#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(১৫)
ইশান আর মুনের সংসার এখন খুব ভালো ভাবে চলছে। দুজনে নিজেদের মাঝে আত্নিক সম্পর্ক ঠিক করে নিয়েছে । মুনের রেজাল্ট আউট হওয়ার পর স্থানীয় একটা কলেজ এ ভর্তি করিয়ে দিয়েছে ইশান। বই এমে দিয়েছে। মুন সেই বই গুলিই নিয়ে বিছানায় বসে আছে। নতুন বই পড়তে ওর খুব ভালো লাগে সে ক্লাসের বই হোক আর উপন্যাসের বই । রসায়ন প্রথম পত্র নিয়ে দেখছে। ইশান আসবে রাত নয়টার দিকে। মুন দরজার দিকেই তাকাচ্ছে বার বার। কখন আসবে ইশান?ঘড়িতে সময় দ্রুত চলছে না কেন?পাশের ফ্ল্যাট থেকে একটা পিচ্চি এসেছে মুনের সাথে খেলতে বাচ্চাটা দেখতে কালো হলেও খুবই কিউট মুনের ওলে খুব পছন্দ কি সুন্দর করে কথা বলে!মুনকে আপু বলে আর ইশান কে ভাইয়া। বয়স হবে মাত্র তিন বছর ওর আম্মুই রেখে গেছে। ওর নাম সুমন। মুন সুমনের দিকেও খেয়াল রাখছে।। ইশান আসতেই সুমন উঠে ইশানের দিকে ছুটেঁ যায়। মুন বই রেখে বিছানা থেকে নেমে এসে ইশানের দিকে যায়। ইশান ব্যাগ সোফায় রেখে সুমনকে কোলে তুলে নেয়। মুন জানে ইশানের খুব ক্ষুদা পেয়েছে হয়তো আজ দুপুরে আসতে পারেনি। তাই ইশানের কাপড় বের করে দিয়ে টেবিলের দিকে যায়।
ইশান সুমনকে সাথে নিয়েই খাবার খায় মুন ও বসে পাশের চেয়ারে। খাবার শেষ করে ইশান সুমিনকে ওদের ফ্ল্যাটে দিয়ে আসে। মুন বিছানা গুছিয়ে একটা বই নিয়ে এক পাশে বসে । ইশান এসে বই নিয়ে নেয় হাত থেকে মুন কপাল কুচঁকে ইশানকে দেখে বলে, এরকম করলে কেন?
কেন আবার?
বই দাও।
এত বিদ্যা নদী হতে হবে না।
আমার কালকের পড়া দেখছিলাম তো!
সারাদিন অনেক দেখেছ! এখন আমাকে দেখবে তুমি!
এমন করছো কেন?
উফ্ মুন কেমন করলাম?বুড়ো জামাই বলে কি পছন্দ হয় না আর আমাকে?
ইশান কথাটা মজা করে বললেও মুনের যেনো কি হলো!! হুট করেই দুই চোখ ভর্তি জল জমা হলো। মুনের এরকম রিয়েকশনে ইশানের বুকের মাঝে ব্যাথা উদয় হলো। মুন কি এখন আবার কান্নাঁ করবে নাকি.?কলেজ এ একদিন ইশান মুনকে রাখতে গিয়েছিলো সেদিন ও মুনের সাথে ইশানকে দেখে মুনের ক্লাসমেট গুলো ওকে নিয়ে হাসাঁহাসি করেছে ইশান নাকি মুনের জন্য ঠিক হয়নি ইশানের পাশে পিচ্চি মুনকে একদম মানায় না । ইশান কতটা হ্যান্সসাম আবার ডাক্টার তার তো সেরকমই একটা এডাল্ট বউ দরকার ছিলো। সেদিন ও মুন বাসায় ফিরে অনেক কাঁন্না করেছে।
কাদঁবে নাকি এখন মুন?
মুন ঠোঁট কাপিয়ে হিসহিস করতে করতে বলে,
আপনি এরকম করে বলছেন কেন? আমি কি আপনার পাশে একদমই ঠিক নই?
আমি কি ভালো স্ত্রী হতে পারছিনা?
ইশান বুঝতে পারে মুন রা*গ করেছে এই কয়েক মাসে সে বুঝে গেছে মুন রা*গ করলে তুমি থেকে আপনিতে চলে যায়।
না মুন! আমি সেরকম বলতে চাইনি ।
তাহলে কি? আর বুঝাবেন আপনি?
কিছুনা। এই কান ধরলাম। আর বলবো না।
মুন ইশানের দিকে চলে আসে ঝাপিয়ে পরে ইশানের বুকের মাঝে। ইশান তার কিশোরী মনের প্রথম মানুষ যাকে সে কখনোই ছেড়ে যাবেমা হোক না বয়সের পার্থক্য কি যায় আসে ইশান কতটা সুদর্শন তা কি ইশান জানে?রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করার সময় মুন খেয়াল করেছে মেয়েরা একবার দুবার হলেও ইশান কে তাকিয়ে দেখে। শুধু ইশানের পাশে কাউকে তারা সহ্য করতে পারেনা বলেই মুনকে নিয়ে উপহাস করার চেষ্টা করে। মুন এও জানে ইশান হয়তো ভাবে যে মুন সবাফ মন্তব্য শুনে তাকে ছেড়ে চলে যাবে কি না?কিন্ত্য মুন এরকম করবেনা। কখনোই।
কান্নাঁ করো না আমার চাঁদ!
তবুও মুন কিছুই বললো না সেভাবেই রইলো ইশানের সাথে মিশে।
——————-
ইমরান আসবে ইশানদের বাসায় ভাইয়ে ভাইয়ে সব ভুল বুঝাবুঝি শেষ হয়েছে মাস খানেক আগে। মুনের প্রতি সে তার অনুভূতি শেষ করে ফেলেছে । মুন তার ভাইয়ের সাথে ভালো আছে সেখানে সে কি করবে?কি করে চাইবে?ইশানের বাসায় যাবে বলে মাসুদের স্ত্রী কেও বার বার বলছে সাথে নিয়ে যাবে রেেডি যেনো হয়। কিন্তু যাবেনা বলছে সে এখন তিন মাসের গর্ভবতী। এত বছর পর বাচ্চার মুখ দেখবে সে এই সময় গাড়ি তে না উঠাই ভালো হবে। তাই আর ইমরান জোড় করলো না।
ইমরান বাসে যাবে তাই সামনে বাস আসতেই উঠে পরলো বাইকে কি যেনো হয়েছে। একটা সিট চোখে পরতেই গিয়ে বসে পরলো পাশে চোখ যেতেই আতকে উঠে ইমরান জেরিন?
তুমি?
জেরিন জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিলো এতক্ষন পাশে কে বসেছে খেয়াল করেনি, ইমরানকে দেখে ধক করে উঠে জেরিনের ভেতরটা।
আপনি?
হু।
আপনি এই পাবলিক বাসে?
কেন? উঠা যাবেনা?
সেরকম নয়….. আমি এর আগে আপনাকে দেখিনি বাসে!
তুমি যেমনটি ভাবো সেরকম ও নয় মাঝে মাঝেই চলাফেরা করি বাসে।
ওহ আচ্ছা।
এখন কই যাবে?
মামার বাসায়।
ওহ আচ্ছা।
আপনি যাবেন কই?
ভাইয়ার বাসায়।
ওহ আচ্ছা। ওখানে থাকবেন?সাথে ব্যাগ!
হুম। কয়েকদিন থাকবো ভাইয়ার আদেশ।
আপনার ভাইয়া আপনাকে অনেক আদর ভালোবাসেন বুঝি?
ইমরান উৎফুল্ল হয়ে বলে, হুম অন্নেক! আমার ভাইয়া আমাকে প্রচুর?ফ ভালোবাসে।
বুঝলাম।
তুমি ও কি কলেজ মিস দিবে নাকি?
হ্যাঁ।
সেম।
জেরিন সহজ হয় ইমরানের সাথে। এই কয়েক মাসে ইমরানের সাথে অনেক বার দেখা হলেও আগের মতো জেরিন ইমরানকে জ্বালা**তন করেনি। তবে ইমরান ওকে দেখা মাত্রই কেমন আছে, পড়াশোনা কেমন চলছে সব খবর নিয়ে নেয়। জেরিনের ভালো লাগে এভাবেই ভালো বাসবে সে ইমরানকে।
বাস থামতেই ইমরান ভাড়া মিটিয়ে দেয় দুজনের। এক সাথে নেমে সামনের দিকে হাট*তে থাকে দুজনে একই দিকে রাস্তার গন্তব্য তাদের কথা বলতে বলতে দুজনেই এক সাথে একই দিকে আংগুল তুলে দেখিয়ে বলে, ওই যে ওই বিল্ডিং………
থেমে যায় দুজনেই তারপর বুঝতে পারে একই বিল্ডিং এ তাদের ফ্ল্যাট রয়েছে। দুজনেই হেসে উপরের দিকে এগিয়ে যায়…………..
চলবে কি!
#মিশকাতুল