#ভুল ১২তম পর্ব
#jannat_Nur
পরের দিন সকালে অবন্তী আসলো তার ছোট মামার ফ্ল্যাটে, শাপলার মা কিচেন এ রুটি বানাচ্ছিল। বৃষ্টি এখনো ঘুমাচ্ছে এবং তার মামী ওয়াশরুমে গোসল করছে, এই ফাঁকে অবন্তী শাপলার মার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
আন্টি রুটি বানাচ্ছেন নাকি, রুটির সাথে আর কি করবেন?
রুটি আর সবজি করবো, সকালে তো তারা এগুলোই খায়। আবার আবার রুটি খাইতে ভালো লাগে না! রাতের ভাত আছে আমি খেয়ে নেব।
আপনি কতদিন ধরে এদের এখানে কাজ করছেন? আগে তো আমাদের গ্রামের বাড়িতেও কাজ করতেন তাই না, অনেক বছর হবে মনে হয়।
হ্যাঁ অনেক বছরই তো হবে তখন আমার শাপলা ছোট ছিল, তখন থেকে কাজ করছি। এখন শাপলাকে বিয়ে দিয়ে বাচ্চা হয়ে গেছে।
আচ্ছা সিরাত ভাইয়া যখন ছোট ছিল তখন থেকে আপনি মনে হয় আমাদের বাসায় ছিলেন।
আরে না সেটা তো আরো অনেক আগের কথা! তোমার জন্মের পর থেকে আমি তোমাদের বাড়িতে আছি, আগে অন্যজন ছিল।
আগে কে ছিল, তাকে কি চিনেন।
ওই যে তোমাদের গ্রামের বাড়িতে মল্লিকার নানী আছে না, ওই মল্লিকার নানী কাজ করতো।
ঠিক আছে আপনি কাজ করেন, আমি বৃষ্টির সাথে দেখা করি, দেখি সে উঠছে কিনা।
অবন্তী বৃষ্টির রুমে গিয়ে তাকে ডাক দিল, বৃষ্টি মেয়েটা সবসময় ঘুমের কাতর, তাই মনে হয় এত মোটা।
কিরে তুই এখনো ঘুমাচ্ছিস, এত ঘুম তোর?
আমি উঠেছি সেই কখন।
অবন্তী সত্যি করে বল তোর কি সিরাত ভাইয়াকে ভালো লাগে, আই মিন পছন্দ করিস।
কেন তুই তাকে পছন্দ করিস নাকি? পছন্দ করলে বল তোদের প্রেম করিয়ে দেই।
অবন্তীর কথা শুনে খুব আফসোসের সুরে বৃষ্টি বলল, এমন একটা স্মার্ট ছেলে আমার মত হাতীকে কি পছন্দ করবে! পছন্দ করলে তোকে করবে।
আরে কি যে বলিস না, আমাকে পছন্দ করবে কেন! করলে তোকে করবে, তোকে তো আমারও পছন্দ হয়।
দুই কাজিন মিলে হাসাহাসি করছিল, অবন্তীর ছোট মামি এসে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে তোমরা এই সকাল বেলা এত হাসছো কেন? দুজনে চুপ হয়ে গেল। অবন্তীর মামি বললেন, মেয়েদের এত হাসাহাসি করা ঠিক না, হাসবে তবে লিমিট থাকবে। বড় ভাই বাসায় আছেন! তার ছেলে এতদিন পরে এসেছে যদি দেখে আমাদের বাড়ির মেয়েরা এরকম ভাবে চিৎকার চেঁচামেচি করে কি মনে করবে, মনে করবে মেয়েদের আমরা নৈতিক শিক্ষা দিতে পারেনি।
অবন্তী মনে মনে বলল, আপনি যে আপনার মেয়েকে সিরাত ভাইয়ের কাছে বিয়ে দিতে চান সেটা ভালো করে জানি! তাই আপনার মেয়েকে ধোয়া তুলসী পাতা সাজিয়ে তাদের কাছে উপস্থাপন করতে চাচ্ছেন। আপনার মেয়ে এই বয়সে তিন চারটা প্রেম করে ছেলেদের ধোঁকা দিয়ে দিয়েছে! আবার নতুন রিলেশনে আছে, আপনি আসছেন আমাদের হাসি নিয়ে কথা শোনাতে।
শোন বৃষ্টি এখন আমি যাই, পরে দেখা হবে! অবন্তী চলে যাচ্ছিল, তার মামি বললেন সকালের নাস্তা করে যাও।
