বেলাশেষে part_13
#adrin_anisha
.
মেঘার প্রচুর রাগ হচ্ছে। এই মানুষটা এতো রহস্যময়ী কেন? যখন দূরে থাকে তখন এমন এমন কাজ করে যাতে সারাক্ষন তার কথাই ভাবতে হয় আর যখন সামনে আসে তখনো এমন ব্যাবহার করে যেন সারাক্ষন শুধু তারই কথাই ভাবতে হয়। সকাল থেকে শুধু নীলের কথাই ভাবছিল মেঘা। কত সুন্দর করে সরি বলল নীল। অথচ এখন যখন নীলকে খুঁজে ধন্যবাদ দিবে তার আগেই ধমক খেতে হলো তাকে।
সারা কলেজ খুঁজেও যখন নীলকে পেল না তখনই পিছন ফিরে নীলের সাথেই ধাক্কা খেল। নীল ও দিল এক ধমক।
– চোখ কোথায় থাকে তোমার। নাকি ইচ্ছে করে ধাক্কা খেতে ভালো লাগে। যখনই দেখা হয় তখনই ধাক্কা খেতে হয়। যত্তসব।
মেঘাকে কিছু বলতে না দিয়েই চলে গেল নীল। মেঘার প্রচুর রাগ হলো। আর সেই থেকেই মুখ গোমড়া করে বসে আছে। আর তার সামনে বসে আছে সুভা। সুভার এবার বোরিং লাগছে। যেভাবেই হোক মেঘার মাইন্ড টা ডিস্ট্রেক্ট করতে হবে। সুভা নিজের বকবক দিয়ে মেঘাকে ভোলাতে লাগল।
.
.
আজ ৩ দিন ধরে মেঘার সাথে কোনো কথা হয় নি নীলের। শুধু ক্লাসের সময় টুকুই দেখা যায় নীল কে। আর সেখানেও স্যার নিজের মতই ক্লাস নিয়ে চলে যায়। এখন দরজায় কেউ কড়া নাড়লেও মেঘাই দৌড়ে যায়। তবে বারবারই হতাশ হয়।
কিন্তু একয়দিনে শুভ্র আর সুভার মাঝে বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। দুজনেই দুজনকে ভালোবেসে ফেলেছে। তবে কেউ কাউকে বলতে পারে নি। মেঘার প্রতি যেই আকর্ষন টা ছিল শুভ্রর সেটাও ভুলে গেছে এখন। তবে সুভার জন্য মেঘা আর শুভ্রের মাঝে বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। তাই সুভাও শুভ্রকে বলে দিয়েছে মেঘা আর নীলের কথা। তাই দুজনের প্লেন হচ্ছে নীল আর মেঘাকে মিলিয়ে দেয়া। শত হলেও এই প্রথম মেঘার কোনো ছেলেকে ভালো লাগল বলে কথা। যদিও মেঘা এই বিষয়ে কিছুই বলে নি। তবে সুভা সবটা বুঝে গেছে।
.
আজ মেঘা, সুভা আর শুভ্র একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছে। শুভ্রই ডেকেছিল সুভাকে। আর।সুভা জোর করে মেঘাকে নিয়ে এল। মেঘা আর সুভা একপাশে বসল আর শুভ্র অন্য পাশে। সুভা ভিতরের দিকে বসেছিল বলে দূর থেকে দেখলে মনে হবে শুধু মেঘা আর শুভ্রই বসে আছে। আর সেটাই হলো। রেস্টুরেন্টের পাশ দিয়েই যাচ্ছিল নীল। তখনই হঠাৎ চোখ পড়ল ভিতরে। মেঘা আর শুভ্র হেসে কথা বলছে। একসময় মেঘার হেচকি উঠে যায় আর শুভ্র।তাড়াতাড়ি উঠে পানি খাইয়ে দিল মেঘা কে আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল। নীল আর একটা মুহুর্তের জন্যেও অপেক্ষা না করে রেস্টুরেন্টের দেয়ালে জোরে একটা ঘুষি মেরে চলে গেল সেখান থেকে।
.
পরেরদিন কলেজে এসে সুভা চলে গেল শুভ্রর কাছে। এখন আর শুভ্র একা একা বাচ্চাদের খাওয়ায় না। সাথে মেঘা আর সুভাও থাকে। এখন বাচ্চারা শুধু খায় তা না। ওদেরকে একটা প্রাইমারি স্কুলেও ভর্তি করে দিয়েছে ওরা। শুভ্র আর সুভা এসে বাচ্চাদের খাবার দিতে লাগল। আর মেঘা চলে গেল ক্লাসরুম এ।
ক্লাসরুমের সামনে আসতেই কেও তাকে হেচকা টান দিয়ে অন্য একটা রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। মেঘা চেচাতে যাবে তার আগেই ওর মুখ চেপে ধরল কেও। মেঘাও জোরে এক কামড় বসিয়ে দিল তার হাতে সাথে সাথে লোকটা আ করে চেচাতে গিয়েও মুখে হাত দিয়ে আটকে নিল।
– কি করছ টা কি। জল্লাদ একটা।
– নীল স্যার আপনি?
– হ্যাঁ আমি। তুমি কি ভেবেছ যা খুশি তাই করবে? আমি তো জানতাম তুমি এমন নও তাই তোমাকে কখনো বেধে রাখার চেষ্টা করিনি। আমি জানতাম তুমি ছেলেদের থেকে দশ হাত দূরে থাকো। আজ পর্যন্ত কেও তোমার সামনে এসে তোমাকে প্রপোজ করার সাহস পায়নি। কয়েকজন অতি সাহসী ব্যাক্তিরা অন্যদের হাতে চিঠি পাঠিয়েছে। আর তুমি কোনোদিনো সেগুলো পড়েও দেখনি সেই কথাও আমি জানি। তাহলে এখন কি হল? এখন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছ না। যেখানে আমি নিজেকে এতো টা দূরে সরিয়ে রেখেছি যেন তোমার সাফল্যের পথে বাধা না হই আর তুমি সেখানে অন্য একটা ছেলের সাথে ডেটিং করছ?
.
.
.
চলবে…..