#গল্পঃ রোমান্টিক কালো বউ ?
#লেখকঃ Md: Aslam Hossain Shovo
#পর্বঃ ৫…
√-প্রায় এক ঘন্টা হয়ে গিয়েছে তরী ঘুমিয়েছে। তাহলে কি এখন দেখবো নাকি তরীর পিঠে সত্যি পোড়া দাগ আছে কিনা!
তোরা যেমন দুষ্টু মেয়ে, আমায় আবার মিথ্যা মিথ্যা সব বানিয়ে বললো না তো। একবার কি দেখা উচিত কিনা!
কিন্তু কেমন যেনো একটা লাগছে, হঠাৎ যদি তরীর ঘুম ভেঙ্গে যায়, তাহলে তো খুব লজ্জার মধ্যে পড়তে হবে। সারাদিন তাকে আমি ধমক দেই, আর এখন যদি দেখে রাতে ঘুমানোর পর তার শরীরে হাত দিয়েছি তাহলে তো নিশ্চিত আমায় ১ নাম্বার লুচ্চা ভাববে। ইজ্জত বলতে কিছু থাকবে না।
আবার মনে হচ্ছে, দেখলে দেখবে তাতে আমার কি! হয়তো বউ হিসাবে মানি না, কিন্তু আমি তো তার স্বামী। আর স্বামীর জন্য তো এই টুকু অধিকার আছেই। যদিও তরীর ঘুম ভেঙ্গে যায় তাহলে সব বলে দিবো।
এই সব ভাবছি আর তরীর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। তরী গভীর ঘুমে আছন্ন হয়ে আছে। তরী অন্য দিকে কাথ হয়ে শুয়ে থাকায়, তার পিছনে শুয়ে আস্তে আস্তে ব্লাউজের হুক গুলো খুলে ফেললাম। পিঠ থেকে ব্লাউজের কাপড় সরাতেই চমকে উঠলাম খুব।
পিঠের মাঝ খাটে দুই ইঞ্চি জায়গায় এমন ভাবে পোড়ে গিয়েছে, এখনো স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে ওখানে পোড়ে ঘা হয়ে গিয়েছিলো। এখনো কালো দাগ হয়ে আছে। দুই বছর আগে এমন হলেও মাংস এখনো সমান হয় নাই। এখনো জায়গাটা ক্ষত হয়ে আছে। ওমন দেখে বুকের মধ্যে কেঁপে উঠলো। আমি তাড়াতাড়ি ব্লাউজের হুক গুলো লাগিয়ে অন্য দিকে মুখ করে ঘুরে গেলাম।
মনে মনে একটা কথা ভাবছি, একটা মেয়ে কালো বলে এতো কষ্ট হয় জীবনে। আর আমার সাথে সাদিয়া একটু বেইমানি করছে বলে আমি নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে দুঃখী মানুষ ভেবে ঘর কোনে হয়ে মন খারাপ করে থাকতাম।
আর তরী ছোট বেলা থেকে এতো কষ্ট সহ্য করেও সবার সাথে হেসে এমন ভাবে কথা বলে তার কোনো কষ্টই নেয়।
এই পিঠে যখন পোড়ে যায় হয়তো কতটা কষ্ট হয়েছে, হয়তো কাউকে বলতেও পারে নাই তার কষ্টের কথা। হয়তো সব চোখ বুঝে সহ্য করে নিয়েছে। ওষুধ লাগালে তো ওমন থাকার কথা না। হয়তো যতদিন ওখানে ঘা কাঁচা ছিলো, ততদিনেই পোড়া জ্বালা সহ্য করতে হয়েছে। এমন কথা গুলো ভাবছি, সাথে সব কল্পনা করায় চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।
তরীর দিকে তাকিয়ে দেখি মুখে হাসি হাসি একটা ভাব নিয়ে ঘুমিয়ে আছে। খুব মায়া লাগছিলো তরীর জন্য। মন চাচ্ছিল দুই হাত দিয়ে কাছে টেনে এনে বুকের সাথে মিশিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরে থাকি। মন চাচ্ছিল এমন ভাবে আপন করে নেন, যেনো সে আমার শরীরের মধ্যে আমার একটা শরীরের অংশ হয়ে যাক। কেনো যে এতো মায়া লাগছে, শুধু ইচ্ছা হচ্ছে তার দুঃখের সাথী হয়ে তার জীবনে সুখ এনে দিই, খুব কষ্ট হচ্ছিল তরীর জন্য।
হয়তো কেনোদিন তাকে স্ত্রীর অধিকার দিতে পারবো না, কিন্তু তাকে আর সাধারণ কারনে তার সাথে বাজে ব্যবহার করবো না এমন চিন্তা করতে করতে তরীর মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দিলাম। তরী নরাচরা করে আমার দিকে ঘুরে শুইলো। তরীর মুখটা আমার খুব কাছে চলে এসেছে। ইচ্ছা হচ্ছে কপালে একটা চুমু দেয়। অনেক বার দিতে গিয়েও আর সাহস হলো না। পরে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে চলে গেলাম ওখানের বড় বাজারে। সকাল ৯ টার দিকে তরী ফোন করলো আমায় তাদের বাসায় না পেয়ে ~
তরীঃ শুভ ভাইয়া আপনি কি চলে গিয়েছেন নাকি বাসায়..?
