‘মডেল মিফতা’সমাপ্তি পর্ব
গল্পবিলাসী – Nishe
কৌনিক দৃষ্টিতে বারবার মিফতার দিকে তাকাচ্ছে নিরব। আসার পর থেকে এখন অবধি একটা কথা বলেনি। ইফতিকে ঘুমের মধ্যেই ধরে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে এসেছে। গাড়ির মধ্যে লাইটস অফ করে দিয়ে লো ভলিয়মে গান প্লে করে দিয়ে ড্রাইভ করে যাচ্ছে নিরব। মনেমনে অনেক প্ল্যান করে নিয়েই আনমনে হেসে চলছে সে।এতোক্ষন জার্নি চলছে একটা বারের জন্যও মিফতা তার দিকে ফিরে তাকায়নি তাই বাধ্যহয়েই গাড়ির গ্লাসটা উঠিয়ে দিলো নিরব। কি এমন দেখছে বাহিরে যে আমার চাইতেও বেশি ইম্পরট্যান্ট ।একমনে বাহিরের দিকেই তাকিয়ে ছিলাম হঠাৎ করেই গ্লাসটা উঠে যাওয়াতে নিরবের দিকে একবার ফিরে তাকিয়ে আবারো বাহিরের দিকে দৃষ্টিপাত করলো। ছোটবেলা থেকেই বাজে অভ্যাস গড়ে নিয়েছে।বান্ধবিরা যখন রেগে যেতো সবসময় হয়তো ভাঙচুর আর নয়তো কারো উপর চেঁচিয়ে রাগ ঝেড়ে নিতো। কিন্তু সেক্ষেত্রে পুরাই ভিন্ন মিফতা। রেগে গিয়ে চুপ থাকাটাই তার শ্রেয় মনেহয়। চুলগুলোকে কাঠি দিয়ে বেধে রেখেছে। কালো একটা থ্রিপীছ পরে আছে। চোখেমুখে ক্লান্তিকর ছাপ পরে আছে। সিটে মাথা রেখে চোখ গুলো পরম আবেশে বন্ধ করে দেয় মিফতা। পাশ থেকে বারবার তাকিয়ে দেখছে নিরব। ভেবেছিলো গ্লাস উঠাতে দেখে হয়তো কিছুটা হলেও রিয়েক্ট করবে কিন্তু না তার মহারানী তো অলওয়েজ সাইলেন্ট সেটাই ভূলে গিয়েছিলো নিরব। লুকিং গ্লাসে একবার ইফতিকে দেখে নিয়ে মিফতার হাতটা টেনে ধরে। মিফতা হাতটা ছাড়াতে চাইলে আরো চেপে ধরে টেনে একদম কাছে নিয়ে আসে।মিফতা কোনো কথা না বলেই ছাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। হঠাৎ করেই মিফতার কোমল ঠোট দুটোতে তার ঠোট ছুঁইয়ে দিলো। মিফতা থমকে গেল।
রাগে মিফতার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসছে। তারপরও কিছু না বলে নিরবের কাছ থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একহাতে বুকের সাথে জরিয়ে নিয়ে
-সরি। মিফতা মুখটা ফিরিয়ে নিলে হালকা হেসে উঠে।
-কোথায় যাচ্ছি জানতে চাইলেনা যে?মিফতা কোনো উত্তর দেয়নি। নিরব মিফতার কপালে একটা চুমু খেয়ে ড্রাইভ করতে শুরু করে।কিছুক্ষনের মধ্যেই নিরবের ফ্ল্যাটের সামনে চলে এলো ওরা। ইফতিকে হালকা ডাকতেই জেগে উঠলো।
-আপু? কোকথায় নিতে এসেছিস আমাকে?
-এই যে শালাবাবু!
-ভাভইয়া আপনি? কখন এলেন?
-সেতো অনেক আগে আচ্ছা ভেতরে চলো
-ওকে
-ওয়াইট ওয়াইট আমি তোমাকে হেল্প করছি বলেই এগিয়ে এসে ইফতির একটা হাত কাধেঁ নিয়ে তাকে কিছুটা সাপোর্ট দিয়ে লিফটের সামনে চলে এলো। মিফতা ওদের পেছন পেছনই আসছে লিফটের পুরোটা সময় নিরব মিফতার দিকে তাকিয়ে ছিলো মিফতা একবারের জন্য তার দিকে ফিরেও তাকায় নি। দশ নাম্বার ফ্লোরে এসেই লিফট থেমে গেলো। কলিং বাজাতেই একটা মেয়ে দরজা খুলে দিলো। মিফতা উৎসুকভাবে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে।মিফতার দিকে একবার তাকিয়ে
-রিমা! এই হলো তোর ভাবি! মিফতা ও হলো রিমা। আমার হোমমেকার
-ভাবি!!!!কেমন আছেন আপনি?
-রুমে ঢুকতে ঢুকতে হুম ভালো তুমি?
-হুম ভালোই।ভাইজান খাবার কি রুমে পাঠামু?
– রিমা তুই আগে গেস্ট রুমে ইফতির জন্য খাবার নিয়ে যা ওর মেডিসিন নিতে হবে আর আমাদেরটা পরে রুমে দিলেই হবে। ইফতিকে গেস্ট রুমে শুইয়ে দিয়ে নিরব ওর রুমে চলে এলো ফ্রেশ হতে।
-আচ্ছা আপু তুই শুধু শুধু এখানে কেনো নিয়েলি বলতো। আমার সামনে এক্সাম।
-তোমার আপু না আমিই নিয়ে এসেছি। কেনো তুমি কি আনকমফোর্ট ফিল করছো?
-না না ভাইয়া আসলে কি দরকার ছিলো এইটুকু তো এতো সিরিয়াস হওয়ার কি আছে।
-আচ্ছা সেটা পরে দেখা যাবে। তারমধ্যেই রিমা ইফতির খাবার রুমে নিয়ে এলো। মিফতা নিজের হাত দিয়ে ইফতিকে খাইয়ে দিচ্ছে আর নিরব সোফাতেই বসে আছে। প্রেসক্রিপশন দেখছে।ইফতির খাওয়া শেষ হলে
-এই নাও মেডিসিন বলে ইফতির হাতে মেডিসিন গুলো দিয়ে দিলো ইফতি খেয়ে নিলো। রিমা এসে রুম স্প্রে করে দিয়ে গেলো।
-ওকে তুমি ঘুমিয়ে পরো তাহলে আমরা পাশের রুমেই আছি কোনো দরকার হলে কল করো।
-ওকে ভাইয়া গুড নাইট
-গুড নাইট মিফতার দিকে তাকিয়ে চলো ফ্রেশ হবে। ইফতির রুমের দরজাটা একটু টেনে বের হয়েই মিফতাকে কোলে উঠিয়ে নেয়।
-আমার মহারানীর কি খুব রাগ হয়েছে?
-,,,,,,,
-আচ্ছা কতটুকু আদর করলে রাগটা ভ্যানিশ হবে শুনি? আকাশ সমান না সমুদ্রের?
-,,,,,,
মিফতাকে নিয়ে বেলকনিতে সোফায় বসে পরলো। মিফতা চোখ বন্ধ করে রাখলে মিফতার গালে আলতো স্পর্শ পেয়ে চোখ খুলে বাহিরের দিকে দৃষ্টিপাত করে
-ঘুমিয়ে পরোনা প্লিজ। রাগ হলে ইচ্ছেমত ভাঙচুর করো আমাকে শাস্তি দাও, মারো, কান ধরিয়ে রাখো, বাইরে দাড় করিয়ে রাখো সব শুনবো যা বলবে তুমি কিন্তু এভাবে চুপচাপ থেকোনা। মিফতা বাহিরের থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিরবের দিক তাকালো।
– সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠেই অফিসে চলে গিয়েছিলাম।অফিসের সব চেক করলাম তারপর এই ওইকের যে কয়েকটা মিটিং আছে সব গুলো পেপারস চেক করতে হলো। এইসব করতে করতে কখন এতো সময় গেলো বুঝতেই পারিনি। আর আমার মোবাইল কখন যে সাইলেন্ট হয়ে ছিলো তাই তোমার কলগুলো শুনতে পাইনি। সরি আমি জানি তুমি অনেক টেনশনে ছিলা তাইতো সিলেট রওনা হয়েছিলাম পরে ফাহিম বললো তুমি ইফতির কাছে তখন সেখানে গিয়ে নিয়ে এলাম। নিরবের কথা শুনে মিফতা অভিমানী কন্ঠে বলে উঠলো
-আমি অপেক্ষা করছিলাম
-এখন অপেক্ষার অবসান হলো। কিছু বললোনা মিফতা। কোলে উঠিয়ে বেডরুমে এসে বিছানায় শুইয়ে দিলো মিফতাকে। পুরোটা ভর মিফতার উপর ছেড়ে দিয়ে ঠোঁটে চুমু খেয়ে
– আমার কৌতূহলী জীবনে একজন কৌতূহলী মানবী চাই.!
উন্মাতাল এই প্রেমিককে যে কৌতূহল নিয়ে জানবে অথচ তার কৌতূহল মিটবে না.!
স্বাধীন এই স্বত্তাকে সে আরো স্বাধীনতা দেবে,
এস্ট্রে প্লেট এগিয়ে দিয়ে বলবে,
একটার বেশি কিন্তু নয়,
দিয়াশলাই জ্বালিয়ে ধরবে সে,
আমাকে সতর্ক করবে-একটার বেশি কিন্তু নয়, সে জানবে, বিশ্বাস করবে আমি তার অবাধ্য নই.! দিয়াশলাই জ্বালিয়ে ধরবে সে,
আমাকে সতর্ক করবে-একটার বেশি কিন্তু নয়, সে জানবে, বিশ্বাস করবে আমি তার অবাধ্য নই.!
অ্যালকোহলের বোতল খুলে বলবে, এইটুকুর বেশি কখনোই নয়,
সে জানবে আমি তাকে ঠকাবো না।
উন্মাতাল এই প্রেমিক কেবল প্রেমিকই নয়, তার খুব ভাল বন্ধু, পরম আত্মীয় হবে.!
নিবিড় বন্ধুত্বে প্রহর কাটবে,
আমার বন্ধু, আমার সব, আমার অস্তিত্ব।
(লেখক Md Masum Rahman )বলেই মিফতার দিকে তাকালে মিফতা তার ঠোটঁ দুটো গভীর ভাবে
আঁকড়ে নেয়।মিফতার ঠোটঁ ছেড়ে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয় নিরব।
হারিয়ে যায় ভালোবাসার এক নতুন অধ্যায়ে। হয়তো এই ক্ষনিকের অভিমান কেটে গেছে ভালবাসার স্পর্শে। ভালোবাসার মানুষটার মুখের হাসি যে কতোটা শান্তি দেয় তা কেবল যারা ভালবাসে তারাই অনুভব করতে পারে।
নিরবের বুকে শুয়ে আছে মিফতা। আর মিফতার এলোমেলো চুলগুলোকে আরো এলোমেলো করছে নিরব।
-ম্যাম এবার উঠে ফ্রেশ হয়ে নিন। খেতে হবে কিছু
-উঁহু।
-কিছু শুনছিনা আমি বলে কোলে উঠিয়ে ওয়াশরুমে দিয়ে ডায়নিং এ চলে এলো। খাবার নিয়ে রুমে যেতে গিয়েও আগে ইফতিকে একবার দেখে এলো সব ঠিক আছে।তারপর খাবার নিয়ে রুমে চলে এলো। মিফতা তখনো বের হয়নি।
-কি হলো এতোক্ষন সময় নিয়ে শাওয়ার নিলে আবারো জ্বর বাধাবে কিন্তু
-আমি কি পরবো?ড্রেস তো আনিনি এখন ভিজিয়ে ফেলেছি।
-ওয়াইট বলেই কাবার্ডে নজর দিলো কি করা যায় ভেবেই ওর একটা টিশার্ট আর একটা জিন্স নিয়ে নিলো।
নাও এইগুলো পরে আসো
-এই গুলো?????
-হুম যাস্ট ফাইভ মিনিট গট ইট?
-হুম। কোনো উপায় না দেখে পরে নিলো ওয়াশরুম থের বের হতেও লজ্জা লাগছে। দরজাটা খুলেও সংকোচ লাগছে।
-মিফতা!! বলে দরজায় হালকা ধাক্কা দিতেই দরজাটা একটু খুলে গেলো।ভিতরে ঢুকতেই মিফতা সাথেসাথে পিছন ফিরে গেলো। পেছন থেকে চুলগুলো ছেড়ে রাখা।মিফতার টিশার্টে আরেকজন ঢুকিয়ে দেয়া যাবে যা অবস্থা। হালকা হেসে ইউ লুকিং সো বিউটিফুল সুইটহার্ট। কাম বলে মিফতার হাত ধরে টেনে নিয়ে এলো ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মিফতা ঠিক তার পিছনেই কাধেঁ মুখ রেখে দাঁড়িয়ে আছে নিরব কোমড়ে জড়িয়ে ধরে
-সুইটহার্ট সারাদিনের ক্লান্ত তো তোমার এই মুখটা দেখলেই ভ্যানিশ হয়ে যায়।মৃদু হাসলো মিফতা। তুমি হাসবে তার কারন হবো আমি। তুমি অভিমানী হবে তার কারন হবো আমি আমার ভালোবাসার গল্পের মোহতে ভাঙাবো তোমার অভিমান। তোমার আলতো স্পর্শে হবে আমার সকাল বলেই গালে একটু টুপ করে চুমু খেলো।ডিনার সামনে নিয়ে বসে আছে নিরব তার বিপরীতেই মিফতা।নিরব খাইয়ে দিতে চাইলে মিফতা নিজের হাতেই নিরবকে খাইয়ে দেয় এবং নিজেও খেয়ে নেয়।নিরবের বুকে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছে মিফতা।
– মিফতা!তোমার এক্সাম তো এবার ইয়ার ফাইনাল হে না?
-হুম। সেটাই ভাবছি কি এক্সাম দিবো অনেক কিছুই পড়া হয়নি।
-দিতে হবেনা। রিলেক্স মুড নিয়ে শুধু প্রেম করো।( হুট করে উঠে নিরবের দিক তাকিয়ে)
-মানে কি? আপনি এখন আমাকে আর পড়তেও দিবেন না মিফতাকে আবারো আগের মতো বসিয়ে দিয়ে কাধের উপর মুখ রেখে
-আরে পাগলি আমি কখন বললাম যে পড়াবোনা অভিয়েসলি তুমি পড়বে। কিন্তু এই ইয়ার ড্রপ দিবে।
– ইম্পসিবল এইটা কিভাবে হবে পুরো একটা বছর ডিব্বা ( বলেই নিরবের দিক তাকিয়ে ) সরি ফাহিম আমার থেকে সিনিয়র হয়ে যাবে হাসছে নিরব
-তুমি ফাহিমা কে ডিব্বা কেনো বলো?
-ও দেখতে ডিব্বার মতোই গুলোমুলো দেখলেই আদর করতে ইচ্ছা করে
-আর আমাকে? বলে মিটমিট হাসতে লাগলো
-আপনাকেও লাগে ইচ্ছে করে গালগুলো টেনে বলেই একটা ঢোক গিলে নিরবের দিকে তাকালো
মিফতার এক্সপ্রেশন দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো নিরব।
– হাউ কিউট বেবি তুমি লজ্জা পেতে থাকবে আমি ভাঙাতে থাকবো।
-আমি ইয়ার মিস দিবোনা প্লিজ,,,,,
-ওহু। ফাহিম আর তুমি দুজনেই মিস দিবে আমার অনিকের সাথে গতকালকথা হয়েছে কিছুদিনের মধ্যেই ফাহিমা আর অনিকের ওয়েডিং টা হয়ে যাবে তাহলে দুজনেই মিস এটা নিয়ে মন খারাপ করার কিছু নেই একবছর মাত্র।
-আচ্ছা দেখি। ধীরে ধীরে ইফতি সুস্থ হয়ে উঠলো।পনেরো দিন পর
রাত দুইটা বেজে পঁয়তাল্লিশ।মোবাইলটা বারবার ভ্রাইভেট হচ্ছে। পাশে নিরা লিমা ওরা ঘুমুচ্ছে। ঘুম নেই মোহনার চোখে। বিকাল থেকে বারবার কানে একটা কথাই বাজছে ভালোবাসি মোহনা। কোমড় চেপে ধরার স্পর্শ।চোখ বন্ধ করলেই সেই মুহুর্তটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে। বিকেলবেলা কলেজ শেষ করেই নিনাদকে পড়ানোর উদ্দ্যেশে বেড়িয়ে পরলাম। রিক্সা তার আপন গতিতে চলছে। এই রোডটা অনেকটাই ফাকা।খুব ভয় লাগে এই রোডে একা কোথাও যেতে কিন্তু কি আর করা করতে তো হবেই। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে যে কতো দুরুদ পড়ে বের হই এক আল্লাহই ভালো জানে। রাস্তায় থাকা পুরোটা সময় একটা ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়। সেভাবেই আজকে যাচ্ছিলাম হঠাৎ করেই কোথা থেকে কেউ এসে চলন্ত রিকশায় উঠে পরলো। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম এই বুঝি সব শেষ আমার। চোখগুলো কেমন ঝাপসা হয়ে এলো তাকাতে পারছিলাম না পাশের মানুষটার দিকে ভয়ের মাত্রাটা আরো দ্বিগুন বেড়ে গেলো যখন লোকটা পেছন থেকে একহাতে কোমড়টা জড়িয়ে ধরেছে।
আমার অবস্থাটা হয়তো কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলো লোকটা ধীরে ধীরে কোমড়টা ছেড়ে হাটুর উপরে থাকা আমার হাতটা তার মুঠোয় নিয়ে নিলো ঝাপসা চোখে বাড়ন্ত হাতটার দিকে তাকাতে হাতের ঘড়িটার ওপর চোখ পরে। নুহাশ!!!! পাশে তাকাতেই দেখি মুখে একটা হাসি টেনে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। এবার যেনো কান্নাটা বেড়ে গেলো নুহাশের দিক তাকাতেই চোখের পানি গুলো ঝরঝর করে পরতে শুরু করলো।
-হেয় কাদঁছো কেনো?
-ভভভয়য় পেপপেয়েছিলাম তো।নুহাশ হাতটা কাধেঁ রেখে মোহনাকে কাছে টেনে নিয়ে
-এইটুকুতেই? আরো তো অনেক কিছুই বাকি।
-মামমাম,,নেএ
-এভাবে তোতলাচ্ছো কেনো? আম যাস্ট জোকিং ইয়ার। বলেই হেসে
নির্জন নিরিবিলি রাস্তা মাঝেমধ্যে দু একটা রিকশা টুংটাং বেল বাজিয়ে চলে যাচ্ছে। মোহনা কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলে আবারো সেই কোমড় চেপে ধরে নুহাশ। কেমন যেনো একটা ফিলিংস চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস আদানপ্রদান করে যাচ্ছে। হঠাৎ কানের কাছে ফিসফিসিয়ে উঠলো
ভালোবাসি মোহনা। হার্ট খুব দ্রুত বিট করছে তার।আন্সারটার জন্য রাত দুটোয় ছাদের উপর অপেক্ষায় থাকবো। হ্যা হলে এসো না হলে হারিয়ে যাবো চোখের সামনে থেকে বলেই হুট করে নেমে গেলো নুহাশ। কিছুক্ষন পর রিকশার পেছনে তাকিয়ে দেখি
নুহাশ কিছুটা দুরে দাঁড়িয়ে মুখে একটা হাসি ঝুলিয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। হাতের ইশারায় রাত দুটোয় ছাদে অপেক্ষা করবে বুঝিয়ে দিয়েই উল্টো হাটতে শুরু করলো। নিনাদকে আজ কি পড়িয়েছি তা নিজেও জানিনা সব মাথার উপর দিয়েই গেছে শুধু বারবার একটা কথাই প্রতিধ্বনিত হচ্ছে ভালোবাসি মোহনা।কিন্তু সেটা যে সম্ভব না। কোথায় নুহাশ কোথায় আমি। নুহাশ মানলেও আন্টি আমার মতো মেয়েকে কখনো মেনে নিবেনা।নুহাশ ছাদে অপেক্ষা করছে এই মুহুর্তে তার কি করা উচিত তাই ভেবে পাচ্ছেনা মোহনা। অবশেষে ছাদে যাবে বলেই সিদ্ধান্তটাই বেছে নিলো। নুহাশকে সব বুঝিয়ে বললে নিশ্চয়ই সেও বুঝবে ভেবেই বাহিরে পা বাড়ালো মোহনা। সিঁড়ির শেষ প্রান্তে এসে বুকটা কেমন ধুকপুক করছে। নুহাশ কেমন রিয়েক্ট করবে ভেবেই ভয় হচ্ছে। তারপরও সাহস জুগিয়ে ছাদে এলো। জোসনার আলোতে ছাদটা আলোকিতো হয়ে আছে।ছাদের বাউন্ডারি ঘেঁষে সুঠামদেহ বিশিষ্ট একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে সেটা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছে মোহনা। বুকের ভিতর একটা চাপা কষ্ট ফিল করতে পারছে মোহনা।
-আমি জানতাম মোহি তুমি আসবে বলেই মোহনার দিক ফিরে এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো। আমার নিজের ভালোবাসার প্রতি আমার বিশ্বাস ছিলো ঠিক তুমি আসবে। আই লাভ ইউ মোহি। আই লাভ ইউ সো মাচ মোহনা ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। কি জবাব দিবে সে ভেবেই কান্না পাচ্ছে। যে মানুষটাকে নিজেও মনপ্রান দিয়ে ভালোবাসে সেখানে তার ভালোবাসার জালে নিজেকে বন্দি করতে পারছিনা ভেবেই ঢুকরে কেঁদে উঠলো মিফতা
-হেয় হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং?
-আম সরি নুহাশ। আমার পক্ষে এই রিলেশন করা পসিবল না বলেই দৌড়েঁ চলে যেতে নিলে হাত চেপে ধরে কাছে টেনে নিয়ে
– কেনো পসিবল নয়?
-,,,,,,,,
-আন্সার মি মোহি
-,,,,,,,,,মোহনা কেঁদে চলছে দুহাতে মোহনার গালে আলতো স্পর্শ করে
-কেনো মোহি! আমি দেখতে খারাপ? আমার ব্যাকগ্রাউন্ড খারাপ? নাকি আমার স্টেটাস? বলো?নুহাশের চোখে চোখ রেখে
-পসিবল না প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্টেন্ড আমি চাইলেও আপনার সাথে রিলেশন করতে পারবোনা।
-হোয়াই? অন্য কোথাও রিলেশন আছে? মাথা নেড়ে না জানালো মোহনা। তাহলে?
-আমি লো লেভেল ফ্যামিলির। আমার না আছে কোনী স্টেটাস না আছে কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড না আছে বাবার ব্যাংক ব্যালেন্স এতো এতো বাড়ি
-এগুলো দিয়ে আমি কি করবো? মোহি? আমি কি এইসবকে ভালোবেসেছি?
-কাউকে ভালোবেসে না পাওয়ার যন্ত্রনা অনেক।আজকে আপনাকে ভালোবাসবো যেটার কখনো ফিউচার নেই যেখানে আমি শিয়র যে আমি আপনাকে পাবোনা এই দুদিনের ভালোবাসা পেয়ে পুরোটা জীবন না পাওয়ার কান্না করতে হবে আমাকে। আপনি অনেক ভালো কাউকে ডিজার্ভ করেন। আপনার লেভেলের থেকেও হাই লেভেলের কাউকে ডিজার্ভ করেন আপনি। আন্টি কখনো এটা মানবেনা প্লিজ আমাকে ভূল বুঝবেন না আপনার ভালোর জন্যই আমি বলছি এটা কখনো সম্ভব নয়
-ওহ গড!!!!! ইউ নো হোয়াট ইজ লাভ? মোহি লাভ মানে এইনা টাকা পয়সাকড়ি বাড়ি গাড়ি এইসব মানেই লাভ না আমার মন কাকে ফিল করছে সেটা লাভ কাকে ভেবে আমার মন শান্তি খুঁজে পাচ্ছে সেটা লাভ। কার কথা ভেবে আমার মুখে হাসি ফুটছে সেটাই লাভ আমার কাছে সেইটা তুমি। আমার হাসির কারন তুমি আমার সব সব সব কিছু তুমি। তুমি কি সেই ওল্ড জেনারেশন নিয়েই আছো। তুমি কিভাবে ভাবলে যে আমি তোমাকে ভালোবেসে ফ্যামিলির কথামতো কাউকে বিয়ে করবো? এটাইতো প্রবলেম তোমার? মোহনা মাথা নেড়ে হ্যা জানালে মোহনার হাত ধরে টেনে চলে যায়। সাফিয়া খন্দকারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে নুহাশ আর মোহনা। বারবার চেষ্টার ফলেও হাতটা ছাড়াতে পারছেনা মোহনা। হাতের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাফিয়া। ঘটনাটা পরিষ্কার তার কাছে বুঝতে কোনো সমস্যা হলোনা তার।
– মা! তোমার পুত্র বধু আমাকে ভালোবাসেনা। কারন তার বাবার এতো এতো টাকা নেই দামী গাড়ি নেই বাড়ি নেই তাই তাকে আমার বউ হিসেবে কখনোই মেনে নিবেনা আর সেজন্যই সে আমাকে ভালোবাসতে পারবেনা।কিছুক্ষন চুপ করে রইলো সাফিয়া।
– বিয়ে মানে দুটি মনের মিলন মোহনা। আর মনের মিলনটা তখনি হয় যখন সেই বিয়েটা ভালোবাসার একটা সম্পর্ক নিয়ে হয়। তাদের মধ্যে ভালোবাসা থাকে। যখন নুহাশের বাবা আমাকে বিয়ে করে শুধু মাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেজুয়েড একটা পরিচয় ছাড়া আর কিছু ছিলোনা তার। আর আমার বাবা!!! ধনাঢ্য জমিদার। লাক্সারি লাইফ লিড করেছি আমি। অভাব জিনিসটা কখনো বুঝতে দেয়নি বাবা মা। আর এই মনে ভালোবাসার জাল বুনে নেয় একটা অনাথ ছেলে যে কিনা চাচার বাসায় থেকে সকাল বিকাল অকথ্য কথায় স্বীকার হয়েই বেচে ছিলো। পরিবার থেকে বিয়ের চাপ ছিলো অনেক।কোনো চিন্তা করিনি তাকে বিশ্বাস করে হাত ধরে চলে এসেছি কারন আমার মনটা শুধু তাকেই চায়। চুপচাপ সাফিয়ার কথাগুলো শুনে চলছে মোহনা।
সাফিয়া উঠে এসে
-কিরে ভালোবাসবিতো আমার ছেলেটাকে? সাজাবি ছোট একটা সংসার। আমার সময় কাটানোর সঙী এনে দিবিতো? মোহনা জড়িয়ে ধরে সাফিয়াকে।
-পাগলি মেয়ে! সামনের সপ্তাহেই যাবো তোর মায়ের কাছে। গিয়ে আমার ঘরের লক্ষ্মী করে নিয়ে আসবো তোকে। যা তো এবার রাত দুপুরে আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিলি বলেই হাসতে হাসতে চলে গেলেন।মোহনা নুহাশের দিকে তাকাতেই জাপটে বুকে টেনে নিলো।
– ঘটা করে প্রপোজ আমার বাপ ও মাকে করেনাই তারই ছেলে আমি আমার পক্ষেও সম্ভব না কিন্তু ভালোবাসাটা বাবার থেকেও বেশিই আছে বলেই নিজের ঠোট দিয়ে মোহনার ঠোট দুটো চেপে ধরে। শুরু হয়ে গেলো আরো একটি নতুন ভালোবাসার গল্প।
আজকে ইফতি চলে যাবে সাথে ফাহিমা আর মিফতাও যাবে। ইফতিকে নামিয়ে দিয়েই ওরা চলে যাবে বাড়িতে। অনিকের বাবা মা আজকে বিকালে আসবে ওদের বিয়ের তারিখ ঠিক করতে তাই খুব ভোরেই রওনা হতে হচ্ছে।মিফতা চুল মুছতে মুছতে
-আপনি আমাদের সাথে গেলে ভালো হতোনা?
-কি করবো তুমি বলো? অনেক ইম্পরট্যান্ট তো কাজটা।মিফতাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে সুইটহার্ট দুপুরে একসাথে লাঞ্চ করবো প্রমিজ
-পাক্কা?
-হুম পাক্কা প্রমিজ। মিফতাকে সামনের দিকে ঘুরিয়ে এখন একটা মিষ্টি আদর দিয়ে দাওতো একটু পরেই বেরোতে হবে। মিফতা হেসে পা দুটো উঁচু করে উকি দিয়ে নিরবের কপালে চুমু খেয়ে
-আমি কিন্তু অপেক্ষায় থাকবো। মিফতাকে জড়িয়ে ধরে
-মাত্রতো কয়েকঘন্টা এমন করছো যেনো কতো মাসের জন্য যাচ্ছো কপালে চুমু খেয়ে মিটিংটা শেষ করেই আমি বেরিয়ে পরবো ওকে? চলো ওরা নিচে অপেক্ষা করছে।
-হুম।
-থ্যাংকস গড অবশেষে তোমাদের রোমেন্স শেষ হলো
-আরে তেমন কিছুইনা চলতো। ওদেরকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে রুমে চলে এলাম। আজকে একটা আর্জেন্ট মিটিং থাকার কারনে আমি ওদের সাথে যেতে পারলাম না।আটটায় মিটিং তাই একটু পরই অফিসের উদ্দ্যেশে বেরিয়ে পরতে হবে। না ঘুমিয়ে লেপটপে কিছু কাজ করেই সময়টা কাটিয়ে দিলাম। অফিসের টাইম হতেই বেড়িয়ে পরলাম অফিসের উদ্দ্যেশে।অনেক দিন পর বাসায় এসে খুব আনন্দ করছে সবাই। তার উপর ফাহিমার বিয়ে বলে কথা। সেখানেতো আনন্দের জুড়ি নেই।আড্ডাতে চলে গেলো অনেকটা সময়। দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে এলো কিন্তু সাহেবের আসার নাম নেই।
এদিকে বাবাও বারবার ডেকে চলছে খাবার খেতে যাওয়ার জন্য।ধীর গতিতে পা বাড়িয়ে চলছে মিফতা।হঠাৎ করেই কলিংবেল বেজে উঠলো। খুশির রেখা দেখা দিলো মিফতার মুখে সে যাওয়ার আগেই শেফালি দরজা খুলে দিলো। নিরবকে দেখে সবাই চমকে উঠলো। ততোক্ষনে সবাই খাবার টেবিলে বসে মিফতার জন্য অপেক্ষা করছে।
-আরে ভাইয়া হারি আপ জয়েন করো আমাদের সাথে।
-হুম আসছি বলেই ডায়নিং রুমের পাশেই অবস্থিতো ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে চলে আসে। মিফতা যে চেয়ারটাতে বসেছে ঠিক তার অপজিট চেয়ারটা টেনেই বসে পরলো নিরব। খাবার টেবিলে শুধু মাত্র অনিক আর অনিকের ফেমিলি নিয়েই কথা চলছিলো সবাই খাওয়া শেষ করে উঠতে গেলে হঠাৎ
-বিকালে আয়ান ও তার ফ্যামিলিও আসছে। পাশ থেকে ফাহিমা বলে উঠলো
-কিন্তু বাবা এই আয়ানটা আবার কে? অনিকের এমন কোনো রিলেটিভ আছে বলেতো মনেহয় না
-আয়ান হলো যার সাথে কিছুদিন পরেই মিফতার বিয়ে। ফাহিমার বিয়ের দিনেই আমি মিফতার বিয়েটা দিতে চাই।অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সবাই
-কিন্তু বাবা ভাইয়া
-আমি কারো সিদ্ধান্ত শুনতে চাইনা আমার যা ভালো মনে হয়েছে আমি তাই করেছি। একটা মেয়ের জীবন তো এমনি নষ্ট হয়ে যেতে পারেনা। ডিভোর্সের পেপার রেডি দুজনে সাইন করলেই হবে।
-বাবা!
-মিফতা তুমিই একদিন আমাকে বাবা হিসেবে মেনে নিয়েছিলে আজকে সেই বাবাই তোমার ভালোর জন্যই সিদ্ধান্তটাই নিচ্ছে তোমার মতামতের কোনো প্রয়োজন নেই। দুদিন খারাপ লাগবে কিছুদিন পর আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। তাছাড়া আয়ান খুব ভালো ছেলে।নিরব যেনো মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে বাবা এতো বড় একটা ডিসিশন নিতে একবারও আমার মতামত জানতে চাইলো না? রাগে ফুসছে নিরব ইচ্ছে করছে সব ভেঙে ফেলতে।নিরব নামের কেউ একজন যে তাদের মধ্যে আছে তা যেনো কেউ ভ্রুক্ষেপ করার প্রয়োজন মনে করলোনা
মিফিতা কাদঁতে কাদঁতে রুমে চলে গেলো
-কিন্তু
-কোনো কিন্তু নেই রিবু বলেই উঠে চলে যেতে লাগলেন। নিরব দর্শকের মতো বসে আছে ফাহিম এই মুহুর্তে তার কি করা উচিত তাই ভেবে চলছে ভাবনার জগতে যেতে চাইলেও সম্ভব হয়নি নিরবের জন্য। ডায়নিং টেবিলের সব ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে
-কি পেয়েছে টা কি? ইচ্ছে হলেই বিয়ে করিয়ে দিবে আবার ইচ্ছে হলে ডিভোর্স করিয়ে নিবে মামার বাড়ির আবদার পেয়েছে? কারো কোনো রাইট নেই আমার লাইফ নিয়ে খেলার। বলেই হনহনিয়ে মিফতার যে রুমে গেছে সেখানে গিয়ে মিফতাকে টেনে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে গেলো খুব জোড়ে ড্রাইভ করছে নিরব। কি পেয়েছে ওরা ওদের যা ইচ্ছে তাই হবে? নিরবের কাজে স্তম্ভিত হয়ে আছে সবাই।বিশেষ করে বাবা। মেনে না নিলে ডিভোর্সে কি প্রবলেম তাহলে কি সে মানতে চায়?
-কোথায় নিয়ে গেলো মিফতাকে?
-জাহান্নামে নিয়ে গেছে। তখনতো কিছু বলতে দাওনি এখন কেনো জিজ্ঞাসা করছো? বারবার বলতে চাইছিলাম কিন্তু থামিয়ে দিয়েছে বাবা। মেনে নিয়েছে ভাইয়া। ইভেন এই একমাস ভাবি ভাইয়ার সাথেই ছিলো আজকে সকালেও তার বাসা থেকেই এসেছে। ফাহিমার কথা শুনে অবাক হয়ে আছে দুজন। খুশিতে পাশ থেকে নিরবের মা বলে উঠলো
-মেনে নিয়েছে নিরব?
-হ্যা একমাস আগেই।
-জানায়নি কেনো আমাদের।
-কাজের চাপে ভূলে গেছে হয়তো।
-কিন্তু এখনতো পারতো
-সুযোগযে দিয়েছিলা তোমরা বলেই হনহনিয়ে নিজের রুমে পা বাড়ালো ফাহিম। রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে এমন একটা দিনেও অশান্তি যত্তসব।
-ফোন দাও ওদেরকে।বাসায় আসতে বলো। বাবার কথা শুনে দাঁড়িয়ে যায় ফাহিম। হাতে থাকা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে
-ভাইয়া এখন কখনো রিসিভ করবেনা ভাইয়ার যে রাগ
-এই রাগেই শেষ করছে ওরে। বলেই মোবাইলটা বের করে মিফতাকে কল দিলো। চুপচাপ নিরবের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে মিফতা। মোবাইলটা বাজতেই হাত থেকে কেড়ে নেয় নিরব।
-একদম রিসিভ করবেনা। বলেই কলটা কেটে দেয়। পেয়েছে কি ওরা? সব ওদের মতোই হবে? নিরবের মোবাইলে ফাহিমার মেসেজ দেখে লাফিয়ে উঠে মিফতা।
-আপনি বাবাকে কেনো ভূল বুঝছেন? ভূল তো আমাদের।
-কিসের ভূল? মেনে নিয়েছি এইটা ভূল?
-নাহ। বাবাকে তো জানানো হয়নি আমাদের তাই না? এভাবে চলে আসাটা আমাদের ঠিক হয়নি তারমধ্যেই আবারো নিরবের মোবাইলটা বেজে উঠে
– হ্যালো ফাহিম?
-ভাবি! নাও মায়ের সাথে কথা বলো
চুপ হয়ে আছে মিফতা।
স্পিকারটা বাড়িয়ে দিয়ে
কিরে ননদের বিয়ের তারিখ কি ভাই ভাবিকে ছাড়াই পাকা করবো? পাশ থেকে নিরব বলে উঠলো
-ভাইয়ের সংসার ভেঙে দিচ্ছে তো মা!
নিরবের কথা শুনে হেসে উঠলো মা
-জানিয়ে ছিলি আমাদেরকে?
-মনে ছিলো নাতো
-হালকা হেসে চলে আয় তাড়াতাড়ি
-ওকে আসছি।
তিনঘণ্টা পর ড্রইংরুমে বসে আছে অনিক, অনিকের বাবা, মা, ফাহিমা, নিরবের বাবা মা তাদের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে নিরব আর মিফতা।
ধীরে ধীরে হেটে বাবার কাছে থেমে গেলো নিরব।সবাই আকর্ষনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিরবের দিকে। হাটু গেড়ে বসে পরে বাবার পায়ের কাছে। বাবার দিকে তাকিয়ে
-আম সরি বাবা! তোমাকে ভূল বুঝার জন্য এতোটা বছর তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য। শুধু সন্দেহ নিয়েই ঘৃনা করেছি তোমাকে প্লিজ ক্ষমা করে দাও আমাকে বলেই পা দুটো চেপে ধরলো নিরব। ঘটনার আকষ্মীকতায় অবাক হয়ে আছে সবাই
-আরে বেটা! ভূলতো মানুষেরই হয়। বলেই উঠে বুকে জড়িয়ে নেয়।নিরবও হেসে জড়িয়ে ধরে আম সরি বাবা।
একমাস পর।
বধুবেশে বসে আছে তিন তিনটি মেয়ে
অপেক্ষা করছে তাদের ভালোবাসার মানুষটার জন্য।বহু প্রতিক্ষার পর রুমে দর্শন পেলো সেই মহান ব্যাক্তি নিরব।
দরজাটা বন্ধ করে মিফতার দিকে এগিয়ে এসে
– বেবি যে রাতটা দুই বছর ছয় মাস আগেই এসেছিলো কিন্তু তারপর থেকে প্রিপারেশন বুঝতে পারছো তো বলে মিটমিট হাসতে লাগলো নিরব
বুড়ো বয়সে ভীমরতি জেগেছে ওনার বলেই উঠে হেসে উঠে যেতে চাইলে হাতটা ধরে আটকে দেয় নিরব
– শুনেছি ফুলশয্যা রাতে মেয়েদের ছয়কেজি ওজনের হার্ট ছয়শ গ্রাম হয়ে যায় তোমার তো দেখছি পুরো নয় কেজি সুইটহার্ট বলেই হাসতে লাগলো। মিফতা লজ্জাপেয়ে পাশ ফিরে গেলো। নিরব কাছে টেনে মিফতার ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে আই ডোন্ট নো হোয়াট ইজ লাভ।লাভ লাইক আ ম্যাজিক। যাকে দেখলে মনের হাজারো ক্লান্তি হারিয়ে যায়। চোখ বন্ধ করলেই যার হাসিটা ভেসে উঠে যাকে হারানোর ভয় তাড়া কিরে বেড়ায় প্রতিটা মুহুর্ত হার্ট বেড়ে চলছে মিফতার। নিরবের নিঃশ্বাস গুলো অনুভব করছে মিফতা।খামচে ধরে আছে চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে তাকে।তোমার ঠোঁটের ছোঁয়াতে হারিয়ে যায় শতসহস্র ব্যাথা। বলেই মিফতার ঠোঁটে চুমু খেয়ে কোলে উঠিয়ে নিয়ে খাটে শুইয়ে দিয়ে দিলো। হারিয়ে গেলো নতুন ভালোবাসার সন্ধানে।
পুরো ছয়টা বছর ডার্লিং। ছয় ছয়টা বছর অপেক্ষা করেছি এই রাতটার জন্য ওফ কিযে শান্তি লাগছে বলেই হাসতে হাসতে ফাহিমার কোলেই মাথা রেখে শুয়ে পরলো।নজরে বন্দি করে নিয়েছে ভালোবাসার মানুষটাকে। উল্টোভাবেই ফাহিমার ঠোটঁ দুটোকে আকড়ে নিলো অনিক।
একমাস!মাত্র একমাসের প্রেম তাতেই বিয়ে ওহ গড কতোটা লাকি হলে এইটা সম্ভব? আমার ভালোবাসার মানুষটাই যেখানে আমার লাকি চার্ম আর সেখানে হবে নাইবা কেনো?
আধারে আলোতে ভালোবেসেছি তোমাকে বেবি। আমার একহালি বাচ্চাকাচ্চার মা হওয়ার জন্য হলেও তোমাকে চাই গো
নুহাশের কথা শুনে হেসে দিলো মোহনা।হাত দুটো নুহাশের গলা পেঁচিয়ে ধরে তাকিয়ে আছে তার দৃষ্টিতে। গভীর অপেক্ষা তার। ভালোবেসে ঠোটঁ দুটো আকড়ে নিলো মোহনা
তিন তিনটা ভালোবাসার অধ্যায় শুরু।
থাকনা ওরা ওদের মতো আমরা সেখানে কি করবো হুম।
সমাপ্তি।
ধন্যবাদ সবাইকে পাশে থাকার জন্য।
( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।) Facebook Id link ??? https://www.facebook.com/nishe.ratri.9809
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept All”, you consent to the use of ALL the cookies. However, you may visit "Cookie Settings" to provide a controlled consent.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checkbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checkbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.