ভালোবাসায় রাঙিয়ে দাও পর্ব-০২

0
711

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(২)

ইশানের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মুন। উত্তম ব্যাবহারে ধমকাচ্ছে তাকে ইশান এটা সে কি করলো তার সাথে কেন করলো? যখনই দাদীর কথা বলে দিয়েছে তখন আর ও রে*গেছে ইশান। তার কপালে এই ব*ল*দ মার্কা বউ জুটলো শেষমেষ?বিয়ে তো করতেও হলো এখনই বউ নিয়ে সে করবে কি??
এই মেয়েটাও সেই এসে থেকেই রুমের মেঝেঁর দিকে তাকিঁয়ে আছে কি দেখছে ওখানে কে জানে?

এই ভাবে সং এর মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন?

আপনিই তো বললেন চুপচাপ মাথা নিচুঁ করে দাঁড়িয়ে আপনি যা বলবেন সেই সব শুনতে।

নাও!! ইশান ওর উওরে আবার সব ভুলে গিয়ে নতুন করে পাগোল হবে সে। রাগে হিস হিস করতে করতে রুম থেকেই বের হলো ইশান। বাইরে গিয়ে বড় ভাবীর কাছে কফি চাইলো। ইমরান কোথায় আছে কে জানে!!

ইশানের দাদু এসে ইশানের পাশে বসলো। প্রতিদিন দাদুর আগমনে খুশি হলেও ইশান আজকে তা আর হলো না। এই মানুষ টার জন্যই আজ বিয়ে করতে হলো ওই মুন টা কে। ওকে কি বিয়ে করার মতো বয়স হয়েছে? ওত্তসব!!ইশান দাদুর পাশ থেকে উঠে গেলো কিচেনের দিকে। সেদিকে দেখেঁ নিয়ে দাদু উচ্চ কন্ঠে মুনকে ডাকলেন। মুন রুম থেকে বের হয়ে এলো ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে আকাশী রঙ এর থ্রি পিস পরেছে। এসেই দাদুর পাশে বসলো মাথায় আচঁল টেনে দাদী আর মা বার বার বলে দিয়েছে ওই বাসায় গিয়ে মাথার কাপড় ফেলবিনা খবরদার।

জ্বি দাদু বলুন!

তোমার জামাইয়ের কি লাগে না লাগে সে খেয়াল রেখ!এখন থেকে তো ওর জন্যই তোমাকে এই বাসাতে থাকতে হবে তাই ওর সমস্ত খেয়াল রাখা তোমার দায়িত্ব! বুঝা গেলো?

জ্বি দাদু।

যাও গিয়ে দেখো কি করছে ওখানে?

জ্বি।
মুন উঠে ইশানের পিছুঁ পিছুঁ গেলো গিয়ে বললো, আমি কি আপনাকে…….

আবার এসেছিস?তোকে না বলেছি আমার পিছুঁ আসবি না। একদম দুরত্বে রেখে চলাফেরা করবি।

কিন্তু দাদু তো বললো আপনার খেয়াল রাখা!

ইশান কফির মগ রেখে সোজা ওর দিকে তাকিয়ে বললো, আমি কি বাচ্চা? এই!তুই কি আমার বড় নাকি আমি তোর বড়? কে কার খেয়াল রাখা উচিৎ তুই বল।

ইয়ে মানে, মানে, মা…..

কিসের মানে মানে করছিস?আমিই বলছি তবে, আমি আমার খেয়াল রাখতে জানি তুই তোর খেয়াল রাখ ওকে?

হুম। কিন্তু দাদু যে বললেন,

আবার সেই এক কথা! তুই যাবি এখান থেকে?নাকি এক চ*ড় লাগাবো তোকে?

না না ইশান ভাইয়া যাচ্ছি আমি।

মুন রুমে গেলো তার ওখানে যাওয়ার দরকার আর নেই। সে এই বয়সে কখনো চ*ড় থা প্প ড় পায়নি। ছোটো থেকেই শান্ত শিষ্ট মেয়ে সে পড়া শোনায় ও পাক্কাঁ তাহলে প্রহার পাবে কেন সে?রুমে এসে জানালার পাশে গেলো এখান থেকে তার বাবার বাসার এক পাশে থেকে কিছুটা দেখা যায়। কখন আসবে সবাই?তাকে নিয়ে যেতে?এর আগে সে এসে একা থাকেনি। এর উপর আবার প্রথম রাতেই কেমন ইশানের সাথে থাকতে হলো!!
তুলনা মুলক কথাও কম বলে মুন। প্রয়োজন এর বেশি খুব একটা মুখ খুলেনা সে। বিছানায় বসে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে ভাবলো,কখন সে ফিরবে বাবার বাসায়??

ইশান আর রুমে এলো না। দুপুরের দিকে এসে গোসল করে নিয়ে আবার ও বাইরে গেলো এদিকে মুনকেও আবার নতুন একটা শাড়ি পরিয়ে দিলো রিয়া। মুখে এমনিতেই দুধ সাদা এর উপরে হালকা করে মেকআপ ছুয়েঁ দিলো। মিম এসেছে একটু আগে বোনের এই বয়সে বিয়ে দেওয়া সে কিছুতেই পছন্দ করেনি সব দোষ তার বাবার মনে করে সে। এসে থেকেই মুনের সাথে আছে সে। দুপুরের দিকে সবাই আসলো বাগানে আয়োজন করা খাবার খেয়ে মুনকে আর ইশানকে আবার ও বাসায় নিয়ে যেতে চাইলেন মুনের বাবা মিলন হক। কিন্তু ত্যা*ড়া ইশান জেদ ধরেছে সে কিছুতেই যাবেনা। শামছুর আহমেদ বলে কয়েও রাজি করাতে পারলেন না। ব্যাপারটা কেমন দেখাবে?বিয়ের পরদিন যদি মেয়ে জামাই কথা না শুনে এই নিয়ে দাদুর কথার ঝুড়ির শেষ নেই। ইশানের বাবা শরিফ আহমেদ ও গিয়ে বুঝালেন অবশেষে রাজি হয়ে গেলো। কি এক যন্ত্রনায় সে ফে*সেঁ গেলো এই বউ নিয়ে সে সকলের সাথে কি ভাবে পরিচয় করিয়ে দেবে?বন্ধুরা আর ও হাসাহাসি করবে ওকে টিটকারি করে কথা শুনাবে না?শেষ এ কি না ফিডা*র খাওয়া বউ এলো তার ঘরে?

মুন রুমে এসে নিজের ল্যাগেজ দেখে নিচ্ছে। ইশানের জন্য কাপড় তুলতে বলেছে দাদী সেও নাকি যাবে সাথে। কিন্তু ইশানের কি কাপড় নেবে সে?আলমিরাতে তো অনেক গুলিই রয়েছে। কি নেবে?ভাবতে ভাবতেই ইশান চুএ এসেছে রুমে। ওকে দেখেই মুন ওর সামনে গিয়ে বলে, তুমি যে যাবে!তোমার কোন কোন পোশাক নেব?

আমার জন্য নিতে হবে কেন?আমি কি গিয়ে তোর বাবার বাসায় এক মাস থাকবো?এই যাবো কাল সকালেই চলে আসবো।

তাহলে কি করবো?

আমাকে নিয়ে ভাবছিস কেন তুই?নিজের টা দেখ! যত্তসব!বলেই বিরক্ত মাখা মুখে বিছানার দিকে গেলো।

মুনের দাদু আর ইশানের রুমে দাদু এলো রুমে ওদের দেখেই মুন মাথার কাপড় ভালো করে নিলো। মুনের দাদু এসে বসলেন বিছানার এক পাশে ইশান ও পাশ ঘুরে শুয়েছে। আর আর ইশানের দাদু সোফায় বসলেন এই নাতীর আশে পাশে যেতেও তার এখন কেমন কেমন লাগছে। কি জেদ ভাবা যায়?

কি হলো দাদু ভাই?সারা রাত কি ঘুমাওনি?এখন এই বিকেলে ঘুমিয়ে গেলে?আমি আর ও এলাম নাতনী জামাইয়ের সাথে গল্প করবো বলে।

ইশান মুনের দাদুর আওয়াজ পেয়ে উঠে বসলো ভদ্রতার সহিত বললো, কি করে ঘুমাই বলুন?আপনার সুন্দরী নাতনী রেখে!

উনি হাসঁলেন মুনের দিকে তাকিয়ে। এরপর ইশানের সাথে গল্প জুড়ে দিলেন।

চলবে
#মিশকাতুল

রেসপন্স প্লিজ!!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে