রঙ তুলির প্রেয়সী ১২.

0
2604

রঙ তুলির প্রেয়সী
১২.

৭ মার্চ ২০১৮
————————–
তোকে রিসিভ করার জন্য রিয়াদ যাবে আমি জানি। তাই, এটা রিয়াদের হাতে দিয়ে বলবো যেনো এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়েই এটা তোর হাতে ধরিয়ে দেয়। এই ডায়েরিটা যখন তুই পাবি, মনে হয় তখন আমি থাকবোনা। তখন আমি দূরে থাকবো। অনেক দূর। তোর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আমি জানি, এটা শেষ করার পরে তুই ক্রোধে ফেটে পড়বি। কেন তোকে কিছু জানানো হয়নি এটা বলে পুরো পৃথিবী এক করে দিবি। ফুপি, ফুপা, আদিয়া, রিয়াদ, মা, বাবা, সবার সাথে রাগারাগি করবি। খবরদার! আর যাই কর, আপন মানুষদের সাথে একদম রাগারাগি করবিনা বলে দিলাম। যদি রাগারাগি করিস, এটা নিয়ে কোনোদিন কাউকে একটাও কথা বলিস তাহলে আমি ভাববো… হয়তো সত্যিই আমাদের মধ্যে ভালোবাসা বলতে কিছু ছিলো না। এটাকে যদি ভালোবাসার দোহাই দেয়া বলিস, তবে তা-ই। আমিই সবাইকে মানা করেছি যাতে তোকে কেউ কিচ্ছুটি না বলে। আমিতো জানি এই ট্রিপটা শুধুই তোর বন্ধুদের সাথে বেড়ানোর জন্য নয়। ওখানে তুই আরো একটা উদ্দেশ্য নিয়ে গিয়েছিস। ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা। জিতলে তোর সলো এক্সিবিশন হবে। তোকে যদি ওরা এসব বলতো তাহলে সব ফেলে তুই চলে আসতি। কী ভেবেছিস? আমাকে না বললে আমি জানবোনা? আমি ঠিক ঠিক জেনে নিয়েছি। শুধু আফসোস থেকে গেল, নিজের চোখে তোর সাফল্য দেখে যেতে পারলাম না। অবশ্য, তোকে না বলার আরো একটা কারণ আছে। এটা তোর শাস্তি। কিসের শাস্তি? এইযে আজ পুরো নয় দিন কেটে গেছে, তুই আমার ফোন তুলছিস না। এইজন্য আমি তোকে শাস্তিটা দেবো। এসে যখন দেখবি আমি নেই, তখন পস্তাবি। কেন একবার আমার সাথে কথা বলিসনি সেজন্য খুব কাঁদবি। জানিস? বড্ড অভিমান জমেছে বুকে। পাহাড় সমান। না না, পাহাড় না, আকাশ সমান। অসীম। যেদিন তুই আমাকে ঐ কথাগুলো বললি সেদিন আমি কেঁদেছি। অনেক কেঁদেছি। এইযে এখন লিখছি, এখনও কেঁদেকেটে ডায়েরিটা ভরিয়ে দিচ্ছি। তবে সেদিনের কান্নাটা ছিলো আমার শুধুই বেদনার কান্না। আর আজকের কান্নাটা হচ্ছে অভিমান, আর সাথে শারিরীক কষ্টেরও। এইযে বসেছি, বসতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তবুও বসেছি। কারণ লিখতে হবেই আমায়। কোমরে ব্যথা করছে খুব। তবুও দাঁতে দাঁত চেপে সেটা সহ্য করছি আমি। লেখার মাঝে কয়েকবার উঠে হাঁটছি। তবুও লিখছি। আচ্ছা জাওয়াদ, আমাকে এভাবে অবিশ্বাস করলি কেন? কীভাবে ভাবলি আমি এমন করবো? একবারও খুঁতিয়ে দেখলিনা কেন যে ও সত্য বলছে নাকি মিথ্যা? সেদিন তুই আমাকে ঐ কথা জিজ্ঞেস করার পর আমি তোকে ফিরতি কোনো উত্তর দেইনি বলে তুই রাগ করেছিস। কিন্তু আমি কেন উত্তর দেইনি সেটা কি ভেবেছিলি জাওয়াদ? সেদিন তুই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিস আমি এরকম ‘কেন করেছি?’। মানে তুই ভেবেই নিয়েছিস আমি এমন করতে পারি। তুই যদি এই ‘কেন করেছিস?’ না জিজ্ঞেস করে এই ঘটনা সত্যি না মিথ্যা এটা জিজ্ঞেস করতি তাহলে হয়তো আজ সবকিছু অন্যরকম হতো। প্রেয়সীর ঠোঁট আর ঠোঁটের নিচের তিলে পরম আবেশে চুমু খেলেই ভালোবাসা হয়ে যায় না। প্রেয়সীর হাঁটু সমান চুলে নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিলেই ভালোবাসা হয়ে যায়না। প্রেয়সীর কপালে কপাল ঠেকিয়ে চোখে চোখ রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেয়ে থাকলেই ভালোবাসা হয়না। ভালোবেসে প্রেয়সীকে বিশ্বাস করতে হয়। বিশ্বাসের আবরণই যদি না থকে, তাহলে কোনোকালেই সেটাকে ভালোবাসা বলে আখ্যায়িত করা যায়না। আমি জানি, তোর সামনে যে প্রমাণ রাখা হয়েছিলো সেটা ফেলে দেয়ার মতো না। আমি বলছিনা ফেলে দে। আমি শুধু বলছি, একবার কি আমাকে বিশ্বাস করা যেতো না? আমি সজ্ঞানে তোর ছোঁয়ানো ওষ্ঠদ্বয়ে অন্য কারো ছোঁয়া লাগতে দেবো সেটা তুই কীভাবে ভাবলি? থাক, কিছু বলবোনা। শুধু অনুরোধ করবো দেশে আসার পরে অন্তত আর কিছু না করলেও এটার সত্যতা যাচাই করে নিবি।

