#রূপকথা
#লেখিকা-DI YA
#পর্ব-১১
ওহহ শিট অনেক বড় ভুল করে ফেললাম আমি।পেয়ে ও কি আবার হারিয়ে ফেললাম আমি আমার কথাকে। #রূপকথার কাহিনী কি তাহলে অসম্পূর্ণই থেকে যাবে।
দেখ রূপ এখন ভেঙে পরার সময় না।আমাদের জলদি কথাকে খোঁজা লাগবে।কারণ প্রমি আর রিয়াজ যে কোনো সময় কথার যে কোনো ক্ষতি করে ফেলতে পারে৷ কথার জীবনটা এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে – আদ্র
আরশি আদ্রকে প্রথমে লক্ষ করেনি। কিন্তু পরিচিত কন্ঠ শুনে সামনে তাকাতেই আরশি চমকে উঠে। এই মানুষ এখানে কেন। আরশি রূপকে বলে,
ভাইয়া উনি এখানে কেন এসেছেন ? – আরশি
দেখো আরু এসব কথা পরে ও বলা যাবে। কিন্তু এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে কথাকে খুঁজে বের করা।- আদ্র
হুম। আচ্ছা অরু তুই কি জানিস কথা কোথায় গিয়েছে। মানে ওরা ওকে কোন জায়গার এড্রেস দিয়েছিল ? – রূপ
না এটা তো আমাকে বলে নি। মেসেজ পাওয়া মাত্রই তারাহুরো তারাহুরো করতে করতে ও বের হয়ে যায় – আরশি
রূপ রিয়াজ আর প্রমির ফোন নম্বর দে আমাকে। – আদ্র
ওদের ফোন নম্বর দিয়ে কি হবে ? – আরশি
কথাকে যে ওরা কিডন্যাপ করেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।দেখি ওদের লোকেশন হ্যাক করা যায় নাকি – আদ্র
তারপর রূপ আদ্রকে রিয়াজ আর প্রমির নম্বর দিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদ্র খবর পেলো রিয়াজের লোকেশন হ্যাল করা গেছে। ওরা এখন মিরপুর আছে। আদ্র রূপকে গিয়ে বললো,
রূপ আমাদের তারাতাড়ি বের হতে হবে।ওদের এড্রেস পাওয়া গেছে। আমি এখানকার স্থানীয় পুলিশ অফিসারদের সাথে কথা বলে নিয়েছি। তারা ও বের হয়ে পরেছে হয়তো অলরেডি। আমাদের ও যাওয়া দরকার দ্রুত – আদ্র
আচ্ছা চল।- রূপ
আমিও যাব তোমাদের সাথে – আরশি
আচ্ছা জলদি আসো – আদ্র
ওরা সবাই মিলে বের হয়ে গেলো পাওয়া ঠিকানার উদ্দেশ্য।
অন্য দিকে,
মেয়ে দুইটা আমার রুমে আসার পর। আমাকে কান্না করতে দেখে ওরা জিজ্ঞেস করছে কান্নার কারণ। ওদের সবকিছু খুলে বলতেই ওরা রাজি হয় যায় আমাকে হেল্প করতে। ওদের মধ্যে একজন বোরকা হিজাব এবং তার সাথে মুখে মাক্স পরা ছিল।উনি আমাকে বলে আমি যেনো উনার ড্রেসগুলো পরে ফেলি জলদি। আর উনি আপাতত বউ সেজে এখানে কথা হয়ে থাকবেন।আমি যেন জলদি অন্য মেয়েটির সাথে চলে যাই।ওই আপুর ড্রেস পরার পর অন্য আপু আমাকে নিয়ে রুমের বাইরে আসেন।তারপর রিয়াজকে বলে আমার শরীর খারাপ উনি আমাকে এগিয়ে দিয়ে এসে কথাকে সাজিয়ে দিবেন।রিয়াজ বলে আচ্ছা যাও।আসলে রিয়াজ সে ব্যাপারে খুব একটা পাত্তা দেয়নি। ওই আপুটি আমাকে ওই বাসা থেকে একটু দূরে নিয়ে এসে একটা রিক্সা ঠিক করে দেয় এবং আমার হাতে কিছু টাকা দিয়ে বলে। আমি যেন জলদি আমার বাসায় ফিরে যাই। এই বলে উনি আবার রিয়াজদের বাসায় চলে যাই।রিক্সা চলতে শুরু করে।রিক্সায় বসে আমি ভাবতে লাগলাম রিয়াজ আর প্রমির কথা। এরা কত আপন ছিল রূপ ভাইয়ার। অথচ ভাইয়ার পিছন দিয়ে ছুড়িটা ও এরাই মেরেছে। অন্য দিকে এই আপু দুটো। সম্পূর্ণ অপরিচিত একটা মেয়েকে বাঁচানোর জন্য নিজেদের রিক্সের মধ্যে রাখলো। আসলেই মানুষ চেনা প্রচুর কঠিন কাজ।মূহুর্তের মধ্যেই অপরিচিত মানুষ পরিচিত হয়ে যায়।আবার পরিচিত মানুষ হয়ে যায় অপরিচিত। অর্ধেক রাস্তায় এসে রিক্সায় সমস্যা হওয়ায় আমার নেমে পরতে হয়।এ দিকে আর কোনো গাড়ি পাব না।গাড়ির জন্য এখন মেইন রোড পার করে অপর পাশে যাওয়া লাগবে। আমি যেই মেইন রোডের মাঝে আসি তখন হঠাৎই একটা গাড়ি এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আমি দূরে গিয়ে ছিটকে পরি।।ধীরে ধীরে আমি জ্ঞান হারিয়ে অচেতন হয়ে পরলাম।
~~~~~~~
অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পর যখন কথাকে সাজানো শেষ হচ্ছিল না তখন প্রমি কথার রুমে ঢুকে পরে।ভিতরে গিয়ে যখন কথার জায়গায় অন্য একটি মেয়েকে দেখতে পায় তখন প্রমি সব বুঝে যায়।যে কথা পালিয়েছে। প্রমি দৌড়ে গিয়ে রিয়াজের কাছে যায়।রিয়াজকে সবকিছু বলতে।কিন্তু রিয়াজের কাছে গিয়ে প্রমি দ্বিতীয় দফা অবাক হয় কারণ রিয়াজকে পুলিশরা ঘিরে রেখেছে আর তাদের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে রূপ আদ্র আর আরশি।প্রমিকে দেখে রূপ প্রমির দিকে এগিয়ে গিয়ে প্রমির গালে ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলতে থাকে,,
কেন করলি তোরা আমার সাথে এমন।তোরা না আমার কত আপন ছিলি।তাহলে কেন এসব করলি।কি লাভ হল এসব করে তোদের ? কেনো কেনো কেনো বল তোরা – রূপ
আরে ভালোবাসতাম তোকে। কিন্তু তুই আমাকে রিজেক্ট করলি শুধু মাত্র এই কথার জন্য। কি আছে এই কথার মাঝে। ওর থেকে রূপে গুণে সবদিক দিয়ে আমি এগিয়ে। তাহলে বল কেন ভালোবাসলি তুই ওই মেয়েটাকে। কেন আমাকে ভালোবাসলি না? – বলতে বলতে প্রমি কান্না করে দিলো
ভালো শুধু মাত্র একজনকেই বাসা যায়।ভালোবাসা হচ্ছে একটা অনুভূতি। যা শুধু মাত্র একজন মানুষের প্রতিই আসে। আজ যদি তোরা এসব না করতে তাহলে এরকম দিন হয়তো আমার কখনো দেখা লাগতো না। কি করে পারলি বন্ধু হয়ে বন্ধুর সাথে বেইমানি করতে।আর রিয়াজ তুই না আমাকে নিজের ভাই ভাবতি।ভাইয়ের সাথে এরকম করতে কি তোর একটু ও বিবেকে বাধেনি – রূপ
না বিশ্বাস কর আমার একটু ও খারাপ লাগেনি।কারণ আমি কথাকে ভালোবাসি – রিয়াজ
কথা শুধু আমাকে ভালোবাসে। বুঝতে পারলি ? – রূপ
যদি মানুষ টাই না থাকে তো ভালোবাসবে কিভাবে ? – প্রমি
কি বলতে চাচ্ছিস তুই প্রমি ? ক্লিয়ার করে বল সবকিছু – আদ্র
কথা পালিয়ে গেছে। পালার্রের ওই মেয়ে দুটো ওকে পালাতে সাহায্য করেছে – প্রমি
অফিসার ওদের ধরে নিয়ে যাও। এরা যেন এদের যোগ্য শাস্তি পায়। কোনো মতেই যেন এরা বাঁচতে না পারে। – আদ্র
আচ্ছা ঠিক আছে আমি সবটা দেখবো। আপনি টেনশন করবেন না। এই তোমরা ওদের নিয়ে যাও থানায়। আমি একটু পরে আসছি – ওসি সাহেব
রিয়াজ আর প্রমিকে অফিসার রা ধরে নিয়ে গেলো। তখনি ওসির ফোনে একটা কল আসে। কল রিসিভ করে ওসি সাহেব বলতে লাগলো,,
আচ্ছা আমি এখনি আসছি – বলে ওসি সাহেব কল কেটে দিল।
খুব বড় একটা গন্ডগোল হয়ে গেছে আদ্র সাহেব – ওসি সাহেব
কি গন্ডগোল হলো আবার ? – আদ্র
এখানের মেইন রোডে একটা মেয়ে এক্সিডেন্ট করেছে। অবস্থা নাকি খুব একটা সুবিধার না। আমার মনে হচ্ছে ওটা হয়তো কথা।কারণ আদ্র সাহেব আমাকে কথার যেই ছবি দিয়েছিল। মাত্র কল করা লোকটি ও অনেকটা সেইরকমই বলেছে এক্সিডেন্ট করা মেয়ের কথা – ওসি সাহেব
না এটা কখনো হতে পারে না। আমার কথার কিছু হতে পারে না – রূপ
ওসিসাহেব তারাতাড়ি চলেন এক্সিডেন্ট করা জায়গায় যাব আমরা – আদ্র
এক্সিডেন্ট স্পটে পৌঁছাতেই ওসি এক লোককে জিজ্ঞেস করে এক্সিডেন্ট করা মেয়েকে দেখেছে কি না। লোকটা হ্যা বলতেই ওসি সাহেব কথার ছবি উনাকে দেখান।ছবি দেখে লোকটি বলে,
হ্যা এই মেয়েটারই এক্সিডেন্ট হয়েছিল।অনেক খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। মনে হলো আর বাঁচবে না। অনেক খারাপ লাগছিল মেয়েটার জন্য – লোকটি
মেয়েটি কোন হসপিটালে আছে জানেন – আরশি
হুম। একজন লোক মেয়েটিকে ******* এই হসপিটালে নিয়ে গেছে। এর থেকে বেশি আমি আর কিছু জানিনা – লোকটি
আদ্র আমি আমার কথার কাছে যাবো। আমি আমার কথার কাছে নিয়ে চল – রূপ
পরে ওসি সাহেব রূপ আদ্র আর আরশি মিলে হসপিটালে যায়।হসপিটালে গিয়ে তারা আরো একটি খবর জানতে পারে।যা শুনে রূপ পুরোপুরি ভাবে ভেঙে পরে
চলবে