#ভালোবাসি_শুধু_তোমায় ?❤
#পর্ব : ২০ (প্রথম খণ্ড)
#লেখিকা : Aye Sha (Koyel Banerjee)
“চুপচাপ সত্যিটা স্বীকার করুন মিস রাহেলা চৌধুরি নাহলে প্রাণ হারাতে হবে।”
আমান একটা টেবিলের সাথে হেলান দিয়ে, এক হাত পকেটে রেখে এবং আরেক হাতে ফোন দেখতে দেখতে রাহেলা কে কথাটি বললো। পুরো অন্ধকার একটা ঘর যেখানে একটা চেয়ারে রাহেলা কে বেঁধে রাখা হয়েছে। রাহেলার মাথার উপর একটা ছোট বাল্ব আর সামনে টেবিল যাতে আমান হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমান ভাবলেশশূন্য হয়ে কথাটা বললেও রাহেলা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। রাগ মিশ্রিত কন্ঠে জোর গলায় বললো,
— ভাবলে কি করে আমি সত্যিটা স্বীকার করবো? কোনদিন না। আমি কোনদিন সত্যি স্বীকার করবো না।
আমান ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে সামান্য হাসলো আর বললো,
— ভেবে বলছেন তো?
— হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ! ভেবেই বলছি। কেন? কি করবে সত্যি স্বীকার না করলে মেরে ফেলবে? মৃত্যু কে ভয় পায় না রাহেলা চৌধুরি।
আমান একটা ছোট নিশ্বাস ছেড়ে বললো,
— নো ওয়ে! আপনাকে মেরে ফেলার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
আমানের কথায় চমকে উঠলেন রাহেলা। “মেরে ফেলবে না? তো কি করতে চাইছে আমান?” ভাবছে রাহেলা।
— এতো বেশি ভাববেন না মিস রাহেলা চৌধুরি। আপনাকে যদি জানে মেরে ফেলি তাহলে তো আপনার উপযুক্ত শাস্তি হবে না। আমি আপনাকে শেষ করবো আপনার মতো করে, ঠিক যেভাবে আপনি আমাকে শেষ করতে চেয়েছিলেন।
ভয়ভীত কন্ঠে রাহেলা আমান কে জিজ্ঞেস করলো,
— ম..মানে?
— মানেটা এই যে আপনি চেয়েছিলেন আরমানের খানের ছেলেকে তিলে তিলে শেষ করতে কিন্তু শেষে খোঁজ পাননি তাই আর প্ল্যান সাকসেসফুল হয়নি। আমার ক্ষেত্রে তো এমন হবে না। আপনি তো আমার হাতের মুঠোয় আছেন। তাই তিলে তিলে শেষ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান মিস রাহেলা চৌধুরি।
শেষের বাক্যটি আমান দাঁতে দাঁত চেপে অন্তত রেগে বললো। রাহেলা ভয় পেয়ে ঘাবড়ে গেলো তার ফলে। আমান ঘুরে চলে যেতে নিলে রাহেলা চিৎকার করে বললো,
— আ..আমি! আমি মেরেছি মীরা আর ইসমির আব্ব-আম্মু কে। ইচ্ছে করে তোমার আব্বুর কোম্পানি, বাসা হাতিয়ে নিয়ে নিঃস্ব করে দিয়েছি তোমার আব্বু কে। সব, সব সম্পত্তির জন্য করেছি আমি। আ..আমি পুলিশের কাছে সারেন্ডার করতে রাজি আছি, আমাকে নিয়ে চলো।
আমান বাঁকা হেসে রাহেলার দিকে ফিরলো। পকেট থেকে নিজের ফোনটা বাড় করে, স্ক্রিনটা রাহেলার দিকে দেখালো। স্ক্রিনে দেখাচ্ছে সাউন্ড রেকর্ডার অন করা। আমান রাহেলা কে দেখিয়ে রেকর্ডারটা সেভ করে বললো,
— থ্যাংক ইউ ফর ইউর স্টেটমেন্ট মিস রাহেলা চৌধুরি! নাও এঞ্জয় দ্য টর্চার।
আমান কথাগুলো বলে দরজা বন্ধ করে চলে বেরিয়ে গেলো। বন্ধ ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে রইলো রাহেলা চৌধুরির আর্তনাদ।
অন্যদিকে,
— আ..আমি কিছু করিনি। আমি নির্দোষ!
নীহার কথা শুনে অর্নিল হেসে দিলো। নীহার সামনে একটা চেয়ার উল্টো ভাবে নিয়ে রাখলো তারপর নীহার দিকে মুখ করে বসলো আর বললো,
— ওহহ রিয়েলি ডার্লিং? তুমি কিছু করোনি? নির্দোষ তুমি?
— হ..হ্যাঁ। আমি ন..নির্দোষ।
অর্নিল একটু ভাবার ভান করে বললো,
— আমার তো নিজের ভাইয়ের উপর ভীষণ রাগ লাগছে। কি করে এমন করতে পারলো তোমার সাথে? তাছাড়া এতো সুন্দরী একটা মেয়েকে এভাবে রিজেক্ট করে দিলো ভাই? হাউ রুড হি ইজ আই ক্যান্ট বিলিভ!
নীহা ন্যাকা কান্না করে বললো,
— ট্রাস্ট মি অর্নিল! আমি কিছু করিনি। আমান কে আমি ভীষণ ভালোবাসি কিন্তু ওই মীরা! আমার সো কলড বেস্ট ফ্রেন্ড আমান কে আমার থেকে কেড়ে নিলো। আই রিয়েলি রিয়েলি লাভ হিম!
অর্নিল নীহার হাত ধরে বললো,
— আই আন্ডারস্ট্যান্ড! কিন্তু কি আর করার বলো? ভাই তো অলয়েস নিজের ইচ্ছায় কাজ করে। এই দেখো না আমার ইচ্ছা না থাকা সত্বেও আমাকে তোমাকে টর্চার করার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে। বায় দ্য ওয়ে আই হ্যাভ আ অফার ফর ইউ।
নীহা অবাক হয়ে অর্নিল কে জিজ্ঞেস করলো,
— অফার!?
— ইয়েস! ভাইয়ের বউ তো তুমি আর হতে পারবে না। বাট আমার বউ হওয়ার চান্স কিন্তু এখনও আছে। এর ফলে তুমি আমাদের বাসায় মীরার সাথেও কমপিট করতে পারবে। অ্যাম আই রাইট? নাও ইটস আপ টু ইউ..
— আমি রাজি! আমি রাজি তোমার বউ হতে। আমার মনে হয় তুমি এটলিস্ট তোমার ভাইয়ের মতো নও। তুমি আমাকে বোঝো। আই এক্সেপ্ট ইউর প্রপোসাল অর্নিল।
— রিয়েলি বেবস? দ্যান ভেরি গুড! আই অ্যাম রিয়েলি লাকি আই অ্যাম গোইং টু গেট ইউ নীহা।
— আই অলসো অর্নিল। কিন্তু অর্নিল? তুমি তো মীরার বোন ইসমি কে বিয়ে করবে বলেছিলে সেদিন সবার সামনে দাঁড়িয়ে। তুমি তো ওকে ভালোবাসো।
অর্নিল রেগে চোয়াল শক্ত করে বললো,
— আর ইউ লস্ট ইউর মাইন্ড নীহা? আমি!? আর ওই ইসমি কে ভালোবাসবো, বিয়ে করবো? যে কি না আমার বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী। নো ওয়ে! সেদিন বলেছিলাম শুধুমাত্র ভাইয়ের জন্য। আর আজও তোমাকে আমার জন্য এক্তা কাজ করতে হবে নীহা।
— কাজ? কি কাজ অর্নিল?
— তুমি যদি ওই রাহেলা চৌধুরির হয়ে কোনো কাজ করে থাকো দ্যান ওটা স্বীকার করে ফেলো।
— হোয়াট?
— বেবস কাম ডাউন! লূক তুমি যদি স্বীকার করে নাও দ্যান আমি ভাইকে এটা দিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে পারবো। বলবো যে “আমি নীহার এগেইন্সটে প্রুফ দেবো যদি তুমি নীহাকে মেনে নাও আমার বউ হিসেবে।” দ্যান আমি তোমাকে বিয়েও করে ফেলবো আর প্রুফও দেবো না ভাই কে।
— ক..কিন্তু…??
— কোনো কিন্তু না বেবস। এটুকু তো করতেই হবে তোমাকে আমার বউ হওয়ার জন্য। পারবে না বেবস? এটুকু করতে? প্লিজ?
নীহা চুপ করে থাকায় অর্নিল মনে মনে বললো,
— ওরে শাকচুন্নি! জীবনে শালা কোনো মাইয়ারে এতো তেল মারিনি যতটা তোরে মারসি। আমার বউ যদি জানতে পারে না আমি তোরে বিয়া করুম কইসি আর ওর নামে উল্টা পাল্টা বলসি তোর কাছে তাইলে না জানি ওই ধানি লঙ্কা আমার কি করে? আম্মিইইইই! বাঁচাইয়ো তোমার এই নিষ্পাপ পোলাটারে। তোমার বড় পোলাটা আমরে ফাঁসায় দিসে এই নীহা কীহা পীহার চক্করে। ও আল্লাহ! এই মাইয়াডা এমন চুপ করে আসে ক্যান? রাজি হইব না নাকি? কাম সারসে, ভাই জানলে মাইরা ফ্যালবো আমারে। এ কেমন ফ্যাসাদে পরলাম রেহ বাবা। কি দরকার ছিলো আমাকে এই নীহার ডিপার্টমেন্টে পাঠাতে। আরে ও মাইয়া কিসু কও। এতো সুন্দর কইরা যে তোমারে “বেবস” কইলাম তার কি হইব?
অর্নিল মনে মনে হাজারো কথা বলে যাচ্ছে। বেচারা ভয়ে শেষ। যদি ইসমি জানে অর্নিল কি কি বলেছে এখানে তাহলে ওর কবর দিয়ে দেবে ইসমি। অন্যদিকে নীহা বয়ান দিতে না রাজি হলে আমানের কাছে বকা খেতে হবে। বেচারা ফেঁসেছে মহা বিপদে, স্যান্ডউইচ হয়ে যাচ্ছে। অর্নিল নানান আবোল তাবোল কথা বকে চলেছে মনে মনে সে সময় নীহা বলে উঠলো,
— আমি রাজি অর্নিল! আমি স..সবটা স্বীকার করবো।
অর্নিল জোরে হাসতে গিয়েও থেমে গেলো আর মনে মনে গান করতে লাগলো,
— উল্লু বানায়া, বাড়া মাজা আয়া। ×২
নীহা অর্নিল কে চুপ করে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলো,
— তুমি চুপ করে আছো কেন?
অর্নিল ততক্ষণাৎ উত্তর দিলো,
— নাহ ভাই কে কি কি বলবো সেটাই প্ল্যান করছিলাম। আচ্ছা তুমি বলো রাহেলা চৌধুরি তোমাকে দিয়ে কি কি করিয়েছে।
— উনি যখন জানতে পারেন আমি মীরার বেস্ট ফ্রেন্ড আর মীরা আমাকে অনেক বিশ্বাস করে তখন তখন উনি আমার কাছে আসেন আর আমায় জিজ্ঞেস করেন আমি মীরার সম্পর্কে কি ভাবি। মীরা কে আমার ভালো লাগতো না আর তার কারণ ছিলো ওই ইসমি। ও অলয়েস মীরাকে প্রটেক্ট করতো ওকে বোঝাতো আমি মীরার টাকা ধ্বংস করতে চাই। তাই আমি রাহেলা চৌধুরির সাথে হাত মিলিয়ে ওনার কথা মতো মীরা কে বদনাম করে দিই। সেখানে আমান মীরা কে সেভ করে। আমার মেইন টার্গেট ছিলো ওই ইসমি। মীরা কে সবার সামনে যেমন অপদস্ত করতে পেরেছিলাম তেমন ইসমিকেও অপদস্ত করার ইচ্ছে ছিলো আর সেটা রাহেলা চৌধুরি জানতে পেরে আমাকে সাহায্য করবে বলেছিল।
নীহার কথা শেষ হতে না হতেই নীহার গালে সজোরে একটা থাপ্পড় পরলো। নীহা অবাক চোখে তাকিয়ে দেখলো অর্নিল অতিরিক্ত রেগে রক্তিম হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। হিংস্র কন্ঠে অর্নিল বলে উঠলো,
— এখন মনে করছি ভাই ঠিকই করেছে তোকে আমার হাতে ছেড়ে দিয়ে। ভাবলি কি করে তুই ইসমি কে অপদস্ত করতে চাইবি আর করতে পারবি? আমি প্রথম থেকেই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছি ইসমির জন্য। আর হ্যাঁ! তুই ভাবী কে অপদস্ত করিসনি, আমার ভাই তোকে অপদস্ত করেছে সবার সামনে। ব্লাডি বিচ!
কথাগুলো বলে অর্নিল বেরিয়ে আসতে নিলেই নীহা হুঙ্কার দিয়ে ওঠে,
— ইউ চিটার! ঠকালে তুমি আমাকে? তোমাকে আমি দেখে নেবো!
অর্নিল নীহার দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করলো,
— তুমি কি অন্ধ? দেখতে পাচ্ছো না এখন আমায়?
অর্নিলের উত্তরে নীহা ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেলো। অর্নিল নীহা কে টন্ট করে বললো,
— তুমি নিজেকে বিশ্ব সুন্দরী ভাবা বন্ধ করো। এতে তোমারই ভালো হবে। কেন শুধু শুধু টন্ট টিটকিরি খেতে চাও বলো তো? হোয়াটএভার এঞ্জয়!
নীহা কে ঘরে বন্ধ করে অর্নিল গাড়ির কাছে চলে এলো, এসে দেখলো আমান গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দু-হাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে আছে অর্নিলের দিকে তাকিয়ে। অর্নিল ভ্রু উঁচিয়ে আমান কে জিজ্ঞেস করলো,
— হোয়াট!? এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
— কি সুন্দর বোকা বানাতে পারিস তুই ভাই আমার। আমি আজকে তোর জেরা না দেখলে তো জানতেই পারতাম না।
অর্নিল আমানের কথায় ঘাবড়ে গেলো। একটা শুকনো ঢোঁক গিলে মনে মনে ভাবলো,
— কাম সারসে, এখন ভাই গিয়া না ধানি লঙ্কা রে সব কইয়া দেয়। তাহলে আমার তো আর.আই.পি হয়ে যাবে। নাহ কিছু একটা করতে হইব।
— কি ভাবছো আমার সোনার টুকরো ভাই?
— ই..ইয়ে মানে তুই কি বলছিস?
— এই যে এটা দেখ।
আমান একটা ভিডিও চালালো ফোনে। সেখানে অর্নিল যখন নীহা কে কনভেনস করছিলো সবটা বলার জন্য সেটার ভিডিও চলছে। ভিডিওটা অফ করে আমান বত্রিশ পাটি দাঁত বার করে হাসি দিলো অর্নিলের দিকে তাকিয়ে। অর্নিল প্রথমে ঘাবড়ে গেলেও পরে দাঁত বার করে নিজের ফোনে কালকে আমানের রাতে বিয়ার খাওয়ার ভিডিও চালিয়ে দিলো। ভিডিওটা দেখে আমানের দাঁত বন্ধ হতে হাসি উধাও হয়ে গেলো। অর্নিলের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,
— নীলললল! এসব কি?
অর্নিল হেসে জবাব দিলো,
— তুমি চলো ডালে ডালে তো আমি চলি পাতায় পাতায় আর তুমি যদি চলো পাতায় পাতায় তো আমি চলি শিরায় শিরায়। দ্য গ্রেট আমান খানের ভাই আমি। এটুকু বুদ্ধি তো আছে কখন কোন প্রুফ কাজে লেগে যায়। হে হে হে! লেটস হো ভাইজান!
অর্নিল নাচতে নাচতে, হাসতে হাসতে গাড়িতে গিয়ে বসে পরলো। অর্নিলের যাওয়া দেখে আমানও হেসে ফেললো। এতদিন অর্নিলের বাচ্চামিগুলো হারিয়ে গেছিলো। অনেকদিন পর দুই-ভাই একসাথে রয়েছে। অর্নিল যতো দুষ্টুমি করবে আমানের সাথে, আমান আশেপাশে থাকলে ওর দুষ্টুমির লেভেল জানো আকাশ ছোঁয়।
দুই-ভাই বাসায় ফিরতেই দেখলো ওদের আম্মু রান্নাঘরে কাজ করছে। আম্মুর সাথে দেখা করে দুজন দুজনের ঘরে চলে গেলো। অর্নিল ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো আর আমান ঘরে এসে দেখলো মীরা বিছানা ঠিক করছে। পা টিপে টিপে মীরার কাছে গিয়ে মীরাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে মুখ গুঁজে দিতেই মীরা চমকে উঠলো।
আমি বিছানা গোছ করছিলাম সে সময় আমান হুট করে আমায় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরায় আমি চমকে উঠলাম। তারপর নিজেকে ছাড়িয়ে বললাম,
— কি হচ্ছে টা কি আমান এসব?
— কি হচ্ছে মানে? আমি আমার বউয়ের কাছে আসতে পারি না?
আমান অসহায় মুখ করে মীরার দিকে প্রশ্ন করলো,
— নাহ। যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো আর তারপর অফিস দুর হও।
— তুমি আমাকে দুর করে দিচ্ছো মীরু?
— তুমি যাবে? ঢং যত্তসব!
আমান কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,
— কেউ আমাকে ভালোবাসে না। তোহ তাতে কি হয়েছে? আমি তো বাসি তাই না? সো আমি এখন যাবো না।
এই বলে ধরাম করে বেডে হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পরলো আমান আর আমার মাথা গেলো গরম হয়ে,
— এই তুমি উঠবে নাকি আমি..?
আমান উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো,
— কি করবে তুমি? হুহ!
— দেখাচ্ছি মজা।
এই বলে আমি শাড়ির আঁচল কোমরে গুঁজে বিছানার ঝাড়ু হাতে নিতেই আমান ভয়ে ঢোঁক গিললো,
— ও..ওটা ক..কেন?
— তোমাকে শায়েস্তা করার জন্য। ফ্রেশ হতে যাবে নাকি আমি…??
ব্যাস! আমান দিলো ভোঁ দৌঁড় ওয়াশরূমের দিকে আর আমি ঝাড়ু ফেলে বেডে বসে হাসতে লাগলাম। এক পর্যায় এসে আমার মনে পরে গেলো আম্মুর কথা।
— আম্মু তো আমান কে জানাতে বলেছিল কথাটা। এখনই কি জানিয়ে দেবো?
আমার ভাবার মাঝেই আমান ওয়াশরূম থেকে বের হলো। আমি ওকে ওর শার্ট দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
— কোথায় গেছিলে অতো সকালে?
আমান আমার হাত থেকে শার্টটা ছোঁ মেরে নিয়ে একটু রেগে উত্তর দিলো,
— কাজ ছিলো।
আমি বুঝলাম কিছুক্ষণ আগের ঘটনার জন্য তুফান খানের রাগ হয়েছে। তাই আস্তে করে ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ওর পিঠে মাথা রেখে বললাম,
— কথা ছিলো তোমার সাথে।
আমান আমার হাত ছাড়িয়ে বললো,
— বলো, শুনতে পাচ্ছি।
আমি আস্তে করে আমানের দুই-হাতের মাঝে গিয়ে ওর গালে ঠোঁট ছোঁয়ালাম। আমি জানি এতেই আমার তুফান খানের রাগ গলবে। যা জানতাম তাই হলো, আমি গালে ঠোঁট ছোঁয়াতেই আমান হেসে দিলো। আমিও হেসে আমানের বুকে মাথা রেখে বললাম,
— আম্মু বলছিল কিছুদিনের মধ্যে অর্নিল আর সুমির বিয়ে ঠিক করবে আর…
আমান আমাকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করলো,
— আর?
— আর … ওদের সাথে সেদিন তোমার আর আমারও বিয়ে দেবে আবার।
আমি কথাটা বলে লজ্জা পেলাম সামান্য। আমান হেসে বললো,
— ভালোই তো। আবার বিয়ে মানে আবার বাসর। লাইফের প্রথম বাসর তো পুরো ঘেটে ঘ হয়ে গেছিলো।
— হুহ! সেটা তোমার জন্য। আমি কি বাঁধা…
— তুমি কি বলো…?
— ক..কিছু না।
— উহুম! কিছু বলছিলে তুমি। ওই বাঁধা দেবে …
— ধ্যাত! ছাড়ো তো তুমি।
আমি বেরিয়ে এলাম ঘর থেকে। ধুর! কেন যে আম্মুর কথা শুনে জানাতে গেলাম। আম্মু জানালেই ভালো হতো।
?
?