#মুখোশের আড়ালে
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ১
ছোট বোনের অ’ন্ত’র’ঙ্গ ছবি ইনবক্সে পাঠিয়ে আমার বেস্টফ্রেন্ড বললো, দোস্ত মেয়েটা সেই হ’ট না?
নিজের বোনকে আমার বেস্টফ্রেন্ডের সাথে অ’ন্ত’র’ঙ্গ অবস্থায় দেখে অনেক বড় একটা শক খেলাম। আর ভাই হয়ে এই জগন্য দৃশ্য আমাকে দেখতে হচ্ছে। ওকে এখন হাতের কাছে পেলে খু’ন করে ফেলতাম।
আমারই বেস্টফ্রেন্ড আমার সাথে এমন করবে তা কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। আর তা আমাকে দেখতে হবে এটা আমার জন্য কতটা লজ্জার। এটা দেখার আগে আমি অন্ধ হয়ে গেলে ভালো হতো
রাতে শুয়ে শুয়ে এফবিতে পোস্টগুলো দেখছিলাম। হঠাৎ মোবাইলে অপরিচিত একটা আইডি থেকে একটা ভিডিও আসে। ভিডিওটা ওপেন করে দেখলাম আমারই বেস্টফ্রেন্ড আমার নিজের বোনের সাথে অ’ন্ত’র’ঙ্গ অবস্থায় আছে।
এটা দেখে মোবাইলটা হাত থেকে ছুড়ে ফেললাম। রাগে আমার মাথা গরম হয়ে আছে। ওকে যদি এখন হাতের কাছে পেতাম তাহলে খু’ন করে ফেলতাম। ও আমার বেস্টফ্রেন্ড হয়ে এরকম একটা কাজ কিভাবে করতে পারলো।
ও পিছন থেকে আমার গলায় ছু’রি মারবে তা কখনও ভাবতে পারিনি। ও আমাকে ওর বেস্টফ্রেন্ড বলতো। আর ও তার সুযোগ নিয়ে এমন একটা কাজ করলো।
ইচ্ছা করছে ওকে খু’ন করে ফেলি। ভিডিওটা পাঠিয়ে সাকিব আমাকে মেসেজে বললো, দোস্ত মেয়েটা কেমন? সেই না, আজকে সেই মজা হয়েছে। ওকে একদমই জোর করতে হয়নি। নিজের ইচ্ছায় আমার বাসায় এসেছে
যা বলেছি তাই শুনেছে। ও আজকে আমাকে এমন ভালোবাসা দিয়েছে যে, তা কোনোদিনও ভুলতে পারবো না। আমি চাইলে ও আবার আসবে
— কু’ত্তার বাচ্চা তুই আমার বোনের সাথে এমনটা কিভাবে করতে পারলি। তোকে আমার নিজের বেস্টফ্রেন্ড ভেবেছিলাম। তুই আমার সাথে কেনো এমন করলি? এমনটা করার আগে কি তোর বুক একবারও কেঁপে উঠেনি?
— কি বলছিস তুই? ও তোর বোন হয় কিভাবে? তোর মাথা ঠিক আছেতো?
এটা বলে সাকিব ভিডিওটা ডিলিট করে দিলো। রবি সাকিবকে বললো, ভিডিওটায় যে মেয়েটা ছিলো ও আমারই আপন বোন। তুই আমার বেস্টফ্রেন্ড হয়ে আমারই বোনের সাথে এমনটা কিভাবে করতে পারিস? তোকে আমি মেরে ফেলবো
— দোস্ত বিশ্বাস কর আমি জানতাম না ও তোর বোন। জানলে আমি এমনটা কখনই করতাম না। আমাকে মাফ করে দে। আমি এখনই ওর ভিডিও ডিলিট করে দিচ্ছি।
— তোর ওই নোংরা মুখে আমাকে দোস্ত বলবি না। আরে তুইতো বন্ধুত্ব নামের কলংক। আমি একটা কাল শা’প সাথে রেখেছিলাম। তোকে আমি কতটা বিশ্বাস করতাম আর তুই এভাবে আমার বিশ্বাসের মর্যাদা দিলি। এর ফল তোকে ভোগ করতে হবে
— বিশ্বাস কর আমি জানতাম না এটা তোর বোন। আমি ইচ্ছা করে এসব করি নাই। যদি জানতাম ও তোর বোন তাহলে তোর সাথে কথা পর্যন্ত বলতাম না।
— তোকে এর শাস্তি পেতে হবে আর দিশাকেও
— এরকম করে বলছিস কেনো? আমরা একে ওপরকে ভালোবাসি। যা করেছি দুজনের সম্মতিতেই করেছি। আমি তোর বোনকে অনেক ভালোবাসি তোর বোনও আমাকে অনেক ভালোবাসে। হ্যা মানছি আমরা ভুল করেছি কিন্তু বিশ্বাস কর আমি জানতাম না দিশা তোর বোন। আর তুই তো কখনও তোর বোনের কথা বলিসও নি আমার সাথে পরিচয় ও করালি না। তাহলে আমি জানবো কি করে ও তোর বোন?
রাগে রবি মোবাইল ভেংগে ফেললো। ও সাকিবের উপর এতটাই রেগে আছে যে, ওকে যদি এখন সামনে পেতো ওর গলায় ছু’ড়ি চালিয়ে দিতো। রবি সাকিবকে কখনই মাফ করবে না। কালকে কলেজে সাকিবকে শাস্তি দিবে
হয়তো ও ভয়ে কালকে কলেজেই আসবে না। ও যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেনো সেখান থেকেই ওকে খুজে বের করবো।
আমি এখন দিশার সামনে কিভাবে যাবো। আমি অন্ধ হয়ে গেলে আর এমন লজ্জায় পড়তে হতো না। দিশাকে কিছুতেই বুঝতে দেওয়া যাবে না। তাহলে ও আ’ত্ন’হ’ত্যার পথ বেছে নিতে পারে। ওর সাথে স্বাভাবিক আচরনই করতে হবে।
আমার আদরের বোন। কতটা ভালোবাসি ওকে। ওই কু’লং’গা’রের জন্য এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হলো। কালকে ওকে এমন মা’র মারবো যে সারাজিবন মনে থাকবে। কখনও আর দিশার সামনে আসবে না
দিশা জানে না সাকিব এটা ভিডিও করে রেখেছে। ও সাকিবকে অনেক ভালোবাসে। অনেকদিন থেকেই সাকিব ওকে এসবের জন্য বলে আসছিলো। অবশেষে ভালোবাসার প্রমান দিতে ওকে রাজি হতে হলো
দিশা সাকিবের সাথে কথা বলতেছে। হঠাৎ সাকিব দিশাকে বললো, আচ্ছা তোমার কি বড় ভাই আছে?
— হ্যা আছেতো। হঠাৎ এসব জিজ্ঞেস করছো কেনো?
— না এমনিই জিজ্ঞেস করলাম। তুমি তো কখনও বলোনি তোমার ভাইয়ের কথা। সে যদি আমাদের সম্পর্ক মেনে না নেয়
— তুমি অযথাই ভয় পাচ্ছো। আমার ভাইয়া আমাকে অনেক ভালোবাসে সে আমার জন্য সবকিছু করতে পারে।
— যদি তোমার ভাই মেনে না নেয় তাহলে তুমি কি করবা? কতটা ভালোবাসো আমাকে? আমার জন্য কি করতে পারবা?
— সবকিছু করতে পারবো তোমার জন্য। আমার ভাইকে আমি চিনি সে অবশ্যই আমাদের ভালোবাসা মেনে নিবে
— মেনে নিলেই ভালো
দিশা জানে না সাকিব ওরই ভাইয়ের বেস্টফ্রেন্ড। সাকিব জানার পরও এটা দিশাকে বলেনি
রবি কলেজে গিয়ে সাকিবকে খুজতে লাগলো। কোথাও সাকিবকে পেলো না। অন্য বন্ধুদের কাছে সাকিবের কথা জিজ্ঞেস করলো কিন্তু কেও সাকিবের কথা বলতে পারলো না
কিছুদিন পর
দিশার মন অনেক খারাপ। অনেকদিন হয়ে গেলো সাকিবের সাথে ওর কোনো যোগাযোগ নেই। ও বুঝতেছে না সাকিবের কি হয়েছে।
অন্যদিকে রবিও সাকিবকে পাগলের মত খুজতেছে। সাকিবের কাছে ওর বোনের ভিডিও আছে সেটা ওকে উদ্ধার করতে হবে। সাকিবকে এমন শাস্তি দিবে যা ও সারাজিবন মনে রাখবে।
দিশা একা একা ছাদে বসে আছে। হঠাৎ একটা অপিরিচিত নাম্বার থেকে কল আসলো। দিশা কল কেঁটে দিলো কিন্তু নাম্বারটা থেকে লাগাতার কল আসছে
দিশা বাধ্য হয়ে রিসিভ করলো। রিসিভ করার পর শুনতে পেলো, আমাকে বাঁচাও ও আমাকে মে’রে ফেলবে বাঁচাও আমাকে। ও অনেক কষ্ট দিচ্ছে আমাকে
দিশা সাকিবের কথা শুনে থমকে গেলো। ও অনেক ভয় পেয়ে গেলো। দিশা কিছু বলতে যাবে তার আগেই কল কেঁটে গেলো।
দিশা ভেবে পাচ্ছেনা ও কি করবে। কোনো উপায় না পেয়ে ওর ভাইকে সবকিছু বলার সিদ্ধান্ত নিলো। দিশা রবির কাছে গিয়ে বললো, ভাইয়া তোমাকে আমার গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলার ছিলো
রবি দিশার দিকে না তাকিয়েই বললো, হ্যা বল
— আমি একজনকে অনেক ভালোবাসি। ও আমাকে ভালোবাসে। আজ কিছুদিন হলো ওর সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। এইমাত্র ও অপিরিচিত একটা নাম্বার থেকে কল দিয়ে বললো, আমাকে বাঁচাও, ও আমাকে মেরে ফেলবে
রবি দিশার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো। ও বুঝতে পারছে দিশা সাকিবের কথাই বলছে
রবি পুলিশের সাহায্য নিয়ে নাম্বারটা ট্রেস করে ওই জাগায় গেলো। গিয়ে যা দেখলো তাতে ওর হাত- পা বরফের মত ঠান্ডা হয়ে গেলো। মা’থা ছাড়া একটা শরীর চেয়ারের সাথে বাঁ’ধা রয়েছে
পুলিশ বডিটা চেক করে একটা মানিব্যাগ পেলো। রবির কাছে দিলো। রবি মানিব্যাগটা খুলার পর সাকিবের NID কার্ড পেলো। ওর বুঝতে আর বাকি রইলো না এটা সাকিবের শরীর
রবি বাসায় এসে দিশাকে বললো, তোর বয়ফ্রেন্ডকে কেও মে’রে ফেলেছে
দিশা বললো, মানে কি বলছো তুমি? ছবি দেখাও তো আমাকে। আমি বিশ্বাস করিনা সাকিবকে কেও মে’রে ফেলেছে। ও হয়তো আমার সাথে মজা করার জন্য এসব বলেছে। ও মাঝে মাঝেই এমনটা করে
রবি সাকিবের ছবি বের করে দিশাকে দেখানোর পর দিশা যা বললো তাতে রবি থমকে গেলো
দিশা বললো, এই লোকটা কে? একে তো আমি চিনি না
চলবে—