রঙধনু?
দ্বিতীয়বার
তৃধা মোহিনী(মৃন্ময়ী)
পর্ব এগারো
?
সকালবেলা,
সবাই ডাইনিং এ বসে খাচ্ছে,মোহ ও খাচ্ছে…চুল ভিজার কারনে মোহর মাথায় ঘোমটা দিয়ে আছে,চুলের গোড়া দিয়ে টপটপ পানি পরছে..ফারিশ এক নজর স্নিগ্ধ চোখে তাকালো,আর ভাবলো কখনো কোন দিক ভুল করে হলেও যেন সে তার মোহকে কষ্ট না দেয়।।
সবার খাওয়া শেষে অফিসের উদ্দেশ্য রওনা দিলো..ফারিশ মোহকে একবার ডেকে গেলো যে উপরে তার দরকার।।
মোহ কাজ শেষে উপরে গেলে,ফারিশ ঝড়ের গতিতে মোহকে নিজের সাথে চেপে ধরলো..মোহ ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেছে কি হলো এমন।।
“কখন ডাকছি?কখন আসছো?” ফারিশ মোহর মুখের কাছে ফু দিয়ে কথা বললো।।
ফু পরায় মুখে মোহ একটু দেবে গেলো,কাপা কাপা ভয়েসে বললো,
“পাঁচ মিনিট ত লেট হয়েছে,নিচের কাজ গুলো গুছাচ্ছিলাম ত এইজন্য”
“পাঁচ মিনিট?আমি ত পাঁচ সেকেন্ডে দূরে থাকতে চাই না” ফারিশ বাচ্চাদের মতো ফেস করে।।
ফারিশ এমন কথা আর মুখ ভঙ্গিমা দেখে মোহ ফিক করে হেসে দিলো,এই সুযোগে ফারিশ তার পরি ঠোটে নিজের ঠোট আবদ্ধ করে দীর্ঘক্ষণ চুমু খেলো।।
“আচ্ছা লিসেন?আমি অফিসব যাওয়ার সময় আর বাসায় ফিরে আসলে যেন তোমাকে পাই?যাই কাজ থাকুক,আগে আমি হবো তোমার কাছে প্রথম??গট দিস?” ফারিশ মোহর হাত ধরে বললো।।
মোহ ও মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো,মোহর কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে ফারিশ অফিসের উদ্দেশ্য রওনা দিলো নিজের বাবাকে নিয়ে।।
ফারিহা তার মায়ের সাথে বেরিয়ে গেলো,এভ্রিল হাসপাতাল যাওয়ার পথে ফারিহাকে নামিয়ে দিবে..মোহ বাড়িতে একা থাকবে যেন কাজের মেয়ে ফুলিকে মোহর সাথে সর্বক্ষন থাকার জন্য কড়া আদেশ দিয়ে গেছে,মোহর জন্য ফারিশ একটা ফোন কিনেছিলো সেটাও দিয়ে গেছে..সে ত কল করবেই মোহকে কিন্তু মোহর যদি অসুবিধা হয়, ফোনে নাম্বার সেভ আছে কল করতে পারে..ওয়াইফাই কানেক্টেড করে দিয়েছে..মোহ আর কি করবে বসে বসে “বেবি বস” মুভি দেখতে শুরু করলো।।
ফারিহার ইউনিভার্সিটি যেয়ে তার মেজাজ তুঙ্গে উঠে গেছে,তার ফ্রেন্ড তাকে কল করে জানালো যে এতো নাম্বার রুমে তার ফ্রেন্ডরা আছে,সে যেন আসে।।
কিন্তু সে ক্লাসরুমে যেয়ে দেখলো তার ফোনকে মার্ডার করা ব্যক্তি চোখে সানগ্লাস দিয়ে বেঞ্চের উপর ইঠে বাকা হাসি দিয়ে ফারিহার দিকে তাকাচ্ছে..ফারিহার মেজাজ আরো জ্বলিয়ে দিয়েছে।।
নুহাসকে কিছু না বলে ফারিহা ঘর থেকে বের হতে যাবে,ওমনে ক্লাসরুমের দরজাটা বাইরে থেকে কে যেন লক করে দিলো..ফারিহা ত অবাক যে এমন কাজ করার সাহস পায় কিভাবে,নুহাসের দিকে তাকালে সে এখনো ওই ভঙ্গিতে আছে..নুহাসের পরনে গ্যাবাডিং এশ কালার,ক্রিম কালারের টিশার্ট, সামনে দুইটা বোতাম খোলা..চোখে সানগ্লাস..দেখতে যে গিলে খাওয়ার মতো লুক নিয়ে এসেছে সে বুঝায় যাচ্ছে।।
ফারিহা রাগী চোখে নুহাসের দিকে তাকিয়ে,ফোন করে কাওকে কল করতে গেলে,নুহাস তার আগে বেঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে এসে ফারিহার ফোন টা নিয়ে নিলো..ফারিহার বিস্ময়ে মুখ হা হয়ে গেছে।।
“এটা কি ধরনের ম্যানার্স??একটা ফোন ভেঙে দিয়ে কলিজাতে আপনার ঠ্যাডা পরে নাই?” চোখমুখ শক্ত করে বললো ফারিহা।।
“আর রাতের যে বিহেভিয়ার করেছিলা ওইটা কোন ধরনের ম্যানার্স”নুহাস বাকা ভাবে বললো।।
” রাতে কমনসেন্স বিহীন বেক্কল বেয়াদব অভদ্র আমার ফোনের খুনি স্পেশালি দ্যাট মিন ইউ মিস্টার ব্লুটুথ ফোন দিয়েছিলেন?” ফারিহা রাগী চোখে কথাগুলো বললো।।
ফারিহার এমন গালি শুনে নুহাস ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো,তার মাথার উপর দিয়ে গেলো যে সব বাদ দিয়ে ফোনের খুনি বানিয়ে দিলো??তার প্রেমে যে আমি খুন হয়ে ঝুলে আসি তার কাছে এইটা কি এই তিক্ত মেয়ে দেখে না??
“চুপ!!বেশি কথা বলো?এখন ত জেনেছো আমি ফোন দিয়েছি??এখন থেকে যখন ফোন দিব,তুমি রিসিভ করবা?ওকে?” নুহাস ফারিহার চোখে চোখ রেখে,মুখের উপর কথা গুলো বললো এক ইঞ্চ দুরত্ব রেখে।।
ফারিহা নুহাসের বুকে ধাক্কা দিলো,নুহাস একটু দূরে ছিটকে পরলেও সামলে নিলো..আগুন চোখে তাকাচ্ছে তার দিকে।।
“স্টে এওয়ে ফ্রম মি!!একদম জানে মেরে ফেলবো আমার ধারের কাছে ঘেষলে!!” ফারিহা রাগে বললো।।
নুহাস ফারিহার কথা শুনে তার মায়ের কথা মনে পরলো সে যদি কাচা মরিচ হয় তার বউ শুকনা মরিচ..জ্বলাটা একই..নুহাস বাকা হেসে ফারিহার দিকে তাকালো।।
“প্রমিস ইউ ধানিলংকা!!আমি এখন যা করবো এরপর থেকে আমার তোমার কাছে আসার প্রয়োজন পরবে বরং তুমি এই কাছে আসাটা নিয়ে আজকের পর থেকে ভাববে” নুহাস কথাটা বলে ধপাধপ পা ফেলে ফারিহাকে দেয়ালের সাথে আটকে,তার কাধ থেকে ব্যাগ ফেলে দিলো..এরকম ঘটনার শিকার ফারিহা প্রথকবার কোনকিছু বুঝে উঠার আগেই নুহাস তার ঠোট দিয়ে ফারিহার ঠোটকে চেপে ধরলো..ফারিহা মনে হচ্ছে পা দুটো আর জমিনে নেয়,শুন্য লাগছে নিজের ভারসাম্য.. এদিকে নুহাস অনেক তৃপ্তি মিটাচ্ছে,মনে হচ্ছে এই সময় টা থেমে যাক।।
২০মিনিট ওভার কিন্তু নুহাসের থামার কোন লক্ষন নেয়,এদিকে ফারিহা মনে হচ্ছে নেতিয়ে পরবে..হাতদুটো ও বাধা তার হাতের সাথে..চোখের কোনা দিয়ে হালকা পানি চিকচিক করছে।।
নুহাস যখন ছাড়লো ফারিহাকে,সে মেঝেতে পরার আগে নুহাস তার বুকের মধ্যে আবদ্ধ করে নিলো।।
এদিকে ফারিশ অফিস এসে ঘন্টায় চারবার ফোন করা হয়ে গেলো মোহকে,মোহ এরকম অনুভূতির কি নাম দিবে বুঝেও পায় না,ফারিশের এমন কর্মকাণ্ড মনে হচ্ছে এক অতল সমুদ্রে তাকে ডুবিয়ে দিচ্ছে।।
“এরপর থেকে আমাকে তোমার থেকে দূরে সরানোর আগে চিন্তা করবা?আমার সিলমোহর লাগালাম তোমার ওষ্ঠদ্বয়ে” নুহাস ফারিহার ঘাড়ে মুখ গুজে বললো।।
এদিকে ফারিহা যতবার উঠার চেষ্টা করছে নুহাস চেপে ধরে বসে আছে,উঠার শক্তি নেই কিন্তু এদিকে তার ছাড়ার নাম গন্ধ নেয়।।
“একবার উঠতে দে??তোর সিলমোহরের যদি বারোটা না বাজায় আর তোর ও ত দেখিস এই ফারিহা নাম নয় আমার” ফারিহা মনে মনে বলছে।।
“আমার বারোটা বাজার কথা ভাবলে তোমার যে আমি ২৪টা বাজাবো বা বাজাচ্ছি মাথায় রাখবা?” নুহাস বাকা হেসে ফারিহার থুতনীতে কামড় দিলো।।
ফারিহা আউচ বলে থুতনীতে হাত দিলো সেই সাথে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো নুহাসের কথা শুনে।।
চলবে?