#ভদ্র স্যার♥রাগী বর-পর্ব ১২
Writer: ইশরাত জাহান সুপ্তি
বাসায় গিয়ে পৌছাতেই বিছানায় ঝাঁপ দিয়ে পড়ে একট লম্বা ঘুম দিলাম।রাতে আর খেতেও উঠলাম না।বিছানা ছাড়লাম একেবারে সকালে।ফোন হাতে নিয়ে দেখি ৭৩টা মিসডকল।সব শুভ্র স্যার দিয়েছে।আমি ভয়ে আর কল ব্যাক করলাম না।ফোন দিলেই না আবার চলে আসতে বলে।
আজ তিনদিন হয়ে গেছে স্যার আর একবারো ফোন করে নি।তাই একটু মন খারাপ লাগছে।
আমার ফোন দেওয়ার ইচ্ছা করলেও কেমন যেন
আর দেওয়া হল না।তবে এখানে স্যারের করা রুটিন গুলো ইচ্ছামত ভাঙছি।বেশ লাগছে,ভাবছি এক মাসের আগে আর যাবো না।কিন্তু স্যারকে দেখতেও ইচ্ছে করছে।
এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ ফোনে একটি মেসেজ আসলো সামিয়ার নাম্বার থেকে।ওপেন করে দেখি লেখা আজ বিকেলে এসে পড়ো।বড় ফুফু আসবে সন্ধ্যায়।
সেই কড়া ফুফু আসবে!!
তার মানে তো যেতেই হবে।কি করার ব্যাগ পত্র গুছিয়ে চলে আসলাম বিকেলে।ঐ বাড়ি থেকে গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল।
বাসার ভেতরে গিয়ে দেখি বাড়ি পুরো খালি।সামিয়ার নাম ধরে ডাকলাম কিন্তু সাড়া পেলাম না।
রুমে গিয়ে দেখি স্যার সোফায় বসে ল্যাপটপ টিপছে।আমার সাড়া পেয়ে একবার চোখ তুলে তাকিয়ে আবার ল্যাপটপে মনোযোগ দিল।
তাকে দেখে আমি থমকে গেলাম।উসকো
খুসকো চুল,মুখ দেখে মনে হচ্ছে তিন দিন ধরে শেভ করে নি।চোখ লাল হয়ে রয়েছে মনে হচ্ছে কত দিন ধরে ঘুমায় না।আমি তাকে জিগ্যাসা করলাম,বাসার সবাই কোথায়?
আজ নাকি ফুফু আসবে?
স্যার না তাকিয়েই থমথমে গলায় জবাব দিল,সবাই নানু বাড়ি গেছে একটু আগেই।
আমি কৌতূহলী চোখে বললাম,তাহলে সামিয়া যে আমাকে মেসেজ দিল আসার জন্য,
ফুফু আসবে?
স্যার ল্যাপটপ টিপতে টিপতে বলল,সেটা আমি দিয়েছি।ফুফু আসবে না।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আমি ভুরু কুঁচকে বললাম,কিন্তু কেনো??
এবার স্যার ল্যাপটপ নামিয়ে উঠে এসে খপ করে আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলল,কেনো! ফাঁকি কি শুধু তুমিই দিতে পারো?
এই বলে সে আমাকে ছেড়ে সেখান থেকে চলে গেল।আর আমি হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
রাতে আমি খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে ছিলাম।হঠাৎ শুভ্র স্যার রুমে এসে আমাকে ঝট করে উঠিয়ে বসিয়ে দিয়ে বলল,এই কয়দিন আমার ঘুম কেড়ে নিয়ে শান্তিমতো ঘুমিয়েছো না!
আজ আমি ঘুমাবো।
বলেই আমার কোলে মাথা পেতে শুয়ে পড়ল।
তারপর বলল,আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দাও তো।
আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।কিন্তু হতভম্ব ভাবটা এখনো কাটে নি।স্যার এতদিন ঘুমায় নি কেনো?আর আমি স্যারের ঘুম কেড়ে নিয়েছি মানে?
