#মাতাল_হাওয়া। ইতি চৌধুরী। পর্ব-৬৪
(দয়া করে কেউ কপি করবেন না)
রওনককে এয়ারপোর্ট পৌঁছে দিতে তার সঙ্গে চিত্রলেখা এসেছে। কেনো তার সঙ্গে আসতে মন চেয়েছে তার চিত্রলেখা নিজেও জানে না। হয়ত আরও কিচ্ছুক্ষন রওনকে সঙ্গ পাওয়ার লোভেই এসেছে। এয়ারপোর্ট আসার আগে মায়ের সঙ্গে দেখা করে এসেছে রওনক। কোথাও যাবার আগে সবসময় মায়ের দোয়া নিয়েই বের হয় সে। আজও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এমনিতে শক্ত একরোখা হলেও রওনক ভীষণ রকম ফ্যামিলি ম্যান। তিলত্তমা চলে যাবার পর ব্যবসাটাই রওনকের জীবনে সব হয়ে গেছে তবুও সে পরিবারকে কোনো সাইড করেনি। নিজের পরিবারের দিকেও সবসময় তার সতর্ক দৃষ্টি থেকেছে। মুখে না বললেও রওনক তার পরিবারকে অনেক ভালোবাসে। এয়ারপোর্ট টার্মিনাল টু এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে তারা একে-অপরের মুখোমুখি। চিত্রলেখার নার্ভাস লাগছে। বিদায় বেলায় কি বলতে হয় তার জানা নেই। জানা থাকবে কীভাবে এভাবে কখনো কাউকে বিদায় দেয়া হয়নি তার। লাবিব সঙ্গে এসেছে। সবসময় সেই আসে, কখনো কখনো সঙ্গেও যায়। তবে এবার রওনক একা যাচ্ছে। এদিকেও কিছু কাজ আছে যেগুলো রওনকের অবর্তমানে লাবিব ও তানিয়াকে সামলাতে হবে। তানিয়া একা পারবে না ভেবেই লাবিবকে রেখে যাওয়া। আবার চিত্রলেখাও আছে। যদি কোনো ইমার্জেন্সি হয় এসব অনেককিছু ভেবেই লাবিবকে এবার রেখে যাচ্ছে সে। লাবিব গাড়ি থেকে রওনকের ব্যাগ ট্রলিতে তুলতে ব্যস্ত। দিকের অন্য সময়ের চাইলে এইসময় এয়ারপোর্টে মানুষ একটু কম বলা যায় তবে একদম ফাঁকাও নয়। রওনক এতক্ষন তার ট্যাবে কিছু একটা করছিল। ট্যাবের কাজ শেষ করে সেটা গাড়ির পেছনের ছিটে রেখে দরজা আটকে দেয়। রওনা থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত একটা কথাও বলেনি চিত্রলেখা। কি বলবে সেটা বুঝতে পারছে না বলেই তার চুপ করে থাকা। এবারে রওনক এগিয়ে এসে চিত্রলেখার দুই হাত নিজের দু’হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়। চিত্রলেখা প্রথমে হাতের দিকে তাকায় তারপর মুখ তুলে রওনকের মুখের দিকে তাকায়। আচমকাই ধক করে ওঠে তার বুকের ভেতর। এই মানুষটাকে আগামী বেশ কিছুদিন দেখতে পারবে না সে। ভাবনাটা হিট করে চিত্রলেখাকে বুকের গভীরে কোথাও। কিছু বলার তাগাদা অনুভব করে চিত্রলেখা। কিন্তু বলবে সে? সাবধানে থাকবেন, রওনক তো বাচ্চা নয় যে সাবধানে না থাকলে হারিয়ে যাবে। ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া করবেন, সময় মতো ঘুমাবেন, মন দিয়ে কাজ করবেন, এসব কি আসলেই বলতে হবে? একটা প্রশ্নও যুত সই লাগে না চিত্রলেখার কাছে। এসব বললে নিশ্চয়ই রওনক হাসবে তার উপর। কাজের জন্য যাচ্ছে অবশ্যই মন দিয়েই কাজ করবে সে। নিজের বোকা বোকা চিন্তার উপর নিজেরই বিরক্ত লাগে। তাই কিছু না বলে চুপ করে থাকাই শ্রেয় ধরে নেয়। রওনক নিজেই বলুক যা বলার। তাদের দু’জনের মাঝে সামন্য দূরত্ব আছে। এক কদম এগিয়ে এসে সেই দূরত্ব ঘুচে দেয়ার চেষ্টা করে রওনক। যদিও তাদের শরীর পুরোপুরি স্পর্শ করে না। ইদানিং যথেষ্ট ঠান্ড পড়ে গেছে। চিত্রলেখার গায়ে একটা মোটা কাশ্মিরি শাল জড়ানো। শাড়ি পড়েছে সে। রওনকের আগের দিন নিয়ে আসা শাড়িগুলো থেকে হালকা গোলাপী রঙের প্রিন্টের শাড়ি। চিত্রলেখাকে চেঞ্জিং রুম থেকে শাড়িতে বের হতে দেখে রওনকের ইচ্ছা হয়েছিল সে এই ফ্লাইটটা ক্যান্সেল করে দেয়। কিন্তু করেনি, নিজেকে সামলে রেখেছে। নিজেদের কাছা আসার মূহুর্তটাকে তাড়াহুড়ো করে নষ্ট করতে চায় না সে। সময় নিয়ে চিত্রলেখাকে আদর দিতে চায় সে। সময় নিয়ে চিত্রলেখার জড়তা ভাঙতে চায়। সময় নিয়ে নিজেকে চিত্রলেখার কাছে হস্তান্তর করতে চায় সে। তাড়াহুড়ো করে নিজের জীবনের সবচাইতে বিশেষ মুহুর্তটা নষ্ট করতে চায় না সে। তাই কষ্ট হলেও নিজেকে সামলে রেখেছে।
চিত্রলেখার কপালের কাছে লেপ্টে থাকা চুল আঙ্গুলের স্পর্শে কানের পেছনে গুঁজে দিয়ে বলে,
-নিজের খেয়াল রেখো। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করো। কোনো টেনশন করো না। কিছু প্রয়োজন হলে লাবিবকে বলো। ভাবীকেও বলতে পারো। খুব বেশি বোর লাগলে অফিসে যেতে পারো। আমাকে যখন ইচ্ছা হয় তখন কল দিও। কাছে না থাকলেও আমি চব্বিশ ঘন্টা তোমার জন্য ফোনে এভেইলেবল আছি, ঠিক আছে?
মাথা ঝাঁকায় চিত্রলেখা। একমুহূর্তের জন্য রওনকের চোখ থেকে চোখ সরায়নি সে। নিজের ভেতরের সংকোচকে সাইডে রেখে বলে,
-নিজের খেয়াল রাখবেন আর…
-আর!
-আমি অপেক্ষায় থাকবো।
রওনকের হাতে বাঁধন শক্ত হয়। সে বলে,
-সম্ভব হলে কালই ফিরে আসবো।
-না না তাড়াহুড়ো করতে হবে না। আপনি কাজ শেষ করেই আসবেন।
চিত্রলেখার রিয়্যাকশনে হাসি পায় রওনকের। তার আবার সময় ঘনিয়ে এসেছে বুঝতে পেরে এগিয়ে গিয়ে চিত্রলেখার কপালে চুমু খায় রওনক। তা দেখে চোখ বড় করে তাকায় চিত্রলেখা। একবার আশেপাশে তাকায় সে। রওনক বলে,
-ইটস ওকে, আমাদের কেউ দেখছে না। আর দেখলেও তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।
বিদায় নেয়ার আগে চিত্রলেখাকে আরেকটু অবাক করে দিয়ে জড়িয়ে ধরে রওনক। লজ্জা লাগলেও ভালো লাগে চিত্রলেখার। রওনকের প্রতিটা স্পর্শ মনের ভেতর আনন্দের দোলা দিয়ে যায়। এই ভালো লাগার সঙ্গে কিছুদিন আগেও পরিচয় ছিল না তার। কিন্তু এখন সে বুঝে। এই ভালো লাগা কেবল মাত্র রওনক কেন্দ্রিক। একমাত্র রওনকের উপস্থিতি, তার স্পর্শই চিত্রলেখার মনের ভেতর এই আনন্দের ঢেউ তুলতে সক্ষম। রওনক ভেতরে চলে যাবার পরেও চিত্রলেখা কিছুক্ষণ ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। আচমকাই বুকের ভেতরটা ফাঁকা লাগে তার। মনে হয় কি যেনো একটা নেই। শূন্যতা গ্রাস করে তাকে। চিত্রলেখা টেরও পায় না তার চোখ ভার হয়। টুপ করে ডান গাল বেয়ে এক ফোঁটা পানি বেয়ে পড়ে। লাবিব দেখে ফেলার আগেই হাত বাড়িয়ে গালের পানি মুছে ফেলে এসে। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লাবিব সামান্য কেশে নিজের উপস্থিতি জানায়। চিত্রলেখার দৃষ্টি এখনো ঐদিকেই। আরও বেশ কিছুদিন ওদিকে তাকিয়ে থাকার পর লাবিবের দিকে তাকায় চিত্রলেখা। তাকিয়েই জিজ্ঞেস করে,
-উনি কবে ফিরবেন?
স্মিত হেসে লাবিব বলে,
-কিছু বলেনি তোমাকে?
-বলেছেন, এক সপ্তাহ বা ১০ দিন লাগবে।
-হুম, ঐ রকমই।
-ওহ!
বলেই আবার ট্রার্মিনালের গেইটের দিকে তাকায় চিত্রলেখা। যদিও রওনককে দেখতে পাবে না তবুও তার দৃষ্টি ওদিকেই যায় যেদিক দিয়ে কিচ্ছুক্ষন আগে রওনক গিয়েছে।
-চলো তোমাকে বাসায় দিয়ে আসি।
লাবিবের দিকে তাকিয়ে সম্মতিতে মাথা ঝাঁকায় চিত্রলেখা।
খুব বেশি নয় মাত্র দু’দিন পর বাড়ি এসেছে চিত্রলেখা। অথচ মনে হচ্ছে কতদিন পর আপন ঠিকানায় ফিরছে সে। চিরচেনা সেই নীল লোহার গেটের কাছে এসে গাড়িটা থামলে চিত্রলেখা নেমে যাবার আগে লাবিব বলে,
-কিছু প্রয়োজন হলে আমায় বলো। যত রাতই হোক আমাকে একটা ফোন দিলেই হবে। ড্রাইভারের নম্বর ম্যাসেজ করে দিবো। কোথাও গেলে ড্রাইভার নিয়ে যাবে। স্যার বলে দিয়েছে এই গাড়িটা তুমি ব্যবসার করবে। আগামীকাল ১১ টার দিকে তৈরি থেকো তোমার পাসপোর্ট বানাতে দিতে যাবো।
-আর কিছু?
স্মিত হেসে লাবিব বলে,
-আপাতত আর কিছু না।
চিত্রলেখা গাড়ির পেছনের সিট থেকে নামলে তার সঙ্গে সামনের সিট থেকে লাবিবও নেমে আসে। গাড়ির ডিকি খুলে কিছু ফলের প্যাকেট বের করে নেয়। এসব দেখে চিত্রলেখা অবাক কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,
-এগুলো কখন কেনা হলো?
-তুমি আজ বাড়ি আসবে তাই স্যার আমাকে আগেই বলে দিয়েছিল ব্যবস্থা করে রাখতে।
-কিন্তু এসবের তো কোনো প্রয়োজন ছিল না।
-তোমার দিক থেকে হয়ত প্রয়োজন নেই তবে স্যারের দিক থেকে প্রয়োজন আছে। তার বউ বাপের বাড়ি আসবে তাও খালি হাতে, অসম্ভব।
চিত্রলেখা নীল গেইটের দিকে আগালে পেছন থেকে লাবিব বলে,
-একটা প্রশ্ন ছিল আমার।
পেছন ঘুরে চিত্রলেখা বলে,
-কি?
-আমার কি তোমাকে আপনি করে বলা উচিত?
-একদমই না। আমরা আগে যেমন ছিলাম এখনো তেমনই আছি, তেমনই থাকবো।
-কিচ্ছু আগের মতো নেই চিত্রলেখা। তুমি এখন আমার বসে ওয়াইফ।
-তবুও আমি চাই আমাদের বন্ধুত্বটা আগের মতো থাকুক। প্রয়োজনে উনার সঙ্গে আমি কথা বলে নিবো নাহ হয়? ততদিন আমরা আগের মতোই থাকি।
এই প্রসঙ্গে আর কথা বাড়ায় না লাবিব। সম্মতিতে মাথা ঝাঁকায়। তারপর দু’জনে বাড়ির ভেতর অগ্রসর হয়। আচমকা চিত্রলেখাকে দেখে সবাই যেমন অবাক হয়েছে তেমন খুশিও হয়েছে। বাড়িটা যেনো জান ফিরে পেছে। চিত্রলেখার অবর্তমানে দু’দিনেই বাড়িটা নিষ্প্রাণ হয়ে গিয়েছিল। সেই বাড়ি আবার তার চাঞ্চল্যতা ফিরে পেয়েছে। লম্বা সময় চারু চিত্রলেখাকে জড়িয়ে রেখেছে।
রাদিন নক না করেই তানিয়ার কেবিনে প্রবেশ করে। প্রচন্ড রাগে তার চোখ লাল হয়ে আছে। তানিয়া মনোযোগ দিয়ে কিছু ফাইল দেখছিল। কেবিনের দরজা খোলার শব্দ কানে আসলেও চোখে তুলে তাকায়নি দেখতে কে এসেছে। এগিয়ে এসে তানিয়ার হাতের কাছেই একটা এনভেলপ ছুঁড়ে দিয়ে রাদিস উচ্চ কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
-হোয়াট ইজ দিজ রাবিস তানিয়া?
রাদিনের কন্ঠ পেয়ে ফাইল থেকে চোখ তুলে তার দিকে তাকায় তানিয়া। নিজের চেয়ারে হেলান দিয়ে আরাম করে বসে সে। রাদিন টেবিলের উপর হাত রেখে সামনের দিকে খানিকটা ঝুঁকে জিজ্ঞেস করে,
-এক্সপ্লেইন মি, হোয়াট ইজ দিজ।
তানিয়া তার শান্তি ভঙ্গি বজায় রেখেই বলে,
-রিলাক্স রাদিন। টেক এ সিট। পানি খাবে?
পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে তানিয়া বলে,
-একটু পানি খাও তারপর কথা বলছি।
রাদিনের ইচ্ছা করছে সে গ্লাসটা তুলে আছাড় মে রে ভেঙে ফেলে। কিন্তু এমন কাজ সে করে না। চেয়ার টেনে তানিয়ার মুখোমুখি সে পানির গ্লাসটা তুলে নিয়ে একটানে সবটুকু পানি খেয়ে শেষ করে। গ্লাস নামিয়ে রাখার সঙ্গে সঙ্গেই আবার জিজ্ঞেস করে,
-এসব কি তানিয়া? এসবের মানে কি?
-আমি তোমাকে ডিভোর্স দিচ্ছি।
-নো, ইউ কান্ট।
-ইয়েস আই ক্যান।
-তানিয়া!
-আমার পক্ষে আর তোমার সঙ্গে থাকা সম্ভব নয় রাদিন।
-তুমি আমাকে জিজ্ঞেস না করে ডিভোর্সের ডিসিশান নিতে পারো না।
-পারি রাদিন, অবশ্যই পারি। আমাকে চিট করার আগে তোমার ভাবা উচিত ছিল। একটা অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোর আগে ভাবা উচিত ছিল তোমার।
-আই লাভ হার তানিয়া। ভালোবাসা কখনই অনৈতিক হয় না।
-হয় রাদিন, ভালোবাসায় নৈতিকতা থাকে। বউ থাকতে অন্য নারীতে আসক্ত হওয়া কখনই নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। যাগ গিয়ে এইসব বিষয়ে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই না। আমার সিদ্ধান্ত আমি জানিয়ে দিয়েছি। সাইন করে আমাকে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি দাও।
-ইউ নো হোয়াট তোমার এই সেলফিশনেসের কারণেই আমি কখনো তোমাকে ভালোবাসতে পারিনি। কারণ তুমি আমাকে কখনো ভালোবাসা দিতেই পারো না।
তানিয়া রাদিনের কথার জবাবে একটা কথাও বলে না। রাদিনকে দেবার মতো হাজারটা জবাব আছে তার কাছে কিন্তু সে উত্তর করে না। এখন সব অহেতুক লাগে তার কাছে। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় রাদিন। মনে হচ্ছে সে বেরিয়ে যাবে। বেরিয়ে যাবার আগে বলে,
-বাচ্চারা আমার কাছে থাকবে।
-বাচ্চাদের কথা তোমার না ভাবলেও চলবে। ওদের কস্টাডি আমিই পাবো। ওরা রওনকের কাছে থাকবে। তোমার মতো বাবা আমার সন্তানদের প্রয়োজন নেই।
-তানিয়া!
-তুমি এখন আসতে পারো রাদিন। আর কাগজগুলো সাইন করে দিও।
জবাবে কিছু বলে না রাদিন কেবল তাকিয়ে থাকে। তখনই দুইবার নক হয় তানিয়ার কেবিলের দরজায়। রাদিকের চোখের দিকে তাকিয়ে থেকেই তানিয়া বলে,
-কাম ইন প্লিজ।
দরজার নব ঘুরিয়ে অর্ধেক প্রবেশ করেছে লাবিব। ওখান থেকেই তানিয়া ও রাদিনকে একে-অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে তার বুকের ভেতর কিছু একটা ভেঙে গেল। আমতা আমতা করে সে বলে,
-সরি, আমি পরে আসছি।
আই কন্টাক্ট ভেঙে লাবিবের দিকে তাকিয়ে তানিয়া বলে,
-ইটস ওকে এসো। আমাদের কাজ হয়ে গেছে।
ইতস্ততবোধ নিয়েই ভেতরে প্রবেশ করে লাবিব। রাদিক বেরিয়ে যাবার জন্য কদম বাড়ালে পেছন থেকে তানিয়া বলে,
-এনভেলপটা নিয়ে যাও।
রাদিন আর অপেক্ষা করে না। এনভেলপটা নিয়েই বেরিয়ে যায়। লাবিব এগিয়ে এসে একটু রাদিন যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে দাঁড়ায়। তানিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,
-আর ইউ ওকে?
তানিয়া মুখে কিছু বলে না। কথা বললেই হয়ত কেঁদে ফেলবে সে। কিন্তু সে ভেঙে পড়তে চায় না, একদমই না। একটা প্রতারকের জন্য কাঁদতে চায় না সে। ছলছলে দৃষ্টি নিয়ে লাবিবের দিকে তাকিয়ে রয় তানিয়া, মুখে কিছু বলে না।
চলবে…