#রঙিলা_বউ
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৩
–কি ভাবে মায়ার কান্না থামাবো মাথায় আসতেছে না।কিছু ভেবে না পেয়ে,মায়ার ঠোঁট জোড়ায় চুমু বসিয়ে দিলাম।মায়া চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!ধুর এতকিছু দেখার সময় নাই এখন।আগে আম্মুর হাত থেকে বাঁচি।
আম্মু অনেক ডাকাডাকি করলো।কিন্তু কোনো সারা পেলো না।পরে চলে গেলো।
এদিকে মায়ার ঠোঁট জোড়া যে দখল করে রেখেছি।সেই দিকে কোনো খেয়াল এই নেই আমার।হারিয়ে গেছি কোনো এক নেশার রাজ্যে।কতটা সময় যে মায়াকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছ,তা উপর ওয়ালাই জানেন!
একটু পর হুঁশ ফিরে এলো।আল্লাহ এ কি করছি আমি!
সাথে সাথে মায়াকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে গেলাম।
মায়া আমার দিকে ঘৃণার নজরে তাকিয়ে আছে!
মায়া সরি।বিশ্বাস করো কি ভাবে যে এমনটা করেছি।তা নিজেও জানি না।
–আপনি আসলেই মানুষ না।স্যার নামের নরপশু আপনি।নিজের স্টুডেন্টের উপরে জোর খাটাতে আপনার একটুও গায়ে বাঁধলো না?
–মায়া বিশ্বাস করো,তখন তুমি থামছিলে না দেখে এমনটা করেছি।কিন্তু কখন যে নেশা লেগে গেছে,সেটা নিজেও বলতে পারি না।প্লিজ আমায় ভুল বুঝো না।
–আপনাকে কোন নামে সম্মোধন করবো,তা আমি জানি না।কারন স্যার নামটাতে কলঙ্ক লাগিয়ে দিয়েছেন আপনি।তবুও স্যার নামেই সম্মোধন করছি।স্যার আপনি আসলেই ভালোর মুখোশ পড়ে সবার সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।ভিতর থেকে আপনি একটা হায়েনা।যেখানে তিশানের সাথে আমার রিলেশন।তাকেও শরীরে স্পর্শ করতে দেইনি।সেখানে আপনি তো পুরো ঝাঁপিয়ে পড়েছেন আমার উপরে।আপনার শরীরের প্রতি লোভ বেশি।আজকের পর আপনার জন্য মনের মধ্যে শুধু ঘৃণাই পুষে রাখবো।
–মায়ার কথা শুনে চোখ দু’টো নিচে নামিয়ে ফেললাম।
সে আমায় নির্লজ্জ প্রমাণ করে দিলো।এরপর আর ওর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার সাহস করতে পারবো কিনা কে জানে।জানিনা কি কারনে আমি ওর সাথে এমন আচরণ করেছি।এমন কোনো খারাপ ইচ্ছাই আমার ছিলো না।জীবনের প্রথম কারোর ঠোঁটে ঠোঁটে রেখেছি।হয়তো ঘোরটা সামলাতে পারিনি।নজরটা নিচের দিকে করে রুম থেকে বের হয়ে নিচে চলে গেলাম।
দুপুরেই হয়ে এসেছে।নিচে নামতেই মা বললো…
–কিরে তোরা দু’টোকে খাওয়ার জন্য এত করে ডেকে এলাম।কিন্তু কোনো সারা শব্দ পেলাম না।ঘটনা কি?
–না তেমন কিছুই না।দু’জনে কথা বলছিলাম।তাই হয়তো শুনতে পাইনি।
–আচ্ছা ধর নে,খেতে বসে যা।আমি বউমাকেও খেতে আসতে বলছি।
–মা,আমার একটু কাজ আছে।আমি পরে খাবো।তোমরা খেয়ে নাও।আর মায়াকেও খেয়ে নিতে বলিও।
–সে কি রে,কাজ আছে ভালো কথা।কিন্তু খেয়ে তো যাবি।
–মা আমার হাতে সময় নেই।যেতে হবে তাড়াতাড়ি।বলেই ঘর থেকে বের হয়ে আসলাম।কারন থাকলে মা জোর করবে খাওয়ার জন্য।আর আমার খাওয়ার কোনো ইচ্ছেই নেই।একটু আগেই মায়ার কথা শুনে পেট ভরে গিয়েছে।মেয়েটা তখন কান্না করছিলো!খুব খারাপ লাগছিলো ওর চোখের পানি দেখে।সব কিছুর ভিরে,আমারো চোখ জোড়া নোনাজল বের করতে পারতো।কিন্তু দমিয়ে রেখেছি।যখনি মনে হলো,যে আর দমানো সম্ভব নয়।তখনি বের হয়ে আসলাম ঘর থেকে।
মা,কে মিথ্যে বলেছি যে কাজ আছে।অথচ কোনো কাজ এই নেই আমার।ব্রিজের উপরে এসে বসে আছি।
চোখ জোড়া এবার তার কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে!
ইচ্ছে মত কাঁদলাম কতটা সময়।দুপুরের কড়া রোদটা চলে গিয়ে মিষ্টি রোদের আলোটা চোখে এসে লাগছে।
অনুমান করলাম,বিকাল হয়ে এসেছে।কারন দুপুর বেলায় সূর্য মামা কখনো মিষ্টি রোদের উত্তাপ দেয় না।
ব্রিজ থেকে উঠে গিয়ে গাড়িটা স্টার্ট করলাম।যতদূর চোখ যায়,আজ গাড়ি ড্রাইব করবো।ঠিক তাই করেছি।
নিজের শহর পেরিয়ে অন্য শহরে চলে এসেছি।বাসা থেকে বারবার ফোন করছিলো।বিরক্ত হয়ে ফোনটা অফ করে দিলাম।রাত একটায় বাসায় ফিরে আসলাম।
চোখ জোড়া অগ্নিশিখার মতন লালবর্ণ ধারণ করেছে।
মা দেখতে পেয়েই জিগ্যেস করলো…
–কিরে এতরাত অব্দি কোথায় ছিলি?
–কেনো আমার কি কোনো কাজ থাকতে পারে না নাকি?
–আমি কি তা বলেছি নাকি?
–তাহলে কোনো প্রশ্ন করবে না আর।
–আকাশ তোর কি কিছু হয়েছে?চোখ জোড়াও ফুলে আছে!
–মা,তোমায় সেদিন এই বলেছিলাম।যে তোমরা আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছো।সেই নষ্ট জীবন নিয়েই ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে।
–এবার আমার বুঝে এসে গেছে কি হয়েছে!
তোর আর মায়ার মাঝে কিছু হয়েছে।মেয়েটাও সারাদিন কিছু খায়নি।তুই ও এতরাত করে বাড়ি ফিরলি।
–বুঝতেই যখন পেরেছো,তাহলে কথা বাড়াচ্ছো কেনো।
আমাকে আমার মতন থাকতে দাও না।
–আকাশ হয়তো তোর জীবনের ডিসিশনটা তোকেই নিতে দেওয়া উচিৎ ছিলো।
–এটা এখন বলে কোনো ফায়দা নাই।সময় থাকতে আমার চারো হাত-পা বেঁধে দিয়েছিলে তোমরা।এত পরে এসে রিয়েলাইজ করছো।সেটা করা থেকে না করাই ভালো।বাদ দাও তো,এসব প্যারা আর ভালো লাগছে না।রুমে গেলাম।
তারপর রুমে চলে এলাম।
রুমে এসে দেখি মায়া ছোট বাচ্চার মতন ঘুমিয়ে আছে।
ওকে দেখতেই ওর বলা কথা গুলো মনে পড়ে গেলো।যে আমি হায়েনা।আমি স্যার নামের কলঙ্ক!সে হয়তো ঠিক বলেছে।আমি আসলেই হয়তো তাই।সারাদিন না খাওয়া।রাতের বেলায় ও না খেয়ে সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।সারারাত চোখের পাতা গুলো এক করতে পারিনি।ফজরের আজান হচ্ছে।তখনো চোখ জোড়া দিয়ে পানি পড়ছে।মনটাকে কোনো ভাবেই শান্ত করতে পারছি না।নাহ আজান হচ্ছে।উঠে গিয়ে নামাজ পড়ে নেই।হয়তো উপর ওয়ালা মনটাকে শান্ত করে দেবে।
নামাজ পড়ে হাত তুলে দোয়া করলাম।হায় আল্লাহ!আমি অনিচ্ছাসত্ত্বে ওর সাথে এমন আচরণ করেছি।
তুমি আমায় মাফ করে দাও।আর নিজে নিজে একটা প্রতিজ্ঞা করলাম।মায়াকে আমি ছয়মাস পর ডিভোর্স দিয়ে দিব।তার আগে ওকে যেই কষ্টটা দিয়েছি,সেটার জন্য মাফ করিয়ে নিব।আর কোনোদিন ভুলেও ওর শরীরে স্পর্শ করবো না।
সকালে বেলায় উঠে স্কুলে চলে গেলাম।
কাউকেই কিছু বললাম না।আম্মু ঠান পেয়েছে হয়তো।যে আমি ঘর থেকে বের হচ্ছি।উনি রুম থেকে বের হয়ে আসার আগেই আমি গাড়ি স্টার্ট করে চলে এলাম।
দোকানে নাস্তা করে নিয়েছি।চাইলে ঘর থেকেই নাস্তা করে আসতে পারতাম।কিন্তু আম্মুকে বুঝানোর ছিলো,যে তোমরা আমার জীবনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল করেছো।স্কুলে এসে আসে পাশের জায়গাটা ঘুরে ঘুরে দেখছি।আস্তে আস্তে স্কুল খোলার উপক্রম হলো।সবাই আসতে শুরু করেছে।হটাৎ তিশানকে দেখতে পেলাম।
এই তিশান এদিকে আসো..
–হা স্যার বলেন?
–কালকের বিষয়টার জন্য সরি।আর নিজেকে তৈরী করে রেখো।ছয়মাস পর তোমার সাথে মায়াকে মিলিয়ে দিব।
–স্যার কি বলছেন আপনি এসব!
–যা বলছি ঠিকই বলেছি।
–স্যার আপনার সাথে তো ওর বিয়ে হয়ে গেছে।তাহলে আমার সাথে ছয়মাস পর মিলিয়ে দিবেন মানি?
–ছয়মাস পর ডিভোর্স দিয়ে দিব মায়াকে।আর তোমাদের মাঝে তো সম্পর্ক আছেই।আমি চাইনা আমার জন্য কেউ কষ্ট পাক।
–স্যার সব কিছু সাইডে রেখে আপনাকে একটা কথা বলি?
–হা বলো।
–আপনার চোখে অন্যকিছু দেখতে পাচ্ছি আমি!
আপনার কথার সাথে চোখের মিল পাচ্ছি না।চোখ বলছে এক রকম কথা।আর মুখ দিয়ে তার বিপরীত বের হচ্ছে।
–কি বলতে চাইছো তুমি?
–স্যার আপনার স্টুডেন্ট হলেও আমি মানুষ।হয়তো আপনি স্যার,আপনার থেকে বয়স বা মেধা দু’টোই কম।তবে ফিল করার ক্ষমতা আছে আমার।কিছু ফিল করছি আমি।
–তোমার কথার অর্থ বুঝে আসছে না আমার।
–স্যার তেমন কিছু না।আমি মায়াকে বিয়ে করতে রাজি।তবে আগে ছয়মাস শেষ হোক।পরের টা পরে দেখা যাবে।এখন যাই স্যার ঘন্টা বেজে গেছে।
ক্লাস করাচ্ছি।কিন্তু কোনো ভাবেই মন বসাতে পারছি না স্কুলে!কোনো রকমে স্কুল টাইম শেষ করলাম।
বের হয়ে আসবো স্কুল থেকে।তখনি দেখি মায়া আর তিশান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছে।নাহ,আজ আর কোনো কিছুই বলবো না ওদের।সোজা স্কুলের গেইট চলে বাহিরে বের হয়ে আসলাম।মায়া আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিলো!ভেবেছিলো হয়তো আজও কিছু বলবো।কিন্তু কিছুই বলিনি আমি।
এসে গাড়িতে উঠে পরলাম।গাড়ি স্টার্ট করবো,তখনি আমার প্রাণ প্রিয় স্টুডেন্ট মাহি আমায় ডাক ছিলো।
যে পড়ালেখায় খুব ভালো।পুরো স্কুলে কেউ যদি থাকে
প্রাউড করার মতন।তাহলে একমাত্র মাহিই আছে।
হা মাহি কিছু বলবে..?
–স্যার পড়ার বিষয়ে একটু সাজেশন দরকার ছিলো।
— হা বলো?
মাহির সাথে পড়ার বিষয়ে আলোচনা করছিলাম।
অন্যদিকে মায়া আর তিশান সেই জায়গাটায় দাঁড়িয়ে গল্প করছে।
–তিশান তোমার সাথে একটা জরুরী কথা আছে!
তুমি শুনলে একদম অবাক হয়ে যাবে।মানুষটা আমার সাথে কি করেছে জানো?
–তার আগে তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।তুমি শুনলে হয়তো আমার থেকেও বেশি অবাক হবে!
–কি কথা?
–আকাশ স্যার সকালে আমায় বলেছে,যে ছয়মাস পর তোমাকে আমার হাতে তুলে দেবে।
–কি বলছো এসব?উনি সত্যিই তোমাকে এমনটা বলেছে?
–হা সত্যিই।
–যাক তাহলে হায়েনাটার হাত থেকে মুক্তি পাবো।
আস্তো একটা খাটাশ।সে আমায় তোমার হাতে তুলে দিক বা না দিক।আমি নিজেই তোমার কাছে চলে আসবো।
–মায়া,পাগলামোটা যেখানে সেখানে মানায় না।
একটা কথা কি জানো?অনেক সময় সাময়িকের সম্পর্ক গুলা রিয়েল লাইফ টাকে বরবাদের দিকে ঠেলে দেয়।যেটা হয়তো পরে ফিল করা যায়।তখন আফসোস করেও সেটা সংশোধন করা যায় না।আর অনেক সময় মানুষের চোখ দেখেও অনেক কিছু ফিল করা যায়।তখন মনে হয় আমার থেকেও মানুষটার কাছে জিনিসটা বেশি হেফাজতে থাকবে।আজ আমিও সেটা ফিল করেছি।
–তিশান মানে কি এসবের?
–মানে বুঝতে চাও?
তাহলে উদাহারণ স্বরূপ বুঝিয়ে দিচ্ছি।ঐ যে দেখো স্যারের গাড়ির সামনে মাহিকে।সে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়ার কথা জিগ্যেস করছে।কিন্তু মেয়েটার ভিতরে স্যারকে নিয়ে হাজারো ভালোবাসা জন্ম নিয়ে আছে।কিন্তু স্যার তার সেই দিকটাকে দূরে সরিয়ে ভালো কিছু ভিতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে।স্যারের কাছে এসবের পাত্তা নেই।
–এটা দিয়ে কি মানে বুঝালে তুমি আমাকে?
–এখনো বুঝে উঠতে পারোনি তুমি।তাহলে লোকাল ভাষায় বলি।স্কুলের অনেক মেয়েই স্যারের পার্সোনালিটি এবং উনার কথাবার্তার ধরণ দেখে স্যারকে পছন্দ করে।শুধু পছন্দ না,ভালোও বাসে।তার মধ্যে মাহিও একজন।কিন্তু তিনি কারোর ভালোবাসায় সারা দেন না।উনি হয়তো মন থেকে অন্যকাউকে ভালোবাসে।সেই অন্যকেউ টা কে,সেটা আজ সকালে উনার চোখ দেখে আমি পড়ে নিয়েছি।
–তিশানের কথা শুনে মুখ থেকে আর কোনো শব্দ বের হচ্ছে না।তিশান যে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে আমাকেই মিন করেছে,সেটা আমার আর বুঝতে বাকি নেই।আর কোনো কথা না বাড়িয়ে দৌড়ে চলে গেলাম স্যারের কাছে।গিয়ে সোজা উনার গাড়িতে উঠে পড়লাম।
এই মাহি,কাজ শেষ হলে যেতে পারো।তোমার স্যার আর আমি বাড়ি যাবো।
মাহি চলে গেলো।
–মায়ার আচরণ দেখে,পুরাই বাকরুদ্ধ হয়ে আছি আমি!কিছুই বললাম না।মায়ার কথা মতন গাড়ি স্টার্ট করলাম।মায়া চুপচাপ বসে আছে।আর আমি গাড়ি ড্রাইভ করছি।নাহ,এটাই হয়তো ভালো সুযোগ।ওর থেকে মাফ চেয়ে নেই।কালকের ঘটনাটার জন্য।
মায়া একটা কথা বলার ছিলো..
–কোনো সারা শব্দ নাই।
–মায়া,কথা বলবে না তুমি আমার সাথে?
–তাও কোনো সারা শব্দ নাই।
–আচ্ছা কথা বলতে হবে না।তবে আমার কথাটা শোনো।তাতেই হবে আমার।মায়া দ্বিতীয় বারের মতন ক্ষমা চাইছি আমি।আর কোনোদিন ওসব আচরণ করবো না।ছয়মাস পর তো তোমায় ডিভোর্স দিয়ে দিব।যতদিন আছো,ততদিন তোমার মর্যাদা রক্ষা করবো।অমনধারা আচরণ আর কখনো করবো না।তুমি তো ছয়মাস পর চলে যাবে।তার আগে যদি তোমার থেকে নিজেকে মাফ করিয়ে নিতে না পারি।তাহলে জীবনে কখনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না।
–তাও কোনো সারা শব্দ নাই।মূর্তির মত বসে আছে সে।
–মায়ার খামোশি দেখে ভিতরটা ফেটে যাচ্ছে।মানুষটার সাথে কত বড় অন্যায়টা না করে ফেলেছি আমি।এসব ভাবতেই চোখ জোড়া দিয়ে জ্বল বেড়িয়ে এলো!
চোখের পানিটা মুছে নিলাম সাইড করে।যাতে সে দেখতে না পায়।
–মানুষটা কি কাঁদছে।মানুষটা হয়তো নিজের খারাপ আচরণের জন্য অনুতপ্ত!কিন্তু মানুষটার সাথে কথা বলার বিন্দু পরিমাণ ইচ্ছে আমার নেই।যদিও মানুষটার কান্না দেখে খারাপ লাগছে।
–মায়ার মনটা আসলেই পাথর!
যত পাথর হওনা কেনো।মাফ তো আমি করিয়েই ছাড়বো।বাসায় পৌঁছে গেছি।
আম্মু গাড়ির আওয়াজ শুনেই দৌড়ে আসলো।
এসে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিলো।
–নের ধর তোদের ব্যাগ।এটার মধ্যে দুজনের কাপড় চোপড় আছে।সোজা মায়ার বাসায় চলে যা।মায়ার বাবা ফোন করে তোদের দুজনকে পাঠিয়ে দিতে বলেছে।দুপুরে খাবারের আয়োজন করেছে সেখানে।
–কোনো কথা বললাম না।চুপচাপ গাড়ি স্টার্ট করে মায়াকে নিয়ে ওর বাবার বাড়ি চলে আসলাম।
অনেক মানুষ জামাইকে দেখতে এসেছে।সেখানে পৌছাঁতেই সবাই এগিয়ে আসলো।খুব আপ্যায়ন করছে আমার।নতুন জামাই বলে কথা।কিন্তু ভিতরে ভিরতে তো আমি ঠুকরে মরছি।আমাকে একটা রুমে বসানো হলো।চুপচাপ বসে আছি।মায়ার কাজিনরা এসে আমার সাথে টুকিটাকি কথা বলার চেষ্টা করছে।আমিও ভদ্রতার খাতিরে টুকিটাকি কথা বলছি।একটু পর মায়া আমার রুমে আসে।এসে চুপচাপ আমার পাশে বসে আছে।হুট করে ওর এক কাজিন এসে আমায় জড়িয়ে ধরলো!
আর বলতে লাগলো..
— দুলাভাই আপনি না সেই কিউট।
–আমি তো পুরা “থ”!
এটা দেখে মায়া সেই রেগে গেলো!
–আলিশা তুই উনাকে ছাড়।না হয় কিন্তু কান গরম করে ফেলবো!
–কাজিনটা সাথে সাথে আমাকে ছেড়ে দেয়।
–এই আপনি আমার রুমে আসেন,বলে হাত ধরে টানতে টানতে রুমে নিয়ে গেলো।চোখ গুলা আগুনের লাভার মতন জ্বলজ্বল করছে তার।রুমে নিয়েই ঠাসসস করে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিলো গালে!অবাক চোখে তাকিয়ে আছি মায়ার দিকে!
চলবে…?
ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।