ভালোবাসি পর্ব-১৪ এবং শেষ পর্ব

0
1190

#ভালোবাসি
#অন্তিম_পর্ব
#সুমাইয়া_জাহান

হলুদের শাড়ি আর ফুল দিয়ে বানানো গহনা পড়ে স্টেজে বসে আছি।কিছুক্ষণ পর পর একজন করে এসে একটু হলুদ লাগিয়ে মুখের মধ্যে একটা করে মিষ্টি ঢুকিয়ে যাচ্ছে। আর আমি তাদের সবাই কে হাসি মুখে বিদায় জানাচ্ছি। অর্ক ভাইয়ের পরিবারের লোকেরা তো আছেই আমার অতিরিক্ত যত্ন করার জন্য। সবাই আমকে পুরো ঘিরে বসে আছে।নাচ গানও চলছে ভিষন ভাবে।এতো সব হইচই এর মধ্যে আমার ভিষণ মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে।আমি তো আবার অনুষ্ঠান শেষ না হওয়ার আগে এখান থেকে উঠতেও পারছিনা।কাউকে কিছু বলতেও পারছি না।আর এদিকে আমার মহামান্য বেস্টু আর বোন তাদের দেখা পাওয়ার সৌভাগ্য আমার এখনো হয়নি।আমাকে সাজিয়ে এখানে বসিয়ে দিয়ে যে সেই কখন গেছে এখনো লাপাত্তা! রেহানকেও আজ একবারের জন্য দেখিনি।মাথা ব্যাথা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কিন্তু এখন তো আর উঠতে পারবো না তাই দাঁতে দাঁত চেপে ব্যাথা সহ্য করে যাচ্ছি। এছাড়াতো আর কোনো উপায়ও নেই।

ঘন্টা দুয়েক পর অনুষ্ঠান শেষ হলো।তখনই ওই দুই মহারানীর আগমন ঘটলো।দুজনেই শাড়ি পরার কারনে তারাতাড়ি হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছে তাই দুই হাত দিয়ে শাড়ি কুঁচি ধরে ধরে হেঁটে আসছে।দুজনেই পরনে হলুদ রঙা শাড়ি দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে দুজনকে।রনিত ভাইয়ার কথা মতো তিহাকে বসন্ত পরির মতোই লাগছে এখন।সত্যি ভাইয়া নাম টা দারুণ দিয়ছে।ভাবতেই একটা মুচকি হাসি দিলাম ওরা কাছে আসতেই মুখ টাকে গম্ভীর করে রাখলাম।তিহা এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,

—- ” সরি সরি রাগ করিস না বোইন আমার।বিশ্বাস কর আমরা ইচ্ছে করে করিনি।বিয়ে বাড়ির এতো কাজ ছিলো যে আন্টি পুরো হাঁপিয়ে গিয়েছিলো।তাই আমাদের কে বললো একটু সাহায্য করতে!আন্টিকে সাহায্য করতে গিয়েই তোর কাছে আসতে পারনি।বিলিভ মি!”

পাশ থেকে মাহিও তালে তাল মিলিয়ে বললো,

—- ” হ্যাঁ আপুই মায়ের জন্যই আমরা আসতে পারিনি।ট্রাস্ট করো আমাদের কোনো দোষ নেই!”

আমি সেই কখন থেকে একা বসেছিলাম।আর উনারা এখন এসে অযুহাত দেখাচ্ছে! আবার রাগ করতেও মানা করে।ওদের দিকে একটা রাগী লুক দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে এলাম।আর ওরা দুজনেই ফুস করে একটা শ্বাস ফেললো।

রুমে এসেই শাড়ি চেঞ্জ করে এই সন্ধেবেলাতেই আবার শাওয়ার নিলাম।মাথা ব্যাথাটা একটু কমানোর জন্য কিন্তু ফলাফল শূন একটুও কমেনি।ঔষধও খেয়েছি তবুও মাথা ব্যাথাটা একটু যাচ্ছে না।বরং আরো বেড়ে যাচ্ছে। মাথায় দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বসে আছি। তিহা রুমে এসে আমার এই অবস্থা দেখে আমাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে আমার কাঁধে হাত রেখে নরম গলায় জিজ্ঞেস করলো,

—- ” মাথা ব্যাথা করছে মিহু?”

একই ভাবে বসে মাথা নেরে বললাম,

—- ” হুম! ভিষণ মাথা ব্যাথা করছে।ঔষধও খেয়েছি তাতেও কিচ্ছু হচ্ছে না।”

—- ” তুই তাহলে ছাদে গিয়ে একটু দাঁড়া প্রকৃতির হাওয়াতে একটু ভালো লাগবে।আমি ততোক্ষণে তোর জন্য আন্টিকে বলে কফি করে আনছি।তাতে মাথা ব্যাথাটা কমবে অনেকখানি!”

—- ” ঠিক আছে আমি যাচ্ছি। তুই কিন্তু তারাতাড়ি চলে আসবি!”

আমি কথাটা বলেই ছাদের দিকে রওনা হলাম। আর তিহাও কফি বানাতে রান্নারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলো।মাঝ পথেই রনিত আর মাহির সাথে দেখা হয়ে যায় ওর।রনিত তিহাকে দেখে ভিষণ খুশি। মনে হচ্ছে ওর জন্যই অপেক্ষা করেছিলো।তিহাকে থামিয়ে দিয়ে বললো,

—- ” বসন্ত পরি আমাদের সাথে গ্রাম ঘুরতে যাবে?মাহি আর আমি এখন গ্রাম ঘুরতে যাচ্ছি। শুনেছি তুমিও নাকি গ্রাম ঘুরতে চেয়েছিলে।সন্ধেবেলা কিন্তু গ্রাম ঘুরতে ভিষন ইন্টারেস্টিং লাগে।আমাদের সাথে যাবে নাকি?”

তিহার সত্যি গ্রাম ঘুরতে খুব ইচ্ছে করছে কিন্তু মিহির কথা ভেবে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো,

—- ” এখন যেতে পারবো না।অন্য সময় হলে যেতাম।মিহির খুব মাথা ব্যাথা করছে।তাই ওর জন্য কফি৷ বানাতে যাচ্ছি। আপনারা আজ যান আমি বরং অন্য দিন যাবো!”

—- ” ওহ্ এই ব্যাপার! মিহির খেয়াল রাখার জন্য একজন আছে।উনি উনার দায়িত্ব ঠিক পালন করবে। তোমার মিহিকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।তুমি আমাদের সাথে গ্রাম ঘুরতে চলো তো!”

মাহি তিহার হাত ধরে বললো,

—- ” রনিত ভাইয়া ঠিকই বলছে আপুই এর জন্য আমার জিজু আছে। তুমি এখন আমাদের সাথে চলো। ”

তিহা দ্বিধা দন্দ নিয়ে রনিতকে প্রশ্ন করলো,

—- ” কিন্তু রেহান ভাইয়া কি জানেন নাকি মিহি মাথা ব্যাথার কথা?”

রনিত একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো,

—- ” রেহানের নজর মিহির উপর চব্বিশ ঘণ্টাই আছে।আর তোমার সিউর হওয়ার জন্য বলছি হ্যাঁ রেহান জানে মিহি অসুস্থতার কথা!এবার তো চলো!”

তিহা তারপরও যেতে চাইলো না।ওরা একরকম জোর করেই নিয়ে গেছে ওকে।রনিত যতোই বলুক রেহানের কথা তিহার মনে মিহির জন্য একটা চিন্তা রইয়েই গেলো।

ছাদে এসে রেলিং ধরে দাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে প্রকৃতির ফুরফুরে হাওয়া গাঁ লাগাচ্ছি। প্রকৃতির ফুরফুরে হাওয়াতে মাথা ব্যাথা না কমলেও শরীর মন দুটোই ভালো হয়েছে।আজ প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।কেউ একজন ছাদে আসলো।আর আমার দিকেই হেটে আসছে।তিহাই হবে হয়তো।তাই আর চোখ খুললাম না।আমার পাশে এসে একটা মগ ছাদে রেলিং এর পর রেখে গম্ভীর গলায় বললো,

—- ” তারাতাড়ি কফিটা খেয়ে নেও!”

রেহানের গলার আওয়াজ পেতেই চট করে চোখ টা খুলে উনার দিকে অবাক হয়প তাকালাম। আমার কফি লাগবে উনি কি করে জানলেন?কৌতুহল মেটাতে প্রশ্নটা করেই ফেললাম,

—- ” আপনি কি করে জানলেন আমার কফি লাগবে?আর কফি বা পেলেন কোথায়?উমম….তিহার থেকে এনেছেন?তিহা নিজে না এনে আপনার হাতে পাঠালো কেন?ও তো বলেছিলো ও নিজে নিয়ে আসবে আমার জন্য! তাহলে?”

উনির আমার দিকে না তাকিয়ে আগের মতে গম্ভীর ভাবেই বললেন,

—- ” কফিটা এনেছিলাম তোমার ভালোর জন্য। এক মগ কফির জন্য যদি এতো কথা শুনতে হয় আগে জানলে কখনোই আনতাম না।তোমার যখন এটা ভালোই লাগছে না তখন আমিই খেয়ে নিচ্ছি। ”

কথাটা বলেই রেহান কফির মগটার দিকে হাত এগোতেই আমি এক ঝটকায় মগটা হাতে নিয়ে জোরপূর্বক হেসে বললাম,

—- ” আমি কখন বললাম আমার ভালো লাগেনি?আমার তো ভিষন ভালো লেগেছে।”

যা বজ্জাৎ লোক বিশ্বাস নেই সত্যি সত্যিই কফিটা খেয়ে ফেলতে পারে।এখন কিছু বলা যাবে না।তাহলে আমার বেচারা কফির মগ খানা উধাও হয়ে যেতে পারে।আর কিছু না ভেবে কফিটা খেতে লাগলাম।রেহান মিহির কান্ড দেখে মনে মনে হাসলো। আজ সারাদিনই আড়াল থেকে মিহিকে দেখেছে।তখনই বুঝতে পেরেছে ওর মাথা ব্যাথা!তাই সবার আড়ালে রান্না ঘরে গিয়ে কফি বানিয়ে মিহির জন্য এনেছে।

কফিটা খাওয়াতে সত্যি ম্যাজিকের মতো মাথা ব্যাথা টা অনেকটা কমে গেলো।বেশ আরাম বোধ হচ্ছে এখন।কফির মগটা রেখে রেহানের দিকে তাকিয়ে বললাম,

—- ” কফিটা আনার জন্য অনেক ধন্যবাদ!কফি টা……..”

আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই উনি হনহন করে ছাদ থেকে চলে গেলেন।আমি তো অবাক হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম।

—- ” একটা কফিই তো এনেছে?এতো ঢং দেখানোর কি আছে!এমন ভাব দেখাচ্ছে মনে হচ্ছে আমি কেউ না।একটা অচেনা মানুষের জন্য এটা করেছে।আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না?এর হিসাব আমি শুধে আসলে তুলবোই তুলবো!নাহলে আমি মিহিই না….. তাহলে আমি কে?সে পরে দেখা যাবে আমি কে হুম!”

সকালে ঘুম ভাঙ্গলো মাহি আর তিহার একসাথে ডাকে।এই দুজন এখন সবসময় একসাথেই থাকে।যা করবে দুজন একসাথেই করবে।এখন একজন “আপুইইই” আরেকজন “মিহুহুহু” ডাকে আমার সাধের ঘুমটা ভাঙ্গলো।কানে হাত দিয়ে ওদের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,

—- ” সমস্যা কি তোদের সবসময় আমার পিছনে কেন লাগিস?আমার এতো সাধের ঘুমটা কেন ভাঙ্গালি?”

তিহা রাগী গলায় বললো,

—- ” ওই আজ তোর বিয়ে ভুলে গেছিস? বিয়ের দিনও পরে পরে ঘুমাবি?”

—- ” বিয়ের সাথে আমার ঘুমের কি কানেকশন? আরে বাবা বিয়ে কি এখন নাকি? বিয়েতো সেই কখন!এখন একটু আমাকে ঘুমাতে দে।ওহে বিয়ের আধা ঘণ্টা আগে ডেকে দিস তখন রেডি হয়ে একে বারে বিয়ের পিরিতে বসবো নে।মনে রাখিস আধা ঘণ্টা আগে!”

কথাটা বলে আবার শুয়ে পরলাম।ঠিক তখনই বইরে থেকে মা জননীর কন্ঠে ভেসে আসলো,

—- ” মাহি তিহা ঘুমের রানীর ঘুম ভাঙ্গছে নাকি আমাকে আসতে হবে?”

মা জননীর কন্ঠ পেতেই লাফিয়ে উঠলাম।কারণ মা যদি আসে তাহলে এক বালতি পানি দিয়ে আমাকে এখানেই গোসল করিয়ে ছাড়বে।তার থেকে ভালো আমি নিজেই উঠে যাই।আমার কান্ড দেখে মাহি আর তিহা ঘর কাঁপানো হাসিতে ফেটে পরলো। ওদের দিকে একটা রাগী লুক দিয়ে ওয়াস রুমের ঢুকে পরলাম।এতে ওদের হাসির মাত্রা আরো বেড়ে গেলো।

ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখি ওরা চলে গেছে।মা হয়তো ডেকেছে!হঠাৎ অর্ক ভাইয়ার কথা মনে পরলো।তাই তারাতাড়ি ফোনটা হাতে নিয়ে অর্ক ভাইয়া কে একটা কল দিলাম।প্রথমবার দিতেই রিসিভ করলেন ভাইয়া।

—- ” আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া ভালো আছেন?”

—- ” এতোক্ষণ ভালো ছিলাম না তোমার ফোন পেয়ে এখন আলহামদুলিল্লাহ দারুণ ভালো আছি।”

ওপাস থেকে অর্ক ভাইয়া বললো।আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম,

—- ” ধন্যবাদ ভাইয়া। আমি আমার ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বিয়েটা ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য। এরজন্য আপনাকে আমি বলে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না।”

—- ” তোমাদের দুজনের ভালোবাসার জোর টা বেশি ছিলো তাই তোমরা এক হতে পেরেছো।আর আমার ভালোবাসা টা এক পক্ষ ছিলো তাই হয়তো আমার সাথে তোমার বিয়ে হয়নি।আর এগুলো সব সৃষ্টিকর্তাই ঠিক করে রেখেছেন।এখনে আমি কিছুই করিনি সবই আল্লাহ ইচ্ছা! ”

—- ” হুম! আমি দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনাকে আপনার মনের মতো একজন জীবন সঙ্গী খুব তাড়াতাড়ি খুঁজে দেন!”

—- ” আচ্ছা বাদ দেও ওসব। আমি তোমার কাছে একটা জিনিস চাইবো দিবে?ভয় নেই এমন কিছু চাই বো না যা তুমি দিতে পারবে না!”

—- ” না না না বলুন ভাইয়া আপনি যা চাইবেন আমি অবশ্যই দেওয়ার চেষ্টা করবো!”

—- ” তোমাকে তো জীবন সঙ্গী হিসেবে আল্লাহ তায়ালা আমার কপালে লেখেনি!আমি কি তোমার থেকে বন্ধুত্ব পেতে পারি?”

—- ” অবশ্যই কেন নয়!আমরা আজ থেকে খুব ভালো বন্ধু ওকে!”

রেহান আমার রুমের দিকে আসছে তা দেখে অর্ক ভাইয়া কে বললাম,

—- “ভাইয়া রেহান আসছে! আমি আপনার সাথে পরে কথা বলবো!”

ফোনটা কেটে দিয়ে কানে ধরে রেখেই রেহান কে না দেখার ভান করে বললাম,

—- ” আপনি বিয়ের পার হানিমুনে যেখানে নিয়ে যাবেন আমি সেখানেই যাবো।আপনার পছন্দই আমার প……”

কথাটা শেষ হওয়ার আগেই রেহান আমার হাত থেকে ফোনটা কেরে এক আছারে ভেঙ্গে ফেললেন।আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে চিৎকার দিয়ে বললেন,

—- আমি তোমাকে ভলো ভাবে সবাই কে বুঝিয়ে সবার মতে বিয়ে করতাম। কিন্তু তোমার সাহস এতো বেড়ে গেছে যে এই ছেলের সাথে……এবার আর কারো কথা ভাববো না।

কথাটা বলেই আমাকে জোর করে টানতে টানতে নিয়ে গেলেন। গাড়িতে উঠিয়ে সোজা কাজি অফিসে নিয়ে গিয়ে রেজেস্টারি করে বিয়ে করে নিলেন।তারপর আবার বাড়ি এসে বাবার সামনে দাড়িয়ে মাথা নিচু করে বললেন,

—- ” আংকেল আমরা দুজন দুজন কে ভালোবাসি। আমাদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হওয়ার মিহি বিয়েতে রাজি হয়েছিলো।আর আজ এমন একটা পরিস্থিতি হয়ে ছিলো যে আমি বাধ্য হয়ে আপনাদের মত না নিয়েই ওকে বিয়ে করে ফেলেছি।আমায় ক্ষমা করবেন।”

পুরো বাড়িতে নিরবতার চাদরে ঢেকে গেলো।কিছুক্ষণ পর নিরবতা ভেঙ্গে বাবা রেহানের কাঁধে হাত রেখে বললেন,

—- ” আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতা তাহলে এখানেই বিয়েটা হতো।কষ্ট করে কাজি অফিসে যাওয়া লাগতো না।মিহি মা একদিন আগে আমাদের সব বলেছে।আর আজকে বিয়ের যে আয়োজন গুলো দেখছো এগুলো তোমার আর মিহি মার জন্যই করা হয়েছে।তোমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য তোমাকে কেউ কিছু বলেনি।তবে এটা ভেবো না কাজি অফিসে বিয়ে করেই পার পাবে এখন আবার তোমাদের সবার সামনে বিয়ে হবে।”

রেহান আবার কথায় অবাকে হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

—- এগুলো সত্যি!

আমি মনমরা হয়ে বললাম,

—- হুম!

—- তাহলে ওইসব কি ছিলো?

—- সেগুলো পরে বলবো এখন আগে বিয়েটা হোক।

তারপর আমাদের সব নিয়ম মেনে আবার বিয়ে হলো।এতো কিছুর মধ্যে আমার সাধের ফোনটা দুই টুকরো হয়ে গেলো।সেই দুঃখে আমার মন এখনো খারাপ। অবশ্য আমারও দোষ ছিলো।আমি একটু বেশিই জ্বালিয়েছি রেহান কে।সব নিয়ম শেষ করতে করতেই সন্ধে হয়ে গেলো।তারপর রেহানের বাড়ি মানে আমার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে আমারা বেরিয়ে পরলাম।সবাই অবশ্য থাকতে বলেছিলো আজ রাতটা কিন্তু উনি থাকেন নি।রনিত আর তিহাকে আগের গাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।পরের গাড়িতে আমরা দুজন এসেছি।মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে নেমে পরলেন আর আমাকেও টেনে নামালেন।আমি নামতেই একটা গোলাপ হাতে নিয়ে আমার সামনে হাটু গেড়ে বললেন,

—- ভালোবাসি ভিষণ ভালোবাসি তোমায়! আজো কি আমার উত্তর টা বলবে না মিহু পাখি?

আমিও উনার সাথে হাটু গেড়ে বসে ফুলটা হাতে নিয়ে উনার কপালে কপাল রেখে বললাম,

—- ” ভালোবাসি ভিষণ ভালোবাসি!”

___________________সমাপ্ত____________________

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে