#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_১২
বাথরুম থেকে গোসল করে এসে রুমে আসলাম।রুমে এসে দেখি জান্নাতুন রুমে কোথাও নেই।কই গেলো আমি বুঝতেই পারলাম না,আমার বউ ভুতনী নাকি হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায়।জান্নাতুন কে রুমে না পেয়ে আবারো আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম।সারারাত ঘুম না হওয়ার কারনে চোখে ঘুম ধরতেছে।চোখদুটো বন্ধ না করতেই কে যেনো আমাকে ডাকতেছে,চোখ খুলে দেখি এটা আর কেউ না,আমার বউ জান্নাতুন।
তুমি আবারো ঘুমাচ্ছো,একটু আগে না ঘুম থেকে উঠলে।
আর বলো না বউ,চোখের ঘুম পালাচ্ছেই না যে কি করবো বলো?আচ্ছা তুমি হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাও কেনো,তোমাকে আমি খুজেই পাই না।
কোথায় আবার যাবো নিয়ে গিয়েছিলাম আম্মা ডেকেছিলো সেই জন্য আর তুমি তখন বাথরুমে ছিলে দেখে তোমাকে বলে যাই নি।
তবুও আমাকে বলে যাবে না।
আচ্ছা এবার থেকে কোথাও গেল তোমাকে না বলে কোথাও যাবো না।এবার বিছানা থেকেউঠে আমার সাথে আসো।
কোথায় যাবো আবার,
আম্মা ডাকতেছে নিচে তোমাকে নাস্তা খেতে।
ও একটু পরে যাই,
ধূর উঠো তো এখনে যেথে হবে,
ওকে চলো তাহলে,
তারপর দুইজনে নিচে আসলাম।তারপ নাস্তা খেতে দিলেন আমাকে।নাস্তা খাওয়া প্রায় শেষ।আমি একটা জিনিস প্রথম থেকে লক্ষ্য করতেছি যে,,মনি নামের মেয়েটা কেমন রাগি দৃষ্টিতে আমার দিকে একটু একটু পর পর দেখতেছে আমি কিছুই বুঝতেছি না।তাহলে কি জান্নাতুন ওকে বলে দিয়েছে যে,ওর কথা সব বলে দিয়েছে।এগুলো বসে বসে ভাবতেছি খাওয়া তো শেষ।
জান্নাতুন মা শুন তুই জামাইকে নিয়ে একটু বাহিরে থেকে ঘুরে আয়।(আমার শাশুড়ি বলতেছে)
ওকে মা,কিন্তু তোমার জামাই যাবে কি ?
কি বাবা তুমি যাবে না,ঘুরতে জান্নাতুন এর সাথে?
ওকে মা যাবো।
আমিও যাবো আপু দুলাভাই এর সাথে (মনি নামের মেয়েটা বলতেছে )
তোকে যেথে হবে না,(জান্নাতুন মনিকে বলতেছে )
মনি তোদের সাথে যেথে চাচ্ছে যাগ সমস্যা কই?
ওকে আমাদের সাথে আমি নিয়ে যাবো না।
জান্নাতুন এগুলো তুমি কি শুরু করে দিলে মেয়েটা যেথে যাচ্ছে জাগ না সমস্যা কই?
ঠিক বলেছেন দুলাভাই?
আচ্ছা ঠিক আছে ওকে বাহির হতে বলো।
তারপর প্রায় বিশমিনিট পরে বাসা থেকে বাহির হলাম তিন জনে ঘুরতে।মনি মেয়েটা শুধু আমার গা ঘেসে হাটতে চাচ্ছে।যখনি আমার পাশে আসার চেষ্টা করতেছে তখনি দূরে সড়ে যাচ্ছি আমি।জান্নাতুনকে বুঝতে দিচ্ছি না আমি,যদি রাগ করে।আমি চাচ্ছি না বাহিরে কোন ঝামেলা হোক।দেখতে দেখতে অনেক জায়গায় ঘুরলাম।মনি আমার সাথে কথা বলার অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু জান্নাতুন কখনো আমাকে ওর থেকে একটুও আড়াল করে নি।দুপুরে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে গোসল করে দুপুরের মসজিদে নামাজ পড়ে আসলাম।তারপর সবাই মিলে দুপুরে খাবার খেলাম।আজকে আমাদের বাসায় যাওয়ার কথা এখানে আর থাকবো না।খাওয়া শেষ করে রুমে আসলাম রেস্ট করার জন্য।শশুর বাড়ি মানে হচ্ছে সুখের হাড়ি খাও দাও ঘুড়ে বেড়াও।একটু পর জান্নাতুন ও রুমে আসলো।
কি করো গো স্বামী?