না মামি এখন আর নাস্তা করব না, আমি আসি বলে অবন্তী চলে গেল। তার কথা বলতে হবে সিরাতের সাথে। সকাল সাড়ে আটটা সিরাত এখনো ঘুমাচ্ছে! দরজায় কড়া নাড়ছে অবন্তী। এই সকালে আবার কে ডাকছে সিরাত অসহ্যকর চোখে তাকানো দরজার দিকে। শুনতে পেলে অবন্তীর কন্ঠ, দরজাটা একটু খুলেন আপনার সাথে কথা আছে। অবন্তীর কণ্ঠ শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠে দরজা খুলে দিল সিরাত।অবন্তী দরজাটা ভিড়িয়ে এসে বসলো সোফায়। সিরাত বলল তুমি বসো আমি একটু ওয়াশরুম থেকে আসি! আসলে আমি এত সকালে ঘুম থেকে উঠি না তাই চোখ মুখে পানি দিয়ে আসতে হবে। আগে যখন ভার্সিটিতে যেতাম তবু ক্লাস মিস হয়ে যেত এই ঘুমের কারণে।
ঠিক আছে আপনি ফ্রেশ হয়ে আসেন আমি ওয়েট করছি।
সিরাত ফ্রেশ হয়ে এসে অবন্তীর কাছে বসলো।
ছোট মামাদের ফ্ল্যাটে যেয়ে শাপলার মায়ের সাথে কথা বলে আসলাম! সে জানালো আমার জন্মের পর থেকে সে আমাদের বাসায় কাজ করছে কিন্তু তার আগে কাজ করতো মল্লিকার নানী নামে এক মহিলা! সেই মহিলা আমাদের গ্রামের বাড়ি পাশেই থাকে। এখন তাহলে তার কাছে যেতে হবে, সে বলতে পারবে তখন কি হয়েছিল।
আমি তো চিনি না কিভাবে যাব?
আপনি কি আমাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চান?
তুমি যদি আমার সঙ্গে যাও তাহলে তো ভালোই হয়।
কয়টার দিকে যাবেন, আমি কলেজের কথা বললে বাসা থেকে বের হব, বের হয়ে ওই রাস্তার সামনে যে দোকানটা আছে সেখানে দাঁড়াবো! আপনি চলে আসবেন সেখানে।
ওকে, তাহলে দশটার দিকে যাওয়া যাক, তুমি যাও ব্রেকফাস্ট করে রেডি হও! ফুপিকে বলো আমাকে ব্রেকফাস্ট দিয়ে যেতে।
অবন্তী তার আম্মুকেকে বলল সিরাত ভাইয়াকে ব্রেকফাস্ট দিয়ে আসো।
সে কি এখন উঠে পড়েছে, ৯ টার আগে তো উঠে না।
আমি তার সাথে কথা বললাম এতক্ষণ, আমাকে বলছে ব্রেকফাস্ট দিতে।
কি নিয়ে কথা বললি? এত সকাল বেলা।
এই তো এমনি ইচ্ছা করছিল গল্প করতে তাই তার কাছে গিয়েছিলাম।
ভালো করেছিস তাকে সময় দিবি তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবি, তাহলে দেখবি তোকে সে পছন্দ করবে।
মায়ের এমন কথা শুনে অবন্তী তার মায়ের দিকে তাকালো, কি বললে মা তুমি চাও সে আমাকে পছন্দ করুক? কেন এমনটা চাও।
শুধু আমি না তোর বাবা চায় সিরাত তোকে পছন্দ করুক।
কেন তোমরা এমনটা চাচ্ছো জানতে পারি।
আমরা চাই সিরাতের সাথে তোকে বিয়ে দিতে।
মায়ের কথা শুনে অবন্তী মনে মনে খুশি হলেও মুখে বিরক্ত প্রকাশ করে বলল, তোমরা চাইলে কি আর সে আমাকে পছন্দ করবে! বিয়ে করতে রাজি হবে।
পছন্দ অবশ্যই করবে, তার সাথে ভালোভাবে কথা বল চলাফেরা কর, তোর প্রতি সে যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তখন তোর মামার কাছে বলবো তোদের বিয়ের কথা।
অবন্তী আর কিছু না বলে সিরাতের জন্য ব্রেকফাস্ট নিয়ে তার রুমে দিয়ে আসলো! বলল তাড়াতাড়ি খেয়ে রেডি হোন। সিরাত তার দিকে তাকিয়ে বলল তুমি আমাকে আপনি করে না বলে তুমি করে বলতে পারো! আমরা তো কাজিন, কাজিনদের মাঝে তুমি তুই এগুলো চলে, আপনি বলাটা বেমানান মনে হয়।
আসলে আমরা তো ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হইনি তাই তুমি ডাকতে কেমন যেন লাগে।
ও বুঝতে পারছি মানে আমাকে পর মনে হয়, দূর দেশে ছিলাম তাই আপন হতে পারিনি! ঠিক আছে পর করেই রাখো।
