#ভালোবাসার_ভিন্ন_রং
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ১৩
মাথাটা প্রচন্ড ভার হয়ে আছে রোদের। চোখ খুলতে চাইলেও খুলতে পারছে না। প্রচন্ড বেগ পেতে হচ্ছে। বহু কষ্টে চোখ খুললো রোদ এখনও সব ঝাপসা ঝাপসা মনে হচ্ছে। কয়েকবার পলক ফেলে চোখ পরিষ্কার করার চেষ্টা করলো। হাত দিয়ে চোখ ডলতে নিলেই টান পরলো হাতে। বা হাতটা কারো হাতের মুঠোয় সযত্নে সংরক্ষিত হয়ে আছে। ঘাড় কাত করে দেখার চেষ্টা করলো রোদ ওমনি টান লাগলো ঘাড়ে ব্যাথায় “উফ” আওয়াজ করলো। তখনই চিন্তিত কয়েকটা মুখ ভেসে উঠলো চোখের রেটিনায়। নিজের দুই ভাইকে দেখেই ভ্রু কুচকালো রোদ। এরা কেন এখানে? ভাবতেই মনে পরলো কি হয়েছিলো তখন। ঘাবড়ে গেল রোদ। নিজের দিকে তাকালো। অল্প নড়াচড়ায় শরীরের ব্যাথাগুলো তাজা হলো। নজরে এলো হাত ধরে বসে থাকা আদ্রিয়ান। ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো রোদ। ওর দিকেই মৃত দৃষ্টিতে দৃষ্টিপাত করলো আদ্রিয়ান। রোদ ফুঁপিয়ে উঠে বললো,
— আমি আপনাকে ডেকেছিলাম।
উত্তর দেয় না আদ্রিয়ান। শুধু অপলক তাকিয়ে রইলো নতুন করে অঙ্কুরিত হওয়া ভালোবাসার নারীটির পানে। আদ্রিয়ানের ভাবভঙ্গি বুঝলো না রোদ। আদ্রিয়ান কেন এমন করে তাকিয়ে আছে। রোদের ফুঁপানোর শব্দ কমে এলো। পাশে থেকে রাদ রোদকে তুলে বসিয়ে দিলো। অগোছালো চুলগুলো একত্রে করে বেঁধে দিয়ে বললো,
— কিছু হয় নি। এসব নিয়ে পরে কথা হবে। রেস্ট কর এখন। আমরা যাই। তুই যাবি? নিয়ে চলি বাসায়।
আদ্রিয়ান এতক্ষণ কিছু না বললেও “তুই যাবি” এই শব্দগুলো ঠিকই কানে বিঁধলো। সবাই কেন আদ্রিয়ান থেকে সব নিয়ে যেতে চায়? কেউ কি আদও বুঝে আদ্রিয়ানের হৃদয়ের যে র*ক্তক্ষরণ হয়? যখন কেউ রোদকে নিয়ে যেতে চায় তখন যে আদ্রিয়ানের বুকে চাপ অনুভব হয়। উহু কেউ বুঝে না। স্বয়ং রোদ ও না। বুঝবে কিভাবে?আদ্রিয়ান তো আর সবার মতো করে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বেড়ায় না।
রাদের প্রশ্নের দিলো না রোদ তাকিয়ে রইলো আদ্রিয়ানের দিকে। কি চায় এই লোক? কোন কথা কেন বলে না? আদ্রিয়ানের কোন সাড়া না পেয়ে রোদই নিচু গলায় বললো,
— আজ যাব না। তোমরা এখানে কেন?