১০ মার্চ ২০১৮
—————————-
আজ ১২ দিন হয়ে গেল। তুই আমার ফোন তুলিসনা। কথা বলিসনা। আমার যে সময় ঘনিয়ে এসেছে সেটা যতই বুঝতে পারছি ততই কলিজাটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। প্রিয়জনদের ছেড়ে দূরে যাওয়ার কষ্টটা খুব বেদনাদায়ক। কিন্তু চিরতরে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার আগাম বার্তা পাওয়ার পর সেই বেদনার আগুন শিখা হৃদয়কে দগ্ধ করে দেয়। আর যতোই দিন ঘনাতে থাকে ততোই হৃদয়টা ক্ষতবিক্ষত হতে থাকে। তোকে খুব মনে পড়ছে। আমি খেতে পারিনা, ঘুমাতে পারিনা… নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে আমার।বাবা প্রতিদিন আমার মাথার কাছে বসে থেকে কাঁদে। মা উদ্ভ্রান্তের মতো কাঁদে। ফাহি তো কিছুক্ষণ পরপর এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদে। ফুপি তোকে কল করে বলে দিতে চেয়েছিলেন, বলতে দেইনি। তুই প্লিজ এসে এদের কারো সাথে রাগ করিসনা। জানিসই তো, মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির ইচ্ছা পূরণ করতে হয়। এরাও আমার ইচ্ছাটাই পূরণ করছে। আমিই এদের মানা করেছি তোকে কিছু না বলতে। জানিস? রিয়াদও আমার জন্য কেঁদেছে। অবাক না? যে রিয়াদ আমাকে হিংসা করতো তুই ওর থেকে আমাকে বেশি ভালোবাসিস এটা বলে। সেই রিয়াদ আমার জন্য কেঁদেছে। ওকে যে আমি কীভাবে তোকে সব বলা থেকে আঁটকিয়েছি তুই ভাবতে পারবিনা! তবুও আমি চাই তুই প্রতিযোগিতা টা জিতে যা। আমাকে ভুল বুঝেছিস, জানি তোর সেই ভুলটা ভেঙ্গে যাবে। কিন্তু তোর সাথে আর কোনো মধুর সময় বানাতে পারলাম না বলে বড্ড আফসোস হচ্ছে!

