#ভালোবাসায়_তুমি_আমি (পর্বঃ২)
#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি
নীলাআআআ দাঁড়াও (ইমরান খান নীলার বাবা খানিকটা চেঁচিয়ে)
নীলা তার বাবার ডাকে পিছনে তাকায়ে কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছে কি বলবে তাকে মি.খান—-(হ্যাঁ নীলা তার বাবাকে মি.খান বলেন বাকিটা গল্প পরে বুঝতে পারবেন )
-তারপর বললেন তুমি নাকি তোমার মায়ের গায়ে উঠিয়েছো!!!
-তোমার জন্য কি করে নি তোমার মা আর তার প্রতিদান তুমি এই দিলেতোমার মা’য়ের গায়ে তুলে।তোমার নিজের মায়ের জায়গায় না বসাতেই পারো কিন্তু সম্মানটা তো করতেই পারো। -ছোট থেকে কি করেনি তোমার জন্য তোমার মা।
নীলাঃ মাথা নিচু করেই তার বাবাকে বলে আমি তো মিসেস খানের গায়ে হাত উঠাই নি!ছোট থেকেই দেখে তো দেখে আসছি ওই মহিলা যেটা বলছে তাই শুনে এবং বিশ্বাস করে আসছেন।,,,, আদোও কি কখনো সত্য মিথ্যা যাচাই করেছিলেন।–করেননি –কারণ আপনার কাছে সেই সময় কোথায়। –আপনি তো টাকা পয়সা -‘বিজনেস নিয়েই ডুবে থাকেন । —না ভালো ব্যাক্তিত্বের অধিকারি হতে পেরেছেন না ভালো বাবা–।
মি.খানঃনীলাআআআআ!
তোমার সাহস হয় কি করে আমার মুখের উপর কথা বলার।
-তোমার সাহস দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।,,,, আর একবার আমার সাথে বা তোমার মার সাথে ফারদার কোনো বেয়াদবি করছো তো।
তোমাকে এই বাসা থেকে বের করে দিবো।
তোমার এতো অধঃপতন হয়েছে যে তুমি আমার মুখের উপর কথা বলো। এতো দিন তোমার মায়ের থেকে শুনেছি আজ তো নিজেই দেখে নিলাম —-
মি.খানের চেচামেচিতে এতক্ষণে বাড়ির সবাই উঠে এসেছে ড্রুইং রুমে মিসেস খান –দাদি–মুন্নি-জিনীয়া বাদে বাকি সবাই ড্রইংরুমে চলে এসেছে (কারণ জিনীয়া ঘুমিয়েই আছে)
নীলা তার বাবার কথায় একটু ও অবাক হয়নি কারন এইটা নতুন কিছু না,,, সে জানে প্রায় তার নামে রিশিকা খান মি. খানের কাছে মিথ্যা কথা আর মিথ্যা নাটক করে তার বাবার মনে আমার নামে বিষ ঢালে আর সে ভালো সেজে থাকে।।।।
রিশিকাঃ নেকা সুরে বলে থাক ইমরান ও এখনো ছোট আছে ও না বোঝে ওমন করছে। আমার জন্য ওকে আর বকো না প্লিজ। আমি তো মা সন্তানের ভুল গুলা কি মনে রাখে বলো।আমি ওকে ক্ষমা করে দিয়েছি।
নীলার দিকে বাঁকা হেসে
তারপর মিসেস শাহানা খান ( নীলার দাদি)ইমরান তুই সকাল সকাল কি শুরু করেছিস হ্যাঁ নীলা কলেজে যাচ্ছিলো অকে যেতে দে –নীলা তুই যা।
মুন্নি দাদির কথা শুনে বললো হ্যাঁ আপু তুমি যাও তো–
তো নীলা আর কোনো কথা না বলে কলেজের জন্য রওনা দিলো।
– মুন্নি তার বাবার কাছে গিয়ে আদুরে গলায় বলে অহহো ডেড! তোমার তো আমার দিকে নজরি নেই।–তোমার যে ছোট্ট একটা প্রিন্সেস আছে। সেটা কি তোমার মনে নেই তুমি আমাকে ভুলেই গেছো।(মুন্নি এইবার ক্লাস টেন খুবই মেধাবি স্টুডেন্ট সে)
মি.খানঃকি যে বলো মামুনি আমি কি তোমাকে ভুলতে পারি তুমিই তো আমার সবকিছু প্রিন্সেস —
মুন্নি গদোগদো হয়ে হেসে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরলো —
———————————————————
–
–
–
–
–
–
শহরটাকে উপেক্ষা করে চৌধুরী কর্পরেশন আকাশ ছোয়া বাড়িটা দাড়িয়ে ছিলো সর্টলেক সেক্টর বি-এর বুকে।
এমন একটা জায়গায় যেখানে বাড়ির ভাড়াও আকাশ ছোয়া। —-পর পর দুটো সারিতে সুন্দর ভাবে দাঁড়িয়ে আছে কর্মচারিরা বসের আসার অপেক্ষায়।
—কর্মচারিরা ধৈর্য ধরে বসের আসার অপেক্ষা করছিল।
–একটা বিলাস বহুল নজর কারা গাড়ি এসে পার্কিং করলো। আকাশ ছোয়া বাড়িটার সামনে।
—প্রথমেই যেটা চোখে পরলো কালো স্যুট -প্যান্ট পরা সরু সরু দুটো পা মনে হলো যেন মাটিতে পরার সাথে সাথেই পা দুটো আসলে সবার মনে জায়গা করে নিলো।
–তারপর যেই লোক টার মুখের ফিচার গুলো দেখা গেলো–উপস্থিত লোকে জনের প্রায় হুস খোয়ানোর পালা।
—-এক জোড়া ধারালো ভ্রু তার মুখের বৈশিষ্ট্য যেন আরোও ফুটিয়ে তুলেছে!
—তার একিরকম ধারালো দুই চোখের দৃষ্টি আর ঠোঁটের ওপরের হালকা বাকা হাসিটাও নজর কারার মতো।
তিনি কি আদোও হাসছিলেন নাকি হাসছিল না –যেখানেই তার দৃষ্টি পরছিল সেখানে উপস্থিত সবাই তাকে দেখে মাথা নিচু করে নিচ্ছিলো -।
—গুড মর্নিং মিস্টার চৌধুরী!! — দুসাড়ি কর্মচারি একযোগে তাকে শুভেচ্ছা জানালো। —তার একটা হাত পকেটে গোজা। -ছোট ছোট কুচকুচে কালো চুল সু্র্যের আলোই চিকচিক করছে।
—সবার নজরের মধ্যে দিয়ে মিস্টার চৌধুরী তার দৃষ্টি সজা রেখে সিরি দিয়ে ধীরে ধীরে উপরে উঠা শুরু করলেন–।
চারপাশের পরিবেশ খুব সুন্দর আর মনোমুগ্ধকর ছিলো! সবকিছু নিয়ম মাফিকই চলছিলো!
–এমন সময় বাবা বলে একটা কমল কন্ঠে শুনে পিছনে ফিরে তাকালেন মিস্টার শুভ্র চৌধুরী।
—একটা নরম কচি সুরের আওয়াজ চারপাশের নিরবতা ভেঙে দিলো!!
–পরের মুহুর্তেই কোত্থেকে একটা সুন্দর বাচ্চা বেরিয়ে এলো ভিরের পিছন থেকে।
সবার সামনে দিয়ে এলো মেলো টলমল পায়ে দৌড়ে আসছে।
–ছোট্ট মেয়েটি মনে হয় সবে মাত্র তিন বচ্ছরের– কেউ কোনো রকম রিয়াক্ট করার সু্যোগ পাওয়ার আগেই শিশুটি দৌড়ে এসে মিস্টার চৌধুরীর সামনে দাড়ালো।
—বাবাআ!–বাবাআ! বাবাআ! এই বলে মেয়েটি মিস্টার চৌধুরীকে পা জাপ্টে জড়িয়ে ধরলো —
উপস্থিত প্রত্যেকের কানে এই রিনরিনে আওয়াজ টা যেন অভিসাপের মতো বেজে উঠলো!
আর অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।—আর বলতে লাগলো বাবা মানে মেয়ে কোত্থেকে আসলো।।
এটা তো ওয়েল নুন ফেক্ট…….। যেখানে মিস্টার চৌধুরীর কোনো দিন কোনো নারীর সঙ্গের প্রতি কোনো আসক্তিই ছিলো না।
তাহলে হঠাৎ তিনি একটা সন্তানের বাবা হলেন কিভাবে আর তার থেকেও বড়ো কথা শিশুটি তাকে বাবা বলে সম্বোধন করছে কেনো?
—সবাই অবাক হয়ে তাকিয়েই রইলো বাচ্চা মেয়েটার দিকে —
উফফহু ছাড়ো —মিস্টার চৌধুরী দাতে দাত চেপে বরফ ঠান্ডা গলায় বললেন।
একি সাথে নিচে বাচ্চাটার দিকে তার নজর পড়ে বাচ্চাটা তার পা জড়িয়ে ধরে আছে।।
মিস্টার চৌধুরীর বিরক্তি স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছিলো।
– তিনি কখনো কোন নারীর গায়ে হাত অব্দিই দেইনি।। সেখানে একটি সন্তানের জন্ম দেওয়া তো এবস্যুলুটলি ইম্পসিবল।
তার চার পাশের সবাই তার দিকে তাকিয়ে ছিল।
আর বাচ্চাটাকে অবলোকন করছিলো। আর তারাতারি বাচ্চা টাকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য এগিয়ে গেলো কিছু রক্ষীরা।
কিন্তু বাচ্চাটার দিকে এগিয়ে যেতেই কিছু একটা দেখতে পেয়েই এক অপরুপ ভাবে তাকিয়ে রইলো।।
মিস্টার চৌধুরী এই বাচ্চাটা আর কিছু
বলতে পারলো না।।
বাচ্চাটি কেদে উঠে! –সে যেন বুঝতে পেরেছিলো সে অবান্ছিত তাকে লোকগুলো ধরে নিতে এসেছে।
বাচ্চাটির বড় বড় চোখ থেকে অঝোর ধারায় পানি পরছিলো।
ঠিক তার পরেই বাচ্চাটা ওপর দিকে তাকাতেই তার নরম কচি ছোট্ট মুখ টা সবার নজরে পরলো।
কি মায়াবি চাহনি বাচ্চাটার যে কেউ এই বাচ্চা টাকে দেখলে গলে যাবে।
—মুখটার ফিচার গুলো কি মিল মিস্টার চৌধুরীর সাথে দেখার মতো!
বাট বাচ্চাটার এই ভয়ের কারণ টা কিন্তু দেহরক্ষীদের ছিল বলে মনে হচ্ছে না
—তার ভয়ের কারণ ছিল একটা কাগজের টুকরো ।
রক্ষিরা লক্ষ্য করলেন বাচ্চাটার গায়ের সাথে একটা ডিএনএ রিপোর্ট ঝুলছে ।
তারা মিস্টার চৌধুরীকে বললেন বাচ্চার গায়ে একটা ডিএনএ আছে!!! —-
চলবে—-