গল্পর নাম :#ভালোবাসি_বলেই_ভালোবাসি_বলিনা
#পর্ব_১৭ : #জেলাসি
লেখিকা : #Lucky
উনি আমার হাতটা ওনার এক হাত দিয়ে ধরে নিজের মুখ থেকে সরিয়ে নিলেন।
আর অন্যহাত দিয়ে আমার গাল স্পর্শ করলেন।
আমি মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
উনি কোমড় জড়িয়ে ধরে আমাকে একদম কাছে টেনে নিয়ে এলেন।
আমি চমকে তার চোখের দিকে তাকালাম। তবে সাথে সাথেই আবার চোখ নামিয়ে নিলাম।
নিঃশ্বাসও ভারি হয়ে এলো।
উনি আমার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলেন।
আমি চোখ বন্ধ করে ওনার কাধের কাছের শার্ট খামচে ধরলাম।
তবে সাথে সাথেই আমি ওনার কাধে হাত দিয়ে ঠেলে ওনাকে সরিয়ে দিলাম আর তারপর নিজের মুখটা এক হাতে ঢেকে চোখ মুখ কুচকে ফেললাম।
কারণ মুহুর্তেই খারাপ লাগতে লাগল।
“Are you ok?” উনি বুঝতে পেরে বললেন।
ওনার কথা শেষ হতে না হতেই আমি ওনার গায়ের উপর বমি করে দিলাম।
উনি তাতে একটুও রিএক্ট করলেন না।
“এখন ঠিক আছো?” চিন্তিত হয়ে বললেন উনি।
না সূচক মাথা নেড়ে আমি কেদে দিলাম।
“কাদছ কেনো?” অস্থির হয়ে বললেন উনি।
“আপনাকে আমি আগেই বলেছিলাম জোর করে এতগুলো খেলে আমি বমি করে দিব। বমি করতে একদম ভালো লাগে না আমার।” মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে বললাম আমি। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরতে লাগল।
উনি আমার চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বললেন “ওকে রিল্যাক্স, আর জোড় করব না।”
.
সুস্থ হতে বেশ সময় লেগে গেল। জ্বর এখন হালকা পাতলা হলেও এই বমি আর মাথা ঘোরার সমস্যাটা বেশি বাড়তে লাগল।
উনি এই কয়েক দিনে আমার প্রচুর খেয়াল রেখেছেন। বলতে গেলে এখন একটু ভাল আছি।
উনি আজ দরকারি কাজের কারণে একটু অফিসে গেছেন। আর যাওয়ার আগে সময় মতো খাওয়ার আর রেস্ট নেওয়ার হুকুম দিয়ে গেছেন।
সব মানলেও এই রেস্ট নেওয়া আর ভালো লাগছেনা।
আমি ড্রয়িং রুমের সোফায় এসে বসে টিভি অন করলাম।
বাসায় রান্নাবান্নার তোড়জোড় চলছে।
কে আসবে কে জানে! এমনিও আমাদের বাসায় অতিথি আসার ক্ষান্তি নেই।
খানিক বাদেই কলিং বেল বাজলো।
আলিয়া তাড়াহুড়ো করে গিয়ে খুলে দিল।
আমি কারা এসেছে দেখার জন্য তাকালাম।
সেজো মাসি আর কাজিনরা এসেছে। আমি খুশির সাথে এগিয়ে গেলাম।
“হায় রে তুই ত অনেক শুকিয়ে গেছিস! কেনো ঠান্ডা লাগাস বল ত!”
আমি প্রত্যুত্তরে শুধু হাসলাম।
“তোমারা আসবে আমি জানতামই না। যাইহোক নিরব আসে নি?” বললাম আমি।
তখনি পিছন থেকে কেউ মাথায় আলতো করে বারি দিলো।
আমি মাথায় হাত দিয়ে ঘুরে তাকালাম।
“তুই! দরজা ছাড়া ঢুকলি কিভাবে!” অবাক হয়ে গেলাম আমি।
“ম্যাজিক।” হাস্য উজ্জল মুখে বলল নিরব।
“ম্যাজিক না ছাই।” মুখ ভেংচি দিয়ে বললাম আমি।
“ভিতরে আয় আগে সবাই।” এগিয়ে আসতে আসতে বলল মা।
.
আমি সোফায় বসে চানাচুর চিবুতে চিবুতে সবার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। এখনি ফ্রেস হয়ে সবাই আসবে। কতদিন পর সবাই একসাথে। বাহিরের দেশে থাকে বলে পাঁচ বছরে একবার দেখা হয়।
আচমকা নিরব এক টান দিয়ে আমার হাত থেকে চানাচুরের প্লেট নিয়ে নিলো।
আমি কয়েক সেকেন্ড হা হয়ে তাকিয়ে তারপর চোখ পাকিয়ে বললাম, “উফ, আবার শুরু তোর আমাকে জ্বালানো!”
“বিয়ে করেছিস তবে বউ বউ লাগছে না।” আমাকে একটু ভালো করে দেখে বলল নিরব।
“বউ বউ লাগা লাগবে না। এদিকে দে প্লেট।”
আমি প্লেট নিতে গেলেই ও আমার হাতটা ধরে নিয়ে ভনিতা করে বলল, “কেম্নে বিয়ে করে নিলি আমাকে একা ফেলে!”
আমি হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, “চুপ করবি?”
“তোর না আমাকে বিয়ে করার কথা!”
“তুই কেনো এসেছিস বল ত! অসহ্য একটা।” বিরক্ত হয়ে বললাম আমি।
“অহ এখন অসহ্য! ছোটো বেলায় পুতুল খেলার সময় কি বলতি মনে নেই?”
তারপর নিরব আমাকে ভেঙ্গিয়ে বলল, “আমরা বড় হয়ে বিয়ে করবো ওকে? কত জনকে যে এভাবে প্রপোজ করেছিস ঠিক আছে!?”
নিরব জোরে জোরে হাসতে লাগল।
“অসহ্য।” বলেই আমি অন্যদিকে তাকালাম। আর সাথে সাথেই আমার চোখ পড়লো ইথানের চোখে।
উনি ভ্রুকুচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
ওনাকে দেখার সাথে সাথে আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল।
কখন এসেছে উনি! তার চেয়েও বড় বিষয় কি কি শুনেছে উনি।
আমাকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিরব প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে ঘুরে তাকালো।
ইথানকে দেখে নিরব ভ্রু উঁচু করে একবার আমার একবার ইথানের দিকে তাকিয়ে চট করে আমার পাশে এসে দাড়িয়ে বলল, “এটাই আমার সতিন না! একেও কি ওইভাবেই প্রপোজ করেছিলি?”
“চুপ করবি তুই?” দাতে দাত চিপে বললাম আমি।
ইথান কয়েক সেকেন্ড শক্ত মুখ করে তাকিয়ে তারপর উপরে চলে গেল।
আমি শুকনো মুখ করে শুধু তার যাওয়া দেখলাম। আজ আরেকটা ঝড় আসবে।
ইথান যাওয়ার সাথে সাথে আমি সজোরে নিরবের মাথায় একটা বাড়ি মারলাম।
নিরব মাথা ঘষতে ঘষতে হা হয়ে বলল, “আজব! আমাকে মারছিস কেনো! আমি ত সতিনকে মেনে নিয়েছি। সতিন আমাকে না মানলে আমার কি দোষ।”
কথাটা বলেই নিরব হেসে দিলো।
আমি দাত কিরমির করে কিছু বলতে চেয়েও পারলাম না।
চুপচাপ চিন্তা করতে লাগলাম উপরে যাব, কি যাব না!
নিরব চানাচুরের প্লেট নিয়ে খেতে বসে গেলো।
ওর দিকে রাগী চোখে একপলক তাকিয়ে তারপর সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলাম।
ঘরে ধীর পায়ে ঢুকতেই ওনাকে একদম সামনে পেলাম। এতেই আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল।
উনি থমথমে মুখে তাকিয়ে টাই টা খুলতে খুলতে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন।
আমি শুকনো ঢোক গিলে পিছিয়ে গেলাম।
“আ…আসলে আ…আমি…”
“আসলে তুমি? কি?” ঠান্ডা গলায় বলল ইথান।
আমার পিঠ দেয়ালে এসে ঠেকলো। আমি এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে লাগলাম।
“Random ছেলেদের এভাবে প্রপোজ করেছো তুমি?”
“ত…তখন ত…ছোটো ছিলাম আমি।” চোখ নামিয়ে বললাম আমি।
“এত ছোট বয়স থেকেই বিয়ের জন্য লাফালাফি করতা!”
“লাফালাফি বলতে কি বুঝাতে চাচ্ছেন!” চোখ পাকিয়ে বললাম আমি।
ইথান আমার দুইপাশে হাত রেখে ভ্রুকুটি করে বলল, “আমাকে চোখ রাঙাচ্ছো?”
“হ্যা, তো?”
ইথান সরু চোখে আমার দিকে তাকালো।
আমি মুচকি হেসে ইথানের কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর কানেকানে বললাম, “চুপচাপ স্বীকার করেন যে আপনি জেলাস।”
“Why would I be jealous?” তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেই সে সরে গেল।
ধরে পরে গেলে যা হয়।
আমিও ভাব নিয়ে বললাম, “তাহলে আমি কত জনকে প্রপোজ করেছি, না করেছি তাতে আপনার কি!”
সে শুধু একবার কড়া চোখে তাকালো।
আমি কিছুই জানিনা ভান করে তাকিয়ে রইলাম আর হাসিটা অনেক কষ্টে আটকে রাখলাম।
সে ফ্রেস হতে চলে গেল।
রাতে খাবার টেবিলে হলো আরেক কাহিনী।
নিরব আগেভাগে এসে আমার পাশে বসে পড়লো।
আমি শুধু একবার ইথানের দিকে তাকালাম।
সে আমার দিকে একটা শীতল চাহনি দিয়ে আমার সোজাসুজি অন্য একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ল।
“আহারে কি শুকিয়ে গেছিস, বেশি বেশি খা।” বলেই নিরব দুইটা মাছ তুলে আমার প্লেটে দিল।
মনে মনে নিরবকে তুলে আছাড় মারার ইচ্ছে হলেও কিছু বললাম না। দুটো মাছ আমি কোনোদিন খাইনা।
একটু হাসার চেষ্টা করে বললাম, “তুইও খা।”
তারপর ইথানের দিকে তাকালাম।
সে শক্ত মুখ করে তাকিয়ে আছে। অর্থাৎ সে যে জ্বলছে তা আমি ভালই টের পেলাম।
যা করছি তার জন্য পরে পস্তাবো কিনা জানিনা, তবে তাকে এখন ইচ্ছা মত জ্বালাতে ইচ্ছে করছে।
আমি ইচ্ছে করেই নিরবের সাথে গল্প জুড়ে দিলাম।
আচমকা সে অর্ধেক খাবার রেখে উঠে দাঁড়িয়ে গেল।
সবাই অবাক হয়ে তাকালো।
“I’m done.” আমার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলেই সে চলে গেল।
আমার মা কি হয়েছে বুঝতে না পেরে আমার দিকে তাকালো।
আমি একটা ঢোক গিলে শুকনো মুখ করে তার চলে যাওয়া দেখলাম। তারপর একটু হাসার চেষ্টা করে মাকে বললাম, “ম…মনে হয় কাজ আছে তার।”
“অহ আচ্ছা।” সুর টেনে ভ্রু উঁচু করে বলল নিরব।
আমি চোখ পাকিয়ে ওর দিকে তাকালাম।
ও ফিসফিস করে আমার কানে কানে বলল, “ধুর, সতিন বেশি জেলাস, এমন সতিন নিয়ে সংসার করা অনেক জ্বালা। ভাবলাম তোর সাথে এবার বিয়েটা করে সতিন নিয়ে সংসার করব! সেটার শখ মিটে গেল মাত্র।”
“চুপ কর।” বলেই আমি আস্তে করে ওর মাথায় বাড়ি দিলাম।
নিরব মিটমিটিয়ে হাসতে লাগল। এ অবস্থায়ও সে মজা করছে।
ওদিকে ইথান এখন আমার কি করে কে জানে!
আমি জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম।
“শোন টিপস দিই। ১০০% কাজ হবে। রুমে যা, গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধর, সাথে একটা কিস, সব রাগ ঠান্ডা হয়ে যাবে।” নীচু আওয়াজে বলে নিরব উঠে গেল।
ওর এসব ফালতু টিপস আমি ট্রাই করার মত সাহসই পাব না, আর কাজ করা ত দূরেই থাক!
আমি সাহস যুগিয়ে রুম পর্যন্ত এলাম। যদিও এতেই ইনিয়েবিনিয়ে আমার বিশ মিনিট সময় লেগে গেল।
একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে রুমে ঢুকে এলাম।
রুম আবছা অন্ধকারে ভরা। এর মধ্যে সে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে ফোনে কিছু করতে ব্যস্ত ছিল।
তবে আমার উপস্থিতি টের পেয়েও তাকালো না।
তারমানে রাগ মাথার উপর অব্দি উঠে আছে।
আমি গুটিগুটি পায়ে তার কাছে এগিয়ে গিয়ে দাড়ালাম।
তারপর একটু গলা ঝেড়ে মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইলাম। কিন্তু পারলাম না।
“ইথান আমি…” আমার কথা শেষ হবার আগেই সে সেখান থেকে সরে বিছানার দিকে গেল।
তারপর নিজের মত এক সাইডে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পরল।
আমি যে তার সাথে কথা বলছিলাম, তা সে যেন শুনতেই পায়নি!
আমি বাকা চোখে তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলাম। তারপর তার পাশে গিয়ে শুয়ে তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।
“হাত সরাও।” রাগী স্বরে বলল ইথান।
“রাগ করেছেন?” আমি কোমলভাবে বললাম।
উনি হুট করে আমার হাতটা সরিয়ে দিলেন। এতে আমিও আবার পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে নিয়ে দোষী গলায় বললাম, “ভুল হয়ে গেছে আর হবে না। আপনাকে আর জ্বালাবো না।”
উনি কিছুই বললেন না।
তাই আমি ওনাকে একপ্রকার টেনে নিজের দিকে ঘোরালাম।
সে ভ্রুকুচকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বলল, “এখন কেন এসেছো? গল্প করা শেষ?”
আমি চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে বললাম, “বললাম ত আর গল্প করব না।”
উনি একটা নিঃশ্বাস ফেলে আবার অন্যদিকে ফিরতে গেলেন। সাথে সাথে আমি তার শার্টের কলার হাতের মুঠোয় ধরে নিলাম।
উনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একবার আবার হাতের দিকে তাকিয়ে তারপর থমথমে গলায় বললেন, “এখন খারাপ লাগছে না? আমি খাওয়াতে গেলেই ত তোমার যত খারাপ লাগা শুরু হয়ে যায়।”
উফ, কয়েক মিনিটেই এই ছেলে এত জেলাস হয়ে গেছে! এখন ঠান্ডা হতে কত সময় নিবে কে জানে!
তাই আমি আর কিছু না বলে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম আর বললাম, “গুড নাইট।”
|
|
“রেডি হও।” উনি কপাল কুচকে তাকিয়ে বললেন।
আমি অবাক হয়ে বললাম, “কোথায় যাব?”
“বাসায়। তোমাকে বাসায় রেখে তারপর আমি অফিস যাব।”
যা বুঝলাম তা হলো, ওনার জেলাসির কারণে এখন উনি আমাকে আর নিজের বাসায় রাখবেন না।
“আপনি সন্দেহ করেন আমাকে যে আমি পালিয়ে যাব নিরবের সাথে?” কটাক্ষ করে বললাম।
“বলা যায় না, এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য করতেও পারো।” শক্ত মুখ করে তাকিয়ে বলল ইথান।
আমি হা হয়ে গেলাম।
“আপনার মাথা ঠিক আছে?”
“আমার ঠিকই আছে। সমস্যা তোমার মাথায়। জলদি রেডি হয়ে নিচে আসো।” বলতে বলতে সে বেরিয়ে গেল।
আমি একটা নিঃশ্বাস ফেলে রেডি হওয়ার জন্য মনস্থির করে নিলাম। কারণ সে এখন মানবেই না। রাগ এখনো নাকের ডগায় রেখে দিয়েছে সে।
রেডি হয়ে বের হতেই মাথা ঘুরে উঠলো। আমি ব্যালেন্স রাখতে না পেরে ড্রেসিং টেবিলটা আঁকড়ে ধরে আস্তে আস্তে মেঝেতে বসে পরলাম।
দ্রুত শ্বাস নিতে নিতে ড্রেসিং টেবিলে মাথা রাখলাম।
হঠাৎ হঠাৎ এত শরীর খারাপ হওয়ার বিষয়টা আর ভালো লাগছে না।
অনেক দিন ত হলো! আর কত!
আমার চোখে জল চলে এলো।
“কি হয়েছে তোমার?” বলতে বলতে ইথান দ্রুত আমাকে কাছে এগিয়ে এল।
আমি মাথা তুলে কাদো কাদো চোখে তার দিকে তাকালাম তারপর তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
“তোমার আবার খারাপ লাগছে?”
আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়লাম।
উনি আমার মুখটা তুলে ধরে চোখের জল মুছে দিলেন আর বললেন, “It’s ok. সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার আগেই ডক্টর দেখানো উচিত ছিল। আজই দেখাবো।”
“আজই? কাল হ…..।”
“তোমার থেকে advice চাইনি আমি।” তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আমার কথার মধ্যেই উনি বলে উঠলেন।
আমি আর কিছু বললাম না।
কারণ বলে লাভ হবে না।
.
অল্প সময়ের মধ্যে অনেক প্রকার টেস্ট করে ফেলা হলো।
আপাতত এক মহিলা ডক্টরের সামনে বসে আছি। আমার পাশেই ইথান বসে আছে। ডক্টর মহিলাটা নার্সের দিয়ে যাওয়া রিপোর্ট খুলে বসেছেন।
“সিরিয়াস কিছু?” ইথান বলল।
যদিও রিপোর্ট আমার তবে ইথানকে দেখে মনে হচ্ছে ওর রিপোর্ট। কারণ সে যথেষ্ট টেনশনে পরে গেছে।
এদিকে আমার মোটেও টেনশন হচ্ছে না।
“ভয়ের কিছুই ত নেই। বরং ভালো খবর। আপনি প্রেগন্যান্ট। মা হতে চলেছেন আপনি।” হাসিমুখে বলল ডক্টরটা।
শোনার সাথে সাথে আমার হাতে থাকা ফোনটা ধপ করে নিচে পরে গেল।
আমি হতবুদ্ধি হয়ে ডাক্তারটা মহিলার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
আসলে এদের সমস্যা কি সেটাই ত বুঝিনা। নার্স এসে রোম্যান্সে বাধা দেয়।
আর ডাক্তার উল্টাপাল্টা বলে সংসারই ভেঙে দিতে চায়। কিছু না করে বাচ্চা কি উড়ে উড়ে আসবে?
কোথা থেকে গাজা খেয়ে পাস করেছে কে জানে!
এখন আবার আমার সংসারে আগুন দিতে চাচ্ছে।
“ক কি সব উল্টাপাল্টা বলছেন?” আমি সাহসী ভঙিতে বলতে চেষ্টা করলাম।
উনি রিপোর্টটা আমার দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে হাসিমুখে বললেন,”হ্যা, তিন সপ্তাহ প্রায়। এজন্যই আপনার এমন বমি হচ্ছে আর মাথা ঘুড়ছে।”
আমি রিপোর্ট হাতে নিয়ে দেখতে লাগলাম।
রিপোর্ট ত তাই বলছে।
এখন কি আমার ডিভোর্সটা হয়েই যাবে! কিন্তু আমি প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলাম কিভাবে?
আমি ভয়ে ভয়ে ইথানের দিকে তাকালাম।
সে ভ্রুকুচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
“আ…আমি সত্যি কিছু করিনি। এ…এসব মিথ্যা কথা। বিশ্বাস করেন।” বলতে বলতে কেদে দিলাম।
(চলবে…)