ভাবিনি ফিরে আসবে(পর্ব-০৮)
রোকসানা আক্তার
আমি আর একমুহূর্ত দাড়িয়ে না থেকে ঘর থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসি এবং ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি রান করি।কারণ,এখন নিদুর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি,শএুর সাথে আজ সন্ধি করে আসবো।
অতঃপর,নিদুদের বাড়িতে চলে আসি।।নিদুদের বাড়ির গেইটের সামনে আসতেই নিদুকে দোলনার উপর বসে একমগ্নে সিগারেট টানতে দেখি। নিদুর একটা চামচা আমাকে দেখামাএই আমার দিকে বন্দুক তাক করে।
আমি তাকে হাত দিয়ে ইশারা করি, কুল কুল!!আমি কোনো খেকো প্রাণী নই,আমি মানুষ।সো,আক্রমণ হওয়ার কোনো আকাঙ্খা নেই।
নিদু আমাকে দেখে ফেলে এবং ভ্রু কুঁচকে হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে কী চাই।আমিও ইঙ্গিত দিয়ে বলি উঠি,
-জ্বী,আপনাকে চাচ্ছি।
নিদু পাহারাদারকে নির্দেশ করে বন্দুক সরাতে এবং আমায় ভেতরে ঢুকতে দিতে।সড়াৎ সড়াৎ পাহারাদার তা-ই করে এবং আমি ঢুকে পড়ি তড়িঘড়ি।
নিদুর কাছে গিয়ে কোনো সম্বোধন ছাড়াই বলি,
-আপনি সাথীকে চাচ্ছেন,রাইট??
নিদু আমার কথায় ভ্রু কপালে উঁচিয়ে হাত থেকে সিগারেটটা ফেলে দেয়।আমার দিকে আর একবার ভালোভাবে তাকিয়ে নেয় এবং বলে,
-তোমাকে আমার চেনা চেনা লাগছে!!
-জ্বী,আমি আসলাম চৌধুরীর ছেলে শাওন চৌধুরী।আর সাথী আমার কাজিন।
-প্রথমেই গেইজ করেছিলাম।যাইহোক,কেন আসলে ওটা বলো?
-সাথীকে আমি আপনার হাতে তুলে দিতে!
নিদু আমার কথায় খুশিতে ধুকধুকি বাঁজাতে থাকে।আর বলে,
-সত্যি??কিন্তু, এখানে আপনার কি স্বার্থ?আমিতো জানি সাথী তার শাওন ভাইকে ভালোবাসে।আর সেই শাওন ইতো আপনি,না?
-ইউ আর রাইট, আপনার বুদ্ধি আছে বটে।তবে,
আমার কোনো স্বার্থ নেই!!কারণ,আমার প্রেমিকা আছে,ইভেন বিয়েও করে ফেলেছি আমরা।যদিও বাসায় তা জানে না।এই প্রথম আপনি জানলেন।সাথী ছোট,কিছু বুঝে না।তাই অবুঝের মতো উল্টাপাল্টা বকে!!আমি শুনেছি আপনি সাথীকে অবিরল ভালোবাসেন এন্ড ইউ ওয়ান্ট টু ম্যারি হিম।এইক্ষেত্রে আমি আপনাকে হ্যাল্প করবো।
-কেমন হ্যাল্প?
-আপনি যদি জোর জবরদস্তি করেন,তাহলে কখনো সাথীর ভালোবাসা পাবেন না।একটু চালাকচতুর হতে হবে সাথীকে নিজের করে নিতে।আর ওটার নিরামিষ আমি আপনায় দিব,তবে একটা শর্তে!!
-কিসের শর্ত!!
আমি মোবাইলের গ্যালারী ওপেন করে নিদুর চোখের সামনে একটা পিকচার দেখাই।
-এটা কার ছবি??
-একটা মেয়ের!ওর নাম শিপ্রা!!
-উনার পিকচার দিয়ে আমি কি করবো!?
-সাথীকে যদি পেতে চাও তাহলে উনাকে আপনার শিকার বানাতে হবে।
-মানে??আমিতো কিছুই বুঝতেছি না।
-আরেহ বাবা,আপনি ড্রামা জানো??
-হু,জানি।একদম ফকফকা।
-এই তো আপনাকে দিয়ে হবে।
তারপর,আমি ফিসফিস করে নিদুকে সবটা বুঝিয়ে দিই।নিদু সবটা বুঝে নেয়।
-ওকে আমি রাজি।তবে,আমি কোনো টাকা চাই না,আমার অনলি সাথীকেই দরকার।
নিদু আমার কথায় রাজি হওয়ার কারণ সে জানে সাথী আমার প্রতি দুর্বল।তাই আমি যা বলবো সাথী তাই মেনে নিবে।।
-সেটা তুমি পাবে।চিন্তা করো না!!
-কাজটা কবে সারবো??
-আজ রাতের মধ্যেই।ভাইয়া আজ ব্যবসার কাজে দূরে আছেন।
-ওকে।
-আর হ্যা,ভিডিওটি ঠিকঠাক আমার হাতে দিয়ে দিবেন।আমি বাহিরে গিয়েই আপনার থেকে নিয়ে নিব।
-ওকে,ডান!আপনি টেনশন নিবেন না।ভাবুন কাজ হয়ে গেছে।
-জ্বী,সে আশা-ই আছি।
-আচ্ছা,আমাদের সাথে এত্ত মধুর কথোপকথন তো হলোই,এখন একগ্লাস গরম চা খেয়ে যাও।
-ওকে খাবো।।
হাসিমুখে নিদুর চায়ের অফার গ্রহণ করি।বুয়া এসে আমাদের দু’কাপ মালাই করা চা দিয়ে যায়।তৃপ্তীর সাথে খেয়ে নিদুকে বিধায় জানাই।আজ আমার বড্ড খুশি লাগছে।।এখন বড্ড খুশিটার পরিণতিটা অপেক্ষা।।।
রাত ১ টা বাঁজে।সবাই ঘুমিয়ে পড়ে।আমি সদর দরজার সামনে পায়চারী করছি।নিদুর এখনো আসার নামগন্ধ দেখতে পাচ্ছি না।এই লোকটা আমায় মিথ্যে বললো নাতো?সন্দেহ হচ্ছে ভীষণ।এসব ভাবনার মধ্যেই আমার সামনে নিদু এসে হাজির।
আমি নিদুর কাঁধে হাত বুলিয়ে বলে উঠি,
-সাবাস!!
-এবার এত্ত কথা না বাড়িয়ে রুম দেখিয়ে দেন।
আমি নিদুকে নিয়ে টিপটিপ পা পেলে ভাইয়ার বউয়ের রুমের সামনে আসি।আর নিদুকে পর্দার পেছনটায় লুকিয়ে রাখি।।
আমি ড্রয়িং রুমের দিকে তাড়াতাড়ি ছুটে এসে জোরে আওয়াজ করে উঠি।
-কাজের বুয়া কেউ কি নেই?আমায় এককাপ দুধ চা করে দিতে?সবাই কি ঘুমচ্ছে নাকি??
কাজের বুয়া কেউই কোনো সাড়াশব্দ করল না।হয়তো গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।কিছুক্ষণ পর,
-কি চা খাবে?রং চা নাকি দুধ চা?
উনার দিকে তাকাতে আমার চোখগুলো ঝিকমিক করে উঠে।ইয়াপ,এতক্ষণ তো এই অপেক্ষাই করেছিলাম!ডাইনী,তুই কখন দরজা খুলে রুম থেকে বের হইবি এবং নিদু ওই সুযোগে তোর রুমে প্রবেশ করবে!
-ইয়ে মানে, আমার জন্যে দুধ চা করে আনেন।
-ওকে!!তবে একটা নয়,দু’টো।আমিও আজ আমার প্রাণের দেওরার সাথে চা পান করবো।
-ওকে!!!
উনি চলে যায় কিচেন রুমে চা বানাতে।আমি সোফায় এসে বসে পড়ি!!
ইতোমধ্যে চা নিয়ে উনি হাজির হয়।
আমার দিকে এককাপ এগিয়ে দেয় এবং নিজে এককাপ নিয়ে বসে পড়ে।
আমি কাপে মুখ লাগিয়ে এক চুমুক দিতেই কেশে উঠি।
-কাশছো কেন, শাওন??
-মানে আমার চায়ে চিনি কম হয়েছে।বোধহয়,আর কিছু পরিমাণ চিনি এড করতে হবে চায়ে
-ওকে,তুমি বস।আমি কিচেন থেকে চিনি নিয়ে আসতেছি।
এ বলে উনি উনার চায়ের কাপ টি-টেবিল এর উপর রেখে চলে যান।এই সুযোগে উনার চায়ে ঘুমের ঔষুধ মিক্স করে দিই।
বড্ড আনন্দ আনন্দ লাগছে আমার।
-এই নাও,তোমার চিনি।
তারপর আমার চা খাওয়াটা শেষ হয়। আর শতানী দৃষ্টি দিয়ে উনার দিকে তাকাই।উনার চোখগুলো ঝাপসা হয়ে আসছে।এখনই যেন ঢলে পড়ে ঘুমে।
-আরেহ,আপনি এখানে ঘুমচ্ছেন কেন!?আপনি আপনার বেডে যান!!
-ওকে।গু-গুত নাইট।
উনি হেলেদুলে উনার রুমে চলে যান এবং দরজা বন্ধ করে দেন।
সকাল ১০ টা বেঁজে যায়।উনার ঘুম থেকে উঠার কোনো নামগন্ধ নেই।মা কিছুক্ষণ পর পর উনাকে শিপ্রা শিপ্রা বলে ডেকে যাচ্ছেন।
পরে তটস্থ হয়ে দরজায় নক করেন!!তারপর ও উনি দরজা খুলছেন না।মা আমাকে এবং বাবাকে ডাক দেন।।
আমি,বাবা দৌড়ে দরজার সামনে আসি।মা বাবাকে বলে উঠেন,
-শিপ্রা যে দরজা খুলছে না।মানে তো কিছুই বুঝছি না।
-কোনো অঘটন ঘটে গেল নাতো?শাওন তাড়াতাড়ি দরজা ভাঙ্গ!!
আমি বাবার সম্মতি পেয়ে দরজা ভাঙ্গতে থাকি।ঠাস ঠাস করে দরজা খুলে যায়।আর দরজা খুলে যাওয়ার ওর যে দৃশ্য দেখলাম,সত্যি ওসব দেখার জন্যে মা-বাবা কেউই রাজি ছিলেন না।
শিপ্রা পর পুরুষের বুকের উপর মাথা রেখে নির্বিঘ্নে ঘুমচ্ছে !!!
বাবার মাথা ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস !! বাবা জোরে চিৎকার দিয়ে উঠেন,
-শিপ্রা?!!!
তড়িঘড়ি উনি বিছানার উপর বসে পড়ে গায়ে পাতলা চাদর এঁটে নেন!!
আর নিদুকে বাবা দৌড়ে ধরতে যান।
-বদমাশ,তুই আমার ঘরে এসে আমার বউমার উপর আক্রমণ !???
-বিশ্বাস করুন, চাচা?আমার কোনো দোষ নেই।উনি আমাকে কাল রাত আসতে বলেন।উনার স্বামী নাকি বাসায় নেই,তাই।
-কি!!!??
-জ্বী,চাচা!সত্যি!
আমি আবার এসবের মাঝে একটু মধু মাখি।
-জানো,বাবা?ভাইয়ার বিয়ের রাতেও উনি আমার সাথে এমনটি করতে চেয়েছেন,তারপর তোমরা খামোখা না বুঝে আমাকেই উল্টো দোষী ভেবেছ!
-আমি বললাম না?আমার শাওন খারাপ না?এই তোমার উগ্রতার কারণে আমার সৎ ছেলেটিকে দোষী করলে!ওইটা একটা বজ্জাত মেয়ে!ফাহাদ বজ্জাত একটা মেয়েকে বিয়ে করে এনেছে এ বাড়ি!এরে তাড়াতাড়ি এ বাড়ি থেকে বিতাড়িত করো!!নাহলে,আমার মুখে ধুলো দিবে!!
ভাইয়ার বউ কিছু বলতে যাবে। বাবা উনাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বলে,
-তুমি এখনই এই বাড়ি থেকে চলে যাও!!যেদিন ফাহাদ আসবে,ওদিন তোমায় আমরা ভালোভাবে বুঝে এ বাড়ি আনবো,এর আগে নয়য়!!গেট আউট ফ্রম হেয়ার।
-ব-ব্বা?প্লিজজ….এসব নিশ্চয়ই কেউ ষড়যন্ত্র করেছে আমার উপর!!
-আপনার রুম লক করা ছিল ভেতর থেকে।আর আপনার রুম আপনি ছাড়া লক করবে কে!!কোনো আত্মা নাকি প্রেতাত্মা !!? বাবা শুনুন উনার কথা!??(আমি)
-এ-এসব কেমন কথা!!??(শিপ্রা)
-এই স্টপ!!!!আর কোনো কথা শুনছি না।তুমি তাড়াতাড়ি চলে যাও আমার বাড়ি থেকে!!(বাবা)
বাবার সাথে তাল মেলাতে আমারও বেশ ভালো লাগছে!!আর বলতে ইচ্ছে হচ্ছে,বাবা প্লিজজ একেবারে ধুঁয়ে দাও এসব বজ্জাতকে!!আমার এতদিন শুকিয়ে যাওয়া হৃদয়টাতে আজ পানি আসলো!!
তারপর আর-কি!!বিড়ালকেও পরিস্থিতিতে পড়লে লেজ গুটাতে হয়।
পরে বাবার কটু দৃষ্টির দিকে তাকাতে আর না পেরে একমতে বাধ্য হয়ে বাসাতে বেরিয়ে যায়।যাওয়ার সময় বলে,
-আমি দেখে নিব পরে!!!ভালো থাকবেন বাবা+মা।আসি!!!
যাওয়ার সময় আমার দিকে একনজর তাকালো।আমার প্রচন্ড হাসি পেয়েছে।
অতঃপর,ডাইনী একটা বাড়ি থেকে বিদেয় হলো।।আর,আমি বাবাকে সংযত রেখে নিদুকে বিদেয় করি।।
আমি তাড়াতাড়ি আমার রুমে এসে বেলকনি বেয়ে লাফ দিয়ে নিচে নামি।আর নিদুর কাছে হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে চলে আসি।
-এবার কালরাতের ভিডিওটি দাও।
-আগে ভালোভাবে দেখে নিন,সম্পূর্ণ ভিডিও ওকে কিনা??
আমি নিদুর থেকে ফোনটা নিয়ে ভিডিওটি চেক করি।সবকিছু ওকে পেয়ে মেমোরি কার্ডটা হাতে নিয়ে ওকে ফোনটা দিয়ে দিই।আর বলি,
-তাড়াতাড়ি বিদেয় হোন।আপনাকে কেউ আমার সাথে দেখলে বিপদ হবে।
-হুম।এবার সাথীকে কবে আমার হাতে তুলে দিবেন??
-আরেহ বাবা!!আমি বলবো,একটু সময় তো দাও?পরিস্থিতিটা ঠান্ডা হোক।গরম গরম সব করতে গেলে সবকিছু হারাতে হবে।কি থেকে কি করবে সবকিছুর নির্দেশনা আমি দিব।এখন শুধু আমার উপর বিশ্বাস রেখে একটু অপেক্ষা করেন!
-ওকে,তাহলে গেলাম।
নিদু যাওয়ার পর হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। বুকে কয়েকটা ফুঁ দিয়ে নিই।।
পেছন দিকটায় ঝুলে ঝুলে উঠে বাসার মধ্যে প্রবেশ করি।।।
এসব কথা কাউকে বলবো না এখন এবং শিমলাকেও না।নাহলে,দেওয়ালেরও কান আছে।পরে হিতে বিপরীত হবে।।তবে,মনে মনে একটু ভয়ও কাজ করছে!!
-ঔ মহিলা যদি আমার ভিডিওটি ভাইয়াকে দেখায় এবং নিদু যদি সবটা বলে দেয়!!!তখন???
মাথায় নানান চিন্তা আবার আসতে থাকে। মুহূর্তে সবকিছু মাথা থেকে ঝেরে ফেলে মনকে শক্ত করে নিজেই নিজের অনুপ্রেরণা জুগাতে থাকি।
-নাহ!!আমাকে ভয় পেলে আর হবে না!!একবার ভয় পেয়ে সব হারিয়েছি।এখন ভয়কে জয় করতে হবে।
আমি সাথীর মাকে কল করি।সাথীকে তাড়াতাড়ি আমাদের বাসায় নিয়ে আসতে।
উনি যদিও প্রথমে নিয়ে আসতে অসম্মতি জানালেন,তারপর রাজি হলেন।
আমি তড়িৎ বেগে নিচে চলে আসি।দেখি বাবা প্রচন্ড রাগ এবং ঘৃণা নিয়ে সোফার উপর বসে আছেন এবং কিছুক্ষণ পর পর দাঁত খিঁচেন।
আমি হালকা কেশে বলি,
-বাবা,বসব?
-হু,বস!!
-বাবা কিছু কথা বলতে আসছি।
-বল!!.
মাও আমাদের পাশে ছিলেন।
-বাবা,আমি আসলে চাচ্ছি আজতো স্বচক্ষে দেখলেন নিদু কেমন প্রকৃতির লোক।এমন একটা ছেলের হাতে সাথীকে তুলে দেওয়া আদৌ কি ঠিক!আমরা চোখে দেখে,কানে শুনে কেন ছোট অবুঝ একটা মেয়েকে নরকে ঠেলে দিব,বল বাবা?
সে কি আমাদের আত্মীয় না?তার সাথে আমাদের কি রক্তের সম্পর্ক নেই,বলো??
বাবা আমার কথায় কিছুক্ষণ চুপ হয়ে থাকেন।তারপর,বলেন,
-আমি দেখবো সে বিষয়টি! দেখি কি করা যায়!!আর ওই নিদুর যত টাকা চাই,আমি দিব এবং ওর মতো কুলাঙ্গারকে জেলের ভাত খাওয়াবো!!
-টাকাটা কিসের জন্যে দিবে, বাবা?
-জেনেও না জানার ভান করছিস কেন!?(বাবা)
আমি বুঝলাম বাবা সাথীর বাবার পাওনা টাকা শোধ দেওয়ার কথা বলছেন।খুশিতে আমার মনটা নেচে ওঠে।আমিতো এতদিন এরকমই চেয়েছিলাম।আল্লাহ,তোমার কাছে হাজারো শুকরিয়া,বাবা অতঃপর বুঝতে পারলো।
বাবা এ স্থান থেকে নিজের শয়ন রুমে চলে যান।আমি খুশির তালে লাফিয়ে উঠে মাকে জড়িয়ে আদর করতে থাকি।
-উম্মা,মা আমার!!তোমার মতো এমন সাপোর্টার একজন মা পেয়েছি আমি পৃথিবীতে সবচেয়ে লাকী!!
এরই মধ্যে সাথী স্যুটকেস নিয়ে হাজির।আর ভাইয়া ভাইয়া বলে আমার কাছে আসে।সাথীর মা ও এসেছেন।উনি আমার সাথে সখ্য মিলে অন্যএে চলে যান।সাথী বলে উঠে,
-ভাইয়া?আমরা আজ বিকেলে ঘুরতে বের হবো,যাবা?
-কই যাবি??
-তুমি যেখানে নাও।
-পার্কে যেতে পারি।শিমলাকে জল দিব?
-ভাইয়া শিমলা আপু মে বি আসতে পারবেন না।উনার চাকরির ডকুমেন্টস জমা দিতে অফিসে গিয়েছেন।
-ওহ আচ্ছা।আচ্ছা চল এখন বাহিরে যাই আমরা।বাহিরে নিয়ে তোকে এখন ইচ্ছেমতো কোণ আইসক্রিম খাওয়াবো।
-সকাল থেকে কিছুই খাইনি।খালি পেটটা এখনো খা খা করছে।কিছু খেয়ে পেটপুরে নিই,তারপর কোণ আইসক্রিম ।
-আরেহ বোকা,বাহিরেও নাস্তা করা যাবে,চল?
মা এবং আন্টি এসে বলেন,
-আগে নাস্তাটা সেরে নে শাওন?পরে বের হইস।সময় অনেক পাবি!!
সাথীও মায়ের কথায় সম্মতি জানায়।কিন্তু আমার যে তর সইছে না,কাল সাথীকে কোণ আইসক্রিম খাওয়ানোটা অপূর্ণ থেকে গেল।
চলবে…..