ভেজা চুলে পর্ব-১৩+১৪

0
970

#ভেজা_চুলে
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
#পর্ব-১৩

“দাদীজানের অবস্থা খুব একটা ভালো না। যদি সে মরে যায় তবে আনবে আমায় তোমার ঘরের রমনী করে?”
মাধুর্যের কন্ঠে কিছু একটা ছিল। যা ভেতরে ভেতরে চুরমার করে দিলো সাকিবকে। না চাইতেও চোয়াল শক্ত হয়ে এলো।
কাঠের জানালা বাতাসের কারণে ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করে খুলছে আবার বন্ধ হচ্ছে৷

মাধুর্যের দিকে মুচকি হাসির মিশাইল ছুড়ে সাকিব বলল,

“আমার পরীক্ষা নিচ্ছিস তামসী?”

“নাহ্।”

“তুই মুক্তো।আমার জন্য তোকে কখনো বন্দী হতে হবে না।প্রণয়ের আকাশে তুই সব সময় মুক্তো থাকবি।”

“বন্দী কেন করবে না?”

“সমরেশ মজুমদার কী বলেছিলেন জানিস?

‘ভালোবাসা হলো বেনারসি শাড়ির মত, ন্যাপথালিন দিয়ে যত্ন করে আলমারিতে তুলে রাখতে হয়, তাকে আটপৌরে ব্যবহার করলে ই সব শেষ।’

আমার কাছে এই বেনারসির থেকেও অধিক প্রিয় তোর হাসি। আমার কাছে থাকলে তুই হাসবি না তামসী! তোর হাসি হারিয়ে যাবে। আমি যে চাই না।”

সাকিবের কথায় মাধুর্যের ঠোঁটের হাসি ধীরগতির বৃদ্ধি পায়। প্রাণখোলা হাসি হেসে মাধুর্য বলল,

“বাঁচালে দাদা ভাই।তুমি আমায় বাঁচালে।”

“হলুদ টা আমাদের ছিল।কিন্তু কোথাও তুমি ছিলে না অর্ণি। ”

ওয়াহেদের প্রশ্নে দীর্ঘশ্বাস ফেলে অর্ণি জবাব দিলো,

“উঠিয়ে নেওয়ার আগে কীভাবে যাই শ্বশুর ঘরে?লোকে নিন্দে মন্দ করবে না বুঝি?”

“ছেলে মেয়ে কী সমান নয়? স্বামী-স্ত্রী সমান।”

“নাহ্! নারী পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। ঠিক শ্রী ফলের মতো।
পুরুষ হচ্ছে বাহিরের শক্ত আবরণ এবং নারী ভিতরের নরম অংশ।”

“শ্রীফল খুব পছন্দ?”

“নারকেল কার না ভালো লাগে?তবে ডাবটা বেশি মজা।”

“হুম।আর মাত্র একদিন।এরপর নিয়ে আসবো আমার ঘরে। তখন দেখবো কথায় কথায় এত যুক্তি কই থেকে আসে।”

“দয়াকরে কোনো বিষয়ে ক্লাস নিয়েন না। না হলে ঘুমের ভান ধরে পড়ে থাকতে হয়। ”

“কী বললে?”

“কই না তো! কিছুই না।”

সারা রাতের বৃষ্টির কারণে শেষ রাতের দিকে বেশ জমিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। মাধুর্য, পত্রী,খুশবু এক সাথে সব আয়োজন করতে করতে ঘুমিয়েছে।

সবে মাত্র আজান হলো,এবং মাধুর্য চোখ বুজেছে। ঠিক সেসময় ফোন বেজে উঠেছে।
চোখ বন্ধ করেই মাধুর্য বলল,

“হুম বলছি।”
“ইশ কী ঝাল রে বাবা। এত ঝাল কেন আপনি?”

ঝাল শব্দেই মাধুর্য বুঝতে পারলো ইনহান কল দিয়েছে।
চোখ বন্ধ করেই উঠে বসে বলল,

“বেয়াই সাহেব,সবে মাত্র ঘুমিয়েছি।”

“ঘুম নষ্ট করার জন্য কোনো দুঃখ অনুভব করছি না।”

“আচ্ছা বলুন।”

“আসলে আমরা ভাই-ভাবীর জন্য কিছু প্ল্যান করতে চাচ্ছি।ইউনিক।”

“তো করে ফেলুন।”

“এজন্য আপনার সাহায্য প্রয়োজন।”

মাধুর্যের ঘুম ছুটে গেল ইনহানের প্ল্যান শুনে। মনে মনে ফাকা ঢোক গিলে কল দিলো তার মাম্মাইয়ের ফোনে।মাম্মাই অনুমতি দিলে আর কোনো ঝামেলা রইল না।

বরপক্ষ আইসক্রীম দিয়েছিল।তাই কনে পক্ষ দিচ্ছে একটা করে ফুলের মালা।বাড়ির উঠতি পোলাপানেরাই এসব করছে। সারা সকাল ফুলের গন্ধে মো মো করেছে বাড়ি।অর্ণির হলুদের গয়না ফুল দিয়ে বানিয়েছে তার মা নিজ হাতে।

খাবারের দায়িত্ব পড়েছে অর্ণির মামাদের উপর। এদিকে সাজানোর দায়িত্বে জেরিন সমেত সব মেয়েরা। আগামীকাল বিয়ের অনুষ্ঠান তাই হাজারো কাজের দায়িত্ব সাকিবের।
মেয়ে মহল একাধারে কাজের সাথে করছে রুপচর্চা। তবে অর্ণির বেশ কান্না পাচ্ছে। সে কী করে এই বাড়ি থেকে আলাদা থাকবে ভেবে পাচ্ছে না।
মাধুর্যের সাথেও ইদানীং তার বোঝাপড়াটা সেরে নেওয়া হয়নি।
সেদিন আসন্ন ঝামেলা থেকে তাকে সরানোই হয়তো আসল উদ্দেশ্য ছিল।অর্ণি নিজের ঘরে শুয়ে আছে। মাথার উপরে চলছে ভনভনিয়ে সিলিং ফ্যান।ফ্যানের ঠিক মাঝখানটা সিলভার রঙা। সেখানে দেখা যাচ্ছে অর্ণির পরণের হলুদ রঙা শাড়িটা।

খালামণিকে খুব একটা মনে নেই। তার সাথে তোলা কয়েকটা ছবি আছে। সেখানে মাধুর্যের মা তাকে আগলে রেখেছে যেন সে তার সন্তান।অথচ তার মা কখনো পারেনি সামান্য আদরের হাত রাখতে মাধুর্যের মাথায়।

অর্ণি চেষ্টা করেছে তাকে কিছুটা এবাড়ি থেকে আদর দেওয়ার কিন্তু মাধুর্যের সব কষ্ট এ বাড়ি থেকেই শুরু হয়। সবাই তাকে সম্মান দিলেও এ বাড়ি থেকে পেয়েছে শুধু ভৎসনা।

আজ কনেপক্ষের মেয়েরা সবাই পরেছে হালকা সাদা শাড়ি, ছেলেরা যেন একেক জন আস্ত একেকটা আকাশ।

ছেলে পক্ষের মেয়েদের পরণে বেগুনী শাড়ি এবং ছেলেরা সবাই সাদা পাঞ্জাবী।

সারপ্রাইজ হিসেবে অর্ণির জন্য সবার সাথে এসেছে ওয়াহেদ।গতকাল রাতের ফোনালাপ কিছুটা তার কানে যেতেই এই প্রস্তাব।
কারণ বিয়েটা ওদের। ওদের যদি কিছু হেপি মোমেন্ট না থাকে তাহলে বিষয়টি বড্ড বেমানান।

কনেপক্ষ বর পক্ষকে ছোট্ট একটা মালা দিচ্ছে। সবাইকে।ছেলেদের হাতে পরিয়ে দিচ্ছে এবং মেয়েদের গলায়। কেউ কেউ তো চুলেও লাগাচ্ছে।

সবার নাস্তার ব্যপারটা দেখে মাধুর্য এগিয়ে যাচ্ছিলো অর্ণির ঘরে। সাজানোর দায়িত্বে মাম্মাই এবং জেরিন। তবুও দেখতে যাচ্ছিল ঠিক তখন মুনা ডাকে।
তার খোপায় ফুল পরিয়ে দিতে। মাধুর্য তাকে এবং তার সাথের দুই জন কে ফুল পরিয়ে দিয়ে মালা হাতে নিয়েছে কেবল তখন ইনহান দাড়িয়ে বলল,

“ইশশিরে! আগে বললেই হতো। সাথে কাজী নিয়েই আসতাম।”

বিয়ে বাড়িতে বেয়াই-বেয়াইনদের মাঝে এমন অনেক হাসিতামাশা হয়। সে জোড়েই মাধুর্য বলল,

“তোমার তোমার গরুর গাড়িতে আমি যাবো না। কারো ঘরের ঘরনি আমি হবো না।”

“যাবো তোমায় শ্বশুর বাড়ি নিয়ে।”

“সে দেখা যাবে। এবার আসুন।”

বরপক্ষ সব ট্রেন্ডিং গানে পারফর্মেন্স করলেও এবাড়ির পারফর্মেন্স ছিল বেশ ভালো।
সর্বশেষ আকর্ষণ ছিল মাধুর্য-ইনহানের নাচ।তারা দুজন যেন ঠিক অর্ণি-ওয়াহেদ।
তাদের পোশাকের মতোন পোশাক এবং তাদের আচরণ একদম মিলে যাচ্ছে।

সবাই বেশ খুশী এবং হৈ-হুল্লোড় করছিল।তারেকা বানু যে এতটা অসুস্থ! সে স্যালাইন পাশে ঝুলিয়ে বসে বসে ওদের নাচ দেখছিল এবং বেশ খুশি ছিল।

বিয়ে বাড়ির এত লোকের মাঝে তখন বন্দুকধারী সাত জন লোক প্রবেশ করে।বলা বাহুল্য তারা প্রশাসনের লোক।
এসে তারা ওয়াহেদকে গ্রেফতার করে। সাকিব কথা বললেও সমাধা হয়নি কারণ সে জানে সব কিছুর একটা নিয়ম আছে।

এদিকে মেয়ে মহলে কান্নাকাটি শুরু।ওয়াহেদকে নিয়ে যাওয়ার পরপরই তার তিন ভাই বাইক নিয়ে বেরিয়েছে।
সাকিব সাথেই গিয়েছে। মাধুর্য শক্ত হাতে অর্ণির হাত ধরে আছে। সে যেন অর্ণির থেকে ভরসা পেতে চাচ্ছে, এটা একটা দুঃস্বপ্ন। চোখ খুললেই সব ঠিক দেখবে।
কিন্তু আদৌও কী তাই হয়?বিপদের সময়গুলো কী এভাবে কেটে যায়?

চলবে(এডিট করতে কেটে যায় বার বার। তাই ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

#ভেজা_চুলে
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
#পর্ব-১৪

ওয়াহেদকে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে মেয়ে জনিত কোনো কেসে।
বেশ ভালো প্রমাণ সমেত একজন মেয়ে তার প্রতি শারীরিক, মানসিক নির্যাতনের কেস করেছে।
থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওয়াহেদ কে।একটা বেঞ্চে বসে আছে সে। মুখটা শুকিয়ে একটু হয়ে আছে। কী হতে কী হয়ে গেলো?
কোনো কিছুই বুঝতে পারছে না।
আরহান এসে দায়িত্বরত পুলিশের সাথে কথা বলছে।
ভদ্রলোক পঞ্চাশের ঘরে হবে।
বেশ সাবলীল ভাষায় সবটা বললেন।
রুচি নামের এক মেয়ে কেস করেছে। সে এখন এখানেই আছে।
দিনের পর দিন তাকে ব্যবহার করেছে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে। এমনটা ওই মেয়ের দাবী।

মাঝেমধ্যে আমদের জীবনে এমন কিছু সময় আসে তখন আমরা এতটাই শোকে থাকি যে ভুলে যাই কী চাই।
মন-মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধন করে দেয়। একটু শান্তির জন্য মরিয়া হয়ে উঠে মন।

অর্ণির এখন কেমন আচরণ করা উচিৎ সে নিজেই বুঝতে পারছে না।অতিরিক্ত চাপের কারণে তার মাথা প্রচন্ড ধরেছে। হাতের মেহেদী টান টান হয়েছে। ঝড়ে পড়ছে ধীরে ধীরে।
বেশ রঙ ধরেছে মেহেদির। বাড়িটা যেন মৃত বাড়িতে পরিণত হয়েছে। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই খবর।
তারেকা বানু লাঠি ভর করে এসে বসে আছে অর্ণির পাশে। তাকে জোর করে টেনে তুলে তার কোলে মাথা রেখে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
জেরিন সাকিবের ফোনে কল দিচ্ছে। কিন্তু কোনো খোঁজ পাচ্ছে না।

এত শান্ত পরিবেশ, ঘরে পিনপতন নীরবতা। তারেকা বানু, জেরিনকে দেখে মাধুর্য বাহিরে এসে বসেছে। তারেকা বানু মাধুর্যকে সহ্য করতে পারে না। তাই সে দূরেই আছে। তবুও কী শেষ রক্ষে হয়?

“নক নক করে। ভাতে কুড়কুড়ায় না যৌবনে?কীসের এত ঢলাঢলি ওই বাড়ির পোলাগো লগে?
পারলে কোলে উইঠা নাছে। এহ আইছে আমার ডকের মেয়া মানুষ।
ওরে শুভ কাজে কিসের জন্য রাখো?হইয়াই মায়েরে খাইছে। ও কারো সুখ কেমনে দেখবে?
আমার নাতনীর কপাল পুইড়া দিলো।

মনে আছে?মনে আছে তোমাগো?আমার লালুর ছোট্ট বহন বাছুরের কথা?
লাল টুকটকা বাছুর আছিল আমার।
সবাই ধরে এই মাইয়্যা দূরে দাড়ায় চাইয়া থাকে খালি।আমার দেইখা খারাপ লাগছিল। তাই কইছিলাম তুইও যাইস। যেই দিন ওই মাইয়্যা আমার বাছুরের কাছে গেলো,ওই দিন আমার বাছুরডা মরলো।
৫৬ বছর ধইরা সংসার করছি। কোনো কালে কোনো গরু আমার সাপে কামরায় নাই। ওই দিন আমার বাছুরডা মইরা গেলো সাপের কামরে।

কও ওই মাইয়্যা কেমনে ভালো হয়?”

তারেকা বানু কাঁদছিল আর বিলাপ করছে। মাধুর্য ঘেমে নেয়ে অস্থির।
প্রচন্ড গরমে মাথার ভিতর সব লণ্ডভণ্ড লাগছে।
চুপচাপ উঠে এসে সে গা ডুবালো দিঘির জলে।

সমাজের এই বড্ড বাজে একটা নিয়ম।একটা নয় দুটো।
খুব সহজেই মেয়েদের কলঙ্কের দাগ দিয়ে দেয় আবার যখন সময় আসে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে তাদের কথা বিশ্বাস করে নেয়।
যখন সমাজ চিন্তা করে মেয়েটাকে কলঙ্ক দিবে তখন তার কথা শোনার প্রয়োজন অবধি মনে করে না।অথচ যখন একটা মেয়ে সমাজের সম্মানিত কারো নামে অপবাদ রটায় তখন তাকে বাহবা দেয়।
অথচ দুই বেলায় যে তাদের উচিৎ সত্যিটা যাচাই করে নেওয়া তা কিন্তু করে না।
যে ছেলে অথবা মেয়েটা অপবাদ পাচ্ছে হতেও পারে তাকে নিছক ভাবে এখানে ফাসানো হয়েছে।
সত্যিটা জেনেই না মন্তব্য করা,সিদ্ধান্ত নেওয়া,অপবাদ দেওয়া এখন একটা প্রথা হয়ে দাড়িয়েছে।

ওয়াহেদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অন্য কেউ নয় তার প্রাক্তন সহকর্মী রুচি এনেছে। এটা সত্য তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দুজনের সম্মতিতে আবার বিচ্ছেদ হয়েছে প্রায় বছর দুই আগে৷
এতদিন পর এসে এমন ব্যবহার করার কী মানে ভেবে পাচ্ছে না ওয়াহেদ।

রাগে জেদে তার গা রিরি করছে। আপাতত সে অর্ণির কথা মাথা থেকে সরিয়ে রাখতে চাইছে। সে ভাবছে রুচির কথা।তাদের সম্পর্ক যথেষ্ট ম্যাচিউর ছিল। বেশ সিরিয়াস ছিল তারা একে অপরের প্রতি।সম্পর্ক থাকলে টুকটাক ছবি থাকবেই।তবে তাদের মাঝে কোনো অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বা ছবি ছিল না।ব্রেকাপ রুচির ইচ্ছে তে হয়েছিল কারণ ওর উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল বেশ। সে চাইতো পাখির মতোন উড়তে। তার পাখির মতোন উড়তে পারার সীমারেখা ছিল ওয়াহেদ।
তাই সে মুক্তি চেয়েছিল। ওয়াহেদ দিয়েছে মুক্তি।আগলে রাখতে চায়নি এমন নয়, তবে যে যেতে চায় তাকে আগলে রাখা যায় না।

তিন ঘন্টা পর জামিনে মুক্তি পেলো ওয়াহেদ। রুচির সাথে কথা বলা প্রয়োজন। একটু বেশিই প্রয়োজন। দায়িত্বরত অফিসারের কাছ থেকে নিজের ফোন নিয়ে ওয়াহেদ বেশ হতাশ হলো।
সে আশা করেছিল অর্ণির কলের কিন্তু নেই। সামান্য একটা মিসড কল নেই।

তবুও এই চিন্তাকে মাথায় আসতে দিলো না। এখন প্রয়োজন বাড়ি যাওয়া।
বাড়ি ফিরে লম্বা শাওয়ার নিয়ে কিছুটা সময় চোখ বন্ধ করে রইল।
শয়নের অপেক্ষা করছে ওয়াহেদ।শয়ন আই সি টি বিষয়ে বেশ পারদর্শী। প্রথমে এটা ক্লিয়ার হওয়া প্রয়োজন ছবিগুলো নকল।

অপেক্ষা বড্ড বিতৃষ্ণা প্রকাশ করছে আজ।তাই রুচিকে কল দিলো ওয়াহেদ।
অপর পাশে যেন এই কলের অপেক্ষা ছিল।

“রুচি এমন কেনো করলে?”

“তুমি কোন সাহসে বিয়ে করছো?”

“আমাদের ব্রেকাপ হয়েছিল।সম্মতিতে।”

“ব্রেকাপে ভালোবাসা মরে যায় না।”

“তাই আমাদের নকল ছবি?”

“তোমাকে পাওয়ার জন্য সাত সমুদ্রে মন্থন ঘটাতে পারি। এ আর কি?”

“স্বিকার করছো তবে সব ছবি ফেক?”

“হ্যাঁ।কারণ তুমি অনেকটাই বোকাসোকা যে। ”

কথাটা বলে দপ করে নিভে গেল রুচি।
যেন হঠাৎ করেই কেউ তার গলা চেপে ধরেছে তবে ততক্ষণে দেরি হয়েছে অনেকটা। তাই প্রায় চিৎকার করে বলল,

“তুমি সব রেকর্ড করেছো?তাই না? হ্যাঁ সব ছবি সত্যি। আসল।ভুলে গেলে সব?”

ওয়াহেদ কোনো জবাব দেয় না।শুধু ধন্যবাদ বলে কল কেটে দেয়।

অর্ণির বাড়ির লোক সব’টা শুনে প্রায় হতভম্ব হয়ে রইল।তারা যেন সবটা বিশ্বাস করতে চাইছে।
তারেকাবানু ছবি দেখে বলল,

“যা হওয়ার হইছে। ওই বাড়িত আর মাইয়্যা দিমু না।আগে সব জানছি বিপদ থেকে বাচলাম।পোলার চরিত্র ভালো না।বিয়ে বন্ধ করো।এই বিয়া দিয়া মাইয়্যারে ভাসাই দিও না।”

মায়ের সাথে সহমত হলো অর্ণির বাবা। সে মাথা দুলিয়ে বলল

“মা ঠিক কইছে। এই বিয়ে আর হওয়ার না। কাজী ডাইকা তালাক করাই দিলেই সব ঠিক।আমার মাইয়্যার সুখের থেকে কলঙ্কের ডর বড় না।ওদের জানায় দেও। কালকের কাল তালাক হবে।”

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে