রঙধনু পর্ব তেরো (Season02)

0
1844

রঙধনু?

দ্বিতীয়বার

তৃধা মোহিনী(মৃন্ময়ী)

পর্ব তেরো

?

মোহকে মাদুর পেতে গার্ডেনে বসিয়ে রেখেছে এভ্রিল,তার পাশে ফারিহা বসে আছে,সে বিভিন্ন আঙ্গিকে ছবি তুলতে ব্যস্ত..আশেপাশে অনেক মেয়েরাও তাই তুলছে,মোহ নার্ভাস ভাবে আছে।।

“ডোন্ট গেটিং নার্ভাস বেবি!!”এভ্রিল মোহর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।।

ফারিশ কে দেখতে দিবে না কেওই মোহর চেহারা,বেচারা ঘরে বসে বসে নাক ফুলিয়ে আছে।।

গায়ে হলুদ লাগানো শেষে মোহ একটু হলুদ নিজের হাতের মুঠোতে নিলো,গোসল করাতে হবে মোহকে এইজন্য সবাই তাকে উপরে নিয়ে যাচ্ছে।।

ফারিহা মোহকে ঘরে রেখে নিজের ঘরে গেলো ফ্রেশ হতে,এদিকে মোহ ফারিহা যাওয়াতে হাফ ছেড়ে বাঁচলো মনে হচ্ছে..সে পা টিপে টিপে ফারিশের ঘরে গেলো,ফারিশের ঘরে যেয়ে দেখলো..ফারিশ নাক ফুলিয়ে উদাম গায়ে হাফ প্যান্ট পরে ডাম্বল উঠা নামা করছে,বুকের তার বিন্দু বিন্দু ঘাম..এরকমভাবে দেখে মোহর ভিতর টা একটু ধুক করে উঠলো..নিজেকে সামলে নিয়ে ফারিশের সামনে গিয়ে দাড়ালো সে।।

ফারিশ চোখ তুলে যখন দেখলো মোহকে,বিশাল রকমের ধাক্কা খেলো..হলুদ শাড়িতে,গালে হলুদ ছোয়ানো আছে দেখেই তাকে আবেদনময়ী লাগছে,হালকা একটু ঢোক গিললো..ফারিশ দাড়িয়ে গেছে,আস্তে আস্তে পা ধীর পায়ে মোহর দিকে এগুচ্ছে সে মোহর দিকে,ফারিশের এমন একটু পর পর কাছে আসা মোহর ধুকপুকানি পরিমানটা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে..ফারিশ সামনে এসে মোহর ঘাড়ে নাক ডুবালো,মোহ নিজে যা করতে এসেছে তা ভুলে গেছে..শিউরে উঠলো ফারিশের এমন আচরনে।।

“এইভাবে পাগল করলে,পাগলের সামলাতে পারবে ত??” ফারিশ কেমন ঘোর লাগা কন্ঠে বলে উঠলো।।

এমন কথা শুনে মোহ আরো মনে হচ্ছে নেতিয়ে পরলো,কাঁপা কাঁপা হাতে মোহর হাতে থাকা হলুদ ফারিশের দাড়িভর্তি গালে ছুয়ে দিলো,গালে ঠান্ডা কিছু পরাতে ফারিশ ভ্রু কুচকে ফেললো..সামনে আয়না থাকা ফলে সে দেখতে পেলো তার বউ তাকে হলুদের ছোয়া দিয়েছে,মুচকি হাসি দিলো..এদিকে মোহ হলুদ লাগিয়ে মাথা নিচু করে আছে লজ্জায়।।

আয়নাতে মোহর পিঠ দেখা যাচ্ছে যা লাল ফিতা দিয়ে আবদ্ধ,ফারিশ নিজের গালে থাকা হলুদ একটু হাতে নিয়ে মোহর পিঠে একটু ছোয়ালো,তারপর পেটে শাড়ির সরিয়ে সেখানে,অবশেষে দুই গালে ছোয়ালো..এরকম ছোয়াতে মোহ বারবার শিউরে উঠছে।।

“তুমি ছোয়ালে,আমি কি করে নিজেকে কন্ট্রোল করে থাকি বলো??” ফারিশ মোহর ঠোটে টুপ করে চুমু খেয়ে বললো..মোহ লজ্জায় ফারিশের উদাম বুকে মুখ লুকালো,ফারিশ ও আবেশে তাকে জড়িয়ে ধরলো।।

সন্ধ্যাবেলা,

জাকজমক হয়ে চারদিকি ফাজ বংশের বাড়ি..নানান লোক আসছে বিভিন্ন দিক থেকে সব হাইক্লাস ফ্যামিলি থেকে লোক এসেছে,সুলেমান আর এভ্রিল আজ সেইভাবে ওয়েলকাম করছে..রাজা আর রানীর থেকে কোন অংশে কম লাগছে না তাদের।।

