#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৪
হঠাৎ করে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো,চারপাশে শুধু আজানের ধ্বনি।চারপাশে আজান এর শব্দ শুনে মনে হয় ঘুমটা ভেঙ্গে গেছে।বিছানা থেকে উঠতেই পাশে জান্নাতুন এর মুখটা চোখে ভেসে আসলো।জান্নাতুন এর মুখটা চোখে সামনে ভেষে আসায় মনে হচ্ছে ওর মায়াবি মুখ খানি আমাকে তার কাছে টানতেছে।কি যেনো এক মায়ায় ঠিক জান্নাতুন এর মুখের সামনে আমার মুখটা চলে গেলো?বেশি দূরত্ব নয় আমার মুখ আর জান্নাতুন এর মুখ অল্প ফাঁকা।জান্নাতুন এর মুখে এত মায়া আছে তা কালকে লক্ষ্যই করি নি,ঘুমান্ত অবস্হা এতো সুন্দর লাগতেছে আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না।শুনেছিলাম,
একটা মেয়ের বিয়ের আগে আল্লাহ্ নাকি তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দেয়,এই জন্য বিয়ের রাতে বউকে এতো সুন্দর লাগে।আল্লাহ্ কতো সুন্দর কূদরত দিয়েছেন বিয়ে রাতে একটা মেয়ের উপরে।আল্লাহ্ বাসর রাতে মেয়েদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দিয়েছে কারন তার স্বামী অন্য বউকে দেখে এটা না বলতে পারে আমার বউ সুন্দর না।আল্লাহ্ কতো নীলাখেলা,মানুষের বড় বুঝা বড় দায়।
এই জন্য মনে হয় জান্নাতুন এর উপরে আমার এতো মায়া কাজ করতেছে।ইচ্ছা করতেছে এখনে একটা লিপ কিচ করে ফেলি।কিন্তু এটা করা বউ এর ইচ্ছার বিরুদ্ধে হবে।যদি জেগে থাকতো তাহলে না হয় কিচ করা যেতো কিন্তু হাদিসে আছে বউ এর ইচ্ছা বিরুদ্ধে স্পর্শ করাও হারাম।ভাই আপনার বউ হয় দেখে যখন তখন স্পর্শ করবেন এটা কিন্তু নয়।আপনি যেটা করতে চাচ্ছেন সেটাতে বউ এর ইচ্ছা থাকতে হবে।আপনি যদি বলেন ও তো আমার বউ বিবাহ বন্ধন এ আবদ্ধ হয়েছি।বিয়ের পরে বউ হচ্ছে হালাল জিনিস তাই যা ইচ্ছা করতে পারি কিন্তু ভাই জোড় করে ধর্ষন হয়,বউ এর থেকে জোড় করে কিছু করতে চাইলে ওটাও ধর্ষন বলা যাবে।জোড় করলে বউ এর সাথে সব কিছু করতে পারবেন কিন্তু বউ এর মনে একটা ক্ষোপ থেকে যাবে।
তবুও মনটাকে মানাতে পারতেছিলাম না,তাই নিজেকে কোন মতে আটকিয়ে শুধু কপালে একটা চুমু দিয়ে সোজা বাথরুমে চলে গেলাম ওজু করার জন্য।জান্নাতুনকে ডাকলাম না কারন ওর শরীর পাক নেই তাই ওর নামাজ পড়তে পারবে না।বাথরুম থেকে ওজু করে পান্জাবি আর টুপি নিয়ে রুম থেকে বাহির হয়ে মসজিদে দিকে যাচ্ছি।কতো সুন্দর একটা আবহওয়া,মনকে শীতল করে দিচ্ছে চারপাশে শুম সাম নিরবতা মাঝে মাঝে কিছু পাখি শব্দ করে উঠেতেছে।কিছুক্ষন পরে মসজিদে চলে আসলাম।বাসা থেকে মসজিদটা বেশি দূরে না তাই বেশি টাইম লাগে নি।মসজিদে ঢুকে প্রথমে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ে নিলাম।একটু পরে মসজিদের ইমাম দুইরাকাত ফরজ নামাজ পড়াতে শুরু করলেন।ইমামের পিছনে দুই রাকাত নামাজ পড়ে আবারো বাসার দিকে রওনা দিলাম।বাসায় যাইতে প্রায় তিন মিনিট লাগলো।বাসার ভিতরে ঢুকে দেখি মা টেবিলে নাস্তা গোছাচ্ছেন।
কিরে বাবা নামাজ পড়ে আসলি!
হুম মা।
বউ মা ঘুম থেকে উঠে নি।আর মন ভালো আছে বাবা।
মা আমি যখন নামাজ পড়তে যাই তখন তো তোমার বউমা ঘুমাচ্ছিলো।আর মন ভালো আছে মা।এমনিতে তুমি জানো নামাজ পড়লে মন খারাপ থাকলেও ভালো হয়ে যায়,মনে শান্তি পাওয়া যায়।আমি তো এখনে নামাজ পড়ে আসলাম তাই মন খারাপ থাকা প্রশ্নেই আশে না।
(মনে শান্তি পান না,শুধু অস্তির লাগে কিছু ভালো লাগে না,তাহলে ভাই /বোন সালাত আদাই করুন ইনসাআল্লাহ্ চেলেন্জ করে বলবো তাহলে দেখবেন আল্লাহ্ আপনার মনকে এবং সব কিছুতে শান্তি এনে দিবে।বিশ্বাস না হলে একবার সালাত আদাই করে দেখেন।)
তুই যখন নামাজ পড়তে যাস তখন বউমাকে ডেকে দিতে পারিস নি,বউমাও নামাজ পড়তো।
মা তুমি মনে হয় জানো না যে,তোমার বউ মার কালকে পিরিয়ড হয়েছে তাই আর ফজরে জেগে দেই নি।
আগে বলবি না আমাকে আচ্ছা তুই এখানে দাড়া আমি কিছূ তোকে এনে দিচ্ছি।
ওকে।আমি বসে নাস্তা করি তুমি যতোক্ষন না আসো।
ওকে বাবা।
তারপর মা কই যেনো গেলো আমি জানি না।মা যাওয়ার পরে আমি চেয়ারে বসে নাস্তা খেতে শুরু করলাম।প্রায় দশ মিনিস পরে মা একটা প্লেট করে বেশ কিছু খাবার নিয়ে আসলেন।
ঈমান বাবা এগুলো বউমাকে গিয়ে খাওয়া।
এতো গুলো খাবার মা,
বেশি বুঝিস কেনো এই সময়ে বউমার এগুলো খাওয়ার দরকার।না হলে অসুস্হ হয়ে পড়বে।
ও তাই সেই জন্য তুমি এশাকে মাঝে মাঝে এতো খাবার খেতে দাও।
হুম।আর শুন তুই তো এখন সবেই বুঝিস বড় হয়েছিস তাই তোকে বলি বাবা,
একটা মেয়ের পিরিয়ডের সময় অনেক রক্তক্ষয় এবং পানি বাহির হয়ে যায়।এই সময় প্রতিটা মেয়ের বেশি করে পানি পান দরকার কারন পানির শুন্নতার কারনে মাথা ব্যথা,হাত-পা ব্যথা,বমি বমি ভাব হয়ে থাকে তাই পানি বেশি করে খাওয়া দরকার।আবার পিরিয়ডের সময় একটা মেয়ের শরীর অনেক দূর্বল হয়ে যায়,তাই এই সময়ে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার প্রতিটা মেয়েদের যেমন,মাছ-মাংস,দুধ,ডিম ইত্যাদি। এক কথায় পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে ।আর একটা বিষয় হচ্ছে এই সময়ে প্রতিটা মেয়ের তার নিজ শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
এগুলো কি গিয়ে তোমার বউমাকে বলবো?(আগে বলে রাখি আমার মা একজন ডাক্তার তাই কেউ আবার প্রশ্ন করিয়েন না যে ছেলেকে মা এগুলো বলতেছে সম্ভব না।আপনারা হয়তো এটা জানেন ডাক্তারদের শরম বলতে কিছু থাকে না,তারা সব কিছু সবার মাঝে বা সামনে বলতে পারে।)
তোকে কিছুই বলতে হবে না, শুধু এটা বলবি মা তোমাকে এগুলো খেতে বলেছে আর পানি বেশি বেশি করে খেতে ।
ঠিক যা বললে তাই বলবো,প্লেট টা এখন আমাকে দাও।
এই নে।
তারপর মা আমাকে খাবারের প্লেটটা দিলেন।তারপর আমি ওনা থেকে হাটা শুরু করলাম রুমে যাওয়ার জন্য হঠাৎ এশার কথা মনে হলো আমার মহারানি বোন কি এখনো ঘুম থেকে উঠে নিই নাকি?(ছোট বোনদের বড় ভাইয়েরা অনেক আদর করে থাকে,তেমনি আমিও ব্যতিক্রম নয় আমিও আমার বোনকে অনেক ভালোবাসি।একটা বিষয় কি জানে,আমি যদি কোথাও যাই সেখান থেকে বাসায় আসলে প্রথমে ছোট বোনের খোজ করবো কারন অনেক ভালোবাসি তো তাই। প্রতিটা ঘরে ঘরে একটা করে রাজকন্যা বোন থাকা দরকার,তানা হলে বোন এর মর্ম কখনো বুঝতে পারা যাবে না। )
মা এশা কই?
তোকে নিয়ে আর পারি না,বোন পাগল ছেলে আমার।তোর বোন রুমে আছে হারিয়ে যাই নি,তাই এখন বোন এর খবর না করে বউ এর খবর কর যা।বোনে বিয়ে দিলে কি করবি আজ হোক কালতো পরের ঘরে যাবেই,
?
বোনকে বিয়েই দিবো না।
ধূর পাগল ছেলে পৃথিবীতে যখন আল্লাহ্ পাঠিয়েছে তখনে বিবাহ ফরজ করে দিয়েছে তাই বিয়ে তো দিতেই হবে।
পরে দেখা যাবে,না হলে বোনের জামাইকে ঘরজামাই করে রেখে দিবো তবুও বোনকে দূরে যেথে দিবো না।
আচ্ছা যা বলিস তাই করিস,এখন তোর বউ এর কাছে যা।ওর পাশে থাকা তোর জরুরি বুঝলী।সব মেয়ে তার দুঃখের সময় এটা চায় সেটা হচ্ছে তার সবচেয়ে আপন জন তার পাশে থাকুক,একটা মেয়ের সবচেয়ে আপন মানুষ হচ্ছে তার স্বামী বুঝলী।তাড়াতাড়ি বউমার কাছে যা।
ওকে মা।তারপর আমি মার ওখান থেকে রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে দেখি বউ আমার কি সুখের ঘুম পারতেছে যা আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না।ছোট বাচ্চাদের মতো করে ঘুমাচ্ছে।আমি না হেসে পারলাম না।পাগলী বউ পাইছি একটা।
আমি গল্পের মাঝে কিছু কিছু বিষয় তুলে ধরি সেটা আপনাদের ভালো জন্য,যদি এগুলো তুলে ধরতে আপনাদের মনে কষ্ট লাগে বা মনে করেন ছেলেটা খুবেই খারাপ তাহলে আর গল্পের মাঝে এগুলো আর তুলে ধরবো না।
(আসসালামুআলাইকুম সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন। আল্লাহ্ যেনো আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তউফিক দান করুক,আমিন )
#চলবে,,,?