিয়ে ওর দাদীর রুমে যায় …
দাদী:আরে নাতবউ ভেতরে আয়
আহিবা:হুম
আহিবা গিশে ওর দাদীর পাশে বসে
দাদী:তোর জোরার টা কই রে ?
আহিবা:জোরারটা
দাদী:তোর সোয়ামী
আহিবা:ওহ….সে ঘুমায়
দাদী:সে কি রে এখন ও ঘুমায় উঠাস নি
আহিবা:তার সময় হলে এমনিই উঠে যাবে
দাদী:এটা কোনো কথা …একটু কাজ কর দাদু ভাইকে দেকে নিয়ে আসবি
আহিবা:আআআআমমি
দাদী:?তা নয় তো কে
আহিবা:দাদী না গেলে নয়
দাদী:নাহ তারাতারি যা
আহিবা বাধ্য হয়ে উঠে চবার আগাদ এর রুমে যায় গিয়ে দেখে আহাদ উঠে খাটের সাথে হেলান দিয়ে ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে

আহিবা;আপনাকে দাদী ডাকছে
আহাদ শুনেও না শোনার ভান ধরে বসে আছে
আহিবা:শুনছপন আপনাকে দাদী.ডেকেছে
আহাদ এদিক ওদিক তাকিয়ে তারপর আহিবার দিকে তাকায়
আহাদ:আমায় বলছো
আহিবা:হুম দাদী ডাকছে
আহাদ:ওহ তুমি যাও আমি ফ্রেস.হয়ে আসছি
আহিবা:জ্বি
আহিবা আবার দাদীর রুমে চলে যায় আহাদ ও তার একটু পর গিয়ে হাজির হয়
আহাদ:দাদী ডাকছিলে
দাদী :হুম এদিকে আয় বস তো এখানে (টুল দেখিয়ে )
আহাদ ও গিয়ে বসে পরে আহাদ আশার সময় পানির একটা বোতল হাতে করে নিয়ে এসেছি খাবে তাই আহাদ বসে পানিটা কেবল মুখে দেয় তখনি
দাদী :কিরে দাদী ভাই আমার পুতির মুখ কি তোরা দেখাবি না …নাকি না দেখিয়েই মারতে চাস
আহিবার চোখ ছানা বড়া হয়ে গেছে আহাদ পানি মুখে দিয়ে এমন কথা শুনে পানি নাকে চলে যায় ..বেচারার বেষম চলে যায় আর কাশতে থাকে
দাদী:আরে আস্তে খা
আহিবা:ঠিক আছেন আপনি
আহাদ:হুম হুম
দাদী:ঐ ছুরী তুই ওকে আপনি বলিস কেন রে …ও কি তোর পর …শোন এর পর থেকে তুমি করে বলবি মনে থাকে যেন
আহিবা: আআআচচচচ্ছা
আহাদ মুচকি মুচকি হাসে
দাদী:শোন যা বলছিলাম
আহাদ:দাদী এখানেই থেমে যাও না
দাদী:তুই চুপ থাক ….আর শোন আমি মরার আগে আমার পুতি দেখতে চাই বুঝলি …আমি কি একটু পুতি নিয়াও খেলা করমু না …
আহাদ:দাদী কি যে বলো তুমি …
দাদী:ভুল কি বলছি আমি আজ আছি কাল নেই ..শোন তোদের কাছে এটা আমার আবদার ….আমায় পুতি এনে দেওয়ার ব্যবস্থা কর
আহিবা :এক কাজ করুন না মানে করো ..একটা পুতিঁ কিনে এনে দাদীকে দিয়ে দাও ..?
দাদী:ওরে বাদর মেয়ে ..আমি এই পুতিঁর কথা বলিনি ..তোর আর আহাদ এর বাচ্চার কথা বলছি
আহাদ:দাদী এটা পরেও ভাবা যাবে তাই না
দাদী:হুম আমি মরলে ?

আহাদ ওর দাদীকে বুঝিয়ে তারপর খেতে নিয়ে যায় …আহিবাও যায় …ওর কাকা কাকিরাও আসে সাথে রাফিও …
রাফি কারনে অকারনে খালি আহিবার হাত স্পর্শ করছে ..আহিবা বার বার ওর হাত সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আর এক রাশ বিরক্ত নিয়ে রাফিকে খাবার সার্ফ করছে …আহাদ সবটা খেয়াল করছিল
আহাদ:আহিবা তুমি এই পাশে এসে খেতে বসো আমি খাবার দিয়ে দিচ্ছি
আহিবা :কিন্তু
আহাদ এক প্রকার টেনেই আহিবাকে ওর পাশে নিয়ে বসিয়ে দেয় …
আহিবা চুপ চাপ বসে আছে ..সবার খাওয়া শেষ হলে যে যার মতো করে চলে যায় …
আহাদ:আহিবা একটু রুমে আসো তো
আহিবা:হুম আসছি
দাদী পাশে ছিল ..আহাদ রুমের দিকে যেতেই সে আহিবাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে
দাদী:যাও যাও তোমার জামাই তোমায় খুজছে …অফিসে যাবে তো তার আগে বউকে একটু সোহাগ করতে হয় না ?
আহিবা:দাদী তুমি সব সময় বেশী বলো এমন কিছুই না
এর মধ্যে আহাদ আবার ডাক দেয় আহিবা হুমরী খেয়ে ওদের রুমে চলে যায় ..আর ওর দাদী ফোলকা দাতে ফিক করে হেসে দেয় …….

চলবে,,,, ,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে