রঙধনু?
দ্বিতীয়বার
তৃধা মোহিনী(মৃন্ময়ী)
পর্ব চৌদ্দ
?
রিসেপশনে সবাই উপস্থিত থাকলেও ফারিশের ফুফু আসেন নি,এই নিয়ে যদিও তাদের মধ্যে কোন মাথাব্যাথা নেয় কিন্তু তাদের মধ্যে যে আত্নীয় রা উপস্থিত আছে তাদের মাঝে কানাঘুষা চলছে ইতিমধ্যে।।
ফারিশ আর মোহর বিভিন স্টাইলে ছবি তুলছে ফটোগ্রাফার, মোহ ত পারছে ফারিশ তাকে ধরে ধরে শিখাচ্ছে..সবার নজর ওই কাপলদের দিকে।।
এদিক্ব ফারিহা কোমরের জ্বলনে নুহাসকে মনে মনে একশোটা গালি দিলো কিন্তু নুহাসের হ্যান্ডসাম লুক মনে পরতেই,ফারিহা কেমন যেন হারিয়ে যাচ্ছে..ফারিহা নিজের লেহেঙ্গাটা তুলে মেইন পয়েন্টের দিকে গেলো সেখানে দেখলো নুহাসকে ঘিরে অনেক মেয়েরা কথা বলছে,অনেকে গিলেও খাবে এমন বিহেভিয়ার করছে..নুহাস একবার ফারিহার দিকে তাকিয়েও মুখ ঘুরিয়ে নিলো..এতে ফারিহা আরো মনে হচ্ছে জ্বলে উঠলো..মেজাজ তার সপ্তমে উঠে গেলো সে ওখান থেকে সরে গিয়ে নিজের বাবা মায়ের কাছে গেলো।।
ফারিহা তার বাবা মায়ের কাছে গিয়ে জানতে পারলো নুহাস তার বাবার একমাত্র বেষ্টফ্রেন্ডের ছেলে..এইজন্য সে ভাবলো পার্টিতে ইনভাইটেশন পেয়েছে,ফারিহাকে নুহাসের মায়ের অনেক পছন্দ হয়েছে..মোহকে দেখেই নলে উঠছে,”কি মাসুম”
ড্রিমলাইটের আলো জ্বলে উঠলো,সবাই মেইন পয়েন্টে নিজেদের পার্টনানের সাথে হাজির হলো,মোহ লেহেঙ্গা নিয়ে যেতে পারবে না দেখে ফারিশ সবার সামনে কোলে নিয়ে তুলে নিয়ে গেলো..মোহ ত লজ্জায় পারে না মাটি ফাক আর সে ঢুকে যাক..ডান্স ফ্লোরে এসে মোহকে নামালো..মোহর কোমর ধরে কাছে টানলো ফারিশ,এদিকে মিউজিক অন হয়ে গেছে।।
“তেরে দিল কো মেরে দিল কি জারুরাত হে”
“মেরে দিল কো তেরে দিল কি জারুরাত হে”
(বাকি গান নিজ দায়িত্ব ইউটুব চালিয়ে শুনিয়া নিবেন)
এদিকে নুহাস ফারিহার সামনে অন্য মেয়েকে নিয়ে ডান্স ফ্লোরে নেচে উঠছে,মেয়েটা পারে না নুহাসের বুকের উপর উঠে যায়..নুহাস ও তাল মিলিয়ে নাঁচছে।।
এদিকে ফারিহার গায়ে মনে হচ্ছে কেও কেরোসিন ঢেলে দিয়েছে,রাগে তার গা রি রি করছে।।
“চুমু খালি আমাকে,কোমর ছিললি আমার..আর নাচ করছিস এই ঢঙীদের সাথে,আবার আমার সম্পত্তি ভালোবাসা বিভিন্ন কিছু যাচাই করিস” ফারিহা মনে মনে বলছে।।
ফারিহা দেখলো তার একটা কাজিন বসে আছে চেয়ারে,সে সেখানে যেয়ে ওর হাত ধরে ডান্সফ্লোরে নিয়ে যেয়ে ওর হাত কোমরে রেখে ডান্স শুরু করলো..বেচারা কাজিন ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেছে কারন সে জানে ফারিহা কাওকে ঘেষতে দেয় না আজ কেন?পরিস্থিতির জন্য তালে তাল মিলিয়ে নাচলো সেও।।
নুহাস ফারিহার এমন কর্মকাণ্ডে এতোবেশি রেগে গেছে যে সে ডান্সফ্লোর ছেড়ে বারে বসে ড্রিংক্স করছে,যতবেশি খাচ্ছে ততবেশি তার রাগ উঠছে..ফারিহার দিকে রেগে এগোতে যাবে তার আগেই ফারিহা নিজের কি একটা আনতে নিজের রুমে দিকে যাচ্ছে,নুহাস এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো সেও ফারিহার পিছু নিলো।।
ফারিহা ঘরে একটা গিফট নিতে আসছিলো,পিছু ফিরে দেখলো নুহাস দরজা লাগালো,ফারিহা ভড়কে গেছে+ভয় পেয়ে গেছে..হাতে থাকা গিফট বক্স টাও পরে গেছে..নুহাস এগোচ্ছে ফারিহা পিছুচ্ছে..এক সময় ফারিহা দেয়ালে চেপে গেলো,নুহাস নিজের মুখ ফারিহার কানের কাছে নিয়ে গেলো।।
“এই ব্ল্যাক ড্রেসে তোমাকে অনেক আবেদনময়ী লাগছে জানো??” নুহাস কেমন করে বললো।।
ফারিহার কান গরম হয়ে গেছে নুহাসের এমন কিছু দেখে,সে সরাতে চাইলে নুহাস আরো এগিয়ে এসে ফারিহার উপর ভর ছাড়ে।।
“বলেছিলাম পানিশমেন্ট আছে তারপরেও অন্য ছেলের হাত নিজের কোমরে রাখতে দিয়েছো?” নুহাস কথাটা বলে ফারিহা কোমরটা চেপে ধরলো অনেক শক্ত করে,ফারিহা ব্যাথা পেলেও আওয়াজ করলো না।।
“নিজে যে কোমর দুলাইয়া নাচছিলেন তখন?” ফারিহা রাগে বললো।।
“ওহ বেবি জেলাসি?” নুহাস বাকা হাসি দিয়ে বললো।।
“হাহ?ইন ইউর ড্রিমস” ফারিহা কথাটা বললেও,নিজেও জানে নুহাসের কাজের জন্য সে রেগে তার কাজিনকে নিয়ে নাচ করছিলো।।
“সো রেডি?” নুহাস ফারিহাকে বলে,ফারিহা চোখ তুলে তাকালে,নুহাস ফারিহার ঠোটে নিজের ঠোট আবদ্ধ করে নিলো..ফারিহার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো,বুক ঢিপঢিপ করছে খুব জোরে..বেসামাল লাগছে কেন??তার হাত টা কখন যে নুহাসের ঘাড়ে চলে গিয়েছে সে নিজেও জানে না কিন্তু আচমকা নুহাস ফারিহাকে ছেড়ে দিলো, ফারিহা নিজেও অবাক সে কি করছিলো আর নুহাসের এমন রুপে।।
“তোমার কাছ থেকে আজ, এখন বরং এই মুহূর্ত থেকে সবকিছু ত্যাগ করলাম..তোমাকে বিরক্ত করার দূরের কথা,তোমার চেহারাও এই নুহাস চৌধুরী কোনদিন দেখবে না” নুহাস কথাটা বলে গটগটিয়ে বেরিয়ে গেলো।।
এদিকে ফারিহা মেঝেতে ধপ করে বসে পরলো,তার যেন বুক ফেটে কান্না আসছে..কেন?নুহাসের কথাগুলো তার বুকে তীরের মতো বিধেছে,কি আছে এর পরিনতী?
এদিকে রিহান এসেছে মোহর কাছে,রিহান কে দেখতে পেয়ে মোহর খুশি দেখে কে..মোহর এমন খুশি দেখে ফারিশ ও অনেক খুশি..রিহান এসে জানালো ফারিশ তাকে নিয়ে এসেছে,তার পরনে পিচ্চি মানুষের পিচ্চি স্যুট..রিহান এসে কত কথা বললো..তার নাকি ফারিশকে অনেক পছন্দ হয়েছে,তারা দুজন বেষ্ট ব্রো হয়ে গেছে..রিহানের সব খরচ ফারিশ নিয়েছে,ভালো স্কুলে এডমিট করিয়েছে..নিউ ইউনিফর্ম, ফিবসব দিয়েছে..সেলিনা আর মোহর সৎমা মাফ চাইলেও ফারিশ করে নাই,সেই তাদেরকে তার বাড়ির ত্রিসীমানায় আসতে না করেছে..কারন উনারা মোহর সাথে যেটা করেছে ফাসিতে ঝুলালেও কম হবে,শুধুমাত্র মোহর কথাতে কিছু করলো না..দুই ভাই বোন মিলে সেই গল্প করছে..রিহান আজ থাকবে তাদের বাড়িতে।।
রিসেপশন শেষ হলো..বাসর রাতে নতুনভাবে সাজিয়েছে তাদের..মোহ বেডের মাঝে বসে আছে,ফারিশ এসে আগে কোলে তুলে নিলো..মোহ ফারিশের গলা জড়িয়ে ধরলো..মোহকে নামিয়ে ফারিশ একটা একটা করে গয়না খুললো,চুমু দিচ্ছে সারা শরীরে।।
“ওয়াদা করো??সারাজীবন পাশে থাকবে ত?” ফারিশ ঘোর লাগা কন্ঠে বলল,মোহ ইশারায় সম্মতি দিলো..শুরু হলো তাদের ভালোবাসা ময় রাত।।
সেদিনের পর নুহাস আর সামনে আসতো না ফারিহার,ফারিহা যখন মনে হতে লাগলো হ্যা সে নুহাসকে ভালোবেসে ফেলেছে তখন কন্টাক্ট করার ট্রাই করে কিন্তু তার আগেই নুহাস তার নাম্বার ব্ল্যাকলিস্টে ফেলে দিয়েছে..অফিসে ফারিহা গেছে,সেখান পর্যন্ত অপমান হয়ে ফিরে এসেছে..কি হবে এদের পরিনতি এখন।।
চলবে?