#গল্পঃ রোমান্টিক কালো বউ ?
#লেখকঃ Md: Aslam Hossain Shovo
#পর্বঃ ১২…
√-হয়তো কোনোদিন দেখা হবে না।
আর আপনার গতকালের আনা গোলাপ ফুলটা আমি নিয়ে যাচ্ছি, খুব যত্নে রাখবো এই ফুলটা।
ভালো থাকবেন…
একজন অভাগী মেয়ে তুরী…”
লিখা গুলো পড়ে মাথায় হাত দিয়ে খাটের উপর বসে পড়লাম।
কি হলো এটা আমার সাথে!
যাকে মন থেকে ভালোবেসে ফেললাম, আর সেই আমায় ভুল বুঝে চলে গেলো। সব সময় এমন কেনো হয় আমার সাথে!
এখন আমার কি করা উচিত! তরীকে কি ফিরিয়ে আনতে যাবো, নাকি সে যে তাকে ফিরিয়ে আনতে মানা করছে এটা মেনে নিয়ে তাকে ভুলে যাবো। কিছু বুঝতে পারছি না। বার বার মনে হচ্ছে এই বুঝি তরী ফিরে এসেছে। কিন্তু দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি ততবারই তরী আসে নাই, আর মনের মধ্যে বড় একটা আঘাত পায়।
অনেকক্ষণ বসে থেকে চিন্তা করলাম আম্মুর কাছে গিয়ে বলি এখন কি করা উচিত। আম্মুর রুমে গিয়ে দেখি আম্মু আর আব্বু বসে তরীর বিষয়ে কথা বলছে। আমি গিয়ে বললাম ~
আমিঃ তাকে নিয়ে এতো আলোচনা করার কি আছে? তুমি গিয়ে কয়েকটা ধমক দিয়ে বাসায় নিয়ে আসো। তার সাহস হয় কিভাবে একা বাড়ি থেকে বের হওয়ার।
আম্মুঃ আমি যাবো কেনো আনতে? তুই তরীকে কষ্ট দিয়েছিস, এখন তুই গিয়ে নিয়ে আস..(রাগী ভাবে)
আমিঃ তোমরা আমায় ভুল বুঝছো আম্মু। আমি তরীকে বাড়ি ছেড়ে যেতে বলি নাই।
আম্মুঃ তুই যদি কিছু না বলে থাকিস, তাহলে গতকাল রাতে তরী কেনো কান্না করলো ও বাড়ি ছেড়ে বা কেনোই গেলো?
আমিঃ আসলে গতকাল রাতে তরীকে সাদিয়ার সব কথা বলছি। আর এটাও বলছি, তরীকে বিয়ে করার কারনে সাদিয়ার কাছে আমি হেরে গিয়েছি। তারপর থেকে নিজেকে স্বার্থপর ভেবে নিয়ে কান্না শুরু করলো তরী।
আব্বুঃ তুই আসলে একটা গাধা। বউয়ের কাছে অন্য মেয়ের গল্প করতে গিয়েছে গাধা একটা। যা এখন গিয়ে নিয়ে আস…
আমিঃ আমি নিয়ে আসবো.?
আম্মুঃ হ্যা, তুই নিয়ে আসবি। অবাক হওয়ার কি আছে?
আমিঃ আমি এখন কিভাবে তাদের বাড়ি যাবো, তারা কি আমায় দাওয়াত দিয়েছে নাকি?
আম্মুঃ হায়রে গাধা রে গাধা। বউ চলে গিয়েছে বাপের বাড়ি, আর এই ছেলে আছে দাওয়াতের আশায়। যা গিয়ে নিয়ে আস বউকে…
আমিঃ তারা কিছু মনে করবে না তো?
আম্মুঃ যাওয়ার সময় শ্বশুরবাড়ির জন্য বাজার করে নিয়ে যাস, তাহলে কেউ দেখলে মনে করবে দাওয়াত করছে বলেই গিয়েছিস।
আমিঃ আচ্ছা তাই করছি। আমার নাস্তা দেও। নাস্তা খেয়ে যাচ্ছি।
~ তারপর গোসল করে, নাস্তা করে তরীর বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম। প্রথমে বাজারে গিয়ে পোলার চাল,মুরগী, মাংস, মাছ, দই মিষ্টি নিয়ে নিলাম তরীদের বাসার জন্য। তারপর তরীদের বাড়ির উদ্দেশ্য আবার রওনা হলাম। ঘন্টা খানেক পর তরীদের বাসায় পৌঁছে গেলাম।
সব বাজার নিয়ে গেটের সাথে দাঁড়িয়ে গেটে শব্দ করলাম। কিছুক্ষণ পর তরী এসে গেট খুললো। আমায় দেখে তরী কিছুটা আবাক চোখে তাকিয়ে রইলো। আমি মুচকি একটা হাসি দিলাম। তরী যেনো আমার সুন্দর হাসির কোনো দামই দিলো না ~
তরীঃ আপনি আসছেন কেনো এখানে.?..(রাগী ভাবে)
আমিঃ আমি আসছি মানে? আমি আসবো না.?
তরীঃ না,আপনি আসবেন না।
আমিঃ আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই আমি এসেছি এবং আসবো।
তরীঃ না। এখান থেকে আপনি চলে যান বলছি..
আমিঃ চলে যাবো মানে? এটা আমার শ্বশুরবাড়ি।
তরীঃ না। এটা আপনার শ্বশুর বাড়ি না। আপনাকে আমি স্বামী হিসাবে মানি না। আপনাকে আমি স্বামীর অধিকার দিতে পারবো না।
~ মনে মনে বুঝতে পারছি, তরী এমন ব্যবহার করছে কেনো। যেনো তাকে রেখে আমি চলে যায় ও অন্য সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করি। কিন্তু আমার তো এখন সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করার ইচ্ছা আর নেই। আমি যে তাকেই ভালোবেসে ফেলছি ~
আমিঃ আমার কথা আমায় ফিরিয়ে দিচ্ছেন বুঝি?
তরীঃ মানে?
আমিঃ এতোদিন আমি বলতাম বউয়ের অধিকার দিবো না। আজ আপনি বলে দিলেন স্বামীর অধিকার দিবো না, হা হা…
তরীঃ আপনি যেটা ভাবেন, আমার সমস্যা নেই।
আমিঃ এখানে এসে আপনার চুল গুলোর কি অবস্থা হয়েছে আহারে। আমি এখুনি দোকান থেকে নারকেল তেল এনি দিচ্ছি, চুলে লাগিয়ে নিন কেমন..
তরীঃ ওই ঢং করেন বুঝি? আজ সকালে এখানে আসতে পারলাম না, আর চুল গুলো খারাপ হয়ে গিয়েছে।
আমিঃ ওহহ আপনি আজ সকালে এসেছেন নাকি? আমার তো মনে হচ্ছে কতদিন ধরে আপনাকে দেখি না।
তরীঃ নেকা…
আমিঃ হা হা হুম নেকা। তাই সরুন না কেনো? ভিতরে যায়…
তরীঃ বললাম না আপনাকে। আপনি ভিতরে যেতে পারবেন না।
আমিঃ যাবো মানে একশ বার যাবো। এটা আমার শ্বশুরবাড়ি।
তরীঃ কচুর বাড়ি। কিসের আপনার শ্বশুর বাড়ি এটা?
আমিঃ এটা আমার শ্বশুর বাড়ি। আমি এই বাড়ির ছোট জামাই… (হাসি দিয়ে)
তরীঃ হেএএএ…(অবাক হয়ে)
আমিঃ হেএএএ না হ্যা… এখন সামনে থেকে সরুন তো, বাড়ির ছোট জামাইকে বাড়িতে ঢুকতে দেন।
~ তরী অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। আমি সাইড দিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বাড়ির মধ্যে চলে গেলাম। গিয়ে বাজার গুলো শাশুড়ী আম্মার হাতে দিয়ে দিলাম। তোরা সালিকা এসে আমায় ঘরের মধ্যে নিয়ে বসতে দিলো। আমি বসে আছি, কিন্তু তরীর কোনো খবর নেই। তোরা নাস্তা দিচ্ছে আমার সামনে ~
আমিঃ আচ্ছা তোরা, তোমাদের বাসায় না একটা পেত্নী ছিলো, কোথায় সেই পেত্নী..
~ তরী দরজার আড়াল থেকে রুমের মধ্যে ঢুকলো ~
তরীঃ আমায় কিন্তু পেত্নী বলবেন না বলে দিলাম শুভ ভাইয়া…
আমিঃ দেখছো তোরা, পেত্নীর নাম নিতে নিতেই পেত্নী এসে হাজির।
~ তরী রাগে মুখ ফুলিয়ে রাখলো। তোরা হাসছে আমার কথা শোনে ~
তোরাঃ আপনাদের মধ্যে এমন কি হয়েছে দুলাভাই, যে বুবু ভোর বেলা চলে এসেছে?
আমিঃ আর বলো না গো সালিকা। আমাদের বাড়ি একটা পেত্নী ছিলো, হয়তো আমাদের বাড়িতে থেকে শান্তি পায় নাই, তাই তোমাদের বাড়ি এসে উঠেছে। আচ্ছা সেই পেত্নী তোমাদের বাড়ির কোন গাছের মাথায় উঠেছে?
তোরাঃ হি হি, তাল গাছের…
তরীঃ তোরা চুপ থাকবি তুই… (ধমক দিয়ে)
আমিঃ ওই আপনার তো সাহস কম না, আমার বউকে ধমক দেন..
তরীঃ কে আপনার বউ..?
আমিঃ এই তো যে আমায় নাস্তা দিচ্ছে সে।
তরীঃ থাকেন আপনার বউ নিয়ে। আমি যাচ্ছি…
~ বলে তরী রুম থেকে বের হতে লাগলো। আমি শাশুড়ীকে ডেকে আনালাম ~
আমিঃ আম্মা তরীকে একটু শরবত করে দিতে বলুন তো। শীতের দিনেও গরম লাগতে শুরু করছে তো।
~ আমি যে তরীকে রাগানোর জন্য শরবত করতে বলছি, শাশুড়ী আম্মা কিছুটা বুঝতে পারছে। সে তরীকে আমায় শরবত করে দিতে বলে চলে গেলো ~
তরীঃ আপনি তো ভারি খাদক। শ্বশুর বাড়ি এসে কেউ শরবত চেয়ে খায়..
আমিঃ হ্যা, আমি খায়।
তরীঃ আমি পারবো না শরবত করতে।
আমিঃ তাহলে কি আম্মাকে ডাক দিবো.?
তরীঃ বাসায় লেবু নেই।
আমিঃ আমি লেবু ছাড়ায় শরবত খাবো।
তরীঃ বাসায় চিনি নাই…
আমিঃ না থাক, আমি চিনিও ছাড়া শরবত খাবো।
তরীঃ আমাদের টিউবওয়েলের পানি ভালো না। হাতে পায়ে চুলকানি হয়…
আমিঃ হক, আমি সেটায় খাবো।
তরীঃ ছুছা…
আমিঃ ছুছার বউ ছুছি…
তরীঃ আমার বয়ে গিয়েছে আপনার বউ হতে..
~ এই বলে তরী শরবত করতে চলে গেলো। তোরাও নাস্তা সাজিয়ে দিয়ে রুম থেকে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর তরী শরবত করে নিয়ে এসে টেবিলের উপর রাখলো ~
আমিঃ ওখানে রাখলেন কেনো? হাতে দিন..
তরীঃ কেনো আপনি কি নিয়ে নিতে পারেন না?
আমিঃ না আমি পারি না। আপনি দিন।
~ তরী শরবতের গ্লাস আমার হাতে দিতে গেলেই তার হাত চেপে ধরলাম। তরী হাত মোচড়াতে শুরু করলো ছাড়ানোর জন্য ~
তরীঃ আমার হাত ছাড়ুন বলছি..
আমিঃ না ছাড়বো না।
তরীঃ নাহলে কিন্তু কামড় দিবো।
আমিঃ দেন তাহলে কামড়…
~ তরী তখন কামড় দিতে যায় আমার হাতে। আমি সরাসরি তার হাত ধরে টান দিয়ে বুকের মধ্যে এনে জোর করে জরিয়ে ধরি। তরী তো খিমচি দিতে লাগলো নিজেকে ছাড়াতে ~
আমিঃ নিজের বউকে নিজে জরিয়ে ধরছি, তাতে বউ এতো পাগলামি করছে কেনো?
তরীঃ আমি আপনার বউ না।
আমিঃ তাই নাকি? আচ্ছা দেখি তাহলে কে আমার বউ না…
~ এই বলে জোর করে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে কেবল মাত্র তার ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিল করে দিবো, এর মধ্যে তোরা এসে দরজার সামনে হাজির ~
তোরাঃ এখানে কি হচ্ছে গো দুলাভাই?
~ আমি তরীকে ছেড়ে দিলাম। তরী দূরে সরে গিয়ে শাড়ি ও মাথার চুল ঠিক করতে লাগলো ~
আমিঃ তুমি সালিকা আসার আর সময় পেলে না। তরী মেয়েটার থেকে মাত্র পেত্নীর ভর ছাড়াবো ভাবছি, আর তুমি চলে এলে।
তোরাঃ হি হি, ভালো করছি।
~ তরী আর তোরা দুই জনই রুম থেকে চলে গেলো। আমি নাস্তা করে বিশ্রাম নিয়ে নিলাম। দুপুরে শাশুড়ী আম্মা রান্না করলো পোলাও, মাংস। সেগুলো খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে আছি। তোরা এসে বার বার আমার খবর নিলেও তরীর খোঁজ নেই।
চোখে যখন ঘুম ঘুম ভাব এসেছে, হঠাৎ মনে হলো কে যেনো আমার হাত ধরে টান দিচ্ছে। আমি তোরা মনে করে ঘুরি তাকিয়ে দেখি তরী আমার হাত ধরে টান দিচ্ছে ~
আমিঃ কিছু বলবেন?
তরীঃ গতকাল রাতে আমার ব্যাগ থেকে একটা ডাইরি হারিয়ে গিয়েছে, আপনি কি জানেন সেটা কোথায় আছে?
আমিঃ আচ্ছা পরে মনে করে বলবো।
তরীঃ না, এখন বলুন প্লিজ।
আমিঃ তাহলে আমার কাছে আসুন..
তরীঃ কেনো যাবো আপনার কাছে?
আমিঃ কাছে আসুন, তারপর বলছি।
তরীঃ আপনার কাছে আমি যেতে পারবো না বললাম তো।
আমিঃ আসুন বলছি। আমার মাথা একটু ব্যাথা করছে। একটু তেল লাগিয়ে দিন কপালে আর মাথায়।
তরীঃ কেনো, আপনার বউ আছে তো তোরা। তাকে ডাক দিয়ে বলুন তেল মালিশ করে দিতে।
আমিঃ মেজাজ গরম করাবেন না বলে দিলাম। ভালোই কথায় কথায় তর্ক করা শিখে গিয়েছেন বেয়াদব মেয়েদের মত।
তরীঃ আচ্ছা তেল গরম করে নিয়ে আসছি।
~ তরী সরিষার তেল গরম করে একে খাটের উপর উঠে আমার মাথার পাশে বসে কপালে তেল লাগাতে লাগলো ~
আমিঃ আচ্ছা তরী ম্যাডাম, আপনি এই ভাবে সকাল বেলা আমায় না বলে চলে আসলেন কেনো?
তরীঃ থাক না সেই সব কথা।
আমিঃ কেনো থাকবে? বলুন সকাল বেলা এই ভাবে চলে আসা কি ঠিক হয়েছে?
তরীঃ হয়তো ঠিক হয় নাই। কিন্তু আসতে বাধ্য হয়েছি আপনার ভালোর জন্য।
আমিঃ আমার ভালোর জন্য মানে?
তরীঃ আমার জন্য আপনি কারো কাছে হেরে যাবেন এটা আমার কাছে খুব খারাপ লাগে। এখন আমি চলে এসেছি, আপনি সুন্দরী একটা মেয়ে বিয়ে করে দেখিয়ে দিবেন আপনি ও কম নন তার থেকে।
আমিঃ আমি কি একবারো বলছি নাকি আমি এখনো সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করতে চাই?
তরীঃ আপনি বলেন নাই। কিন্তু আপনার মনে কি আছে আমি সেটা বুঝতে পারি।
আমিঃ আপনি একটু বেশি বুঝা শুরু করছেন। এতো বুঝা ভালো না কিন্তু বলে দিলাম।
তরীঃ ওহহ তাই?
আমিঃ জি তাই। এতো যখন বুঝেন, তাহলে বলুন তো এখন আমার মন কি চাচ্ছে…
তরীঃ আপনার মন বলছে আজ খাওয়া দাওয়া একটু বেশিই হয়ে গিয়েছে, হি হি…
আমিঃ একদম ভুল উত্তর। আমার মন এখন আরো কিছু খেতে চাচ্ছে…
তরীঃ মানে?
~ তরী মানে বলার সাথে সাথে এক ঝাপটায় তাকে জোর করে জরিয়ে ধরে খাটের উপর শুইয়ে দিলাম। সে তো ঠেলে আমায় সরিয়ে দিতে শুরু করলো। সে যত দূরে সরাতে চেষ্টা করলো, আমি তত তার কাছে গেলাম। তার বুকের উপর আমি শুয়ে তাকে আমার বুকের মধ্যে নিয়ে গেলাম ~
তরীঃ কি করছেন এগুলো?
আমিঃ এখন তো আরো কিছু করবো..(হাসি দিয়ে)
তরীঃ মানে…
~ আমি কিস করার জন্য মুখ এগিয়ে নিতে লাগলাম। তরী বুঝতে পেরে যে আমি তাকে চুমু দিবো, আমার মাথার চুল গুলো ধরে টেনে সরাতে চেষ্টা করায় আমার চুলে খুব ব্যাথা লাগতে লাগলো । তারপরের তার কানের কাছে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে ঠোঁট মিল করে দিলাম।
প্রথম ২/১ মিনিট আমাকে তরী সরিয়ে দিতে অনেক চেষ্টা করলেও, পরে খেয়াল করলাম তার হাত থেকে আমার চুল ছেড়ে দিয়ে আমার গলা জরিয়ে ধরে সে চুমু উপভোগ করছে। আমিও সাথে চুমু দিয়েই যাচ্ছি।
প্রায় ৫-৬ মিনিট পর শুনতে পেলাম কেউ একজন বলছে, “আর কতক্ষণ লাগবে, হবে না শেষ”
আমি তরীর ঠোঁটের থেকে ঠোঁট সরিয়ে দিয়ে তরীর মুখের দিকে তাকালাম, তাহলে কি তরী বললো এই কথা। কিন্তু না, তরী আমার দিকে হা করে তাকিয়ে হাঁপাচ্ছে একটু একটু। তাহলে হয়তো ভুল শুনেছি এই ভেবে আবার ঠোঁট মিল করতে যাবো, এর মধ্যে তরী দিলো আমার পেটে জোরে একটা চিমটি ~
আমিঃ ওয়ুফ.. চিমটি কাটলেন কেনো?
তরীঃ আপনি দেখেন না তোরা এসে সব দেখছে…(রাগী ভাবে)
~ পিছনে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি তোরা হি হি করে হাসছে ~
আমিঃ তুমি সালিকা আর আসার টাইম পেলে না।
তোরাঃ আর কতক্ষণ লাগবে গো দুলাভাই?
আমিঃ চুপ একদম। সব কিছু নষ্ট করে দিয়ে এখন বলছে কতক্ষণ আর…
তোরাঃ হি হি..
আমিঃ তাই কিছু বলবে আমায় নাকি তোমার বুবুকে…
তোরাঃ কিছু বলবো না। মাত্র দেখতে এলাম আপনারা কি করেন…(হাসি দিয়ে)
আমিঃ তুমি আর আসার টাইম পেলে না দেখতে..
তোরাঃ আমি গেলে তো আসার টাইম পাবো..(হেসে)
আমিঃ মানে? তুমি কই ছিলে?
তোরাঃ আমি তো একটু জানি, নতুন বিয়ে হলে স্বামী স্ত্রী এক সাথে থাকলে ওখানে তখন মিষ্টি বেচা কেনা হয় আরকি। তাই তো দরজার পাশে লুকিয়ে ছিলাম, কখন আপনাদের মিষ্টি বিক্রি হবে তাই দেখতে… (হাসি দিয়ে)
আমিঃ দেখছেন তরী ম্যাডাম, আপনার বোন কত পেকে গিয়েছে।
তরীঃ ঠিক বলেছেন শুভ ভাইয়া, খুব পেকে গিয়েছে তোরা। একটা ছেলে খুঁজে ওকে বিয়ে দিয়ে দেন তো।
আমিঃ তাই তো করতে হবে মনে হচ্ছে।
তোরাঃ বিয়ের কথা শোনে আমার খুব লজ্জা লাগছে কিন্তু বুবু…
আমিঃ আপনার বোন দেখি ঢং ও করতে পারে তরী ম্যাডাম।
তোরাঃ হুম পারি তো। আচ্ছা আমি তাহলে এখন আসি কেমন। আর হ্যা, দরজা আটকিয়ে যাচ্ছি ওকে। আর কিছু দেখবো না…
~ বলে তোরা দরজা লাগিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেলো। তরীকে বুকের মধ্যে নিয়ে তার চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম আমি ~
আমিঃ তাই আবার একটু মিষ্টি আদর হয়ে যাক?
তরীঃ না, একদম না।
আমিঃ কেনো, আমার তো ইচ্ছা এখন সব রকমের আদর করবো।
তরীঃ না। আপনি এটা করবেন না ও করার চেষ্টাও করবেন না।
আমিঃ কেনো?
তরীঃ আমি বুঝতে পারছি গতকাল হয়তো ডাইরি টা আপনি নিজে নিয়েছেন সাথে পড়েছেন। এই জন্য ডাইরির কথা গুলো পড়ে আজ আমার উপর দরত করছেন আপনি তাই না?
আমিঃ আবার ভুল বুঝছেন আমায়…
তরীঃ আচ্ছা তাহলে যতদিন না পর্যন্ত আমার কাছে মনে হবে না, আপনি আমায় মন থেকে ভালোবেসে স্ত্রীর অধিকার দিচ্ছেন, ততদিন আপনি আমায় কেনো আদর করবেন না ও আমার থেকে কোনো আদর পাবেন না ওকে…
আমিঃ যদি জোর করে নিতে চেষ্টা করি…
তরীঃ তাহলে আপনি কাপুরষ হবেন।
আমিঃ স্বামী আবার কাপুরষ হয় নাকি?
তরীঃ হ্যা হয়। স্বামীর উচিত কি জানেন, তার বউকে তার ভালোবাসা দিয়ে আদর করা তাই না?
আমিঃ হুমম।
তরীঃ সেই জন্য আমিও তাই বলছি। যেই দিন আপনার চোখ দেখে ও ব্যবহারে মনে হবে আপনি আমার উপর দরত নয়, সত্যি সত্যি ভালোবেসে ফেলছেন, সেই দিন আমি নিজে আপনাকে আদর করার অনুমতি দিবো ও আদরও করবো। তার আগে জোর করে আদর করতে গেলে ভাববো আপনি কাপুরষ।
আমিঃ ওহহ কিছুটা বুঝতে পারছি। আচ্ছা তাই হবে, আপনি ম্যাডাম খুব তাড়াতাড়ি প্রমাণ পেয়ে যাবেন আমি আপনাকে কতটা ভালোবাসি।
তরীঃ হুমম অপেক্ষায় রইলাম।
আমিঃ তাই এখন কি করবো…
তরীঃ কিছু না। আমি রেডী হয়ে নিচ্ছি বাসায় যাওয়ার জন্য।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে তাড়াতাড়ি করুন। সন্ধ্যার আগে যেনো পৌঁছাতে পারি।
তরীঃ আচ্ছা।
~ তরীর মা-বাবার কাছে বিদায় নিয়ে আমাদের বাসায় উদ্দেশ্য রওনা হলাম। প্রায় ১ ঘন্টা পর আমাদের এলাকায় পৌঁছালাম। ফ্লেক্সিলড করাতে হবে তাই এলাকার একটা দোকানের সামনে রিক্সা দাঁড়া করাতে বললাম। তরীকে রিক্সায় রেখে আমি নিচে নেমে দোকানের মধ্যে গেলাম নাম্বার ও টাকা দিতে। হঠাৎ চোখ গেলো দোকানের বিপরীত পাশে রাস্তার অপর পাশে সাদিয়া ও তার এক বান্ধবী দাঁড়িয়ে তরীর দিকে খারাপ ভাবে তাকিয়ে আছে।
আমি তাড়াতাড়ি নাম্বার লিখে দিয়ে রিক্সার কাছে আসতেই সাদিয়া জোরে জোরে বলতে শুরু করলো, “দেখ মিম দেখ, এই যুগের ছেলেদের কি চয়েস। কালা কালা পেত্নীও নিয়ে ঘুরতে বের হই। দেখলে আমার বমি আছে”
সাদিয়ার এমন বাজে কথায় মেজাজ গেলো গরম হয়ে। আমার সামনে তরীকে এমন কথা বলছে, তাহলে সেই দিন আমি না থাকায় কতটা বাজে ভাবে অপমান করছিলো, এমন ভেবে রাগে আমার শরীর ভুলে যাচ্ছে। আমার যে প্রচুর রাগ উঠেছে, তরী সেটা বুঝতে পেরে বার বার আমায় বলছে আমি যেনো সাদিয়ার কোনো কথায় উত্তর না দেয় এবং তাড়াতাড়ি রিক্সায় উঠে বসি।
কে শোনে কার কথা, উত্তর তো একটা দিতেই হবে।
আমি দোকানের মধ্যে বসে থাকা নাঈমকে ডাক দিলাম ~
আমিঃ নাঈম দোস্ত…
নাঈমঃ হ্যা দোস্ত বল..
আমিঃ পৃথিবীতে সব থেকে অসুন্দর মেয়ে নিয়েও ঘুরতে বের হওয়া যায়। কিন্তু কাদের নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া যায় না বল তো? তাহলে ইজ্জত থাকে না…
নাঈমঃ কাদের..?. (হাসি দিয়ে)
আমিঃ চরিত্রহীন, নষ্টা মেয়েদের নিয়ে। কেউ যদি তাদের সাথে দেখে তাহলে বলবে নষ্টা মেয়ের স্বামী। ইজ্জত কি থাকবে বল… (জোরে করে)
নাঈমঃ আরে দোস্ত, চরিত্রহীনদের আবার কোনো ক্লাস থাকে নাকি, তারা হলো র্থাড ক্লাস লোকজন… (হাসি দিয়ে)
আমিঃ বাংলায় কিন্তু আরেকটি কথাও বলে তাদের, না থাক বললাম না। বুঝে নিস…. (হাসি দিয়ে)
নাঈমঃ হা হা, বুঝতে পারছি…
~ সাদিয়া মুখ কালো করে চলে গেলো। কাউকে ছোট করতে গেলো মাঝে মাঝে এমন নিজেও যে ছোট হয়ে যায় কিছু লোক সেটা বুঝে না।
আমি রিক্সায় উঠতে তরী বললো ~
তরীঃ আপনি সাদিয়াকে এই ভাবে কথা শোনালেন কেনো?
আমিঃ আমার বউকে অপমান করতে আসছিলো, উল্টো অপমান হয়ে গেলো আরকি।
তরীঃ আপনি পারেন ও বটে…
আমিঃ হুম খুব পারি। দেখবে…
তরীঃ কিভাবে?
আমিঃ বাসায় চলো, আর রাতে দেখাবো…(হাসি দিয়ে)
তরীঃ একদম চুপ থাকেন তো..(হাসি দিয়ে)
~ তারপর বাসায় চলে এলাম। এই ভাবে তরীর সাথে খুনসুটি, দুষ্টুমি করে আরো ১৫ দিন চলে গেলো। তরী যেহেতু বলছে তাকে আগে প্রমাণ দিতে হবে, তার প্রতি আমি দরত নয় বরং ভালোবেসে তাকে আপন করে পেতে চাই, তাই আমিও এই ১৫ দিন তার থেকে দূরে দূরে রইলাম। এমন একটা দিনের অপেক্ষা করছিলাম যেনো তাকে আমি আমার ভালোবাসার কথা তাকে জানাতে পারি।
তেমনি একটা দিন পেয়ে গেলাম এই ১৫ দিন পর………….. (..#চলবে..)