ভাবতে ভাবতে আমি সেভাবেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালের আলোয় আমার ঘুম ভেঙে গেলো।
স্যারের দিকে তাকিয়ে দেখি স্যার এখনো
ঘুমাচ্ছে।
আমি স্যারকে সরাতে গেলে স্যার ঘুমের চোখেই হাত দিয়ে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরল।আমি যতই ছাড়াতে চাচ্ছি ততই সে আরো শক্ত করে ধরে তার মুখ আমার পেটে ঘষতে লাগল।
আমার খুব সুড়সুড়ি লাগছে সাথে লজ্জাও।
অনেক কষ্ট করে নিজেকে স্যারের থেকে ছাড়িয়ে বাথরুমে চলে আসলাম।
অনেকক্ষণ পর বের হয়ে দেখি স্যার উঠে পড়েছে।
বসে বসে চোখ কচলাচ্ছে।
বিকেলে আমি আর সামিয়া হলে বসে ক্যারম খেলছিলাম।হঠাৎ স্যার এসে বলল সেও খেলবে।
তিনজনে জমিয়ে খেলছি।
কিন্তু স্যারের জন্য আমি আর সামিয়া কেউই বেশি গুটি নিতে পারছি না।আর ওদিকে স্যার তার সাইডে গুটির পাহাড় জমিয়ে রেখেছে।
অবশেষে স্যার ফার্স্ট হয়েছে আমি সেকেন্ড আর সামিয়া লাড্ডু।আমি তো সেই খুশি এর আগেরবার সামিয়া আমাকে গেম খাইয়েছিলো তাই।আর এটা নিয়ে আমাকে অনেক ক্ষ্যাপিয়েছে।
তাই আমিও এখন ওকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দৌড়ে উঠতে গেছি তখনি ক্যারমে পা বেজে ঠাস করে সোফার সাথে পায়ের বারি খেলাম।খুব ব্যাথা পেয়েছি।আমি বুঝতে পারছি হাটুর খানিকটা নিচে কেটে গেছে কিন্তু ওদেরকে মুখে হাসি এনে বললাম ঠিক আছি।
রুমে বসে সেলোয়ার খানিকটা উচু করে দেখছিলাম কতটুকু কেটেছে।এমন সময় স্যার আসল হাতে একটি মলম নিয়ে।স্যারকে দেখে আমি তাড়াতাড়ি সেলোয়ার নিচে নামিয়ে নিলাম।
স্যার আমার সামনে বসে হঠাৎ আমার সেলোয়ার
ধরে উপরে উঠাতে লাগল।আমি তাড়াতাড়ি বাঁধা দিয়ে আবার নামিয়ে দিলাম।এবার স্যার রেগে গিয়ে একটান দিয়ে সেলোয়ার কাটা জায়গা পর্যন্ত উঠিয়ে নয়ে মলম লাগিয়ে দিতে লাগল।
আমার খুব অস্বস্তি লাগছে তাই আমি বারবার হাত দিয়ে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
এবার স্যার আমার রেগে গিয়ে আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলল,কি সমস্যা?আমি ছুঁলে কি হয় তোমার।
এখনো কেনো আমার সাথে এমন করছো?এত বছর জ্বালিয়েও আমাকে শান্তি পাও নি যে এখনো এমন দূরে দূরে থাকো।
আবার সেই একই কথা বলছে! যে আমি তাকে জ্বালিয়েছি।
আমি এক ছিটকানি দিয়ে তার হাত ছাড়িয়ে জোরে বললাম,আমি আপনাকে জ্বালিয়েছি আর আপনি কি করেছেন?আপনি আমাকে খুব শান্তি দিয়েছেন?আমার কেমন লাগে সেটা আমিই বুঝি।
আমার সেই আঘাতে মলম লাগাতে পারবেন না যেহেতু এই আঘাতেও লাগানোর প্রয়োজন নেই।
বলে আমি হনহন করে সেখান থেকে চলে আসলাম।সন্ধ্যার পর রুমে এসে দেখলাম স্যার এখনো বেডেই বসে আছে আর সেড সং শুনছে।আমি ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুল আঁচড়াতে লাগলাম।আয়নায় দেখলাম স্যার আমার দিকে হতাশা চোখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।চোখে মুখে একধরনের চাপা কষ্টের ছাপ।গানের কিছু লাইন আমাকে খুবই আকৃষ্ট করছে।আমি চুপচাপ শুনতে লাগলাম…..
ঝাপসা চোখে দেখে যাই…তারার মেলা..♪♪
কখনো বুঝি নি যে…সব অভিনয় খেলা…♪♪
কি করে আমি বোঝাই বলো….??♪♪♪♪
কেনো জীবন আমার এত আঁধার কালো♪♪
যন্ত্রণা সে তো মানে না….♪♪♪♪
সে তো বুঝে না আ আ…….♪♪♪♪
ভুল বুঝে চলে গেলে……♪♪♪
জানি আসবে না কাছে আবার♪♪♪♪
এই গান স্যার শুনছে কেনো?এই গান তো আমার শোনা দরকার।স্যার এখনো আমার দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে যেন গানের মাধ্যমে তার মনের কষ্ট সে আমাকে শোনাচ্ছে।
ভালোবাসার কফিন কাঁধে……♪♪♪
নিয়ে আমি..আর কত কাল পারি দেবো??♪♪
সমাধি টেনে….যাও হারিয়ে……♪♪♪♪♪
আমি…হাজার বছর ঘুমাবো♪♪♪♪♪
আমার চোখে পানি এসে পড়ল। আমি তাকে আড়াল করে লুকিয়ে চোখের পানি মুছলাম।
তারপর উঠে চলে গেলাম।
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর সোফায় বসে ভাবছিলাম,আমার,স্যারকে এভাবে না বললেও হত!স্যার তো আমাকে ঔষধ লাগাতেই এসেছিল।
এমন সময় স্যার আমার সামনে ব্যাথার ঔষধ হাতে দাঁড়াল।আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম এখনো মুখটা শুকিয়ে রেখেছে।
আমি হাত পেতে ঔষধটা নিতেই জগ থেকে পানি ঢেলে আমার হাতে ধরিয়ে দিল।আমি ঔষধটা খাওয়ার পরই সে চলে গেল।
আমার সবকিছু মিলিয়েই খুব কান্না পেতে লাগলো।
সোফার ব্যাকসাইডে হাতের উপর মুখ লুকিয়ে কাঁদতে লাগলাম।কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।
সকালে উঠে দেখি আমি স্যারের বুকে শুয়ে আছি বিছানাতেই।তার মানে স্যার আমাকে এখানে
নিয়ে এসেছে। স্যারের ঘুমন্ত মুখের দিকে
তাকিয়ে আবারো মন খারাপ হয়ে গেল।
আমি উঠে নিচে চলে আসলাম।নাস্তার সময় স্যার বলল সে উপরে রুমেই খাবে।আমি তার প্লেটে নাস্তা নিয়ে আরেকটা প্লেট দিয়ে ঢেকে স্যারের সামনের টি টেবিলটায় রাখলাম।তারপর দাঁড়িয়ে রইলাম সেখানেই।স্যার ল্যাপটপ পাশে রেখে উপর থেকে প্লেটটা উঠাতেই ভেসে উঠল দুটি ত্রিভুজাকৃতির স্যান্ডউইচের মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় জ্যাম দিয়ে ইংরেজিতে লেখা”SORRY”
তার পাশে একটি সিদ্ধ ডিম যেটাকে আমি জ্যাম দিয়ে একটি মুখশ্রী বানিয়েছি মন খারাপের।আর নাক হিসেবে লাগিয়েছি গাজরের একটি স্লাইস।
অনেক কিউট লাগছে।তার পাশে দুটা লেটুস পাতা।
স্যার তা দেখে একটু মুচকি হেসে মাথা ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকালো।আমি সাথে সাথে শড়ির আচলের কোনা আঙুলে পেচাতে পেচাতে মাথা নিচু করে ফেললাম।
স্যার আমার হাত টেনে তার পাশে বসালো তারপর খুব নরম করে বলল,তুমি খেয়েছো?
আমি মাথা নাড়িয়ে না বললাম।তারপর স্যার তার হাত দিয়ে আমার মুখে একটি স্যান্ডউইচ তুলে খাইয়ে দিতে লাগলো।তারপর খাওয়ার মাঝখানে জিগ্যাসা করলো,ব্যাথা কমেছে?
আমি মাথা নাড়িয়েই হ্যাঁ বললাম।
স্যার আমার হাত ধরে বলল,I Am Sorry..
তুমি এমনিতেই ব্যাথা পেয়েছিলে আর আমি তার ভেতর তোমাকে কথা শুনালাম।
তখনি সামিয়া এসে জানাল স্যারের সেই কড়া ফুফু এসেছে।আমি স্যারের দিকে তাকালাম আর স্যার আমার দিকে।তারপর দুজনেই একসাথে হেসে দিলাম।কারণ কয়দিন আগেই স্যার এই মিথ্যা কথা বলেছিল আর আজ তা সত্যিই হয়ে গেল।
একদিন সকালে শুভ্র স্যার আর আমি আবার জগিংয়ে গেলাম।দৌড়াতে দৌড়াতে আমি………..
চলবে,,
Apu onek sundhor onek cute akta golpo… Please apu aitar next part gula diye deo taratari..
Apu please golpo tar happy end korio ❤
Apu golpo ta khubei valo lagce…Apu Ami Apnar sob golpo gulo Porte Cai,,,ar Vdro sar Ragi Not,,etat sob path porci…….???????❤️❤️❤️
???❣️❣️❣️❣️❣️???????
Khub sundor hoiche galpo ta next part kobe debe