ব্ল্যাকমেল ও ভালোবাসা

0
5736

দোস্ত দেখ মেয়েটা সিগারেট খাচ্ছে!
আমি একবার ওই দিকে দেখে বললাম- কুয়াশার কারণে তোর এমন মনে হচ্ছে। তারপর বললাম খেলার মাঝে ডিস্টার্ব করিস নাহ, এমনিতে সন্ধ্যা হয়ে আসতেছে।  আম্মু আজকে তাড়াতাড়ি বাসায় যাইতে বলছে, আজকে লেইট হলে রাতের খাবার বন্ধ করে দিব?

শীতকালে যদি ব্যাডমিন্টন নাহ খেলা যায়, তাহলে জীবনটাই বৃথা ☺ আর ব্যাডমিন্টন আমার প্রিয় খেলা।

প্রতিদিন রাতেও বন্ধুদের সাথে খেলি আজকে আর রাতে খেলা হবে নাহ, কারণ ছোটবোনের কাল থেকে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষা, আমাকে ওর পরীক্ষা গুলোর খেয়াল রাখার দায়িত্ব দিয়েছে সম্মানিত বাপজান।( আমি একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় বর্ষে ম্যাথে পড়ছি। পরিবারের সদস্য বলতে বাবা- মা,  ভাইয়া- ভাবি, আমি, ছোট বোন আর ছোট ভাই। ছোট ভাই ৭ম এ পড়ে। বাপজান আর ভাইয়া বিজনেস করে।)

দোস্ত ভাল করে দেখ, কুয়াশা নাহ! মেয়েটার হাতে সিগারেট!  ভাল করে দেখ ডানদিকের সবুজ বিল্ডিং এ.

আমি এবার ওর কথা শুনে ভাল ভাবে তাকালাম,  এই বিল্ডিং তো মেঘাদের।  আমাদের বাসা থেকে কয়েকটা বাসা পর ওদের বাসা, মাঠের পাশেই।  আমাদের পরিবারের সাথে ওদের পরিবারের ভাল সম্পর্ক। মেঘা ইন্টার ১ম এ পড়ে, আমার ছোট বোনের বান্ধবী।

এটা তো মেঘাই, মেঘা তো এমন মেয়ে নাহ? মেঘাকে সিগারেট খেতে দেখে আমি হতবাক হয়ে গেলাম, কি করে সম্ভব?  মেঘা যথেষ্ট পরিমানে ভাল, ভদ্র, শালীন!

মেঘা আমাদের বাসায় সবসময় যায়, এতে করে আমাদের পরিবারের সবার সাথে ভাল সম্পর্ক। বাসায় আসলে সবাই এক সাথে আড্ডা দেই।

আমি তাড়াতাড়ি মেঘাদের বাসার সামনে গেলাম, কাছ থেকে খেয়াল করলাম, নতুন সিগারেট যারা খায় তাদের মত।  সিগারেটে টান দেওয়ার পর কাশতে থাকা, চোখ মুখ লাল হয়ে যাওয়া। সুন্দর মেয়েদের চেহারা তাড়াতাড়ি লাল হয়ে যায়, মেঘা অনেক সুন্দর আর কিউট!

আমি- (মেঘা কে ডাক দিলাম) মেঘা,  মেঘা.

আমাকে ওর বাসার কাছে দেখে অবাক! ?

তারপর বললাম তাড়াতাড়ি নিচে নেমে এসো.. মেঘা সিগারেট টা ফেলে,  নিচে নেমে এসে আমার কাছে দাড়ালো –
আমি- তোমাকে তো আমি ভাল মেয়ে মনে করতাম,  আর তুমি কিনা সিগারেট খাও!

মেঘা- আমি সিগারেট খেলেই সমস্যা, আর কেউ যে খায় তখন কিছুই হয় না!

আমি- আর কেউ মানে?

মেঘা- আর কেউ মানে কেউ একজন!

আমি-?.  একজনটা কে? তুমি তো এমন ছিলে নাহ?

মেঘা-  সবতো সিগারেট শুরু করছি, কয়েকদিন পর মদ খাব মদ?

আমি- কি বলতেছ এইসব? মাথা ঠিক আছে তোমার!

মেঘা- মাথা আমার ঠিক আছে।  আমি আমার টাকা দিয়ে সিগারেট খাই নাকি অন্য কিছু করি তাতে আপনার কি? আপনি যে দোকানে দাড়িয়ে সিগারেট খান আমি আপনাকে কখনও কিছু বলছি! 

( আমি দোকানে দাড়িয়ে সিগারেট খাওয়ার কথা মেঘা জানল কেমনে, আচ্ছা ও কি দেখে ফেলল¿? সবাই জানে আমি সিগারেট খাই নাহ, মাথা গরম করলে চলবে নাহ পরে নিজেই ফেসে যাব)

আমি হালকা হেসে বললাম- আর সিগারেট খেও নাহ, শরীরে জন্য ভাল নাহ, ক্যান্সার হয় খেলে। আর তুমি যা দেখস ভুলে যাও,  আমি যা দেখসি ভুলে যাব।

মেঘা – আমি যে সিগারেট খাইসি এটা বললে কেউ বিশ্বাস করবে নাহ আর আপনি যে খাইসেন এটা বললে সবাই বিশ্বাস করবে কারণ আমি ছবি তুলে রাখসি।

আমাকে ছবি দেখানোর পর আমি তো পুরা মুর্তি হয়ে গেলাম, বাবা জানতে পারলে কি করবে আল্লাহ ই ভাল জানে? কি ডেঞ্জারাস মেয়েরে বাবা! এখন কি ব্ল্যাকমেল শুরু করবে নাকি¿

আমি ভয়ে ভয়ে বললাম- কি চাও তুমি??

মেঘা- আজ থেকে আমার কথা শুনতে হবে, সব খারাপ অভ্যাস ছেড়ে দিতে হবে যেমন- সিগারেট খাওয়া বন্ধ করতে হবে, সারাদিন আড্ডা দেওয়া বন্ধ করতে হবে, ঘুম থেকে ঠিক টাইমে উঠবেন, নিহা আপুর সাথে মিশাবেন নাহ, মেয়েদের থেকে দূরে থাকবেন। বুঝলেন!

(নিহা আমার ভার্সিটির ফ্রেন্ড,  এই এলাকায়ই থাকে, আমার পিছনেই লেগে থাকে সবসময়)

ওর এই কথা শুনে আমি পুরোপুরি অবাক, তারপর  আমি আবার জিজ্ঞেসা করলাম-

আমি- আর  কিছু আছে শর্ত????

মেঘা- আছে তো, থাকবে না কেন? আপনার জন্য আমার শর্তের অভাব পড়বে কেন!!!

আমি-??? বলো তাহলে?

মেঘা- আমাকে প্রতিদিন কলেজ থেকে নিয়ে আসতে হবে, কয়েকদিন পর পর ঘুরে নিয়ে যেতে হবে, শপিং এ নিয়ে যেতে হবে, ফুচকা খাওয়াতে হবে, আমাকে পড়াতে হবো, বৃষ্টিতে ভিজতে হবে আমার সাথে!!! আপাতত এগুলো করলেই হবে!

আমি বললাম- এগুলোই!!  এই কয়েকটা মাত্র?

মেঘা- (লজ্জা পেয়ে) হ্যা, এইগুলো ই চলবে আপাতত!

আমি- এটা জোরে ধমক দিয়ে বললাম, এর একটা ও করব নাহ, কারে দেখাবে দেখাও এতে আমার কিছুই হবে নাহ বুঝলে, যতোসব ফালতু মেয়ে, বাসায় যাওওও,  সন্ধ্যা হয়ে গেছে!!

মেঘা মন খারাপ করে বাসায় চলে গেল!

আমি হালকা হেঁসে বাসায় চলে গেলাম, ফ্রেশ হয়ে ছোটবোনকে পড়াতে লাগলাম, ভাবি এসে চা আর নাস্তা দিয়ে গেল খেয়ে আবার পড়ানো শুরু করলাম, পড়ানো শেষ হলে রাতের ডিনার করে ঘুমাতে গেলাম, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মেঘা বাসায় এসে বসে আছে অনুর(ছোটবোনের নাম) সাথে এক সাথে যাবে স্কুল আর কলেজ পাশাপাশি ই!

আমি মেঘা চেহারা দিকে খেয়াল করলাম চোখ লাল হয়ে আছে ওর, মনে হয় সারারাত কেঁদেছে, ঘুমায় নাই একটু ও, আম্মু ওকে জিজ্ঞেসা করছিলো কিন্তু ও কথা ঘুরিয়ে ফেলেছে। আওও মেয়েটা তো চালাক ও আছে।আমার দিকে মেঘা তাকাতেই আমি রুমে চলে গেলাম।

অনু আর মেঘা বাবার সাথে চলে গেল, বাবা অফিসে যাওয়ার পথে নিয়ে দিয়ে যাবে। ভাইয়া ও গাড়ি নিয়ে চলে গেল। আমি ব্রেকফাস্ট করে বাইক নিয়ে ভার্সিটিতে চলে গেলাম।

ক্লাস শেষ করে আসার সময় নিহা কে আজকে ইচ্ছা করে বাইকের পিছনে নিয়ে আসলাম, নিহাতো সেই খুশি! আসার সময় দেখলাম মেঘা কলেজ গেইটে দাড়িয়ে আছে, এটা দেখে আমি বাইকের গতি একটু কম করলাম মেঘাকে দেখানোর জন্য।  তারপর নিহাকে ওর বাসার সামনে নামিয়ে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুম দিলাম,  সন্ধ্যায় ঘুম ভাঙ্গে আম্মু ডাকে।

আম্মু বলল- মেঘা নাকি ওর হাত কেটেছে।

আমি- কেন????

আম্মু- ওর রুমের সব জিনিসপত্র  ভাঙ্গে ফেলেছে।

আমি- কোথায় আছে এখন??

আম্মু- বাসায় আছে, অনু গেছে ওর কাছে  আগামীকাল পরীক্ষা নেই দেখে, মেঘা মেয়েটা এমন করছে কেন গতকাল রাত থেকে কিছুই খায় নাই!

আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে,  রেডি হয়ে মেঘাদের বাসায় গেলাম,  মেয়েটা এমন করবে কখনো চিন্তা করি নাই, সুন্দর মেয়েরা কি একটু পাগল হয় নাকি??

মেঘা রুমে গিয়ে দেখি মেঘা শুয়ে আছে, অনু মেঘা পাশে বসে সুপ খাওয়ানো চেষ্টা করছে কিন্তু মেঘা কিছুতেই খেতে চাচ্ছে নাহ, আমি আসাতে মেঘা আমার দিকে করুন দৃষ্টিতে চেয়ে আছে,( এমন ভাবে তাকায় কারো অপরাধ প্রকাশ পেয়ে ফেললে, মাপ পাওয়ার জন্য অসহায় হয়ে) কিন্তু মেঘার কি অপরাধ!  এই অপরাধ তো আমার, আমার কারণে মেয়েটার এই অবস্থা ?

আমি- অনুকে বললাম বাহিরে যাওয়ার জন্য!

অনু চলে গেলে আমি মেঘার কাছে গিয়ে বসলাম, একদিনেই মেয়েটার চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেছে, পুরো চেহারা শুকিয়ে গেছে দেখে আমার চোখ থেকে অশ্রু ঝরছিল।  আসলে মেয়েটাকে আমি ছোট থেকেই ভালবাসি, কখনো বলি নাই যদি না বলে দেয়,  সব সময় ওর খবর রাখতাম, ওর ভালোবাসা ফিল করানোর জন্য ইচ্ছে করেই নিহার সাথে ঘুরতাম শুধু মাত্র এটা বুঝার জন্য আমাকে ভালোবাসে কিনা! গতকাল যখন মেঘা কথা গুলো বলেতেছিল শুনে আমার শোনে খুশিতে মেঘাকে জরিয়ে ধরি, ভেবেছিলাম এতো বছর আমি কষ্ট করছি তাকেও একটু কষ্টটা ফিল করাই কিন্তু এমন সিরিয়াস হয়ে যাবে চিন্তা ই করি নাই, আসলেই কি শান্ত মেয়েদের জিদ একটু বেশি!!?

মেঘার মাথায় হাত বুলাতে থাকলাম তারপর মেঘা কে শুয়া থেকে উঠিয়ে পানি এনে নিজের হাতে ওর মুখ ধুয়ে দিলাম,  বাম হাতে বেন্ডেজ করা, মেঘার শরীরে জলপাই কালের একটা জামা ছিল,  মেঘার ডান হাত ধরে উঠালাম, ওরনাটা ঠিক করে মেঘাকে কোলে তুলে নিলাম, হঠাৎ এমনটা হওয়ায় মেঘা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিছু বলল না। আমি মেঘা কপালে একটা চুমু দিলাম,  সাথে সাথে মেঘা কেঁপে উঠলো। এসব কি হচ্ছে মেঘা কিছুই বুঝতে পারছে নাহ।

তারপর মেঘাকে নিয়ে নিচে নামতে মেঘার বাবা, মা,  আমার আম্মু আর অনু অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!!!

আমি মেঘার আব্বুকে বললাম – আঙ্কেল গাড়ির চাবিটা দেন,  গাড়ির চাবি নিয়ে গাড়ি কাছে গিয়ে মেঘা কে সামনের সিটে বসিয়ে দিলাম, তারপর আমি গাড়ি ড্রাইভ করে একটা রেস্তোরায় কাছে গিয়ে থামালাম, তারপর আবার মেঘাকে কোলে করে রেস্তোরাঁর ভিতরে নিয়ে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলাম, মেঘা আমার দিকে তাকাতে বুঝলাম সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে,  আমি চোখ বড় করে তাকাতেই সবাই যার যার কাজে মনযোগ দিল।
আমি মেঘার পছন্দের খাবার অর্ডার দিলাম, খাবার আসতেই আমি হাত ধুয়ে নিজে হাতে মেঘাকে খাওয়ালাম, শেষের দিকে জোর করে খাওয়ালাম।
তারপর আমি হাত ধুয়ে এসে দেখি বাবা কল দিয়েছে, বাবার সাথে কথা বলে। মেঘার পাশে বসে মেঘাকে আমার কাছে এনে ওর মাথা আমার ধরে দিয়ে বললাম ঘুমানোর জন্য।

আধ ঘন্টা পর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ৭.০০টা বাজে।  বিল দিয়ে,  মেঘা নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে সিটা একটু নামিয়ে দিয়ে মেঘা আবার ঘুমানোর জন্য বললাম। তারপর গাড়ি ড্রাইভ করে  অনেকক্ষণ পরে নির্জন জায়গায় থামিয়ে,  মেঘাকে ডাক দিয়ে গাড়ি নামিয়ে দাড়াতে বললাম। এখন মেঘাকে ভালো দেখাচ্ছে। একটু পর আমি প্রপোজের স্টাইলে এক হাটু গেড়ে বসে,  একগুচ্ছ কালো গোলাপ হাতে নিয়ে বললাম-

“”পাগলী আমি তো তোকে ছোট থেকেই ভালোবাসি,আমি তো এইটা বুঝতে চাইলাম তুই আমাকে ভালোবাসস কিনা, তুই আমাকে ভালো নাহ বাসলে ও কয়েকদিন পর তোকে তুলে নিয়ে আসতাম। তুই কি আমার চোখ দেখে বুঝতি না, আমি যে তোকে ভালবাসি। আমিতো তোকে জ্বেলাস করার জন্য নিহার সাথে ঘুরতাম।  তুই আমাকে মাফ করে দে, আর বল নিজের ক্ষতি করবি নাহ।  এবং থেকে কখনও যাবি নাহ””

তারপর মেঘা আমার হাত থেকে কালো গোলাপ গুলো নিলো এবং বলল-

“”আপনি আমাকে ভালোবাসেন কিন্তু বলেন নাই কেন!!! নিহা আপুর সাথে আপনাকে দেখলে মনে হতো শাঁকচুন্নি টার গলা টিপে মেরে ফেলি, গতকালের আজকের ঘটনা গুলো আমি মেনে নিতে পারি নাই।  মনে করছিলাম আপনাকে আর পাবো নাহ, হারানোর ভয় হতে লাগল।  তাই আমি নিজেকে শেষ করে ফেলতে চাইছিলাম। আমিও আপনাকে অনেক ভালোবাসি,  আপনার থেকে কখনো দূরে থাকতে পরবো নাহ। আমাকে আপনার সাথে কোনো রকম রাখলেই চলবে। শুধু আপনি আমার কাছে থাকলেই চলবে আর কিছুই চাই না আমার!!””””

আমি দাড়িয়ে হাত দিয়ে মেঘার চোখের পানি গুলো মুছে,  মেঘার কোমরে ধরে টান দিয়ে আমার বুকের সাথে জরিয়ে,  মেঘার মাথার সাথে আমার মাথা রেখে বললাম – পাগলী,  তুইতো আমার মেঘা পাখি! তুইতো  অর্নবের মেঘা পাখি! তোর চোখের পানি দেখলে কষ্ট হয় আমার ,  আমার বুকটা ফেটে যায়। আর কখনো কান্না করবি নাহ তুই! তুই আমার কাছে রানী হয়ে থাকবি,  আমি তোকে কোনো ধরনের কষ্টে থাকতে দিবো নাহ। তুই আমাকে ভালোবাসলে তোর জন্য চাঁদটা আকাশ থেকে নামিয়ে আনবো!

তারপর আমার ঠোঁট টা মেঘার ঠোঁটে মধ্যে ডুবিয়ে দিলাম, মেঘা একটু কেঁপে উঠলো। এত মিষ্টি আর সুখ আমি কখনোই পাই নাই। মেঘা ও আমার সাথে তাল মিলিয়ে ওর জিহ্বাটা আমার মুখে ডুকিয়ে দিল আর আমার শার্টের কলার শক্ত করে ধরল, আমি দুই হাত দিয়ে মেঘার পিঠ জরিয়ে ধরলাম!!??????

কতক্ষণ লিপকিস চললো জানি নাহ, আমরা দুজন অন্য জগতে মনে হয়ে চলে গেলাম! হঠাৎ ফোন বেজে ওঠলো,  দেখলাম ভাইয়া কল দিসে রিসিভ করে বললাম- আসতেছি।

তারপর মেঘাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম,  মেঘা ও আমাকে শক্ত করে জারিয়ে ধরলো!

আমি মেঘার কানের কাছে আস্তে করে বললাম আমার পাখিটার জন্য সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে!

মেঘা চোখের ইশারা বঝালো- কি?

আমি- গিয়েই দেখো!

তারপর গাড়ি নিয়ে আমার বাসা চলে আসলাম। গাড়ি থেকে নেমে মেঘা আমাকে জরিয়ে ধরে হাঁটতে থাকলো। বাসার ভিতরে গিয়ে মেঘা অবাক!  মেঘার পরিবার আর আমার পরিবার এক সাথে!

আমি মেঘাকে নিয়ে সোফাই বসিয়ে দিতে ভাবি বলল- সাজাবে নাহ?

আমি- না,  শেষ হওয়ার পর সাজিয়ে দিও।

মেঘা কিছু না বুঝে আমার দিকে তাকালো আমি ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে বললাম- ওয়েট এন্ড সি!!

তারপর কাজি সাহেব বিয়ে পড়িয়ে মেঘাকে কবুল বলতে বললে মেঘা মুচকি হেসে,
(লজ্জা পেয়ে) আস্তে করে বলল-

“””কবুল-কবুল-কবুল”””

সবাই একসাথে আলহামদুলিল্লাহ বলল!

একটু পর কাজি সাহেব আমাকে কবুল বলতে বললে আমি মেঘার গালে একটা চুমু দিলাম, মেঘা মাথা নিচু করে ফেলল লজ্জা পেয়ে।

আমি তখন বললাম-

“”” কবুল- কবুল- কবুল””””

সবাই একসাথে আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠলো!

তখন ভাবি উঠে সবাইকে মিষ্টি খাওয়াতে লাগলো।
তারপর আমি আর আমার মিষ্টি বৌ মেঘা পাখি মুরুব্বিদের সালাম করলাম, ভালোই হলো পকেট গরম করে দিলো। তারপর মেঘাকে ভাবি আর অনু মিলে অনুর রুমে সাজাতে লাগল, আমি গোসল করে শেরওয়ানি পড়ে নিচে গেলাম,  সবাই এক সাথে খেলাম।  খাওয়া শেষ করে আমি ছাদে এসে আকাশের দিকে চেয়ে চিন্তা করতে থাকলাম
আজকের দিনটাকে আমি কখনোই ভুলতে পারবো নাহ।

কিছুক্ষণ থেকে নিচে নেমে এসে দেখি মেঘা একটা মিষ্টি কালারে শাড়ি পড়ে আছে, মুখে বড় করে ঘোমটা দেওয়া। আমাকে দেখে ভাবি আর অনু রুম থেকে চলে গেল,  যাওয়ার সময় বলল দেবরজী বিড়াল মেরো কিন্তু?

আমি একটা হাসি দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলাম।
মেঘার কাছে যেতেই নিচে নেমে সালাম করার আগেই ধরে বুকে জরিয়ে নিলাম। ঘোমটা উঠিয়ে আমার মিষ্টি বউ এর চেহারা দেখতে লাগলাম, আকাশ থেকে নেমে আসা পরী দেখতেছি আমি।
তখন মেঘার চোখ থেকে একটু কাজল নিয়ে ওর কপালের একপাশে কানের উপরে লাগিয়ে বললাম- আমার পাখিটার উপর যেন কারো নজর নাহ লাগে!

তারপর আমি খাটের উপর বসে মেঘাকে কোলে বসিয়ে ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট মিশিয়ে দিয়ে, ওরে জরিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলাম তারপর ভালোবাসা পরিপূর্ণ পর্যায়ে পৌছে গেলাম আমরা!!??

এই সুখী দাম্পত্যের জন্য সবাই দোয়া করবেন??