রং বদল পর্ব-০৫

0
1966

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৫

এই যে মহারানি ঘুম থেকে উঠে পড়ুন এবার,অনেক বেলা হয়েছে গেছে।মানুষ শুনলে কি বলবে,নতুন বউ অনেক বেলা করে ঘুম থেকে উঠে?

হঠাৎ করে কারো ডাকার শব্দ শুনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।চোখদুটৌ খুলে দেখি ওনি দাড়িয়ে আছেন বিছানার একটু দূরে।হঠাৎ করে ঘুম ভাঙ্গার কারনে মাথা ঝিম ধরে আসতেছে,মাথায় কোন কিছু কাজ করতেছিলো না, ওনার দিকে শুধু শুয়ে থেকে ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছি।

কি হলো শুয়ে আছো কেনো উঠতে হবে না,আর আমার দিকে এমন ভাবে কি দেখতেছো, আমাকে চিনো না নাকি ?

আপনাকে চিনবো না কেনো আপনি হচ্ছেন আমার স্বামী তাই আপনাকে না, চেনার প্রশ্নই আশে না।(যেকোন লোকের হঠাৎ করে ঘুম ভেঙ্গে গেলে বা জাগিয়ে দিলে মাথা প্রথমে কাজ কম করে সেই জন‍্য চূপ করে থাকে)

তাহলে আমার দিকে ওমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।

এমনি আচ্ছা কয়টা বাজতেছে ঘড়িতে।

এই তো মাত্র ৮ঃ০০ টা বাজতেছে।

আপনি ৮ঃ০০ কে কেবল বলতেছেন আল্লাহ্ এতো বেলা ধরে ঘুমিয়েছিলাম মানুষ শুনলে কি বলবে?আপনি আমাকে আগে জাগিয়ে দেন নি কেনো।আমার মা আমাকে বারবার করে বলেছিলো যে বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে যাইলে সকাল সকাল উঠে শাশুড়ি মাকে সাহায্য করতে কিন্তু আমি তো কতো বেলা করে ঘুম থেকে উঠেছি।আপনা না ডাকলে আমি তো উঠতেই পারতাম না।আপনি সামনে থেকে সরুন আমি বাথরুমে ফ্রেস হতে যাবো।ফ্রেস হয়ে এসে নিচে শাশুড়ি কাজে সাহায্য করতে হবে।

তোমাকে এতো অস্তির হতে হবে না,তুমি শান্ত হও এবং ধীরে ধীরে বাথরুমে ফ্রেস হও।তুমি কি কাজে সাহায্য করবে,এতোক্ষন প্রায় মা বাসার কাজ সব করে ফেলেছে।

তবুও শাশুড়ির কাছে যেথে হবে।

মা তোমাকে নিচে যেথে মানা করেছে তাই ওখানে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নাই তাই ধীর গতীতে তুমি বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হতে পারো।আর তুমি এখন অসুস্হ তাই বেশি চাপ নেওয়ার দরকার নাই।

তাহলে কি আমি শাশুড়ি মার কাছে যাবো না?আচ্ছা শাশুড়ি মা জানলো কেমন করে আমি অসুস্থ বুঝলাম না (প্রশ্ন করে বসলাম আমার স্বামী কে )

কেনো আমি বলেছি তোমার পিরিয়ড এর বেপারে সেই জন‍্য তো আমাকে দিয়ে এতো গুলো খাবার মা পাঠিয়েছে।এখন তুমি বাথরুম গিয়ে ফ্রেস হয়ে এসে খাবারগুলো খেয়ে নেও।মা বলেছে এই সময় তোমার বেশি বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খেতে।(খাবারের প্লেটটা দেখিয়ে বলতেছি)

স্বামী একটা পেয়েছি, বউ এর পিরিয়ড এর বেপারো নিজের মাকে বলে।আল্লাহ্ এই কোন ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে আমার,যার নেই কোন লজ্জা-সরম।(এগুলো ভাবতেছি আর চূপ করে বিছানায় বসে আছি )

কি হলো বসে আছো কেনো ফ্রেস হতে যাও খাবার গুলো খেতে হবে তো নাকি?

আমি মানলাম আমি অসুস্থ, সেই জন‍্য এতো গুলো খাবার,আমি জীবনেও এতো গুলো খাবার খাই নি।

খাওনি তো কি হয়েছে এখন খাবে?

আমি মরে গেলেও এতো গুলো খাবার খেতে পারবো না।

আচ্ছা দেখা যাবে খেতে পারো কি না,আগে ফ্রেস হয়ে আসো।

তারপর আমি বিছানা থেকে নিচে মেনে দেখি টেবিলের উপর যেখানে প‍্যাডটা ওনি রেখেছিলেন ওখানেই পড়ে আছে।হুট করে রুমের ভীতরে কেউ আসলে প্রথমে ওই প‍্যাডটাই চোখ পড়বে,এই মানুষটাকে নিয়ে আর পাড়ি না। এখন আমার প‍্যাডটা প্রয়োজন পড়বে তাই প‍্যাডটা টেবিলের উপর থেকে হাতে নিয়ে নিলাম।তারপর একটা কালো শাড়ি ব‍্যাগ থেকে বাহির করে হাতে নিলাম,এই শাড়িটা আমার মা আমাকে কিনে দিয়েছিলো বিয়ে আগে শশুর বাড়িতে পড়ার জন‍্য তাই শাড়ি পড়ার যাবতিও জিনিস গুলো ব‍্যাগ থেকে নিয়ে সোজা বাথরুমে চলে আসলাম।বাথরুমে এসে প্রথমে গোসল করলাম কারন যে টাইম চলতেছে আমার এই টাইমে পরিষ্কার থাকাটা খুবেই জরুরী।প্রায় 20 মিনিট ধরে গোসল করার পরে প্রয়োজনী জিনিস গুলো পড়ে তারপর শাড়ি পড়ে বাথরুম থেকে তেওয়ালা দিয়ে চূল ঝাড়তে ঝাড়তে বাহির হচ্ছি।

মাসআল্লাহ্ আমার বউকে এমন অবস্হায় তো অনেক সুন্দর লাগতেছে।কালো শাড়ি পড়া,ভেজা চোখে,মাতাল করা শরীরে ঘ্রান,লম্বা চূলে টপ টপ করে পানি পড়তেছে আহ কতো সুন্দর বউ আমার।এই কথা বলে জান্নাতুনকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম।জরিয়ে ধরে ভেজা চূলে মুখ ডুবিয়ে দিলাম নিজেকে কোন মতেই আটকাতে পারতেছিলাম।

এই কি করছো তুমি এই ভর দুপুরে।

কি করতেছি মানে বউকে জরিয়ে ধরেছি?

আরে ছাড়েন তো কেউ দেখে ফেলবে তো দরজা খোলা আছে।

কেউ আসবে না,চূপ করে থাকো তো এভাবে তোমাকে একটু জরিয়ে ধরে থাকি।(এই কথা বলে আন্নাতুন এর ঘাড়ে একটা চুমু দিয়ে দিলাম )

কি করতেছেন আমার সুরসুরী লাগতেছে তো?

কি বলো তোমার রোমান্টিক মুডেও সুরসুরী লাগতেছে,আমার তো এভাবে অনেক ভালো লাগতেছে?

ভালো তো তোমাকে লাগবেই লুচু ছেলে কোথাকার আমার সুরসুরী লাগতেছে আর ওনি আছে রোমান্টিক মুডে।

বউ তুমি এটা কই তে পালা।নিজের বউকে জরিয়ে ধরলে বুঝি স্বামী লুচু হয়।

হয় না তো,কিন্তু আমি বলবো আপনি একটা লুচু ছেলে।এখন আপনি আমাকে জরিয়ে ধরা থেকে ছেড়ে দেন।

ছারবো না, কি করবা?

কিছুই করতে পারবো না,কারন পুরুষের শক্তির কাছে নারীর শক্তি কোন পাত্তায় নেই।তাই আপনার সাথে কখনো শক্তির দিক দিয়ে পারবো না।

এই তো ভালো বুঝেছো,এখন চূপ করে দাড়িয়ে থাকো।

প্লিজ ছেড়ে দিন না,ভেজা চূলের পানি দিয়ে প্রায় শাড়িটা ভিজেই গিয়েছে চূলগুলো ঝাড়ি তার পর যতো ইচ্ছা জরিয়ে ধরিও।

পরে মানে যখন তখন কি এই রকম রোমান্টিক মুড আসবে নাকি?

ঠিক আছে যা ইচ্ছা তাই করো সমস‍্যা নাই।

আমি কিছু দেখি নাই।

এই কথা শুনে আমরা দুইজনে রুমের দরজায় দেখি এশা দুই হাত চোখে দিয়ে দাড়িয়ে আছে।এশাকে দেখে সাথে সাথে আমি জান্নাতুনকে ছেড়ে দিলাম।ছেড়ে দিয়ে অনেকটা দূরে গিয়ে দাড়ালাম,

এশা তুই জানিস না,কারো রুমে প্রবেশ করতে হলে অনুমতি নিতে হয়।কে কি অবস্হায় থাকে?

তোকে কেউ জ্ঞান দিতে বলেছে আমি ভাবির সাথে দেখা করতে এসেছি।

ভাবির সাথে দেখা করতে আসছিস ভালো কথা কিন্তু রুমে আসার আগে একটু নক করে ঢুকবি না।

ভাইয়া/ভাবির রুমে আসতে কোন অনুমতি লাগে নাকি, তাই না ভাবি।

হুম।(আমি শুধু হুম বলে নীরব দর্শোক এর মতো দুইজনে কথা শুনতেছি।হঠাৎ করে এশা রুমে এসে খুবেই লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলাম। )

এশা তুই কি কিছু দেখেছিস রুমে এসে?

ফ্রিতে সিনেমা দেখছি তোর কোন সমস‍্যা।

না (এই কথা বলে জান্নাতুন এর দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার দিকে রাগি দৃষ্টি নিয়ে দেখতেছে।এমন অবস্হা দেখে আমার ভয় লেগে গেলো।)

আচ্ছা ভাবি তোমার শরীরের কি অবস্হা?

এশার কথা শুনে বুঝতে পারলাম এশা কোন বিষয়ে কথা বলতেছে।

#চলবে,,,?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে