যেই তোমার হাওয়া আমাকে ছুঁলো
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
২৭.
খুব ভোর সকালে এক আদুরে স্নিগ্ধ বাতাস গায়ে এসে বাড়ি লাগতেই তরীর ঘুম ভেঙে যায়। রুমের এককোণে থাকা খোলা জানালাটা দিয়ে এই কনকনে বাতাসের আগমন। তরী শুয়ে থাকা অবস্থায়ই সেই খোলা জানালার দিকে তাকিয়ে রয়। মনে পড়ে যায় গতরাতের সেই তুখোড় বর্ষণ এবং নিজের অবাধ্য মনের সাড়া দেওয়াটা। চকিতেই বিছানার দু’পাশে চোখ বুলায় সে। অত:পর চোখ বুলায় সম্পূর্ণ রুমে। উহু। পার্থ নেই কোথাও। কোথায় গিয়েছে?
কম্বলটা গায়ে জড়িয়েই উঠে বসে তরী। গতরাতের বৃষ্টিতে ভেজা শাড়িটা অবহেলায় মেঝেতে পড়ে আছে। নিচে নেমে গিয়ে সেই শাড়িটা তুলতে ইচ্ছে হয় না তরীর। তাই বিছানার একপাশে থাকা পার্থর সেই সাদা শার্টটাই গায়ে জড়িয়ে নেমে আসে সে। এগিয়ে যায় সেই খোলা জানালার সামনে। যেখানে গত রাতে তার হাত থেকে ঝিনুক দুটো পড়েছিলো।
ঝিনুক দুটো এখনো আপন জায়গায়ই পড়ে আছে। তরী সেই দুটো শ্বেত ঝিনুককে তুলে নেয় সন্তর্পণে। ঝিনুক দুটোর দিকে তাকিয়ে থেকেই ভাবতে থাকে নিজের মনের অবাধ্যতার কারণ।
সময় পেরোয়। তরী ভাবনার জগতে বুদ হয়ে থাকে। ধ্যান ভাঙে পার্থর কোমল স্বরের ডাক শুনে। পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখে পার্থ তার থেকে কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে আছে। পার্থর হাতে থাকা টাওয়ালটা দেখে বুঝতে পারে কেবল গোসল করে বেরিয়েছে সে।
তরী নিরুত্তর রয়। পার্থর মনের ভয় গভীর হয়। সে যা ভেবে ভয় পাচ্ছিলো তাই কি হচ্ছে? তরী কি তাকে ভুল বুঝছে? এই মুহুর্তে কি পার্থর নিজেকে এক্সপ্লেইন করা উচিত? মনে দ্বন্দ্ব নিয়ে পার্থ ঠিক করে আপাতত তরীকে সময় দেওয়া উচিত। তাই উল্টো দিকে ফিরে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নেয়। কিন্তু ঠিক সেই মুহুর্তে নিজের এক হাতে টান অনুভব করে সে। পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখে তরী তার একহাত ধরে রেখেছে। পার্থ প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাতেই তরী বলে,
“ কাল রাতে যা যা বলেছিলেন ডিড ইউ মিন দ্যাট? “
পার্থ এগিয়ে এসে গভীর স্বরে প্রশ্ন করে,
“ কি বলেছিলাম? “
তরী অপ্রস্তুত হয়। তবুও দৃঢ গলায় বলে উঠে,
“ ভুলে যাওয়ার অভিনয় করবেন না। “
পার্থ আরো এক কদম এগিয়ে এসে বলে,
“ জান? “
তরী সাথে সাথে নিজের দৃষ্টি নত করে ফেলে। পার্থ সেই লজ্জা মাখা মুখশ্রী দেখে সিদ্ধান্ত নেয় যেহেতু অনুভূতিরা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেই সেহেতু আর কিছু লুকিয়েও লাভ নেই। সে একহাতে তরীর থুতনি ধরে উপরে তুলে। তরী তার চোখে চোখ রাখতেই গাঢ় শীতল স্বরে বলে উঠে,
“ আই মেন্ট এভ্রি সিংগেল থিং। “
তরীর লজ্জা আর আড়ষ্টতা গাঢ় হয়। সে অস্থির অনুভব করে। পার্থ তার সেই অস্থিরতা উপলব্ধি করে প্রশ্ন করে,
“ আপনি কি রিগ্রেট করছেন? “
তরী জবাব দেয় না। নিরুত্তর রয়। পার্থর থেকে এক কদম দু কদম করে সড়ে যায়। পার্থ আহত হয়। মনে মনে আশাহত হয়। তরী শান্ত গলায় বলে,
“ ক্যান ইউ প্লিজ গো আউট? “
পার্থ আহত চোখে তরীর দিকে তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে পিছিয়ে যায়। রুমের দরজার বাহিরে পা রাখতেই তরী শান্ত পায়ে এগিয়ে আসে দরজা বন্ধ করতে। পার্থর দৃষ্টি তখনো তরীর দিকে নিবদ্ধ। তরী দরজা বন্ধ করার আগে পার্থর দিকে তাকিয়ে নরম সুরে বলে,
“ আপনি চিন্তা করবেন না। আমার সম্মতি ছিলো পার্থ। “
ব্যস! এরপরই দরজা ভিতর থেকে বন্ধ হয়ে যায়। পার্থ কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে বদ্ধ দ্বারের পানে চেয়ে রয়। অত:পর তরীর কথার অর্থ বোধগম্য হতেই তার মুখে ফুটে উঠে প্রশান্তির হাসি। সাথে সাথে দরজায় করাঘাত করে বলে উঠে,
“ তাহলে মুখের উপর দরজা দিলেন কেনো? “
ভিতর থেকে তরীর গলা শোনা যায়,
“ তবে কি এই অবস্থায় আপনার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম? “
পার্থ ইচ্ছাকৃতভাবে তরীকে লজ্জা দিতে বলে উঠে,
“ আপনার লজ্জা এখনো ভাঙে নি তরী? “
তরী লাগেজ থেকে নিজের জামা বের করতে করতে বিড়বিড়িয়ে বলে উঠে,
“ নির্লজ্জ। “
__________
ভর দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে অলস সময় পাড় করতে ফোন নিয়ে বসে ছিলো পৃথা। পাপা আর তূর্য কেউই বাসায় নেই। একা একা কিছু ভালোও লাগছিলো না তার। তাই নিজের ছোট দা কে কল দেয়।
থানায় বসে একটা জরুরি কেসের সম্পর্কে কেবল ডিসকাশন শেষ করলো শোভন। আজকাল তার উপর দিয়ে বেশ ধকল যাচ্ছে। বিয়ের আর বেশিদিন বাকি নেই। অথচ সেই রহস্যময় কেস এখনো একই জায়গায় আটকে আছে। না পাচ্ছে কোনো তথ্য প্রমাণ, আর না পাচ্ছে কোনো ক্লু। উপরের অফিসারদেরও এই কেস নিয়ে তেমন একটা মাথা ব্যাথা নেই। সকল তৎপরতা যেন শোভনের একা। তার মন বলছে এই কেসটা কোনো সাধারণ কেস নয়।
শোভনের ভাবনার মাঝেই তার ফোন বেজে উঠে। স্ক্রিনে আদরের ছোট বোনের নামটা দেখতেই মুহুর্তেই তার মুখের চিন্তা উবে যায়। ফুটে উঠে হাসি। ফোনটা রিসিভ করে প্রফুল্ল গলায় বলে,
“ কিরে! ভাইয়ের কথা কিভাবে মনে পড়লো? “
পৃথা অভিমানী গলায় শুধায়,
“ তোদের ভুলেছি কবে? “
“ ভুলছিস না বলছিস? বিয়ে হয়েছে দু দিনও হয় নি অথচ দাদা’র বিয়ের পর একবারো দেখা করতে এলি না। তূর্য ভাই কি এমন জাদু করেছে বল তো। তোর ছোট ভাবীর উপরও সেই জাদুর ছড়ি ঘুরাবো। তাহলে বিয়ের পর আর আমাকে ফেলে বাপের বাড়ি চলে যাবে না। “
শোভনের কথা শুনে পৃথা নিঃশব্দে হাসে। ছোট দা সবসময় তাকে এটা সেটা নিয়ে শাসন করতো। কিন্তু পৃথার বিয়ের পর থেকে কথা হলে প্রায়ই হাসি থাট্টা করে শাসনের বদলে। বোন দূরে চলে গিয়েছে দেখে কি তার ছোট দা এখন নিজের শাসনটাও কমিয়ে দিয়েছে?
বোনের নিঃশব্দের হাসিটাও ফোনের অপর পাশ থেকে ঠিকই টের পায় শোভন। তার বোন বাহিরের জগৎ সম্পর্কে ধারণা কম রাখে। তবুও নিজের জন্য ঠিকই ভালো একজন জীবনসঙ্গীই খুঁজে নিয়েছে এতেই শোভন খুশি। তূর্য যে পৃথাকে খুশি রাখছে তার প্রমাণ পৃথা নিজেই। মেয়েটার সাথে কথা বললে বা দেখলেই স্পষ্ট বুঝা যায় যে সে খুশি আছে।
এই কারণেই তূর্যকে এতো সহজে তারা মেনে নিতে পেরেছে। এমনকি শোভন, আফজাল সাহেব এবং সাদিকা বেগমের সাথে তূর্যর সম্পর্ক অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। কেবল পার্থ আর তূর্যের মধ্যের নীরব দ্বন্দ্বের ইতিই এখনো ঘটলো না।
আপাতত সেসব চিন্তা বাদ দিয়ে শোভন প্রশ্ন করে,
“ এডমিশনের প্রিপারেশন কেমন তোর? আম্মার কাছে শুনলাম মেডিক্যাল টেস্টও নাকি দিবি। “
“ না দিয়ে উপায় আছে? মানুষ বিয়ের পর কি আরামসে জীবন যাপন করে। আর আমি এমন এক বাসায় এসে পড়েছি যে সকাল বিকাল খালি পড়াশোনার জ্ঞান গুলিয়ে খাওয়ানো হয় আমাকে। “
শোভন হাসতে হাসতে বলে,
“ তোর নিজের কি ইচ্ছা? কি নিয়ে পড়তে চাচ্ছিস? “
“ আমার কোনো ইচ্ছা নেই। তূর্য বলেছে ঢাকার পাবলিক ভার্সিটি গুলোতে এডমিশন দিয়ে দেখতে। আর পাপা মেডিক্যাল লাইনে পড়াশোনা নিয়ে এতো ইনফরমেশন জানিয়েছে যে আমি এখন মেডিক্যালের প্রিপারেশনও নিচ্ছি। যদি কোনোটাতেই না হয় তাহলে প্রাইভেটে ভর্তি হবো। “
“ তোর এই একটাই সমস্যা। রেজাল্ট চমৎকার কিন্তু নিজের মন থেকে কোনো ইচ্ছা নেই। আই হোপ তূর্য ভাইয়ের সাথে থেকে মাথায় একটু সুবুদ্ধি হবে আর নিজের লাইফ গোল খুঁজে পাবি। “
কথার মাঝেই একজন কনস্টেবল হন্তদন্ত হয়ে শোভনের রুমে প্রবেশ করতেই শোভন পৃথার থেকে বিদায় নিয়ে ফোন রেখে দেয়। প্রশ্ন করে,
“ কি হয়েছে? “
“ স্যার কল আসছে। গতরাতে ধানমন্ডি লেকের কাছে একটা ছেলের লাশ পাওয়া গিয়েছে। “
“ লাশ এখন কোথায়? “
“ স্যার পোস্ট মার্টামের জন্য নেওয়া হইসে। “
কথাটুকু বলেই লোকটা নিজের ফোন হতে একটা ছবি বের করে এগিয়ে দেয় শোভনের দিকে। শোভন ফোনটা নিয়ে ছবিটার দিকে সূক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। ধানমন্ডির লেকের পাশে পাওয়া সেই লাশটার অন স্পট ছবি। ছবির ভিতরের এই মানুষটাকে চেনা অনুভব করে শোভন। মুহুর্তেই তার মনে পড়ে যায়। হন্তদন্ত ভঙ্গিতে নিজের ফোন নিতে নিতে বলে উঠে,
“ আমাদের হসপিটালে যেতে হবে। “
“ কি হয়েছে স্যার? “
শোভন বেরিয়ে যেতে যেতে বলে উঠে,
“ এটা সেই নিখোঁজ ছেলেগুলোর মাঝে একজন। “
__________
গতকালের সেই ঝড়ের তাণ্ডবের চিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সম্পূর্ণ সেইন্ট মার্টিন দ্বীপ জুড়ে। আপাতত বাহিরে বের হওয়ার মতো অবস্থাও নেই। তাই সারাদিন বাংলোতেই পাড় করে দেয় পার্থ এবং তরী। পার্থ অবশ্য বেশিরভাগ সময় নিজের রুমে ফোনে কথা বলেই কাটিয়ে দিয়েছে। সেই কথার কিছু অংশ তরীর কানেও এসেছে। তা থেকে বুঝতে পেরেছে যে পার্থ ইলেকশনটা করছে। এটা শুনে তরী মনে মনে খুশি হয়। পার্থর প্রতিপক্ষ রুবেলের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে তরীরও তার প্রতি ঘৃণা কাজ করছে। এরকম একজন মানুষ ইলেকশন জিতে গেলে তা নিশ্চয়ই জনগণের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না?
সন্ধ্যায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে আপনমমে এসব ভাবতেই ব্যস্ত ছিলো তরী। মিঠা সোনালী রঙের আলোয় আলোকিত বারান্দা হঠাৎই আঁধারে ছেয়ে যায়। তখনই তরী অনুভব করে তার মেরুন রঙের শাড়ির আঁচল ভেদ করে তার পেটের অনেকাংশ গ্রাস করে নিচ্ছে একটা শক্ত, শীতল পুরুষালি হাত। আচমকা হীম শীতল স্পর্শে তরী ঘাবড়ায় না। তাকে বিনা অনুমতিতে ছোঁয়ার সাহস আপাতত একজনেরই আছে। তরী নিজে গতকাল এই অনুমতি এবং অধিকার সেই একজনের অধীনে তুলে দিয়েছে।
তরীর খোলা চুলগুলো বাম পাশের কাধের দিকে নীরবে সরিয়ে দেয় পার্থ। অত:পর ডান পাশের কাধের সোনালী ব্লাউজটা কিছুটা সরিয়ে নিজের প্রিয় কালো তিলটায় অধর ছোয়ায় সে। তরীর দীঘল চোখ জোড়া মুহুর্তেই বুজে আসে। আজ সকালে খোলা জানালার সামনে ঝিনুক দুটো হাতে নিয়ে তরী নিজের মনকে প্রশ্ন করেছিলো, পার্থর প্রতি তার অনুভূতির নাম কি? জবাবে তিনটি শব্দ খুঁজে পায় সে। নির্ভরতা, ভালোলাগা আর বিশ্বাস।
তরীর মনের এই তিনটা বিশেষ অনুভূতিতে নিজের নাম বেশ পরিষ্কার আকারেই লেখে নিয়েছে পার্থ। ভালোবাসা? ভালোবাসার অনুভূতি বেশ আগেই ভোতা করে দিয়ে গিয়েছে সাদ। যা এখন তরীর কাছে এক গভীর ক্ষতের ন্যায়। সেই ক্ষতের মলম হলো বিশ্বাস। যা অর্জন করে পার্থ ধীরে ধীরে তার ক্ষত সারিয়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। একবার সম্পূর্ণ ক্ষত সেরে গেলে যে ভালোবাসাটুকুও এসে পড়বে তা তরীর বিচক্ষণ মস্তিষ্ক বেশ ভালোই জানে।
সারাদিনের ব্যস্ততায় তরীকে সময় দিতে না পারাটা যেন মুহুর্তেই ঘুচিয়ে দেয় পার্থ। গাঢ় স্বরে বলে,
“ অপেক্ষা করালাম? “
এই স্বরটা শুনতে তরীর ভালো লাগে। গতরাতেও পার্থর স্বর এরকমই শোনাচ্ছিল। ঠিক এতটা গভীর। তরী জবাবে বলে,
“ পাশের রুমেই তো ছিলেন। “
“ ফেরার তাড়া ছিলো। “
“ তাই বুঝি এতো দেরি? “
পার্থ হেসে বলে,
“ তারমানে অপেক্ষা করছিলেন। “
কথায় হেরে তরীও হাসে। নিজের হার স্বীকার করতে নিজের পিঠ ছেড়ে দেয় পার্থর প্রশস্ত বুকে। পার্থ একই স্বরে বলে উঠে,
“ কোনো তাড়া নেই তরী। আপনি নাহয় ধীরে সুস্থেই আমাকে ভালোবাসুন। আমিও নাহয় অপেক্ষায় রইলাম। “
তরী নীরবতা ভেঙে প্রশ্ন করে,
“ আগে থেকে ভালোবাসতেন? “
নিজের স্ত্রীর বিচক্ষণতায় পার্থ মুগ্ধ হয়। বিমোহিত গলায় শুধায়,
“ কিভাবে বুঝলেন? “
“ আপনার কর্মকাণ্ড আপনার অনুভূতির প্রমাণ। শব্দে ভেঙে না বললেও বুঝতাম। তবে বিশ্বাস করতে চাইতাম না। দ্বন্দ্বে ভুগতাম। “
“ দ্বন্দ্ব মিটলো কি করে? “
তরী এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে হাসে। পার্থর দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে বলে,
“ নির্বাচন করুন। স্ত্রী হিসেবে আমার তরফ থেকে সম্পূর্ণ সমর্থন পাবেন। “
পার্থ অবিশ্বাস্যকর দৃষ্টি মেলে তাকায়। বিস্ময় নিয়ে প্রশ্ন করে,
“ রাজনীতি না আপনার অপছন্দের? “
“ আপনার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পিছনে উদ্দেশ্য কি? “
“ মানব সেবা ব্রত। “
“ নিয়ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ত যদি সঠিক হয় তাহলে আপনার বিপক্ষে কেন যাবো আমি? “
তরীর কথা শুনে পার্থর বুক থেকে যেন একটা বিরাট পাথর সড়ে যায়। এমন না যে তরীর বিরোধিতায় সে রাজনীতি থেকে সরে যেতো। কিন্তু তরীর সাপোর্টটুকু তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পার্থ হাসিমাখা মুখে বলে,
“ অসংখ্য ধন্যবাদ জান। “
তরী শুনেও ইচ্ছে করে না শোনার ভান করে বলে,
“ কি বললেন? “
“ অসংখ্য ধন্যবাদ। “
“ তারপর কি বললেন? “
পার্থর চোখে দুষ্ট হাসি খেলে যায়। সে শীতল স্বরে বলে,
“ আপনি লোভী হয়ে যাচ্ছেন তরী। “
তরী দৃষ্টি ফিরিয়ে বলে,
“ মোটেও না। “
পার্থ একহাতে তরীর ঘাড় ধরে নিজের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলে,
“ আমার সাথে কথা বলার সময় নজর লুকাবেন না। চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন। “
তরী নিরুত্তর রয় কিন্তু দৃষ্টিও ফেরায় না। পার্থর হাতের আঙুল গুলো তরীর ঘাড় বেয়ে নেমে ধীরে ধীরে তার সরু আঙুলগুলোর ভাজে স্থান পায়। পার্থ তরীর দিকে তাকিয়ে থেকেই বলে উঠে,
“ রাজনীতি দূর থেকে যতটা সহজ দেখতে মনে হয় কাছ থেকে ততটাই ভয়ংকর। এইখানে প্রতি পদে পদে ওঁৎ পেতে থাকে বিভিন্ন ফাঁদ। একবার আমার কারণে আপনাকে এই বাজে সিচুয়েশনে পড়তে হয়েছে। ওয়াদা করছি আর কখনো আমার রাজনীতির খারাপ প্রভাব আপনার উপর পড়তে দিবো না আমি। “
পার্থর কথা শেষ হতে না হতেই তরী নিজের পা জোড়া উঁচু করে তার গলা জড়িয়ে ধরে নিজের অপছন্দের সিগারেটের গন্ধে আবৃত্ত ওষ্ঠদ্বয় ছুঁয়ে দেয় পরম আবেশে। পার্থর নিঃশ্বাস রুদ্ধ হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত মুহুর্তের ধাক্কা সামলে উঠতেই সে নিজেও নিজের পেশল হাত দ্বারা তরীর নির্মেদ কোমর জড়িয়ে ধরে। নব আবেগে বেষ্টিত পার্থ মুন্তাসির নিভৃতে ফিসফিসিয়ে তরীর স্ব-জ্ঞানে তার কাছে এলান করে,
“ আপনাকে ভালোবাসি তরী রশীদ। এই হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন যতদিন চলমান থাকবে ততদিন পার্থ মুন্তাসির কেবল আপনাকেই ভালোবাসবে। “
চলবে…
যেই তোমার হাওয়া আমাকে ছুঁলো
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
২৮.
চট্টগ্রামে পার্থ এবং তরীর সেই অল্প দিনের স্থায়িত্ব ফুরিয়ে আসে খুব তাড়াতাড়িই। তারা ফিরে আসে ঢাকায়। এতোদিন পর ছেলে এবং ছেলের বউ ঘরে ফিরে আসায় নিষ্প্রাণ ঘর আবার প্রাণ ফিরে পায়। আফজাল চৌধুরী এবং সাদিকা বেগম তাদের ছেলে এবং ছেলে বউয়ের মধ্যকার স্বাভাবিক সম্পর্কের আভাস উপলব্ধি করে। খুশি হয় দু’জনই।
পার্থ নিজের নির্বাচনের প্রস্তুতি বেশ তোড়জোড় করেই নেওয়া শুরু করেছে। তরী ফিরে গিয়েছে নিজের প্রফেশনে। দেখতে দেখতে বিশটা দিন চোখের পলকেই পেরিয়ে যায়। সামনের সপ্তাহে শোভন এবং মধুমিতার বিয়ে। বাড়ি জুড়ে বিয়ের প্রস্তুতি চলছে।
আজ ওপিডি ডে থাকায় দুপুরের মধ্যেই সব পেশেন্ট দেখে বাসায় ফিরে আসে তরী। বাসায় ফিরতেই দেখে তার দুই মামী শাশুড়ী লিভিং রুমে বসে। সাদিকা বেগমও তাদের বিকেলের চা নাস্তার আপ্যায়ন করতে ব্যস্ত। তরী তাদের দেখেই এগিয়ে গিয়ে সালাম দেয়।
পথে চল্লিশ মিনিট এই তপ্ত আবহাওয়ায় জ্যামে বসে থাকার দরুন তরীর মুখশ্রীর রঙ কিছুটা ফ্যাকাসে লাগছিলো। তা দেখেই পার্থর ছোট মামী খোঁচা মেরে বলে উঠে,
“ আপা? ছেলের বউয়ের গায়ের রঙ দেখি একমাসেই ময়লা হয়ে গেছে। এই ছিলো আমাদের পার্থর পছন্দ? “
তরীর নিজের ব্যাপারে এরকম অহেতুক একটা কমেন্ট পছন্দ হয় না। সে হাসিমুখে একটা পাল্টা জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু তার আগেই পিছন থেকে একটা পুরুষালী কণ্ঠ ভেসে আসে,
“ ঘরের মেয়েকে নিয়ে এরকম অহেতুক মন্তব্য আমার পছন্দ নয় পার্থর আম্মা। ভাবীরা হয়তো বিষয়টা জানে না। “
আফজাল সাহেবের গম্ভীর কণ্ঠস্বর শুনতেই পার্থর ছোট মামীর মুখ কালো হয়ে যায়। উনি আর কিছু বলার সাহস রাখে না। তরী শশুড়ের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার হাসি দিতেই আফজাল সাহেব হাতের টুপিটা মাথায় দিতে দিতে বলে উঠে,
“ আমি মসজিদে যাচ্ছি নামাজের জন্য। তরী আম্মু তুমি উপরে গিয়ে বিশ্রাম করো। ক্লান্ত দেখাচ্ছে। “
তরী আফজাল সাহেবের পিছু পিছু দরজা পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে বলে উঠে,
“ সাবধানে যাবেন আব্বা। “
আফজাল সাহেব মৃদু হেসে বেরিয়ে যায়। তরীও আসছি বলে উপরে নিজের রুমে চলে যায়। ঘরের বউকে এতো মাথায় তুলে রাখার বিষয়টা ছোট মামীর পছন্দ হয় না। যেই বউ কিনা সারাদিন ঘরের বাইরে কাটায়, সংসারের কোনো দায়িত্ব পালন করে না, তাকে এতো গুরুত্ব দেওয়ার কি আছে? এর থেকে হাজার গুণ ভালো তো তার মেয়ে শর্মী ছিলো। পার্থর যে কি বুঝে শর্মীর মতো সংসারী মেয়েকে রেখে তরীর মতো এমন উড়নচণ্ডী মেয়ে ভালো লাগলো তা মাথায় ধরে না উনার৷
__________
নিজের রুমের দরজার সামনে আসতেই তরীর ভ্রু কুচকে যায়। দরজা ভিতর থেকে মৃূদু চাপিয়ে রাখা হয়েছে। তরীর জানামতে পার্থ এই মুহুর্তে বাসায় নেই। আর বাড়ির অন্য কেউও তাদের অনুপস্থিতিতে তাদের রুমে প্রবেশ করে না। তাহলে ভিতরে কে?
প্রশ্নটা মাথায় উঁকি দিতেই তরী নীরবে দরজা খুলে সিটিং এরিয়া পেরিয়ে বেডরুমে প্রবেশ করে। সাথে সাথে সে দেখতে পায় একটা বিরক্তিকর দৃশ্য। সকালে বেরোনোর আগে পার্থ নিজের গায়ের টি শার্ট খুলে একটা শার্ট পড়ে বেরিয়েছে। সেই টি শার্ট হাতে নিয়েই শর্মী তার আর পার্থর বেডে বসে আছে। বিরক্তিকর দৃশ্যটা দেখতেই তরীর পায়ের রক্ত মাথায় উঠে। সে ঝাঁঝালো স্বরে বলে উঠে,
“ অন্য কারো রুমে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে একজন বিবাহিত পুরুষের টি শার্ট হাতে নিয়ে বসে থাকাটা কোনো ভদ্র মেয়ের কাজ নয়। “
তরীর কণ্ঠস্বর শুনতেই শর্মী চকিতে পিছনে ফিরে তাকায়। তরী ব্যতীত অন্য কাউকে না দেখে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ায়। অত:পর মৃদু হেসে বলে উঠে,
“ পার্থ ভাইয়ের বিয়ে করে লাভ হলো কি? তার টি শার্টটাও তার বউ গুছিয়ে রাখতে পারে না। অবহেলায় রুমের এককোণে পড়ে রয়। “
শর্মী নামক এই মেয়েটাকে বিয়ের সময় দেখেছিলো তরী। তাদের বিয়ের পর একবার বাসায়ও এসেছিলো। আর এসেই সর্বক্ষণ পার্থর ব্যাপারে আগ্রহ দেখাতো। তখনই তরী বুঝতে পেরেছিলো শর্মীর মনের খবর। সে শর্মীর দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে উঠে,
“ পার্থর চিন্তা করার জন্য তার বউ আছে শর্মী। তোমার নিজের ভাইকে নিয়ে এতো চিন্তা না করলেও চলবে। “
তরীর বলা ‘ তোমার ভাই ‘ কথাটাটুকু শুনে শর্মীর গা জ্বলে যায়। তরী যে ইচ্ছে করে তাকে জ্বালানোর জন্যই এই কথাটা বলেছে তা বুঝতে বাকি থাকে না তার। কপট রাগ দেখিয়েই বেরিয়ে যায় সে।
শর্মীর যাওয়ার পানে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তরী। জীবনের পথে বহু কাঁটাই থাকবে। বিশ বছরের বোকা তরী হলে এখন ঠিকই এই কাঁটার উপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে পায়ে জখম বানাতো। কিন্তু এখন সে আর বোকা নয়। পথে কাঁটা পেলে সেই কাঁটা তুলে তবেই সেই পথে হাঁটে সে। এরকম বিবাহিত পুরুষের দিকে নজর দেওয়া মেয়েদেরকে দু চারটা কঠিন কথা শুনালে কোনো ক্ষতি নেই।
__________
রাতের নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে শা শা বেগে হাইওয়েতে ছুটে চলেছে একটা বাইক। বাইকের সামনে টি শার্টের উপর জ্যাকেট গায়ে জড়িয়ে বসে বাইক চালাচ্ছে একটা শ্যামবর্ণের যুবক। পিছন থেকে তার পেট জড়িয়ে বসে আছে এক স্নিগ্ধ রমণী। তার মাথা ঠেকে আছে যুবকের পিঠে। দেখে মনে হচ্ছে সদ্য প্রণয়ে আসক্ত এক প্রেমিক যুগল।
আচমকা রমণী উৎফুল্ল গলায় বলে উঠে,
“ তূর্য থামুন। “
তূর্য প্রশ্ন করে,
“ কি হয়েছে? “
“ ভূট্টা। “
তূর্য সাথে সাথে বাইক ব্রেক করে থামায় রাস্তার একপাশে। তার বাইক থামাতে দেরি কিন্তু পৃথার নেমে দৌড়ে রাস্তার অপরপাশে থাকা ভূট্টাওয়ালার ভ্যানের কাছে যেতে দেরি হয় না। তূর্য নিজের মাথার হেলমেটটা খুলে বাইকের চাবি পকেটে নিয়ে পৃথার পিছুপিছু আসে। তাড়াহুড়ো করে পৃথা নিজের মাথার হেলমেটও খুলে আসে নি। তূর্য এগিয়ে এসে আগে পৃথার মাথা থেকে হেলমেট খুলে অত:পর সামনের বৃদ্ধ লোকটার উদ্দেশ্যে বলে উঠে,
“ মামা একটা ভূট্টা দেন। “
লোকটা সাথে সাথে একটা ভূট্টার খোসা ছাড়িয়ে তা কয়লার উপরে দেয়। পৃথা চোখ বাকিয়ে প্রশ্ন করে,
“ একটা কেনো? আপনি খাবেন না? “
“ না। “
বলে তূর্য পৃথার এলোমেলো চুল নিজের হাতের সাহায্যে ঠিক করতে থাকে। বৃদ্ধ লোকটা আবার প্রশ্ন করে,
“ লেবুর টক দিবো নাকি তেঁতুলের? “
পৃথা সাথে সাথে জবাব দেয়,
“ তেঁতুলের। “
পত্রিকার কাগজে মোড়ানো কয়লায় পোড়া ভূট্টা হাতে নিয়ে টাকা মিটিয়ে দু’জনে বাইকের কাছে এসে দাঁড়ায়। পৃথা বাইকের উপর একপাশ হয়ে উঠে বসে। তূর্য তার সামনে দাঁড়িয়ে আশেপাশের রাস্তার দিকে দৃষ্টি বুলাতে থাকে। পৃথা ভূট্টায় একটা কামড় বসিয়ে ফুলে থাকা গাল নিয়ে প্রশ্ন করে,
“ বাই দ্যা ওয়ে, আজকে কোন খুশিতে আমাকে নিয়ে এই মাঝরাতে বাইক ড্রাইভে বেড়িয়েছেন? “
তূর্য পৃথার দিকে তাকিয়ে জবাব দেয়,
“ মেডিক্যাল এডমিশন টেস্ট দিয়েছো আজকে। সেই খুশিতে। “
পৃথা চোখ সরু করে বলে,
“ শুধু তো এডমিশন টেস্টই দিলাম। এতে সেলিব্রেশনের কি আছে? রেজাল্ট দেক আগে। “
“ পড়াশোনা করে টেস্ট দিয়েছো এটাই বা কম কিসে? আপাতত এটা সেলিব্রেট করি। টিকে গেলে আরেকবার সেলিব্রেশন করবো। “
তূর্যর কথাটা পৃথার পছন্দ হয়। সে ভূট্টা তূর্যর দিকে এগিয়ে ধরে। তূর্য প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাতেই বলে,
“ আমি একা পুরোটা কিভাবে খাবো? রাক্ষস নাকি আমি? বাকিটা আপনি শেষ করেন। “
তূর্য হেসে বলে,
“ জানতাম। এজন্যই একটা নিয়েছি। “
পৃথা তূর্যের দিকে তাকিয়ে একগাল হাসে। পৃথার সকল অভ্যাস পৃথার থেকেও ভালো এই মানুষটা জানে। এই মানুষ তার সাথে থাকতে তার কোনো চিন্তা নেই।
__________
সকাল সকাল ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে বসে চুল আছড়াতে ব্যস্ত তরী। তার পিছনে দাঁড়িয়ে পার্থ নিজের স্কিন কেয়ার নিয়ে ব্যস্ত। সেই দৃশ্যটা সরু চোখে দেখছে তরী। সে নিজে মেয়ে হয়েও আলসেমি করে কখনো স্কিন কেয়ার করার ধৈর্য্য কুলিয়ে উঠতে পারে না। অথচ পার্থর এইসব ব্যাপারে খুব ধৈর্য্য। সেল্ফ পেম্পারে এই লোককে কেউ হারাতে পারবে না।
পার্থ আয়নার দিকে নিজের দৃষ্টি স্থির রেখে বলে উঠে,
“ আপনি যদি নেক্সট পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে দৃষ্টি না ফেরান তাহলে আজ আপনারও হসপিটালে যাওয়া হবে না আর আমারও সমাবেশে যাওয়া হবে না। “
তরী সাথে সাথে নিজের দৃষ্টি নত করে। এই লোকের ভরসা নেই। পার্থ মৃদু হেসে মেনস পারফিউম গায়ে মেখে হাতে হাতঘড়ি পড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তরীও ততক্ষণে রেডি হয়ে ব্যাগ কাধে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। বেরিয়ে যেতে নিলেই পার্থ তাকে হাত ধরে টেনে থামিয়ে দেয়। তরী ফিরে তাকাতেই তার মোমের মতো গালে নিজের ওষ্ঠদ্বয় চেপে ধরে পার্থ। নরম গালটা ছুঁয়ে দিয়েই পার্থ গভীর স্বরে বলে,
“ আজকে ফিরতে হয়তো দেরি হবে। টায়ার্ড লাগলে অপেক্ষা করবেন না। ঘুমিয়ে পড়বেন। সকালে উঠে আমাকে পাশে পাবেন। “
তরী পার্থর কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে উঠে,
“ সাবধানে থাকবেন। সাবধানে ফিরবেন। “
__________
সবেমাত্র একটা সার্জারি সেরে বেড়িয়েছে তরী। দুপুর বাজে একটা। সকালে হসপিটালে আসার পর থেকে এখনো পার্থর সাথে কথা হয়নি তার। বেশ অস্থির লাগছে। তাই লাঞ্চ রেখে আগে কেবিনে এসে পার্থর নাম্বারে কল করে সে। কিন্তু ফোনটা বন্ধ পায় সে। সাথে সাথে নিজের বোকামির উপর বিরক্ত হয় সে। পার্থ এখন হয়তো সমাবেশে ব্যস্ত। তাকে কল দিয়েও লাভ নেই। তাই সে আসিফের নাম্বারে কল করে। কিছুক্ষণ ফোনটা বাজতেই অপরপাশ থেকে ফোন রিসিভ হয়। সাথে সাথে তরীর কানে একটা তীক্ষ্ণ শব্দ এসে ঠেকে। সেই তীক্ষ্ণ শব্দ ভেদ করে আসিফ হন্তদন্ত স্বরে বলে উঠে,
“ এইখানে টিয়ার সেল আর বোমা ফালানো হইতেসে ভাবী। পরিস্থিতি বিগড়ায় আছে। “
চলবে…
[ কপি করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ]