মায়াবী প্রজাপতি’ – লেখনীতে: সানজিদা তাসনীম রিতু

0
777

#গল্পপোকা_ছোটগল্প_প্রতিযোগিতা_আগস্ট_২০২০

গল্পের নাম: ‘মায়াবী প্রজাপতি’
লেখনীতে: সানজিদা তাসনীম রিতু

মূল গল্প:

একটি দোতলা পুরোনো ধাঁচের বাড়ি। বাড়িটি বেশ বড় আর গাছপালা বেষ্টিত। বাড়িটি শুভ্রাদের। শুভ্রার বয়স আঠারো হবো হবো করছে। একহারা গড়নের, দীঘল কালো মেঘের মত ফোলা ফোলা চুলের বেশ মিষ্টি দেখতে শ্যাম বর্ণের মেয়ে শুভ্রা। শুভ্রা রোজ বিকালে তাদের বাড়ির ছাদে উঠে তার ছাদ বাগানের পরিচর্যা করে। মাঝে মাঝে গুনগুন করে গান গায়, বই পড়ে, ছবি আঁকে। গাছ শুভ্রার খুব প্রিয়, সে গাছের ছবি আঁকতে খুবই পছন্দ করে। মাঝে মাঝে সে একা একা তার প্রিয় ফুল গাছগুলোর সাথে গল্প করে আর পাতায় হাত বুলিয়ে আদর করে। হঠাৎ বৃষ্টি আসলে সে মুঠো ভরে বেলি বা বকুল ফুল নিয়ে একটু পর পর গন্ধ নেয় ফুলের আর ছাদময় প্রজাপতির মতো ছুটে বেরিয়ে বৃষ্টিবিলাস করে।

শুভ্রাদের বাড়ি থেকে দেড়শো গজ মতো দূরে একটি তিনতলা আধুনিক আলিশান বাড়ি। বাড়িটির দিকে তাকালে যে কেউ দ্বিতীয়বার তাকাতে বাধ্য এতই তার বিশালতা আর সৌন্দর্য। এই বাড়িটির তৃতীয় তলা থেকে প্রায় সময়ই শুভ্রাদের বাড়ির ছাদের দিকে মুখ করে তার ঘরের বিশাল খোলা ঝুল বারান্দায় বসে থাকে শায়র। শায়রের বয়স পঁচিশ হবে হয়তো। সুঠাম গঠনের ফর্সা, মাথা ভরা রেশমি চুল, বুদ্ধিদীপ্ত চকচকে চোখ আর পুরুষালী কণ্ঠ, যেন নজরকাড়া সৌন্দর্যের প্রতীক কিন্তু গত দশ বছর ধরে তার জীবন হুইল চেয়ারে বন্দি। ওই এলাকার এক নামকরা জমিদার ও প্রতাপশালী ব্যবসায়ীর ছেলে হচ্ছে শায়র। দশ বছর আগে একটা একসিডেন্টে তার ডান পায়ে মারাত্মক ক্ষত হয়েছিল। শায়রের বাবা-মা তাকে বিদেশের নামকরা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও লাভ হয়নি। ক্ষত থেকে মারাত্মক গ্যাংগ্রিনের কবলে পড়ে তার ডান পা। জীবন বাঁচাতেই হাঁটুর উপর থেকে কেঁটে ফেলা হয়েছিল তার ডান পা। তাতেও থেমে ছিল না, কিছুদিনের মধ্যে বিষাক্ত গ্যাংগ্রিনে তার বাম পা’টাও একইভাবে হারাতে হয়েছিল তাকে। তারপর থেকে সে তার প্রাচুর্য পূর্ণ বিশাল ঘরে বন্দি। প্রচণ্ড জেদি আর একরোখা ছেলে শায়র। দশ বছরে অনেক চেষ্টা করেও তাকে কেউ বাইরে নিয়ে যেতে পারেনি। কলেজের গন্ডিতে পা পড়েনি শায়রের আর স্কুলের বন্ধুদের সাথেও ওই ঘটনার পর আর যোগাযোগ রাখেনি তাই একাই থাকে সে। বিশাল ঘর আর হরেক রকম দেশি-বিদেশি গাছ দিয়ে সাজানো সুন্দর পরিপাটি বারান্দার মাঝেই সীমাবদ্ধ তার বিচরণ।

গত তিন বছর যাবৎ শায়র এই নাম না জানা মেয়েটিকে দেখছে। তার বারান্দা থেকে শুভ্রার চেহারা স্পষ্ট বোঝা না গেলেও তার কর্মকাণ্ড ঠিকই বোঝা যায়। খুব অবাক হয় শায়র। ভাবে, মেয়েটা একদম প্রজাপতির মতো চঞ্চল। কী সুন্দর ছটফট করে উড়ে বেড়ায়! যেন সারা বাড়িময় প্রজাপতির মতই রঙ ছড়িয়ে বেড়ায়। শায়রের খুব ভালো লাগে মেয়েটাকে দেখতে, অন্যরকম আনন্দ পায় সে নিজের মধ্যে বা বলা যায় বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পায়। তিন বছরে শায়র ভালোভাবেই জানে যে মেয়েটা কখন ছাদে আসে কিন্তু তবুও সে সারাদিন তার বারান্দায় বসে থাকে এই অপেক্ষায় যদি মেয়েটি আরেকবার আসে, ভুল করে হলেও কিন্তু মেয়েটি আসে না। শায়র প্রায় রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবে, ‘সে কি মেয়েটির প্রেমে পড়েছে? কেন বারবার দেখতে ইচ্ছা করে তাকে? কেন ইচ্ছা করে তার ছড়ানো রঙে নিজেকে রাঙাতে?’

একদিন শায়র তার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যায়। এক ঝুম বৃষ্টির বিকেলে শুভ্রা একটি সাদা লেস পাড়ের আকাশি নীল শাড়ি পরে বৃষ্টিবিলাস করছিল। বয়সের হিসাবে কিছুটা লাজুক, কিছুটা চঞ্চলতা আর কিছুটা পরিপক্কতার মিশেলে পরিপূর্ণ বৃষ্টিভেজা এক নীলপরীর মতোই লেগেছিল তাকে শায়রের কাছে। শায়র বুঝে গিয়েছিল এই অপূর্ব মায়াবিনীর প্রেমের শিকলে বাঁধা পড়েছে সে কিন্তু প্রেমের সংজ্ঞা তো তার জানা ছিল না! অজস্র কবিতা আর গল্পের বইয়ের মাঝে ডুবে থাকা ভাবুক আর অনিন্দ্য সুন্দর ছেলেটি খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। আসলেই তো! কী এই প্রেম! কতগুলো দিন যে প্রেমের কবিতার ছন্দে ভেসেছিলো, অনুরাগের গল্প দিয়ে গেঁথেছিল এক দারুণ বন্ধনের মালা। কল্পনার আবেশে মিশে তার প্রণয়নার নাম দিয়েছিল ‘মায়াবী প্রজাপতি’ কিন্তু হঠাৎ করেই মিইয়ে গিয়েছিল নিজের দিকে তাকিয়ে। তার কী এসব সাজে!

দুঃখ, কষ্ট, অভিমান আর রাগের মিশেলে নিজের মনের ঝড় ছড়িয়ে দিয়েছিল ঘরময়। চিৎকার আর ভাঙচুরের শব্দে যখন শায়রের মা ঘরে ঢোকে, তাকে দেখেই চোখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো শায়র। পঞ্চাশোর্ধ বয়সেও বেশ সুন্দরী, অহংকার মুক্ত, অসম্ভব ভালো আর মায়াবতী নাবিলা চৌধুরী যেন আদর্শ মায়ের প্রতিরূপ। তিনি ছুটে এসে জড়িয়ে ধরেছিলেন শায়রকে। শায়র নিশ্চুপে মায়ের বুক ভিজিয়েছিলো অশ্রুতে। ছেলের এরূপ অবস্থায় কাতর হয়ে জানতে চান তিনি,
-“কী হয়েছে বাবা?”
–“মা, আমার জীবনটাই কেন এমন হতে হলো। কীসের কমতি আছে আমার? অথচ আমি অথর্ব, পঙ্গু।”
-“এভাবে বলে না বাবা। দৈহিক পঙ্গুত্বই কী আসল পঙ্গুত্ব? তোমার উদার মনে যে বিশাল পৃথিবী আছে সেটা কজনের থাকে বলো?”
–“কী হবে এই একলা পৃথিবী দিয়ে মা? আমার মনের বিশাল পৃথিবীর রুক্ষতার মাঝে আমি ছাড়া আর কেউ তো বিচরণ করতে পারবে না।”
-“কী চাও তুমি বাবা? আমাকে খুলে বলো কী হয়েছে? তোমার জন্য আমি সব করতে পারবো। পুরো পৃথিবী তোমার কাছে এনে দিবো বাবা।”
–“সমুদ্র তীরের বালিতে বসে টুকরো টুকরো ঢেউয়ের লোনাজলের ফেনায় পা ভেজানোর আনন্দ দিতে পারবে আমাকে? বিশাল পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে মায়ামাখা চাঁদের জোৎস্নায় স্নান করার আনন্দ দিতে পারবে আমাকে? খোলা মাঠের সবুজ ঘাস মাড়িয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় শিশিরের শিহরিত স্পর্শের অনুভূতি দিতে পারবে আমাকে? বলো পারবে দিতে? চুপ করে আছো কেন?”
ছেলের আবদার শুনে নাবিলা চৌধুরী ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন। ধপ করে শায়রের পায়ের কাছে বসে পড়েন তারপর শায়রের কোলে নিজের মাথা রেখে দুহাতে ছেলেকে জড়িয়ে অনর্গল অশ্রু ঝড়াতে থাকেন। তার কাছে যে ছেলের প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই।

দুইদিন শুভ্রা ছাদে আসেনি। তার খুব শরীর খারাপ। বুকে ভীষণ ব্যথা করে তার। অজানা কোনো রোগ হয়তো বাসা বেঁধেছে। শায়র এই দুদিন চোখের পাতা এক করতে পারেনি। ছটফট করে গিয়েছে নিজের মধ্যেই আর ভেবেছে, ‘হলো কী মেয়েটার! কেন আসে না?’ অজানা অভিমানে মুখ ভার করে থাকে সে।

তিনদিনের দিন শুভ্রা ছাদে আসে। শায়রের চোখে দারুণ আবেগ আর আনন্দের মিশেলের এক অদ্ভুত অনুভূতির আলো দেখা দেয় কিন্তু একটু পরেই মিইয়ে যায় শায়র। নিজেকেই প্রশ্ন করতে থাকে, ‘মায়াবী প্রজাপতি আজ ছুটে বেড়াচ্ছে না কেন? চুপচাপ কেন বসে আছে! ওর কী মন খারাপ!’ শায়র তীক্ষ্ণ ভাবে দূর থেকে চেষ্টা করতে থাকে শুভ্রার মুখ দেখার কিন্তু সফল হয় না। একটুপরেই ক্লান্ত ভঙ্গিতে শুভ্রা উঠে দাঁড়ায়। শায়র অস্থির হয়ে বলতে থাকে, ‘প্লিজ যেও না। মাত্রই তো এলে। আরেকটু থেকে যাও, আরেকটু দেখতে দাও তোমায় মায়াবী প্রজাপতি।’ শুভ্রা হঠাৎই থমকে যায়। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কী যেন ভাবে তারপর ধীর পায়ে ছাদের আরেকদিকে হেঁটে যেতে থাকে যেদিকে শায়রদের বাড়ি কিন্তু মাঝ পথেই হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যায় শুভ্রা। চিৎকার দিয়ে ছটফট করে ওঠে শায়র। তার চিৎকার শুনে ছুটে আসেন শায়রের বাবা-মা।

আজ শুভ্রার অপারেশন। তার হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট করা হবে। শুভ্রার বাবা নেই, নেই বড় ভাইও। তাদের বাড়ির নিচতলা ভাড়া দিয়ে কোনোমতে সংসার চালায় তার মা। তার মায়ের সামর্থ্য নেই শুভ্রার চিকিৎসা করানোর, এ যে অনেক খরচের ব্যাপার! শুভ্রা জানে না কে বা কারা তার চিকিৎসা করাচ্ছে। সে এটাও জানে না কোথা থেকে পাওয়া গেলো দামি হৃদপিণ্ড।

ওইদিন শায়রের ছটফটানি দেখে আর তার শুভ্রাদের বাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকা দেখেই যা বোঝার বুঝে নিয়েছিলেন শায়রের মা নাবিলা চৌধুরী। শায়র পাগলের মতো বলেছিল, -“ওর কী হয়েছে! প্লিজ মা খোঁজ নাও। আমি জানতে চাই, আমি এক্ষুনি জানতে চাই।” শায়রের কথা শুনে তার বাবা-মা দুজনই ব্যতিব্যস্ত হয়ে বলেছিলেন, “শান্ত হও বাবা, আমরা দেখছি।”
নাবিলা চৌধুরী খোঁজ নিয়ে জেনেছিলেন যে শুভ্রার হৃদপিণ্ড অক্ষম হয়ে পড়ছে দ্রুত। ট্রান্সপ্লান্ট না করা গেলে তাকে বাঁচানো সম্ভব না। শায়রকে জানাতেই শায়র বলেছিল, “যেখান থেকে পারো, যেভাবে পারো ওর চিকিৎসা করাও। আমি ওকে সুস্থ দেখতে চাই। ওকে দেখে আমি বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পাই, ওর কিছু হলে আমি বাঁচতে পারবো না।”
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
হাতে খুবই কম সময় ছিল। এতো দ্রুত শুভ্রাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না আর হৃদপিণ্ডও পাওয়া যাচ্ছিল না। শায়রের চোখের ঘুম হারিয়ে গিয়েছিল, খাওয়া-দাওয়া করতে পারতো না। রাত-দিন ছটফট করতো, সে বুঝে উঠতে পারছিল না তার কী করা উচিত। একদিন বারান্দায় বসে থাকা অবস্থায় মাকে ডেকে বলেছিল,
-“মা, আমি আমার হৃদয় দিয়ে ওকে বাঁচাতে চাই।
–“এটা কীভাবে সম্ভব বাবা! তুমি চলে গেলে… আমরা বাঁচবো কীভাবে তাহলে?”
-“মা, আমার বেঁচে থাকাটাকে তো বেঁচে থাকা বলা যায় না। কী লাভ এই জীবনের? ওই মেয়েটার চঞ্চলতা আর উচ্ছলতা তুমি দেখোনি। ওর সব কিছুতে আলাদা আলাদা প্রাণের বিচরণ আছে। আমি ওর মধ্যে বেঁচে থেকে সব সুখের স্বাদ নিতে চাই মা। প্লিজ মা, রাজি হয়ে যাও।”
–“আমি পারবো না বাবা।” বলে উনি উঠে শায়রের ঘরে গিয়ে ঘর গোছাচ্ছিলেন।

শায়র তার হুইল চেয়ারের হুইল ঘুরিয়ে রেলিংয়ের কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ থেমেছিল। একবার শুভ্রাদের বাড়ির দিকে তাকিয়ে নিজেকে শক্ত করেছিল তারপর রেলিং ধরে হাচড়ে-পাঁচড়ে নিজের শরীরটাকে টেনে তুলেছিল রেলিংয়ের উপর তারপর…

বেশ জোরে ধুপ করে শব্দ শুনে নাবিলা চৌধুরী ছুটে এসে দেখেছিলেন শায়রের হুইল চেয়ার খালি। কাঁপা কাঁপা পায়ে রেলিংয়ের কাছে গিয়ে নিচে তাকিয়েই উনি চিৎকার দিয়ে বারান্দার মেঝেতে বসে পড়েছিলেন।

কোমায় যাওয়ার আগে একবার চোখ খুলেছিল শায়র। মায়ের হাত ধরে অনুনয়ের চোখে তাকিয়ে নীরবে অশ্রু ঝড়িয়েছিল শুধু।

প্রতি মাসেই শুভ্রার নামে মানিগ্রামে বেশ কিছু টাকা আসে। শুভ্রা জানে না কে দেয় তাকে এই টাকা। সে ফেরত দিতে চাইলেও পিয়ন টাকা ফেরত নেয় না আবার কোনো তথ্যও দিতে পারে না তাই শুভ্রা টাকাগুলো খুব যত্নে জমিয়ে রাখে, যদি প্রেরকের খোঁজ পাওয়া যায়। একবার টাকার সাথে বেনামি একটা চিঠি আসে। চিঠিতে খুব যত্ন করে লেখা ছিল,

প্রিয় শুভ্রা,
নিজের খেয়াল রেখো। খেয়াল রেখো তার জন্য যে তোমার মধ্যে বেঁচে আছে। তার খুব শখ ছিল সমুদ্রের লোনা জলে পা ভেজানোর, শখ ছিল পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে জোৎস্না মাখার। শখ ছিল সবুজ ঘাস মাড়িয়ে হেঁটে শিশিরের স্পর্শ নেওয়ার। জানতে চেয়ো না আমি কে। শুধু এটুকু জেনে রাখো, কোনো একজন তোমাকে প্রচণ্ড ভালোবেসে বেঁচে থাকতে চাইতো তাই তোমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিজেকে ত্যাগ করে গিয়েছে। যদি পারো তার ইচ্ছেগুলো পূরণ করে দিও।
ইতি এক অভাগী মা।

শুভ্রা সুযোগ পেলেই ঘুরতে যায় পাহাড়ে, প্রাণভরে ভিজে আসে সমুদ্র থেকে। শীতের দিনগুলোতে ভোরে উঠে বাড়ির সামনের মাঠে হেঁটে বেড়ায় খালি পায়ে। বাড়িতে থাকলে রোজ কয়েকবার ছাদে যায় শুভ্রা। তার মনের মধ্যে ছটফট করে, শুধু মনে হয় কেউ যেন তাকে ডাকছে। একদিন ঝুম বৃষ্টিতে সে যখন ছাদে বৃষ্টিবিলাস করছিল তখন হঠাৎই তার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। খুব জোরে শব্দ করছিল তার হৃদপিণ্ড। ঝুম বৃষ্টির শব্দ ছাপিয়ে শুভ্রা তার হৃদপিণ্ডের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলো যেন। শুভ্রা ভয় পেয়ে যায়, সে আস্তে করে চোখ বুজে বুকে হাত দিয়ে চেপে ধরতেই যেন স্পষ্ট শুনতে পেল, “আমার মায়াবী প্রজাপতি, ভালোবাসি, বড্ড ভালোবাসি তোমায়।”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে