মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি ২ পর্ব-৪+৫

0
729

#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৪

নিকষকৃষ্ণ রজনী। বিছানায় শুয়ে অন্যমনস্ক হৃদি। তার মানসপটে বারংবার ভেসে উঠছে ইনুর দুঃখ ভারাক্রান্ত মুখশ্রী। মেয়েটা কষ্ট পাচ্ছে। যন্ত্রণা সহ্য করে চলেছে অবিরাম। তবুও এমন একটি কাজ কি করে করলো! কেন বিয়েতে সম্মতি দিলো! ও তো মন থেকে বিয়েতে রাজি নয়। এছাড়াও ওর মাত্র আঠারো চলছে। এটা কি বিয়ে করার সঠিক সময়? অন্তত অনার্স দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বর্ষ ওঠা অবধি অপেক্ষা করা গেল না? জুনায়েদ কি আসলেই ইনুর জীবনসঙ্গী হতে চলেছে? ওর যোগ্য! নানারকম ভাবনায় মজে সে। সহসা ধ্যান ভঙ্গ হলো। তাকালো সম্মুখে। ইরহাম কর্মস্থল থেকে ফিরেছে। পরিহিত ঘামে সিক্ত পাঞ্জাবি দেহ হতে খুলে ফেলছে। কটা বাজে এখন? দেয়ালঘড়িতে তাকালো হৃদি। ঘড়ির কাঁটা এখন এগারোর কাছাকাছি। দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। উঠে বসলো মেয়েটা। কাবার্ড হতে ঘরোয়া পোশাক বের করছে ইরহাম। তাকে শুধালো,

” টেবিলে খাবার দেবো? নাকি.. ”

অসম্পূর্ণ প্রশ্নের জবাব দিলো মানুষটি,

” খেয়ে এসেছি। ”

” আচ্ছা। ”

নীরস বদনে পুনরায় শুয়ে পড়লো হৃদি। তন্দ্রা ভাব নেমে এসেছে চক্ষে। বুজে যাচ্ছে আঁখি পল্লব। কিয়ৎক্ষণ বাদে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব কেটে গেল। নিজেকে অনুভব করতে পারলো পেশিবহুল দু হাতের বাঁধনে। লহমায় তরঙ্গ বয়ে গেল হৃদয় জুড়ে। অতি সন্নিকটে মানুষটি। দু হাতে তাকে গাঢ় আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে শুয়ে। মুখ গুঁজে কৃষ্ণবর্ণ কেশে। দিনভর চিন্তার হাতছানি, মানসিক অস্থিরতা সব যেন ধূলিসাৎ হলো এ আপন ছোঁয়ায়। একান্ত জনের স্পর্শে কোনো জা”দুর পরশ লুকিয়ে থাকে কি! নাহলে এমন করে প্রশান্তি এনে দেয় কি করে! জানা নেই মেয়েটির। সে আস্তে ধীরে চক্ষু বুজে নিলো। পেলব দু হাত রাখলো স্বামীর হাতের ওপর। একে অপরের সঙ্গে লেপ্টে তারা। তলিয়ে গেল নিদ্রার জগতে।

রবির কিরণে উজ্জ্বল বসুন্ধরা। সকালের ভোজন পর্ব সমাপ্ত হয়েছে মিনিট বিশেক আগে। লিভিং রুমে সোফায় বসে ইরহাম। পড়নে তুষার শুভ্র রঙা পাঞ্জাবি, পাজামা। বাহিরে যাওয়ার প্রস্তুতি সেরেই এখানে উপস্থিত হয়েছে। তার বিপরীত দিকের সোফায় বসে ইনায়া। অবনত মস্তকে বসে মেয়েটি। ঘেমে যাচ্ছে হিমশীতল ঘরে। ভাইয়া হঠাৎ তলব করলো কেন? আবার কি হয়েছে? সে কি একটুখানি স্বস্তি আশা করতে পারে না? আর কত পু”ড়বে ভেতরে ভেতরে? ভেতরকার যন্ত্রণা যে এখন অসহনীয় পর্যায়ে ঠেকে। আর পারা যাচ্ছে না। কেন হচ্ছে এমনটি? সে কি খুব বেশি কিছু চেয়ে ফেলেছিল? যার জন্য আজ এই পরিণাম? উত্তর মিললো না। ক্ষণিকের নীরবতা ভেদ করে ইরহাম গম্ভীর স্বরে বোনকে শুধালো,

” শুনলাম বিয়েতে সম্মতি দিয়েছিস? ”

ভেতরে ভেতরে চমকালেও বহিঃপ্রকাশ করলো না ইনু। বরং আলতো করে ইতিবাচক মাথা নাড়ল।

” এমনটা এক্সপেক্ট করিনি। ভেবেছিলাম নিজের ভালোটা নিজেই বুঝতে পারবি। ‘না’ করে দিবি। ”

ইনায়া মিহি স্বরে কিছু বলার পূর্বেই ওরা শুনতে পেল,

” তোমার আশানুরূপ সিদ্ধান্ত হয়নি বলে এখন বোনকে ব্রেনওয়াশ করছো? ”

ডানে তাকালো ইরহাম। বাবা দাঁড়িয়ে সিঁড়ির ধারে। তপ্ত শ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ালো ইরহাম। কথাটা তার মোটেও পছন্দ হলো না। গম্ভীর স্বরে প্রত্যুত্তর করলো,

” বোন আমার কচি খুকি নয় যে তাকে ব্রেনওয়াশ করতে হবে। ”

ইনায়া ইতিমধ্যে উঠে দাঁড়িয়েছে। শঙ্কিত বাবা ও ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলা না বেঁধে যায়!

” আচ্ছা? তাহলে সকাল সকাল ওকে কি বলছিলে? বিয়ের রিচ্যুয়াল? ”

ত্যাড়া প্রশ্ন করে ওদের পানে এগিয়ে এলেন এজাজ সাহেব। সে মুহূর্তে লিভিং রুমে উপস্থিত হলো শাশুড়ি, পুত্রবধূ যুগল। হৃদি এবং মালিহা। তারা কৌতূহলী হয়ে বোঝার চেষ্টা করছে কি হচ্ছে এখানে। ইরহাম বাবার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার প্রয়োজন বোধ করলো না। বরং দৃঢ়তার সহিত নিজস্ব মতামত পেশ করলো,

” এখনই ওর বিয়েটা দিয়ো না। বিয়ে দেয়ার জন্য অনেক সময় পড়ে আছে। ”

” জাস্ট আকদ হবে‌। ওকে এখুনি শ্বশুরবাড়ি পাঠাচ্ছি না। ”

হৃদি এবার বুঝতে পারলো কি নিয়ে পিতা-পুত্রের মধ্যে তর্কাতর্কি হচ্ছে। চিন্তায় পড়ে গেল সে। পাপা এমন অহেতুক জেদ করছেন কেন? এই মুহূর্তে ইনুর বিয়েটা না দিলেই নয়! ও কি বুড়ি হয়ে যাচ্ছে? নাকি কারোর সঙ্গে পালিয়ে যাচ্ছে যার জন্য হুট করে বিয়ে দেয়া হচ্ছে! ইরহাম অসন্তুষ্ট কণ্ঠে বললো,

” ইনু আমার বোন হয়। কোনো ফেলনা নয়। এমনকি ওর কোনো ক্রুটিও নেই। তাহলে এত তাড়াহুড়ো কিসের? বলছি তো ও আপাতত অ্যাডমিশন কোচিংয়ে ফোকাস করুক। শুধু শুধু এই মুহূর্তে মে’ন্টাল প্রেশার দেয়ার কোনো মানে হয়? ”

কঠিন স্বরে বলে উঠলেন এজাজ সাহেব,

” মে’ন্টাল প্রেশার মানে কি হাঁ? আমি কি ওকে বিয়ের জন্য ফোর্স করেছি নাকি মে রে ছি? ও নিজে বিয়েতে সম্মতি দিয়েছে। ”

ইরহাম যথাযোগ্য জবাব দিতে উদ্যত হলো ঠিক তখনই বেজে উঠলো ওর মোবাইল। কথোপকথনে ব্যঘাত ঘটায় বিরক্ত হলো মানুষটি। পাঞ্জাবির পকেট হতে বের করলো মোবাইল। গুরুত্বপূর্ণ কল। রিসিভ করা দরকার।

” এক্সকিউজ মি। ”

কল রিসিভ করে কথা বলতে বলতে সেথা হতে প্রস্থান করলো ইরহাম। এজাজ সাহেব অনমনীয় চাহনিতে মেয়ের পানে তাকিয়ে। তন্মধ্যে আগুনে ঘি ঢেলে মালিহা বলে উঠলেন,

” ইরু তো ঠিকই বলছে। ওর কথাটা একটু… ”

মাঝপথে ধমকে উঠলেন এজাজ সাহেব,

” চুপ করবে তুমি? অবুঝ মহিলা। ”

অপমানে নত হলো মালিহার বদন। চোখে জ্বালা করছে। হৃদি অবাক নেত্রে এজাজ সাহেবের আরেক রূপ দর্শন করলো। পাপা এমন করছে কেন! সমস্যা কোথায়? এজাজ সাহেব গটাগট কদম ফেলে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। ক্রন্দনে ভেঙে পড়লো ইনায়া। পা বাড়ালো নিজ কক্ষের উদ্দেশ্যে। হৃদি মা’কে দেখবে নাকি ননদকে দ্বিধায় পড়ে গেল। শেষমেষ পিছু নিলো ননদের। আজ এর একটা বিহিত করতেই হবে।
.

বিছানার একপ্রান্তে বসে ইনু। চোখে নোনাজলের আধিপত্য। দহন হচ্ছে বুকের ভেতর। না পারছে কইতে না পারছে সইতে। কি করে নেভাবে ভেতরকার আ-গ্নেয়গিরি! কি করে!

” এসব কি হচ্ছে ইনু? ”

আকস্মিক নারী কণ্ঠে হকচকিয়ে গেল ইনায়া। দ্রুত ডান হাতের উল্টো পিঠে অশ্রুবিন্দু মুছে ফেললো। ঘুরে বসলো ত্বরিত। ভাবী দাঁড়িয়ে দরজায়। অনুমতি বিহীন ভেতরে প্রবেশ করলো হৃদি। বসলো ইনুর পাশে। পূর্ণ দৃষ্টিতে মেয়েটির হালচাল অবলোকন করলো। বুঝলো সবই। তাই তো অসন্তুষ্ট কণ্ঠে বলে উঠলো,

” তোমাকে তো আমি বুদ্ধিমতী মেয়ে হিসেবে জানতাম। অবলা স্বভাব তোমার নয়। তাহলে আজ এসব কেন করছো? ”

বুঝেও অবুঝের মতো ভেজা কণ্ঠে প্রশ্ন করলো মেয়েটি,

” কি করেছি? ”

” তুমি কি আসলেই বুঝতে পারছো না ইনু? তোমার বিয়ে নিয়ে ইরহাম, পাপার মধ্যে ঝামেলা হচ্ছে। এ বিয়েতে তুমি মোটেও রাজি নও। ”

ইনায়া কিছু বলার পূর্বেই হৃদি ওকে থামিয়ে দিলো,

” আমি দেখেছি। যখন তখন তুমি কান্নাকাটি করছো। দুঃখ ভারাক্রান্ত অবস্থা হয়েছে তোমার। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল পড়ে যাচ্ছে। তাহলে শুধু শুধু বিয়েতে হাঁ বলে দিলে কেন? সরাসরি বলে দিতে তুমি রাজি নও। ”

” আ আমি রাজি ভাবী। ” আনত নয়নে বললো ইনু।

” আচ্ছা? তাহলে এত কান্নাকাটি কিসের? হ্যান্ডসাম জামাই দেখে নাকি রাহিদ ভাইয়ার বিরহে? ”

প্রথমে খেয়াল না করলেও পরক্ষণে বোধগম্য হলো। বিহ্বল নয়নে তাকালো ইনায়া। অস্ফুট স্বরে বলল,

” রাহি ভাইয়া! ”

” হাঁ রাহিদ ভাইয়া। কি ভেবেছিলে ভাবীকে না বললে ভাবী কিছু টের পাবে না? টের তো আমি আগেই পেয়েছি। ভেবেছিলাম তুমি নিজে থেকে আমায় বলবে। কিন্তু তা আর হলো কোথায়? খেলা তো বদলে গেল। কি থেকে কি হয়ে হয়ে চলেছে। ”

দুঃখে জর্জরিত ইনায়া আর পারলো না। ভাবীকে আলিঙ্গন করে বাঁধভাঙা ক্রন্দনে দিশেহারা হলো। কেঁদে যাচ্ছে অনবরত। হৃদি প্রথমে চমকালেও নিজেকে সামলে নিলো। বোনসম ননদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। শান্ত করার চেষ্টা চলমান। কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না মেয়েটা।

” হশশ! কেঁদো না। ইনশাআল্লাহ্ সব ঠিক হয়ে যাবে। ইনু অ্যাই মেয়ে। কাঁদে না তো। ”

” সে আমায় ভালোবাসে না ভাবী। একটুও ভালোবাসে না। আমায় একবিন্দু ভালোবাসলে কি হতো ভাবী? আমি যে আর সইতে পারছি না। ”

হুঁ হুঁ করে কেঁদে চলেছে মেয়েটা। দিশেহারা বোধ করছে হৃদি। কি বলে শান্ত করবে মেয়েটিকে। এটাসেটা বলে চলেছে। মাথায়, পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তবুও কেঁদে চলেছে ইনু। হৃদি আনমনে আওড়ালো,

” ভালোবাসায় কেন এত যন্ত্রণা! ”
.

আঁধারে ডুবে ঘরটি। খাটের পায়া ঘেঁষে মেঝেতে বসে রাহিদ। বাঁ পা ভাঁজ করে রাখা, ডান হাঁটু উঁচু করে তুলে। বিধ্ব-স্ত অবস্থা তার। কপোলে শুকনো রেখার দাগ। কাঁদছিল কি! চোখের পর্দায় ভেসে ভেসে উঠছে এক দৃশ্য,

শিকদার পরিবারের সম্মুখে আনত বদনে বসে ইনায়া। জুনায়েদ শিকদারের নিষ্পলক নেত্র নিবদ্ধ ইনুতে। সকলের উপস্থিতিতে বেশরমের মতো তাকিয়ে। এ দৃশ্য যে রাহিদ নামক এক তরুণের হৃদয়ে হুঁলের মতো ফুটছে জানে কি কেউ। তার প্রেয়সীর ওপর অন্য কারোর নজর একবিন্দু সইতে নারাজ সে। কিন্তু সকলের উপস্থিতিতে সেই মুহূর্তে কিচ্ছুটি করতে পারেনি। নীরবে শুধু দেখে গিয়েছে। ব্যর্থ সে। এক পুত্র বা ভাই কিংবা প্রেমিক পুরুষ। সর্ব রূপে ব্যর্থ সে। ব্যর্থ তরুণের কপোল ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়ছে নোনাজল। আঁধার মাঝে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে সীমাহীন যন্ত্রণা। কি করবে সে! ব্যর্থতা, গাফিলতির দরুণ হারিয়ে যাবে তার ইনু! পূর্ণতা পাবে না এ অব্যক্ত ভালোবাসা! বিমর্ষ তরুণ আঁধার মাঝে বিরহ যাতনায় কাতরাতে লাগলো অবিরাম।

পূর্ব দিগন্তে আঁধার হটিয়ে উদিত হচ্ছে দিবাবসু। আকাশের বুকে কৃষ্ণবর্ণ চাদর সরে একটু একটু করে দেখা মিলছে উজ্জ্বল আলোর। পাখপাখালির দল গৃহ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে। কিচিরমিচির কলরব তুলে মুক্তমনে উড়ে বেড়াচ্ছে আকাশের বুকে। উন্মুক্ত বেলকনিতে বেতের সিঙ্গেল সোফায় বসে ইরহাম। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে বাহিরে। একাকী প্রকৃতি বিলাসে মগ্ন মানুষটি। আসলেই কি প্রকৃতি বিলাসে মগ্ন নাকি ভাবুক হয়ে ভেবে চলেছে কতকিছু! আকস্মিক ভাবনায় ছেদ পড়লো। তাকালো ডান পাশে। কফি মগ হাতে দাঁড়িয়ে তার অর্ধাঙ্গী।

” এই নিন। ”

কফিমগ বাড়িয়ে দিলো মেয়েটি। বিনিময়ে মুচকি হেসে মগটি হাতে নিলো ইরহাম। হৃদি প্রকৃতি বিলাসের উদ্দেশ্যে রেলিংয়ের ধারে অগ্রসর হতে যাচ্ছিল। সহসা বাঁধাপ্রাপ্ত হলো চরমভাবে। আছড়ে পড়লো প্রশস্ত সে বক্ষপটে। বিহ্বল হয়ে স্বামীর পানে তাকালো হৃদি। ঘন শ্বাস পড়ছে তার। ভয় পেয়েছে কিনা! অথচ দেখো! মানুষটির চোখেমুখে দুষ্টু আভা।

” কি করছেন এসব? ভয় পেয়েছি না? ”

দূরত্ব ঘুচিয়ে নৈকট্যে এলো মানুষটি। কপালে ঠেকে গেল কপাল। মিহি স্বরে বলল,

” ভয় কিসের? আমিই তো। ”

একান্ত জনের সান্নিধ্যে বরফের ন্যায় জমে যাচ্ছিল কোমল কায়া। শ্বাস প্রশ্বাসের গতিবেগ দ্রুততর। ডান হাতে খামচে ধরলো স্বামীর মাংসল শক্তপোক্ত বাহু। চোখেমুখে আঁকাআঁকি করে চলেছে গরম হাওয়া। নাক ছুঁলো অপরের নাক। শিরশিরানি ছড়িয়ে তনুমনে। অধরকোণে উষ্ণ পরশ বুলিয়ে স্ত্রীকে বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিলো ইরহাম। স্বামীর বক্ষস্থলে লেপ্টে হৃদি। দু হাতে আঁকড়ে ধরে উদরের পাশ। ওর নির্মেদ কটিদেশে স্থাপিত পুরুষালি বাঁ হাত। ডান হাতে কফির মগ। একটু পরপর কফির মগে ওষ্ঠাধর ছুঁয়ে কফি পান করছে মানুষটি। কখনোবা মগটি বাড়িয়ে স্ত্রীর পানে। একই মগ হতে তার সঙ্গিনীও কফি পান করছে। এমন করেই মধুরতম পন্থায় অতিবাহিত হলো তাদের সুবাহ!
.

পার্টি অফিসে নিজ কর্মস্থলে বসে এমপি সাহেব। টেবিলে রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে দৃষ্টি বুলিয়ে চলেছে সে। ব্যস্ত এ মুহূর্তে হঠাৎ মোবাইলের রিংটোন বিরক্ত করলো। ফাইল হতে দৃষ্টি সরিয়ে টেবিলের ওপর রাখা মোবাইলটি হাতে নিলো ইরহাম। অধরে ফুটে উঠলো বক্র রেখা। কল রিসিভ করলো সে। গুরুগম্ভীর স্বরে দিলো সালাম,

” আসসালামু আলাইকুম। ”

” ওয়া আলাইকুমুস ভাই! জুনায়েদ শিকদারের বিন্দুবিসর্গ বের করে ফেলছি। এ টু জেড। কিচ্ছু বাদ যায়নি। ”

চেয়ারে দেহ এলিয়ে দিলো মানুষটি। ললাটে তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুল ঘষে চলেছে। সে অবস্থাতেই বলল,

” বলতে থাক। ”

ওপাশ হতে একের পর এক তথ্য বিবরণী পেশ করতে লাগলো তার অন্যতম বিশ্বস্ত গুপ্তচর। সে তথ্যসমূহ শুনে অতটাও অবাক হলো না চৌধুরী। এমনটা সে পূর্বেই আন্দাজ করেছিল। এখন শুধু নিশ্চিত হলো। সমস্ত খবরাখবর শুনে প্রসন্নতা প্রকাশ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলো ইরহাম। মোবাইল পড়ে রইলো হাতে। নিমীলিত হলো নেত্র পল্লব। ভাবতে লাগলো আসন্ন পদক্ষেপসমূহ। কি হতে চলেছে আগামীতে?

চলবে.

#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৫

” তুমি কিন্তু এবার লিমিট ক্রস করছো ইরহাম! ”

গর্জে উঠলেন এজাজ সাহেব। ইরহাম কিচ্ছুটি বললো না। অধরে বাঁকা রেখা ফুটিয়ে টেবিল হতে পেপার ওয়েট তুলে নিলো। এ মুহূর্তে তারা পিতা-পুত্র অবস্থান করছে এজাজ সাহেবের স্টাডি রুমে। উনি চেয়ারে বসে। নৈশভোজ সেরে কিছু দরকারি ফাইলপত্র নিরীক্ষা করছিলেন। সে মুহূর্তে উপস্থিত হলো ইরহাম। কথায় কথায় শুরু হলো দু’জনার মতবিরোধ। হাতের মুঠোয় গোলাকার পেপার ওয়েট নিয়ে খেলা করতে করতে বাবার দিকে তাকালো ইরহাম। থামলো হস্ত খেলা। অত্যন্ত শীতল স্বরে বলে উঠলো,

” একটা ক্যারেক্টারলেস ছেলের হাতে নিজের মেয়েকে তুলে দিতে চাইছো। সেখানে লিমিট ক্রস হচ্ছে না? ”

চমকালেন এজাজ সাহেব! পরক্ষণেই নিজেকে সামলিয়ে অনমনীয় স্বরে বললেন,

” বড় ঘরের ছেলেরা জোয়ান বয়সে একটু আধটু মাস্তি করেই থাকে। একে ক্যারেক্টারলেস বলে না। ”

কঠিন স্বরে শুধালো ইরহাম,

” মাস্তি করা বলতে বিবাহ বহির্ভূত বেড শেয়ার করাও বোঝায়? ”

” ইরহাম! ” উঁচু হলো মাঝবয়সী লোকটির কণ্ঠস্বর।

ইরহাম এতে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে টেবিলে রাখলো গোলাকৃতির পেপার ওয়েট টি। বেশ শান্ত স্বরে বাবার চোখে চোখ রেখে বললো,

” স্ট্যাটাসের দোহাই দিয়ে দিয়ে তোমার চোখের সামনে নকল পর্দা উঠেছে। তাই ভালোমন্দ কিছুই দেখতে পাচ্ছো না। ”

” একদম বাজে কথা বলবে না। ভুলে যেয়ো না ইনু তোমার বোন হওয়ার আগে আমার মেয়ে। কোনো বাবাই তার মেয়ের মন্দ চায় না। ”

কেমন অদ্ভুতুড়ে হাসলো ইরহাম। সে হাসিতে জ্ব’লে উঠলো ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়। ফোঁস করে শ্বাস ফেলে মুখ ঘুরিয়ে বসলেন এজাজ সাহেব। ছেলে ওনার চরম অবাধ্য এবং বেয়াদব হয়ে গেছে। কারোর ধার ধারে না।

” তোমার যা করার করছো। আমিও সেটাই করবো যেটা আমি ভেবেছি। ”

” তুমি কি… ”

আর জিজ্ঞেস করা গেল না। ব্যস্ত পায়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ইরহাম। বাবা নামক মানুষটির একবিন্দু পরামর্শ তার চাই না। অ”হংকার, দা”ম্ভিকতা ছড়িয়ে পড়েছে ওনার শিরায় উপশিরায়। বদলে যাওয়া মানুষটি আরো বদলে যাচ্ছে। যা কারোর কাম্য নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক! মানুষটি তার জন্মদাতা পিতা মাঝেমধ্যে ভাবতেও অবাক লাগে! এত অহং!

সমতল আরশির সম্মুখে দাঁড়িয়ে ইনায়া। ডান পাশে হৃদি। ওর হিজাবটি সুন্দর রূপে পরিপাটি করে দিলো। আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলো। কোমল স্বরে বললো,

” এসব না করলেই নয়? ”

অক্ষিকোলে পানি জমলো। তা গোপন করে শুকনো ঢোক গিললো ইনায়া। বললো,

” জানি না ভাবী এ কোন সর্বনা’শা খেলায় মেতেছি আমি। কোথায় এর শেষ। খেলতে খেলতে এই আমিটাই না নিঃশেষ হয়ে যাই। ”

ত্বরিত অপ্রয়োজনীয় শব্দমালায় বাঁধা দিলো হৃদি,

” ইশ্! কিসব বলছো? চুপ করো। একটু ভরসা রাখো আল্লাহ্’র ওপর। আমাদের ওপর। ইনশাআল্লাহ্ সব ঠিক হয়ে যাবে। ”

বেদনার ছাপ স্পষ্ট হলো চোখেমুখে। ইনায়ার মন বলে উঠলো, ভাবী তুমি ভুল ভাবছো। যা হওয়ার হয়ে গেছে। আর কিচ্ছুটি ঠিক হবে না। এ জনমে রাহি ভাইয়া আর আমার হলো না। হলো না তার বুকে মাথা রেখে সুখদুঃখ ভাগ করা। হয়তো পরকালে..! চক্ষু ছাপিয়ে অশ্রু নামলো। দ্রুততার সহিত ডান হাতে অশ্রুবিন্দু মুছে নিলো ইনায়া। মেকি হেসে বললো,

” ভাবী আসছি তাহলে। আসসালামু আলাইকুম। ”

ওর গালে হাত রেখে হৃদি বললো,

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। সাবধানে যেয়ো। কোনোরকম সমস্যা হলেই ইমিডিয়েটলি কল করবে। ঠিক আছে? ”

মাথা নাড়ল ইনায়া। ভাবীর থেকে বিদায় নিয়ে ধীরপায়ে ঘর হতে বেরিয়ে গেল। যাচ্ছে আজ হবু বরের সঙ্গে এক রেস্তোরাঁয় সাক্ষাৎ করতে। দুপুরে একসাথে মধ্যাহ্নভোজ করবে তারা। এমনটা জুনায়েদ শিকদার কর্তৃক পূর্ব পরিকল্পিত। সে শুধু কলের পুতুলের ন্যায় যাচ্ছে। মন তো পড়ে অন্যত্র।

” মা এসব হচ্ছেটা কি? এবার কি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না? ”

বিরক্তি প্রকাশ করলো হৃদি। সোফায় বসে শাশুড়ি- বৌমা যুগল। মালিহা এবং রাজেদা খানম। তারাও বোধহীন হয়ে বসে। বুঝে উঠতে পারছে না কি থেকে কি বলবে। কি করবে।

গোধূলি লগ্ন। পশ্চিম দিগন্তে ডুবন্ত রবি’র মোহনীয় রূপে আকর্ষণীয় লাগছে চারিদিক! ইনায়া সে-ই দুপুরে গিয়েছে। এখনো ফেরেনি। কিয়ৎক্ষণ পূর্বে কল করেছিল। বাড়ির কাছাকাছি রয়েছে। ফিরছে সে। তন্মধ্যে এই নয়া ঝামেলা। এগিয়ে আনা হয়েছে ইনায়া এবং জুনায়েদের আকদ এর তারিখ। আগামী মাসের তেরো তারিখ আকদের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। অর্থাৎ পঁচিশ দিন পর। সেটা আরো এগিয়ে আনা হয়েছে। অপ্রত্যাশিত ভাবে আগামী সপ্তাহে হতে চলেছে আকদ। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বয়ং এজাজ সাহেব। বিকেলের দিকে স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন উনি। জানালেন ওনার আকস্মিক সিদ্ধান্ত। এতে চরম আশ্চর্যান্বিত ‘ আনন্দাঙ্গন ‘ এর সদস্যরা। ফোনালাপের সময় হতবিহ্বল হয়ে একপ্রকার বোবা হয়ে গিয়েছিলেন মালিহা। বলতে পারলেন না কিছুই। প্রতিবাদ তো দূরের কথা। চিরাচরিত কোমল হৃদয়ের অধিকারিণী এই নারী বরাবরই শান্ত। স্বামীর অনুগত। তাই আগেও পারেনি স্বামীর মুখের ওপর কথা বলতে, নিজের অধিকার খাটিয়ে দু’টো প্রতিবাদ করতে। আজও পারলো না। চুপচাপ মেনে নিলো সবটা। আসলেই কি তাই? নাকি এবার ভিন্নতা আসতে চলেছে? হুঁ?

” তুই চিন্তা করিছ না বুইন। আইজ এজাজ ঘরে আউক। অর লগে আমার কথা আছে। শুরু করছে ডা কি এইসব? মঞ্চনাটক পাইছে নি? ”

অসন্তোষ ঝড়ে পড়লো রাজেদা খানমের কণ্ঠে। হৃদি তখন অন্য ভাবনায় ডুবে। ইরহাম ফিরলে এই নিয়ে আজ কথা বলতেই হবে। এসব আর মেনে নেয়া যাচ্ছে না। কেন অপূর্ণ থাকবে দু’জনের অব্যক্ত অনুভূতি!

নিশুতি রাত। নিশ্চুপ চারিদিক। ঘড়ির কাঁটা তখন একের কাছাকাছি। বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে মেয়েটি। চোখে জমায়িত নোনাজল এখন চিবুক গড়িয়ে গ্ৰীবায় (গলায়) ধাবিত হচ্ছে। লালাভ বর্ণ ধারণ করেছে দু চোখ। অন্তরে বিষাদের সুর বেজে বেজে উঠছে। চক্ষুতারায় ভেসে উঠছে এক লোলুপ দৃষ্টি।

হয়তো বয়স কম। তবুও মেয়ে সে। ইন্দ্রিয় শক্তি জানান দেয় কোন পুরুষের চাহনিতে কি প্রকাশ পাচ্ছে। আজ তার ইন্দ্রিয় শক্তি বারবার তাকে সতর্ক করেছে। বুঝিয়ে দিয়েছে তোর বিপরীতে বসে থাকা জুনায়েদ এক মুখোশধারী। তার চরিত্র সুবিধার নয়। চাহনিতে প্রকাশ পায় লোলুপ ভাব। কথার ফাঁকে ফাঁকে কমনীয় দেহের আনাচে কানাচে চক্ষু সফর কিংবা মাঝেমধ্যে হাত ধরার বাহানা খোঁজা। এগুলো সুপুরুষের লক্ষণ নয়। বরং! বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে ইনুর। জেদের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ কি করে ফেললো সে! রাহি ভাইয়ার ওপর রাগ কিংবা সুপ্ত অভিমান দেখাতে গিয়ে এ বিয়েতে সম্মতি দিয়েছিল। অবুঝের মতো আগেপিছে না ভেবে সরাসরি সম্মতি। ভাবেনি এর ভবিষ্যৎ কি হতে পারে। আজ প্রথমবারের মতো ওই জুনায়েদ নামক মানুষটির সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ। রেস্তোরাঁর মতো পাবলিক প্লেসে যার চরিত্রে অমন ভাবভঙ্গি ফুটে ওঠে না জানি নিরালায় সে কোন রূপে অবতীর্ণ হবে। আচ্ছা বিয়েটা যদি সত্যি সত্যিই হয়ে যায় তখন? তখন কি হবে? তখন তো শুধুমাত্র চক্ষু নয় গোটা মানুষটি ডুব দেবে তার দেহবল্লরীতে। কি করে সইবে সে অনাকাঙ্ক্ষিত-ঘৃণ্য স্পর্শ! সে মনেপ্রাণে যে একজনার ই অস্তিত্ব চিরকাল কল্পনা করে এসেছে। সে বিহীন অন্য কারোর ছোঁয়া বি-ষধর রূপে দং শ ন কি করবে না? করবে তো। তনুমনে কারোর বি-ষাক্ত ছো”বল সয়ে বাঁচবে কি করে সে? এর চেয়ে কি ম”রণ শ্রেয় নয়। না না। জীবনে যা কিছু হয়ে যাক না কেন মৃ ত্যু যথার্থ সমাধান হতে পারে না। আ-ত্মহনন মহাপাপ। এর কোনো ক্ষমা নেই। নিঃসন্দেহে আত্মহ”ত্যা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। ভীতি কিংবা কাপুরুষোচিত আচরণের বহিঃপ্রকাশ। সে তো কাপুরুষ হতে চায়নি। চেয়েছে শুধু স্বপ্নের নায়কের একবিন্দু ভালোবাসা! খুব বেশি চেয়ে ফেলেছিল বুঝি! তাই তো আজ এই দুরাবস্থা!

হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলো ইনায়া। বালিশে লুকালো মুখ। আঁধার রাতে তার সবটুকু যন্ত্রণা, ক্লেশ সকলের অগোচরে রয়ে গেল। জানলো না দেখলো না কেউই। এদের ভবিষ্যতে কি হতে চলেছে! শেষমেষ জুনায়েদ নামক এক চরিত্রহীন ই লেখা তার ভাগ্যে!

স্বামীর পানে অসন্তুষ্ট চাহনিতে তাকিয়ে হৃদি। তাতে কি মানুষটির বিন্দু পরিমাণ ভ্রুক্ষেপ রয়েছে? সে তো দাঁড়িয়ে আরশির সম্মুখে। বাহিরে যাওয়ার জন্য ভুংভাং বাবু সেজে নিচ্ছে।

” আপনি কিন্তু আমার কথাটা শুনছেন না। একটু বোঝার চেষ্টা করুন। বিষয়টা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। ”

হাতে ঘড়ি গলিয়ে ইরহাম ব্যস্ত কণ্ঠে বললো,

” এখন সময় নেই মিসেস শেখ। ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে। যেতে হবে। ”

” এইরকম বাহানা দিয়ে গতকাল রাতেও শুনলেন না। ফিরলেন অত রাতে। কোনোমতে নাকেমুখে খেয়েই ঘুম। বলেছিলেন সকালে শুনবেন। এখন আবার নতুন বাহানা! ”

পকেটে দরকারি জিনিসপত্র পুরে নেয়ার ফাঁকে ইরহাম পরিচিত গম্ভীর স্বরে বললো,

” আসলেই বিজি আছি হৃদি। বোঝার চেষ্টা করো। ”

” আপনিই তো বুঝতে চাইছেন না। ”

অভিমানিনীর চওড়া অভিমান হলো। ফিটফাট হয়ে আরশিতে নিজেকে একঝলক দেখে নিলো মানুষটি। অতঃপর তাকালো অর্ধাঙ্গীর পানে। অবনত মস্তকে একাকী বিড়বিড়িয়ে চলেছে বুঝি! মুচকি হেসে ধীরপায়ে এগিয়ে এলো ইরহাম। পুরুষালি ডান হাতটি রাখলো স্ত্রীর কপোলে। ললাটে চুম্বন করতে উদ্যত হতেই অভিমানী কন্যা মুখ ফিরিয়ে নিলো। নিঃশব্দে নজরকাড়া হাসলো মানুষটি। স্ত্রীর অনিচ্ছা অগ্রাহ্য করে চুম্বন এঁকে দিলো ললাটের ত্বকে। একটু হলেও গলে গেল কি অভিমান! উঁহু! এক চিমটি পরিমাণও নয়।

” আসছি তাহলে। আসসালামু আলাইকুম। ”

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। ”

মিহি স্বরে সালামের জবাব দিলো মেয়েটি। ইরহাম হাতঘড়িতে সময় দেখে ব্যস্ত পায়ে কক্ষ হতে বেরিয়ে গেল। তার গমন পথে শূন্য চাহনিতে তাকিয়ে হৃদি।

প্রথমবারের মতো নে শায় বুঁদ হয়ে দুঃখ বিলাস করছিল ছেলেটি। আকস্মিক এক দুর্দান্ত শট। বিহ্বল নয়নে তাকিয়ে রাহিদ। টলে উঠলো দেহ। এটা কি হলো? সে কি নে”শার ঘোরে ওলটপালট দেখছে!

চলবে.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে