মন গোপনের কথা পর্ব-৪৪+৪৫

0
1051

#মন_গোপনের_কথা
#পর্ব_৪৪
লেখনীতে, পুষ্পিতা প্রিমা

পিহু সামনে ফিরে বুকের সাথে একদম লেপ্টে গেল৷ মাহিদ বড় করে শ্বাস নিল। অনেকটা সময় পার হয়ে যাওয়ার পর হাতের বাঁধন একটু আলগা করে বলল

ছিকু…

পিহু চট করে তাকে ছেড়ে দিল। দেখলো অন্ধকার ঘর। ভীষণ রাগ লাগলো তার। মাহিদ আওয়াজ করে হেসে দিল। পিহু ফোঁসফোঁস করতে করতে আওয়াজ করে হেঁটে কোথায় যেন চলে গেল। মাহিদ বলল

লাইট দেই।

নাহ।

তাহলে খুঁজবো কি করে?

খোঁজার দরকার নেই।

দরকার আছে।

না, নেই। আমার রাগ কমেনি। আমি এত সহজে কারো কাছে যাচ্ছিনা। যে একবার সরি বলার প্রয়োজন মনে করেনি তার কাছে কিছুতেই যাব না আমি।

না৷

কি না?

আসা দরকার।

যাব না। খবরদার লাইট দেওয়া যাবে না।

না দিলে দেখব কি করে?

দেখার দরকার নেই বললাম না।

না দরকার আছে।

আমি কি জানি?

মাহিদ চুপটি মেরে দাঁড়িয়ে রইলো। পিহু পা টিপে টিপে বিছানার এককোণায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে মাহিদের কান্ড দেখতে লাগলো। এই ঘুটঘুটে অন্ধকারেও সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত মানবকে সে দেখতে পাচ্ছে। কিছু আগের অবর্ণনীয় মুহূর্তটার কথা মনে পড়তেই অনাবিল আনন্দ হচ্ছে। এই ঘর এই ঘরের মানুষ একদম তার, ভাবতেই মনের ভেতর অদ্ভুত অনুভূতিরা ঢেউ খেলছে। মাহিদ বিছানায় গিয়ে বসলো। পা নাচাতে নাচাতে বলল

কোথায়?

পিহু নিজের গাল নিজেই চেপে ধরলো। না এখন কথা বলা যাবে না।

মাহিদ বলল

আমি তাহলে ঘরের বাইরে যাই?

পিহু চুপ করে থাকলো। মাহিদ হেঁটে দরজার কাছে গেল। যখন দেখলো এতে ও কাজ হচ্ছে না তখন আবার ফিরে এল। চুপচাপ বসে রইলো। অন্ধকার রুমে হেঁটে হেঁটে পিহুকে খুঁজলো। না পেয়ে কিছুক্ষণ পরেই বলল

ডিমলাইট জ্বালাই?

পিহু মহাবিপদে পড়ে গেল। ডিমলাইট জ্বালিয়ে দিলে তো তাকে দেখতে পাবে। মাহিদ বলল

কি হলো?
আচ্ছা লাইট জ্বালাচ্ছিনা। এবার সামনে আসার দরকার।

পিহু শ্বাস ফেলছে ধীরে ধীরে। যদি নিঃশ্বাসের শব্দ শুনে ফেলে। মাহিদ হতাশ হয়ে শুয়ে পড়লো ধপাস করে। বলল

ঠিক আছে। তাহলে আমি ঘুমিয়ে যাই। কি আর করার?

পিহু মুখ মোচড় দিয়ে মনে মনে বলল

গাঁধা।

মাহিদ হাত ঝাড়া দিল।
বিছানায় গড়াগড়ি খেতেখেতে ডিমলাইটের কাছে পৌঁছুতেই মনে হলো হাতে নরম তুলতুলে একটা কাপড়। ভালো করে হাতে নিতেই বুঝে গেল। পিহু মহাবিপদে পড়ে গেল। ইশশ তার শাড়ি ধরে টানছে।
মাহিদ শাড়ি ছেড়ে দিয়ে আবার কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো। পিহু ভাবলো যাক। বুঝতে পারেনি। মাহিদ বলল

যদি আমি খুঁজে পাই, তাহলে কি পাব?

পিহুর একটা শক্ত কথা শুনিয়ে দিতে ইচ্ছে হলো। কিন্তু জোঁ নেই। ধীরে ধীরে শোয়া থেকে উঠতে গিয়ে মনে হলো তার শাড়ির আঁচলটা কারো জিম্মায় চলে গিয়েছে। এমনকি মুখের উপর এসে পড়া কয়েকটা চুল উড়ছে কারো তপ্ত নিঃশ্বাসে। বুক ঢিপঢিপ করছে পিহুর৷ দম যেন বন্ধ হয়ে আসছে। ছিঃ বেয়াদব পুরুষটা তাকে দেখে ফেলেছে।

নাকের উপর নাক চেপে বসলো আচমকা। পিহুর দমবন্ধ হয়ে এল।

মাহিদ নেশালো গলায় বলল
এবার আমি কি পাব?

কিছু না৷

কিছু না নিয়ে আমি হার মানছিনা।

কিছু দেব না। দেব না মানে দেব না৷

পিহু পাশ ফিরে যেতে গেল। শক্ত হাতের বাঁধন তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলল।
কানের উপর উষ্ণ অধরের শক্ত চুম্বন বসলো। তারপর কানে এল

আমি পেয়ে গেছি।

পিহু ক্ষীণস্বরে জিজ্ঞেস করলো

কী?

মানুষ৷

না না না। আমি কারো মানুষ নই। আমার রাগটাগের দাম নেই, অমন কারো মানুষ আমি নই।

মাহিদের শক্ত হাতের বাঁধন ছেড়ে যাওয়ার সাধ্যি তার নেই জানে তবু ও চেষ্টা করতে হবে।

মাহিদ হাতের আঙুলের ভাঁজে আঙুল রেখে বলল

এবার থামা উচিত। কথা শোনা উচিত।

না কারো কথা শুনব না আমি।

আমি সরি। সবকিছুর জন্য সরি।

পিহু কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো। আবার বলল,

কিসের সরি? কিসের? এতদিন পর
দরকার নেই কোনো সরির। আমাকে ছাড়তে বলছি।

না আজকে ধরার রাত৷ ছাড়ার নয়৷

আমি কোনোকিছু শুনতে চাই না।

আজকে শোনার রাত।

নাহ শুনবো না।

মাহিদ নিঃশব্দে হাসলো। কপালে আর চোখের পাতায় গভীর চুমু আঁকলো। বলল,

কিছু করতে হবে না। একটু ছুঁতে দিলেই হবে।

ছুঁতে ও দেব না। মাহিদ তাকে আষ্টেপৃষ্টে ধরে বুকের সাথে পিষ্ট করে বলল

আচ্ছা ঠিক আছে। ছুঁতে দিতে হবে না। এভাবে থাকলেই চলবে।

পিহু থেমে থেমে বলল

এভাবে ও থাকবো না।

মাহিদ হেসে ফেলল। পিহুকে বুকের উপর তুলে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আঙুলের ভাঁজে ভাঁজিয়ে রাখা আঙুলের উপর দীর্ঘ চুম্বন দিয়ে বলল

এভাবেই থাকতে হবে আগামী দিনগুলো। রাগারাগি কম হলেও চলবে না। রোজ রাগারাগি চলবে। আর রাগ ভাঙাভাঙির দায়িত্বে আমিই না হয় থাকলাম।

পিহু বলল

কান ধরো।

সম্ভব না। আমি এখন সবচাইতে দামী জিনিসটা ধরে আছি।

চলবে,

#মন_গোপনের_কথা
#পর্ব_৪৫
লেখনীতে, পুষ্পিতা প্রিমা

রান্নাঘরে অনেকের গলার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। পিহু হাঁটতে হাঁটতে রান্নাঘরের দিকে গেল। নানী লাঠিতে ভর দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছিলেন। পিহুকে দেখে থামলেন। পিহু হাসলো। নানী হেসে বলল

ওমা হাসি তো এক্কেবারে ছক্কা। আমার তোরে কি দিল রে কাল?

কিছুই দেয়নি।

কিছুই না?

উহু।

কি বলিস?

হ্যা। একটু আস্তে বলো। সবাই শুনবে।

বিয়ার রাতে বউরে কিছু না কিছু দিতে হয় সেটা তোর জামাই কি জানেনা?

শিখিয়ে দাওনি কেন?

সব শিখায় হইবো নাকি? আদর দেওয়াও শিখাইতে হইবো তোর জামাইরে?

ধুরর। ফালতু কথা সবসময়।

পিহু নাকমুখ কুঁচকে রান্নাঘরের দিকে এগোচ্ছিল। নানী লাঠি বাড়িয়ে আটকালেন৷

কই যাস?

রান্নাঘরে।

যাইতে পারবি না। সাতদিন রান্নাঘরে যাবি না।

কেন?

এগুলা নিয়ম।

এগুলো কোনো নিয়ম হলো?

হ্যা নিয়ম। যাহ ঘরে যাহ। তোর জামাই কই?

জানিনা।

তো কি জানোস?

নীরা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এল। হাতে জগ। টেবিল গুছাতে গুছাতে পিহুকে বলল

নিশি মাইশা আর জালিশাকে ডেকে নিয়ে আসো আম্মা। তোমার দাভাইকে ও নিয়ে আসো। আচ্ছা ছিকু আর মাহিদকে ও আসতে বলো।

পিহু মাথা নাড়ালো। যাওয়ার আগে আবার থামলো। নানীকে বলল

তোমার নাতিকে তুমি ডেকে দাও। আমার শরম করতেছে। আমি বাকি সবাইকে ডেকে আনি।

নানী আওয়াজ করে হেসে দিল পিহুর কথায়।

আহা রে নাতবৌ তোর শরম দেইখা আমার তো মেলা হাসি পাইতেছে। তোর জামাই কি কাল তোর শরম ভাঙায় নাই?

পিহু লজ্জা পেয়ে বলল,

ধুরর তুমি এত ঠোঁটকাঁটা কেন? ধ্যাত।

পিহু চলে যাওয়ার আগ মুহূর্তে ছিকু দৌড়ে দৌড়ে এল। সারা গায়ে রজনীগন্ধা আর গাঁধাফুলের মালা জড়ানো। শুধু মুখ আর পা দুটো দেখা যাচ্ছে। তার ছোট্ট কান্নাকান্না মুখটা দেখে পিহু এগিয়ে গেল।

এসব কি আব্বা?

মিহি বুউ সাজি দিচে কেন? ছিকুর কান্না পায় কেন?

নানী পরখ করো চাইলো। মুনা,পরী আর নীরা এসে হা করে চেয়ে রইলো। ছিকুর পিছুপিছু রেহান আর মাহিদ এল হাসতে হাসতে। নীরা বলল

এসব কি করেছিস মাহি?

বউ বউ করেতেছে। তাই বউ সাজিয়ে দিছি।

ফুল কোথাকার?

মাহিদ চুপ করে থাকলো। পরী বলল

কাল ঘর সাজানোর ফুলগুলো ছোটমা।
ভালো কাজ করেছিস ভাই । এই পুঁচকু সাহেব আর করবেন বউ বউ?

ছিকু সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,

কেন? করবো না কেন?

সবাই হেসে উঠলো। মাহিদ কয়েকটা ফটো তুলে নিল ফোনে। তারপর ছিকুর গাল টেনে দিয়ে বলল

শালা তোরে বহুত কিউট লাগতেছে।

ছিকুর কান্না কান্না মুখ মিলিয়ে গেল। দাঁত দেখিয়ে খিক করে হেসে বলল

মিহি ভালু কেন? বিশিবিশি ভালু কেন?

রেহান বলল

ভালোই পাম্প দিতে জানে?

মাহিদ বলল

বাচ্চা কার দেখা লাগবো তো।

রেহান হেসে উঠলো। মুনা ছিকুকে কোলে করে মালাগুলো খোলার জন্য নিয়ে গেল। নীরা বলল

সবাই টেবিলে বসে পড়ো। যে যেদিকে পারো খেয়ে নাও। আমার অনেক কাজ। পরী রেহানকে খেতে দাও। পিহু তুমি,,

আমি বাকিদের কাছে যাচ্ছি মামি।

নানী পিহুকে আটকে দিল। বলল

কোথাও যাইতে হবে না তোরে। তোর জামাই, শ্বশুর, বড় শ্বশুর, ভাই সবাইরে আজ বেড়ে খাওয়া। যাহ। ওদের আমি ডেকে আনতাছি।

পিহু নিচের দিকে তাকিয়ে থাকলো। পরী রেহান মিটিমিটি হাসলো। মাহিদ চেয়ার টেনে বসলো। রিপ বলল

পিহু এদিকে আসো। পরী তুমি বেড়ে দাও। পিহু বেড়ে খাওয়ানোর অনেক সময় পাবে।

রিক বলল

ঠিক বলেছিস। পরী মা বেড়ে দাও ।

পিহু মিনমিন করে বলল

আমি পারব।

পরী হেসে বলল

আচ্ছা তাহলে আমাকে হেল্প করো। নানু তুমি ও আসো না?

নানী মুখে কাপড় গুঁজে বলল

নাউজুবিল্লাহ আমি আমাগো জামাইর লগে কুনোদিন বসে খাইছি নাকি?

রিক পরীকে বলল

খালাম্মা আমাদের সাথে খাবে না। তোমার আম্মাদের সাথে খেয়ে নেবে।

পরী আর পিহু মিলে সবাইকে খেতে দিল।
নিশিতা মাইশা আর জালিশা এল। রিপ বলল

ঘুম কেমন হলো সবার? কোনো অসুবিধা হয়নি তো?

মাইশা বলল

না আঙ্কেল। সব ঠিকঠাক।

জালিশা বলল

আমার তো ভীষণ ভালো লেগেছে। কাল আমরা তিনজন সারারাত গল্প করেছি৷ খুব এনজয় করেছি।

নিশিতা বলল

এই মেয়ের কথা একদম বিশ্বাস করোনা আঙ্কেল। আমাদের কাল একটু ও ঘুমাতে দেয়নি। কচুর গল্প।

সবাই হেসে উঠলো। জালিশা বলল

গুই তো ঘুম ছাড়া কিছুই চিনিস না।

পরী বলল

আচ্ছা এখন ঝগড়া থাক। খেয়ে নাও আগে। সব ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

পিহু রিপের পাশে বসে খেল।

ছিকু এসে সবাইকে টেবিলে বসতে দেখে রেগে বলল

চবাই পুঁচা কেন? বিশিবিশি খায় ফিলে কেন?

সবাই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো। রিপ বলল

আসো ভাই। কেউ এখনো খাওয়া শুরু করেনি। আসো।

ছিকু পিহুর পাশে চেয়ারে গিয়ে দাঁড়ালো। মাহিদকে দেখে হাসলো। জালিশা বলল

হেইই কিউটবক্স! আদর।

ছিকু লজ্জা পেয়ে মাথা নামিয়ে বলল

জানিচা নজ্জা দেয় কেন?

মাইশা বলল

লজ্জা পাইছেরে!

নিশিতা বলল

হায়হায়। তাই তো!

পিহু বলল

আব্বা লজ্জা পাইছে?

ছিকু মাথা তুললো। সবার সাথে হাসলো। তারপর মাহিদের দিকে তাকালো।

বলল

মিহি পিহুর জামাই কেন?

সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
পিহু আর মাহিদ আচমকা লজ্জায় পড়ে গেল। পরী তার মুখ চেপে দিয়ে বলল

এই এক কথা আর কত বার বলবেন?

রিক খেতেখেতে বলল

ওর বোধহয় আশ্চর্য লাগছে। কথায় কথায় মারপিট করা দুজন বউ জামাই হয়ে গেল এটা আশ্চর্যের না? প্রথম শোনার পর আমার তো আজব আজব লাগছিল।

পিহুর খাবার আর গলা দিয়ে নামলো না। মাহিদ খাচ্ছে তো খাচ্ছে। যেন সব স্বাভাবিক। পিহু মনে মনে বিড়বিড় করলো

রাক্ষস।

ছিকু আবার প্রশ্ন করলো

পিহু মিহির বুউ কেন?

পরী তার গালে খাবার ঢুকিয়ে দিল। ফিসফিস করে বলল

চুপচাপ খান। কোনো কথা না।

ছিকু খাওয়া শেষে বলল

পরী বুকা দেয় কেন? দুক্কু দেয় কেন?

পরী হেসে ফেলল। হেসে তাকে বুকে টেনে নিয়ে বলল

আচ্ছা আর বুকা দেব না।

______________

মাইশাদেরকে গাড়িতে তুলে দিয়ে ঘরে ফিরলো মাহিদ। নীরা আর পিহু অনেক জোর করেছে তাদের। থাকলোই না তারা। চলে গেল। মাহিদ তার ঘরে গেল। একটু হসপিটালে যেতে হবে তার। ছিকু বিছানার উপর বসে বই পড়ছে।

টিমা টিম, টিম টিম। আট্টি মা টিম টিম টিম।
তারা পাড়ি ডিম।

তারপর কপালের দুপাশে হাত দিয়ে বলল

তার ইখানে দুটু শিং। শিং মারে টিং টিং। তারা আট্টিমাটিম টিম টিম।

পিহু শাড়িগুলো ভাঁজ করতে করতে বলল

হচ্ছে না। এগুলো কি পড়ছেন?

বলুন, হাট্টিমাটিম টিম টিম।

মাহিদ গিয়ে ছিকু পাশে শুয়ে পড়লো। ছিকু বই বন্ধ করে বলল

মিহি পুড়ালিখা করেনা কেন? বেডবয় কেন?

পিহু ঘাড় ঘুরিয়ে মাহিদকে দেখলো। দ্রুত কাপড় ভাঁজ করতে লাগলো।

মাহিদ ছিকুকে প্রশ্ন করলো

ডিম কিভাবে পারে কহ।

ছিকু উঠে দাঁড়ালো। নেমে গেল বিছানা থেকে। দৌড়ে গিয়ে তার বলটা নিয়ে এল। আবার বিছানায় উঠলো। বলটির উপর বসে

ইভাবে ডিম পারে কেন?

মাহিদ হো হো করে হেসে উঠলো। পিহু হাসি চেপে রাখতে না পেরে হেসে ফেলল। ছিকু দুজনের হাসি দেখে ভ্যাঁবাছ্যাঁকা খেল। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে বলল

মিহি পিহু পুঁচা কেন? হাচে কেন? দুক্কু দেয় কেন?

মাহিদ হাসতে হাসতে ছিকুর পেটে মুখ দিয়ে সুড়সুড়ি দিতে দিতে বলল

তোরে আমার টাপুসটুপুস খায় ফেলতে ইচ্ছা করে বাপ।

পিহু ঘরের বাইরে চলে যাচ্ছিল।

মাহিদ দ্রুত উঠে পিহুর আগে দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। পিহু বলল

আমার কাজ আছে।

মাহিদ উত্তর দিল না। ছিকুকে বলল

এদিকে আয়।

ছিকু গেল। মাহিদ দরজা খুললো। ছিকুকে বের করে দিয়ে মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিতে দিতে বলল

পানি লইয়্যা আয় যাহ।

ছিকু ভালো ছেলেটির মতো পানি আনতে চলে গেল।

পিহু দরজা খুলতে যেতেই মাহিদ আটকালো।
পিহু দরজার সাথে লেগে গিয়ে বলল

কাজ আছে আমার।

কি কাজ?

ওই,,

কি ওই? কোনো কাজ নেই আমি জানি।

পিহু সরে পড়ছিল সামনে থেকে। মাহিদ হাত ধরে টেনে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে থুঁতনি ঠেকালো। বলল

পালিয়ে লাভ নেই।

পিহু শিউরে উঠে বলল

কেউ আসবে।

মাহিদ মাধক মেশানো গলায় বলল,

আসুক।

শাড়ির ভাঁজ গলিয়ে রাখা হাত দুটো পিহু ধরলো শক্ত করে।
বেণুনী করা চুলের গোঁছা সরে গেল একপাশে। উন্মুক্ত ঘাড়ে ও গলদেশে ভেজা স্পর্শ বসে গেল খুব দীর্ঘভাবে।

পিহু সামনে ফিরে এল৷ নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে বলল

এভাবে থাকি।

মাহিদ নরম শরীরটা মজবুত বাঁধনে বেঁধে নিয়ে কপালের পাশে ঠোঁট ছোঁয়ালো। বলল

আচ্ছা।

তবে বেশিক্ষণ থাকা হলো না। ছিকু দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে বলল

পানি পড়ি যায় কেন? ছিকু পানি খায় ফিলে কেন? মিহি এখুনো দজজা খুলেনা কেন?

মাহিদ হাসলো তার কথা শুনে। পিহু ও হেসে উঠলো। বুকে নাকমুখ ঘষে বলল

দরজা খুলে দাও। নইলে সব শেষ।

ছিকু দরজায় লাতি বসিয়ে বলল

মিহি পিহুকে লুকি ফিলছো কেন?

মাহিদ বলল

দরজা খুলুম না। তুই যা করার কর।

ছিকু পানির গ্লাস নিয়ে চলে গেল সবাইকে ডেকে আনতে।

হাসতে হাসতে পিহুর পেট ব্যাথা হয়ে এল।

চলবে,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে