গল্পর নাম :#ভালোবাসি_বলেই_ভালোবাসি_বলিনা
#পর্ব_৯ : #spy
লেখিকা : #Lucky
ইথান আমার কপালে গভীর ভাবে কিস করল।
সাথে সাথে আমি ফ্রিজ হয়ে গেলাম আর চোখ বন্ধ করে নিলাম।
ইথান আমার চোখের উপরেও ঠোঁট স্পর্শ করলো। আর তারপর গালে।
“আ..আপনি….”আমার ঠোঁট রীতিমতো কাপতে লাগল।
আমার কথা শেষ হবার আগেই ইথান আমার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিল।
আমি চমকে উঠলাম। এটা কি হচ্ছে হঠাৎ!
ইথান আমার ওড়নায় হাত দেওয়ার সাথে সাথে আমি বলে উঠলাম, “এক মিনিট, ইথার আমি…।”
কিন্তু উনি ত শুনছেনই না।
আমি ওনাকে ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বললাম, “ইথান…ইথান…।”
হঠাৎই আমার এক হাত টান দিয়ে কেউ আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে বসিয়ে দিল।
আমি উঠে বসেই অবাক হয়ে গেলাম আর ইথানের দিকে তাকালাম।
“Are you stupid? ঘুমের মধ্যে এভাবে ইথান ইথান করছ কেন?” ইথান বিরক্ত হয়ে বলল।
তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে তার কাচা ঘুমের বারোটা বাজানো হয়েছে।
আমি লজ্জায় জলদি হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে নিলাম।
“আজব।” বলেই ইথান আবার শুয়ে পরল।
এসব বখাটে মার্কা স্বপ্ন কেউ দেখে!
ছি এরিন! তোর ডুবে মরা উচিত।
.
আমি ঘড়ির দিকে তাকালাম। সাড়ে তিনটার বেশি বাজে। এখনো সকাল হতে দেরি।
তাই গুটিগুটি মেরে আবার শুয়ে পরলাম।
এবার এক ঘুমে সকাল হয়ে গেল।
কিন্তু একটু বেশিই দেরি হয়ে গেল।
হয়তো এতসময়ে সবার খাওয়া দাওয়াও শেষ।
আমি দ্রুত ফ্রেস হয়ে নিচে নেমে গেলাম।
আপাতত থ্রিপিস-ই পরছি। হাত কেটে গেছে বলে কথা।
তবে ইথান বেরিয়ে গেছে। কালকের জন্য সরি বলা ত হলো না।
রাতেই বলতে হবে আজ।
।
নিজের জামাকাপড়ের অবস্থা বেহাল। মানে আলমারিতে রাখা আমার জামাকাপড় গুলো। গোছাতে হবে আজ সব।
এখান থেকে টেনেটুনে বের করে শুধু পরার কাজ পরলেই ত হবে না, গোছাতেও ত হবে।
তাই আমি নিজের জামাকাপড় গুলো সুন্দর ভাবে গোছানো শুরু করে দিলাম।
তবে নিজের টা শেষ করে মনে হলো ইথানের টাও গোছাই। যদিও তার টা গোছানোই আছে তাও ঘাটাঘাটি করতে ভালো লাগছে।
আমি তার সম্পুর্ন আলমারির জিনিস বের করে করে দেখতে লাগলাম।
আর দেখতে দেখতেই একটা ড্রয়ারে আমার দুলটা পেয়ে গেলাম।
দুলটা হাতে নিয়ে ভালমতো দেখলাম। হ্যা এটা আমারই দুল।
আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম।
অদ্ভুত ত! এটা উনি কোথা থেকে পেলো? মানে ওনার আলমারিতে এলো কিভাবে।
আমি হন্তদন্ত করে নিজের সাজার জিনিসের বক্সটা বের করলাম এটা দেখার জন্য যে আমার একটা দুল আছে কি না।
বক্সটার মধ্যে অন্য দুলটা পেয়ে আমি হা হয়ে গেলাম।
ইথান আমার দুল নিজের কাছে রেখে দিয়েছিল? ওনার কাছে কিভাবে এলো! কোথা থেকে পেল? আর পেলেও নিজের কাছে রেখে দিয়েছে কেনো?
কিছুই ত বুঝতে পারছি না।
আমি চোখদুটো সরু করে মনে মনে বললাম, আসেন আজ বাসায়। আপনাকে কাচা কাচা চিবিয়ে খাব আমি। ভাব নেওয়া?!
.
অপেক্ষা আর অপেক্ষা। কিন্তু আজ যেন সন্ধ্যা আর হচ্ছেই না।
আমি ত দুল হাতে নিয়ে বসে আছি।
আর মনে মনে নানা চিন্তাভাবনা করছি।
উনি তাহলে কবে থেকে আমাকে পছন্দ করে?
সেই ছোটো বেলা থেকে!
ছোটোবেলার সেই কথা আবার মনে পরে গেলো।
ইথানের মা সেদিন শাড়ি পরিয়ে দেওয়ার সময় গল্প করছিলেন।
ওনারা যেদিন আমাদের বাড়িতে প্রথম যান আমার বয়স তখন চার বা সাড়ে চার হবে।
আর ইথানের এগারো।
সেই বাসাতে আমাদের গেস্ট রুম না থাকায় ইথানদের আমার রুম টা ছেড়ে দিয়েছিলাম।
তখন সে ভুলবশত আমার ফুলদানি ভেঙে দিয়েছিল।
আর আমি ত কান্নাকাটি করে বাড়ি মাথায় তুলে ফেলেছিলাম।
সবাই বুঝালো নিউ একটা কিনে দেওয়া হবে। কিন্তু আমার তাও থামার নাম নেই।
আমার এই ভাঙাটাই এখনি ঠিক করে দিতে হবে। সবাই পরে গেল মহা ঝামেলায়।
ছোটো থেকে বাবা না থাকায় আদর দিয়ে দিয়ে বাদর বানিয়েছিল মা।
পরে আর কি!
ইথান নিজের হাতে গ্লু কিনে এনে আমার ফুলদানি জুড়ে দিলো।
সেটা পেয়ে আমি মহা খুশি হয়ে গিয়েছিলাম।
আর এত খুশিতে আমি বলেছিলাম যে আমরা একসাথে পুতুল খেলব আর নিজেদের পুতুলের বিয়ে দিব।
কিন্তু ইথান বলেছিলো যে সে পুতুল খেলে না।
আমি একটু চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম।
কিন্তু আমি পরক্ষণেই এক ঝলক হাসি দিয়ে বলে ফেলেছিলাম, তাহলে আমরা বিয়ে করে বিয়ে বিয়ে খেলতে পারি।
ইথান নিরলসভাবে বলেছিল, আমি তোমার মত অদ্ভুত মেয়েকে বিয়ে করব না।
ব্যাস এটুকুতেই আমার কান্না আবার শুরু।
তখনি ইথানের মা আমাকে থামানোর জন্য বলেছিলো, তুমি কেদো না। ও বিয়ে করবে না, ওর ঘাড় করবে! আমি নিজে বিয়ে দিবো তোমাদের। ঠিক আছে?
“সত্যি!” বলে আমি খুশিতে লাফিয়ে উঠেছিলাম।
কিন্তু ইথান ভ্রুকুটি করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
.
ফোন বেজে উঠার সাথে সাথে আমার ধ্যান ভাঙলো।
ফোনের দিকে তাকাতেই প্রেমার নামটা দেখলাম।
আমি ফোন তুলে কানে দিলাম।
“হ্যা বল। কি করছিস?” জিজ্ঞেস করলাম আমি।
“তুই আমাদের বিল্ডিংয়ে বাসা নিলি অথচ আমাকে বললিও না।” প্রেমা অভিমানী সুরে বলল।
“কি বলছিস আবোলতাবোল?!”
“নিস নি বাসা?” প্রেমা অবাক হয়ে বলল।
“না এখানেই ত আছি এখনো। তোর কেন মনে হলো? বললাম আমি।
“না, ইথানকে আমাদের বিল্ডিংয়ে দেখলাম। একটা মেয়ের সাথে একটা ফ্ল্যাটে ঢুকলো। ইথানকে ভালো মত দেখতে পেয়েছিলাম। আর মেয়েটাকে যদিও দেখিনি তাও হাসতে হাসতে কথা বলতে বলতে যাচ্ছিলো। আমি মনে করলাম তুই কিনা। মানে তোরা এখানে বাসা নিলি কিনা। তাও আমাকে না বলে।”
“মেয়ের সাথে! ফ্ল্যাটে! কোন ফ্ল্যাটে?” শুনেই আমার মাথা খারাপ হয়ে গেল। তাও আবার নাকি হাসতে হাসতে!
“হ্যা। ছয় তলার। আমি ছাদ থেকে সিড়ি দিয়ে নামছিলাম তখন দেখেছিলাম লিফট থেকে বের হতে। আচ্ছা শোন কাল কলেজ যাবি?…।”
আমি ফোন কেটে দিলাম। এখন আমার কিছু শোনার ইচ্ছে হচ্ছেনা।
এখন এই মেয়ে আবার কে!
ময়ূরী না দিশা? কোনটা? নাকি আরেকটা।
উফ মেজাজ বিঘড়ে যাচ্ছে আমার। আমি নিজের মাথার চুল দুই হাত দিয়ে টেনে ধরে মনে মনে বললাম, যদি গিয়ে দেখি অন্য মেয়ের সাথে গল্প করে বেড়াচ্ছেন তাহলে আপনার একদিন কি আমার একদিন।
কিন্তু ওই মেয়ে যদি ইথানের সাথে কিছু করে ফেলে।
চিন্তা করেই আমার কলিজা উড়ে গেল।
আমি দ্রুত পার্স নিয়ে ছুটলাম।
পিছন থেকে ইথানের মা অনেক বার ডাকলো আর বলল, কি হয়েছে!
পরে এসে বলব। বলেই আমি বের হয়ে গেলাম। তাড়াতাড়ি করে বাসার একটা গাড়ি নিয়ে ইথানের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলাম।
এখন ত মনে হচ্ছে রাস্তাই শেষ হচ্ছে না।
“জলদি চালান একটু।” বিরক্ত হয়ে বললাম আমি।
ড্রাইভার একটু ইনিয়েবিনিয়ে বলল, “এর চেয়ে জোরে চালালে ত এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে।”
এই ড্রাইভার বেটার মাসিক বেতন কমিয়ে যদি না দিয়েছি আমি!
“যেটা বলি সেটা শোনেন। এত বেশি পটপট করেন কেন?” রেগে বলে উঠলাম আমি।
ড্রাইভার ভ্যাবাচেকা খেয়ে একটু স্পিড বাড়ালো।
তাও পৌছাতে বেশ টাইম লাগলো। আমি একটুও সময় নষ্ট না করে দ্রুত নেমে ছয় তলাতে সিড়ি দিয়েই উঠে গেলাম।
তারপর হাপাতে হাপাতে ফ্ল্যাটের সামনে এসে দাড়ালাম।
এতটা পথ এসে এখন আমার কলিং বেল চাপ দিতে কেমন অসস্তি লাগছে।
মনে হচ্ছে, যদি খারাপ কিছু দেখি তাহলে!
যা শুরুই হয়নি তা আগেই শেষ হয়ে গেলে?
আমার হাত কাঁপতে লাগলো। আমি একটা নিঃশ্বাস ফেলে পরপর দুইবার কলিং বেল চাপলাম।
দরজা খোলার অল্প একটু দেরিও সহ্য হচ্ছে না। অজানা ভয় ঝেকে ধরেছে আমাকে। হার্টবিটও প্রচন্ড বেড়ে গেছে। তবে তা ভয়ে।
এক মিনিট পরেই একটা মেয়ে এসে দরজা খুলল। তাও পুরোটা না হালকা খুলে উঁকি দিলো।
সে অচেনা কাউকে দেখে ভ্রুকুচকে ফেলেছে রীতিমতো।
আর আমি তার গায়ের জামা দেখে প্রচন্ড ভাবে বিরক্ত হয়ে গেছি।
টাইট-ফিট ওয়েস্টার্ন পড়েছে কিন্তু ওড়না নেই গায়ে।
দেখেই গা জ্বলে গেল আমার। এটাকে দেখে প্রেমার আমার কথা মনে হলো কিভাবে? আমি এসব পড়ি?
যাইহোক এই মেয়ের সাথে সত্যিই ইথান এক ফ্ল্যাটে এত সময় আছে!
“কে আপনি? কাকে চান?” মেয়েটা প্রশ্ন করল।
আমি হাত মুষ্ঠি বদ্ধ করে নিলাম আর নিজেকে সামলে নিয়ে শক্ত মুখে তাকিয়ে বললাম, “ইথান কোথায়?”
মেয়েটা হা হয়ে গেল আর বলল, “ইথান? তার সাথে আপনার কি সম্পর্ক?”
আমি রাগে জ্বলে কিছু বলার আগেই ইথান এসে মেয়েটার পাশে দাড়ালো।
সাথে সাথে আমার ভিতরটা মুচড়ে উঠল।
ইথান আমাকে দেখে বেশ কিছুটা অবাক হলো।
হবে না-ই বা কেনো?
আমাকে ভুল সময়ে কিভাবে এক্সপেক্ট করবে?
“তুমি এখানে কিভাবে?” বলল ইথান।
আমি শুকনো মুখে তাকিয়ে রইলাম কিছুই বললাম না।
“তুমি চেনো? কে এটা?” মেয়েটা আকাশ থেকে পড়ে প্রশ্ন করল।
আমি রাগে জ্বলে উঠে বললাম, “চিনবে না কেনো? আমি ওর বউ হই ও আমার বর হয়। জামাকাপড় নেই? কিনে দেব? এসব পড়ে আমার ইথানকে…”
আমি আর বলতে পারলাম না। বলতেও বাধছে আমার। শ্বাসও দ্রুত গতিতে চলছে।
চোখে পানি আসতে চাইলেও আসতে দেবই না।
এই ফালতু মেয়েকে আমি বুঝে নিব।
তারা দুইজনই স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছে।
বেশি কিছু বলতে চেয়েও বললাম না কারণ ইথান নিজ ইচ্ছায় এসেছে। তাও নাকি হাসতে হাসতে।
কুত্তা একটা।
রাগ লাগলেও ইথানকে একা রেখে যাব না আমি।
তাই আমি ইথানের হাত ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে বাহিরে বের করে নিয়ে এলাম। আর আগে পিছে না তাকিয়ে ওনাকে নিয়ে সিড়ি দিয়ে হনহনিয়ে নেমে আসতে লাগলাম।
উনি কিছুই বলছেন না।
ভাল মন্দ কিছুই না।
আমি ওনার মুখের দিকে তাকাচ্ছিও না। আমার ভিতরটা জ্বলে গেলেও আমি চুপ করেই আছি।
পার্কিং এ ওনার গাড়ির কাছে এসে আমি ওনার হাত ছেড়ে দিলাম।
কিন্তু ওনার দিকে তাকালাম না। নিজের মত গাড়িতে উঠে বসে সিট বেল্ট বেধে নিলাম।
আমার বসার কয়েক সেকেন্ড পরেই ইথানও এসে গাড়িতে বসল।
আমি জালানার কাচের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম।
আমার মনের মধ্যে কেমন হচ্ছে সেটা শুধু আমিই জানি।
সবচেয়ে বেশি অবাক লাগছে যে উনি কিছুই বলছেন না।
আমি গাড়ির কাচের দিকে তাকিয়ে তাকে পর্যবেক্ষণ করে বুঝলাম সে যেন এটা গায়েই মাখায় নি এমন অবস্থা। তার মন মেজাজও স্বাভাবিক।
আমি অন্যমনস্ক হয়ে মাথা জালানার দিকে কাত করে রাখলাম।
জ্যাম না থাকায় জলদিই বাসায় এসে গেলাম। আর সবাইকে উপেক্ষা করে রুমে চলে এলাম।
আমাদের দুজনকে একসাথে আসতে দেখে শাশুড়ী আর কোনো প্রশ্ন করেনি। শুধু মুচকি মুচকি হাসছিলো।
আমি রুমে এসে ঘর অন্ধকার করে ডিমলাইটা জ্বালিয়ে দিলাম। তারপর বিছানায় বসে হাটুতে মাথা গুজে নিলাম।
খুবই অসস্তি লাগছে। কান্না আসছে না কিন্তু অনেক কষ্ট হচ্ছে।
তাও আমি ইথানকে কোনো প্রশ্ন করতে চাই না।
যদি বলে, হ্যা ওই মেয়েটাকে আমি পছন্দ করি। এজন্যই তোমাকে ভালো লাগে না!
যদি ডিভোর্স চায়?
ভেবেই শিউরে উঠলাম আমি।
.
ইথান রুমে এসে ঢুকলো। আমি তাও মাথা তুললাম না।
ইথান লাইট জ্বালালো না। বরং না জ্বালিয়েই ফ্রেস হয়ে জামা চেঞ্জ করে আমার পাশে এসে নিজের মতো শুয়ে পড়লো।
আমি মাথা তুলে তাকালাম। সে সোজা হয়ে শুয়ে মাথার নিচে এক হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।
আমি অবাক ছাড়া কিছুই হচ্ছি না।
তারমানে কি আমি যা ভাবছি তাই-ই সত্যি?
এতদিন তাহলে কি ছিলো? আমার দুলটা নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলো কেনো?
মাথা ব্যথাই হয়ে যাবে চিন্তা করে করে। তাও উওর ত পাব না। আর না প্রশ্ন করতে পারব।
তাছাড়া উনি ত কোনোদিনো বলেই নি ‘ভালোবাসি’ কথাটা।
আমি একটা নিঃশ্বাস ফেলে বিছানা থেকে নামতে লাগলাম।
সাথে সাথে ইথান আমার এক হাত ধরে নিল।
আমি থমকে গেলাম আর আস্তে আস্তে মুখ ঘুরিয়ে ওর দিকে তাকালাম। সাথে সাথে চোখে পানি চলে এলো আমার।
“আমি তোমাকে….”
ইথান কথা শেষ করার আগেই আমি ঝট করে ওকে জড়িয়ে ধরে ওর উপরই শুয়ে পরলাম। আর কাদতে কাদতে বলতে লাগলাম, “আমি মোটেও আপনাকে ডিভোর্স দেব না। মোটেও না, মোটেও না। মরে গেলেও না। আপনি শুধু আমার। ওই মেয়ে যা পড়ে আমিও পরব। ওই মেয়ে যা করে আমিও করব। প্লিজ প্লিজ আপনি….”
আমি আর বলতে পারলাম না। গলা ধরে এলো।
আমি শার্ট ভিজিয়ে ফেললাম ইথানের।
ইথান আমার মাথার উপর এক হাত আর পিঠে উপর আরেক হাত রেখে হালকা হাসির সাথে বলতে লাগল, “আমার স্টুডেন্ট সে। আগে পড়াতাম। আর তার বাবা আমার কলেজ থেকে ভার্সিটি লাইফের স্যার। আপাতত তিনি অনেক অসুস্থ যার কারণেই ওখানে যাওয়া। অতগুলো কথা না বলে ভিতরে যেতে পারতে।”
শোনার সাথে সাথে আমার মাথায় বাজ পড়ল।
নিজের নাক কাটা গেল আমার। আমি আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে মুখ লুকিয়ে নিলাম ইথানের বুকে।
“স্ট্রেঞ্জ! তুমি আমাকে সন্দেহ করেছো। মনে মনে সন্দেহটাকে সত্যিও ভেবে নিয়েছো। তাও ডিভোর্স দিবা না!” রসিকতা করে বলল ইথান।
সাথে সাথে আমি মুখ লুকানো অবস্থাতেই ওনার পেটে জোরে চিমটি কেটে দিলাম।
উনি তাও থামলেন না। বলতে লাগলেন, “অদ্ভুত তুমি।”
“হ্যা আমিই ত অদ্ভুত। আর আপনার ওই স্টুডেন্টই ত অনেক সদ্ভুত, তাইনা?” আমি রেগে বলে উঠলাম।
যদিও সদ্ভুত বলে কিছুই নেই। নতুন বাংলা শব্দ বানালাম আমি।
ইথান সেদিকে খেয়াল না করে বলল, হ্যা ঠিক।
সাথে সাথে আমার মেজাজ বিঘড়ে গেল।
আমি মাথা তুলে ওনার মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম, “ওকেই ত ভালো লাগবে! অসভ্য একটা মেয়ে। ওকে পড়াতে গেলে আপনার খবর আছে বলে দিলাম। তাছাড়া স্যারকে তুমি তুমি করে বলবে কেন?”
“ও অনেক ভালো মেয়ে, তুমিই উল্টো বুঝেছ।” অবাক হয়ে বলল ইথান।
এই কথা শুনে আমি রাগে লাল হয়ে বললাম, আপনি যদি আরেকবার ওকে নিয়ে সাফাই গান, আমিও মৃদুলের সাথে এক ফ্ল্যাটে গিয়ে থাকবো বলে দিলাম।
ওনার চোখমুখ শক্ত হয়ে গেল আমার শেষ কথাটা শুনে।
“কি বললা মাত্র?” থমথমে গলায় বলল ইথান।
“যা বলেছি তা আপনি ঠিকই শুনেছেন। আমি মৃদুলের সাথে…” বলতে বলতে ওনার চোখে মুখে রাগের ছাপ দেখে আমি চুপ হয়ে গেলাম।
“শেষ করো যা বলছিলা।” রাগী স্বরে বলল ইথান।
আমি ভড়কে গেলাম আর এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম।
কথাটা বলে শেষ ত করতে পারব কিন্তু পরবর্তীতে যা বাঁশ দেবে সেটা ত নিতে পারব না।
“Dare You finish the line.” দাতেদাত চিপে বলল ইথান।
আমি ভয়ে কাচুমাচু হয়ে গেলাম।
ভালো এরিনের আত্মা আমার কানে কানে বলল, “নিজের কবর নিজেই খোড়ছস ছেমড়ি, আমি স্বর্গে গেলাম, তুই নরকে যা। যা মর।”
(চলবে…)