— পরে কথা হবে এ বিষয়ে। আজ যাই অনেক রাত হয়ে গিয়েছে।
বলেই রোদকে জড়িয়ে ধরলো রাদ। রুদ্র এতক্ষণ এক সাইডে দাঁড়িয়ে থাকলেও বোনকে রেখে যেতে হবে ভেবেই জড়িয়ে ধরে রাখলো। তখনই রুমে প্রবেশ করলো বাকি সবাই। রোদের হালচাল জিজ্ঞেস করলো। পরিচিত সকল মুখের সাথে কিছু অপরিচিত মুখও দেখলো রোদ। কারা এরা এ নিয়ে বেশি ভাবলো না।
রাদ আর রুদ্র বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেল। রুদ্র যাওয়ার সময় দরজার সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকা মিশানকে জড়িয়ে ধরে বিদায় জানালো। সিড়ি দিয়ে নামার সময়ই রাদ ধাক্কা খেলো কারো সাথে। আর এটা যে ইচ্ছেকৃত ছিলো তাও বুঝলো। শুধু মাথা তুলে চোখ গরম দিলো মানুষটাকে। তবুও কি বেহায়া মানুষ নড়লো না উল্টো মুখে লাজুক হাসি দিলো। রাগ চটা রাদের রাগ গেল বেড়ে। শুধু মাত্র বোনের শশুর বাড়ী নাহলে আজকে কি করতো রাদ নিজেও জানে না।
আরিয়ান এসে আবার রোদকে চেক করে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো,
— কিছু খায়িয়ে মেডিসিন দিয়ে দিস।
পরপরই রোদের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বললো,
— ইনজেকশনের জন্য শরীর ব্যাথা থাকবে একটু। ভয়ের কিছু নেই। ঠিক আছে?
রোদ মাথা নাড়লো ভদ্র মেয়ে মতো। মানে হ্যাঁ ঠিক আছে, কোন ভুল নেই। একে একে সবাই চলে গেল। শুধু রয়ে গেল আদ্রিয়ান আর দরজায় দাঁড়ানো মিশান। রোদ উঠতে নিলো চেঞ্জ করার জন্য তখনই আবার শরীরে ব্যাথা হলো। মুখ কুচকে যেতেই আদ্রিয়ান ওকে ধরলো। বসিয়ে রেখে ওয়াসরুমে নিজেই সব কাপড় রেখে আসলো। রোদকে ধরে নিয়ে যেতেই রোদ দরজায় তাকিয়ে বললো,
— তুমি বাইরে কেন দাঁড়িয়ে আছো? ভেতরে এসো।
মিশান নড়লো না। একটুও না। রোদ এগিয়ে এসে মিশানের হাত ধরতেই মিশান রোদের হাত ধরে কেঁদে দিলো। চমকে গেল রোদ। চমকালো আদ্রিয়ান নিজেও।
মিশান ভয় পেয়েছে। ভীষণ ভাবে। হারানোর ভয় তারাই পায় যারা মূল্য বেশি দেয়। আর যারা একবার হারিয়ে শিক্ষা পায় তারা? তারা ভীতু থাকে প্রিয় জিনিসটাকে নিয়ে। আগলে রাখার চেষ্টায় থাকে। রোদ মিশানের দুই হাত ধরে খাটে এনে বসালো। আদ্রিয়ান নিজে মিশানের পাশে বসে জড়িয়ে ধরে চঞ্চল শ্বাস ফেলে বললো,
— কি হয়েছে বাবা? মিশান তাকাও বাবার দিকে।
মিশান তাকালো না। রোদ নিজের ব্যাথা ভুলে মিশানের মাথায় হাত দিয়ে চিন্তিত কন্ঠে বললো,
— মিশান? এই কি হয়েছে? বলো।
মিশানের উত্তর এলো না। আদ্রিয়ান কিছুটা আন্দাজ করে পারলো। তপ্ত শ্বাস ফেলে বললো,
— রোদকে নিয়ে ভয় পেয়েছো?
— হু।
আদ্রিয়ান শান্ত হলো। ছেলেটা ওর বড্ড একা। বিগত ছয় মাসে নিজেকে সামলেছে ঠিকই কিন্তু এখন রোদকে পেয়ে অনেকটা চঞ্চলতা ভর করেছিলো ওর মধ্যে যা আজকে রোদকে ঐ অবস্থায় দেখে ভয়ে পরিণত হয়েছে।
মেডিকেলে~
আদ্রিয়ান যখন দেখলো রোদ আসছে না অনেকক্ষণ ধরে তখন একটু খটকা লাগে। এর মধ্যে আবার রাদ আর রুদ্র এসেছে রোদকে সারপ্রাইজ দিতে কিন্তু ভাবে নি তারা নিজেরাই সারপ্রাইজ হয়ে যাবে। মিশান আর রুদ্র একে অপরের পরিচয় জেনে তো টাস্কি খেলো কিছুক্ষণের জন্য। সেম স্কুলে, সেম ক্লাসে পড়ে দু’জনই। কলিজার বন্ধু দু’জনে। অথচ এতদিন জানতোই না বন্ধু থেকে তারা মামা-ভাগিনা হয়ে আছে সেই কবে। এ নিয়ে হাসাহাসি করলো কতকক্ষণ কিন্তু আদ্রিয়ান ভাবছে রোদকে নিয়ে। ওদের রেখে উঠে ওয়াসরুমের সামনে আসতেই দেখলো দুই জন মেয়ে আর একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। সাথে ইয়াজের কোলে রোদ অচেতন অবস্থায়। আদ্রিয়ান রোদের এমন অবস্থা দেখে কিছুক্ষণ শুধু দাঁড়িয়েই রইলো। কি হয়েছে ওর প্রাণটার? একটু আগেও না হাসিখুশি ছিলো? তাহলে এখন কেন ওমন করে আছে? কেমন এলোমেলো শাড়ী নিয়ে ইয়াজের কোলে পড়ে আছে। ওর ভাবনার মাঝেই ইয়াজ আদ্রিয়ানের সামনে এসে বললো,
— ভাই। তারাতাড়ি চলুন। রোদের অবস্থা ভালো না। ওর মনে হচ্ছে আবারও এট্যাক এসেছিলো।
সম্বিত ফিরলো আদ্রিয়ানের। ইয়াজের থেকে কোলে তুলে নিলো অচেতন প্রিয় নারীকে। ইয়াজ তারাতাড়ি নার্স ডেকে একটা কেবিনে নিলো রোদকে। রাদ সহ বাকি সবাই স্তব্ধ হয়ে গেল। কি হয়েছে কেউ ই বুঝলো না। শুধু মাত্র কান্নার আওয়াজ আসছে মিশির। মাকে ওমন দেখে ছোট্ট মিশি বুঝলো মা ভালো নেই এতেই কান্না জুড়ে দিলো ভাইয়ের কোলে। আরিয়ানও হসপিটালে থাকায় রোদকে ডক্টর চেক করে একটা ইনজেকশন পুশ করে দিলো। রেস্ট নিতে বলে চলে যান তিনি। আরিয়ান থাকায় তেমন টেনশন নেই তাই বাসায় নিয়ে আসে রোদকে।
_______________
রোদ চেঞ্জ করে আসতেই দেখলো মিশান আর আদ্রিয়ান রুমেই বসা। আদ্রিয়ান হাত ধুয়ে এসে রেদকে বসিয়ে ভাত মেখে ওর মুখে তুলে দিলো পরপরই আবার মিশানের মুখে তুলে দিলো।রোদ আড় চোখ করে তাকালো। এই আদ্রিয়ান কথা বলছে না কেন? মিনমিন করে রোদ জিজ্ঞেস করলো,
— মিশি কোথায়? খেয়েছে ও?
আদ্রিয়ান উত্তরে রোদের মুখে খাবার ভরে দিলো। রোদ খাবার মুখে নিয়ে বসে রইলো। মিশান বুঝলো তার বাবা অতিরিক্ত রেগে আছে তাই তো এমন চুপ করে আছে। পরিস্থিতি সামলাতে মিশান আস্তে করে বললো,
— মিশিকে খালামনি অনেক আগেই খায়িয়ে ঘুম পারিয়ে দিয়েছে।
রোদ চমকে তাকালো ঘড়ির দিকে। তাকাতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। রাত ১ বাজে এখন। রোদ কি না সেই বিকেল থেকে বেহুস ছিলো অথচ ওর কোন তাল ই নেই। রোদ কিছু বলার আগেই আদ্রিয়ান আবারও ওর মুখে খাবার ভরে দিলো। রোদ মুখ কুচকে খাবার মুখে নিয়েই অম অম করতে করতে বললো,
— সব ঠুসে দিন আমার মুখে।
মিশান ফিক করে হেসে দিলো। আদ্রিয়ান নিজেও খেয়ে সব গুছিয়ে রেখে আসলো। মিশান চলে গিয়েছে আগেই। রোদ পা ঝুলিয়ে বসে আছে আর হাই তুলছে বারবার অথচ ঘুমাচ্ছে না। আদ্রিয়ান মেডিসিন খুলে রোদের হাতে দিয়ে পানি এগিয়ে দিলো। রোদ কিছু বলতে যেয়েও বললো না। চুপ করে নিয়ে টুপ করে গিলে ফেললো। আদ্রিয়ান কিছু না বলে লাইট অফ করে শুয়ে পরলো। এবার রোদের কান্না উগড়ে আসতে চাইছে।
রোজকার মতো তো আজ বুকে টেনে নিলো না আদ্রিয়ান। না ই মাথায় হাত বুলিয়ে আদর দিলো। কয়েক দিনের হলেও তো রোদের নতুন অভ্যস এখন আদ্রিয়ান। আদ্রিয়ানের বুকে লেগে ঘুমালে যেই ঘ্রাণ আসে তাতে মাতাল মাতাল লাগে রোদের। মন চায় ঐ বুকে ডুকে দেখতে কি আছে তাতে এত কেন সুখ সুখ লাগে ঐ বুকে? কথা ও বলছে না আদ্রিয়ান। কি করেছে রোদ? কিছু করলে শাস্তি দিক এভাবে এরিয়ে যাচ্ছে কেন? এই অসভ্য পুরুষ কি বুঝে রোদের ছোট্ট হৃদয়ে যে কিছু কিছু হয়। কেমন কেমন লাগে। মনে হয় আদ্রিয়ান যেন কোন মাতাল করা হাওয়া যাতে করে ভাসতে চায় রোদ। জীবনের প্রথম অনুভূতি কুড়াতে ব্যাস্ত রোদ অথচ যাকে ঘিরে এসব সেই আজ চুপ। কেন আদ্রিয়ান আজ আদরে আদরে হুমকি দিচ্ছে না। প্রয়োজনে একটু বকে দিক রোদ কিছু মনে করবে না। তাও তো কিছু বলুক। হায় আফসোস একটা রা করলো না আদ্রিয়ান।
রোদ আস্তে করে আদ্রিয়ানের পিঠে হাত রাখলো। না কোন সাড়া নেই। রোদ যেন একটু সাহস পেল পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আদ্রিয়ানের ঘাড়ের সাইডে মুখ গুজে দিয়ে বললো,
— আমি কি কিছু করেছি? করলে সরি। শাস্তি দিন আমায়। বকুন। তবুও প্লিজ কথা বলুন। আমার ভালো লাগে না আপনি কথা না বললে।
সহসা চমকালো রোদ। আদ্রিয়ান কি কাঁদছে? তাই তো মনে হচ্ছে। রোদ মুখ তুলে দেখতে চাইলো কিন্তু তার আগেই আদ্রিয়ান ওকে সরিয়ে দিলো। উঠে বসে পরলো। রোদ কিছু বলতে চাইলেই গম্ভীর কণ্ঠ শুনা গেল,
— ঘুমিয়ে পড়ো।
এমন কথার ধরণের বিপরীতে আর কিছু বলতে পারলো না রোদ। চুপ করে শুয়ে পরলো কিন্তু ঘুম বুঝি আসে? হঠাৎ করে ফোন আসতেই চমকে গেল রোদ। এতো রাতে কে কল করলো ভাবতেই হাতে নিয়ে দেখলো ইয়াজ। এতক্ষণে যেন সব মনে পরলো রোদের। এতশত ভাবনায় ভুলেই গিয়েছিল কি হয়েছিলো তখন। হঠাৎ রোদ ঘামতে লাগলো। আদ্রিয়ান কলের আওয়াজে তাকাতেই দেখলো রোদের অবস্থা। কিছু হওয়ার আগেই আদ্রিয়ান ফোন নিয়ে অফ করে রাখলো। রোদের হাত ধরে ধমকিয়ে বললো,
— কথা শুনো না হ্যাঁ? বেয়াদব হচ্ছো দিনকে দিন। ঘুমাতে বলি নি?
কেঁপে উঠল রোদ। কেমন করে ধমকালো আদ্রিয়ান। অভিমানে টাইটুম্বুর রোদ বালিশে মুখ গুজে শুয়ে পরলো। আদ্রিয়ান ও রোদের দিকে কাত হয়ে শুয়ে রইলো। এক মিনিট দুই মিনিট এই তো তিন মিনিট আর হতে পারলো কই? রোদ আস্তে আস্তে এগিয়ে এসে বুকে ডুকে পড়লো। এতশত চিন্তা ভাবনার মাঝেও হাসি ফুটলো আদ্রিয়ানের মুখ জুড়ে। এ যেন প্রচন্ড দাবাদাহে কেউ ঝামটা মে’রে পানি দিলো। এই তো সেই পাখিটা যে দিনশেষে নীড়ে ফিরে এলো। বুকের ভেতরে ডুকতে তার কতশত জোড়াজুড়ি। কত তোড়জোড় এই বুকে ডুকার। অথচ এই কন্যার কি কোন হুস আছে যে এই বুক জুড়ে দখল নিয়ে বসে আছে সে। আদ্রিয়ান আদুরে হাত বুলালো রোদের মাথায় এতে করে রোদ একটু বুকে ঢুকার চেষ্টা বাড়ালো। হাসলো আদ্রিয়ান পরক্ষণেই মুখটা যথেষ্ট গম্ভীর করে জিজ্ঞেস করলো,
— কি হয়েছিলো রোদ?
রোদ কিছু বললো না শুধু আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো বিনিময়ে আদ্রিয়ানও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো। আশ্বাস দিয়ে বললো,
— আমার রোদ কি আমাকে ভরসা পাচ্ছে না?
রোদ ফুঁপিয়ে উঠলো। এই মানুষটা কেই তো ইদানীং পরিবারের পর বিশ্বাস করে রোদ। ভরসা পায় নাহলে বুঝি এভাবেই আসে এত কাছে? মুখ তুললো রোদ। আদ্রিয়ান সেই ভেজা পাপড়িতে ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো। টুপ করে কয়েক ফোঁটা পানি পরলো। রোদ কম্পমান ঠোঁট নাড়িয়ে বলে দিলো তখনকার ঘটনা।
মুখ চেপে ধরার পরই কোন মেয়েলি কন্ঠ আসে। যাতে করে ভরকে যায় সেই মানব। এরপর আর মনে নেই রোদের। কিন্তু সেই মানবের নাম শুনেই আদ্রিয়ানের র*ক্তনালী গুলো যেন জ্বলে উঠলো।
আদ্রিয়ান আর শুনতে চাইলো না শ্রেফ বুকে চেপে রাখলো।
যেখানে হারানোর ভয় বেশি সেখানেই পরিক্ষা বেশি। রোদ মুখ তুলে বললো,
— আমার উপর রেগে আছেন?
— আমার একটা অঙ্গ তুমি রোদ। আমার আল্লাহ জানে তখন কেমন লেগেছিল আমার যখন এলোমেলো তোমাকে বেহুস দেখলাম। দুনিয়া উল্টে গিয়েছিল আমার। আমার এই বুকের নতুন ব্যাথা হয়ে এলে তুমি রোদ যেই ব্যাথা সারাজীবন আমি কুড়ে যাব যাতে এটা কমে না যায় আর এর প্রতিষেধক হিসেবে তোমাকেই চাই আমি।
রোদ চোখে হাসলো। প্রিয় জনের বুকে মিশে রইলো।
* তোমাকেই চাই আমি, তোমাকেই চাই
আর কিছু জীবনে পাই বা নাই*
হঠাৎ করে আদ্রিয়ানের কন্ঠে এমন গানে খিলখিলে হেসে উঠলো রোদ। আদ্রিয়ানের পেটে গুতো দিয়ে বললো,
— কিসব বাংলা গান গাইছেন আপনি।
— অনুভূতি নিজের ভাষায় যতটা গভীর ভাবে প্রকাশ করা যায় তা অন্য ভাষায় যায় না বউ।
যাহ দিলো তো লজ্জা পায়িয়ে এই লোক।
#চলবে…..