আমিঃ না তো। একটু বাইরে আসছি একটা প্রয়োজনে।
তরীঃ আপনাকে বাসায় না পেয়ে মনে করছি আপনি চলে গিয়েছেন। আচ্ছা আপনি এখন কোথায়.?
আমিঃ আমি একটু বড় বাজার এসেছি। ১০ মিনিটের মধ্যে আসছি বাসায় অপেক্ষা করুন।
~ ফোন কেটে দিয়ে বাসায় চলে গেলাম। গিয়ে দেখি তরী ভেজা চুলে তোয়ালে পেচিয়ে আছে ~
আমিঃ আপনার চুল ভেজা কেনো.?
তরীঃ মাত্র গোসত করছি আমি।
আমিঃ ভালো হয়েছে। এই নিন ওই ওষুধটা এখন যেহেতু গোসল করছেন, তাই এখুনি ওই পোড়া জায়গায় লাগিয়ে দেন, সব পোড়া কালো দাগ উঠে যাবে।
~ পকেট থেকে একটা মলম বের করে খাটের উপর রাখলাম। এই মলম আনতেই সকালে বড় বাজার গিয়েছিলাম। এটা লাগালে পোড়া কালো দাগ উঠে সেরে যায় ~
তরীঃ পোড়া দাগ মানে.??
আমিঃ আপনার পিঠে যেখানে পোড়ে গিয়েছিলো সেখানে লাগিয়ে নিন। কয়েকদিনের মধ্যে সব দাগ উঠে যাবে। সব সময় গোসল করে লাগাবেন।
তরীঃ ইয়ে মানে, আপনি জানলেন কিভাবে আমার পিঠে দাগ আছে.?..(অবাক হয়ে)
আমিঃ তোরা আমায় সব বলছে।
তরীঃ ওহহ। ছাড়ুন তো তোরার কথা। ও হয়তো একটু বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছে। আরো কত বছর আগে দাগ ছিলো। এখন আর নেই…
আমিঃ ওই কালো দাগ উঠে নাই এখনো। আমি নিজের চোখে দেখছি।
~ তরী হা করে তাকিয়ে আছে। আমি একটা ছোট করে কাশি দিলাম ~
আমিঃ কি হলো, ওই ভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো। আমি শুধু পিঠের ওই দাগ দেখছি, আর কিছু না। যান ওষুধটা লাগিয়ে নিন।
~ “আচ্ছা” বলে তরী চলে গেলো বাইরে। কিছুক্ষণ পর তরী আবার রুমে এসে চুল আঁচড়াতে লাগলো ~
আমিঃ লাগিয়েছেন ওষুধ..?
তরীঃ ইয়ে মানে…
আমিঃ তারমানে আমার কথা মানলেন না। নিশ্চয়ই লাগান নাই ওষুধ।
তরীঃ আসলে তোরা তো কোচিং গিয়েছে, আর মা রান্না করছে, ওখানে তো না দেখে ওষুধ লাগানো সম্ভব না। তাই কেউ ফ্রী হলে তারপর তাকে দিয়ে লাগিয়ে নিবো।
আমিঃ পরে না। ওই ওষুধের নিয়ম গোসল করার পরেই লাগাতে হবে, ঘেমে গেলে ওষুধে কাজ হবে না। এখুনি লাগিয়ে নিন, ভালো হবে।
তরীঃ কিন্তু কিভাবে যে….
আমিঃ কিছু মনে না করলে আমি একটা কথা বলবো.??
তরীঃ হুমম বলুন…
আমিঃ আমি কি লাগিয়ে দিতে পারি আপনার পিঠে মলম..?
তরীঃ ইয়ে মানে, আপনি দিবেন.??(অবাক হয়ে)
আমিঃ আপনি যদি বলেন, তাহলে আমি দিতে পারি।
তরীঃ কিন্তু…
আমিঃ কিন্তু বলতে কিছু নেই, বিশ্বাস রাখতে পারেন আমার উপর।
তরীঃ কিন্তু আপনার কাছে গেলে আপনি ধমক দিবেন না তো..
আমিঃ হা হা, ধমক দিলে বুঝি অনেক ভয় লাগে…
তরীঃ একটু একটু…
আমিঃ আচ্ছা দিবো না, আসুন…
~ আমি খাটের উপর বসে ছিলাম। তরী গিয়ে আমার দিকে পিঠ করে বসে পিঠ থেকে সব চুল সামনে নিয়ে গেলো। আমি ব্লাউজের হুক গুলো খুলে পোড়া জায়গায় ওষুধ লাগিয়ে দিলাম। আমার প্রতিটা ছোঁয়াতে তরী কেপে কেঁপে উঠছিলো। তাই বেশি সময় না নিয়ে দ্রুত ওষুধ লাগিয়ে দিলাম।
সালিকা আসার পর আমি, তরী ও সালিকা লুডু খেলে সময় পার করলাম। সাথে সালিকার থেকে তার বয়ফ্রেন্ডের গল্প শুনলাম। দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে বিশ্রাম নিলাম।
তরী কিছুটা অবাক হচ্ছে ওর মুখ দেখে বুঝতে পারছি, কারন আমি এসেই চলে যাওয়ার জন্য জেদ করছিলাম, আর এখন দুই দিন হয়ে যাচ্ছে যাওয়ার নাম নেই। তার চেয়ে বড় কথা, আল্লাহ জানে সে আবার তার বোনকে নিয়ে আমায় আবার সন্দেহ করছে কিনা!
সালিকার থেকে জানতে পারলাম পাশের গ্রামে মেলা হচ্ছে। সালিকার কাছে বললাম, তার বোন তাকে নিয়ে আমায় সন্দেহ করে। সালিকা তো হেসে গলে পড়ে যাচ্ছে, এমন অবস্থা। তোরা বললো, তার বুবু নাকি আমায় ভালোবেসে ফেলছে, তাই আমায় নিয়ে সবার সাথে হিংসা শুরু করছে। এই কারনে একটু সন্দেহও শুরু করছে।
সালিকা কে আমার সাথে মেলায় যাওয়ার কথা বলবো, তার আর উপায় নেই। এমনিতে তরী আমায় সন্দেহ করে, তারপর আবার বোন নিয়ে মেলায় গেলে নিশ্চিত আরো সন্দেহ করবে।
-বিকাল বেলা তরীকে ডেকে বললাম,
আমিঃ আপনি কি ওই গ্রামের মেলায় যান…
তরীঃ ছোটবেলায় একবার গিয়েছিলাম।
আমিঃ বড় হয়ে তারপর আর যান নাই কেনো.?
তরীঃ আসলে আমায় নিয়ে যাওয়ার কেউ ছিলো না।
আমিঃ আমি নিয়ে গেলে আমার সাথে যাবেন.?
তরীঃ আপনি আমায় মেলায় নিয়ে যাবেন.(অবাক হয়ে)
আমিঃ আপনি আমার সাথে যেতে চাইলে অবশ্যই নিয়ে যাবো।
তরীঃ আচ্ছা ভাইয়া, আপনি হঠাৎ আমার সাথে এমন সুন্দর ব্যবহার করছেন আমার বোনকে পাওয়ার জন্য তাই না!
~ বউয়ের মুখে এমন সন্দেহ করার কথা শুনলে কার না মেজাজ গরম হয়। আমারও মেজাজ গরম হয়ে গেলো ~
আমিঃ আপনি আবার আমায় সন্দেহ করছেন আপনার বোনকে নিয়ে, কত বড় সাহস আপনার। দিবো না আপনার কানের নিচে এমন একটা, তারপর বুঝবেন.. (রাগ হয়ে)
~ তরী চুপ ~
আমিঃ যান তাড়াতাড়ি রেডী হন। আর বোরকা পরে নিবেন কিন্তু। শুধু শাড়ি পড়ে কোথাও কখনো যাবেন না।
~ তরী আমার কথা মতো রেডী হয়ে আসলো। তরীকে নিয়ে মেলায় গেলাম। গ্রামের মেলা, ৩০-৩৫ টা দোকান উঠেছে। তরীকে নাগরদোলাতে চড়তে বললাম, কিন্তু ভয়ে উঠলো না। সত্যি বলতে আমি নিজেই অনেক ভয় পায় নাগরদোলাতে। চটপটি ফুচকা ও মিষ্টি খেলাম আমি আর তরী। অনেক খুশি হয়েছে মেলায় আসাতে তরী । একটু লজ্জাও পাচ্ছে আমার সাথে মিশে চলাচল করায়। প্রায় ১ ঘন্টা ঘুরাঘুরি করলাম মেলার মধ্যে ~
আমিঃ আপনি কি কি নিবেন বলুন..?
তরীঃ কিছু না।
আমিঃ কিছুই যখন নিবেন না তাহলে আমায় মেলায় আনলেন কেনো.?
তরীঃ আপনি তো আমায় নিয়ে আসলেন। আমি আবার কখন আপনাকে আনলাম।
আমিঃ মেলায় এলে কিছু কিনতে হয় আপনি জানেন না। তর্ক না করে বলুন কি লাগবে.?
~ তরী কিছুক্ষণ চুপ থেকে ~
তরীঃ চুড়ি…
আমিঃ আর কিছু…?
তরীঃ না।
~ তারপর একটা দোকানে গিয়ে তার পছন্দ মত চুড়ি, সাথে আমার পছন্দ মত তার জন্য এবং সালিকার জন্য কানের দুল কিনলাম।
দোকান থেকে বের হয়ে তরীর হাত ধরে একটু খালি জায়গায় নিয়ে গেলাম। যখন তরীর হাত ধরে হাঁটছিলাম তরী খুব লজ্জা পাচ্ছিল। তাকে খালি জায়গায় রেখে তাড়াতাড়ি আবার দোকানে এসে কিছুক্ষণ আগে একটা সুন্দর নুপুর দেখছিলাম, ওটা কিনে নিয়ে পকেটে রেখে দিলাম যেনো তরী না বুঝতে পারে।
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে গিয়ে শুয়ে আছি। পাশের রুমে তোরা আর তরী গল্প করছে সব শোনতে পাওয়া যাচ্ছে। আমি তরীকে নিয়ে মেলায় গিয়েছি বলে তরী অনেক খুশি হয়েছে, এমন গল্প করছে তরী।
কিছুক্ষণ পর তোরা আমার রুমে এলো-
তোরাঃ ধন্যবাদ দুলাভাই।
আমিঃ ধন্যবাদ কেনো.??
তোরাঃ তুরী বুবুকে মেলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য।
আমিঃ এই টুকুর জন্য আবার ধন্যবাদ দিতে হয় নাকি.?.(হাসি দিয়ে)
তোরাঃ এই টুকুই বুবুর কাছে অনেক কিছু বুঝলেন দুলাভাই। বুবুর অনেক ইচ্ছা ছিলো মেলায় যাবে, সেই স্বপ্ন আপনি পূরণ করছেন, এই জন্য আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমিঃ শুধু ধন্যবাদ দিলে হবে না। কথা দিতে হবে আমার ছোট বউ হবে তো.. (মজা করে)
তোরাঃ হবো গো দুলাভাই হবো। আমিই তোমার ছোট বউ হবো। মানে বুবুর সতীন, হি হি…
~ ঠিক সেই সময় তরী রুমে চলে এলো। তরী সব শুনতে পেয়ে মুখ কালো করে তাকিয়ে থেকে আমার দিকে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। এমনিতেই তরী তোরাকে নিয়ে আমায় সন্দেহ করে, তারপর আবার এই কান্ড। কপাল খারাপ হলে যা হয় আরকি।
রাতে আর তরী আমার সাথে কথা বললো না। চুপচাপ এসে আমার পাশে ঘুমিয়ে পড়লো। অনেক রাত পর্যন্ত ফেসবুক দেখে ঘুমানোর আগে চিন্তা করলাম তরীকে সারপ্রাইজ দিবো। নতুন নুপুর নিয়ে তরীর পা থেকে লেপ কাপড় সরিয়ে দিয়ে নিজের হাতে নুপুর পড়িয়ে দিলাম।
যখন আবার ওর পাশে এসে শুলাম, মনে চাচ্ছিল তরীকে বুকের মধ্যে জরিয়ে ধরি। কেমন যেনো খুব মায়া লাগতে শুরু করছে ওর জন্য। তরীকে দেখি ঘুমের মধ্যে মুচকি হাসি দিচ্ছে, হয়তো ভালো কোনো স্বপ্ন দেখছে।
হাসিটা খুব মিষ্টি লাগছে…
আমি তরীর চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে কপালে একটা চুমু দিলাম সাহস করে। তারপর আমিও ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে টেবিলে বসে আছি। তরী নাস্তা দিচ্ছে আর বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে ~
আমিঃ কিছু বলবেন?
