রং বদল পর্ব-১৩ এবং শেষ পর্ব

1
2512

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_১৩ ও শেষ

বিকালের দিকে জান্নাতুন আর আমি চলে আসি আমাদের বাসাতে।এশা আমাদের দেখে বলতেছে,

ভাইয়া ভাবি তোমরা এসেছো,

দেখতেই তো পারতেছি তবুও বলতেছিস।

সামনে থেকে সর আমি তোকে বলি নি, আমার লক্ষী ভাবিকে বলেছি।ভাবি কেমন আছো,তোমাকে কতো মিচ করছি আমি জানো।

আলহামদুলিল্লাহ্ এবার এসেছি এখন আর আমাকে মিচ করতে হবে না।এশা মা-বাবা কই?

মা একটু আগে রুমের মধ‍্যে গেলো আর বাবা তো এখনো অফিস থেকে আসেনি।

ও তাহলে এশা চলো আগে মা সাথে রুমে দেখা করে আসি।

তোমরা দুইজন আমাকে একা রেখে কই যাচ্ছো।

কই যাচ্ছে মানে শুনতে পাও নাই তুমি,উপরে মার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।

আমিও যাবো তোমাদের সাথে।

ভাইয়া তুই যদি আমাদের সাথে উপরে মার রুমে যাস তাহলে এই ব‍্যাগ গুলো উপরে কে নিয়ে যাবে?

আমি এতো গুলো ব‍্যাগ একায় উপরে নিয়ে যেথে পারবো না,আমি বলি কি তোমরা দুইজনে আমাকে একটু সাহায্য করো ব‍্যাগগুলো উপরে নিয়েযেথে।

ছরি এগুলো আমাদের কাজ না।ভাবি তুমি চলো তো ভাইয়ার এমনিতে শক্তি বেশি একায় সব ব‍্যাগ নিয়ে যেথে পারবে।

তারপর ওরা দুইজনে চলে গেলো আমাকে রেখে।কি আর করার অনেক কষ্টে ব‍্যাগগুলো রুমে নিয়ে গেলাম।রুমের এক সাইটে ব‍্যাগ গুলো রেখে বিছানায় শুয়ে পড়লাম।

আসসালামুআলাইকুম মা, কেমন আছেন?

আরে বউ মা তুমি কখন আসলে।

এই তো মা একটু আগে আসলাম।মা আপনি কেমন আছেন?

আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো বউমা।ঈমান কই বউমা?

আপনার ছেলে রুমে গেছে।

ও তাহলে বউমা তুমিও রুমে যাও ফ্রেস হয়ে একটু রেস্ট করো তারপর না হয় আমার সাথে গল্প করিও।

ওকে মা,চলো এশা তাহলে।

তারপর এশা আর আমি মার রুম থেকে বাহির হয়ে নিজ নিজ রুমে চলে গেলাম।আমি রুমে এসে দেখি আমার স্বামী বিছানার উপরে শুয়ে আছে।

কি বেপার তুমি এভাবে শুয়ে আছো কেনো,ফ্রেস হও নাই এখনো?

হুম যাচ্ছি একটু রেস্ট নেই আগে,

তুমি ফ্রেস হয়ে এসে রেস্ট করো যতো খুশি।

আচ্ছা যাচ্ছি,

এখনে যাও,

আরে গরম দেখাচ্ছো কেনো যাচ্ছি তো,

হুম যাও।

তারপর আমি বাথরুমে ফ্রেস হতে চলে গেলাম।ফ্রেস হয়ে এসে আবারো বিছানায় শুয়ে পড়লাম।আমি ফ্রেস হয়ে আসার পরে জান্নাতুন ও ফ্রেস হতে চলে গেলো।কখন যে ঘুমাই গেছি নিজেই জানি না।ঘুম থেকে উঠি একবারে রাতে।রাতের খাওয়াদাও করে জান্নাতুন আর আমি বিছানায় শুয়ে আছি।

আমি তো কালকে থেকে অফিসে যাবো,আমাকে ছাড়া ভালো লাগবে তো তোমার।

ভালো লাগবে না কেনো তুমি তো আর একবারে যাচ্ছো না সকালে যাবে আর বিকালে আসবে।যখন খারাপ লাগবে তখন ফোনে কথা বলবো।আর সংসার করতে হলে তো কাজ করতেই হবে। যতোই স্বামী তার স্ত্রীকে ভালোবাসুক না কেনো স্বামী কাজ না করলে আজ হোক কাল বউ স্বামী কে ছেড়ে চলে যাবেই।

সেটাও ঠিক।আচ্ছা তাহলে এখন ঘুমাও আর কালকে আমাকে সকাল ৭ঃ০০ টায় ঘুম থেকে উঠে দিবে।

ওকে।

তারপর আমি জান্নাতুনকে জড়াই ধরে ঘুমানোর চেষ্ট করতেছি।কখন যে দুইজনে ঘুমাই গেছি জানি না।ঠিক ফজরের অজানের সময় ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।ওজু করে মসজিদে নামাজ পড়ে আসলাম।চারিদিকে এখনো হাল্কা অন্ধকার আছে।ঘড়িতে দেখি প্রায় ৫ঃ৩০ বাজতেছে অফিসের টাইম ৮ঃ00 তাই আবারো জান্নতুন এর পাশে শুয়ে পড়লাম কারন এখনো আটটা বাজতে অনেক টাইম আছে।

এই যে শুনচো,ঘুম থেকে উঠো সাতটা বাজতেছে তুমি না কালকে বললে তোমার অফিস আছে।

আরে এতো সকালে ডাকতেছো কেনো আর একটু ঘুমাই না।

সাতটা বাজতেছে আর বলতেছো এতো সকাল উঠো বলতেছি অফিসে না যাবে তুমি।

আর একটু ঘুমাই না।

আচ্ছা দাড়াও আমি বাথরুমে থেকে পানির বালতিটা আনতেছে।

তোমাকে আর পানির বালতি আনতে হবে না আমি উঠে পড়েছি।

এই তো ভালো ছেলে এখন তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে নিচে আসুন নাস্তা করতে।

ওকে তুমি যাও আমি যাচ্ছি।

ওকে।

বিছানা থেকে ঢুলতে ঢুলতে বাথরুমের দিকে যাচ্ছি।চোখ দুটো খুলতেই পারতেছি না এতো ঘুম চোখে ধরেছে।তারপর বাথরুমে গিয়ে চোখে পানি দিতে চোখে ঘুম পালিয়ে গেলো।ফ্রেস হয়ে সোজা রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে অফিসের ড্রেসটা পড়ে নিচে যাচ্ছি।নিচে এসে দেখি বাবাও বসে আছে নাস্তার টেবিলে।আমিও বাবার পাশে একটা চেয়ারে বসলাম।তারপর জান্নাতুন আমাকে আর বাবাকে নাস্তা দিলো আমরা খেতে শুরু করলাম।

আজকে থেকে তুই তো অফিসে যাবি তাই না।

হুম বাবা।

ঠিক আছে দেখে শুনে কাজ করবি।

এমন ভাবে বলতেছো মনে হয় আজকে প্রথম অফিসে যাচ্ছি।

আজকে প্রথম যাচ্ছি না তবুও দেখে শুনে কাজ করতে বলতেছি এই আর কি?

ওকে।নাস্তা শেষ করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে অফিসে যাচ্ছি।প্রায় তিরিশ মিনিট পরে অফিসে চলে আসলাম।অফিসের ভিতরে ঢুকতেই আমাকে সবাই দেখে সালাম দিচ্ছে আমারো ভালো লাগতেছে।অনেক দিন পরে অফিসে এসে ভালো লাগতেছে।সারাটা দিন চলে গেলো এর ভিতরে অনেকবার জান্নাতুন এর সাথে ফোনে কথা হয়েছে।সব সময় আমি খবর নিয়েছি কখন কি করতেছে?একজন স্বামীর দায়িত্ব সব সময় তার স্ত্রীর খবর নেওয়া।যে তার স্ত্রী বাসায় একা কি করতেছে?অফিস থেকে বাসায় ফেরার সময় রাস্তায় একটা ফুলের দোকার দেখতে পেলাম গাড়িটা এক সাইটে দাড় করিয়ে ফুলের দোকান থেকে বেশ কিছু ফুল কিনে নিলাম আমার বউকে উপহার দিবো দেখে।শুনেছিলাম বউকে নাকি মাঝে মাঝে গিপ্ট দিলে তাদের মনে স্বামী জন‍্য ভালো সৃষ্টিহয়।সেই জন‍্য নিয়ে যাচ্ছি আমার জন‍্য বউ এর মনে আরো ভালোবাসা সৃষ্টি করার জন‍্য।যাদের বউ আছে তাড়াও ট্রাই করতে পারেন।একটা মেয়ে কখনো বড় কিছু চায় না তার স্বামীর থেকে একটু ভালোবাসা আর একটু ছোট ছোট গিপ্ট দিবেন তাতেই তাড়া খুশি।
ফুলগুলো নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।ফুলগুলো লুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছি কারন যদি আমার বোন দেখতে পায় তাহলে সব ফুল ও কেড়ে নিয়ে যাবে।লুকিয়ে লুকিয়ে ফুলগুলো নিয়ে রুমের ভিতরে চলে গেলাম।রুমের ভিতরে ঢুকে দেখে আমার মহারনি আয়নার সামনে গুন গুন করে গান গাইতেছে আর লম্বা কেসগুলো চিরনি দিয়ে ঠিক করতেছ।আমি পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বলতেছি,

আমার বউটা কি করে?

আরে তুমি আগে বলবে না আমি তো ভয়ে পেয়ে গেছিলাম।আর কখন আসলে?

ভয় পাবে কেনো আর একটু আগেই আসলাম।

আচ্ছা বাদ দেও কিন্তু তোমার হাতে ওগুলো কি?

ও এগুলো হচ্ছে তোমার উপহার।

দেখি দেখি কি উপহার এনেছো আমার জন‍্য।

দাড়ায় এতো ব‍্যস্হ হচ্ছো কেনো তোমার উপহার তোমাকেই দিবো অন‍্য কাউকে দিবো না।

তাড়াতাড়ি দেখাও না আমার সহ‍্য হচ্ছে না।

আচ্ছা তুমি আয়নার সামনে দেখো আমি তোমাকে পড়িয়ে দেই।

ওকে।

তারপর আমি জান্নাতুন এর মাথায় বেলি ফুলের মালাটা গেথে দিলাম তারপর একটা গোলাপ মাথার খোপায় গেথে দিয়ে বলতেছি বাহ্ মাসআল্লাহ্ আমার বউকে তো অনেক সুন্দর লাগতেছে।

সত‍্যি,

হুম সত‍্যি।

দেখতে দেখতে আমাদের বিয়ে হবার তিনটি বছর পার হ য়ে গেলো।যতো দিন যায় যততো আমাদের মধ‍্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি হয়।খুনশুটি ভালোবাসার মধ‍্যে দিয়ে সংসার চলতেছে।অনেক সুখে আছি জান্নাতুন এর মতো বউ পেয়ে।আমার মা -বাবাকে সবসময় নিজের বাবা-মার মতো দেখে।আজকাল কতো বউ আছে শশুর-শাশুরিকে দুচোখে দেখতেই পারে না।ও আর একটা কথা আমাদের একটা মেয়েও হয়েছে নাম তার রেখেছি মরিয়ম।আমার মেয়েটা হয়েছে একদম তার মা মতো অনেক দুষ্টু।মা যেমন মেয়েও তেমন।আবারো চেষ্টা করতেছি কিভাবে মরিয়মের খেলার সাথি আনা যায়।এখানেই শেষ গল্পটা।

গল্পটা শেষ করলাম তাড়াতাড়ি কেউ কষ্ট পেয়েন না কারন আমি একটু ঝামেলার মধ‍্যে আছি।যখন গল্প বাদে অন‍্যকিছু ঢুকে তখন গল্পলিখতে ইচ্ছা করে না তাই কালকে গল্পটা দিতে পাড়ি নি।প্রথম থেকে গল্পটা কেমন হয়েছে জানাবেন আর যদি আমার গল্পের কোন কথায় কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমাকে ক্ষমা করবেন।এই গল্পটায় অনেক কিছু শিখানোর বিষয় তুলে ধরেছি,শিখনিও বিষয়গুলো কে কতোটুকু মেনেছে জানি না।আপনাদের ধন‍্যবাদ।

#চলবে,,,?

1 মন্তব্য

  1. Ami pura golpo ta pore akhon comnent korchi khuv sundor hoiice golpo ta but aii golper name diyacilen rong bodol but akane kisar rong bodol holo sata bujini… Jodi bolen tahole subida hoto… the story is very wonderful tnx ato sundor akta story daoyar jonno jatar modde amader islam somporke conversation acce tnx👍

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে