#রৌদ্র_মেঘের_জুড়ি(৭)
মৈএী আমতা আমতা করে ক্লাসের সবার দিকে তাকিয়ে একবার দেখে অন্যদিকে সবাই ভাবে এখন মৈএী কি করতে পারে?প্রথম দিন এই স্যারের সাথে যে কাজ করেছে তা আবার করবে নাকি ভেবে পায় না সকলেই। তবে মৈএী সবাইকে অবাক করিয়ে দিয়্ব উঠে দাঁড়িয়ে অনলের চোখের দিকে চোখ রাখে। যেনো অনলকে বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সে।
অনল বলে,
কি দেখছিলে?
মৈএী খেয়াল হারিয়েছে অনেক আগেই সেভাবেই বলে, তোমাকে…..
অনল বিব্রত হয় ক্লাসের সবাই হা করে মৈএীর মুখের দিকে তাকিয়ে ওটা সেটা বলেই যাচ্ছে। অনল ঘাবড়ে যায় মৈএীর দিকে কট*মট করে তাকিয়ে বলে,
এভাবে কথা বলছো কেন আমার সাথে?টিচার না আমি তোমার?? সকলেই কি ভাবছে!!
মৈএী অনলের ধম*কে আবার ও হুশে ফিরে আসে। অন্যদিকে চোখ ফেরায় বলে,
সরি স্যার আর হবে না।
সুমনা তাজ্জব বনে যায় এই মেয়ে সরিও বলতে জানে??অনল আর কিছুই বলেনা ওকে। আবার ও সামনে গিয়ে বই ও নজর দিতে বলে সবাইকে।
—–
কিরে তুই আজকে ক্লাসে ওভাবে কথা বলছিলি কেন স্যারের সাথে?
ও তুই বুঝবি না সুমনা।
কেন বুঝবো না?তুই বুঝিয়ে বল আমায়!
আমি ওনার প্রেমে পরেছি সুমনা!
সুমনার ভেতরটা কে*পে ওঠে এই মেয়ে প্রেমেও পরতে পারে??
সে হতাশা গলায় বলে,
এসব কি বলছিস কি তুই?
একদম ঠিক বলছি। আমি স্যারের প্রেমে পরেছি।
কবে?
সে তো জানিনা। সময় খেয়াল করে আমি প্রেমে পরিনি। শুধু জানি ওনাকে আমার খুব ভালো লাগে। আচ্ছা তুই একটা আইডিয়া দে কি ভাবে আমি স্যারকে ইম্প্রেস করবো?
সুমনা কিছু ভাবে এরপর বলে,
বুদ্ধি পেয়েছি। স্যার তো তোকে প্রতিদিন বিকেলে বাসায় গিয়ে পড়িয়ে আসে তুই সেই সময় সুন্দর করে সেজে গুজে প্রস্তাব দিবি ব্যাস হয়ে যাবে।
যদি না মেনে নেয় আমাকে।
তাহলে আর কি? খু*ন করে ফেলবি। তোর যা স্বভাব!!
মৈএী ভ্রু কুঞ্চিত করে বলে,
এসব কি বলছিস কি তুই?খু*ন কেন করবো? আমি সত্যই ওনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
তাহলে যেভাবে বললাম সেভাবেই বলবি অনল স্যারকে কেমন?
হুম।
মৈএী আজকে বিকেল হতেই সুন্দর করে সেজে গুজে চেয়ার নিয়ে বসে। এখনো স্যারের সময় হয়নি আসার তাই আরেকবার গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে, ব্ল্যাক লং থ্রি পিস । মাথার চুল গুলি বেনুনী করা। চোখে কাজল দেওয়া দুই হাতে ব্ল্যাক কাচের চুড়ি। দুই ঠোঁটের ভাজে হালকা পিংক রঙ এর লিপস্টিক। কপালে ছোটে কালো টিপ দেখা যাচ্ছে এতেই মৈএীকে অসাধারণ সুন্দরী লাগছে। আজ তো মৈএী নিজেই নিজের প্রেমে পরতে বাধ্য হয়েছে তাহলে কি অনল ও প্রেমে পরবে আজ?
অনল যথা সময়ে আসতেই মৈএী নিজেকে ঠিক করে নিয়ে চেয়ারে বসে বই খুলে ভাবে কি দিয়ে অনলকে বলা শুরু করবে?আচ্ছা অনল কি তাকে ফিরিয়ে দিবে?ভেবে পায় না ।
অনল সামনের চেয়ারে বসতেই মৈএীর ভেতরটা ধ্বক করে ওঠে এমন কেন লাগছে ওর?অনলের দিকে তাকিয়ে দেখে অনল একটা বই খুলছে।এরপর মৈএীর দিকে এগিয়ে দিয়ে সেগুলো সমাধান করতে বলে। মৈএী নিজের কাজ শেষ করে অনলের দিকে খাতা দেয়।
স্যার!
অনল খাতা দেখতে দেখতে বলে,
হ্যাঁ।
আসলে মানে স্যার!!
কিছু বলবে?
জ্বি মানে! আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই।
বলে ফেলো।
আসলে স্যার মানে…….
অনল খাতা সরিয়ে রাখে মৈএীর দিকে তাকিতে দেখে আজ মৈএী সুন্দর করে সেজে বসে আছে। এত সুন্দরী কেন লাগছে মৈএীক? নাকি মৈএী আগে থেকেই এমন সুন্দরী সে খেয়াল করেনি?
আমতা আমতা করছো কেন বলে ফেল……
আপনি বলুন আপনি রাগ করবেন না।
না।
আসলে স্যার আমি আপনাকে পছন্দ করে ফেলেছি!
অনলের দুই চোখ সরু হয়। কপালে ভাজের সংখ্যা বেড়ে যায়।
এসব কি ধরনের কথা বার্তা মৈএী?
ভালোবাসা ধরনের কথা বার্তা স্যার।
অনল বিরক্তির সাথে বলে,
আমার সাথে এরকম মজা করবেনা মৈএী প্লিজ!
না স্যার মজা নয় আমি একদম সিরিয়াস!
মৈএী প্লিজ! এসব বলবেনা আমাকে।
মৈএী টেবিলের উপরে রাখা অনলের হাত ধরে ফেলে তারপর বলে ,
মজা নয় অনল….আমি তোমাকে সত্যই ভালোবেসে ফেলেছি কবে কখন, কিভাবে জানিনা, তবে আমি তোমায় অনেক বেশিই ভালোবেসেফেলেছি।
আমার প্রথম আবেগ তুমি, প্রথম কোন পছন্দের পুরুষ তুমি আমার সপ্ন থেকে শুরু করে বাস্তবতা তুমি তোমার কাছে থেকে নতুন একটা জীবন পেয়েছি আমি আর সেই জীবন তোমার সাথেই পার করে দিতে চাই অনল তুমি কি আমার পাশে রবে না??বলো??
অনল নিজের হাত মৈএীর হাত থেকে ছাড়িয়ে নেয় চোখ বন্ধ করে কিছু সময় চুপ করে থাকে এরপর বলে , এ রকম ভালোবাসা, প্রেমময় কাব্য আমাকে শুনাবেনা প্লিজ। তা হলে আমি তোমাকে আর পড়াতে আসবো না মৈএী।
মৈএী কিছুই বললোনা শুধু অনলের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো আর অনল?সে এক মুহুর্তের জন্য ও মৈএীর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো না। চুপ করে বই দেখলো, বইয়ের দিকে চোখ রেখেই মৈএীকে বুঝিয়ে দিয়ে লিখতেও দিলো।
মৈএী বুঝতেও পারলো না অনল এসব শুনেও কেমন নিশ্চুপ হয়ে আছে আর সে একদম এভাবে স্বাভাবিক নেই!! অনল কি তাকে বুঝবে না?ওকে কি ভালোবাসবে না??
চলবে
#মিশকাতুল