তরীঃ Thanks…
আমিঃ Thanks কেনো..?
তরীঃ নুপুর গিফট করা ও সাথে পড়িয়ে দেওয়ার জন্য.. (হাসি দিয়ে)
আমিঃ আপনি জানলেন কিভাবে? তাহলে কি আপনি তখন জেগে ছিলেন ?(অবাক হয়ে)
তরীঃ হুমম..(লজ্জা পেয়ে)
আমিঃ নুপুর পড়িয়ে দেওয়ার পরে যা কিছু হয়েছে, সেটাও কি বুঝতে পারছেন? (অবাক হয়ে)
তরীঃ হ্যা, বুঝতে পারছি।
আমিঃ কি হয়েছে বলুন তো..?
~ তরী মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো। তাহলে গতকাল রাতে যখন তরীর পায়ে নুপুর পড়িয়ে দিচ্ছিলাম, সাথে কপালে চুমু দিয়েছি সব বুঝতে পারছে। কত বড় পাজি মেয়ে, এমন ভাবে ছিলো মনে হয় ঘুমিয়ে আছে। এরপর থেকে তার থেকে দূরে দূরে থাকতে হবে, নাহলে কবে কোন বড় ধরনের লজ্জায় পাবো ঠিক নেই।
আমার খাওয়া দাওয়া শেষ হলে তরী এঁটে থালাবাসন নিয়ে যাচ্ছে আমার সামনে থেকে ~
আমিঃ আপনি তাড়াতাড়ি রেডী হয়ে নিবেন কেমন।
তরীঃ কেনো.?
আমিঃ বাপের বাড়ি থেকে বুঝি আর যেতে হবে না,কতদিন আর থাকবেন,শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা নেই বুঝি..?
তরীঃ আপনি আমায় নিয়ে যাবেন.?
আমিঃ আমি নিবো না, তাহলে কি অন্য কেউ আসবে নাকি আপনাকে নিতে..?..(ধমক দিয়ে)
তরীঃ সত্যি বলতে আমিতো ভাবছিলাম আপনি আমায় এখানে আজীবনের জন্য ফেলে চলে যাবেন। আর কখনো আপনাদের বাসায় আমায় নিবেন না.. (মাথা নিচু করে)
আমিঃ এতো বেশি বুঝা ভালো না। এখনো আপনি আমার স্ত্রী। যতক্ষণ আমার স্ত্রী আছেন, ততক্ষণ তো আমাদের বাড়িতেই থাকবেন। যান তাড়াতাড়ি রেডী হন…
~ তরী খুশি হয়ে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে আসলো। হাসিখুশি ভাবে শ্বশুর বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে আমাদের বাড়ি চলে এলাম।
বাসায় এসে শুরু হলো নতুন ঝামেলা। ছোট বোন তরীর পায়ে নতুন নুপুর দেখে সারা বাড়ি চিৎকার করে মাথায় করে নিলো। ভাবির নতুন নুপুর পায়ে, তার নুপুর কই। আমার কানের কাছে এসে ঘ্যান ঘ্যান করে মাথা ব্যাথা করিয়ে দিলো। শেষে মায়াকে সান্ত্বনা দিলাম বিকালে বাসায় এসে তরী ও তাকে এই মডেলের নতুন নুপুর কিনে দিবো মার্কেটে নিয়ে দুইজনকে।
আমি কাজে চলে গেলাম। সারাদিন কাজ করে বাসায় ফিরে দেখি তরী মুখ খারাপ করে বসে আছি। আমিতো ভাবছি আরো খুশি মনে থাকবে, কিন্তু আরো উল্টো মন খারাপ করে আছে ~
আমিঃ কি হয়েছে? মন খারাপ কেনো..
তরীঃ এমনি।
আমিঃ এমনিতো মন খারাপ হওয়ার কথা না। কি হয়েছে বলুন…
তরীঃ এমনি। কিছু হয় নাই।
আমিঃ মেজাজ গরম করবেন না। বলতে বলছি বলুন.. (ধমক দিয়ে)
তরীঃ সাদিয়া ফোন করছিলো বাসার নাম্বারে।
আমিঃ কি বলছে সাদিয়া…
তরীঃ আমি বলতে পারবো না..
~ তরীর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে ~
আমিঃ আপনি কান্না করছেন কেনো? কি বলছে সাদিয়া বলুন…
তরীঃ আমি বলতে পারবো না।
~ বলে তরী চোখের পানি মুছতে মুছতে রুম থেকে বের হয়ে যেতে লাগলো ~
আমিঃ……………… (..#চলবে..)