রুপালি মেঘের খামে পর্ব-১২

0
627

#রুপালি_মেঘের_খামে
লিখা- Sidratul Muntaz

১২.
অরা,
তোমাকে কি বলে সম্বোধন করা উচিৎ বুঝতে পারছি না। কাগজে-কলমে তুমি আমার স্ত্রী হলেও ব্যক্তিগতভাবে আমরা একে-অপরের থেকে যোজন-যোজন দূরে। বৈধ উপায়ে পাওয়া মানেই সবসময় পাওয়া নয়। তা খুব নিদারূণভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছো তুমি।

সারাজীবন নিয়মমাফিক জীবনের বেড়াজালে আটকে থাকা আমি এবং আমার সকল নিয়ম-কানুন হুট করেই মুখ থুবড়ে পড়েছে তোমার সকল অবহেলার সামনে।দিনের পর দিন এই নিষ্ঠুর প্রত্যাখ্যান আমাকে কতটা দিশেহারা করেছে তা হয়তো তুমি অনুমানও করতে পারবে না।

কোনো কিছুতেই মন বসাতে পারছি না। সারাক্ষণ মস্তিষ্কে দ্রিমদ্রিম করে বাজতে থাক তুমি। তোমাকে নিয়ে জাগ্রত স্বপ্নে বিভোর থেকেই দিন দিন কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছি আমি। তোমার মন দখলের চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়া নিজেকে সীমাহীন স্রোতে ভেসে চলা জাহাজের অসহায় নাবিক মনে হয়। তবুও হাল ছাড়িনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, হাল ছেড়ে দেওয়াই সমীচিন।

যে জিনিস নিজে থেকে কখনও ধরা দিতে চায় না তাকে জোর করে ধরে রাখাই অনুচিত। এই সামান্য সিদ্ধান্তটুকু নিতে আমার খুব বেশি সময় লেগে গেল সেজন্য দুঃখিত। তোমাকে অপেক্ষা করিয়ে কষ্ট দেওয়ার ইচ্ছে আমার ছিল না।

জীবনের কোনো অবস্থাতেই তোমাকে কষ্ট দেবো না বলে শপথ করেছিলাম। অথচ যখন বুঝতে পারলাম তোমার জীবনের মূল কষ্টের উৎস আমি নিজেই, তখন যেন আমার পায়ের নিচে থাকা মাটি উধাও হয়ে গেল। বিশাল আকাশটা বিকট শব্দে ভেঙে পড়ল মাথায়।

ধ্বংস হয়ে গেল আমার যত্নে গড়া সাতটি বছরের লালিত অনুভূতি। যেখানে তুমি নিজেই কোনোদিন আমাকে চাওনি সেখানে আমি জোর করে কিভাবে তোমাকে আটকে রাখব?

ভালোবাসা মানেই তো জোর করে বেঁধে রাখা নয়। কাউকে সর্বোচ্চ ভালোবাসলেই নাকি তার ভালোর জন্য তাকে যেতে দেওয়া যায়। আমি বোধহয় তোমাকে সর্বোচ্চ ভালোবাসতে পারিনি এখনও। তাই আমার অবচেতন মন তোমাকে যেতে দিতে এখনও অনিচ্ছুক।

তবে আমার মনের ইচ্ছাই তো শেষ কথা নয়। আর যাইহোক, জোর করে কারো মনের মালিকানা দখল করা যায় না!

এখন থেকে আর কারো উপস্থিতি তোমাকে বিব্রত করবে না। কারো আগমনে তোমার কোমল চেহারায় বিরক্তির প্রলেপ পড়বে না। তোমার হাসিমাখা মুখ দেখার জন্য আমি না থাকলেও আমার পাঠানো সুখটুকু অন্তত থাকুক।

আমার হৃদয় আঙিনায় বন্দী থাকা চঞ্চল প্রজাপতি, তোমাকে মুক্তি দিলাম।

পুনশ্চ- খুব শীঘ্রই ডিভোর্স লেটার পৌঁছে যাবে তোমার কাছে। পরিবার নিয়ে ভয় পেয়ো না। আমি সব সামলে নিব। ডিভোর্সের ব্যাপারে সবাইকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দাও।

ইতি
সামির।

চিঠিটা শেষ হওয়ার পর অরা অনেকক্ষণ থম মেরে বসে রইল। তার চোখের কার্ণিশ গড়িয়ে অজান্তেই অশ্রু নির্গমিত হচ্ছিল। একপর্যায় সে দুই হাতে অশ্রু মুছে একটা সিদ্ধান্ত নিল। ছুটে মায়ের ঘরে গিয়ে জানিয়েও দিল সেই সিদ্ধান্ত।

সাবিরা মেয়ের কথা শুনে অবহেলার স্বরে বললেন,” পাগল হয়ে গেছিস?”

অরা নির্লিপ্ত এবং রাশভারী গলায় উত্তর দিল,” আগে পাগল ছিলাম। কিন্তু এখন আমার মাথা ঠিকভাবে কাজ করছে মা।”

অরার কথার ধরণ একটু বেশিই অন্যরকম ঠেঁকছে। কিছু হয়েছে নাকি? বুঝে উঠতে পারলেন না সাবিরা। চিন্তিত স্বরে বললেন,” তোর বাবা বাড়ি ফিরুক। তারপর এই বিষয়ে কথা হবে।”

অরা নিজের ঘরে ফিরে এলো। বাবার বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করতে লাগল অধীর হয়ে। বাবা তার সিদ্ধান্তকে নিশ্চয়ই সম্মান করবেন।

আরিফ চৌধুরী অরার কথা শুনে অনেকক্ষণ হাসলেন। হাসতে হাসতে তাঁর গলা ধরে এলো। তিনি বললেন,” যে মেয়েকে জীবনে একা কলেজ পর্যন্ত যেতে দিতে ভয় হতো তাকে একা একা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পাঠিয়ে দিবো? কিভাবে সম্ভব?”

” এটা অসম্ভব কিছুই না বাবা। আমাকে ট্রেনে তুলে দিলেই আমি চলে যেতে পারবো। ট্রেন থেকে নেমে খালি একটা সিএনজি অথবা ট্যাক্সি নিবো, এইতো! খুব সহজ। আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আমি যাবো মানে অবশ্যই যাবো।”

” হঠাৎ এতো যাওয়ার জন্য পাগল হলি কেন? আর ক’টা দিন থাক বাবার বাড়ি। নাকি শ্বশুরবাড়িতে মধু আছে?”

সাবিরা আঁড়চোখে তাকিয়ে হাসলেন। অরা লজ্জিত গলায় বলল,” একমাসের বেশি সময় ধরে এখানে পড়ে আছি। আর কত?”

“সামিরের সাথে আমার কথা হয়েছে। কাজের জন্য তোকে নিতে আসার সময় পাচ্ছে না। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো আসবে। তখন একবারে চলে যাবি। সমস্যা কি?”

অরা মূলত এজন্যই যেতে চাইছে। সে চায় না সামির এই বাড়িতে আসুক আর বাবা-মা ডিভোর্সের কথাটা জানুক। সেই অনিষ্ট ঘটার আগেই পরিস্থিতি সামলাতে হবে। তাই অরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামির আসার আগেই সে ঢাকায় ফিরে যাবে। তার পাঠানো চিঠি প্রয়োজনে শাশুড়ী মাকেও দেখাবে। তখন তিনিই এর একটি ব্যবস্থা করবেন।

অরাকে ডিভোর্সের হুমকি দেওয়ার মজা সামির হাড়ে হাড়ে টের পাবে। আরিফ মেয়ের জেদের কাছে হার মেনে সিদ্ধান্ত নিলেন নিজেই যাবেন মেয়ের সাথে। বাবা-মেয়ে রাতের ট্রেনে রওনা হবে পরদিন আবার রাতের ট্রেনে আরিফ চট্টগ্রাম ফিরে আসবেন।

সামিরের কিছুদিন ধরে জ্বর। পাশাপাশি ঠান্ডা এবং কাশি। তাই আজ ইচ্ছে করেই ভার্সিটিতে যায়নি। ঘণ্টায় ঘণ্টায় গরম লেবুপানি খাচ্ছে৷ তাও গলার ক্বফ নামানো যাচ্ছে না। ভার্সিটিতে না যাওয়ার কারণে কাজের চাপ কমাতে অনলাইনেই ক্লাস সেড়ে রাখার চেষ্টা করছে। সেজন্য সারারাত কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে হয়েছে। ঘুম হয়নি। আজ সকালে তাই বেলা করেই ঘুমটা ভাঙল।

কিন্তু ঘুম ভাঙার সাথে সাথেই যে এতো বড় একটা বিস্ময় সামলাতে হবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি সামির। অরা শুয়ে আছে ঠিক তার পাশে। গায়ে গোলাপী রঙের শাড়ি। ফরসা গায়ে গোলাপী রঙটা ভীষণ মানাচ্ছে। এলোমেলো চুল কপালে লেপ্টে আছে৷ কি নিষ্পাপ, সরল মুখশ্রী।

সামির কিছুক্ষণ ভূতগ্রস্তের মতো চেয়ে রইল। একবার সে ভাবল এখনও নিশ্চয়ই ঘুম ভাঙেনি। সে স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো, ঘুম ভেঙেছে তবে এটা তার কল্পনা। একটু পরেই বুঝি অরা গায়েব হয়ে যাবে। এই ভেবেই ফ্রেশ হতে বাথরুমে চলে গেল। তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে যখন বের হলো, তখন বুঝল তার ধারণা ভুল। এটা কল্পনা নয়, সত্যি!

অরা সত্যিই তার বিছানায় শুয়ে আছে, ঘুমাচ্ছে। ঘড়িতে তখন বেলা বারোটা বাজে। সামির চিন্তা করতে লাগল এটা কিভাবে সম্ভব?

সামিয়া দু’জনের জন্য একসাথে নাস্তা নিয়ে ভেতরে ঢুকল। হাসি-খুশি গলায় বলল,” মা পাঠিয়েছে। তোমার আর ভাবির জন্য।”

সামির বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে তাকাল। কিন্তু মুহূর্তেই নিজেকে সামলে নিল। তোয়ালেটা চেয়ারে ছুঁড়ে অবজ্ঞার স্বরে শুধাল,” তোর ভাবি কখন এলো?”

সামিয়া উত্তেজিত কণ্ঠে বলল,” আজ সকাল আটটায়। আমরা সবাই সারপ্রাইজড হয়ে গেছিলাম!”

সামির যথাসাধ্য কণ্ঠ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বলল,” একা চলে এসেছে নাকি?”

” না, একা আসবে কেন? আরিফ আঙ্কেলের সাথে এসেছে। তিনি এখন গেস্টরুমে রেস্ট নিচ্ছেন। রাতের ট্রেনে আবার ফিরে যাবেন।”

সামিরের যেন তখনও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। সে ভাবেওনি অরা এভাবে হঠাৎ চলে আসবে। তাও এসে তার পাশেই শুয়ে থাকবে। আগে তো সামিরের ঘরে আসতেও বিরাট সমস্যা হতো তার৷ বমি করে একাকার করে ফেলতো। আর এখন বড় আরামে ঘুমাচ্ছে! মেয়ে মানুষ সত্যি অদ্ভুত!

সামির অরার ব্যাপারটাকে খুব বেশি পাত্তা দিল না। এই কয়েকদিনে নিজের মনকে কড়া শাসনে রেখে খুব কষ্টে নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এই নিয়ন্ত্রণ সহজে ভাঙা যাবে না।

অরা ঘুম ভেঙে দেখল সামির তার স্টাডি টেবিলে বসে আছে। সামনে পিসি। সমস্ত মনোযোগ সেখানেই। অরা তার মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টায় হালকা করে কাশলো। এতে বিশেষ লাভ হলো না। সে উঠে এসে খুব আড়ষ্ট কণ্ঠে বলল,” গুড মর্ণিং।”

মাত্র দুইটি শব্দ উচ্চারণ করতেই যেন যুদ্ধ করতে হলো গলার সাথে। সামির কিন্তু কোনো উত্তর দিল না। যেন শুনতেই পায়নি। অরা কিছুসময় দাঁড়িয়ে রুম থেকে বের হয়ে এলো। তবে এতো সহজে হার মানলে চলবে না। সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করতে হয়। অরা আঙুল বাঁকা করার সিদ্ধান্ত নিল।

অরা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নীলিমা ঢুকলেন রুমে। কপালে গুরুতর ভাঁজ ফেলে প্রশ্ন করলেন,” কিরে অর্ঘ্য, তুই নাকি বউমার সাথে কথা বলছিস না? এটা কেমন ব্যবহার?”

দরজার বাইরে তখন দেয়ালের পেছনে লুকিয়ে আছে অরা। সামির সেদিকে তাকাতেই আরও একটু লুকিয়ে গেল সে। সামির ধৈর্য্য নিয়ে মায়ের দিকে চেয়ে পাল্টা প্রশ্ন করল,” কি কথা বলব?”

” কি কথা বলবি মানে? ও এতোদিন পর এসেছে। ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস কর! ভদ্রতা জ্ঞানটুকুও কি তোর নেই?”

সামিরকে কিছুটা বিভ্রান্ত দেখাল৷ সামান্য বিরক্তি নিয়ে বলল,” ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন দেখছি না।”

“প্রয়োজন দেখছি না মানে? তুই কি ভার্সিটিতে মাস্টারি করতে করতে এখন বাড়িতেও মাস্টারি শুরু করেছিস? এমন ভাব দেখিয়ে কথা বলছিস কেন? তোর কথা মতো সব চলবে? যা এখনি ওর সঙ্গে সুন্দর করে কথা বল। নাহলে দুপুরে তোর খাওয়া বন্ধ।”

” পারব না।”

” কি বললি, পারবি না মানে?”

নীলিমা সামিরের কান চেপে ধরলেন। অরা দেয়ালের আড়াল থেকে মৃদু হাসল। সামির বাধ্য গলায় বলল,” আচ্ছা বলছি। কেমন আছেন?”

অরার মুখ অন্ধকার হয়ে গেল। সামির তাকে ‘আপনি’ করে বলছে কেন? নীলিমা রেগে বললেন,”কেমন আছেন মানে? আপনি করে কথা বলছিস কেন? ও তোর কোন জনমের ‘আপনি’ হয় শুনি? ঠিক করে কথা বল।”

” ঠিক করেই তো বললাম।”

” কোথায় ঠিক? মনে হচ্ছে পাশের বাড়ির ভাবির সাথে কথা বলছিস। বউয়ের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানিস না?”

সামির ছোট্ট নিঃশ্বাস ছাড়ল। তীব্র মেজাজে মুখ লাল হয়ে উঠল। ভালো বিপদে পড়েছে সে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে হঠাৎ বলল,”কেমন আছো, জান বউ আমার?”

অরা লজ্জায় হতভম্ব হয়ে গেল। ধিকধিক করে কেঁপে উঠল বুকের বামপাশ। চেহারায় যুক্ত হলো রক্তিম প্রলেপ। নীলিমা হেসে ফেললেন। অরার ইচ্ছে করছে দেয়ালের ভেতরে ঢুকে যেতে। এভাবে কেউ মায়ের সামনে বলে?

নীলিমা বললেন,” ফাজলামি করছিস নাকি?”

” ফাজলামি কেন করব? তুমিই তো বললে বউয়ের সাথে বউয়ের মতো কথা বলতে।”

নীলিমা অরার দিকে চাইলেন। অরা নিজেকে সামলে নিয়ে ইশারায় কি যেন বলল। সামির বুঝতে পারল না। কিন্তু নীলিমা বুঝলেন। কড়া গলায় বললেন,” তুই নাকি চিঠিতে কি লিখেছিস ওকে? কি লিখেছিস?”

সামির বলল,” সেটা তো ওর জানার কথা।”

” আমিও জানতে চাই। বল আমাকে। তুই কি এমন লিখছিস যে মেয়েটা একদম অস্থির হয়ে এখানে চলে এসেছে?”

” কি লিখেছি তার চেয়েও বেশি জরুরী কেন লিখেছি। নিশ্চয়ই কোনো কারণ ছিল।”

” কি সেই কারণ শুনি?”

সামির অরার দিকে ইশারা করে বলল,” ওর থেকেই জেনে নাও। কারণটা ও-ই ভালো বলতে পারবে।”

অরা হকচকিয়ে গেল। নীলিমা নরম স্বরে বললেন,” বউমা, তুমি নির্ভয়ে বলো তো। কি হয়েছে?”

অরা বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ল। অসহায়ের মতো তাকাল। সামির কি নিষ্পাপের মতো ভং ধরছে। যেন কিছুই জানে না! অরার উত্তর না পেয়ে নীলিমা আবার বললেন,” ওকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি আছি না? তুমি বলো।”

অরা বলতে পারল না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল কেবল। সামির অকপটে বলল,” আমার সামনে বলতে এতো অসুবিধা হলে তুমি ওকে বাইরে নিয়ে সবকিছু শুনে আসতে পারো আম্মু।”

নীলিমা অরার হাত ধরে বললেন,” চলো।”

অরা খুব অসহায়বোধ করছে এবার। সে চেয়েছিল শাশুড়ীকে ডেকে এনে সামিরকে শিক্ষা দিতে। অথচ এখন নিজেরই জন্মের মতো শিক্ষা হয়ে যাচ্ছে। আর কখনও ব্যক্তিগত বিষয়ে শাশুড়ী মাকে জড়ানোর সাহস করবে না সে৷

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে