#ছোট_গল্প
#মেঘ_হবো_তোমার_আকাশের
#নূপুর_ইসলাম
রাইমা দরজা খুলতেই ঝটকা খেলো। এতোটাই যে ঝটকায় তার হাতে রাখা বই আর জগ নিচে পড়ে গেলো। ভাগ্যিস প্লাস্টিকের! তা না হলে খবর ছিলো। সে তড়িঘড়ি করে উঠাতে গেলো। সেখানেও বিপত্তি ঘটে গেলো। তড়িঘড়িতে নিচু হওয়াতে তার গলা থেকে ওড়না পড়ে গেলো।
সে হতোম্ভব! সে বই ধরবে, জগ উঠাবে, না ওড়না ধরবে, না নিচু হওয়াতে যে অপ্রিতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা সামাল দেবে।
সে আর ভাবলো না। সব জাহান্নামে যাক। সে সব রেখেই দিলো ভৌঁ দৌড়। ইশ! কি লজ্জা! কি লজ্জা! তার সাথেই কেন এমন হয়?
সে তো ভাই আপনমনে পড়ছিলো। চুলায় রান্না! কলিংবেলের শব্দে মা ভেবেছিলো দুধওয়ালা। এই সময় ভর দুপুরে তাদের বাসায় একমাএ সে’ই তো আসে। তাই মা চেঁচিয়ে বললো দুধ রাখতে। সেও আর ডানে বামে তাকায়নি। টেবিল থেকে জগ নিয়ে ডাইরেক্ট দরজা খুলে ফেলেসে। ইশ কেন যে না দেখে খুলেছে।
ফাইয়ায ঢোক গিললো! সে নিজেও হতোম্ভব। সে নিচু হয়ে বই, জগ, ওড়না তুললো। ওড়না তুলতে গিয়ে তার হাত কাঁপতে লাগলো। সে মনে মনে নিজেকে নিজেই শাসালো। বোন লাগে তোর, বোন! ছোট মানুষ! হঠাৎ দেখে আঁতকে গেছে।
অবশ্য কেন যে এতো আঁতকে উঠে ফাইয়ায নিজেও জানে না। এই মেয়ে বলতে গেলে তার সামনেই আসে না। ভুল ক্রমে পড়ে গেলেও এইরকম আচরণ । সমস্যা টা কোথায় ?
সে নিজে খুবই শান্তশিষ্ট, ভদ্র টাইপ ছেলে। উঁচু গলায় কখনও কেওর সাথে কথা বলেছে বলে মনে পড়ে না। কাজিন মহলে সে মাই ডিয়ার টাইপ। যে কোন প্রয়োজনে, যে কোন সমস্যায় সবাই আগে তাকেই জানাবে। তবে এই মেয়ে ভিন্ন! এমন না ছোট বেলা থেকে। আগে তো ভালোই ছিলো। দেখা সাক্ষাৎ, কথা কম হলেও অনন্ত স্বাভাবিক আচরণ করতো। কিন্তু গত এক বছর এমন আচরণ করছে কেন কে জানে?
সে আর ভাবলো না! বই ওড়না সোফায় রাখলো। কাজিন টাজিন নিয়ে যতো কম ভাবা যায় ততো ভালো। সে ভেতরে এসে চাচাকে ডাকলো, কাজ আছে তার । এসব হাবি জাবি জিনিস নিয়ে চিন্তা করে সময় নষ্টের মানে হয় না।
তার মানে না হলেও রাইমা নিজের রুমে এসে কেঁদে ফেললো! আয়নার সামনে এসে বেশ কয়েক বার উঁচুনিচু হলো। কতোটুকু চিচিংফাঁক হয়েছে কে জানে। আল্লাহ! মাটি ভাগ করো আমি ঢুকে যাই। এই লজ্জা সে কোথায় রাখবে। এমনিতেই সে এক অকাজ করে রেখেছে। তার মধ্যে আবার এই সব। ধুর! বলেই সে মোবাইল নিলো। গ্রুপে ঢুকেই উরাধুরা গালিগাজ টাইপ করতে লাগলো। এই শয়তান, এই শয়তানগুলোর জন্যই তো সে ফেসেছে। এখন না আছে শান্তি, না আছে স্বস্তি।
ফাইয়ায ভাই তার চাচাতো চাচার ছেলে। একই এলাকায় ছোট থেকে বেড়ে ওঠা। এই তো তাদের বাড়ির দু- বাড়ি পরেই বাড়ি। খুবই ভদ্র, নম্র টাইপ ছেলে। গুষ্টির যে কোন বিপদে আপদে সবার আগে সে’ই ঝাঁপিয়ে পড়ে । এই ভালো মনের ভালো মানুষটা কে সে খুবই সম্মান করে। কিন্তু গিট্টু লাগিয়ে ফেলেছে তার সমবয়সী কাজিনরা। তাদের সবার একটা স্পেশাল, সিক্রেট গ্রুপ আছে। সেখানে তারা নানা রকম দুষ্টুমিসহ গেম টেম খেলে। সেই দিনও খেলেছিলো।
সেই দিন ছিলো তার জীবনের সবচেয়ে কুফা মার্কা দিন। যাই করেছে হেরেছে। আর এই গ্রুপের রুলস হলো। যে হারবে সবাই মিলে তার জন্য একটা শাস্তি ঠিক করবে। আর তার শাস্তি হয়েছিলো একটা নাম্বার! এই নাম্বারের মালিক ছেলে হোক মেয়ে প্রেমে ফেলতে হবে। আর না হলে সাবাইকে স্পেশাল ট্রিট।
প্রথমে সে রাজি হয়নি। কে না কে। কিন্তু রাজি না হয়েও উপায় কি। এতো গুলো ভেরার পালকে খাওয়াতে গেলে সে ফকির হয়ে যাবে। তাই আল্লাহ, আল্লাহ করে এই পথেই নেমে পড়লো। কে জানবে? কাম খতম, নাম্বার হজম।
ফাইয়ায ভাই ব্যবসায়ী মানুষ। তার দু- তিনটা নাম্বার আছে। শয়তান গুলো যে তার মধ্যে থেকে অচেনাটা ই তাকে দিয়েছে, সে কল্পনায়ও ভাবেনি। ফাইয়ায ভাই জেন্টলম্যান টাইপ ছেলে। কোন বদ দোষ টোষ নেই। তার জন্য টুকটাক মেয়ে দেখা টেখা হচ্ছে, আমরাও দাঁত টাঁত মেজে রোস্ট খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, ব্যাস পছন্দ হলেই বিয়ে। তাই এরকম কিছুতে সে কি গলবে? এখানে আমার হার নিশ্চিত আর তাদের ট্রিটও। তাই তারা নিশ্চিন্তেই নাম্বারটা দিয়েছিলো।
কিন্তু সেও তো রাইমা! কাজের ক্ষেএে তার ব্রেইন কাজ না করলেও অকাজের ক্ষেএে দৌড়ে চলে। তাই এটা ফাইয়ায ভাইয়ের নাম্বার না জানলেও। এটা ঠিক জানতো সোজা কেওর নাম্বার এরা দেবে না। তাই ডাইরেক্ট ফোন না দিয়ে সে গেলো একটু ভিন্ন রাস্তায়। হাজার টাকা ফ্ল্যাক্সিলোড করে ফেললো। তারপরে চুপ! এখন আল্লাহ ভরসা! ট্রিটের টাকা বাঁচাতে এখন না তার হাজার টাকাই জলে যায়। সে আল্লাহ, আল্লাহ করতে লাগলো। মনে মনে বললো, — আল্লাহ আমও বাঁচাও ছালাও বাঁচাও।
তারপরেই তো কাঙ্খিত ফোনটা আসলো । নারী জাল বিছাবে সেই জালে পুরুষ ফাঁসবে না তা কি করে হয়। কতো বড় বড় যোগী তপস্বীর তপস্যা ভঙ্গ করে ফেলে এই নারী। এ আর কোন ছাতার মাথা। হুহ্!
রাইমা রিসিভ করে লজ্জিত মাখা কন্ঠে বললো, — ইটস ওকে! আমারই ভুল। আমার ভুলের জন্যই হয়েছে, আপনার কষ্ট করে ফেরত দিতে হবে না।
ফাইয়ায ভাই তো ফাইয়ায ভাই। আমাদের গোষ্ঠীর মানবতার ফেরিওয়ালা। অন্যের ভুলের টাকা সে হজম করবে এটা হয়? সে ব্যস্ত হয়ে গেলো ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
তার এই ব্যবস্তারই রাইমা সুযোগ নিলো। প্রথমে টুকটাক কথা। হাই, হ্যালো টাইপ! ব্যাস সেখান থেকেই শুরু। আস্তে আস্তে দিনে, তারপরে রাতে। সময় অসময় অসংখ্য মেসেজ আদান প্রদান হতে লাগলো।
না প্রেম না! রাইমা বোকা হতে পারে তবে এটা ঠিক জানে সেঁধে কোন ইঙ্গিত দেওয়া যাবে না। সে তো শুধু টুকটাক কথায় এইটুকুই বুঝিয়েছে, আমরা ভালো বন্ধু হতে পারি।
ফাইয়ায ভাইও সেটাই বুঝেছে। তাই সেও কথা বলেছে নির্দ্বিধায়। দু- জনের মধ্যে যখন ভালো একটা আন্ডাস্ট্যান্ডিং তৈরি হয়ে গেলো, তখনি তো লাগলো আসল গেঞ্জাম।
তাদের এক কাজিনের বিয়ে। গায়ে হলুদের ড্রেস কোর্ড নীল। বিয়ের আনন্দের মাঝেই মেসেজে টুকটাক কথা হচ্ছিলো। সেই কথার মাঝেই জানতে পারলো, সেও বিয়েতে। রাইমা মাথা ঘামায়নি। শীতের সিজন মানেই তো বিয়ের সিজন। মিলে যাওয়া ব্যাপার না। মাথা তো ঘামালো তখন যখন জানতে পারলো তাদের ড্রেস কোর্ড ও নীল। তার কলিজা খাবলে উঠলো। দুটো জিনিস মিলে যাওয়া আর যাই হোক, কাকতালীয় হতে পারে না।
তাকে কার নাম্বার দিয়েছে এরা। সে সাথে সাথেই টাইপ করলো, ” আপনার যে কাজিনের বিয়ে সে ছেলে না মেয়ে?
উত্তর এলো মেয়ে। সে কাঁপা কাঁপা হাতে আবার মেসেজ টাইপ করলো ” নামটা জানতে পারি?
ব্যাস কাম খতম! ওপাশ থেকে যে নাম আসলো, রাইমা দেখে সাথে সাথেই তার হাত মাথায় চলে গেলো। সর্বনাশ! সে সাথে সাথে মোবাইল অফ করে সিম খুলে ফেললো। খুলে দৌড়! সব কয়টাকে ধরে এক সাইডে আনলো। এক প্রকার গলায় চেপে ধরতেই তারা সাথে সাথেই স্বীকার করলো।
রাইমা নতুন শাড়ি নিয়েই মাটিতে পা ছড়িয়ে বসে পড়লো। আল্লাহ! এখন কি হবে। যদি কোন ভাবে জানে! ফাইয়ায ভাই তো ভালোই, তার নিজের বাবা, মাই তাকে ছিঁড়ে ফালাফালা করে ফেলবে। তাদের গুষ্টিতে কাজিন টাজিনের মধ্যে বিয়ে তো দূরের কথা। প্রেম, ট্রেমও কেও করেনি। এটা সবার অপছন্দ। তাদের এক কথা, ভাই বোন মানে ভাই বোন। এখানে খালাতে, মামাতে, চাচাতো বলে কোন কথা নেই।
সবাই তাকে মিলে সান্তনা দিলো! এমন কিছুই হয়নি। কথাই তো বলেছিস। আর তাছাড়া কে বলবে। মুখ খুললে কি তারাও ফাসবে না। তাই চিল! কতো আকাম করে মাটি চাপা হয়ে গেছে। এ আর কি। চিল ভাই চিল। তুই এই পর্যন্ত গিয়েছিস তাতেই আমাদের জন্য অনেক। তুই জিতেছিস! আমরা সবাই মিলে এখন তোকে ট্রিট দেবো।
রাইমা খুশিতে বাকবাকুম ! তাইতো জানছে কে? সে ট্রিট হজম করলো ভালো ভাবেই। কিন্তু ফাইয়ায ভাইকে করতে পাড়লো কই। ও যে বলে না, চোরের মন পুলিশ, পুলিশ। তারও সেই অবস্থা। ফাইয়ায ভাইকে দেখলেই তার কলিজা কাঁপতে থাকে, গলা শুকিয়ে যায়। মনে হয় এই বুঝি ধরে ফেললো।
যদি ধরে ফেলে? এই কথা কল্পনা করলে, কল্পনার মাঝেই তার রুহু কেঁপে উঠে। কিভাবে ফেস করবে সে? এমন না আগে গলায় গলায় ভাব ছিলো। তবুও যতো সম্ভব এড়িয়ে ই চলতে লাগলো । কিন্তু কপাল খরাপ হলে যা হয় আর কি? কিভাবে কিভাবে যেন দেখা হয়েই যায়। যেমন আজ হলো। এই দুঃখে রাইমা কেঁদে বালিশ ভিজিয়ে ফেললো। নাকের পানি চোখের পানি দিয়ে খাট বালিশ টইটুম্বুর করলো। ফাইয়ায ভাইয়ের কন্ঠ ড্রয়িং রুম থেকে যতোবার তার কানে আসলো, ততোবার দেওয়ালে মাথা ঠুকলো। কেন, কেন তার সাথেই কেন?
তারপর অবশেষে হাত পা ছড়িয়ে লম্বা ঘুম দিলো। তার এই ছোট্ট জানে আবার বেশি লোড নিতে পারে না। তার ঘুম ভাঙলো সন্ধ্যার পরে, ফোনের শব্দে। ফোন দিয়েছে সায়মা। সেও তাদের কাজিন। আর তার গল্পের মেইন কালপ্রিন্ট হলো এ। ভাইয়ার ব্যক্তিগত নাম্বার টা তো এ’ই দিয়েছিলো।
সে ফোন ধরলো না। মর তুই! কিন্তু ফোনের উপর ফোন দেখে থাকতেও পারলো না। শেষ মেষ ধরলো! ধরতেই সায়মা কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো, বড় একটা আকাম করে ফেলেছি বোইন। প্লিজ হেল্প মি?
রাইমা বিরক্তমুখে উঠে বসলো। এ আবার নতুন করে করেছে কি ? সে বিরক্ত মুখেই বললো, —- কি হয়েছে?
—- আমি বিয়ে করে ফেলেছি রে ।
রাইমা প্রথম খেয়াল করেনি। এই মেয়ে সব সময় কোন না কোন আকাম করতেই থাকে। তাই স্বভাব মতো বললো, — ও! সাথে সাথেই সে ঝটকা খেলো। খেয়ে বললো, — কি করেছিস?
রাইমা হা হয়ে কিছুক্ষণ বসে রইলো। তারপর গ্রুপে ঢুকো সবাই কে জানালো। জানিয়ে কোন রকম রেডি হলো। এবার অবশ্য ভুল করলো না। দুই সাইডের ওড়নার ইচ্ছে মতো পিন মারলো। তার মাংস খুলে যাবে। তবুও না খুলবে পিন, না পড়বে ওড়না।
ইচ্ছেমতো পিনটিন মেরে সে বেড়িয়ে এলো। এখন একমাএ ভরসা ফাইয়ায ভাই। লাজ লজ্জা সব এখন জাহান্নামে। তাকে কি আর আজ নতুন দেখেছে। হাফ প্যান্ট, ফুল প্যান্ট সব কিছুতেই দেখা শেষ। না হয় আরেকটু বেশি দেখেছে। এই আর কি?
সে ফাইয়ায ভাইদের বাসায় এসে শুনলো সে বাসায় নেই। না থাকারই কথা। এই ভর সন্ধ্যায় কোন ছেলেই বাসায় থাকে। সে এখন কি করবে? ফোন তো সে মরে গেলেও দিবে না। যদি কন্ঠ শুনে চেনে ফেলে। সে টেনশনে হাবুডুবু খেতে লাগলো। খেতে খেতেই মাথায় বুদ্ধি এলো। মেসেজ করি! হারামি তো বিয়ে করেই ফেলেছে। কি দরকার এখন এতো তড়িঘড়ি করার।
সে মেসেজে বিস্তারিত লিখলো! লিখে পাঠিয়ে দিলো। এখন নিজে থেকেই সায়মার সাথে যোগাযোগ করে নিবে।
সে নিশ্চিন্তেতে বাসার দিকে রওনা দিলো। কিছুদূর যেতেই ফাইয়ায ভাইয়ের ফোন আসলো। তার কলিজা কেঁপে উঠলো। এখন কি করবে? আল্লাহ! কি করবে? কি করবে, করতে, করতে ফোন কেঁটে গেলো।
রাইমা হাঁফ ছাড়লো! ছাড়তেই আবার বাজতে লাগলো। রাইমার কেঁদে দেওয়ার অবস্থা। সেই অবস্থা ভিতরে দমিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে ফোন রিসিভ করলো।
—- কোথায় তুই?
রাইমা ঢোক গিললো! গিলে আস্তে করে বললো, — বাসার সামনে। বলেই চোখ বন্ধ করে ফেললো।
ওপাশে নিশ্চুপ! রাইমা মনে মনে দোয়া ইউনুস পড়তে লাগলো! এই দোয়ায় ইউনুস নবি মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আর আল্লাহ তাকে এই সামান্য বিপদ থেকে রক্ষা করবে না?
রাইমার দোয়া কবুল হলো কিনা বোঝা গেলো না। তবে কিছুক্ষণ পরে ফাইয়ায শান্ত ভাবে শুধু বললো, — সায়মা দের বাসায় যা। সুন্দর করে বুঝিয়ে বল। এদিকটা আমি দেখছি।
রাইমা হাঁফ ছাড়লো! যাক বাবা বেঁচেছে। মনে মনে ঠিক করলো! আজকের দুপুরের ঘটনা না ভোলা পর্যন্ত আর এর সামনে যাবে না। উঁহু! একদম না।
তার একদম না, একদমই কাজ করলো না। পরের দিনই দেখা হলো। সায়মাদের বাসায়! সায়মার শুশুর বাড়ি, বাবা বাড়ি দু- পক্ষের মিটিংয়ে। আর এই মিটিংয়ের মধ্য মণি ফাইয়ায ভাই। তার কথা, তার সুন্দর ভাবে বোঝানো, সব কিছু সুন্দর ভাবে সামাল দেওয়া। সব সব রাইমার ভেতরের অপরাধবোধ আরো বাড়িয়ে দিলো। ইশ! কিভাবে করলো সে? আর কেও না জানুক, সে তো জানে শেষের দিনের কথা গুলোর গভীরতা কতোটুকু ছিলো। নিশ্চয়ই তাকে হাজার বার ফোন দিয়েছে। এছাড়া তো খোঁজার আর উপায় নেই। নামটাও বলেছিলো মিথ্যা। আহারে বেচারা! কতো রাতের ঘুম হারাম হয়েছে কে জানে?
তার দুঃখের কথা চিন্তা করে রাইমা নিজেই দুঃখে চোখ, মুখ ফুঁলিয়ে বসে রইলো। মনে মনে আল্লাহ কে বললো, ” এই ভালো মনের ভালো মানুষটার সাথে এই নোংরা গেইমটা না খেললে হতো না? শয়তান যখন ওই শয়তান গুলোকে কুরকুরি দিচ্ছিলো। তখন তুমি কি করেছো। দু- একটা ঠাটা কি এদের মাথায় ফেলতে পারলে না? এতো এতো ঠাটা রিজার্ভে রেখে হবেটা কি? যদি এরম শয়তানদের মাথায় দু- একটা নাই ফেলতে পারো। হুহ্!
রাইমার হায়, হুতাস মনে মনে চলতেই থাকলো। সে যদি একটু থেমে আশেপাশে নজর দিতো। তাহলে সে ঠিকিই দেখতো পারতো, এই কিছু সময়ের মাঝে তার ভালো মনের ভালো ফাইয়ায ভাই তার দিকে কতোবার তাঁকিয়েছে।
চলবে।