বেলাশেষে part_9
#adrin_anisha
.
দরজার সামনে একটা গিফট বক্স পড়ে আছে। মেঘা কিছুটা অবাক হলো। কার কাজ হবে এটা? এটা কি নেয়া টা ঠিক হবে? কে না কে দিয়ে গেছে কে জানে?
– কে রে মেঘা?
পেছন থেকে সুভার ডাকে হুশ হলো মেঘার। কিছু না ভেবে বক্সটা নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। মেঘার হাতে গিফট বক্স দেখে অবাক হলো সুভা।
– কি রে কে দিয়ে গেল এটা? আমাকে না জানিয়ে ডেটিং করছিস না তো?
– ধুর চুপ কর তো। এটা দরজার সামনে পড়ে ছিল।
মেঘার কথা শুনে সুভা কপাল ভাজ করে জিজ্ঞাসা সূচক চোখে জিজ্ঞেস করল,
– ঘরের সামনে ছিল মানে? তুই কাউকে দেখিস নি?
– না তো। কেও তো ছিলো। এখন এটা কি খুলবো??
– খুলবি না কেন? চল খুলে দেখি।
মেঘার হাত থেকে বক্স টা নিয়ে নিজেই খুলত লাগল সুভা। মেঘাও সাহায্য করল।
বক্স এর ভিতর থেকে একটা ফোন বের হলো। মেঘার প্রিয় ফোন। oppo একদম নতুন মডেল। ফোন দেখেই খুশিতে লাফিয়ে উঠলো মেঘা। সুভা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে সেদিকে। সুভার দিকে চোখ পড়তেই থেমে যায় মেঘা। ফোন এর আনন্দে ভুলেই গেছে যে এটা কে দিল সেটাই তো জানা হলো না। হঠাৎই কিছু একটা মনে হতেই দৌড়ে বিছানার উপির থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো ফোনের ডিসপ্লে ভেংগে গেছে।
আশ্চর্য, ওর ফোন নষ্ট হয়েছে সেটা ও নিজেই জানে না অথচ কেও একজন ঠিকই ফোন পাঠিয়ে দিয়েছে। মেঘা অনেকটা নিশ্চিত এটা নীলেরই কাজ। মাথায় সন্দেহ কাজ করলেও নীলের কথা ভেবে মনে যেন এক প্রশান্ত হাওয়া বয়ে গেল। মুহুর্তের মাঝেই অস্থির হয়ে উঠলো মন টা। নিজের অজান্তেই মেঘার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠল। ইচ্ছে করেও আটকে রাখতে পারছে না। বুকের মাঝখানটায় কেমন এক অজানা অনুভুতি হচ্ছে যা এর আগে আর কখনো হয় নি। ডান হাত দিয়ে বুকে হাত রাখলো মেঘা যেন হৃদস্পন্দন টাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। নিচের ঠোঁট কামড়ে চোখ বন্ধ করে হেসে সেই স্পন্দন টা অনুভব করার চেষ্টা করছে।
পেছন থেকে সুভা মেঘার কাধে হাত রাখতেই মেঘা চমকে উঠলো। মুখ ভেংচি কেটে সুভা বলল,
– কিরে অমন নায়িকাদের মতো ন্যাকামো করছিস কেন? যেন একে বারে সব লজ্জা তোকে ঢেলে দিয়েছে,?
লজ্জায় লাল হয়ে থাকা মেঘার মুখ এখন রাগে লাল হয়ে উঠেছে। সুভা বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি গামছা নিয়ে গোসল করতে চলে গেল। মেঘাও মনে মনে সুভাকে কয়েকটা গালি দিয়ে ফোনটা দেখতে লাগল। ফোনটা দেখতেই আবার সেই অনুভুতি টা হচ্ছে।
ফোনটা অন করার কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই কল আসলো। মেঘা বুঝতে পারল, ফোনে আগে থেকেই একটা সিম ছিল। কিন্তু এখন ভয় হচ্ছে, হয়তো সে একটু বেশিই ভেবে ফেলেছে। হয়তো কেও ভুল করে এটা ওদের ঘরের সামনে রেখে গেছে। আর ওরা ভেবেছে
ওদের। এখন হয়তো বলবে ফোন ফেরত দিতে। মনের মধ্যে জেগে ওঠা সব খুশি গুলো নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। মন খারাপ করেই ফোন টা রিসভ করল..
– আসসালামু আলাইকুম, কে?
– বাহ, যার ফোন তাকেই প্রশ্ন।
মেঘা এবার ভয় পায়, তার মানে সে যা ভেবে ছিল তাই ঠিক। ওরে অন্যের ফোন নিয়ে নিয়েছে।
– না আসলে এটা আমাদের ঘরের সামনে পড়েছিল তাই আমরা ভাবলাম…
– কি ভাবলেন? এটা আপনাদের ভেবেছিলেন? ভুল ভেবেছিলেন।
– আসলে আমি…
– আসলে আপনি ভুল ভেবেছিলেন। এটা আপনাদের নয়, এটা শুধু তোমার।
– মা-মানে?
– মানে আবার কি? আমার সাথে ধাক্কা লাগার।কারণে তোমার ফোনের ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে গেছে।
তুমি দেখলে নিশ্চই এতক্ষনে অনেকগুলো গাকি দিয়ে দিতে মনে মনে আমাকে। তাই তার আগেই সব হিসেব মিটিয়ে দিলাম। আমি ধার রাখতে পছন্দ করি না।
কথাগুলো শুনে স্পষ্ট বুঝতে পারল এটাই নীল। অনেকটা লজ্জা পেল। তবুও জিজ্ঞেস করলো,
– কিন্তু স্যার আপনি জানলেন কি করে যে এটাই আমার প্রিয় ফোন?
– ওহ এটা তোমার প্রিয় ফোন বুঝি? জানতাম না তো। আমারও এই ফোনটা ভালো লাগে, তাই কিনেছি। আমার নিজের ও একটা আছে। আচ্ছাহ রাখছি এখন। বাই, আই এম বিজি।
মেঘার এবার রাগ হলো। মনে মনে কতো কিছু ভেবেছিল সে, অথচ এই ছেলে কি না সব নষ্ট করে দিল। আর এমন ভাবে বলল যেন মেঘা ওকে বলেছে ফোন কিনে দেয়ার জন্য। তার উপর বলে ” আই এম বিজি”। যেন মেঘা ওকে কল দিয়েছিল।
.
.
.
.
.
চলবে….
পর্ব ৮
https://m.facebook.com/groups/884724498624937?view=permalink&id=914678678962852&