#রূপবানের_শ্যামবতী
#৮ম_পর্ব
#এম_এ_নিশী
বিয়ে বাড়ির পরিবেশ এখন বেশ রমরমা। একটু পরই বরযাত্রীরা চলে আসবে। সকাল থেকে কাজের চাপে থাকাই তৈরি হওয়ার সময়টুকুও পায়নি অরুনিকা। তাই জলদি জলদি হাতের কাজ সেরে তৈরি হতে গিয়েছে সে। খুবই সাধারণ সাজ। খুব বেশি সময় লাগেনি। তাড়াহুড়ো করে ঘর থেকে বেরোতে গিয়ে কি মনে করে যেন পেছনে ফিরে এলো সে। আয়নার সামনে দাড়িয়ে স্থির নয়নে নিজেকে দেখলো। তারপর কাজলটা বের করে যত্ন করে চোখে লাগিয়ে নেয়। আরো একবার নিজেকে দেখে নেয়। অধরযুরে হালকা হাসির ঢেউ খেলে যায় তার। অতঃপর ঝটপট বেরিয়ে পড়ে। দরজা ভেজিয়ে ছুটতে যায় হুট করে দাড়িয়ে পরে সে। পেছন হতে ভেসে আসা কন্ঠসর শুনে,
-অরুনিকা।
কাঠকাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে অরুনিকা। ধীরে ধীরে সামনে এসে মুখোমুখি দাঁড়ায় আহরার। সামনে ঝুকে এসে গভীর দৃষ্টিতে অরুনিকার চোখের দিকে চেয়ে আহরার মৃদু স্বরে বলে ওঠে, সুনয়নার আখিযুগলে কাজল লাগলো তবে?
কোনো জবাব নেই অরুনিকার। মাথা নুইয়ে দাঁড়িয়ে ইতস্তত করতে থাকে কেবল। আহরার পুনরায় বলে উঠে,
–আমার কথাটা রাখলেন তবে।
এবার চোখ তুলে তাকায় অরুনিকা। মুখে কথা ফুটে তার।
–কে বলেছে আমি আপনার কথায় কাজল পরেছি? কাজল পরা আমার শখ। নিজের শখ পূরণ করেছি কেবল।
আহরার শব্দ করে হেসে ওঠে।
–তাই বুঝি! আমায় কি এতটাই বোকা মনে হয়?
অরুনিকার বেশ রাগ হয়। খানিকটা উঁচু স্বরেয় জবাব দেয় সে,
–দেখুন সবকিছু নিজের মত করে ধারণা করে নিবেন না এটা ঠিক নয়।
–যাব্বাবা রেগে যাচ্ছেন কেন শ্যামবতী? আমি তো…
আহরারের কথার মাঝেই অরুনিকা আশেপাশে সতর্ক দৃষ্টিতে নজর বুলাতে থাকে। তারপর বেশ নিচু স্বরে বলে,
–আপনি দয়া করে এভাবে যখন তখন হুটহাট আমার সামনে চলে আসবেন না।
–কেন? কোনো সমস্যা?
–আপনি বুঝতে পারছেননা এভাবে আমার সাথে আপনার কথা বলাটা অনুচিত।
–ঠিক কোন কারণের প্রেক্ষিতে আপনার কাছে এটা অনুচিত মনে হচ্ছে?
আহরারের কথা শুনে অরুনিকা সরাসরি তার চোখের দিকে তাকায়।অত্যন্ত শান্ত স্বরে জবাব দেয়,
–কারণ এটা গ্রাম। আপনি শহুরে মানুষ গ্রামের পরিবেশ সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা নেই। এখানে একটা ছেলে একটা মেয়ে একে অপরের দিকে তাকালে সেটাও অনেক বড় ইস্যু হয়ে যায়। সেখানে আপনি এভাবে বারবার কথা বলার চেষ্টা করলে কেউ যদি তা দেখে ফেলে তবে সে সেটা ভালো ভাবে নেবে না।
অরুনিকার কথা শেষ হতে না হতে আহরার জবাব দেয়,
–কে কি বলল না বলল, কে কি ভাবলো, আই ডোন্ট কেয়ার। আমার যে কাজ পছন্দ আমি তো তা করবোই। মানুষের কথা ভেবে ভয়ে গুটিয়ে যাওয়ার মত ছেলে আমি নই।
অরুনিকা বলে,
–আপনি তো এই গ্রামে দুদিনের অতিথি। বিয়েতে এসেছেন। বিয়ে শেষে ফিরে যাবেন। কিন্তু আমাকে এই গ্রামেই থাকতে হবে। আপাত দৃষ্টিতে আপনার কোনো সমস্যাই হবে না। কিন্তু আমার এই গ্রামে থাকাটা হয়তো কঠিন হয়ে যাবে।
–কে বলেছে আমি দুদিনের অতিথি। যদি বলি এই গ্রামে যাতায়াতের একটা পার্মানেন্ট ব্যবস্থা করে নিবো। তো?
–সে আপনি যা খুশি তাই করুন। কিন্তু আমার আশেপাশে ঘুরঘুর করা বন্ধ করুন।
এই বলে অরুনিকা আহরারকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলে ঝড়ের বেগে আহরার আবার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে। ভয় পেয়ে অরুনিকা পেছাতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু আহরার তাকে পড়তে দেয় না। একহাতে কোমড় জাপটে ধরে আগলে নেয় সে তার শ্যামবতীকে। ভড়কে যাওয়া অরুনিকার চোখে মুখে আতঙ্ক। সে আহরারের পাঞ্জাবির কিছু অংশ খামচে ধরে আছে। যেন ছেড়ে দিলেই পড়ে যাবে। শ্যামবতীকে এতোটা কাছে নিয়ে আহরারের নিজেরই টালমাটাল অবস্থা। তবুও সে নিজেকে শক্ত রেখেছে। চোখে মুখে তার মৃদু হাসির ঝিলিক। নেশাতুর দৃষ্টিতে চেয়ে আছে তার সুনয়নার ভয় পাওয়া মুখখানির দিকে। কেমন এক ঘোর লাগা কন্ঠস্বরে বলে ওঠে,
–আপনার আশেপাশে ঘুরঘুর করা আমার বন্ধ হবে না শ্যামবতী। কারণ ওটা আমার আবশ্যকীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
হুট করে অরুনিকা অস্থির হয়ে যায়।
–ছাড়ুন, ছাড়ুন আমাকে। সরে যান আপনি, দয়া করে সরে যান।
অরুনিকার এমন অস্থিরতা দেখে হকচকিয়ে যায় আহরার। অরুকে দাঁড় করিয়ে ছেড়ে দেয় সে। একটু পিছিয়ে যায়। অরুনিকা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে চারপাশ দেখতে থাকে। আচমকা ক্ষোভের সাথে চাপা স্বরে বলে ওঠে অরু,
–কেন আপনি এভাবে আমাকে জ্বালাতন করছেন? কি চান টা কি আপনি? বিরক্ত করার জন্য কি আমাকেই পেয়েছেন?
স্থবির আহরারের চোখে মুখে ফুটে ওঠে কাঠিন্যতা। রাগে চোখ মুখ লাল আকার ধারণ করেছে তার। ক্ষীপ্র গতিতে এগিয়ে এসে অরুনিকার দু বাহু চেপে ধরে শক্ত করে। অকস্মাৎ এমন আচরণে ভড়কে যায় অরু। আহরার তেজের সাথে জবাব দেয়,
–আমি তোমায় জ্বালাতন করছি? এটাই মনে হয় তোমার কাছে? আমি কি চাই তা তুমি বোঝো না? নাকি বুঝতে চাও না? আহরার খান কোনো মেয়েকে বিরক্ত করবে? কস্মিনকালেও সে তা ভাবে না। আর তুমি আমার প্রতি অভিযোগ দায়ের করছো তোমাকে বিরক্ত করার। আমার তোমার প্রতি এটেনশনটা তোমার কাছে জ্বালাতন মনে হয়, বিরক্ত মনে হয়? সিরিয়াসলি অরু?
আহরারের সম্বোধন “আপনি” থেকে “তুমি” হয়েছে তা সে খেয়াল না করলেও অরু ঠিকই খেয়াল করেছে। তবে সে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না। অরুর চোখের কোণে জল জমেছে। তা লক্ষ্য করতেই আহরারের হাত দুটো আলগা হয়ে আসে। অরুনিকাকে ছেড়ে দিয়ে ছিটকে পেছনে সরে আসে। চোখ বুজে নিজেকে শান্ত করার প্রয়াস চালায়। তবে পুরোপুরি শান্ত হতে পারেনা। কন্ঠে চাপা ক্ষোভ রেখেই বলে ওঠে,
–জানতে চাও না আমি কি চাই? ওয়েল! আজ রাতের মধ্যেই তুমি তোমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে। রেডি থেকো।
এই বলেই ঝড়ের বেগে সেখান থেকে প্রস্থান করে সে। অরুনিকার চোখের কোণ বেয়ে টুপ করে ঝড়ে এক ফোঁটা অশ্রুকণা।
~~
বরযাত্রীরা এসে পড়েছে সেই কখন। তাদের জন্য হালকা নাস্তার ব্যবস্থা চলছে। আদ্রিকা সেই কাজে এদিক ওদিক ছুটছে। আয়াজের সাথে দু একবার ধাক্কা খেতে খেতে বেঁচে গিয়েছে। একটাসময় বিরক্তিতে আয়াজ বলেই ফেলে,
–সারাক্ষণ এমন ব্যাঙ এর মতো লাফাও কেন? একটু স্থির থাকতে পারো না?
–আমার পা, আমি লাফাবো, নাঁচবো, কুদবো যা খুশি করবো। আপনার কি?
আয়াজ চোখ দুটো ছোটো ছোটো করে তাকায়। তারপর বাঁকা হেসে বলে,
–আমার কিছু নয়। বাট তোমার অনেক কিছুই হতে পারে?
আদ্রিকা মুখ বাঁকিয়ে আয়াজের পাশ কাটিয়ে চলে যায়। কিন্তু কিছুদূর গিয়ে কোনো একটা কাজ মনে পড়ায় দ্রুত ছুট লাগাতে গিয়ে শাড়িতে পা আটকে তার কুঁচিগুলো খুলে যায়। দ্রুত সেই কুঁচি গুলো ধরে নেই আদ্রিকা। এদিকে পেছন থেকে আয়াজের ভেসে আসা হাসি সেই সাথে টিটকারি,
–বলেছিলাম অনেক কিছুই হতে পারে। যাও আরো লাফাও। হাহ্!
আয়াজ চলে যায়। এদিকে আদ্রিকার কান্না বেরিয়ে আসার উপক্রম। কিন্তু নিজেকে সামলে সে ঘরের দিকে দৌড় লাগায়। যাওয়ার পথে নুপুরকে দেখতে পেয়ে তাকে বলে,
–শোন নুপুর, যা তো একটু বুবুকে ডেকে দে। ঘরে আসতে বল। জলদি।
“আচ্ছা” বলে নুপুর চলে যায় অরুনিকাকে ডাকতে। এদিকে আদ্রিকার পিছুপিছু আরো একজন যে তার ঘরের দিকে এগিয়ে গিয়েছে তা সে বুঝতে পারে না।
~~
রূপাকে নিয়ে মহা বিপদে পড়েছে ঝুমুর। সকাল থেকে তার উল্টোপাল্টা আচরণ। ঘরের ভেতর লুকিয়ে বসে আছে। কিছুতেই বের হতে চায়না। বাড়ির মানুষজন বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তার এ আচরণ নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাচ্ছে না। কিন্তু ঝুমুরের তো রূপাকে ছাড়া গতি নেই। রূপা ছাড়া তার একা একা কিছুই ভালো লাগে না। তাই সে বারবার রূপাকে তোষামোদ করতে থাকে। কিন্তু রূপা নাছোড়বান্দা। তার একই কথা, “বাড়িতে জ্বীন ঢুকেছে রে জ্বীন, জ্বীন।”
কাল রাতে রূপার চিৎকারে বাড়ির মানুষ বেরিয়ে আসলে দেখতে পায় রূপা চিৎপটাং হয়ে উল্টে পড়ে আছে। পাশেই তার হারিকেনটা গড়াগড়ি খাচ্ছে। তাকে ধরাধরি করে তুলতেই দেখা যায় সে অজ্ঞান হয়ে আছে। নানা কলা কৌশল করে তার জ্ঞান ফিরালে সে তখন থেকেই শুধু “জ্বীন, জ্বীন” বলে বিরবির করে যাচ্ছে। সকলে ভাবছে বিয়ে বাড়ির ধকলে ওর বোধহয় মাথা গন্ডগোল হয়ে আছে।
ঝুমুর বসে আছে রূপার কাছে,
–কি রে এখনো তোর ভয় দূর হচ্ছে না? আচ্ছা, সত্যি করে বল তো তুই কি দেখেছিস?
রূপা ঝুমুরের কানের কাছে এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বলে,
–সত্যি বলছি বিশ্বাস কর, একটা ছেলেমানুষকে দেখলাম। এত্তো সুন্দর। তার রূপ দেখে আমার চোখ ঝলসে যাওয়ার অবস্থা। মানুষ কি এতো সুন্দর হতে পারে? দাদী কি বলতো মনে আছে? জ্বীনেরা সুন্দর মানুষের রূপ ধরে মানুষকে আকৃষ্ট করে। আমাকেও আকৃষ্ট করে ঘাড় মটকাতে এসেছিলো বোধহয়।
এই বলে রূপা ভয়ে ভয়ে আশেপাশে তাকাতে লাগলো। ওদিকে ঝুমুর মনে মনে বলছে, “মেয়েটার আসলেই মাথা গেছে।”
~~~
আদ্রিকা নিজের এলোমেলো হয়ে যাওয়া শাড়ির কুঁচি গুলো ঠিক করছে। হুট করে তার হাত থেমে গেলো পুরুষ কন্ঠস্বর শুনে।
–আমি সাহায্য করবো?
পিছু ফিরে দরজার কাছে শাহাদাতকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আদ্রিকার রাগ হয়। এমন অসভ্য মানুষ সে আর দুটো দেখেনি।
–একি শাহাদাত ভাই। এভাবে একটা মেয়ের ঘরে ঢুকে গেলেন? আপনাকে তো বেশ ভদ্র ছেলে বলেই জানতাম। অথআ আপনি..
শাহাদাত ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলে,
–অন্য মেয়ের ঘরে তো ঢুকিনি। নিজের হবু বউ এর কাছে এসেছি।
–বিয়ের কথা উঠেছে কেবল। কথা কিন্তু পাকাপোক্ত হয়নি শাহাদাত ভাই।
–হয়নি তো কি হয়েছে হয়ে যাবে। কি বলোতো, বিয়ে তো আমাদোর হবেই।
–আর আমি যদি বলি হবে না। আমি আপনাকে বিয়ে করতে রাজি না।
শাহাদাত এগোতে এগোতে অনেকটা এগিয়েহ আসে। আদ্রিকা পিছিয়ে যেতে যেতো দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তার। আর পেছোনোর উপায় নেই তার। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে আদ্রিকা। ভেতরটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। সবাই নিচো ব্যস্ত। তাকে সাহায্য করার মতো এখন আশেপাশে কেউ নেই। কি করবে সে? চিৎকার করবে? চিৎকার করলে কেউ কি শুনবে?
শাহাদাত বিচ্ছিরি ভাবে হেসে ওঠে। লোলুপ দৃষ্টিতে আদ্রিকার দিকে চেয়ে জবাব দেয়,
–তুমি অনেএএককক বেশি সুন্দরী আদ্রিকা। তোমাকে তো আমার চাই-ই। এক রাতের জন্য হলেও…
ঘৃণায় সারা শরীর রি রি করে করে উঠে আদ্রিকার। শাহাদাতকে সরে যেতে বলতে চায় কিন্তু ভয়ে গলার স্বর আটকে গেছে তার। এদিকে শাহাদাত এক নোংরা ইচ্ছে নিয়ে আদ্রিকার মুখের দিকে ঝুঁকতে থাকে। হঠাৎই সে থেমে যায়। বলা চলে থেমে যেতে বাধ্য হয়।
কেউ একজন তার শার্টের কলার টেনে ধরেছে। মানুষটা কে? তা দেখার ইচ্ছে নিয়ে পেছনে ঘুরতেই সশব্দে কঠিন এক চড় এসে লাগে তার গালে। বিস্ময়, রাগ নিয়ে গালে হাত দিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে শান্তশিষ্ট, নম্র মেয়ে বলে জানা অরুনিকা রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। দৃষ্টিতে তার আগুন ঝরছে। এই মুহুর্তে তার দৃষ্টি দেখলে যে কারোরই অন্তরাত্মা কেঁপে উঠবে। শাহাদাতের ভেতরেও কিছুটা ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। পেছনে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কম্পনরত আদ্রিকাকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে অরু। ওকে এক হাতে আগলে ধরে শাহাদাতের দিকে আঙুল উঁচিয়ে কঠোরস্বরে বলে,
–আজ যা বলেছেন বা যা করতে যাচ্ছিলেন দ্বিতীয় বার এমন কিছু বলা বা করার কথা চিন্তাও করবেন না শাহাদাত ভাই। তাতে আপনারই মঙ্গল হবে। আর হ্যা এই চড়টা যেন মনে থাকে।
এই বলে আদ্রিকার হাত ধরে গটগট পায়ে বেড়িয়ে যায় অরু। রাগে, ক্ষোভে, তীব্র আক্রোশে মস্তিষ্ক টনটন করছে শাহাদাতের। অরুর মতো সাধারণ একটা মেয়ের এতো বড় দুঃসাহস? হাঁপানি রোগীর মতো টেনেটেনে শ্বাস নিচ্ছে সে। কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না একটা মেয়ে হয়ে তার গায়ে হাত তুলবে। মাথার চুল খামছে দাঁতে দাঁত চেপে কিড়মিড় করছে সে। ভয়ানক রাগে দাঁতে দাঁত বারি খেয়ে কটমট আওয়াজ করছে তার। রাগের দরুন সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে।
মেডিসিন.. মেডিসিন দরকার তার এখন। শরীর খারাপ করতে শুরু করেছে। চাপা চিৎকার করে ওঠে সে। তারপর চিবিয়ে চিবিয়ে বলতে থাকে,
“যতক্ষণ না তোর সর্বনাশ করতে পারছি অরুনিকা আমি শান্ত হতে পারবো না। কিছুতেই পারবো না।”
নিজের ফোনটা বের করে কাঁপাকাঁপা হাতে ডায়াল করে সে। ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই ক্রুদ্ধ স্বরে থেমে থেমে বলে সে,
“অরু..অরুনিকার সর্বনাশ,
নইলেহহ তোদের শেষ নিঃশ্বাস।”
চলবে….