দেখতেই তো পারতেছো সুয়ে আছি তবুও আবার প্রশ্ন করতেছো।
কেনো প্রশ্ন করতে পারি না বুঝি।
কেনো পারবে না,যখন ইচ্ছা আমাকে প্রশ্ন করতে পারো।আচ্ছা শুনো আজকে তো আমাদের বাসায় চলে যাবো তোমার কষ্ট হবে না,এখান থেকে যেথে।
স্বামীর বাড়িতে যেথে আবার কিসের কষ্ট।এতোদিন পরের বাড়িতে ছিলাম এখন যাবো নিজের বাড়িতে যেখানে থাকবো যতোদিন বেঁচে আছি।
হুম ঠিক বলছো গো বউ।
আচ্ছা আসো তুমিও আমার সাথে রেস্ট করো।
ওকে।
তারপর জাননাতুন ও বিছানায় শুয়ে পড়লো।আমিও সাথে সাথে জরিয়ে ধরলাম।বউ মানে হচ্ছে বিছানার কোলবালিস এদের জরিয়ে না ধরলে চোখে ঘুমে আসে না।
আচ্ছা তোমাকে যে হাদিসগুলো বলি সব মনে আছে তো তোমার।
হুম মনে রাখবো না কেনো,
তাহলে এখন তোমাকে আমি
স্ত্রীর উপর স্বামীর অনস্বীকার্য অধিকার,,এই বিষয়ে কথা শুনাবো।
আচ্ছা বলো আমি সব সময় শুনতে রাজি,কারন ইসলাম হচ্ছে এমন এক শান্তির ধর্ম যা পৃথিবীতে এমন ধর্ম খুজে পাওয়া যাবে না।অনেকে আছি এই ধর্ম করি কিন্তু সহজ জিনিস গুলো জানি না বা জানার চেষ্টাও করি না।আমিও অনেক কিছু জানতাম না তুমি আমাকে শিয়েছো।
ওকে এবা তাহলে শুনো,
স্ত্রীর প্রথম অধিকার হল বৈধ কর্মে ও আদেশে স্বামীর আনুগত্য। স্বামী সংসারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি। সংসার ও দাম্পত্য বিষয়ে তার আনুগত্য স্ত্রীর জন্য জরুরী। যেমন কোন স্কুল-কলেজের প্রধান শিক্ষক, অফিসের ম্যানেজার বা ডিরেক্টর প্রভৃতির আনুগত্য অন্যান্য সকলকে করতে হয়।
স্ত্রী সাধারণতঃ স্বামীর চেয়ে বয়সে ছোট হয়। মাতৃলয়ে মা-বাপের (বৈধ বিষয়ে) আদেশ যেমন মেনে চলতে ছেলে-মেয়ে বাধ্য, তেমনি শবশুরালয়ে স্বামীর আদেশ ও নির্দেশ মেনে চলাও স্ত্রীর প্রকৃতিগত আচরণ। তাছাড়া ধর্মেও রয়েছে স্বামীর জন্য অতিরিক্ত মর্যাদা। অতএব প্রেম, সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলতা বজায় রাখতে বড়কে নেতা মানতেই হয়। প্রত্যেক কোম্পানী ও উদ্যোগে পার্থিব এই নিয়মই অনুসরণীয়। অতএব স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে তা নারী-পরাধীনতা হবে কেন। তবে অন্যায় ও অবৈধ বিষয়ে অবশ্যই স্বামীর আনুগত্য অবৈধ। কারণ যাদেরকে আল্লাহ কর্তৃত্ব দিয়েছেন তাদেরকে অবৈধ ও অন্যায় কর্তৃত্ব দেননি। কেউই তার কর্তৃত্ব ও পদকে অবৈধভাবে ব্যবহার করতে পারে না। তাছাড়া কর্তা হওয়ার অর্থ কেবলমাত্র শাসন চালানোই নয়; বরং দায়িত্বশীলতার বোঝা সুষ্ঠুভাবে বহন করাও কর্তার মহান কর্তব্য।
যে নারী স্বামীর একান্ত অনুগতা ও পতিব্রতা সে নারীর বড় মর্যাদা রয়েছে ইসলামে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,
إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا، دَخَلَتْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ.
রমণী তার পাঁচ ওয়াক্তের নামায পড়লে, রমযানের রোযা পালন করলে, ইজ্জতের হিফাযত করলে ও স্বামীর তাবেদারী করলে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে।
خَيْرُ النِّساءِ الَّتِي تَسُرُّهُ إذا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إذا أمَرَ ولا تُخالِفُهُ في نَفْسِها ولا مالِها بِما يَكْرَهُ.
শ্রেষ্ঠ রমণী সেই, যার প্রতি তার স্বামী দৃকপাত করলে সে তাকে খোশ করে দেয়, কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং তার জীবন ও সম্পদে স্বামীর অপছন্দনীয় বিরুদ্ধাচরণ করে না। স্ত্রীর নিকট স্বামীর মর্যাদা বিরাট। এই মর্যাদার কথা ইসলাম নিজে ঘোষণা করেছে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,
স্ত্রীর জন্য স্বামী তার জান্নাত অথবা জাহান্নাম।[
لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا.
যদি আমি কাউকে কারো জন্য সিজদা করতে আদেশ করতাম, তাহলে নারীকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে।
مِن حَقِّ الزَّوجِ عَلَى زَوجَتِهِ إن سَالَ دَماً وَقَيحاً وَصَديداً فَلَحَسَتهُ بِلِسَانِهَا مَا أَدَّتْ حَقَّهُ.
স্ত্রীর কাছে স্বামীর এমন অধিকার আছে যে, স্ত্রী যদি স্বামীর দেহের ঘা চেঁটেও থাকে তবুও সে তার যথার্থ হক আদায় করতে পারবে না।
…فَإِنَّ الْمَرْأَةَ لَوْ تَعْلَمُ مَا حَقُّ زَوْجِهَا ، لَمْ تَزَلْ قَائِمَةً مَا حَضَرَ غَدَاؤُهُ وَعَشَاؤُهُ.
মহিলা যদি নিজ স্বামীর হক (যথার্থরূপে) জানতো, তাহলে তার দুপুর অথবা রাতের খাবার খেয়ে শেষ না করা পর্যন্ত সে (তার পাশে) দাঁড়িয়ে থাকতো।
…فَوَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا عَزَّ وَجَلَّ حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا كُلِّهِ حَتَّى إِنْ لَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ أَعْطَتْهُ أَوْ قَالَ لَمْ تَمْنَعْهُ.
তাঁর শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ আছে! নারী তার প্রতিপালকের হক ততক্ষণ পর্যন্ত আদায় করতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার স্বামীর হক আদায় করেছে। সওয়ারীর পিঠে থাকলেও যদি স্বামী তার মিলন চায় তবে সে বাধা দিতে পারবে না।
اثْنَانِ لا تُجَاوِزُ صَلاتُهُمَا رُءُوسَهُمَا : عَبْدٌ آبِقٌ مِنْ مَوَالِيهِ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَيْهِمْ ، وَامْرَأَةٌ عَصَتْ زَوْجَهَا حَتَّى تَرْجِعَ.
দুই ব্যক্তির নামায তাদের মাথা অতিক্রম করে না (কবুল হয় না) ; সেই ক্রীতদাস যে তার প্রভুর নিকট থেকে পলায়ন করেছে, সে তার নিকট ফিরে না আসা পর্যন্ত এবং যে স্ত্রী তার স্বামীর অবাধ্যাচরণ করেছে, সে তার বাধ্য না হওয়া পর্যন্ত (নামায কবুল হয় না।)
ثَلاَثَةٌ لاَ يُقبَلُ منهُم صَلاَةٌ وَلاَ تَصعُدُ إلَى السَّمَاءِ وَلاَ تَجَاوزُ رُءُوسُهُم : رَجُلٌ أَمَّ قَوماً وَهُم لَه كَارِهُونَ ، وَرَجُلٌ صَلَّى عَلَى جَنَازَةٍ وَلَمْ يُؤمَر ، وَامرَأَةُ دَعَاهَا زَوجُهَا من اللَّيلِ فَأَبَتْ عَلَيه.
তিন ব্যক্তির নামায কবুল হয় না, আকাশের দিকে উঠে না; মাথার উপরে যায় না; এমন ইমাম যার ইমামতি (অধিকাংশ) লোকে অপছন্দ করে, বিনা আদেশে যে কারো জানাযা পড়ায় এবং রাত্রে সঙ্গমের উদ্দেশ্যে স্বামী ডাকলে যে স্ত্রী তাতে অসম্মত হয়।
إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ أَنْ تَجِيءَ لَعَنَتْهَا الْمَلَائِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ.
স্বামী যখন তার স্ত্রীকে নিজ বিছানার দিকে (সঙ্গম করতে) আহ্ববান করে তখন যদি স্ত্রী না আসে, অতঃপর সে তার উপর রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রি কাটায়, তবে সকাল পর্যন্ত ফিরিশ্তাবর্গ তার উপর অভিশাপ করতে থাকেন। অন্য এক বর্ণনায় যতক্ষণ পর্যন্ত না স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ফিরিশ্তা তার উপর অভিশাপ করতে থাকেন।
স্বামীর আনুগত্য স্ত্রীর জন্য আল্লাহ ও তদীয় রসূলের আনুগত্য। সুতরাং স্বামীকে সন্তুষ্ট করলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। বলাই বাহুল্য যে, অধিকাংশ তালাক ও দ্বিতীয় বিবাহের কারণ হল স্বামীর আহ্বানে স্ত্রীর যথাসময়ে সাড়া না দেওয়া। উক্ত অধিকার পালনেই স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন মজবুত ও মধুর হয়ে গড়ে উঠে, নচেৎ না।
ধন্য আমি তোমাকে স্বামী হিসাবে পেয়ে।যে আমাকে সবসময় ভালো পথ দেখাবে,খারাপ পথ নয়।তুমি যা জানো সেটাই আমাকে বলবে শিখাবে।সেই অনুযায়ী আমি আমল করতে পারবো।
ওকে।আমিও ধন্য তোমার মতো জীবন সঙ্গী পেয়ে।
আচ্ছা একটা কথা বলি তোমাকে,সমাজের কিছু পুরুষ জাতি আছে কেমন জানো,
না তো,
বিবাহ করেছে কিন্তু স্ত্রীর সাথে সুখ দুঃখের আলাপ করে না শুধু রাতে বিছানায় স্ত্রীর নরম দেহ খুজে।যদি স্ত্রীর সাথে স্বামী না মিশে সংসার হবে কেমন করে।স্ত্রীর শুধু স্বামীর থেকে শারীরিক সম্পর্ক করতে চায় না তারা চায় তার স্বামী তাকে ভালোবাসুক, বুঝুক,সবসময় পাশে থাকুক যদি এগুলো একটা স্বামী ভেবে থাকে তাহলে স্ত্রী পাবে একটা প্রকৃত ভালো স্বামী।
আজকে গল্পটা ছোট করে দেওয়ার জন্য ছরি।আর কেউ ছোট বলে লজ্জা দিয়েন না প্লিজ।কেমন হয়েছে এটা শুধু কমেন্টে বলবেন।
(চলবে)