#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(৯)
ইমরানের মেজাজ প্রচুর খারাপ। মা বাবা দাদাও ইশানকে সম্মতি দিয়ে ফেলেছে সে মুনকে নিয়ে যেতে চাইলে নিয়ে যাবে কিন্তু কেউ ইমরানকে বুঝতে পারছেনা কেন?ইমরানের ভেতর ভেতর কেমন সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে তা কি কেউ বুঝবে?মুন?মুনও কি ইমরানের ভালোবাসা বুঝবে না?হিমুর মতো সেও চলে যাবে তার জীবন থেকে?হিমু যখন জেনেছিলো ইমরান আর মুনের সম্পর্ক আছে প্রেমের এই ধারণা থেকেই একদিন সে ইমরানের সামনে দাঁড়িয়ে তাকে অপমান করে। চলে যায় ইমরানের সামনে থেকে। হিমুর চলে যাওয়াতে ইমরানের মনে হয়েছিলো তার বুকের বাম পাশটা চুর্ণ হয়ে গেলো এরপর প্রায় মাস দুয়ের মতো নিজেকে সবার থেকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে হিমু তাকে চরিত্রহীনা বলেছে?কিন্তু কেন?সে জানেনা!!মুনের সাথে মিশতে মিশতে মনে হলো মুন শুধুই তার আর কারো না ভুল করে ইশানের সাথে বিয়ে হয়েছে তাতে কি হয়েছে মুন কে সে নিজের করবেই।
বাসার পরিবেশ একদম শান্ত। রাতের চাদেঁর আলোতে বাসার সামনের জায়গা টুকু আলোকিত হয়ে আছে মুন সেখানেই দাঁড়িয়ে দেখছে ইশান কাল চলে যাবে?আবার তাকে একা করে দিয়ে ইশান চলে যাবে। ইশান বুঝবে কখন?মুন তাকে ভালোবাসে?তার প্রথম প্রেম, প্রথম আবেগ,প্রথম অনুভূতি সবটাই ইশান। বান্ধবীরা বলতো ইশান অনেক বড়, সে তোর সাথে যোগাযোগ রাখেনি মনে হয় ইশান ভাই শহরের কোন মেয়েকে ভালোবাসে। মুন তখন চুপ করেই থাকে কিছুই বলতে পারেনা। ইশানের সাথে বছর তিনেক আগেও যেরকম ফ্রি মাইন্ড থাকতো এখন কেমন জানি বয়সের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ সে ইশানের বিয়ে করা বউ।
ইশান রুমে আসে মুনকে রুমে না দেখে বেলকুনিতে যায় মুন পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে ইশান ওর পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরে।
এখানে কি করছ? মুন!
ভাবছিলাম।
কি?
আপনি আমাকে তুই থেকে তুমি বলছেন!কাল থেকে কেন?
কারণ আমার থেকেও ভালো তুমি বলতে পারবে।
আমি?আমি কিভাবে?
কেননা!তুমি নিজেই আমাকে তুমি থেকে আপনিতে নিয়ে গেছো মুন! সে হিসেবে আমিও সম্বোধন চেঞ্জ করলাম। আমার টা সুন্দর না?
সুন্দর।
কোন কলেজ এ ভর্তি হতে চাও?
স্থানীয়তে হলেও অসুবিধে নেই।
আমি তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যেতে চাইছি মুন।
মুন ইশানের দিকে ঘুরে দাড়াঁয়। ইশান ওকে সাথে নিয়ে যাবে?কবে? ইশানের সাথে থাকবে সে?সে তো তাই চায় ইশানকে পেতে চায়। তার স্বামী ইশান। ইশান মুনের দিকে তাকিয়েই বলে,আগামীকাল আমি সকালেই চলে যেতাম মুন কিন্তু তোমাকে সাথে করে নিয়ে যেতে চাচ্ছি আব্বু আম্মুকেও জানিয়েছি আমার বাবা মাকেও বলা হয়েছে এখন যদি তুমি রাজি হও তবেই নিয়ে যাবো।
মুন খুশি হয়! আনন্দে তার নাচঁ করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছে না। সে ইশানের সাথে যাবে?
কিন্তু আমি তো সেরকম কিছুই গুছাতে পারলাম না।
আমি আছি তো! সবটা গুছিয়ে নেব!
মুন এই একটা কথা তেই অনেক ভরসা পায়। ইশান আছে তো সবটা গুছিয়ে দিতে আর কি লাগবে তার?
দরজায় কেউ নক করছে ইশান মুনকে ঘুমুতে বলে বাইরে যায়। ইমরান এসেছে। চিন্তায় আছে বেশ দেখেই বুঝে ফেলেছে ইশান।
কি হয়েছে?চোখ মুখ এরকম ফ্যাকাশে লাগছে কেন?
আমার তোর সাথে কিছু কথা আছে ভাইয়া।
ইশান ইমরানের মাথা থেকে পাঁ অবধি দেখে নিয়ে বলে, আচ্ছা বল।
এখানে নয়। চলো ছাদে যাই।
ওকে।
ইশান ইমরানের কথা মতো ছাদে আসে। এক পাশে অনেক রকম ফলের ও সব্জির গাছ লাগিয়েছে আরেক পাশে বসার জন্য দোলনা রাখা হয়েছে আম গাছের ডালটা এসে কিছুটা ছাদ ঢেকে দিয়েছে। ইশান আর ইমরান গিয়ে দোলনায় বসে। ইশান ইমরানের দিকে পর্যবেক্ষন করে বলে, কি যেনো বলতে চাস তুই?
ইমরান ইশানকে ভালো করে দেখে নিয়ে প্রথম থেকেই শুরু করে ইমরান,
ভাইয়া তুই মুনকে নিয়ে যেতে কেন চাইছিস সাথে করে?
আমার মনে হিয় দুজনের কাছাকাছি থাকা দরকার এভাবে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক হবেনা। দূরে রাখলে সম্পর্ক শুরুর আগেই শেষ হবে কিন্তু একবার ভালোবাসা জন্মালে দুরত্ব কখনো ভালোবাসা কমিয়ে রাখতে পারবে না । তাই চাইছি নিয়ে যেতে কেন?
আসলে, আসলে ভাই আমি……..
ইশানের কেমন ভয় ভয় লাগে এবার ইমরান কি বলতে পারে?
তুই আসলে?
আমি আসলে মুনকে পছন্দ করি।
।ইশান মুহুর্তে চোয়াল শক্ত করে ইমরানের গালে থা প্প ড় বসিয়ে দেয়। রা*গ উঠে যাচ্ছে ইশানের এসব কি ধরনের কথা বলা শুরু করে দিয়েছে ইমরান?
আজে বাজে বকিস না ইমরান ভুলে যাচ্ছিস ও তোর ভাবী।
কিন্তু তুমি তো ওকে স্ত্রী হিসেবে চাওনা। ওকে আমায় দিয়ে দাও ভাইয়া। আমি আর কখনো তোমার কাছে কিছুই চাইবো না।
ইশান আবার ও থা প্প ড় বসায় আরেক গালে। ইমরান মাটিতে বসে পরে ইশানের পায়ের কাছে। সেই অবস্থাতেই বলে, আমি তোমার পায়ে পরছি ভাইয়া! আমাকে মুনকে দিয়ে দাও। আমি ওকে নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছি। আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি মুনকে ছাড়া।
ইশান শক্ত গলায় ঘৃণার সাথে বলে, আমারই ভুল হয়েছে ইমরান যে মুনকে আমি আগে থেকেই সময় দিতে পারিনি। তোর মানসিক চিন্তা ভাবনা বদলানো শুরু করে দে ইমরান যেটা ভাবছিস সেটা আমাদের ইসলাম গ্রহন করবেনা।বিশ্বাস না হলে অনেক আলেমদের ভিডিও ক্লিপ রয়েছে দেখতে পারিস। মুনের সাথে তোর সম্পর্ক দেবর আর বড় ভাবীর বয়সে হোক না মুন তোর ছোটো। ওর সাথে সেভাবেই কথা বলবি ও আচরণ করবি। ভাবিস না আমার স্ত্রী বলে আমি তোকে আঘা*ত করেছি। তুই আমার ভাই আমি চাই না আমার সামনেই আমার ভাই কোন ভুল কাজ করুক বা ভুল করার চেষ্টা করুক। ইমরান আমি জানি তুই বুঝদার ছেলে অল্পতেও বুঝে যাবি নিজেকে সামলানো শেখা শুরু করে দে ইমরান। মুন আমাকে স্বামী হিসেবেই সন্মান করে ওর ছোটো মস্তিস্ক বুঝতে আমার সময় লাগেনা ইমরান। ও তোকে বড় ভাই ও বন্ধু ভাবে শুধু। আমি আসছি আর তুই……… নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা কর।
ইশান রুমে আসে ততক্ষনে মুন ঘুমিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইশান প্রথমে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে চিন্তারা মাথার ভেতরে ছুটোছুটি করছে কেন??
চলবে
#মিশকাতুল