১৪ মার্চ ২০১৮
—————————
কিছুই গুছিয়ে লিখতে পারছিনা। যতো সময় যাচ্ছে দুর্বল হচ্ছি। লিখতে গিয়ে অনেক কষ্ট হয়রে, হাত চলেনা। এখন শুয়ে শুয়ে লিখছি। হাতের লেখা খুবই বাজে হচ্ছে। আমি আর্তনাদ করছি জাওয়াদ। আমার আর্তনাদ কি তোর হৃদয় অবধি পৌঁছাতে পারছেনা? এতো কঠিন হচ্ছিস কীভাবে? আমার কষ্ট হচ্ছে জাওয়াদ। আর দু’দিন পর হয়তো আমার আর হুশই থাকবেনা। আজই ডায়েরিটার কার্যক্রম শেষ করতে হবে। এতো রাগ তোর! এতো রাগ! একটাবার ভাবছিস না তোর ভালোবাসা, তোর প্রেয়সী এমনটা করতে পারেনা! আমি সেদিন রাগ করে কল কেটে দিয়েছিলাম। তুই ওভাবে বলায় অনেক রাগ হয়েছিলো আমার। একটু রাগ দেখালাম বলে তুই আমাকে এভাবে রাগ দেখাবি? আমার জীবনের শেষ সময়টুকুতে তোকে আমি পাশে পাইনি… একটাবার তোর গলা শোনার জন্য চাতক পাখির মতো করে ছটফট করেছি এতোদিন। আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে জাওয়াদ। আমি কিছু লিখতে পারছিনা। যা কিছু হয়েছে এতে তোর কোনো দোষ নেই। অনেকেই চেয়েছিলো আমরা আলাদা হয়ে যাই, তাদেরই চক্রান্তের ফাঁদে তুই পা দিয়েছিস। তোর ওপর আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি চাইলেই সব ঠিক করে দিতে পারি, নিমেষেই ভেঙ্গে দিতে পারি তোর ভুল। কিন্তু বিধাতার মনে হয়তো অন্যকিছুই ছিলো। উনি হয়তো আমাদের এক হওয়া কপালে রাখেন নি। তাই আমিও আর চেষ্টা করি নি। মরণব্যাধি হয়েছে, সব ঠিক করে আর মায়া বাড়িয়ে কী লাভ? তারচে বরং আমার ওপর রাগ করে থাক। তাহলে তোর কষ্টও হবেনা। খুব ইচ্ছা ছিলো… সবুজ জামদানী শাড়ি পরে, পিঠময় খোলা চুলগুলো ছড়িয়ে রেখে, কানে ফুল গুজে তোর সামনে এসে দাঁড়াই। তুই তো আমাকে এভাবেই দেখতে চেয়েছিলি তাইনা? কিন্তু দেখনা… আজ তুই ভুল বুঝে আমার থেকে দূরে। আমার সেই হাঁটু সমান চুলগুলোও ব্লাড ক্যান্সার নামক ব্যাধির ট্রিটমেন্ট এর জন্য পড়ে যাচ্ছে। তোর সবথেকে প্রিয় আমার ঠোঁটের নিচের তিল, সেখানটাও কেমন কালো হয়ে যাচ্ছে। জাওয়াদ… আমরা কোনোদিন কেউ কাউকে ‘ভালোবাসি’ শব্দটা বলি নি। আমরা দু’জনে বাসর রাতে একে অপরকে ‘ভালোবাসি’ বলতে চেয়েছিলাম। অথচ দেখ… বাসরটাই ভাগ্যে নেই। জাওয়াদ… আমি তোর রঙ তুলির প্রেয়সী তো হতে পেরেছি। কিন্তু তোর জীবনের প্রেয়সী হতে পারলাম না। বিধাতা হয়তো অন্য কাউকে সেই অধিকার দিয়ে রেখেছেন। যে একাধারে তোর রঙ তুলির প্রেয়সী হবে, সাথে হবে তোর জীবনের প্রেয়সী। জাওয়াদ শোন, একদম দেবদাসের মতো পড়ে থাকবিনা। আমার জন্য কষ্ট পাবিনা। নিজেকে দোষ দিবি না। আমি একদম তোর ওপর রাগ করে চলে যাচ্ছিনা। ভালোই হয়েছে তুই নেই, নাহলে তোর আকুলতা আমি সহ্য করতে পারতাম না। মরার আগেই মরে যেতাম। জাওয়াদ, ওরা সবাই আমার ইচ্ছা পূরণ করেছে। তোকে কিছু জানায় নি। এখন তুই আমার শেষ ইচ্ছাগুলো পূরণ করবি। বাড়ি এসে কারো সাথে রাগারাগি করবিনা। হ্যাঁ, তোর জন্য একটা উপহার রেখে গেলাম আমি। রঙ তুলি রেখে গেলাম। তোর জীবনের প্রেয়সীকে এই রঙ তুলি দিয়ে তোর রঙ তুলির প্রেয়সী বানাবি। এই রঙ তুলির ছোঁয়ায় প্রথমবারের জন্য তোর প্রেয়সীকে তুই আঁকবি। জাওয়াদ, তোকে খুব ইচ্ছে হচ্ছে একবার ভালোবাসি বলতে। তোকে খুব ভালোবাসি জাওয়াদ। খুব হিংসা হচ্ছে আমার তোর প্রেয়সীর ওপর। কারণ এই অল্প জীবনে তুই আমাকে কতটা ভালোবাসা দিলি, তাহলে তুই তোর প্রেয়সীকে কতোটা ভালোবাসা দিবি সারাজীবন? আফসোস হচ্ছে! আমার ভাগ্যে সেটা কেন আল্লাহ লিখে দিলেন না?
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
ডায়েরিটা যতোক্ষণ পড়ছিলো ততক্ষণ কেঁপে কেঁপে কাঁদছিলো জাওয়াদ। চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে তার। হা করে নিশ্বাস নিচ্ছে সে। ঠোঁট কামড়ে যতোই কান্না থামাতে চাইছে ততোই কান্না বেড়ে যাচ্ছে। শরীরের প্রতিটি লোমকূপ যেনো কাঁদছিলো তার। ডায়েরিটা হাত থেকে বিছানার ওপর রেখে দু’হাতে চুল খামচে ধরে কাঁদে জাওয়াদ। যেদিন ডায়েরিটা প্রথম পড়েছিলো সেদিনও কেঁদেছিলো জাওয়াদ। খুব কেঁদেছিলো। রিয়াদকে জড়িয়ে ধরে এই ফ্লোরেই বসে চিৎকার করে কেঁদেছিলো। যতদিনে যে বুঝেছে যে সে মাহিকে ভুল বুঝেছে ততদিনে মাহি ওপারে পাড়ি জমিয়ে ফেলেছিলো। হ্যাঁ, জাওয়াদ মাহির কথা রেখেছিলো। সে কারো সাথে রাগারাগি করে নি। সেদিনের পর থেকে হাসিখুশি, দুষ্টুমি করা জাওয়াদ হয়ে গিয়েছিলো গম্ভীর, চুপচাপ। সেদিনের পর থেকে জাওয়াদ ছবি আঁকা ছেড়ে দিয়েছিলো। প্রতিযোগিতা জিতেছিলো ঠিকই, কিন্তু পরে কেউ তাকে আর এক্সিবিশন এ পাঠাতে পারেনি।

চোখ মুছে জোরে জোরে কয়েকবার নিশ্বাস নিলো জাওয়াদ। উঠে আস্তে আস্তে হেটে মাহির ছবিটার সামনে গেল যেটা তার দেয়ালে টানানো। পরম মমতায় হাত বুলালো সেটার ওপর। ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো, ‘দেবদাস হয়ে বসে থাকছিনা। দু’বছর পর তোরই মতো একটা পাগলি আমাকে আবার রঙ তুলি হাতে নিতে বাধ্য করলো। হ্যাঁ, ওকে দেখলে আমার বুক কাঁপে একইভাবে। পৃথিবী থমকে যায়, প্রেমের আগুন শিখায় আমি দগ্ধ হই। হাত বাড়িয়ে আমার ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করে। একইসাথে দুজনকে হৃদয়ে রাণী বানানো যায়? হ্যাঁ যায়৷ তুই আমার হৃদয়ের রাণী। আর ওকে আমার হৃদয়ের সাথেসাথে আমার জীবনের রাণী বানাবো। তোকে হারিয়েছি। ওকে হারাতে দেবোনা… দেবো না…’

বলে হেটে গিয়ে সেই ব্যাগটা হাতে নিলো জাওয়াদ, যে ব্যাগে মাহি ওর জন্য রঙ তুলি রেখেছিলো। তারপর সানসেট এর ওপর থেকে ইজেলটা বের করলো। সেটা মুছে ঠিক করে রাখলো। আলমারি থেকে খুঁজে আর্ট পেপার বের করলো। রঙ ঠিক করলো। তারপর… কাঁপা কাঁপা হাতে পেপারে আঁকতে লাগলো। রঙ তুলির প্রেয়সীকে…
___________

চলবে…….
@ফারজানা আহমেদ
একদিন গ্যাপ হলে আপনারা পেজে ম্যাসেজ দিয়ে জানতে চান কেন গল্প দেইনা। কিন্তু আমি কখন দেই না দেই আর না দিলে কেন দেইনা সব গ্রুপে বলে দেই। তাই, আপনারা চাইলে গ্রুপেও এড হয়ে নিন। গ্রুপ লিংক- https://www.facebook.com/groups/831432960641690/?ref=share

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে