#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :৩৫
************
রিনির মাথা টা চক্কর দিচ্ছে। রিনির চারপাশে অন্ধকার লাগছে।রিনির চোখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে, ঐশী ক্লাসের বাইরে,
লক্ষ্য করে,
রিনি নিচে পড়ে যাচ্ছে। ঐশী চিৎকার দিয়ে রি,,,রিনি বলার আগেই মাহমুদ স্যার তাড়াতাড়ি রিনি কে ধরে টান দেয়। রিনি পড়ে যায় নি।বরং এখন মাহমুদ স্যার এর বুকে লেপ্টে রয়েছে।
রিনি চোখ জোড়া বন্ধ করে ফেলেছে।
ক্লাস এর শিক্ষার্থী,
সবাই চলে এসেছে।সবাই জড়োসড়ো হয়ে রিনি কে দেখছে।
অবশ্য ভার্সিটি তে কেউ প্রশ্ন তোলেনি মাহমুদ এর এমন শাস্তির জন্য। কারণ, ভার্সিটির নিয়ম কানুন এর মধ্যে এটা ও একটা নিয়ম ছিলো।কোন স্টুডেন্ট দেরি করে আসলে টিচার চাইলে শাস্তি স্বরুপ ক্লাস এর বাইরে দাঁড়িয়ে রাখতে পারে। তবে কখনো কোন স্যার এমন করে নি।এই প্রথম মাহমুদ স্যার এমন করেছে ।
সব শিক্ষার্থী গুলো,
চিৎকার চেচামেচি করছিলো।কি হলো রিনির?
চোখ জোড়া খুলছে না কেন?
তাই মাহমুদ চিন্তা করে পরের ক্লাস এর স্যার টা কে আজকে তাড়াতাড়ি ক্লাস টা নিতে বলবে।যার ফলে ভিড় টা কমে যাবে।
তাছাড়া,
মাহমুদ এর ক্লাস শেষ প্রায়। তাই মাহমুদ অন্য একটা স্যার কে ক্লাস এ আসতে বলেছে। রিনিকে একটা বেঞ্চে শুয়ে দিয়েছে।
মাহমুদ ঐশী কে বলেঃ যাও ক্লাসে।আমি রিনি কে দেখছি। আর বাসায় আমি ড্রপ করে দিবো।তুমি চিন্তা করিও না। অকে!
ঐশী বলেঃ অকে।
ঐশী এই মাহমুদ স্যার নামক ব্যাক্তিতোটা টা কে বিশ্বাস করে।শুধু বিশ্বাস করে বললে ভুল হবে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে।কারণ, এতো বছর ধরে পরিচিত মাহমুদ স্যার। কখনো কারো ক্ষতি করে নি।সবসময় সবাই কে সাহায্য করেছে।সকলের বিপদে সাহায্য করেছে।সবসময় সবাই কে ভালো পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি,
বড়দের যেমন শ্রদ্ধা করেছে ছোট দের তেমন আদর, স্নেহ করে ।তাই ঐশী চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারে মাহমুদ স্যার কে।বিশ্বাস করে বলেতো সবচেয়ে প্রিয় বান্ধুবী কে একা রেখে এগিয়ে যাচ্ছে ক্লাসের দিকে। সপে দিয়েছে, মাহমুদ স্যার এর কাছে।
ঐশী ক্লাসে চলে গেল।
মাহমুদ কোলে তুলে নিলো রিনি কে। রিনিকে গাড়ি তে তোলে নেলো।মাহমুদ চিন্তা করে কি করবে!মাহমুদ বলেঃ আগে ডাক্তার এর কাছে নেয়া যাক।দেখি তিনি কি বলেন!
রিনিকে ডাক্তার এর কাছে নেয়া হলো,
মাহমুদ এখন ডাক্তার এর সামনে বসে আছে । ডাক্তার বলেঃমিস্টার মাহমুদ, রোদে রিনির এলার্জি আছে।বেশিক্ষণ রোদের তাপ রিনির জন্য ক্ষতিকর। তাই রোদের তাপ সহ্য করতে না পেরে সেন্স লেস হয়ে গেছে। একটু পর হোশ আসবে।
মাহমুদ রিনিকে নিয়ে আবার গাড়ি তে তোলে। এখনো রিনি বেহুশ।এই বেহুশ অবস্থায় রিনির বাসায় রেখে আসা সঠিক মনে হয় নি মাহমুদ এর।
তাই মাহমুদ কোন উপায় না পেয়ে রিনি কে তার ঘরে নিয়ে গেল।
রিনি কে সুন্দর করে শোয়ে দেয়। রিনি নিশ্চিতে ঘুমাচ্ছে। মাহমুদ কিছু সময় ধরে ঘুমন্ত রিনির দিকে অপলক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে।
আর আপন মনে বলে উঠেঃ
“কাচের দেয়াল উঠে গেছে,
তোমার আমার মাঝে।
কপালে লেখা হলো দেখা,
হলো না আসা কাছে,
দুটি হৃদয় আছে বসে,
আহত দুটি মন।
ছোতে গিয়ে যায় না ছোঁয়া।
দূরত্ব ভীষণ।
(কবিতা লেখকঃউর্মি)
মাহমুদ আলতো করে রিনি কে একটা চুমু দেয় রিনির কপালে। রিনি কারো স্পর্শ পেয়ে একটু নড়ে চড়ে উঠে। হঠাৎ করে, বেহুশ অবস্থা তে মাহমুদ এর হাত ধরে শক্ত করে। আর কোন নড়াচড়া করছে না।
মাহমুদ বলেঃ মেয়ে রা খুব অদ্ভুত। আসলেই,মেয়ে রা খুব ভালোবাসার কাঙ্গাল হয়,তাদের একটু যত্ন করে রাখলে তারা আপনার জন্য জীবন ও দিতে পারে নিঃসন্দেহে।
একটু ভালোবাসার পরশ পেতেই সেই পরশটা যত্ন করে আগলে রাখছে রিনি অবচেতন অবস্থা তে।
মাহমুদ আপন মনে বকবক করছে আর রিনি কে দেখছে।
হঠাৎ করে, মাহমুদ বলেঃ রিনি,এতো সহজে ধরা দিচ্ছি না। খোঁজে নিতে হবে তোমার নিজের থেকে।
এটা বলে মাহমুদ তার হাতটা আস্তে করে রিনির কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেই। আবার, একবার রিনির নিষ্পাপ চেহারার দিকে তাকিয়ে মাহমুদ
রুমে থেকে বেরিয়ে আসে। মাহমুদ এর মনটা বড্ড জ্বালাচ্ছে। কেনো জানি সব কিছু অসহ্য লাগছে। মেয়ে টা কে শাস্তি দিতে গিয়ে এটা কি করে ফেললো।মাহমুদ এর মনে অপরাধবোধ কাজ করছে।
মাহমুদ বলেঃ তাহলে কি মাফ চাইবো?
ধুর এটা করলে আস্কারা পাবে।দোষ ছিলো তাইতো শাস্তি দিলাম।
মাহমুদ আর কিছু না ভেবে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। আকাশ পাণে দেখে আছে।
মাহমুদ বলেঃকেউ একজন ঠিকই বলেছেন। মন খারাপ এ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে। কারণ, আকাশের বিশালতার কাছে আপনার মন খারাপ কিছু ই না।
মাহমুদ আকাশ এর দিকে তাকিয়ে আছে। অপেক্ষা করছে রিনির সেন্স ফিরে আসার।
এভাবেই বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেছে। রিনি আস্তে আস্তে চোখ জোড়া খোলে।মাথা টা এখনো ঝিমঝিম করছে। রিনি চোখ জোড়া খোলে দেখে, সে একটা বিছানা তে শোয়ে আছে।
রিনি বলেঃ আমি কোথায়?
এটা কার ঘর?
কার রুম?
রিনি আস্তে আস্তে ফ্লোরে পা রাখে।রুমের একপাশে অন্ধকার ছিলো।কিন্তু বাকি রুম আলোকিত ছিলো।রিনি মনে প্রশ্ন জেগে ওঠে,
কি আছে ওই দিকে?
কেনো এতো অন্ধকার?
রিনি এগিয়ে গেছে। রিনির কাছে পর্যাপ্ত আলো ছিলো না।তাই আলো খুজতে লাগলো। রিনি লক্ষ্য করে, বিছানার পাশে ছোট একটা টর্চ আছে। রিনি তাড়াতাড়ি সেটক হাতে নিয়ে নেই।এগিয়ে গেলো সেই অন্ধকার এর দিকে।
আলো জ্বালিয়ে দেখে। একটা চাদর।
রিনি বলেঃ নিশ্চিত এই ঘরে যে থাকে সে পাগল। একটা চাদর কে কেউ কি এভাবে অন্ধকার করে রাখে নাকি!
রিনি আস্তে করে চাদরটা তে হাত রাখে।টাস করে পড়ে যায় চাদর টা।কিন্তু চাদরটার ভেতর আরও কিছু ছোট ছোট চাদর ছিলো। রিনি আস্তে করে একটা চাদর তোলে নেই। একি রিনি দেখে একটা বাচ্চা মেয়ের ছবি।বাচ্চা মেয়ে বললে ভুল হবে। মেয়ে টা কিশোরী ছিলো। বয়স বলতে আনুমানিক ১৪,১৫ বছর হবে।মেয়ে টা দেখতে পিচ্চি লাগছিলো তাই বাচ্চা মেয়ে বলা আরকি ।
রিনি আরেক টা চাদরে হাত রাখতেই,
কেউ একজন বলেঃ ভুলে ও চাদর টা সরাবে না রিনি।সরালে আমার অন্য রুপ দেখবে রিনি!!!
রিনি চমকে উঠে।এই কন্ঠ টা খুব পরিচিত। রিনি ভয়ে চুপসে যায়। আস্তে করে,
পিছনে ফিরে দেখে মাহমুদ স্যার। রিনি বলেঃ সা সা স্যার আপনি?
আপনি কেন?
কি করে?
সরি,আপনি এখানে কেমনে?
মাহমুদ বলেঃ আগে ওই দিক থেকে বেরিয়ে আসো।টেবিলে বসো।বলছি সব।
রিনি বাধ্য মেয়ের মতো গুটিগুটি পায়ে হেটে টেবিলে বসে যাই।
মাহমুদ সব কিছু খোলে বলে। রিনি মিটমিট করে তাকিয়ে আছে মাহমুদ এর দিকে। মাহমুদ সব বলেছে তবে লুকিয়েছে কিছু। সব কথা তো বলতে নেই। কিছু টা নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হয়।
মাহমুদ বলেঃ মনে হচ্ছে, তুমি এখন বেটার চলো।বাসায় দিয়ে আসি।
রিনির মন চাইছে, চাদরের আড়ালে কি ছিলো তা জানতে। কথাই আছে না।যেটা করতে নিষেধ করে মানুষ সেটাই করতে বেশি চাই। তাই রিনির ক্ষেত্রে ও ব্যাতিক্রম হচ্ছে না।
তবুও নিজের ইচ্ছে কে কবর দিয়ে রিনি মাহমুদ পিছু পিছু যাচ্ছে। বাসায় যে ফিরে যেতে হবে।
গাড়ি তে বসে আছে। মাহমুদ ও রিনি।মাহমুদ আপন মনে গাড়ি চালাচ্ছে। রিনি নিশ্চুপ হয়ে আছে।
মাহমুদ এর বাসা থেকে রিনির বাসায় যেতে একটা হাইওয়ে পড়ে। সেই রাস্তা টাতে চারপাশে গাছপালা। আর কিছু টা দূরে একটা নদী ও আছে।
রিনি গাড়ির জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছে বাইরে। বেশ লাগছে দেখতে।
কিন্তু,
হঠাৎ করে, রিনি বলেঃ গাড়ি থামান প্লিজ।থামাননননননন।
মাহমুদ বলেঃ কেনো?
রিনি বলেঃ থামান।
গাড়ি টা থামিয়ে দেয়। অতঃপর, রিনি হাত দিয়ে জানালার বাইরে ইঙ্গিত করে।
মাহমুদ দেখতে পেল,…..
💮
সবাই অনুসন্ধান করে অবশেষে
দেখে একটা খুব সুন্দর একটা ঝর্ণার দেখা পেলো।
সবাই অনেক আনন্দিত হয়ে গেছে। জান্নাত তো খুশি তে চিৎকার করে দিলো।জান্নাত এর সাথে তাল মিলিয়ে চিৎকার করে দেয় সুমি ও।
সবাই জানে জান্নাত ও সুমি প্রকৃতি প্রেমি।তবে ঝর্ণা দেখে এমন করবে কেউ কল্পনা করেনি।
সুমি অবাক হয়ে ঝর্ণা দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই সবার মতো মজা করছে।এতো ঝামেলার পর সবাই যেনো প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে। জান্নাত চোখ জোড়া বন্ধ করে ফেলেছে। লম্বা লম্বা নিশ্বাস নিচ্ছে।
এমন সময় কে যেনো একটানে জান্নাত কে ঝর্ণার পানির জল প্রপাতের নিচে বসিয়ে দিয়েছে। জান্নাতের চোখ এখনো বন্ধ।ইচ্ছে করে চোখ জোড়া বন্ধ করে রেখেছে। জান্নাত এর শরীরে পানি ঝরে পড়ছে।ঝর্ণার পানি ঠান্ডা ছিলো। তাও জান্নাত ওই ভাবে বসে আছে।
জান্নাত নাক দিয়ে জলের গন্ধ নিচ্ছে। জান্নাত এর মনে হচ্ছে, এই জলের মধ্যে কেমন একটা মৃথিকার সুগন্ধি মিশে আছে।
জান্নাত যেনো কল্পনা তে ডুবে যাচ্ছে। তখনই, কারো শব্দে চোখ জোড়া খোলে জান্নাত।
মুগ্ধ বলেঃ ওহে মহারানি!
আর কতো?
এবার তো উঠো?
আমি মনে করেছি হঠাৎ এমন করে পানিতে বসিয়ে দেয়ার জন্য রাগ করবে তুমি?কিন্তু আমার ধারণা মতো তো কিছুই হলো না?
জান্নাত বলেঃ প্রকৃতির রূপে বিভোর আমি।এখানে এসে রাগ দেখাবো এটা কি করে হয়।
তবে একটু ভয় পেয়ে ছিলাম।
মুগ্ধ বলেঃ সরি জান্নাত।
জান্নাত বলেঃ মাফ করা কি এতো সহজ?
চাইলেই মাফ করা যায় না মিস্টার।একটা ভুল তো না,আরও অনেক ভুল করেছেন।
মুগ্ধ বলেঃ কি করলে মাফি নাফা মঞ্জুর হবে বলো?
জান্নাত বলেঃ যা বলবো তাই করবেন?
মুগ্ধ বলেঃ ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করবো করার।
জান্নাত বলেঃ তাহলে প্রমাণ করেন যে রহমান( শয়তান প্রিন্স জিন)
ও সুমির মধ্যে ভালোবাসা আছে। তারা ও আর দশটা কাপাল এর মতো একে অপরের কদর করে!
কি পারবেন!
মুগ্ধের মুখে বিশ্ব জয় করা হাসি।কারণ এটা প্রমাণ করা একদম কঠিন কাজ না।
তাছাড়া, মুগ্ধ ভালো করে জানে রহমান আস্তে আস্তে সুমির প্রতি দুর্বল হয়ে গেছে। সুমি কে রহমানের একটা মুহূর্ত ও কাছে না পেলে চলে না।সুমিও, রহমান এর পাশে পাশে থাকার চেষ্টা করে। দুজনের অজান্তেই তারা একে অপরের উপর নির্ভর হয়ে গেছে।বাঁধা পড়েছে মায়ার বাঁধনে।যে বাঁধন কখনো ছিড়ে যাবে না।
মুগ্ধ বলেঃ জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াছ হানি।
জান্নাত বলেঃ অকে মাকারফল।
যে যার মতো মজা করছে। রহমান জিন এর ও মুখ হাস্য উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে। খুশি হবে না কেনো!
সবাই যে আপন করে নিয়েছে রহমান কে।সবাই তার ভুল গুলো মাফ করেছে। তাছাড়া,
আজকাল রিনির কথা মনে হলে, রহমানের মনে হয়। নিছক এসব বোকামি করে ছিলো রিনির সাথে।
প্রেম, ভালোবাসা, জিন হোক বা মানুষ কারো কাছ থেকে জোর করে আদায় করা যায় না। জোর করলর বড়জোর শরীর টা পাওয়া যায়। মন তো পাওয়া যায় না।
সবার হইহট্টগোল এ চিন্তা থেকে বেরিয়ে পড়ে রহমান।
রহমান সাতার কাটছিলো।তাই সাঁতার কাটাতে মনযোগ দিলো।তখনই,হঠাৎ রহমানের মনে হলো,সুমি কে অনেক্ক্ষণ ধরে দেখতে পাচ্ছে না।কোথায় সে!
আজকাল সুমি কে বেশিক্ষণ চোখের সামনে না দেখলে মনটা আনচান কে তার!তাহলে কি নিজের অজান্তেই নিজের মনটা সুমির দখলে চলে গেল। দূর এসব কি চিন্তা করছে। সুমি কই সে দিকে নজর দি!!!
রহমান জিন লক্ষ্য করে,
সবাই উপস্থিত আছে ঝর্ণার আসে পাশে তবে,
সুমি ছাড়া।
রহমান সবার উদ্দেশ্য করে
বলেঃ সবাই আছেন কিন্তু সুমি কই?
কেউ কি কিছু জানেন!
তখনই, রহমান লক্ষ্য করে,…….
💮
শাম্মি অনেক চেষ্টা করছে,মা বাবা কে হাবিব এর কথা বলতে। তাও পারছে না।লজ্জা লাগছে শাম্মির বেশি। সে পারছে না নিজ মুখে বলতে।
কিন্তু হাবিব তার মা কে সব খুলে বলেছে।তার মা বিনা বাক্যে রাজি হয়ে গেছে। তার মায়ের বিশ্বাস তার ছেলের পছন্দ সেরা হবে। তাছাড়া, সেরা না হলে জিন কণ্যা কে নিজের মেয়ের মতো করে শিখিয়ে পড়িয়ে নিবে।হাবিব এর মা অনেক খুশি। অবশেষে, ঘরে নতুন সদস্য আসবে।যার চটপট কথা তে মুখরিত থাকবে সম্পূর্ণ ঘর।
শাম্মি নিজের রুমে শোয়ে ছিলো।অনেক চেষ্টা করে ও বলতে পারে নি। হঠাৎ করে, রাজা মশাই ( রশিদ) রুমে প্রবেশ করে।
শাম্মি বলেঃ বাবা তুমি?আমাকে ডাকলে আমি চলে যেতাম।তুমি কেনো কষ্ট করলে!
রাজা মশাই বলেঃনা কোন ব্যাপার না।তা কি করছে মামুনি টা।একটু কি ফ্রী আছিস একটা কথা ছিলো।তাছাড়া,আমি তো তোর মাকে কথা টা বলতে বলে ছিলাম।কিন্তু তিনি আমাকে পাঠালেন।
শাম্মি বলেঃ বাবা বলে পেলো।এতো হেজিটেট করার কি আছে।
রাজা মশাই বলেঃ শাম্মি,তোর কাছে,,, হাবিব কে কেমন লাগে!
শাম্মির বুক দুপদুপ করছে। বাবা হঠাৎ হাবিব এর কথা কেনো বলছে!
শাম্মি নিজেকে সামলে নেই।
শাম্মি বলেঃ বাবা, কেনো?
রাজা মশাই বলেঃ আসলে,
চলবে…..
#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :৩৬
************
গাড়ি টা থামিয়ে দেয়। অতঃপর, রিনি হাত দিয়ে জানালার বাইরে ইঙ্গিত করে।
মাহমুদ দেখতে পেল,
ফুচকার দোকান।
মাহমুদ রাগ করে বলেঃ রিনি,ফুচকার দোকান কে এভাবে দেখাতে হয় নাকি। আমি তো আরও ভয় পাইছিলাম।মনে করলাম,বাঘ বা ভাল্লুক দেখে ফেলেছো।যত্তসব, নেকামি।
রিনি মিটমিট করে তাকিয়ে আছে মাহমুদ এর দিকে। রিনি বলেঃ আসলে,ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে। অনেক দিন খাইনা।
আপনার জন্য কিন্তু আমার অসুখ হয়ছে। সো আমাকে ফুচকা খাওয়ান।
মাহমুদ বলেঃ আমার জন্য নাকি তাহলে?
আমি বলছিলাম নাকি দেরি করে ভার্সিটি আসতে?
রিনি চুপ হয়ে গেছে। মাহমুদ আবার গাড়ি স্টার্ট দিতে যাচ্ছি লো। তখন,আবার গাড়ি থেকে চাবি টা বের করে ফেলে।
মাহমুদ বলেঃ গাড়ি থেকে বের হও।চল
রিনি খুশি তে মাহমুদ কে হাগ করে বসে। রিনি লজ্জায় লাল হয়ে যাই। নিজেকে নিজে বকা দিচ্ছে এটা কি করেছে সে।
দুজন ফুচকার দোকানে গিয়ে বসে। মাহমুদ অর্ডার দিয়ে আসে। ফুচকা এনে দেয় একটা বাচ্চা মেয়ে। রিনি তৃপ্তি করে ফুচকা খাচ্ছে। মাহমুদ আড় চোখে তাকিয়ে আছে রিনির দিকে। রিনির বেশ মজা লাগছে ফুচকা। এমন সময় রিনির মনে পড়ে,এই রকম একদিন রিনি বান্ধবী নিয়ে ফুচকা খেতে গেছিলো। অতপর একটা ছেলে রিনি কে প্রপোজ করে বসে। আর এসব প্রিন্স দূর থেকে দেখছিলো।
রিনি হঠাৎ আপন মনে বলে উঠেঃ আচ্ছা প্রিন্স কোথায়?
সেদিন পর তো আর আমার কাছে আসে নি।কেনো সে কি পারতো না জোর করে আমার উপর অধিকার কাটাতে।
আজকাল প্রিন্স এর কথা মনে পড়লে রিনির বুকে চিনচিন ব্যথা অনুভব করে।রিনি জানে না কেন যে এমন হয়!
দেখতে ফুচকা খাওয়া শেষ রিনির।
মাহমুদ বলেঃ এবার চলো।আমি বিল মিটিয়ে রেস্তরাঁ থেকে বেরিয়ে আসছি।তুমি গাড়ি তে যাও।
রিনি রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়ে পাশে জঙ্গলের দিকে এগিয়ে গেছে। রিনি আসলে, কিছু চিন্তা করছিলো।যার ফলে, সে নিজে ও জানে না।কোথায় যাচ্ছে!
রিনি হঠাৎ অনুভব করল, তার শীত লাগছিল। তখনই, সে চারপাশে তাকিয়ে দেখে, সে একটা জঙ্গলে।
রিনি বলেঃ আরে আমি এখানে কেন?
মাহমুদ স্যার কই?
আমার ভয় লাগছে। কি করবো!
রিনি ভয়ে চুপসে যায়। সে কখনো এমন একা জঙ্গলে আসে নি।রিনি নিজেকে গালি দিতে লাগলো। কারণ, সে যখনই প্রিন্স (ইনতিয়াজ)
এর কথা মনে করে, তখনই প্রিন্স এর দ্যান এ পড়ে যায়।
রিনি গুটি গুটি পায়ে হেটে যাচ্ছে। চারপাশে অন্ধকার নেমে আসছে। রিনির অন্ধকার কে অনেক ভয় লাগে। অন্ধকার দেখলে রিনির মনে হয়,অন্ধকার রিনিকে হারিয়ে ফেলবে কোন এক অজানা তে।অবশ্য, যেদিন রহমান জিন তাকে অন্ধকার থেকে গায়েব করে ফেলেছিলো তখন থেকে অন্ধকার মানুষ কে গায়েব এটা প্রমাণ মনে করে রিনি।
রিনি শুনতে পেল চারপাশ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর শব্দ শুনতে পেল। রিনি ভয়ে চুপসে গেছে যার ফলে আর হাঁটতে পারছে না। তাই একটা গাছের নিচে বসে পড়ে।
মাহমুদ বিল দিয়ে রিনি কে গাড়ি তে দেখতে পাইনি। তাই ভয় পেয়ে গেলো।
মাহমুদ বলেঃ মেয়ে টা কই?
কই গেছে?
আজব তো।
মাহমুদ চারপাশে ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখে। নাহ রিনির কোন চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। মাহমুদ এখন কি করবে।মাহমুদ দূর থেকে দেখে, ফুচকার দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে। আর পিচ্চি মেয়ে টা তার বেতন নিয়ে আস্তে আস্তে হেটে ফিরে যাচ্ছে তার ঘরের দিকে।
মাহমুদ তার কাছে গেলো,মাহমুদ বলেঃ বাবু,কই যাও,
পিচ্চি বলেঃ আগ্গে ভাইজান ঘরে যাইতা ছিলাম।দেরি হয়লে মাইরা তক্তা বানাইয়া ফেলবো মোর সৎ মা।
মাহমুদ বলেঃ তা তোমার মা কই?
পিচ্চি বলেঃ মোর মা তো মুর জন্ম সমত মইরা গেছে। এর পর মোর বাপ আরেক্কান বিয়া করছে।মোর সৎমা কইছে আমি টাকা না দিলে আমার খাওন বন্ধ হইয়া যাইবো।তা ভইজান আপনার লগে যে,ভাবি ছিলো উনি কই?
দেখবার পারতাছিনা কেন?
মাহমুদ কিছু টা অপ্রস্তুত হয়ে গেছে। পিচ্চির মুখে রিনি কে ভাবি ডাকতে শুনে।
মাহমুদ বলেঃ আসলে,ফুচকা খেয়ে বেরিয়ে দেখি গাড়ি তে সে নাই।চারপাশে ভালো ভাবে খুঁজে দেখেছি কিন্তু খুজে পাইনি।
পিচ্চি বলেঃ তই ভাইজান,মেলা দেরি হইয়া গেছে। আমার মনে হয় কাছে যে কালা জঙ্গল আছে। হে খানে ডুইক্কা গেছে। অান্ধার হইয়া গেলে ওই জঙ্গলে অনেক ডর লাগে হুনছি ভুতপ্রেত আছে।
মাহমুদ কিছু টা চিন্তিত হয়ে গেছে। মাহমুদ বলেঃপিচ্চি তুমি কি আমাকে পথটা দেখিয়ে দিবে!
পিচ্চি বলেঃ আপনে কইছেন তাই দিমো।আপনারে আমার ভালা মনে হয় তাছে।তই ভাইজান আপনার লগে মোই ও যামো।আইজকা না হয় ঘরে দেরি কইরা গেলাম। তাছাড়া মোর না ওই ঘরে এক্কেরে যায় তে মন চাই না। তাও থাকার ঘর নাই তাই চইলা যায়।চলেন আমরা আগায়া যায়।
মাহমুদ ও পিচ্চি হেটে এগিয়ে যাচ্ছে জঙ্গলের ভিতর। আস্তে আস্তে জঙ্গলের ভিতর অন্ধকার ছেয়ে যাচ্ছে।
মাহমুদ বলেঃ পিচ্চি তুমি হাটতে পারবে না আসো।আমি কোলে তুলে নি।
পিচ্চি অনেক খুশি হয়ে গেছে। পিচ্চি বলেঃ ভাইজান আপনি না অনেক ভালা।
পিচ্চি কে কোলে নিয়ে এগিয়ে চলছে রিনির খুঁজে। মাহমুদ এর চিন্তা হচ্ছে মেয়ে টা ঠিকঠাক আছে তো?
রিনি গাছের নিচে বসে থাকতে থাকতে একটু তন্দ্রা মতো চলে আসে তার চোখে। হঠাৎ করে কেনো জানি রিনির চোখ জোড়া খুলে যায়।
রিনি তাকিয়ে দেখে, চারপাশে বিদঘুটে অন্ধকার।
রিনি বলেঃ হে আল্লাহ পাক আমাকে রক্ষা করো।
রিনি হঠাৎ করে, গাছের উপর তাকাই। আর দেখে কিছু একটা জলমল করছে। রিনি লক্ষ্য করে, সেই জলমলিত জিনিস টা আস্তে আস্তে নেমে আসছে গাছ বেয়ে। রিনির পছন্ড ভয় লাগছে।
রিনির করার কিছু নেই। কি করবে সে।তখনই, আবার গাছের উপর তাকাই। তখনই দেখতে পেল, সেই……..
💮
রহমান সবার উদ্দেশ্য করে
বলেঃ সবাই আছেন কিন্তু সুমি কই?
কেউ কি কিছু জানেন!
তখনই, রহমান লক্ষ্য করে,ঝর্ণার পানির ঠিক মধ্যে করে বুত বুত করছে। রহমান এর বুঝতে বাকি রইলো না।সুমি ডুবে যাচ্ছে।
রহমান চিন্তা না করে ঝাপ দিয়ে এক সাতারে পানির মধ্যে চলে গেল। রহমান ও বেশ কিছুক্ষণ ধরে উঠছে না পানি থেকে। সবাই একটু ভয় পেয়ে গেলো। ঠিক তখনই, রহমান সুমি কে কোলে তুলে বের হয়ে আসে পানি থেকে। সুমি বেহুশ হয়ে গেছে।
রহমান মাটির উপর সুমি কে শোয়ে দেয়। রহমান জিন বলেঃ সুমি প্লিজ চোখ জোড়া খুলে দেখো।আমি তোমাকে ছাড়া কেমনে থাকবো।তুমি আমার সম্পূর্ণ অস্তিত্ব জোড়ে মিশে আছো।সুমি প্লিজ চোখ বন্ধ করে থেকোনা।
রহমান জিন চিৎকার করে বলেঃ সুমি, You are the happiness of my life, you are the smile of my lips, I am alive to see you anytime, your cute smile give me power please do not ever leave me.
সুমি আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।প্লিজ আমাকে এভাবে ছেড়ে যেও না।
রহমান এর বলা প্রত্যেকটা শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। সবাই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। শুধু অবাক হয়নি মুগ্ধ।
রহমান তার তার দুটো হাত সুমির পেটের উপর রেখে চাপ দেয় যার ফলে পানি বেরিয়ে আসে। এরপর, রহমান তার ঠোঁট জোড়া সুমির ঠোঁটের মধ্যে ডুবিয়ে দেয়। একটু পর সুমির হুঁশ ফিরে আসে। রহমান অনেক খুশি হয়ে যাই।
কামাল বলেঃ চলো সবাই একটা তাঁবু ঠিক করি।এখন এলরেডি অনেক দেরি হয়ে গেছে।সুমি এবং বাকিরা কাপড় বদলে নাও।অন্যথায় ঠান্ডা লাগবে।
রহমান সুমিকে কোলে তুলে নেই। সবাই মিলে তাঁবু রেডি করে। সবাই কাপড় পাল্টে নিবে চিন্তা করে। তখনই, মুগ্ধ বলেঃ একটু অপেক্ষা করো।চোখের পলকে সবার জন্য কাপড় নিয়ে আসে মুগ্ধ তার জাদু দিয়ে।
সুমি একটা শাড়ি পড়েছে। রহমান পাঞ্জাবি পড়েছে।সুমির ভেজা চুল গুলো দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।রহমানের খুব ইচ্ছে করছে সুমি কে ছোঁয়ে দিতে। রহমান আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছিলো তখনই, রাবেয়া ডাক দেই।
জান্নাত এর ভাগে পড়েছে একটা কালো ট্রিপিচ।জান্নাত চুল গুলো খোলা রাখে। কারণ চুল গুলো ভিজে আছে এখনো।ওড়না টা গলায় পেচিয়ে নিয়েছে।
সবাই রাতের খাবার শেষ করে। কামাল বলেঃ চল একটা গেইম খেলি।মুগ্ধ তুমি গিয়ে চিপস এর প্যাকট আনো।আর আমাদের তাঁবুর রুম টা গুছিয়ে আসো।
সবাই বসে আছে এখন মেয়ে দের তাঁবু তে।খুব সুন্দর একটা রাত।সবার কানে আসছে ঝর্ণার জল এর শব্দ। সবাই খেলা শুরু করে।তখনই, টর্চ লাইট বন্ধ হয়ে যাই। কামাল আরেকটা টর্চ লাইট অন করে। মুগ্ধ চিপস নিয়ে ফিরে আসে।
সবাই গানের কলি খেলছে।বেশ কিছুক্ষণ পরই টর্চ টা বন্ধ হয়ে গেছে। কামাল বলেঃ আর লাইট নেই।
তখনই, জান্নাত কারো স্পর্শ অনুভব করল। জান্নাত কে কেউ কোলে তুলে নিলো।জান্নাত ভয়ে চুপসে যায়। যারফলে চোখ বন্ধ করে দেয়।ভয়ের কারণে গলার স্বর একদম হারিয়ে গেছে।
হঠাৎ জান্নাত শুনতে পেল, কেউ একজন বলে, চোখ জোড়া খুলে দেখো।
জান্নাত তাকিয়ে দেখে, সামনে ঝর্ণা, চারপাশে জোনাকি পোকা।আরেক টু সামনের পাথরে একটা কেক রাখা।জান্নাত ভেবে পাচ্ছে না কেক কেন!
তখনই, মুগ্ধ তার মুখ টা জান্নাত এর কানের কাছে এনে বলেঃ
তুমি আমার জীবনে প্রবেশ না করলে ভালোবাসা আসল অর্থ হয়তো আমি জানতে পারতাম না। যতই তুমি এড়িয়ে যাও।দিন শেষে আমার হবে তুমি।
তাছাড়া, তুমি আমার পাশে বন্ধুর মতো ছিলে।তাই,
সবকিছুর জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আজকের এই বিশেষ দিনে অনেক ভালোবাসা রইল। শুভ জন্মদিন প্রিয়।
জান্নাত এতক্ষণ মুগ্ধ এর কোলে ছিলো।জান্নাত বলে উঠেঃ আজ কি ৬ আগষ্ট নাকি!
সবাই চিৎকার করে বলেঃ হেহহহহহ।happy birthday jannatul Mawa mohoya. Many many happy return of the day.
জান্নাত বলেঃ আমিতো ভুলে গেছিলাম। আজ জে আমার জন্ম দিন।সত্যি কখনো এই ভাবে সারপ্রাইজ পাইনি।
জান্নাত কোল থেকে নেমে যাই। কেকের সামনে বসে। জান্নাত এর পিছনে ঝর্ণা। আর মাথার উপর অগুনিত জোনাকি পোকা।
তখনই, মুগ্ধ জান্নাত এর কাছে আসে। মুগ্ধ বলেঃ চোখ বন্ধ করো।
জান্নাত চোখ বন্ধ করে। মুগ্ধ বলেঃ এবার চোখ জোড়া খুলে দেখো।
জান্নাত দেখে, খুব সুন্দর একটা ফুল এর তাজ।মুগ্ধ নিজ হাতে জান্নাত এর মাথায় পড়িয়ে দেই। তারপর, আর একগুচ্ছ ফুল জান্নাত এর হাতে দিয়ে বলে উঠে, শুভ জন্মদিন আমার মনের রানি।সত্যি প্রকৃতির রূপ এর সাথে তোমাকে বেশ মানিয়েছে।একদম রানীর মতো ই লাগছে।
জান্নাত সত্যি মুগ্ধ এর উপর মুগ্ধ হয়ে গেছে। জান্নাত,….
💮
শাম্মি বলেঃ বাবা, কেনো?
রাজা মশাই বলেঃ আসলে,আমরা চাইছি হাবিব এর সাথে তোর নেকাহ করাইতে। তোর মতামত কি!
শাম্মি বলেঃ তোমরা রাজি থাকলে আমি ও রাজি। কিন্তু শাম্মি মনে মনে বলছে, আজ আমার মনটা যেতো পেকম কোইলা নাছেরে।
রাজা মশাই অনেক খুশি হয়ে যাই। তার মেয়ের এমন উত্তর শুনে। তাড়াতাড়ি রানী লোভার কাছে চলে যায়,শাম্মির থেকে বিদায় নিয়ে ।রাজা মশাই এই খুশীর সংবাদ দিতে একদম উতলা হয়ে আছে।
শাম্মি আয়নার সামনে দাড়িয়ে আছে। নিজেকে দেখে নিজে ই লজ্জা পাচ্ছে। আহা শাম্মি আজ অনেক খুশি।
হাবিব ও শাম্মির কথা চিন্তা করছে। তখনই লক্ষ্য করে, আয়নার মধ্যে তার মায়াবতী দেখা দিয়েছে।
হাবিব দাঁড়িয়ে যায়। শাম্মি হাবিব এর কাছে চলে আসে। হাবিব লক্ষ্য করে, শাম্মি আসার পর থেকে লজ্জা পাচ্ছে।
হাবিব বলেঃ একি আমার হবু বউ এতো লজ্জা পাচ্ছে কেন?
কি হয়েছে?
শাম্মি বলেঃ আসলে,বাবা আজকে হঠাৎ আমার রুমে প্রবেশ করে। যা হয়েছে সব কিছু শাম্মি হাবিব কে জানালো।
হাবিব নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছে না। হাবিব তার অনুভূতি প্রকাশ এর ভাষা হারিয়ে ফেলে।
তখনই হাবিব বলেঃ আচ্ছা, তোমার মা বাবা কখন আসবে?
শাম্মি বলেঃ সেটা তো জানি না।মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রই তারা তোমার মার সাথে দেখা করবে।
হাবিব বলেঃ শাম্মি সোফায় বসো।তোমার কোলে মাথা দিয়ে একটু ঘুমাতে চাই।
হাবিব, শাম্মির কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে। শাম্মি হাবিব এর চুলে বিনি কাটছে। পাশের বাসায় আয়ান আবার ছড়া কাটছে। আয়ান বলে উঠেঃ
“দূর নীলিমায় নয়,
আছি তোমার পাশে।
খুঁজে দেখ,
পাবে হৃদয়ের মাঝে।
শুনবো না কোন গল্প,
শুধু গাইবো একটি গান।
যে গানে রয়েছে,
তোমার প্রতি ভালোবাসার টান””
(কবিতা লেখকঃউর্মি)
হাবিব ঘুমিয়ে পড়লো। শাম্মি হাবিবের মাথা তে বালিশ দিয়ে দেয়।এরপর শাম্মি তার রাজ্যে ফিরে গেলো।
চলবে…..
#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :৩৭
************
রিনির করার কিছু নেই। কি করবে সে।তখনই, আবার গাছের উপর তাকাই। তখনই দেখতে পেল, সেই রশ্মি টা অনেক খানি কাছে এসে পড়েছে। রিনি আর কিছু চিন্তা করতে পারছে না। রিনি কোন মতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তার পা দুটো যেই দিকে এগিয়ে নিচ্ছে রিনি সেই দিকে চলে যাচ্ছে। জঙ্গলে অন্ধকার এর জন্য কিছু দেখা যাচ্ছে না। তাও রিনি দৌড়াতে থাকে। রিনি মনে হলো , সে কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাচ্ছে। তখনই, রিনি অনুভব করল, তার কোমর টা কেউ একজন খুব শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছে। রিনি কে পড়তে দেয় নি। রিনি কোমরটা ধরে টান দেয়। রিনি কার জানি বুকে এসে পড়েছে। রিনির নাকে চিরছেনা সুগন্ধি টা আসছে।
রিনি,
কোন এক পিচ্চির কন্ঠ শুনতে পেল, পিচ্চি বলছে,ভাইজান আমরা পাইয়া গেছি।শুকরিয়া। আলহামদুলিল্লাহ। রিনি আর কিছু শুনতে পাইনি।রিনির চারপাশ টা অন্ধকার এর ঘেরা, রিনির এখন মনে হচ্ছে অন্ধকার আরও গভীর হচ্ছে। রিনির মনে হচ্ছে, সে প্রশান্তি অনুভব করছে।রিনি সেন্স লেস হয়ে গেছে।
পিচ্চি মেয়ে বলেঃ ভাইজান,সকাল হয়তে তো মেলা দেরি।আমরা এহন কি করুম?
মাহমুদ বলেঃ পিচ্চি, ঠিক সময়ে যে পেয়েছি অনেক শুকরিয়া। না হলে না জানি কি হতো!
তাছাড়া, তোই ও একটু আগে নিজে নিজে কোল থেকে নেমে গেলি।তোই কোলে থাকলে রিনির পড়ে যাওয়া আটকানো সম্ভব হতো না।পিচ্চি চল আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যায়। অন্ধকার এ পথটা হারিয়ে ফেলেছি।আল্লাহ ভরসা করে এগিয়ে যায়।
দুজন হাঁটছে।রিনির হাত কাঁধে রেখে সেন্স লেস অবস্থা তে হাটাচ্ছে।
পিচ্চি বলেঃ ভাইজান এভাবে হাটলে হয়বো না।আপনি ভাবিজান রে কোলে নেন।উনি অসুস্থ তো।
মাহমুদ আর কোন উপায় না পেয়ে কোলে তুলে নেই। মাহমুদ বলেঃ তোই কেমনে বুঝতে পারলি এই দিকে পাবো?
পিচ্চি বলেঃ আসলে, ভাবিজান এর শরীর এর এট্টা মিষ্টি ঘ্রাণ আছে। বাতাসের সাথে সেই ঘ্রাণ টা ভাইসা আইছে মোর নাকে।তাই বুঝতে পারছি।
মাহমুদ এবার অন্ধকারে।কিছু টা ঝোঁকে পড়ে। আর, রিনি বুকের কাছে নাক টা আনে।একটা মিষ্টি ঘ্রাণ পেলো।
মাহমুদ বলেঃ আসলেই তো।রিনির শরীরে একটা মিষ্টি ঘ্রাণ আছে। কখনো লক্ষ্য করে দেখিনি।
এমন সময় পিচ্চি চিৎকার করে দেয়। ভাইজান দেখেন এক্কান নদীর তীর।আরে আরে ভাইজান আমি তো এক্কান
নৌকা ও দেখতে পাইছি। তই ভাইজান আপনার তো পানিত যাওন লাগবো।ওইডা আনতে।
মাহমুদ লক্ষ্য করে, কিছু জোনাকি পোকা আলোতে নৌকা টা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মাহমুদ নদীর তীরে রিনিকে শোয়ে দেয়। মাহমুদ নৌকা টা তীরে আনছে।এমন সময়, হঠাৎ করে বৃষ্টি চলে আসে। রিনির শরীর ভিজে যায়। মাহমুদ তাড়াতাড়ি নৌকা তে পিচ্চি ও রিনি কে তোলে নেই। নৌকা তে একটা চাওনি ছিলো। তাই বৃষ্টি পড়ছে না।
রিনির শরীর কাঁপুনি দিচ্ছে। মাহমুদ চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। মাহমুদ কি করবে বুঝতে পারছে না।হঠাৎ, মাহমুদ এর হাতে কিছু একটা স্পর্শ করে। মাহমুদ লক্ষ্য করে, একটা পুটলি। পিচ্চি কে মাহমুদ এর কোর্ট টা পড়িয়ে দেই। তাই পিচ্চি গরম তাপ পেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। মাহমুদ পুটলিটা
নিয়ে, সেটার ভিতরে দেখে, একটা শাড়ি। মাহমুদ দেরি না করে,অন্ধকারে রিনির কাপড় পরিবর্তন করে দেয়। কারণ, ভেজা কাপড়ে থাকলে রিনির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে।
মাহমুদ কোন রকম করে শাড়ি টা পেচিয়ে দেয়। হঠাৎ পুটলি তে আবার হাত দিয়ে দেখে কি মনে করে ,
ভাগ্য সহায় ছিলো।পুঁটলিতে মাহমুদ,
আরেকটা কাপড় পেয়ে যায় । মাহমুদ সেটা পড়ে নেই।কারণ তার ও শীত লাগছিল। বৃষ্টি চলে গেল। মাহমুদ রিনিকে নৌকার চাওনি থেকে বের করে নিয়ে আসে।
নৌকার এক প্রান্তে দু’জন আছে। এভাবে কতক্ষণ ছিলো মাহমুদ জানে না।এবং
মাহমুদ যে কখন ঘুমিয়ে পড়লো নিজে ও জানে না।
সকালে ভোরের আলো তে মাহমুদ এর চোখ জোড়া খুলে। মাহমুদ দেখে,মাহমুদ একটা নীল রঙের পঞ্জাবি পড়ে আছে। রিনির পরনে কমলা রঙের শাড়ি। মাহমুদ এর বুকের বরাবর শোয়ে আছে রিনি।রিনির শরীর এর মিষ্টি ঘ্রাণ টা মাহমুদ পাচ্ছে। মাহমুদ দেখে পিচ্চি এখনো ঘুমাচ্ছে।
মাহমুদ তাড়াতাড়ি করে, রিনি কে নিজের থেকে কিছু টা দূরে সরিয়ে শোয়ে দেয়। নদীর থেকে কিছু পানি নিয়ে রিনির মুখে দেয়। রিনির হাত পা মালিশ করে দেয়। আবার, কিছু পানি ছিটিয়ে দেয়। রিনি আস্তে আস্তে চোখ জোড়া খুলে। রিনি আচমকা মাহমুদ কে জড়িয়ে ধরে।
রিনি বলেঃ আমাকে একা রেখে কই গেছিলেন?
আমি যে অনেক ভয় পাই। আমার অন্ধকার কে ভয় করে।কখনো আমাকে একা রেখে যাবে ন না।প্লিজ।
মাহমুদ একদম স্তব্ধ হয়ে গেছে। কারণ, সে কিছু বলার ভাষা খোঁজে পাচ্ছে না।
হঠাৎ পিচ্চি বলেঃ চলেন ভাইজান,এবার আমরা সবাই চইলা যায়। মোর মাই ও মোর লাইগা অপেক্ষা করবো।মোরে মাইর দিবো এমনেতে। তাও যায়তে যহন হয়বো এহন ই যাওয়া যাক।দেরি কইরলে ভালা হয়বো না।
রিনি তাড়াতাড়ি মাহমুদ কে ছেড়ে দেয়। সবাই জঙ্গলে রাস্তা ধরে হেটে আসছে।পিচ্চি, সারা রাস্তা হাটছিলো আর রিনিকে পটর পটর সব কিছু বলছে।কালকে কি হয়েছে!
কেমনে তারা রিনি কে খুঁজে পেলো!
সবাই গাড়ির কাছে চলে গেল।
মাহমুদ বলেঃ পিচ্চি তোই ও উঠ
পিচ্চি বলেঃ ভাইজান মোর ঘর কাছে।গাড়িত ওইটা কিতা হবে।তাছাড়া মোর মাই দেখলে হাজার খান প্রশ্নো কইরবো।
মাহমুদ বলেঃ তোই আমার সাথে যাবি।আজ থেকে আমার সাথে থাকবি।পড়াশোনা করবি।কি যাবি না তোর ভাইজান এর সাথে?
যাবিতো পিচ্চি!
পিচ্চি কিছুক্ষণ চুপ হয়ে থাকে। রিনি ও মাহমুদ এর দিকে একবার তাকিয়ে দেখে। তারপর, পিচ্চি খুশী মুখে বলেঃ চলেন তইলে ভাইজান।
সবাই গাড়ি তে উঠে পড়ে। মাহমুদ গাড়ি চালাচ্ছে। রিনি পাশের সিটে বসে আছে। পিচ্চি পেছনে বসে আছে। সবাই মাহমুদ এর ঘরে যাচ্ছে। মাহমুদ গাড়ি স্টার্ট দেয়। একটু পর,
পিচ্চি বলেঃ ভাইজান এক্কান গান ছাড়েন।
গান শুনি এক্কান।
মাহমুদ একটা গান চালিয়ে দেয়। রিনির মনে হাজার প্রশ্নের উদয় হয়ে আছে। তার গায়ে শাড়ি কেমনে।পিচ্চি সব বলেছে,তবে রিনির কাপড় পরিবর্তন নিয়ে কিছু বলে নি।তার মানে এই ব্যাপারে পিচ্চি জানে না।রিনি চোখ বন্ধ করে গান শুনছে।গানটা রিনির খুব পছন্দের একটা গান।গান চলছে,
Tu aata hai seene mein
Jab jab saansein bharti hoon
Tere dil ki galiyon se
Main har roz guzarti hoon
Hawa ke jaise chalta hai tu
Main ret jaisi udti hoon
Kaun tujhe yoon pyar karega
Jaise main karti hoon
Haa. Aa.
Meri nazar ka safar
Tujhpe hi aake ruke
Kehne ko baaki hai kya
Kehna tha jo keh chuke
Meri nigahein hain teri nigahon pe
Tujhe khabar kyu bekabar
Main tujhse hi chup chup kar
Teri aankhein padhti hoon
Kaun tujhe yun pyar karega
Jaise main karti hoon
Haa. Aa.
Tu jo mujhe aa mila
Sapne hue sarphire
Haathon mein aate nahi
Udte hain lamhein mere
Meri hasi tujhse
Meri khushi tujhse
Tujhe khabar kyu bekhabar
Jis din tujhko na dekhun
Pagal pagal phirti hoon
Kaun tujhe yun pyaar karega
Jaise main karti hoon
Haa. Aa.
গানটা শেষ হতে হতেই সবাই মাহমুদ এর বাসায় পৌঁছে যায়। সবাই গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। মাহমুদ সহ সবাই বাসায় প্রবেশ করে। একটা চাকর কে কল করে পিচ্চির জন্য একটা ড্রেস আনতে বলে। সাথে রিনির জন্য ও।
চাকর ড্রেস নিয়ে আসে। তবে রিনির টা আনতে একটু সময় হবে।মাহমুদ পিচ্চি কে তার রুম দেখিয়ে দেয় আর বলে,ফ্রেশ হয়ে ড্রেস টা পড়তে। পিচ্চি টা অনেক খানি খুশী হয়ে গেছে।
মাহমুদ রিনি কে নিজের রুমে নিয়ে গেল। মাহমুদ বলেঃ ফ্রেশ হয়ে আপাতত আমার একটা শার্ট পড়ে নাও।ততক্ষণে তোমার ড্রেস আসবে হোপ সো।
রিনি বলেঃ ওকে।একটা প্রশ্ন ছিলো?
মাহমুদ বলেঃ পিচ্চি তো সব বলে দিয়েছে।আবার কিসের প্রশ্ন?
রিনি বলেঃ আমার গায়ে শাড়ি কেমনে? কে পড়িয়ে দিলো?
মাহমুদ কিছু টা ইতস্তত করে। তারপর বলেঃ আমি পড়িয়ে দিয়েছি।ভেজা শরীর বলে তোমার শরীর কাঁপুনি দিচ্ছিলো।তাই বাধ্য হয়ে এমন করা।আমি কিছু দেখিনি,চারপাশে অন্ধকার ছিলো।সো ডোন্ট ওয়ারি।
রিনি একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিলো।রিনি আপন মনে বলছেঃ হুহ আল্লাহ অন্ধকার ছিলো বলে কিছু দেখেনি।শুকরিয়া।
মাহমুদ বলেঃ আর কিছু জানার আছে?
রিনি বলেঃ না।
রিনি ফ্রেশ হতে চলে গেল। মাহমুদ ও অন্য রুমে চলে গেল ট্রেশ হতে। বেশ কিছুক্ষণ পর,মাহমুদ নিজের রুমে প্রবেশ করে। হঠাৎ রিনি টাওয়াল পেচিয়ে বেরিয়ে পড়ে। মাহমুদ কে দেখে দৌড়ে আবার ওয়াশরুমের মধ্যে প্রবেশ করে। রিনি মনে করছে, মাহমুদ থাকবে না। তাছাড়া রিনি শার্ট ওয়াশরুমে নিতে ও ভুলে গেছে।
রিনি ওয়াশরুম থেকে বলেঃ আসলে শার্ট নিতে ভুলে গেছিলাম।প্লিজ একটা শার্ট দিন।
মাহমুদ একটা শার্ট দিলো।রিনি সেটা পড়ে বাইরে আসে।রিনির বড্ড লজ্জা লাগছে। লজ্জা তে মুখ বারবার ব্লাস করছে।
একটু পর, চাকর এসে ড্রেস দিয়ে যায়। রিনি কাপড় টা পড়ে নেই।মাহমুদ সবাই কে নিয়ে ভাত খেতে বসে।পিচ্চি ও আপন মনে খাচ্ছে।
মাহমুদ বলেঃ রিনি একটু রেস্ট নিয়ে তোমাকে বাসায় দিয়ে আসবো।
রিনি কিছু বলে নি। রিনির ইচ্ছে করছে থেকে যেতে।তাও কিছু প্রকাশ করে নি।
রিনি সোজা মাহমুদ এর রুমে গিয়ে শোয়ে পড়েছে, রিনি শরীর টা বিছানায় রাখার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়লো। রিনির চোখে যেনো রাজ্যের ঘুম জমে আছে। পিচ্চি ও তার রুমে ঘুমিয়ে পড়লো। মাহমুদ বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশ কে দেখে সময় টা কাটাবে।
মাহমুদ দোলনায় বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। মাহমুদের আজ কেনো জানি অকারণে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে মন চাইছে।মাহমুদ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়লো।
বেশ কিছুক্ষণ পর,রিনির ঘুম ভেঙ্গে গেলো। রিনি আশেপাশে তাকিয়ে দেখে, মাহমুদ আছে কিনা। রিনি লক্ষ্য করে, আশেপাশে কেউ নেই। রিনি বিছানা থেকে উঠে পড়ে। আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে……..
💮
জান্নাত সত্যি মুগ্ধ এর উপর মুগ্ধ হয়ে গেছে। জান্নাত অনেক খুশি আজ।সবাই বসে আছে। মুগ্ধ তাকিয়ে আছে জান্নাত এর দিকে।সুমি ও রহমান একে অপরের গাঁ ঘেঁষে বসে আছে। রাবেয়া ও কামাল হাতে হাত রেখে দুজন দুজনার দিকে তাকিয়ে আছে। এ যেনো এক রোমাঞ্চকর দৃশ্য।
মুগ্ধ হঠাৎ করে জান্নাত এর কাছে চলে আসে। মুগ্ধ, জান্নাত এর কানে কানে বলেঃ মাফ কি করেছো?
জান্নাত তোমার বিয়ে টা কি আটকানো যাবে না?
আমার আশা কি পূর্ণতা পাবে না?
আমি তো বেশি কিছু চাইনি, শুধু তোমাকে চেয়েছি?
জান্নাত বলেঃ মুগ্ধ আপনি যে জিন পরী তা আমাকে বলেন নি।সত্যি টা যদি নিজে বলতেন মেনে নিতে কষ্ট হতো না। আর আপনাকে অনেক আগে মাফ করে দিয়েছি।
প্রিয় নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে কেউ খারাপ কিছু করলে, তার শত্রু দের মাফ করে দিতেন।
মাফ করা একটা মহৎ কাজ।তাই আমি প্রিয় নবীর উম্মাত হয়ে তার আদেশ অমান্য করি কি করে। সো মাফ করে দিয়েছি।
তাছাড়া, আমি মা বাবার বিরুদ্ধে যেতে পারবো না।
মুগ্ধ বলেঃ তাহলে আমার ভালোবাসার কি হবে?
জান্নাত বলেঃ মুগ্ধ আমি যদি আপনার কপালে লেখা থাকি তাহলে আপনার ই হবো।তাছাড়া আল্লাহ পাক এর কাছে দোয়া করেন।উনি যে কোন অসম্ভব কে কোণ,ফায়াকোন বলে সম্ভব করে দিতে পারে। আল্লাহ এর মর্জি থাকলে, আপনার দোয়া কবুল হলে আমি সারাজীবন এর জন্য আপনার হবো।
মুগ্ধ বলেঃ আমাকে কি ভালোবাসাে?
জান্নাত চুপচাপ বসে আছে। তাকিয়ে আছে সামনে ঝর্ণার দিকে। জান্নাত যেনো ইচ্ছে করে এড়িয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন টা।
মুগ্ধ এর মনে এক পাহাড় সম কালো মেঘ জমে আছে। কি হবে তার এই অপেক্ষার?
চলবে…..