আরে না না ভুল বুঝতেছেন, আমি সেটা বলিনি, আমি বলেছি, ছোট থেকে যদি একসঙ্গে থাকতাম তুমি করে ডাকতে সংকোচ বোধ হতো না! এখন তুমি ডাকতে কেমন যেন লজ্জা লাগে।
জোর করব না ইচ্ছে হলে তুমি ডাকতে পারো, আর যদি না ডাকো আমিও এখন থেকে আপনি করে ডাকবো আপনাকে।
অবন্তী বুঝতে পারছে, সিরাতকে তুমি করে না ডাকায় অভিমান করেছে তাই তাকেও আপনি বলছেন।
ব্রেকফাস্ট করে নাও তাড়াতাড়ি হাহাহা।
অবন্তী তাড়াতাড়ি রুম থেকে বের হয়ে গেল সিরাতকে তুমি করে বলে! অবন্তী সিরাতকে তুমি করে বলে খুব লজ্জা পাচ্ছে, আবার অন্যরকম ফিল হচ্ছে।
যাই হোক সিরাত চেয়েছে বলেই অবন্তী তুমি করে বলেছে, আর মায়ের কথাগুলো তার মনে পড়ছে! সত্যি কি সিরাত তাকে পছন্দ করবে তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়বে, তাহলে তো ভালো হয় পছন্দের মানুষকে জীবনসঙ্গ হিসেবে পাবো, অবন্তী ভাবছে আমি কি সিরাতের প্রেমে পড়ে গেলাম। সে যদি আমাকে ভালো না বাসে তাহলে তো আমি কষ্ট পাবো, না না আমি তার প্রেমে পড়বো না, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে! যখন দেখব সে আমার প্রতি দুর্বল তখনি আমি তাকে ভালোবাসবো।
দশটার আগে ই সিরাত রেডি হয়ে অবন্তীকে কল দিয়ে বলল আমি বের হলাম ওই দোকানে সামনে গিয়ে দাঁড়াবো, তুমি চলে আসো। সিরাতের আর তর সইছে না কখন সে তার মায়ের সম্বন্ধে সত্যিটা জানতে পারবে, তাই সব কিছুতে তাড়াতাড়ি করছে। অবন্তী তার মাকে বলল আমি একটু বের হচ্ছি কলেজে যেতে হবে, ফিরতে টাইম লাগবে চিন্তা করো না, আমার বান্ধবীর বাসায় যাবো তাই লেট হবে! এটা বলে বের হলো অবন্তী
সিরাত দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল অবন্তী সেখানে যেয়ে অটো নিলো, এখান থেকে তাদের গ্রাম ১০ কিলোমিটার! ঘন্টাখানেক পর তাদের গ্রামের বাড়িতে চলে আসলো। গ্রামের বাড়িতে এখন তাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় থাকে, অবন্তীকে দেখতে পেলে তাদের বাসায় বলে দিবে, সে কারণে অবন্তীর বাড়িতে প্রবেশ না করে সরাসরি মল্লিকার নানী কাছে গেল।
আসসালামুয়ালাইকুম নানি কেমন আছেন।
ভালো আছি তুমি কেমন আছো, অনেকদিন পর দেখলাম তোমাকে! তোমার সঙ্গে কে জামাই? বিয়ে হয়েছে তোমার।
আরে নানী কি যে বলেন আমি এখনই বিয়ে করব নাকি, বাচ্চা মেয়ে আমি। এটা আমার কাজিন বড় মামা আছে না, আমিরুল মামা, তার ছেলে সিরাত।
মল্লিকার নানী সিরাতের দিকে তাকিয়ে বলল ওরে বাবা সেই পিচ্চি দেখছিলাম, তার বাবা যখন তাকে নিয়ে বিদেশ চলে যায় তখন মনে হয় দুই তিন বছর ছিল, আর এখন কত বড় হয়েছে।
সিরাত তাকে জিজ্ঞেস করল আমাকে ছোটবেলা আপনি দেখেছেন? আমি দেখতে কেমন ছিলাম।
তুমি দেখতে তোমার মায়ের মত একদম, মায়ের মত হয়েছো।
মায়ের কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে সিরাতের বুকের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেল, তার চেহারা মায়ের মত ছিল এটা কখনো তার বাবা তাকে বলেনি! তাহলে তার মা অনেক সুন্দর ছিল।
আমার মায়ের সঙ্গে আপনার কথা হতো তার কাছে আপনি যেতেন! তখন কি আপনি আমাদের বাসায় কাজ করতেন?
তখন আমি মাঝে মাঝে কাজ করতাম, সেসময় তোমাদের বাসায় তুলি নামের একটা মেয়ে ছিল সেই তোমাকে দেখাশোনা করতো, তোমার মায়ের সাথে তার অনেক মিল ছিল।
আমার আম্মু কি এমন অপরাধ করেছিল যে অপরাধে আমাকে জোর করে রেখে আম্মুকে ডিভোর্স দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
আসলে তখন তো আমি তোমাদের বাড়িতে বেশি যাইনি মাঝে মাঝে যেতাম, শুনেছি তোমার মায়ের রুম থেকে একটা লোক বের হয়েছে সেটা সবাই দেখেছিল! এই অপরাধে তোমার মাকে তোমার বাবা তাড়িয়ে দেয়।
যেদিন আম্মুকে তাড়িয়ে দেয় আমাকে রেখে আপনি তখন সেখানে ছিলেন।
হ্যাঁ চিৎকার চেঁচির শব্দ শুনে আমরা সবাই তখন সেখানে উপস্থিত হই, তোমার মা অনেক কান্নাকাটি করে! তোমাকে দিতে চায়নি, তোমার ফুপি তোমাকে মায়ের কোল থেকে জোর করে কেড়ে নেয়। আসলে আমরা তখন তাদের কথাই বিশ্বাস করেছিলাম ভেবেছিলাম তোমার মা চরিত্র ভালো না। তাই তখন তার সেই কষ্ট দেখে আমাদের খারাপ লাগেনি, কিন্তু এতদিন পরে এসে কেন যেন মনে হয় তোমার মা এটা করতে পারেনা, অনেক ভালো ছিল তিনি।
তুলি আন্টি এখন কোথায় থাকে সেটা আপনি জানেন?
তাদের বাড়ি আমাদের গ্রামের ওই সামনের স্কুলটা দেখছো না, ওই স্কুলের সাথে। ওর বিয়ে হয়েছে কোথায় সেটা আমি জানিনা, অনেকদিন আগে তার সাথে দেখা হয়েছে। তুমি তুলিদের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞেস করো তার কোথায় বিয়ে হয়েছে, তাহলে জানতে পারবে।
সিরাত আর অবন্তী মল্লিকার নানীর সাথে কথা বলে চলে গেল তুলিদের বাড়িতে। স্কুলের কাছেই তুলির বাড়ি, এক লোক দেখিয়ে দিলেন। তুলিদের বাড়িতে গিয়ে তুলির ভাবীর সাথে কথা হলো, তিনি বললেন তুলির বিয়ে হয়েছে চন্দ্রপুর গ্রামের। সিরাত জানেনা চন্দ্রপুর গ্রাম কোথায়, অবন্তী চিনে তাই তাকে নিয়েই চন্দ্রপুর গ্রামে যেতে হবে। এই গ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রপুর গ্রাম আজকে আর যাওয়া সম্ভব হবে না। অবন্তী তুলির ভাবীর কাছ থেকে ফোন নাম্বার চেয়েছিল তুলির।
তুলির ভাবী বললেন, তুলির জামাইয়ের ফোন নাম্বার আছে তারটা নিলে নিতে পারো। তুলির ভাইয়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে অবন্তী সিরাতকে বলল, নাম্বারটা আমি নেয়, তুমি ছেলেমানুষ যদি কল দাও তার স্বামী কি না কি মনে করবে! আমি তাকে বলবো আমি শিকদার বাড়ির মেয়ে তুলি আন্টি আমাদের বাসায় অনেক দিন ছিল তাই তার সাথে কথা বলবো। এটা বললে সে কোন সন্দেহ করবেন না। সিরাত বলল ঠিক আছে তুমি কথা বলে তাদের বাড়ির লোকেশন টা জেনে নাও আমরা কালকে যাব। কালকে আম্মুকে কলেজের কথা বলে যাওয়া যাবে না, তোমার সাথে ঘুরতে যাব এটাই বলতে হবে।
আমার সাথে ঘুরতে যাবে এটা বললে ফুপি যেতে দিবে?
অবশ্যই দিবে আম্মু তোমাকে অনেক পছন্দ করে।
ওকে তাহলে কালকে আমরা চন্দ্রপুর গ্রামে যাচ্ছি তুলি আন্টির বাসায়।
চলবে..
#ভুল ১৩তম পর্ব
#jannat_Nur
তুলির স্বামীকে কল দিয়ে নিজের পরিচয় দিলো অবন্তী! তারপর তুলির সাথে কথা হলো অবন্তীর সিরাতের ব্যাপারে। এত বছর পর সিরাত তুলি সাথে দেখা করতে চায় এটা শুনে সে অনেক খুশি হয়েছে। তুলিও চেয়েছিল সিরাত সত্যিটা জানুক, তার মাকে খুঁজে বের করুক। সুফিয়া বেগমের সাথে যে অন্যায়টা হয়েছিল সে অন্যায়টার শাস্তি অপরাধীরা পাক। একজন নিরপরাধ মানুষ এতটা বছর কষ্ট পেয়ে আসছে মিথ্যা ষড়যন্ত্রের কারণে। সুফিয়াকে আজও মনে করে তুলি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, সুফিয়া যেখানেই থাক যেন ভালো থাকে। আর তার ছেলে যেন একদিন তাকে খুঁজে পেয়ে দোষীদের শাস্তি দিতে পারে। মনে হয় সেই দিনটাই ফিরে এসেছে এমনটাই ভাবছে তুলি। তার মন আজ খুশিতে ভরে গেছে সিরাত তার বাসায় আসবে মায়ের খুঁজে।
চন্দ্রপুর গ্রামের কোথায় তার বাড়ি সবকিছু বিস্তারিত বলল অবন্তীর কাছে। পরের দিন সকালে অবন্তী মাকে বলল, সিরাত ভাইয়াকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো।
এ কথা যেন আর বাড়ির কেউ না জানে, জানতে পারলে অনেকেই হিংসা করবে।
রুমা আক্তার বললেন, ঠিক আছে তুই চিন্তা করিস না কেউ জানবে না! আমি তো এটাই চাইছিলাম তুই সিরাতকে নিয়ে ঘুরতে বের হ।
অবন্তীর কোন বাধা রইল না, শুধু দুজনে একসঙ্গে বের না হয়ে আগে পিছে বের হলো। যেন বৃষ্টি বুঝতে না পারে, বৃষ্টি বুঝতে পারলে সে ওদের সঙ্গে যেতে চাইবে। তাদের শহর থেকে চন্দ্রপুর গ্রাম ৩০ কিলোমিটার বাসে যেতে হবে। বাস স্টেশনে এসে টিকেট কেটে দুজনে বাসে এসে বসলো, অপেক্ষা করছে বাস ছাড়ার। দুজনে গল্প করতে করতে ৩০ কিলোমিটার পার করে ফেলেছে মনে হয়নি। বাস থেকে নেমে একটা রিক্সা নিলো, রিকশায় করে তুলিদের বাসার সামনে গিয়ে নামলো। তুলির স্বামী চাকরি করে স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে, তাদের অবস্থা এখন ভালো। তুলি বিয়ের আগে শিকদার বাড়িতে কাজ করলেও সাথে সাথে লেখাপড়া করতো। তুলির স্বামী তুলিকে পছন্দ করে বিয়ে করে, স্বামীর সংসারে এখন সে অনেক সুখে আছে। সিরাতকে এত বছর পরে চোখের সামনে দেখতে পেয়ে তুলি কান্না করে দিলেন।
বাবা তোমাকে আমি কত আদর যত্ন করতাম যখন ছোট ছিলে, তোমার মা আমাকে অনেক ভালোবাসতো। নিজের বোন মনে হতো তাকে, তার সাথে যে আর কখনো দেখা হবে না এটা কখনো ভাবিনি। সে কেমন আছে অনেক জানতে চেয়েছি! কিন্তু কোন খোঁজ খবর পাইনি। তোমার মামার কাছে গিয়েছিলাম তোমার মায়ের খুঁজে, তোমার মামা বলছে সুফিয়া আপুর কোন খোঁজ খবর জানেন না সে।
আন্টি আপনি আমার মামার বাড়ি চিনেন?
কেন চিনবো না, তোমার মায়ের সাথে একবার গিয়েছিলাম সে থেকেই তোমার মামার বাড়ি আমার চেনা! তাইতো তোমার মায়ের খোঁজ করতে গিয়েছিলাম।
কতদিন আগে গিয়েছিলাম খোঁজ করতে।
সেটাও তো প্রায় অনেক দিন আগের কথা, ১০ বছর হবে মনে হয়। তুমি এতদিন পরে এলে মায়ের সম্পর্কে জানতে? এত বছর কি করলে।
আর বইলেন না আন্টি এতো বছর আমি একটা ভুলের মধ্যে ছিলাম। আমার আব্বু যা বলেছে তাই বিশ্বাস করেছি, একটা স্বপ্ন আমাকে বাংলাদেশের নিয়ে এসেছে! আর মায়ের সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করেছে। আমি যে কেন এতদিন আমার মায়ের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলাম না, সেটার জন্য এখন আমি খুব কষ্ট পাচ্ছি। আমার অভাগী মা এখনো বেঁচে আছে কিনা সেটা জানিনা, কিন্তু আল্লাহর কাছে বলব আমার মায়ের যেন আমি দেখা পাই! তাকে যেন শেষ জীবনে কিছুটা শান্তি দিতে পারি। এখন বলেন আমার মায়ের সাথে কি হয়েছিল, সত্যিই কি আমার মা চরিত্রহীন ছিল।
না বাবা তোমার মা এমন মানুষ না, তোমার মায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
কেন ষড়যন্ত্র করা হলো কি অপরাধ করেছিল আমার মা।
তোমার মায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে তোমার ছোট ফুপির জামাই রফিক মিয়া।
নিজের বাবার নাম শুনে অবন্তী অবাক হয়ে গেল, তার বাবা কেন ষড়যন্ত্র করবে! অবন্তী নির্বিকার হয়ে তাকিয়ে আছে তুলির মুখের দিকে।
সিরাত জানতে চাইলো, সে কেন এমন করলেন আমার মায়ের সাথে, কি পেয়েছে আমার মায়ের জীবনটা নষ্ট করে, তার কি লাভ হয়েছে? আর এখন তো সে আমার সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করছে। এখন তার ভালো ব্যবহার দেখে মনে হয় এমন ভালো মানুষই হয়না।
তুমি বুঝতেই পারবে না সে কতটা শয়তান মানুষ, তার মুখের কথা শুনলে মনে হবে তার মতো ভালো মানুষ এই দুনিয়াতে নেই। কিন্তু তার মনের ভেতর সবসময় কুবুদ্ধি লেগেই থাকে, নিজ স্বার্থের বাইরে সে কিছুই বুঝেনা! তোমার সাথে ভালো ব্যবহার করার কারণ অবশ্যই আছে।
তুলির কথা শুনে অবন্তী বুঝতে পারে তার বাবা এখন সিরাতের সাথে আর সিরাতের বাবার সাথে কেন ভালো ব্যবহার করছে, তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্যই তার বাবার ভালো মানুষ সাজা। তার বাবা ষড়যন্ত্র করে সিরাতের মাকে এই বাড়ি থেকে তাড়িয়েছে, কিন্তু কেন তাকে তাড়িয়ে তার বাবার লাভ কি। তাই অবন্তী তুলিকে প্রশ্ন করলো, বড় মামিকে তাড়িয়ে আব্বুর কি লাভ হয়েছে।
আরে তুমি কি রফিক মিয়ার মেয়ে, নিজের বাবার চরিত্র সম্পর্কে আজকে জানতে পারবে। তুমিও তো একটা মেয়ে বুঝবে একজন লম্পট পুরুষের জন্য একজন সতীসাধ্বী নারীর জীবন কিভাবে নষ্ট হয়ে যায়।
আন্টি আপনি বলেন আমি শুনতে চাই, সে যদি অপরাধী হয় আমার বাবা হোক তবু আমি তাকে ক্ষমা করব না! তার শাস্তি তাকে পেতে হবে।
তাহলে শুনো সুফিয়া আপু অনেক সুন্দরী ছিলেন! সিরাতের চেহারা তার মায়ের মত হয়েছে। সুন্দরী হওয়ার কারণে তোমার বাবার খারাপ নজর পড়ে সুফিয়া আপুর উপর। প্রথমে বুঝতে পারেনি তোমার বাবা এতটা নিচে নামবে, সবসময় সুফিয়া আপু নিজেকে আড়াল করে রাখতেন তোমার বাবার নজর থেকে। একদিন তোমার বাবা সুফিয়া আপুর রুমে ঢুকে পড়ে, তখন সে কাপড় গুছিয়ে আলমারিতে রাখছিল। সিরাত ছোট মাত্র তিন বছর বয়স, খাটে বসানো ছিল। তখন রফিক মিয়া বলে আপুকে নিয়ে পালিয়ে যাবে, রুমা আপাকে তার না কি তেমন ভালো লাগে না। সুফিয়া আপু রফিক মিয়াকে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলে, সে না বের হয়ে কুপ্রস্তাব দেয় আপুকে, আপুর হাতে ধরে ফেলে। আপু তখন খুব রেগে গিয়ে রফিক মিয়াকে গালে থাপ্পর মারে, বলে সে যেন আর কখনো আপুর রুমে না আসে। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে তোমার বাবা নাটক সাজায়, ভাবে এমন নাটক করলে তোমার বাবা আপুকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিবে আর সেই সুযোগে তোমার বাবা তার মনোবাসনা পূর্ণ করতে পারবে।
তাহলে যে শুনে আসছি বড় মামির রুম থেকে একজন লোক বের হয়েছিল, সেটা শুধু আব্বু একা নয় বাড়ির সবাই দেখেছে।
সেটাই তো ষড়যন্ত্র, নাটক সাজানো হয়েছিল, যা বাড়ির সব মানুষকে দেখানো হয়েছে। আপুর রুম থেকে একটা লোক বের হবে সেটা সে সবাইকে ডেকে দেখাবে, এই নাটকটা সাজিয়েছে তোমার বাবা।
আপনি শিওর হলেন কিভাবে আব্বু এই নাটকটা সাজিয়েছে।
আমি শিওর হলাম কারণ আমি জানতাম সুফিয়া আপু সৎ চরিত্রের মানুষ। আমিরুল ভাই বিদেশ থাকা অবস্থায় সে কোন পুরুষের সাথে কথা বলতো না, বাসায় যে তার তিনটা দেবর আছে তাদের সাথে সে কখনো ইয়ার্কি ফাজলামি করে কথা বলেনি। মাথায় কাপড় দিয়ে রাখতেন তাদের সামনে গেলে, আর তোমার বাবাকে দেখলে দূরে দূরে থাকতেন। তখনকার দিনে সবার হাতে মোবাইল ছিল না যে মোবাইল দিয়ে কারো সাথে সম্পর্ক করবে। এমনটা নয় সে বাসা থেকে কখনো বের হতো, পরপুরুষের সাথে কথা বলা দূরে থাক তাদের দেখলেই সে মাথা নিচু করে সরে আসতো। এমন মানুষ রাতের অন্ধকারে একটা পুরুষকে নিয়ে অবৈধ সম্পর্ক করবে এটা আমাকে মেরে ফেললে বিশ্বাস করব না। সেই পরপুরুষ টা কোথায় পাবে রুমে নিয়ে আসবে, সে কখনো কারো সাথে কথাই বলে নাই।
অবন্তীর মনে হচ্ছে তুলি আন্টি যা বলছে সেটাই সত্যি, তার বাবা যখন মামির সাথে মনোবাসনা পূর্ণ করতে পারেননি তখন হয়তো এই ষড়যন্ত্রটা করেছে।
তখন তুলি আবার বলল ও আর একটা কথা বলতে ভুলে গেছি, তোমার বাবা যে ষড়যন্ত্র করেছে সেটা বুঝার বড় কারণ হলো! আপুকে যখন ডিভোর্স দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়, সিরাতের জন্য সে পুলিশ নিয়ে আসে সে অসহায় হওয়ার কারণে থানা থেকেও সাহায্য পায়নি। তখন তোমার বাবা সুফিয়া আপুকে বলেছিল ভাবী আপনি যদি আমার সঙ্গে থাকেন আমি আপনাকে সাহায্য করবো, এমন একটা বাচ্চার জন্য কান্নাকাটি করে নিজের জীবন নষ্ট করবেন না। আগেই বলছিলাম আমার সাথে পালিয়ে যান, এখনো সময় আছে এমন আরো দু-চারটা বাচ্চা হয়ে যাবে আমাকে বিয়ে করে নেন। এই কথাগুলো সুফিয়া আপু আমাকে বলেছিল কেঁদে কেঁদে, এখানে রফিক মিয়ার ষড়যন্ত্র আছে কিন্তু আমার কথা তো কেউ বিশ্বাস করবে না।
তুমি কি মনে কর তোমার বাবার ষড়যন্ত্র আছে কিনা?
এতে তো মনে হচ্ছে সবকিছুর পিছনে আমার আব্বুর হাত আছে, তার কারণে বড় মামির জীবনে এত কিছু হয়েছে! এবং সিরাত ভাইয়া মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছে, আমি এ বাবা নামের মানুষটাকে ছাড়বো না। তার মুখোশের আড়ালে এতটা শয়তানি বের হয়ে আসবে জানা ছিল না। এই শয়তানের মুখোশ খুলতে হলে সুফিয়া মামিকে খুব দরকার।
সিরাত বলল যদি আমার মা বেঁচে থাকে যেভাবেই হোক তাকে খুঁজে বের করব বাংলাদেশ তন্নতন্ন করে হলেও! আমার মায়ের সন্ধান আমি করব যেভাবেই হোক, প্রমাণ করতে হবে আমার মা নির্দোষ ছিল সে চরিত্রহীন ছিল না। আমার মায়ের সম্মান আমি ফিরিয়ে দেবার জন্য যা করার লাগে করব।
অবন্তী নিজের বাবার কুকর্মের কথা শুনে সিরাতকে কি বলে সান্ত্বনা দিবে সে ভাষা নেই। তার বাবার জন্য সে মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, একটা নিরপরাধ মানুষ স্বামী সন্তান হারা হয়েছে। অবন্তীর ইচ্ছা করছে এই মানুষটাকে বাবা বলে আর না ডাকতে।
আন্টি এখন আমরা যাই আবার দেখা হবে।
কি বলছো, কিছু না খেয়ে চলে যাবে! তোমার জন্য আমি রান্না করেছি, তোমার আংকেল স্কুল ছুটি হলে বাসায় আসবে তার সাথে দেখা করে যাও।
আঙ্কেল কখন আসবে, যদি দেরি হয়! আমাদের বাসায় ফিরতে দেরি হয়ে যাবে। অবন্তী আমার সাথে এখানে এসেছে এটা তার বাসায় কেউ জানে না।
ঠিক আছে তাহলে দুপুরের খাবারটা খেয়ে তারপর যাও।
তুলি পরম যত্ন সিরাতকে এবং অবন্তীকে খাওয়ানো পর বললেন, যখনই সময় পাবে আমার এখানে চলে এসো বাবা! তোমাকে দেখতে পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে, মনে হচ্ছে সুফিয়া আপু আমার আশেপাশেই আছে।
সিরাত বলল এখন আমার মাকে খোঁজার দরকার, তাকে খুঁজে পেলে অবশ্যই আপনার কাছে আসব! আপনার সাথে দেখা করব।
অবন্তী আর সিরাত বাসে উঠে বসলো, বিকাল হয়ে গেছে তারাতাড়ি বাসায় ফিরতে হবে। অবন্তী একদম চুপচাপ, তার বাবার জন্য নিজেকে তার অপরাধী মনে হচ্ছে। সে সিরাতকে কি বলে সান্ত্বনা দিবে ভেবে পাচ্ছেন না, এমন হচ্ছে কেন তার নিজেকে অপরাধী কেন লাগছে।
তুলির কাছ থেকে সিরাত তার মামার বাড়ি ঠিকানা নিয়ে আসছে, কাল সেখানে যাবে। অবন্তীকে চুপচাপ দেখে সিরাত বলল, আমি বুঝতে পারছি তোমার বাবার কথা শুনে খারাপ লেগেছে। নিজের বাবা সম্পর্কে এরকম শুনতে কেউ আশা করে না, তোমার বাবার অপরাধের শাস্তি সে নিজেই পাবে তার জন্য নিজেকে অপরাধী মনে করো না। তুমি তো আর কিছু করোনি, বরং তুমি আমাকে এখন সাহায্য করতেছো আমার মাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য।
সিরাতের কথা শুনে অবন্তী বলল, সত্যিই আমি লজ্জিত আমার বাবা এমন চরিত্রের মানুষ এটা আমি ভাবতে পারছি না! তাকে আমি আর বাবা বলে ডাকবো না, সে বাবা হবার যোগ্য নয়।
তুমি কি কাল আমার সাথে আমার মামার বাড়িতে যাবে? আমি তো আর বাংলাদেশের কোন গ্রাম গঞ্জ চিনি না।
তুমি চাইলে অবশ্যই যাবো, যাবো না কেন! তোমাকে সামান্যতম সাহায্য করতে পারলেও কিছুটা অপরাধবোধ কমবে। আল্লাহর কাছে চাই তুমি তোমার মাকে খুঁজে পাও, আর আমার বাবা যা অন্যায় করেছে তার শাস্তি তিনি পাক। আব্বু যে ষড়যন্ত্রকারী সেটা তুমি প্রমাণ করবে কিভাবে, যদি তার নিজের মুখে স্বীকার করানো যেত সেটা খুবই ভালো হতো।
আল্লাহ কোন না কোন রাস্তা বের করে দিবে তোমার বাবার মুখোশ উন্মোচিত করতে। অপরাধীদের শাস্তি একদিন না একদিন হবেই সে যত বড় চালাক হোক! প্রমাণ যতই লোপাট করুক, তবু আল্লাহর ইশারায় সবকিছু সামনে চলে আসে। প্রকৃত দোষীদের আল্লাহ কখনো ক্ষমা করেন না, শুধু আমার আম্মুকে খুঁজে পাই। দরকার হলে আমার আম্মুকে নিয়ে আমি আলাদা থাকবো, এমন বাবার সাথে থাকতে আমার ইচ্ছা করছে না। যে তার ভালোবাসার মানুষকে অন্যের কথায় ডিভোর্স দিতে পারে, সে কখনো ভালোবাসতে পারেনা। সত্য মিথ্যা যাচাই করা দরকার ছিল, এতটা বছর সংসার করার পর কেমন বিশ্বাস ছিল আমার মায়ের প্রতি তার।
চলবে….