এদিকে ফারিহা আর মোহ পার্লারে গেছে,এখনো আসে নি..ফারিশ ব্ল্যাক আর নেভিব্লু মিক্স কালারের স্যুট পরে আছে,হাতের ঘড়ি ঠিক করতে করতে আসছে..মেয়ে মানুষের কয়েকটা হার্টবিট মিস হয়ে গেছে,উফফ বলে একে অপরের গায়ে তার লুটিয়ে পরলো।।

“মা ওরা এখনো আসে নি” ফারিশ মোহকে দেখতে না পেয়ে নাকি ফুলিয়ে বললো।।

“হ্যাভ সাম পেসেন্স মাই সান?মেয়ে মানুষের সাজে একটু সময় লাগে,তার উপর এই নতুন জীবনে পা দিচ্ছে একটু ত নিজেকে তৈরি করতে লাগবে তাই না?” এভ্রিল হাত দিয়ে হালকা ফারিশের চুল ঠিক করে দিয়ে বললো হেসে।।

সুলেমান এগিয়ে আসলো ছেলের দিকে,ছেলের টাইটা মিছে মিছে ঠিক করে দিলো.. লাগছে একদম সুলেমানের পুত্র,এভ্রিল ভ্রু কুচকালে সুলেমান ভড়কে যেয়ে বললো।।

“হেহে!!আমাদের পুত্র”

এভ্রিল মুখ সাইড করে ফিক করে হেসে দিলো।।

আধঘন্টা পর,

গাড়ি এসে থামলো ফাজ ম্যানশনের সামনে,সেইখান থেকে নামছে কালো লেহেঙ্গাতে ফাজের ছোট রাজকন্যা ফারিহা..এরকম সাজে ফারিহাকে একদম পরির মতো লাগছে,নিজের ভারী লেহেঙ্গা ধরে নামছে..কোনমতে নেমে আরেকটা গেট খুললো ফারিহা,সেইখান থেকে জাকজমক পরা হাই হিল পরে নামছে লাল ভারী লেহেঙ্গাতে মোহ..মোহর নামা দেখদ ফারিশ দ্রুত পদে যেয়ে দেখলো,মোহকে দেখে তার হার্ট এতোজোরে বিট করছে মনে হচ্ছে ঢোল বাজছে,হাত বাড়িয়ে মোহকে নামালো..মোহকে দেখে সবাই এতো প্রশংসা শুরু করলো যে মনে হচ্ছে আকাশ থেকে লাল টুকটুকে পরী নেমে আছে..ফারিশ স্টেজে নিয়ে গেলো মোহকে,ওকে বসিয়ে দিয়ে নিজ্ব বসলো..মোহর উপর থেকে ফারিশের নজর মনে হচ্ছে সরছেই না,নিজেকে কেমনি লাগছে মোহর..তার উপর ফারিশের চাহনি তাকে আরো লজ্জায় ফেলছে কিন্তু ফারিশের কাছে মোহর এই রুপ একদম ভিন্ন লাগছে,চোখের ক্লান্তি মিলবে না এতো দেখলেও।।

এদিকে ফারিহা লেহেঙ্গা সামলাতে সামলাতে এগোচ্ছে ড্রিংক্সের কাছে,গলাটা শুকিয়ে গেছে তাই কোক খাওয়ার জন্য যাচ্ছে।।

ফারিহা হাটতে হাটতে স্যান্ডেলে বেধে পরবে ওই মুহুর্তে কেও যেন তার কোমরটাকে অনেকটা শক্ত করে ধরে আছে,ফারিহা চোখ বন্ধ করে ফেলেছে..চোখ যখন খুললো সামনে থাকা ব্যক্তিটিকে দেখে তার কয়েকটা হার্টবিট মিস হলেও,ভয় পেয়েছে দ্বিগুন রুপে।।

“মিস্টার ব্লুটুথ!!” ফারিহা অস্ফুটস্বরে বললো।।

হ্যা ফারিহা নুহাসের বুকের উপরে পরেছে,ব্ল্যাক স্যুটে নুহাস কে এতোবেশি সুন্দর লাগছে যে এই প্রথম ফারিহার মনে কোন ছেলেকে মনে ধরলো..কিন্তু সে ভয় পেয়েছে নুহাসের রক্তিম চাহনি দেখে।।

নুহাস ফারিহার কোমরে অনেক জোরে চাপ দিয়ে কিছুটা আচড় কেটে দিলো নখ দিয়ে,ফারিহা আউচ বলে উঠলে,নুহাস তাকে দাড় করিয়ে কানে মুখ নিয়ে বললো,

“গেট রেডি ফর পানিশমেন্ট বেবি!”

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে