বেলাশেষে part_8
#adrin_anisha
.
.
” আচ্ছা মেঘা কি আমাকে কোনো কারণে অপছন্দ করে?”
” ধুর বাদ দাও তো ওর কথা ওর তো কোনো ছেলেকেই ভালো লাগে না। ”
” কিন্তু নীল স্যারকে তো ওর খুব ভালো লেগেছে বলেই মনে হলো।”
” হুম, সেটা আমিও লক্ষ্য করেছি। এই প্রথম ওর মুখে কোনো ছেলের প্রশংসা শুনলাম।”
” হুম”
শুভ্রর কিছুটা মন খারাপ হলো। সুভা সেটা লক্ষ্য করল, আর জিজ্ঞেস করল,
” কি হলো হিংসে হচ্ছে নাকি?”
” নাহ, আমার হিংসে হবে কেন? চলো একসাথে যাওয়া যাক।”
.
কথা বলতে বলতে চলে গেল সুভা। এদিকে মেঘা যাওয়ার সময় মোবাইলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় হঠাৎই কারো সাথে থাক্কা খেল। বিরক্তি নিয়ে সামনে দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে গেল। বিরক্তি ভয়ে পরিণত হলো।
।
“স্যার আপনি,? ”
।
“রাস্তায় এমন অন্ধের মতো হাঁটছো কেন? আমার সাথে ধাক্কা না খেয়ে এখন যদি একটা গাড়ির সাথে লাগত তখন কি হতো?”
.
মেঘা একটু অবাক হলো। কারণ সেখানে যেই রাস্তা টা ছিল সেটা দিয়ে বড়জোর একটা রিকশা আসতে পারবে। এর চেয়ে বড় কোনো গাড়ি আসতেই পারেনা। কিন্তু এখন এটা নিয়ে তো তর্কও করা যাবে না। এমনিতেই দোষটা ওরই ছিল।
” সরি স্যার, আসলে দেখতে পাইনি”
।
” চোখটা যদি ফোনে থাকে তাহলে দেখবে কিভাবে? কেয়ারলেস যত্তসব”
মেঘা আবারো ভয়ে ভয়ে সরি বলল। প্রথম বার দেখে ক্রাশ খেলেও এখন যত দেখছে খারি রাগ হচ্ছে। চেহারায় যতোটা সুন্দরবন র ব্যবহার ততোটাই খারাপ। ইশশ এভাবে কেও কথা বলে নিজের স্টুডেন্টদের সাথে, তাও আবার প্রথম দিন ই। প্রথম দিনেই সবাই বেশ বুঝতে পেরে গেছে এই স্যারের সাথে কোনো প্রকারের ট্যারা কাজ বা কথা কোনোটাই বলা যাবে না। তবুও কেন জানি সবারই এই স্যারই ভালো লেগেছে। যাকে জিজ্ঞেস করেছে সবাই বলেছে আজ থেকে এটাই তাদের প্রিয় স্যার।
মেঘার সামনে হাত নাড়তেই হুশ ফিরল ওর। এতক্ষন চিন্তা জগতে হারিয়ে গিয়েছিল, বাস্তবে ফিরে এসে খানিকটা লজ্জা পেয়ে গেল সে।
– বলি কোথায় হারিয়েছো শুনি?
– কো কোথাও না স্যার।
মেঘার তোতলানো দেখে মুচকি হেসে দিল নীল। ব্যাস এটাই যথেষ্ট ছিল মেঘাকে ঘায়ের করতে। ইসস কি সুন্দর সেই হাসি।
এসব ভাবতে ভাবতে মেঘা যে কখন ওই চোখে ডুবে গেছে তা সে নিজেও জানে না। আবার ও নীলের ডাকে হুশ ফিরল তার।
– কি হলো কি দেখছো?
– কই কিছু না তো।
তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে নিল মেঘা। কোনোমতে এখন ওখান থেকে পালাতে পারলে বাঁচে। আজ পর্যন্ত কোনো ছেলের সামনেই এভাবে লজ্জা পায় নি সে।
– আমি যাই স্যার।
মেঘা চলে যেতে চাইলে পথ আটকালো নীল।
– যাই বললেই কি যাওয়া যায় নাকি। নিচের দিকে তাকাও তোমার সাথে সাথে আমার ফোনটাও যে নিচে ফেলে দিয়েছো শেদিকে খেয়াল আছে। মেঘা নিচে তাকিয়ে দেখে সত্যিই দুটো ফোনই নিচে পড়ে আছে। অথচ সে খেয়াল এ করে নি। এতো মগ্ন হয়ে ছিল সে স্যার এর মাঝে। ভাবতেই আর এক দফা লজ্জায় পড়ে গেল। নীলের ফোন নীলের হাতে দিয়ে নিজের ফোন নিয়ে কোনো মতো তাড়াতাড়ি দৌড়ে পালালো মেঘা। নীল সেদিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল
– পাগলী একটা…
.
.
.
বাসায় এসে সুভা মেঘাকে দেখতে পায় না। কিন্তু মেঘা তো আরো আগেই আসার কথা। হাতমুখ ধুয়ে বিছানায় বসে ফোন হাতে নিল সুভা। উদ্দেশ্য মেঘাকে কল দেয়া। কিন্তু তার আর প্রয়োজন হলো না। তার আগেই মেঘা দৌড়ে ঘরে এসেই দরজা বন্ধ করে দরজার সাথে মাথা লাগিয়ে হাসতে লাগল। সে যেন দেখতেই পায়নি সুভাও ছিল ঘরে। সুভা ও কিছু বলল না। দেখতে চাইল কি করে মেঘা। মেঘা নিজে নিজেই বলতে লাগল,
– ইসসস, কি হলো এটা আজকে? আমি তো এমন নই, এতো লজ্জা কথায় ছিল এতদিন, আর আজই বা এল কেন?
এসব বলতে বলতে পিছনে তাকিয়েই সুভাকে দেখে অবাক হয়ে যায়। সুভাও এবার খিক করে হেসে দেয়। আরেকদফা লজ্জা পায় মেঘা। আজকে যেন লজ্জা দিবস.।
এমন সময় দরজায় শব্দ হয়। সচরাচর ওদের ঘরে কেও আসে না৷ শুধু ২ বেলা বুয়া এসে কিছু কাজ করে দিয়ে যায়। রান্না ওরা নিজেরাই করে। আর আশেপাশে তেমন কারো সাথে এত ভালো সম্পর্ক হয়নি এখনো যে ওরা আসবে। তাই ধীরে ধীরে দরজা খুলে দিল মেঘা। কিন্তু সামনে কেও নেই। তখনই চোখ পড়ল নিচে পড়ে থাকা জিনিসটার উপর
.
.
.
.
.
চলবে…..
(আশা করি পাশে থাকবেন সবাই এবং কমেন্ট করে জানাবেন কেমন হয়েছে। ধন্যবাদ)