বেলাশেষে part_17
#adrin_anisha
.
.
রাত এ ফেসবুকে লগ ইন করতেই নীল এর ফেক আইডি থেকে মেসেজ দেখে চমকে উঠলো মেঘা। এতোদিন তো জানতোই না যে এটা নীলের আইডি, যেমন ইচ্ছা তেমন রিপ্লাই দিতো, ইগ্নোর করতো, কিন্তু এখন কি করবে?
– কি ব্যাপার আজ ক্লাস না করে রেস্টুরেন্টে কি করা হচ্ছিল শুনি? আর এখন ও না পড়ে ফেসবুকে কি?
মেঘা মনে মনে ভাবল,
” ইসস, এই লোক টা কি আমাকে ফলো করে নাকি? উনি জানলেন কিভাবে যে আমি রেস্টুরেন্টে ছিলাম? উনি কি তাহলে শুভ্রর প্রপোজ করাও দেখেছেন? “( মনে মনে)
– কি হলো কি ভাবছো এতো?
– না স্যার, আসলে সবাই মিলে আজকে একটু পার্টি করতে গিয়েছিলাম।
– এসব করলেই হবে? পড়ার কি হবে? তোমার ইংরেজি খাতাটা তো আমার হাতে এখন? ক্লাস টেস্টের এই অবস্থা কেন শুনি? এতো কম নাম্বার?
– কত পেয়েছি স্যার?
– সেটা কালকেই দেখতে পাবে। এখন বলো খেয়েছ কি না?
– না স্যার, আপনি?
– হুম,কি ভেবেছ তুমি না খেলে কি আমি খাব না?, তুমি খাও নি কেন?
– আসলে পড়তে বসেছিলাম, তাই,
– ওহ, বাহ কি সুন্দর পড়া হচ্ছে। মেসেজ পড়াও তো পড়াই, তো মেসেজ পড়তে কেমন লাগে শুনি?
– সরি স্যার, আসলে পড়তে বসে একটু আসতে ইচ্ছা হলো এফবি তে তাই, এখনি চলে যাচ্ছি, বায় স্যার।
– এই শোনো। আগে খেয়ে নাও, তারপর পড়বে আর খাওয়া শেষ হলে আমাকে এসে জানাবে।
– আচ্ছা স্যার।
কিছুক্ষন পরে মেঘা খাওয়া শেষ করে মেসেঞ্জারে এসে নীলকে মেসেজ দিল,
– স্যার আমার খাওয়া শেষ। এখন পড়তে বসব, ঠিক আছে?
– হুম, যাও। বেশিক্ষন না কিন্তু। রাত ১১.০০ পর আর জেগে থাকা চলবে না। ওকে?
– ওকে স্যার। বাই,
– বাই
.
মেঘার মেসেজের রিপ্লাই দিয়ে মুচকি হাসি দিল নীল। ফোনটা পাশে রেখে খাবার খেতে শুরু করল।
.
.
পরদিন কলেজে ওদের ক্লাস টেস্টের রেজাল্ট দিচ্ছিল,কিন্তু আজ নীল আসেনি কলেজে। আগের ইংরেজি স্যার এসে ক্লাস নিচ্ছে। মেঘার খাতাটাও দিয়েছে, ৫০ এর পরিক্ষায় ৪৫ পেয়েছে। ক্লাসের সবার চেয়ে বেশি নাম্বার অথচ নীল কালকে বলল ও নাকি অনেক খারাপ করেছে। কথাটা ভেবেই মুখ ভেংচি দিল মেঘা।
– কি মিথ্যুক, বলে আমি নাকি কত খারাপ রেজাল্ট করেছি। কি গেল কোথাও এই রাগী স্যার টা। আজকে আসলো না কেন। কালকে রাতেও তো বলল আসবে।
.
এ কয়দিনে নীল তার সারপ্রাইজ আর বিভিন্ন রকম কেয়ার দিয়ে মেঘার মনে অনেকটাই জায়গা করে নিতে পেরেছে। তাই আজ নীলকে খুব বেশিই মিস করছে মেঘা।
আজ সুভা আর শুভ্র একসাথে বসেছে, আর মেঘা বসেছে রিয়ার সাথে। মেঘা একপ্রকার জোর করেই দুজনকে একসাথে বসিয়েছে৷ নতুন নতুন প্রেম, ওদেরও একটু সময় দেয়া উচিত। তাই এখন আরো বেশি খারাপ লাগিছে মেঘার।
কৌতুহল ধরে না রাখতে পেরে রিয়া কে জিজ্ঞেস করেই ফেলল মেঘা,
– এই রিয়া, আজকে নীল স্যারের জায়গায় আমাদের আগের স্যার ক্লাস নিচ্ছেন কেন? উনি কোথায়?
– আমি কি করে জানবো? আমিও তো সেটাই ভাবছি। আসার পর থেকে এ কয়মাসে তো স্যার একদিন ও ক্লাস মিস করেননি তাহলে?
– সেটাই তো, স্যারের আবার কিছু হলো না তো?
– কি জানি? দাড়া আমি খবর নিচ্ছি।।
– কিভাবে নিবি খবর?
– আরে আমার গোয়েন্দা আছে না?
.
ক্লাস শেষে রিয়া কোথায় যেন গেল, তার একটু পরেই ফিরে এসে মেঘা কে বলল,
– এই শোন। স্যারের খবর পেয়ে গেছি।
– সত্যি? কি হয়েছে রে? খারাপ কিছু হয়নি তো?
– নাহ, তেমন কিছু হয়নি মনে হয়। বাট স্যার নাকি অসুস্থ তাই আসেননি।
– অসুস্থ মানে? কি হয়েছে স্যারের?
– সেটা তো জানি না। তুই চাপ নিচ্ছিস কেন তেমন কিছু হয়নি হয়তো।
.
রিয়াকে দেখিয়ে মুচকি হাসি দিলেও মনে মনে অনেক কিছু বয়ে যাচ্ছে মেঘার।
– কি হলো হঠাৎ, জ্বর হয়নি তো? নাকি আরো মারাত্মক কিছু? না না, ধুর, কিসব ভাবছি আমি? ( মনে মনে)
মাথা ঝাকিয়ে পড়ায় মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করল মেঘা।
কিন্তু পারল না। ব্যাগ থেকে ফোন বের করেই মেসেঞ্জারে ঢুকলো মেঘা। নীলের আইডি তে গিয়ে দেখলো। সেই কাল রাতে যে একটিভ ছিল এর পর আর একটিভ হয়নি।
– কি হয়েছে স্যার? আপনি আজ আসেন নি কেন? কালকেও তো বলেছিলেন আজ আসবেন।
নীলকে মেসেজ দিয়ে ফোনটা আবার ব্যাগে রেখে। পড়ায় মনোযোগ দিল মেঘা।
.
.
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে আবারো নীলের আইডি চেক করলো মেঘা৷ এখনো একটিভ হয়নি। একটা বড় নিশ্বাস নিয়ে ফোনটা পাশে রেখে গল্প করতে শুরু করল মেঘা আর সুভা।
.
.
.
.
চলবে……